প্রথম আলোর পহেলা অক্টোবর সংখ্যায় 'খোলা চোখে' বিভাগে হাসান ফেরদৌসের একটা লেখা বের হয়েছে - "নিষিদ্ধ গ্রন্থ সপ্তাহ" (১)। আমেরিকার নিষিদ্ধ গ্রন্থ সপ্তাহকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ গ্রন্থ সর্ম্পকে হাসান ফেরদৌসের দৃষ্টিভঙ্গী ধরা পড়ে সেখানে। সাধারনভাবে আমি লেখাটির সাথে একমত। বই/লেখা/কার্টুন নিষিদ্ধ করা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য একটা ভুল পদক্ষেপ।
বই/লেখা/কার্টুন নিষিদ্ধ করার বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে একটা আলাদা সরকারী সংশোধনী, বিজ্ঞপ্তি, সত্যিকারে ইতিহাস নিয়ে পাল্টা বই, কড়া সমালোচনা এসব আসতে পারে। হাসান ফেরদৌস নিষিদ্ধ করার বদলে বইয়ের পাল্টা আইডিয়ায় আরেকটা বইয়ের কথা একটা সমাধান হিসেবে উল্লেখ করেছেন বটে। তবে আমি হোঁচট খেলাম তার লেখার মূল কথাগুলো অনুধাবন করে।
প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে আমেরিকায় অনুষ্টিত হয় নিষিদ্ধ গ্রন্থ সপ্তাহ। নিষিদ্ধ গ্রন্থ সপ্তাহের "উদ্দেশ্য এ কথাটা বোঝানো যে বই নিষিদ্ধ করা মানে কারও না কারও নিজস্ব মত প্রকাশের অধিকার হরণ করা" - এমনটাই জানিয়েছেন হাসান। হাসান আরো বলেন, "আজ যদি অন্যের সে অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, দুই দিন পরে আমার সে অধিকার যে অপহৃত হবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়?" খুবই চমৎকার কথা! 'খোলা চোখে' কলামে এই লাইনটা পড়ে আমার 'চউক্ষে পানি চলে আসলো'।
ধাক্কা খেলাম দ্বিতীয় প্যারাতেই। হাসান সাহেব নাজিল করলেন, "আমেরিকা অত্যন্ত রক্ষণশীল দেশ"। যে আমেরিকাতে নিষিদ্ধ গ্রন্থ সপ্তাহ হচ্ছে, যে আমেরিকাতে তিনি বসবাস করেন তার সর্ম্পকে এহেন বজ্রোক্তি!
তবে এবিষয়ে সাধারণভাবে আমি তার সাথে একমত। বড় শহরগুলোর গুটিকয় মানুষ ছাড়া মোটামুটিভাবে আমেরিকাকে রক্ষণশীল বলা যায়। তবে আমেরিকার নিষিদ্ধ গ্রন্থ সপ্তাহ নিয়ে লিখতে এসে ফটাস করে আমেরিকাকে রক্ষণশীল বলাটা আরেকটু ব্যাখ্যার দাবী রাখে। অন্যদিকে কমিউনিস্ট দেশগুলোও যে বই নিষিদ্ধ করণে সিদ্ধহস্ত সেটাও জানিয়েছেন হাসান।
তৃতীয় প্যারাও খুবই টাচি - 'চউক্ষে পানি' চলে আসে টাইপ। যুগে যুগে ধর্ম ভিত্তিক বই নিষিদ্ধ করন নিয়ে একটা বর্ণনা আছে এই প্যারায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাসান সাহেবের এই লাইনদুটি - "পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ধর্মের নামে বিতর্কিত কোনো কিছু চোখে পড়লে সম্ভাব্য বিপদ এড়াতে সে বই নিষিদ্ধ হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কোনটা ক্ষতিকর, বই সম্পর্কে এমন সিদ্ধান্ত নেবে কে?" এহেন মানবতাবাদী বক্তব্য কোথায় পাবো?
হাসান সাহেবের থলের বেড়াল আসলে বেরিয়ে পড়ে চর্তুথ প্যারায় এসে। এখানে এসে তিনি ফতোয়া দিলেন, "কোনো কোনো বই যে সত্যি সত্যি ক্ষতিকর, সে কথায় ভুল নেই। এক ধর্মের বা গোত্রের মানুষকে অন্য ধর্ম বা গোত্রের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে যে বই লেখা, আমি মূলত সেসব বইয়ের কথাই বলছি। সালমান রুশদির স্যাটানিক ভার্সেস সে রকম একটি বই"।
তৃতীয় প্যারায় যিনি জিজ্ঞেস করেছেন কোনটা ক্ষতিকর বই তার সিদ্ধান্ত কে নিবে? আর চতুর্থ প্যারায় তার উত্তর দিয়েছেন - এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন হাসান ফেরদৌস। কি হাস্যকর রকমের কন্ট্রাডিকশন!!
হাসান সাহেব কাছে আমার প্রশ্ন, তাহলে শুধু স্যাটানিক ভার্সেস কেন? স্যাম হ্যারিসের এন্ড অফ ফেইথ, ক্রিস্টোফার হিচিনসের দ্যা গড ইজ নট গ্রেইট: হাউ রিলিজন পয়জনস এভরিথিং কিংবা রিচার্ড ডকিন্সের দ্যা গড ডিলিউশন বাদ যাবে কেন? এরা তো একটি নয়, বরং সব ধর্মের লোকদের ক্ষেপিয়ে তুলছেন! তাহলে এদের বিরুদ্ধে ফতোয়া দিলেন না কেন হাসান সাহেব?
বাকি লেখাটায় হাসান সাহেব পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বই নিষিদ্ধ হবার বিভিন্ন উদাহরন টেনে বিষয়টির খারাপ দিকটি তুলে ধরেছেন। কিন্তু আবার গুবলেট করেছেন শেষের আগের প্যারায় এসে। বলেছেন, "কোন বই ভালো, কোন বই মন্দ, এই সিদ্ধান্ত সরকারকে নিতে হবে কেন? ভালোমন্দ বিচারের ক্ষমতা কি দেশের মানুষের নিজেদের নেই?"
আমি একমত যে সরকারের পদক্ষেপ নেয়াটা অতি আগ্রাসী পদক্ষেপ হয়ে যায়। শুরুতে যেমন বলেছি, ইতিহাস রক্ষার্থে সরকারী উদ্যোগে নির্ভেজাল ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা উচিৎ। যদি ফালতু দাবী নিয়ে বই হয় তাহলে যুক্তির ভিত্তিতে সঠিক বিপরীত বিষয়ের উপর বই বের হওয়া উচিৎ। তবে যে পদক্ষেপই নেয়া হোক না কেন এ বিষয়ে হাসান সাহেবের মত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বাকি সবার উপরে চাপিয়ে দেয়াটাও কাম্য নয়। বিশেষ করে সেটা যখন প্রকাশিত হয় দেশের একটা প্রধান দৈনিকে।
শেষ প্যারায় এসে আসলে হাসান সাহেবের আসল গাত্রদাহের কারন বোঝা গেল। মওদুদির বই নিষিদ্ধ করে যে সরকার বিরাট ভুল করেছেন সেটা বোঝানোর জন্যই সম্ভবতঃ হাসান সাহেবের এত বিশাল রচনা। তিনি বলেন, "বইয়ে থাকে আইডিয়া, সে আইডিয়া যদি ক্ষতিকর হয়, নিষিদ্ধ করার বদলে তা কেন ক্ষতিকর তার ব্যাখ্যা হিসেবে চাই পাল্টা আইডিয়া"। অথচ রুশদীর বইয়ের ক্ষেত্রে তার এই যুক্তি মাথায় আসে না, আসে মওদুদির বইয়ের বেলায়! বাহ্ চমৎকার ডাবল স্ট্যার্ন্ডাড!!
চমৎকার একটা বিষয় নিয়ে লেখার অবতারনা করেও নিজের বায়াস থেকে বেরুতে পারলেন না জনাব হাসান। একদিকে স্যটানিক ভার্সেস এর বিরুদ্ধে ফতোয়া দিলেন, অন্যদিকে দাবী করে বসলেন মওদুদির বইগুলোকে নিষিদ্ধ করা সরকারের উচিৎ হয়নি। এহেন কন্ট্রাডিকশনে পড়ে পুরো লেখাটি একটি হাস্যকর বস্তুতে পরিনত হয়েছে।
আমি মনে প্রাণে চাই যে, লেখকের সুমতি হোক। আর প্রথম আলোর এডিটর রুম হোক আরেকটু আলোকিত। নইলে এধরণের অন্ধকার লেখা প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পাতাটা আরেকটু অন্ধকারই করবে নিয়মিত।
মন্তব্য
মওদুদির বইয়ের সাথে মওদুদির আইডিওলজির ধারক বাহক জামাত-শিবিরও নিষিদ্ধ করার দাবী জানাচ্ছি। নিশ্চয়ই জড় গ্রন্থের চেয়ে জীবিত গ্রন্থপাপীরা বেশি ক্ষতিকর। তেমন যদি হতো/হয় হাসান ফেরদৌসরা তখন কী লিখতেন/লিখবেন তাই ভাবছি
সত্যিই কিন্তু চিন্তার বিষয় বটে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আলো আসবেই...
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
কি জানি! আমার তো কেবল সন্দেহ হয়!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ঠিক এই কারণেই ব্লগ ব্যাপারটা এতো ভালো! এরকম একটা প্রশ্ন অনেক পাঠকের মনেই হয়তো জন্ম নেবে, কিন্তু পত্রিকায় তো আর লেখককে কিছু জিজ্ঞেস করা যায় না।
পারষ্পরিক মিথষ্ক্রিয়ার ব্যাপারটা থাকলে/পাঠকের কাছে জবাবদিহিতা বা নিদেন পক্ষে পাঠকের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার একটা দায়বদ্ধতা থাকলে, লেখক পাঠক উভয়পক্ষেরই আসলে উপকার হতো।
স্নিগ্ধার সঙে এক মত, ব্লগে পাঠকের কাছে জবাবদিহিতার কারনে (সে যত বড় লেখকই হোন না কেন) নিজের চিন্তারাজিকে প্রকাশের আগে ভাবনার ব্যাপার থাকে । নিজের ভাবনাকে পুর্মূল্যায়নের প্রয়োজন থাকে, অন্যের কাছে শেখার একটা ব্যাপার থাকে ।
লেখাটি খুব ভাল লাগল, মাহবুব । খুব স্বচ্ছ চিন্তার প্রতিফলন ।
……………………………………
বলছি এক জ্যোতির্ময়ীর কথা
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
স্নিগ্ধার সঙে এক মত, ব্লগে পাঠকের কাছে জবাবদিহিতার কারনে (সে যত বড় লেখকই হোন না কেন) নিজের চিন্তারাজিকে প্রকাশের আগে ভাবনার ব্যাপার থাকে । নিজের ভাবনাকে পুনর্মূল্যায়নের প্রয়োজন থাকে, অন্যের কাছে শেখার একটা ব্যাপার থাকে ।
লেখাটি খুব ভাল লাগল, মাহবুব । খুব স্বচ্ছ চিন্তার প্রতিফলন ।
……………………………………
বলছি এক জ্যোতির্ময়ীর কথা
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
ঠিক একই কারণে প্রচলিত মাধ্যমের সাংবাদিক/লেখক বেশীরভাগে সময় ব্লগে এসে হোঁচট খান। প্রচলিত মাধ্যমে সামাজিক অবস্থান/বয়স এসবের জন্য যে কথা তাকে কেউ সরাসরি বলতে সাহস পায় না সেটা ব্লগে সহজেই বলে ফেলা যায়।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমি মাঝে মাঝে মাহবুবের লেখা পড়ে অবাক হই। ছেলেটা এত ব্যস্ততার মধ্যেও কিভাবে এগুলো চিন্তা করে, আর ঝটপট লেখা নামিয়ে ফেলে!
প্রায় দেড় সপ্তাহ ছুটি শেষ করছি এই উইকএন্ডেই।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
হাসান সাহেবের ক্রন্দনের সাথে পুরোপরি সহমত।
অবিলম্বে মৌদুদু পূরাণের নিষিদ্ধাদেশ বাতিল করে সরকারী খরচে বাংলার ঘরে ঘরে মৌদুদু পৌঁছে দেবার দাবি জানাচ্ছি।
কাকস্য পরিবেদনা
হা হা হা...
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মওদুদির বইয়ের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া অনেক পুরানো। তবে মওদুদির বই নিষিদ্ধ করার চাইতে জামাত-শিবির নিষিদ্ধ করলে বেশি লাভ হইতো মনেহয়। লেখাটা অনেক ভাল লেগেছে।
--------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
আমি এইটা নিয়া লেখা ধর্ছিলাম। পরিশ্রম বাঁচলো।
-------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
চমৎকার বিশ্লেষণ।
জনাব ফেরদৌসের ফতোয়ায় কিন্তু আমাদের মতন আমজনতার জন্য একটা সূক্ষ্ম ক্যাচ আছে।
রুশদির স্যাটানিক ভার্সেস পড়িনি, কিন্তু যিনি পড়েছেন এমন একজনের সাথে কথা হয়েছিল (২০০১ সালে) (তিনি স্বীকার করেছিলেন যে সাহিত্যের মানদন্ডে লেখাটা ভাল না)। সেই প্রেক্ষিতে এবং এর বিষয়বস্তুর দৃষ্টিকোণ থেকে স্যাটানিক ভার্সেসকে, যতটা বোঝতে পারি, এক ধর্মের বা গোত্রের মানুষকে খেপিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে লেখা নিশ্চয়ই বলা যায়, কিন্তু এক ধর্মের বা গোত্রের মানুষকে অন্য ধর্ম বা গোত্রের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার উদ্দেশ্যে বলা যায় না।
জনাব ফেরদৌসের মূল লেখাটা এখনও পড়িনি, তবে বুঝলাম উনি ভালভাবেই স্যাটানিক ভার্সেসের ‘টাচি পয়েন্টটা’ দিয়ে মওদুদির বই জাস্টিফাই করলেন। বেশ।
স্যাটানিক ভার্সেসের প্রায় এক চর্তুথাংশের অডিও বই শুনেছি। সাহিত্যের মানদন্ডে আসলেই গার্বেজ টাইপের। সেজন্যে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। তবে যে তিনটা বইয়ের নাম দিয়েছি তাদের প্রত্যেকটার অডিও বই শুনেছি। স্যাটানিক ভার্সেসের চেয়ে সাহিত্য মানে, যুক্তিতে এবং ধর্মীয় মতবাদের বিরুদ্ধে এরকম ভালো বই কম আছে। প্রচলিত মাধ্যমে এ নিয়ে কিছু বলা হয়না বিধায় হাসান সাহেবও এ নিয়ে বলতে ভুলে গেছেন।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
এক বয়সে মওদুদীর অনেক বই পড়েছি। স্যাটানিক ভার্সেস পড়ার ইচ্ছা ছিলো অনেক আগে থেকে। নিষিদ্ধ বই পাওয়া কষ্টককর। এখন ইন্টারনেটের কল্যানে যোগাড় করতে পারলেও পড়ার সময় কই? কিছু সাহিত্য সমালোচক [critique] এর স্যাটানিক ভার্সেস এর ওপর নোট পড়ে আমার মনে হয়েছে, স্যাটানিক ভার্সেস খুবই উঁচু দরের বই। নিদেন পক্ষে এতোটুকু বলা যায়, শব্দ চয়ন, চরিত্র নির্ধারনে রুশদী'র পান্ডিত্যের ছাপ আছে। well সবাই তো আর সব কিছু জানে না......। রুশদীও নিশ্চই যা লিখেছেন তার authenticity নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু, আমার পয়েন্ট হলো তিনি এমন কিছু বিষয় তুলে এনেছেন যা অনেকের অগোচরে ছিলো। যেমন, আমার এক বন্ধু আমাকে বলেছিলো, স্যাটানিক ভার্সেস গালিগালাজের বই। কারন, সেখান মহানবী (সা:) কে Mahound বলে গালি দেয়া হয়েছে। বস্তুত, এটি রুশদী'র তৈরী করা শব্দ নয়। এর পেছনে একটি ইতিহাস আছে। যেমন আছে, বইটির নামকরনের পেছনে।
তবে হ্যাঁ, যিনি হযরত মুহাম্মদ(সা:) এর বিশুদ্ধতায় বিশ্বাস করেন, তাকে অবশ্যই বইটি আঘাত করবে। কারন, রুশদী নিজেই বলেছেন, তিনি একজন নবী হিসেবে নয় বরং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ইসলামের উত্থান এবং হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে মানবীয় দোষে-গুণে পুষ্ট একজন হিসেবেই বিশ্লেষণ করেছেন।
একটা ব্লগ লেখা শুরু করেছিলাম এই বিষয়ের ওপর। কিন্তু, দেশের ব্লগগুলোর যে ভাষা আর লেখকদের যে দৃষ্টিভঙ্গী দেখি, তাতে আমি চিন্তাগ্রস্ত। শেষে না আবার কোন বিপদ ডেকে আনি!
যাঁরা রুশদী'র বিরোধীতা করেন তাঁদের অনেকে যেমন না পড়েই করেন, ঠিক যাঁরা মওদুদীর বিরোধীতা করেন, তাঁরাও তেমনই।
মওদুদীর প্রাক্তন পাঠক হিসেবে, আমার বক্তব্য, তাঁর রচনা মুসলিম ধর্মীয় সাহিত্যে নতুন স্টাইল তৈরী করেছে। ধর্মগত দিক থেকে সেসবের শুদ্ধতা যাচাই আমার নাগালের বাইরে। তবে একজন পাঠক হিসেবে আমার মনে হয়েছে তিনি অনেক সাহসী লেখক। যখন খুব ধার্মিক ছিলাম, তখন এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর বছরের পর বছর খুঁজেছি, কিন্তু, মওদুদী ছাড়া ঔসব বিষয়ে কেউ লেখার সাহস করেননি।
Anyway, সুদীর্ঘ মন্তব্যের জন্য দু:খিত।
আপনার মন্তব্য পড়ে এবং আপনার ব্লগ দেখে চমৎকৃত হলাম। সচলায়তনে আপনার সাহসী লেখা পড়তে চাই।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ধন্যবাদ, মোর্শেদ ভাই। আপনার মতো ভালো লেখকের কাছ থেকে উৎসাহ পেয়ে, খুব ভালো লাগছে। আমি চেষ্টা করবো সচলায়তনে সচল হতে।
হাসান ফেরদৌসের কলাম চোখে পড়লেই পড়া হয়। আপনার লেখাটা পড়েই তাই গিয়ে হাসানের কলামটা পড়ে ফেললাম।
হাসানের আগের লেখাগুলোয় জামাত বা পাকিস্তান বিষয়ে তার যে অবস্থান দেখেছি, সে ক্ষেত্রে মওদুদীর বই নিষিদ্ধ করলে তার গাত্রদাহ হবার সম্ভাবনা নেই। এই কলামটি পড়েও আমার তা-ই মনে হলো। হাসানের ফোকাস এখানে ছিলো মূলত 'বই নিষিদ্ধ করা'। এর প্রেক্ষিতে একটা উদাহরণ হিসেবে এসেছে মওদুদীর বই। এবং তার কলাম পড়ে আমার মনে হয়েছে, তিনি বই নিষিদ্ধ করার ব্যাপারটির বিরোধীতা করেন, এবং তার তীব্রতা এতটুকু যে সেটি যদি মওদুদীর বইয়ের মত ক্ষতিকর বইও হয়, তবুও তিনি সেটির নিষিদ্ধকরণ চান না, বরং পাঠকদেরই ভালমন্দ বেছে নেবার স্বাধীনতা চান।
সম্ভবত, আমি যতটুকু বুঝলাম, হাসানের লেখার মূল মেসেজটা এরকমই ছিলো।
-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
হাসান ফেরদৌসের এই লেখাটা তোমাকে আরো ভাবনার খোরাক দেবে। পড়তে হবে কল্লোল মোস্তফার প্রতিক্রিয়াটিও।
কনফু,
একজন লেখকের ব্যাকগ্রাউন্ড কেন গুরুত্বপূর্ণ হবে। হাসান জামাত বা পাকিস্থান বিষয়ে সারা জীবন কি বলেছেন বা করেছেন সেটা তো এখানে ধর্তব্য না!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
হাসান ফেরদৌসের কলাম টি পড়ে আমার কনফুসিয়াস ভাই এর মতই মনে হল।
আমি ব্যক্তিগতভাবে যেকোনো বই নিষিদ্ধকরণের বিরুদ্ধে। ইন্টারনেটের যুগে বই নিষিদ্ধ করে কোনো ধারনার অবরোধ সম্ভব না। তা সে ধারনা যা-ই হোক, আর যারই হোক না কেন। সরকারের উচিত এসব সেকেন্ডারি, টার্শিয়ারি কাজে সময় নষ্ট না করে মূল কাজে হাত দেওয়া।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
এখানে নিষিদ্ধ বইয়ের একটা অসম্পূর্ণ তালিকা পাওয়া যাবে।
মওদুদির আদর্শভিত্তিক কুরাজনীতি বন্ধ না করলে শুধু বই বন্ধ করে লাভ হবে না। হিটলারের মাইন কাম্ফ কিন্তু জার্মানিতে আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়নি। এর প্রকাশস্বত্ব বায়ার্ন রাজ্যের, এবং তারা এর পুনর্মুদ্রণ ঠেকিয়ে রাখে।
কিন্তু স্যাটানিক ভার্সেস এর কান মলে দিয়ে মওদুদির বইকে হালাল করার চেষ্টাটা দেখে মনে হয়েছে, হাসান ফেরদৌস সূক্ষ্মভাবে এর ওকালতি করেছেন। এর আগে তিনি সূক্ষ্মভাবে রুয়াণ্ডার প্রসঙ্গ তুলে "ক্ষমা করব কি করব না" শিরোনামে একটি আর্টিকেল লিখে সূক্ষ্মচালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন।
বাংলাদেশে স্যাটানিক ভার্সেস নিষিদ্ধ। মওদুদির বই ঠিক কী কারণে সিদ্ধ থাকবে?
রুয়ান্ডার মত আমাদের পরিস্থিতি অতটা জটিল নয়। তবুও সন্দেহ জাগে,২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি জামাত জোট বেঁধে ক্ষমতায় না আসলে অথবা আপাতদৃষ্টিতে বিএনপি জামাত এর মানিক জোড় জোট না ভাঙ্গার সম্ভাবনা প্রবল না হলে আওয়ামীলীগ কি আদৌ কোনদিন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করতো ?
হাসান ফেরদৌস একজন লেখক।তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন,এটা তার ভাবনার জগতের দ্বিধাদ্বন্দ্ব,দৈন্যতা নয়।তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে বাস্তব কিছু উদাহরণ টেনে এনেছেন মাত্র।তিনি এবং আমরা এমন একটি দেশের নাগরিক, যেখানে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের সাথেই, যারা গত নির্বাচনে নির্বাচনী ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ ব্যয় করেছে যুদ্ধাপরাধী বিচারের প্রচারণায়,রাজনীতির প্যারেডগ্রাউন্ডে পা মিলিয়ে জামাতের সৈনিকরা কিন্তু অনেকদিন মার্চ করেছে আমাদের চোখের সামনে।দোয়াদরুদের কিছু গল্পোও বাজারে চালু আছে।
জামাতের দ্বিতীয় কিংবা তৃ্তীয় সারির নেতারা কলঙ্কমুক্ত হয়ে এগিয়ে যেতে চায়, তারাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে(প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদন,দুঃখিত লিঙ্কটা না দিতে পারার জন্য)। মহাজোট সরকার তার মেয়াদের মধ্যে যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করতে পারে, সেক্ষেত্রে চতুর জামাত নেতারা কিন্তু আবার আওয়ামীলীগের ঘাড়ে পা দিয়ে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার একটা প্রচেষ্টা চালাবে।কোন সন্দেহ নেই।কলঙ্কমুক্ত জামাতকে(যদি আদৌ ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বহাল থাকে)জোটে না নিলেও বিএনপির কাছ থেকে দূরে রাখার কৌশল হিসেবে একটা প্রচ্ছন্ন সমর্থন আগামী নির্বাচনে জামাত আওয়ামীলীগের কাছ থেকে পাবে বলেই মনে হয়।আগামী নির্বাচনে বিএনপি থাকবে অনেকটাই কনফিউজড।না পারবে জামাতকে গিলতে না পারবে উগ্লাইতে।
কাজেই রাজনৈতিক পরিস্থিতিই নির্ধারণ করবে, এ দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবে নাকি হবে না, হাসান ফেরদৌসের লেখার বা মতামতের এখানে কোন গুরুত্ত্ব নেই,গুরুত্ত্ব নেই সচলায়তনের কোন লেখার বা সমালোচনার,বলেই আমার বিশ্বাস।
মাহবুব মোর্শেদের সুপাঠ্য এই লেখাটি হাসান ফেরদৌসের কন্ট্রাডিকশন ধরে দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কন্ট্রাডিকশন এর ভাইরাস এ আক্রান্ত এই জাতির জন্য আপাত কোন ভ্যাকসিন 'চউক্ষে' পড়ছেনা।
হাসান ফেরদৌস একজন লেখক এবং কলামিষ্ট মাত্র।হিমু'র হাসান ফেরদৌসের প্যান্টখোলা সমালোচনা হবে দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার।পারলে,যারা এই জটিলতা, দ্বিধাদ্বন্দ্ব এদেশের মানুষের বিশেষতঃ যুবসমাজের কিছু অংশের মনে সৃষ্টি করেছে, তাদের ব্যাপারে লিখুন,তাদের রাজনৈতিক কন্ট্রাডিকশন কিভাবে যুবসমাজকে ভ্রান্ত করেছে তার একটা লিস্টি করে লিঙ্কটা দিন, কাইন্ডলি।
_________________________________________________
খোকন খোকন ডাক পাড়ি
খোকন মোদের কার বাড়ি ?
হাসান ফেরদৌস দুর্বল আর হিমু সবল? হাসান ফেরদৌসের সূক্ষ্ম চাতুর্য নিয়ে কথা বলার আগে "দ্বিধাদ্বন্দ্ব" যারা তৈরি করেছে তাদের ব্যাপারে ফিরিস্তি দিয়ে আসতে হবে?
আপনি হাসান ফেরদৌসের একজন দুর্বল অ্যাপোলজিস্ট। যুবসমাজের মনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করার জন্যে আলুপেপারের উপসম্পাদকীয় পাতার ভূমিকা রাজনীতিকদের চেয়ে কোনো অংশে কম সক্ষম নয়। আর লেখকের দ্বিধাদ্বন্দ্বের দায় লেখককেই নিতে হবে, পাড়ার মানুষ এসে নেবে না।
হাসান ফেরদৌস দুর্বল আর হিমু সবল? হাসান ফেরদৌসের সূক্ষ্ম চাতুর্য নিয়ে কথা বলার আগে "দ্বিধাদ্বন্দ্ব" যারা তৈরি করেছে তাদের ব্যাপারে ফিরিস্তি দিয়ে আসতে হবে?
পামপট্টি নয়,আমি একজন সিম্পল পাঠক এবং হিমু’র লেখার ভক্ত।হাসান ফেরদৌসের চাতুর্য নিয়ে কথা বলার আগে কোন ফিরিস্তি দিয়ে আসতে হবে কেন ? মোটেও নয়।বরং এই কন্ট্রাডিকশনগুলোর সৃষ্টিকর্তা বুদ্ধিজীবি-রাজনীতিবিদ আর খাঁটি-ঘি-রাজনীতিবিদদের নিয়ে লেখা যদি প্রাসঙ্গিক আর যৌক্তিক মনে হয় লেখার অনুরোধ থাকল।
আপনি হাসান ফেরদৌসের একজন দুর্বল অ্যাপোলজিস্ট। যুবসমাজের মনে দ্বিধাদ্বন্দ্ব তৈরি করার জন্যে আলুপেপারের উপসম্পাদকীয় পাতার ভূমিকা রাজনীতিকদের চেয়ে কোনো অংশে কম সক্ষম নয়। আর লেখকের দ্বিধাদ্বন্দ্বের দায় লেখককেই নিতে হবে, পাড়ার মানুষ এসে নেবে না।
আমি মোটেও হাসান ফেরদৌসের অ্যাপোলজিস্ট নই।হাসান ফেরদৌস নয়, আমার মাথাব্যাথা-আমার মাঝে সৃষ্টি হওয়া দ্বৈতসত্ত্বা আর দ্বিধাদ্বন্দ্ব। লেখকের লেখার ভার তাকেই নিতে হবে,আমি একমত।বাংলাদেশে যেদিন শিক্ষিত জনগণের সংখ্যা ৭৫ শতাংশ অতিক্রম করবে, আর তাদের বেশীরভাগ কোন না কোন পত্রিকার অনুগত পাঠক হবে, সেইদিন হয়তবা আদর্শগত কন্ট্রাডিকশন সৃষ্টির জন্য আপনি পত্রিকাওয়ালা কিংবা তার সম্পাদকদের দ্বায়ী করতে পারবেন, তার আগে নয়।কারণ এখন পর্যন্ত আমরা রাজনৈতিক এবং আদর্শগত অবস্থানের জন্য রাজনীতিবিদদের দেওয়া ফর্মূলার উপর একান্তভাবে নির্ভরশীল, পত্রিকাগুলোর উপর নই। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের দেয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাটির কথাই ধরা যাক।এই ভ্রান্ত ধারণাটির বাস্তবায়নের জন্য আমরা কম কাঠখড় পোড়াইনি।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীটিকে অনেক জালাও পোড়াও আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের দাবীতে পরিণত করা হয়েছিল।এখন আবার দাবী উঠেছে এটিকে বাতিল করার জন্য, যা উঠে এসেছে রাজনীতিবিদদের কাছ থেকেই, ক্ষমতার রাজনীতির দাবা খেলার চাল হিসেবেই।কাজেই, আমাদের রাজনৈতিক আদর্শগত অবস্থানের নির্ধারক কিংবা নির্ণায়ক কিছু বুদ্ধিজীবি-রাজনীতিবিদ এবং খাঁটি-ঘি-রাজনীতিবিদগণ।হাসান ফেরদৌসের মত কলামিষ্ট লেখকের ভূমিকা এবং প্রথমালুর ভূমিকা এখানে অগ্রাহ্য করার মতই ভগ্নাংশ মাত্র।এরা রাজনীতির হাওয়া বুঝে আর কোন কোন সময় চাপে পড়ে অনুকূল হাওয়ায় পাল তোলার দায়ে দ্বায়ী হতে পারে, হাল ধরে হুক্কায় সুখ টান দিতে থাকা মাঝিটি 'রাজনীতিবিদগণ'।
ঐ ভগ্নাংশের মধ্যে গলদ পেলে সেটা নিয়েই কথা হবে।
লেখা হোক সেটাই চাই।
তাহলে আর দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার টাইপ ভাবালু ও এই ক্ষেত্রে প্রয়োগের অযোগ্য বাক্যাংশ ব্যবহারের আগে একটু চিন্তা করলেই পারেন।
আমি শুধু যে বাস্তবতার ভেতর দিয়ে আমাদের চলতে হয় সেটা ব্যক্ত করেছি।এটি ভাবালুতা নয়।গর্ত খুঁড়ে কেঁচো নয়, গোখরোটাকেই বের দরকার বেশী।
তাই? আসুন তো দেখি কী বলে শুরু করেছিলেন।
এখন আবার বলছেন কেঁচো বার করা যাবে না, গোখরো বার করতে হবে। সচলায়তনের লেখার বা সমালোচনার তো গুরুত্বই দিতে রাজি নন আপনি, গোখরো বার করলেই বা কী?
কেঁচোর পেছন দিক আর সামনের দিক নাকি আলাদা করা যায় না শুনেছি, আর কেঁচোর চামড়াও অনেক পোরাস, বাঁচানো কঠিন। কেঁচোদের অ্যাপোলজিস্ট হলে প্রচুর পল্টি দিতে হয়। এক কমেন্ট থেকে অন্য কমেন্টে এসে পুরো উল্টো কথা বলতে হয়। তাই বুঝেশুনে কথা বলাটা আমাদের সকলের জন্যে জরুরি।
সচলায়তন কে গুরুত্ত্বহীন বলতে চাইনি।মনেও করিনা।করলে সচলায়তনের পাতা খুলে বসে থাকতাম না। আপনাদের নিরলস প্রচেষ্টার পাশে আমার উক্তিটিকে একটি হতাশা মাখানো দীর্ঘশ্বাস ভাবতে পারেন।আবার ইগনোর করতে পারেন।
আবুল মকসুদ বলুন,হাসান ফেরদৌস বলুন, কিংবা আমাদের রাজনীতিবিদদের কথা বলুন, কেউ কি সচলায়তনের হিমুদের কোন উপদেশ,আলোচনা বা সমালোচনা কানে তুলেছে নাকি অদূর ভবিষ্যতে তুলবে ? সেই অর্থে ওই লাইনটি। আমার মনে হচ্ছে এই জায়গাটিতে হিমু আমাকে ভুল বুঝছেন, অথবা উটকো এই আগন্তুককে গ্রহণ করতে পারছেন না।
চমৎকার লেখাগুলো এই কেঁচোর পোরাস চামড়া ভেদ করলেও রাজসিক গন্ডারগুলোর চামড়ায় কোন আঁচড় ফেলতে পারছেনা।দুঃখজনক এই ব্যাপারটা সচলদের মনোকষ্ট দেয় না কি ? এটি কি শুধুই সচলদের নির্ভেজাল আঁতেল আড্ডা ? টাইমপাস পটেটো চিপস ? নাকি এর একটা লক্ষ্য আছে?
কেঁচোদের অ্যাপোলজিস্ট হলে প্রচুর পল্টি দিতে হয়।
ব্যাপারটি বরং একটু অন্যরকম।যারা পল্টি দেয় তাদের অ্যাপোলজিস্ট হতে হয়। আমার পল্টি দেয়ার কোন দরকার পড়ে না।আমি লেখক, কলামিষ্ট,কিংবা রাজনীতিবিদ নই । দুএকটি ব্লগে অতিথি হিসেবে ঘুরে ফিরি অবসরে।সচলায়তন প্রিয়।
ধন্যবাদ।
এনিওয়ে, আমাকে অনর্থক কথার পেঁচে কেঁচো বানানোটা কি আপনাকে কোন আনন্দ দিয়েছে ?
শ্রাবন্তী আপনি স্পষ্টতঃ আক্রমনাত্মক অবস্থান থেকে মন্তব্য শুরু করেছেন। এক পর্যায়ে হিমু যখন "ঐ ভগ্নাংশের মধ্যে গলদ পেলে সেটা নিয়েই কথা হবে।" বলে মন্তব্যের থ্রেডটির প্রায় ইতি টানলেন তারপরও আপনি প্রতি মন্তব্য অব্যহত রেখেছেন। আর এই পর্যায়ে এসে নিপীড়িতের ভূমিকা নিয়েছেন।
যদি আপনার বলার কিছু থাকে তাহলে সেটা ডিফেন্ড করার জন্য আপনাকেই দাঁড়াতে হবে। মন্তব্যের এক পর্যায়ে "আমাকে অনর্থক কথার পেঁচে কেঁচো বানানোটা কি আপনাকে কোন আনন্দ দিয়েছে ?" ধরণের মন্তব্য করে নিজেকে নিপীড়িত প্রমান করাটা আনএথিকাল মনে হয়।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ঠিক আছে।মাথা,আমার মাথা একটু গরমই। কিন্তু আমাকে কেঁচো বানানোর হিমু ভাইয়ের কি খুব দরকার ছিল ? একটু নিপীড়িত আমার মনে হতেই পারে।
এখন আবার স্যরি বললেই তো উনি আবার আমাকে অ্যাপোলজিস্ট বলে বসবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।খোদা হাফেয।
কেঁচো তো প্রসঙ্গে আনলেন আপনি নিজেই। এখন কেঁচোর ঠ্যালা আপনিই সামলাবেন। পাড়ার লোকে এসে সামলাবে না।
জ্বি। ভালোই বলেছেন-যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্ধে থাকাকে ভাবনার জগতের দ্বিধাদ্বন্দ্ব বলে বেশ একটা বুদ্ধিবৃত্তিক অলংকরন করে ফেললেন।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আমি নিজেকে চতুর বাঙ্গালী ভাবতে যতটা স্বাচ্ছন্দ বোধ করি,বীর বাঙ্গালী ভাবতে ততটা নয়।ভিটামিনের অভাব আছে আমার।কাজেই অনেক কিছু যা হওয়া উচিত, করা উচিত বলে মনে করি, তা মিউ মিউ করে বলি।হাওয়া অনুকূল না হলে ওটা নিয়ে খুব বেশী চেঁচামেচি করিনা।স্বামী ভাত না দিলে, ভাইয়ের ঘরেও ঠাঁই হয়না আমার।বস আমার ওড়না ধরে টান দিলেও চড় মারিনা,চোখের পানি মুছে বের হয়ে আসি।ভিটামিনের বড্ড অভাব আমার।
ভিটামিন বি ট্যাব্লেট কিনে খাই, কিন্তু ট্যাব্লেটের প্রভাবটা কেটে গেলে নেতিয়ে পড়ি।
চেষ্টা করছি আমার ছেলেমেয়েরা যেন ভিটামিনের অভাবে না ভুগে।কাজেই আমার ছেলেমেয়েরা বড় না হওয়া পর্যন্ত মিউ মিউ করেই জীবনটা কাটিয়ে দিতে হবে।দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে,তবে সেটা আমার অলঙ্কার নয়।মনটা জানে কি হওয়া উচিত আর কি হওয়া উচিত নয়,এখানেই একটু দাবী রাখছি আপনার কাছে, মানসিক দৈন্যতার অপবাদ দিয়েন না।
ভালো থাকবেন।
বৃথা এতো প্যাঁচালেন। আপনি নিজেকে চতুর নাকি বীর ভাববেন সেটা আপনার ব্যক্তিভাবনা।
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গটি এদেশের নাগরিক হিসেবে, একজন মানুষ হিসেবে প্রত্যেকের কাছে একেবারেই স্পষ্ট এবং প্রশ্নাতীত একটি বিষয়। অসস্পষ্টতা, প্রশ্নবিদ্ধতা কিংবা আপনার ভাষায় চিন্তার দ্বিধাদ্বন্ধ- কাদের আছে সেটাও অজানা নয়।
একটি নির্দিষ্ট গোত্র ছাড়া আর কারো কাছেই এটি কোন দ্বিধাদ্বন্ধের বিষয় নয়।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
একটি নির্দিষ্ট গোত্র ছাড়া আর কারো কাছেই এটি কোন দ্বিধাদ্বন্ধের বিষয় নয়।
এই গোত্রটাই কি এদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ ? না হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করতে এত দেরী হল কেন ?
চতুর না হলে এরা আমাদের সমাজে এত সহজে মিশে গেল কিভাবে ? বীর মুক্তিযোদ্ধারাই বা এদের বাঁচাতে তৎপর হল কেন ?
যারা পালিয়ে গিয়েছিল,তাদের না হয় এখন ধরে ধরে বিচার করা দরকার পড়ছে,মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরপরই সশস্ত্র এই রাজাকারদের ধরে ধরে কচুকাটা করা হয়নি কেন ? স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া থেকেই কি এটা করা যেত না? তাতে কি বিশ্ব আমদের বর্বর জাতির সীল মেরে দিত ? স্বাধীনতার পরপর এ ধরনের প্রতিক্রিয়া অস্বাভাবিক নয়।ক্ষত থেকে রক্ত গড়িয়ে শুকিয়ে যেতে দেয়ার কোন দরকার ছিল কি ? আমরা কি খুব মহানুভব জাতি ? চারপাশে যে দ্বন্দ্ব আর খুনখারাবি দেখি, তাতে তো এমন কিছু মনে হয়না।এইত কদিন আগে বিডি আর এর বিদ্রোহ দেখলাম। খুনের পাশাপাশি যে পৈশাচিকতা দেখেছি তাতে তো নিজের লজ্জা লাগে।এখন তো এই রাজাকাররা অনেকের আত্মীয় স্বজন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষে্র বাইরে এদের কতজনের বিচার করা সম্ভব হবে ? যারা আমদের মেধাশূন্য করেছে, যারা আমাদের অত্যাচার করেছে, যারা আমাদের স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে তাদের প্রতি এত মায়ামমতা দেখানোর কি দরকার ছিল ? যতই বিশেষ আদালত করা হোক না কেন, আরো কত বছর ধরে আমাদের এই দায় বহন করে চলতে হবে কে জানে ? আর এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রাজনৈতিক কচকচানি আরো কতকাল শুনতে হবে? আওয়ামীলীগের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতেই তো ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার কথা।তাইলে প্রতিদিন সকাল বিকেল সন্ধ্যা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে মাইক বাজিয়ে সভা করতে হয় কেন ? সভা তো করবে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি অথবা প্রজন্ম ৭১ এর সদস্যরা আর সাধারণ মানুষ,যারা ভুক্তভোগী,যারা বিবেক এর দায় আর জাতির অসমাপ্ত কাজের জন
দেশী রাজাকারদের খতম করা গেলে, এখন পাকবাহিনীর যারা এই যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিল তাদের দিকে হাত দেয়া যেত।
এনিওয়ে, দেরীতে হলেও একটা কিছু হচ্ছে।দেখা যাক কতদিন আমাদের এই জোশ থাকে।বাঙ্গালীর কোন কিছুর পেছনে জোঁকের মত লেগে থাকার ক্ষমতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।এইজন্যই বলছিলাম আমাদের ভিটামিনের অভাব আছে।
পোস্টটা আবার পড়েন। নিজের কমেন্টগুলোও পড়েন। ঘটনাগুলো এমন:
১. হাসান ফেরদৌস নামের একটা লোক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে আগেও মিষ্টি মিষ্টি বালছাল কথা বলেছে।
২. সেই একই হাসান ফেরদৌস এবার এসে কোঁকাচ্ছে ঘ্যাঙাচ্ছে, যে মওদুদীর বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যেখানে প্রকৃতপক্ষে মওদুদীর বইয়ের ওপর সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা তুলে নেয়া হয়েছে। হাসান ফেরদৌস মূর্খের মতো না জেনে কলম ধরেছে, যেমনটা আলুপেপারের আরো বড় বড় মিষ্টকলাভোজী কলামিষ্টোরা ধরে।
৩. হাসান ফেরদৌসের এই বুদ্ধিবৃত্তিক কুক্ষিনৃত্যের সমালোচনা করে মুর্শেদ একটা পোস্ট দিয়েছে।
৪. আপনি এসে বলা শুরু করেছেন, হাসান ফেরদৌস লেখকমাত্র। তার কোনো দোষ নাই। দোষ সব পাড়ার লোকের।
৫. চিবি দিয়ে ধরার পর কথা ঘুরাচ্ছেন।
মক্সুদীয় ত্যানা প্যাঁচানো থামান। খুদাপেজ।
হসান ফেরদৌসের এই কলামটা পড়িনি, কারণ হাসান ফেরদৌসের কোনো লেখাই আমি পড়ার আগ্রহ পাইনা তার একটি 'বিশেষ' কলাম পড়ার পর থেকে। বেশ অনেকদিন আগেই এই ভদ্রলোকের একটা কলাম পড়েছিলাম প্রথম আলোতে, একটি মন্তব্যে হিমু সেটার লিংক দিয়েছেন দেখলাম। যুদ্ধাপরাধিদের ক্ষমা করা হবে কিনা এই প্রশ্ন নিয়ে যে কনফিউজড তার যেকোনো লেখা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে নেয়া/বিবেচনা করা উচিত বলে আমি মনে করি।
এই কলাম লেখকের অন্য কলামের রেফারেন্স টেনেছি, এটা নিয়মবহির্ভূত হতে পারে, তাই পোস্ট লেখকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
১. হাসান ফেরদৌস ভুল তথ্যের উপর তার লেখাটি শেষ করেছেন। বাংলাদেশে মউদুদীর বই নিষিদ্ধ করা হয়নি, মউদুদীর বইয়ের বিতরন ও সংরক্ষণ থেকে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা তুলে নেয়া হয়েছে মাত্র। সরকারী অর্থব্যয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারী গ্রন্থাগার আর ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যে বই সরবরাহ আর সংরক্ষন করা হয়, শুধু সেখান থেকেই মউদুদীর বই বাতিল বা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হাসান ফেরদৌস যদি মউদুদীর বই ক্রয় করে বাংলাদেশে তার নিজস্ব বইয়ের তাকে সংরক্ষণ করেন, তাতে তো কোন বাধা নেই (যেমন বাধা আছে "স্যাটানিক ভার্সেস" এর ক্ষেত্রে)।
২. মউদুদী নারী নেতৃত্ব হারাম বলে ফতোয়া দিয়েও ফাতেমা জিন্নাহকে সমর্থন দিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার "সক্রিয় বিরোধীতা" করার জন্য জামায়াতকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের কোন সরকার যদি কোন কারনে জনগনের অর্থ ব্যয়ে মউদুদীর বই ক্রয় করে তা পাঠাগারে সংরক্ষণে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তাকে "ধর্ম ভিত্তিক বই নিষিদ্ধ করন" বলে দাবি করা নিতান্তই হাস্যকর।
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
জামাতীরা এই কাজ করছিলো আমিও এই রকম কিছু শুনেছিলাম। এইটা বন্ধ করা খুব দরকার ছিলো। কলামলেখকরা পুরোটা না জেনেই দেখা যায় কলাম লেখেন!
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ হয়েছে তাতেই হাসান সাহেব মওদুদী নিষিদ্ধ হয়েছে বলে কান্নাকাটি করে কলাম ফেঁদে বসলেন! সম্পাদক সাহেবও এই তথ্য প্রচার হতে দিলেন!!
এই ব্যাপারটা মওদুদীর ওপর চালায়ে দিয়ে অনেকে পার পেতে চায় কিন্তু এই সিদ্ধান্তটা মূলত তৎকালীন জামাতে ইসলামি-পূর্ব পাকিস্তানের আমীর গোলাম আযমের নেয়া। ১৯৭১ সালে জামাতে ইসলামি-পূর্ব পাকিস্তান মোটামুটি স্বাধীনভাবেই তাদের সিদ্ধান্ত ও যুদ্ধকালীন কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলো।
সাধু সাধু সাধু ...
পুনশ্চ : সাধু সাধু সাধু'র ইমো নাই?
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
@ বোহেমিয়ান
তার বই যে দেশব্যাপী নিষিদ্ধ হয়নি, এই সামান্য তথ্যটুকু যাচাই না করে একটা আগডুম-বাগডুম ছাপানোর দায়-- লেখক না প্রথম আলো-- কার বেশি কে জানে! আসলে ব্লগার হবার যন্ত্রণা আছে, হাবিজাবি কিছু লিখলেই হয় না, পাঠক চেপে ধরে। পত্রিকার কলাম লেখায় তো আর তা হয় না। তাই "যেমন খুশি তেমন সাজি" উৎসব।
@ তানভীর
দুটো বিষয় তো আসলে আলাদা। জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীর পাকিস্তানের সামরিক শাসনের প্রতি সমর্থন ছিল। কিন্তু যখন ১৯৫৩ সনে লাহোরে জাতিগত দাঙ্গা সৃষ্টির জন্য পাকিস্তান সরকার তার মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করলো (যা পরবর্তীতে যাবজ্জীবন কারাদন্ডে নামিয়ে আনা হয় এবং অকার্যকর থাকে), তখন তিনি অবস্থান বদল করেন। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে আবার পাকিস্তানের সামরিক জান্তাকে সমথর্ন দেন। জাতিগত দাঙ্গা সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে তার এই অবস্থানকে বাংলাদেশ সরকার আমলে নিতেই পারে।
পূর্ব পাকিস্তানের জামায়াত কেন কী ভুমিকা পালন করলো, তার দায় পূর্ব পাকিস্তানের জামায়াত ও তার সৃষ্ট রাজাকার, আল-বদর, আল-শামসের স্থানীয় নেতৃত্বকেই নিতে হবে। তবে এটাও ঠিক, আজকাল অনেকেই অনেক কথা বলছেন। (একটা পোস্ট দিব ভাবছি, তথ্য-উপাত্ত এক করছি)
@ সুমন চৌধুরী
-----------
চর্যাপদ
-----------
চর্যাপদ
স্যাটানিক ভার্সেসের সাথে মওদুদীর বইয়ের তুলনা আসে না। মওদূদীর বই হলো ভিটামিনের মোড়কে আফিম, আর স্যাটানিক ভার্সেস হলো আফিমের মোড়কে আফিম।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আরেকটা বিষয় খেয়াল রাখা দরকার- স্যাটানিক ভার্সেস ছিলো ফিকশন, সাহিত্য। আর মৌদুদীর বই নিরেট রাজনৈতিক, সশস্ত্র জিহাদের কর্মপরিকল্পনা।
আঁতলামীর ঠেলায় আমরা অনেকেই ভুলে যাই যে, ইচ্ছে কিংবা অনিচ্ছেয় আমরা প্রত্যেকেই রাষ্ট্র নামের একটা আইনীকাঠামোর অন্তর্ভুক্ত। প্রত্যেক রাষ্ট্রের একটা সাংবিধানিক চরিত্র থাকে, সেই চরিত্র ও সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা থেকে রাষ্ট্রকে অনেক বিধিনিষেধ আরোপ করতে হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও ইউটোপিক নয়। যেখানে মতপ্রকাশের পূর্ন স্বাধীনতা আছে সেখানেও গনহত্যার সপক্ষে কিংবা মানবতা বিরোধী মতবাদ আপনি প্রচার করতে পারবেননা। রাষ্ট্র এখানে বাগড়া দেবেই। এটা তার আইনি দায়িত্ব।
নিরংকুশ স্বাধীনতা একটি ভ্রান্ত ধারনা মাত্র। তাহলে একাকী মানুষ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, জাতিসংঘ এইসব বিধিবদ্ধ সংগঠন গড়ে তুলতোনা।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
সেটাই!
যুক্তি-তর্ক-বিশ্লেষণ ভালো লাগলো!
রোমেল চৌধুরী
"স্যাটানিক ভার্সেস" ইসলামের বিরুদ্ধে কুৎসা গাইতে লেখা হয়েছিলো- এই বাজে কথা পড়ামাত্র আমার মনে সন্দেহ জেগেছিলো যে হাসান ফেরদৌসের ভুল হচ্ছে কোথাও। মওদুদীর বই আসলে নিষিদ্ধ করা হয় নি- এটা জেনে বুঝতে পারলাম আমার সন্দেহ সঠিক।
মওদুদীর বই এর ওপর সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ করানোতে যারা ইহ ও পরলৌকিক অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন এটা তাদের মার্কেটিং ক্যাম্পেইন। একটা পণ্য বিক্রি বাড়ানোর জন্য যেভাবে সেলিব্রেটিদের হাতে ওই পণ্যটি ধরিয়ে ছবি তোলানো হয়, ঠিক সেরকম।
সোয়াদ
কোনও গ্রন্থের ওপর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা থাকবে কীনা, তা রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন সরকারই সবসময় ঠিক করে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে কোনও সরকার গ্রন্থ-পৃষ্ঠপোষকতার ব্যাপারে এই প্রথমবার একটি গণমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে করে ভণ্ড মুসলমান মওদুদীর মুরীদদের পশ্চাদ্দেশ চুলকোলেও কিছু যায় আসে না।
১৯৫৩ সালে ৩,৫০০ আহমদীয়া মুসলমানদের খুনের জন্য দায়ী মওদুদীকে মৃত্যূদণ্ড দেওয়া হলেও সৌদী বাদশার হস্তক্ষেপে প্রাণে বেঁচে যায় এই ভণ্ড, ধর্মব্যবসায়ী জানোয়ারটা। আমেরিকায় হলে হিটলারের নারকীয় ইহুদীনিধনের ঘোর সমর্থক হিশেবে এই পশুটাকে অ্যান্টিসেমিটিক আইনে ফেলে হয় যাবজ্জীবন জেলে পচিয়ে মারা হত, নয় ইলেকট্রিক চেয়ারে বসানো হত। এর চ্যালাচামুণ্ডা গুআজম-মইত্যা-মুজাহিদ-কামারু কসাইরা ১৯৭১ সালে কী করেছিল, সেটা বাঙালি মাত্রই জানে (পাকিপয়দারা অবশ্য জানে উল্টোটা)। এরা ভণ্ড, জানোয়ার, এদের একমাত্র ধর্ম খুন-ধর্ষণ-লুণ্ঠন। দুঃখজনক ঘটনা হচ্ছে, আজকাল এদের সমর্থক হিশেবে কিছু লেখাপড়া জানা অসৎ কলামিস্ট ভুঁই ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে। তাদের লেখা প্রকাশে সাহায্য করছে দেশপ্রেম- ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কিছু সংবাদপত্র।
এই কিসিমের কিছু কিছু ছাগু আছে যাদের মেথাড হইলো,
প্রথমে :
যেহেতু ক, গ, ঘ , খ'দেরও নানান সমস্যা আছে সুতরাং ঙ'র অপরাধগুলা আলাদা কৈরা কওয়া যাইবো না।
এর পর পুরা ক-বর্গ ধইরা গালি দিলে কয়:
যেহেতু সবারই কিছুকিছু সমস্যা আছে সুতরাং সমস্যাগুলা সমস্যা কী না সেইটাই সবার আগে বুঝতে হবে। বুইঝা কিছু কর্তেই হবে এমন না। হয়তো কোন একদিন জানা যাবে অপরাধ বৈলাই হয়তো কিছু নাই। এই বিপুল মহাবিশ্বের কতটাই বা আম্রা জানি?
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
মৌদুদী প্রসঙ্গে এট্টু নস্টালজিক হইলাম।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
শফিকুর রহমানের "গোলাম আযমের ইসলামঃ নাৎসীবাদ ও ফ্যাসীবাদ" এবং "পার্থিব জগৎ" বইদুটার কোন ই-সংস্করনের খোঁজ জানা আছে কারো ? অনেক দিন আগে পড়েছিলাম, কিন্তু এখন খুঁজে পাচ্ছি না। দুটো বইয়েই মওদুদী আর গোঃআঃ -দের উপরে চমৎকার এবং দীর্ঘ লেখা আছে।
প্রথম বইটা (হার্ডকপি) আমার কাছে আছে, কোনও 'সেল' এ কিনেছিলাম, ১৯৯৪ কিংবা ১৯৯৮ সালের সংস্করণ বোধহয় তারপর বহুদিন আউট অফ প্রিন্ট ছিল... গতমাসে ঢাকায় গিয়ে নতুন প্রিন্ট দেখলাম... চারুকলার ধার ঘেঁসে ফুটপাথের বইয়ের দোকানটাতে, দেবদারু নাম বোধহয়
এইধরনের বইগুলোকে লেখকের অনুমতিসাপেক্ষে ই-বই বানিয়ে ফেলা উচিৎ
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মনের মুকুরে বড্ড রসিক, ঠিক আজকের দিনেই এই পোস্টের কথা মনে করিয়ে দিল।
লতিফ সিদ্দিকীর বাকস্বাধীনতা প্রসঙ্গে প্রথম আলো গং এর দৃঢ় অবস্থান দেখার প্রত্যাশায় আছি।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন