এই একই শিরোনামে একটি লেখা এসেছে সমকালে ৯ই অক্টোবর ২০১০ সংখ্যায়। মূলতঃ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স নেবার সিদ্ধান্তের প্রতি বিষোদগার করে জনৈক গালিব লেখাটি লিখেছেন।
লেখাটির মধ্যে ধনীদের প্রতি বিষোদগার আছে। যেন সৎউপর্জনে ধনী হওয়া অর্জন নয় বরং একটি অপরাধ। উপরন্তু গাঁটের পয়সা খরচ করে পড়াশোনা করতে চাওয়াও মনে হয় বিরাট অপরাধ। তিনি বলেছেন:
এ বাস্তবতার বিপরীতে ঢাকায় ৭০-৮০ হাজার টাকা মাসিক বেতন দিচ্ছে ধনীর সন্তানরা। যাক সমস্যা নেই, যাদের টাকা আছে তারা খরচ করুক।
গালিব সাহেবের এই যুক্তিটি অকাট্য যে, যে দেশে পর্যাপ্ত স্কুল কলেজ নেই সে দেশে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ইউনিভার্সিটি শুধুমাত্র শিক্ষাকে বানিজ্যিকীকরণেরই অপচেষ্টা। উপরন্তু এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কতখানি পড়াশোনা হয় সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। কিন্তু উল্টো আমার মনে হয় ঠিক এই কারনেই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এগিয়ে আসা উচিৎ সান্ধ্য ইউনিট নিয়ে।
আধুনিক যুগের মানুষ ব্যস্ত। তাদের পেটের প্রয়োজনে চাকরী বাকরি করতে হয় দিনের বেলায়। ব্যবসার কাজে এদিক সেদিক ছুটে বেড়াতে হয়। তাই শিক্ষা প্রদানের পদ্ধতি ক্রমাগত হয় উঠছে ফ্লেক্সিবল। গড়ে উঠছে সান্ধ্য শিক্ষা, অনলাইন শিক্ষা সহ নানাবিধ পদ্ধতি। কোনো কোনো পদ্ধতি প্রশ্ন সাপেক্ষ হলেও আস্তে আস্তে সেটা প্রধান শিক্ষার সাথে প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারছে।
এক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো এগিয়ে আসলে লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না। প্রথমতঃ গরীব ছাত্ররা সুলভ মূল্যে শিক্ষা পাবেন। দ্বিতীয়তঃ প্রতিযোগীতা বেড়ে গিয়ে শিক্ষার মান উন্নত হবে। তৃতীয়তঃ আরো অনেক বেশী শিক্ষার্থী শিক্ষিত হতে পারবে।
গালিব সাহেব অপর্যাপ্ত স্কুলের যে যুক্তিটি দিয়েছেন সেটি একটি সমস্যা হলেও এই বিষয়ের সাথে সর্ম্পকযুক্ত নয়। এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি সমস্যা এবং এর সমাধান ভিন্ন ভাবে করতে হবে। এই একটি অসর্ম্পকিত যুক্তি ছাড়া বিভিন্ন ভারী কথার আড়ালে গালিব সাহেব আর তেমন কোন যুক্ত দেখাতে পারেননি লেখাটিতে।
তাই বলি আবেগ নয়, বরং আসুন যুক্তির আলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্সের সিদ্ধান্তটাকে স্বাগত জানাই।
মন্তব্য
দ্বিমত পোষণ করছি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য কোর্স চালু হলে একই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অর্থনৈতিক বিভাজন তৈরি হবে শুধু, প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে পড়ালেখার মান উন্নত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখি না।
আর সৎভাবে ধনী হওয়া অবশ্যই ভালো, কিন্তু বাংলাদেশে এখন কয়জন সৎপথে ধনী হন তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ থাকে। কোনো সৎ ছাপোষা কেরানির সন্তান মেধার জোরে যেই প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পাবে, একই প্রতিষ্ঠানে যদি কোনো ঋণখেলাপির সন্তান টাকার জোরে ঠাঁই পায়, তাহলে খারাপ দেখায় বৈকি!
একটা আধা-অফটপিক কথা বলি। দেশের সব মানুষের তো স্নাতক পর্যায়ে পড়ালেখার দরকার নেই আসলে। অনেকের কাছেই ডিগ্রি একটা দেখাবার জিনিস। এমন একটা শিক্ষাব্যবস্থা চালু হোক যেখানে তারাই পড়বে যারা আসলেই পড়তে চায়, যাদের পড়ে সেটা কাজে লাগানোর ক্ষমতা আছে। সবাই যদি ডিগ্রি চায়, তাহলে তো ঘরে ঘরে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে বসতে হবে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
এই "অর্থনৈতিক বিভাজনটা" আসলে কী? এটা কী দিনের কোর্স গুলোতে গরীবদের সন্তানদের স্থান দেয়া হবে, রাতে ধনীদের? কিভাবে করা হবে এটা? ভর্তি পরীক্ষার ফর্মের ধনী-গরীব দুটা কোটা থাকবে, নাকি বাবার মাসিক উপার্জনের কথা জিজ্ঞেস করা হবে? এভাবে দেখাটা একটু ফার-ফেচড্ হয়ে গেল না?
বরং আমার মনে হয় বিভাজনটা অন্যভাবে হবে (বা হওয়া উচিৎ)। দিনে পড়বে ফুল টাইম ডেডিকেটেড ছাত্ররা - কার বাপের কত পয়সা আছে সে বিবেচনা না করেই। রাতে পড়বে পেশাজীবিরা - এক্ষেত্রে কার কত পয়সা আছে সেটা বিবেচ্য হবে না।
সুতরাং এই পয়েন্টটিতে আমি একমত হতে পারলাম না।
সৎ ধনীর বিষয়টি এসেছিল লেখকের সুত্র ধরে। মূল বির্তকে মনে হয় এটা সরাসরি সর্ম্পকিত নয়। এ বিষয়ে তোমার সাথে অনেকটাই একমত। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আসায় মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ-মধ্যবিত্তদের সন্তানদের একটা সুবিধা হয়েছে বলেই আমার মনে হয়।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
এটা আসলে বিরাট একটা ভুল অবস্থান। ২০০৫ এ যখন মাস্টার্স করতে আসি তখন আমার সাথে পড়ে ভারতের সুদূর গ্রামের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হয়ে আসা ছেলে নিলেশ। সে আমাকে জিজ্ঞেস করে বাংলাদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ কয়টা? তখন বিআইটি গুলো সহ আমি বলেছিলাম আটটা। শুনে সে হেসেই বাঁচে না।
আসলে বাংলাদেশের মত ঘন বসতিপূর্ণ এলাকার সার্বিক উন্নতির জন্য আরো বেশী (এবং বিভিন্ন এলাকায় ছড়ানো) ইউনিভার্সিটি দরকার। যত বেশী 'সত্যিকারের' স্নাতক হবে জাতি হিসেবে আমরা ততই আগাবো। আগাবোই। এর কোন বিকল্প নেই।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
ভারত যে জনসংখ্যার দিক দিয়ে প্রায় ৭.৩ গুণ এবং ক্ষেত্রফলের দিক দিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে অন্তত ২২.২৮ গুণ বড় (গড়ে কত স্কয়াল কিলোমিটারে ১টা কলেজ; অর্থাৎ দূরত্ব) সেটা মনে করিয়ে দিয়ে তুলনাটা করালে নিলেশ অতটা হাসতে পারতো না মনে হয়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
জনসংখ্যার দিক দিয়ে আট গুন হলেও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রায় একশগুন বেশী। শুধু কর্ণাটকা আর তামিল নাড়ু মিলিয়েই এক হাজার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। সুত্র
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
উল্লেখিত সুত্রে গিয়ে আরেকটু ঘাটতে গিয়ে আরেকটি ব্যাপর চোখে পড়ল। এখানে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন শাখাকে একটি করে কলেজ গণ্য করা হয়েছে। অর্থাৎ মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ইত্যাদি ইঞ্জিনিয়ারিংকে একটি করে কলেজ বলা হয়েছে। গড়পড়তা মোট নাম্বার কে তাই ৫ দিয়ে ভাগ করলেও ২০০-৩০০র মত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হয়।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মন্তব্য এডিট করেছিলাম।
একশকে আট ভাগ করলে হয় সাড়ে বার ... অর্থাৎ ভারতের ক্ষেত্রফল আমাদের সাড়ে বার গুণ হলে কলেজের ঘনত্ব সমান হত। ভারতের ক্ষেত্রফল কিন্তু ২২গুন বেশি। কাজেই এ্যাকসেসিবিলিটির ব্যাপারও আছে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
শিক্ষার পশ্চাদপদতা কামনা করছি এমনটা কিন্তু না। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা অনেকাংশেই সার্টিফিকেটনির্ভর। এবং আমাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠাও দক্ষতার চেয়ে সার্টিফিকেটের উপর বহুলাংশে নির্ভর করে। কিন্তু আদৌ কি আমরা দক্ষ জনগোষ্ঠী পাচ্ছি? ছোট একটা উদাহরণ দিই। আমাদের অভিনয়-মডেলতারকাদের অনেককেই দেখবেন তাদের আজীবন স্বপ্ন ছিলো অভিনয়ে আসার বা মডেলিং করার। কিন্তু তবু তারা অমুকখানে চিকিৎসা-প্রকৌশল-বিবিএ শিক্ষা নিচ্ছেন। কেন? তাদের স্বপ্নপূরণের জন্য তো এসব সার্টিফিকেটের প্রয়োজন ছিলো না, কিংবা তারা তাদের শিক্ষামাফিক পেশায় ফিরেও যাচ্ছেন না। সার্টিফিকেটনির্ভর শো-অফের লোভে তারা কি আরেকজন সম্ভাব্য বিদ্যার্থীর সিট অপচয় করছেন না? তাদের পড়ালেখায় ব্যয়িত অর্থের(তা হোক বাবার বা সরকারের) অপচয় করছেন না? সে অর্থেই বলেছি সবার স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার প্রয়োজন নেই। এই প্রদর্শনপ্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। যারা আসলেই পড়তে চায়, পড়ে কিছু করতে চায় তারাই পড়ুক।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
বুনোপা রক্স। (গুড়)
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
এই মন্তব্যটা লাইক।
এটুকুতে আমিও একমত বাই দি ওয়ে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আরে! কী বলো? অ্যাগ্রি করতে পারলাম না! সান্ধ্য কোর্সের সাথে তো নিয়মিতরা পড়বে না, তারা সরাসরি তুলনা করবে কেমন করে? যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভয়াবহ ভর্তি পরীক্ষা পুলসিরাত পার করে ভর্তি হয় তাদেরতো উচিতই না সান্ধ্যদের সাথে নিজেদেরকে তুলনা করতে যাওয়া! তাছাড়া ভুলে যেও না, যারা কর্মজীবি, বা ধর অসুস্থতা বা এমন কোন কারণে যিনি আগে পড়া অসম্পূর্ন রাখতে বাধ্য হয়েছিলে আল্টিমেটলি এমন ব্যক্তিরাই কিন্তু বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সান্ধ্য কোর্সে পড়েন। আর শিক্ষার মান নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে নিচের বড় মন্তব্যে আমার ধারণা কিছু বলেছি।
আরেকটা ব্যাপার, আমি কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে দেখেছি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও ইদানীং অনেক রকম পরিবারের অনেক আর্থ-সামাজিক ব্যাকগ্রাউন্ডের ছেলেমেয়েকে দেশের আনাআচ কানাচ থেকে এসে পড়ছে! ওখানে সবাই উচ্চ-বিত্তের সন্তান নয়! আর না, সবার মধ্যেই অর্থনৈতিক বিভাজন দিয়ে বন্ধুত্ব বা পড়ালেখায় পার্থক্য হয় নাই। এটাও নেহায়তই আমার অবসার্ভেশন অবশ্য। কাওকে মানতেই হবে এমন নয়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আপনার কথা পছন্দ হল
আমি একটু অপেক্ষা করবো আরো মতামত জানার জন্য।
আপাততঃ আমার জানতে চাওয়া- বাইরের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ফুলটাইম ও পার্টটাইম পড়ার সুযোগ আছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নেই কেনো?
নাকি আছে, আমি জানিনা?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আমিও ঠিক ধরতে পারলাম না সান্ধ্য কোর্সের সাথে অর্থনৈতিক বিভাজনের সম্পর্ক।
জনাব গালিব এর লেখা পড়ে মনে হলো সান্ধ্য কোর্সে শুধুমাত্র বিত্তবানরাই সুযোগ পাবে! কিন্তু কোনো ব্যাখ্যা বা রেফারেন্স নাই!
love the life you live. live the life you love.
আপাতদৃষ্টে বিভাজন কিছু নাই। কিন্তু সান্ধ্যকোর্স গুলার ফী নিয়মিত কোর্সের ফী এর চেয়ে বেশি(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন একটা ডিপার্টমেন্টে প্রস্তাবিত সান্ধ্যকোর্সে তাই ছিল)। তো যারা সান্ধ্যকোর্সে পড়তে আসবে, তাদের গড় অর্থনৈতিক অবস্থা তো নিয়মিত কোর্সে যারা পড়তে আসে, তাদের চেয়ে বেশি হবেই। এখন আসা যাক, শিক্ষক সংখ্যা নিয়ে। রাতারাতি তো শিক্ষক সংখ্যা বেড়ে যাবেনা। সুতরাং শিক্ষকদের তাদের পরিশ্রম ভাগাভাগি করতে হবে। সান্ধ্যকালীন বেশি বেতন/ফীয়ের সুফল তো শিক্ষকরা পাবেন ই। তো, উনি কোন কোর্সের প্রতি বেশি যত্নবান হবেন?
সজল
এটা অতি সরলীকরণ। সান্ধ্য কোর্সের মূল্য বেশী কেননা শিক্ষকদের অডড সময়ে অতিরিক্ত কাজ করতে হচ্ছে। পয়সা বেশী পাচ্ছে বলে সান্ধ্য শিফটে বেটার পড়াবে এটা অতি সরলীকরন। আবার পয়সা বেশী দিচ্ছে বলে সাধারণ ভাবে ছাত্ররা গড়পড়তা পয়সাওয়ালা এটাও অতি সরলীকরন। পয়সা বেশী দিচ্ছে কেননা তারা এজুকেশনটা নিজের সুবিধেমত সময়ে নিতে পারছে - নিজের পকেটে বেশী পয়সা আছে বলে নয়।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
কিছুটা সরলীকরণ হয়ে গেছে মানছি। কিন্তু প্রায়োরাটাইজ করতে হলে টাকা যেখানে বেশি পাওয়া যাবে সেখানে বেশি চেষ্টা থাকবে, এটাতো আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছেনা। নিজের সুবিধামত শিক্ষা নিতে পারার বিষয়টা ভেবে দেখিনি আসলে, এখন আপনার কথায় ঠিকই মনে হচ্ছে। তবে গড় অর্থনৈতিক অবস্থার ক্ষেত্রে বলা যায় প্রাইভেট ভার্সিটিতে এখন মধ্যবিত্তরা ও পড়তে আসে, কিন্তু বড় অংশ কি উচ্চবিত্ত পরিবারের নয়?
কিছুটা বৈষম্য হয়ত তৈরী হবে, তবে সেটা উল্লেখযোগ্য পর্যায়ের হবে কিনা বলতে পারছিনা । সব কোর্সই চালু হোক, তবে সবার যেন অ্যাক্সেস থাকে।
সজল
সান্ধ্য কোর্স হোক। মধ্যরাতের কোর্স হোক। ভোরের কোর্স হোক। সব হোক। কিন্তু তা হোক রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের জন্য সমান উন্মুক্ত ও সমান সম্ভাব্য।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
জনাব গালিবের লেখাটা পড়লাম। এই প্রসঙ্গে কিছুদিন আগে বুয়েটে সান্ধ্যকালীন কোর্স সংক্রান্ত একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে .... ...
বুয়েট, ডুয়েটে মাস্টার্স কোর্সগুলো সান্ধ্যকালীন। ওখানে ভর্তি হতে উপযুক্ত যোগ্যতার যেমন দরকার হয়, তেমনি এটাতে কোর্স ফী-ও সামান্য আর পড়ালেখার ব্যাপারে ছাড় দেয়া হয় না বলেই জানি।
সান্ধ্যকালীন আন্ডারগ্রাজুয়েট কোর্স চালু হলে অবশ্যই রিসোর্সের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আবার এটার উল্টা চিন্তা হল, টেকনিক্যাল লেখাপড়ায় ব্যবহৃত ল্যাবের যেসব যন্ত্রপাতি কাজে লাগবে, সেগুলো সার্ভিসিং করার যথেষ্ট সময় পাবে কি না। একই কথা প্রযোজ্য শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও। তাঁরা যদি ৮ ঘন্টার জায়গায় ১২ ঘন্টা ডিউটি করেন তবে সেটা তাঁদের এফিশিয়েন্সি এবং কোয়ালিটি আউটপুট দেয়ার ক্ষমতাকে খারাপভাবে প্রভাবিত করবে কি না ... ... মনে রাখতে হবে যে সমস্ত শিক্ষকই কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে খন্ডকালীন হিসেবে পড়ান না।
এখন যদি সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু হয়, তবে নিশ্চয়ই শিক্ষকগণ একই সরকারী বেতনে সেই অতিরিক্ত সার্ভিস দিবেন না। অতিরিক্ত বেতন কি তবে সরকার দিবে?
এর উত্তর আমার জানামতে "না"। এই বেতন তাঁরা ঐ ছাত্রদের কাছ থেকে আদায় করবেন, কোর্স ফী হিসেবে। কিন্তু সরকারী অবকাঠামোর সুবিধা ব্যবহার করেন বলে (ক্লাসরুম, ল্যাব, বিদ্যূত, আবাসন সুবিধা ইত্যাদি) কোর্স ফী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হতে কম হওয়াই যুক্তিযুক্ত। কিন্তু আদতে সেই ফী কত হবে সেটা শুরু না হলে জানা যাবে না।
যদি ১২ ঘন্টা ডিউটির বদলে সরকার ঠিক করে যে এজন্য ৫০% অতিরিক্ত শিক্ষক এবং অন্যান্য সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ দেবে যেন কারও ৮ ঘন্টার বেশি অফিস না করতে হয়, এক্ষেত্রে রোস্টার হিসেবে কেউ অফিস করবে ৯টা-৫টা, কেউ করবে ২টা-১০টা। তাহলে এই কোর্সের জন্য আলাদা ফী নেয়ার যৌক্তিকতা থাকে না।
এই প্রসঙ্গে জানানো প্রয়োজন যে, আমি শুধুমাত্র একটা চাকুরী-ই করি, এবং সেখানে সান্ধ্যকালীন সময়ে ক্লাস থাকলে দিনে/দুপুরের আগে ক্লাস দেয়া হয় না ... ... যেন বিশ্রামের যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। এতে অফ-পিক আওয়ারে যাতায়াত করার সুবিধাটা উপভোগ করি। চাইলে সকালে বাজার/ব্যাংকিং বা অন্য ব্যক্তিগত কাজগুলোও করে ফেলা যায়। সমস্যা হল, সান্ধ্যকালীন সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নেয়া কমে যায়। ব্যক্তিগত ভাবে আমি সান্ধ্যকালীন ক্লাস নিয়ে খুশি।
এখন আসি বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র আপত্তিজনিত বিষয়গুলোতে। মূল আশঙ্কা হল কোয়ালিটি কন্ট্রোল ঠিকভাবে করা হবে কি-না সেটা। কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী পেলে সেটা সাধারণ শিফ্টে পড়া ছাত্রদের সাথে সমতূল্য ডিগ্রী হবে।
বুয়েটের প্রস্তাবে ছিলো যে, এই সিস্টেমে শিক্ষদের সন্তান বা পোষ্যদের একটা কোটা থাকবে যেটা ২ কি ৫ পার্সেন্ট। যেই সন্তান বা পোষ্য ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে বুয়েটে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি সে কিন্তু এই সুযোগে ঠিকই বুয়েটের ডিগ্রী নিয়ে বের হয়ে যাবে ... ... চাই কি এই ধারাবাহিকতায় শিক্ষকও হয়ে যেতে পারে (কিছু ক্ষেত্রে বুয়েটেও ভাল গ্রেড পাওয়া সবসময় পরীক্ষার খাতায় কী লেখা হয়েছে তার উপর নির্ভর করে না)। এই ব্যাকডোরের কারণেই প্রতিবাদ করেছিলাম।
সান্ধ্যকালীন কোর্স করতে হলে চাকুরীরত হতে হবে এমন কোনো শর্ত নাই। কিন্তু তারা যেহেতু ফুল টাইম ছাত্র হতে পারবে না তাই ফুল টাইমের সুবিধা ... হলে আবাসন, ফ্রী-তে পড়া ইত্যাদি পাবেনা -- এটা যুক্তিসংগত।
টাকা দিয়ে ওখানে পড়তে হলে কি সাধারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মত ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হতে হবে? টাকা পয়সার খরচ দেখে অনেক মেধাবী কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় একটুর জন্য চান্স পায় নাই এমন অপেক্ষাকৃত যোগ্য ছাত্র হয়তো এখানে পড়তে আসবে না। কিন্তু আসল ভর্তি পরীক্ষাতে চান্সের আশেপাশেও আসতে পারে না এমন লোক/ছাত্রও টাকা-পয়সার সমস্যা না থাকাতে এখানে সুযোগ পেয়ে যাবে। অবশ্য যদি কোয়ালিটি কন্ট্রোল ঠিকমত হয় তাহলে দেখা যাবে এইসব ছাত্রও পাশ করে বের হতে পারবে না।
কাজেই বটম লাইন হল কোয়ালিটি কন্ট্রোল।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
লাইক্কর্লাম
মূল পোস্ট থেকে~
যেন সৎউপর্জনে ধনী হওয়া অর্জন নয় বরং একটি অপরাধ।
বাংলাদেশে সৎ উপার্জনে ধনী হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চাই
বাংলাদেশে সৎ উপার্জনে ধনী হওয়ার উপায় সম্পর্কে আমিও জানতে চাই। সিরিয়াসলি!
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
আমার বা আপনার মত কেউ বাইরে থেকে এজুকেশন নিয়ে দেশে ফিরে একটা এন্ট্রিপ্রিনিউরশিপে গেলেই সৎপথে ধনী হতে পারবে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমার বা আপনার মত কেউ বাইরে থেকে এজুকেশন নিয়ে দেশে ফিরে একটা এন্ট্রিপ্রিনিউরশিপে গেলেই সৎপথে ধনী হতে পারবে।
আমার মনে হয় পুঁজি একটা বড় নিয়ামক। নিজস্ব পুঁজি ছাড়া বাংলাদেশে চাকুরী করে ধনী হওয়া যেতে পারে, কিন্তু সফল উদ্দোক্তা হওয়া যাবেনা। শুধু বিদেশী শিক্ষা সম্বল করে বাংলাদেশে ফিরে সফল উদ্দোক্তা বনে গেছে, এমন কারো কথা জানতে পারলে সত্যিই খুব ভাল লাগতো।
মুর্শেদ, বিদেশী শিক্ষা বা দেশী শিক্ষা যেটাই থাকুক সেটা নিয়ে আপনার মতো মেধাবী কেউ বাংলাদেশে এন্ট্রিপ্রিনিউরশিপে গেলেই সৎপথে ধনী হতে পারবেন না। পুঁজির প্রয়োজনীয়তার কথা দুর্দান্ত অলরেডি বলে ফেলেছেন, সেটা খুব জরুরী একটা নিয়ামক। এর বাইরেও আরো অনেক নিয়ামক আছে যেটা আপনি কখনো বাংলাদেশে এসে এন্ট্রিপ্রিনিউরশিপে যাবার সুযোগ করতে পারলে দেখতে পাবেন। আমি একথা বলছিনা যে বাংলাদেশে সৎপথে কেউ ধনী হতে পারেন না, সেটাও পারা যায় তবে সেক্ষেত্রে শুরুটা করতে হয় অনেকটা পথ এগিয়ে থেকে। নয়তো স্বল্প বিনিয়োগ > স্বল্প লাভের দুষ্টচক্রে পড়ে থাকতে হবে। আপনি ১০০ টাকা বিনিয়োগ করে সৎপথে পাঁচ বছরে সেটাকে বাড়িয়ে ২০০ বা ৩০০ টাকা হয়তো করতে পারবেন। কিন্তু আপনি দেখতে পাবেন আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী সেটা পাঁচ বছরে ১০,০০০ বা ১,০০,০০০ টাকা করে ফেলেছে। পাঁচ বছরে যদি তারও মূলধন ৫০০ টাকার মধ্যেই থাকতো তাহলে আপনাদের দুজনকেই ধনী বলা যেতো, কিন্তু এখন তার তুলনায় আপনি নিতান্ত দরিদ্র মানুষ। আলাদীনের চেরাগ থেকে প্রাপ্ত তার এই বিপুল আয় গোটা বাজার ব্যবস্থাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে আপনার পক্ষে ঐ পুঁজি নিয়ে ভদ্রস্থভাবে টিকে থাকাই মুশকিল হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মন্তব্য খুব পছন্দ হলো। সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করার আগে অনেক কিছু নিশ্চিত করতে হবে আগে। এটা ঐ নির্দিষ্ট ডিপার্টমেন্টের উপরও নির্ভর করে যারা সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করতে চায়, এই হিসেবে যে পড়ালেখার মান না কমিয়ে একটা বাড়তি চাপ নেয়ার মতো অবস্থা তাদের আছে কিনা। টিউশন ফী কি বেশি হবে? হলে সমর্থন করি না। ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে কিনা? না হলে সমর্থন নেই। ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র যথাযথ হচ্ছে কিনা? সায়েন্সের সাবজেক্ট হলে ল্যাবের যন্ত্রপাতি সার্ভিসিং করার মতো যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে কি? যে সময় পাওয়া যাবে তার মধ্যে যন্ত্রপাতি সার্ভিসিং নিশ্চিত করা যাবে কি? (ল্যাব সহকারীদেরকেও অতিরিক্ত কাজ করতে হবে এ ক্ষেত্রে।) অতিরিক্ত শিক্ষক নেয়া হবে কি? না হলে পড়ালেখার সার্বিক মান নেমে যাবার একটা বড় সম্ভাবনা আছে। অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য শিক্ষকদে বাড়তি বেতন ও ল্যাব সহকারীদের অতিরিক্ত কাজের বেতন আসবে কোথা থেকে? বেশি পরিমাণ টিউশন ফী চাপিয়ে? তাহলে সমর্থন নেই। দিবাকালীন কোর্স ও সান্ধ্যকালীন কোর্স উভয় ক্ষেত্রে পরীক্ষার খাতা, অ্যাসাইনমেন্ট, ভাইভা, থিসিস ইত্যাদি একইরকম ভাবে ইভ্যালুয়েট করা হবে কি? সান্ধ্যকালীন কোর্সে কোনোরকম ছাড় দেয়া হবে না (বৈষম্য অর্থে) , এই ব্যাপারটা নিশ্চিত করা যাবে কি? এরকম আরো ব্যাপার আছে যা নিশ্চিত করা না গেলে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু সমর্থন করি না। এ প্রসঙ্গে নিজের ডিপার্টমেন্টের কথা চিন্তা করে দেখলাম, ডিপার্টমেন্টের সাথে যোগাযোগ কমে গেলেও খোঁজখবর তো পাই, আমার মনে হয়নি অন্তত আমার ডিপার্টমেন্টে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালু করার মতো অবস্থা হয়েছে। অন্য ডিপার্টমেন্টের অবস্থাও এর চেয়ে বেশি ভাল হবে এমন মনে হয় না।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়তি শিফট তৈরি করে টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তি আসলে একটা মিনি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির সমতুল্য।
এর পেছনের বাস্তবসম্মত কারণ হলো, পাবলিকের শিক্ষকরা প্রাইভেটে খ্যাপ মারার চেয়ে সান্ধ্য শিফটে পড়াতেই মনে হয় বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। প্রতি ঘন্টার বেতন প্রাইভেটের তুলনায় কিছু কম হলেও (যদি কম হয়) এতে তারা বেশ কিছু সুবিধা পাবেন। যাতায়াতের সময় বাঁচবে, ক্লাস স্কেজিউলে ফ্লেক্সিবিলিটি পাবেন আর সবচেয়ে বড়ো কথা নিজেদের অভয়ারণ্যে বিচরণ করতে পারবেন।
কিন্তু একজন শিক্ষকও তো মানুষ, আর একটু বেশি বয়সে উপচিতির চাইতে অপচিতির হার বেশি। দুর্ভাগ্যক্রমে দিনের দৈর্ঘ্য মাত্র ২৪ ঘন্টা এবং সৌরজগতে বড়ো ধরনের ঝামেলা না হলে এতে পরিবর্তন আসার কোনো আশু সম্ভাবনা নেই।
এমতাবস্থায় সেশন জটে জর্জরিত পাবলিক ইউনিতে অতিরিক্ত ব্যাচের ভারে এমনিতেই কাবু শিক্ষকেরা আর কতোটা বাড়তি লোড নিতে পারবেন, তা ভেবে দেখার বিষয়। প্রত্যেকটা কোর্সের প্রস্তুতিতে যে পরিমাণ সময় দেওয়া দরকার, তা দিতে পারবেন না বলেই মালুম হয়। প্রস্তুতিতে সময় দেন না বলে এমনিতেই আমাদের শিক্ষকদের একটা বিরাট অংশের বিরুদ্ধে কানাঘুষা কিংবা সোচ্চার অভিযোগ আছে। লোড বাড়ালে তারা আদ্যিকালের ট্রান্সপ্যারেন্ট স্লাইডগুলো কাটরিনার বেগে উলটানো আর বইয়ের নাম লিখে দেওয়ার বাইরে কি করতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে।
শিক্ষকদের বেতন বাড়াতে হবে; কিন্তু সেটা তাদের কাঁধে ডাবল লোড চাপিয়ে নয়। সোনার ডিমের হাঁসের গল্প সবাই জানি, তবে মানি না। শিক্ষকদের প্রাণ সেই হাঁস দূরের কথা, কই মাছের সাথে তুল্য হলেও পর্যাপ্ত সময় ও মেধা তারা দিতে পারবেন না।
সেমি অফ-টপিক: পরীক্ষা পেছানোর পেছনের কারণ হিসেবে আমার একটা থিওরি আছে। অতিরিক্ত লোড (বাড়তি ব্যাচ, প্রাইভেটে খ্যাপ, কনসালটেশন, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রেসপনসিবিলিটি) - এর কারণে শিক্ষকেরা তেমন ছুটি পান না। গ্যানজাম লেগে ভার্সিটি বন্ধ হলে তারা কিছুটা স্বস্তি পান। পরীক্ষা পেছালে বা পিএল বাড়লেও তাদের সুবিধা হয়।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সান্ধ্য কোর্স চালুর কোনো সমস্যা দেখি না। তবে সার্টিফিকেট এক হলে ভর্তি প্রক্রিয়া ও ছাত্র বাছাই মাপকাঠি এক হতে হবে। নয় তো ওগুলো ডিপ্লোমা কোর্সে পরিণত করা যায়। সমস্যা হলো, এত শিক্ষক কই?
সান্ধ্যকালীন কোর্স শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো কিছু আনবে না । বরং শিক্ষাকে + শিক্ষককে বাণিজ্যিকিকরন করে ফেলবে। টাকার বিনিময়ে যে শিক্ষা কেনা বেচা হচ্ছে তা এক ধরনের বিনিয়োগ.....পাবলিক প্রতিষ্ঠানগুলো রেভিন্যু আর্ণিং নয় বরং সেবাধর্মী। সো পাবলিক ভার্সিটিকে বিনিয়োগ...পরবর্তীতে প্রমোশন, সালারি ইনক্রিজ ইত্যাদি প্রফিটের মাপামাপির স্থান না বানানোই ভালো। এর জন্য প্রাইভেট ভার্সিটিগুলো রয়েছে। এবং তাদের জন্য উপযুক্ত নীতিমালা করা দরকার যেন ছাত্ররা কোয়ালিটি শিক্ষা লাভ করে।
তবে যদি মেধাভিত্তিক ও ননকমার্সিয়াল চিন্তা ভাবনা থেকে যদি সান্ধ্য ইউনিট করা যায়, যেখানে অ্যাডমিশন প্রসেস মেধা ভিত্তিক তাহলে চিন্তা করা যেতে পারে। এবং এর এর মূল্য সহনশীল ও আবশ্যই পাবলিকের মতো কম আর প্রাইভেটের মতো হাই না করে মাঝামাঝি করা যেতে পারে।
১। সব ভার্সিটি কেনো সেবামূলক (অর্থাৎ ফ্রি বা অল্প খরচ) হবে না?
২। পরবর্তীতে প্রমোশন, সালারি ইনক্রিজ - এগুলো তো শিক্ষকদের জন্য, তাই না? কোন শিক্ষক কেনো সারাজীবন লেকচারার পদে ৬৮০০ টাকা স্কেলে কাটাবেন, যেখানে আপনার-আমার মত তাদের ছাত্র (এবং ছাত্রীরা) একটা বয়সে যেয়ে সিইও হবেন?
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
মুর্শেদ ভাই,জনাব গালিবের লেখাটা না পড়েই আপনার লেখাটা পড়লাম এবং পুরোপুরি দ্বিমত। শিক্ষার দ্বায়িত্ব রাষ্ট্রের এবং রাষ্ট্র ক্রমাগতভাবে সেই দ্বায়িত্ব থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে জনগনের উপর দ্বায়ভার চাপিয়ে যাচ্ছে, আপনার এই প্রস্তাব আসলে রাষ্ট্রকে তার সেই বদমতলবে সমর্থন যোগানো।
@বুনোহাঁস, "দেশের সব মানুষের স্নাতক পর্যায়ে লেখাপড়ার দরকার নাই আসলে"।এইটার পেছনের শানেনুযুল টা জানতে চাই।
আপনার এই মন্তব্যটা অশোভন লাগলো।
"মানুষ স্নাতক পর্যায়ে লেখাপড়া করবে কি করবে না" এইটা কে নির্ধারণ করবে আমি,আপনি, রাষ্ট্রব্যবস্থা কিংবা দেশের মানুষ নিজে।
আমার মতে যাদের ইচ্ছা এবং যোগ্যতা আছে তাঁদের সবার স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ার সুযোগ থাকা উচিত।সেই যোগ্যতা কিন্তু ১০০০০জনের মধ্যে থেকে প্রতিযোগীতায় একজন হওয়া না, বরং ১০০০০ জনের যে নুন্যতম মানদন্ড সেটা অতিক্রম করা।
শামীম ভাই, ভারতের সাথে আয়তন এবং লোকসংখ্যার অনুপাত দিয়ে হিসাব নিকাশ করে বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাকে যতই জাষ্টিফাই করুন, বাস্তবতা হলো বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক অনেক অনেক কম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা হওয়া উচিত জনসংখ্যার ভিত্তিতে দেশের আয়তনের ভিত্তিতে নয়।বাংলাদেশে প্রতিবছর যে ৫ লাখ শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে, তাঁদের কতজনকে সরকারি এবং সেই সাথে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে(যদিও কাউকে বেসরকারি তে যাইতে ফোর্স করা ঠিক মনে করিনা, তারপরেও) স্থান দিতে পারে!
সচলে প্রকাশিত আমার একটা পুরনো লেখা থেকে উদ্ধৃতি দিচ্ছি,
২০০৯ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাশ করে ৩,৯৪,১১১ জন। ৩০ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ) স্নাতক পর্যায়ে মোট আসনসংখ্যা প্রায় ১,৮৩,০০০। অর্থাৎ প্রায় ৫৪% শিক্ষার্থী পাশ করেও পরবর্তী পর্যায়ে পড়ার সুযোগ না পাবার কথা।
সুতরাং আমাদের সবার স্বার্থে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোর সংখ্যা ও ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। ক্যাপাসিটি বাড়ানোর জন্য যদি দুই/তিনটা শিফ্ট চালু করা হয় তাহলে আপত্তি নেই। তবে সেখানে পড়বার সুযোগ সকালের শিফ্টের মতোই উন্মূক্ত হতে হবে- কোটা বা বাবা/মায়ের আর্থিক জোরে নয়। এর জন্য যদি আরো ৬০/৭০ ভাগ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী বাড়াতে হয় তা বাড়ানো হোক। এর জন্য বাজেটে অন্য খাতে কিছুটা কাটছাঁট করে (যেমন এমপিদেরকে এলাকার উন্নয়নের নামে দেয়া থোক বরাদ্দ, প্রতিরক্ষা, টেলিগ্রাম অফিস ইত্যাদি) বরাদ্দ দেয়া হোক; পাবলিকের কাছ থেকে চাঁদা (স্বেচ্ছায় দেয়া) নেয়া হোক; ভোগ্যপণ্যের উপর সারচার্জ/অতিরিক্ত ট্যারিফ যোগ করা হোক। তবে দ্বিতীয়/তৃতীয় শিফ্টের নামে অযোগ্য পোষ্যদের আর পয়সাওয়ালাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী বিতরণ করা চলবেনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমি গালিব সাহেবের লেখা পড়িনি, কিন্তু আপনার লেখার সাথে সর্বাংশে দ্বিমত পোষণ করছি। আপনি যেসব লাভের কথা বলছেন তার কোনটাই আদতে হবে না।
ঘটনা হলো রাতে যখন শিক্ষকরা পড়াবেন, তখন তাদের অনেক বাড়তি টাকা দিতে হবে। সেই টাকাটাতো সরকার দেবে না, আসবে ছাত্রদের টিউশন ফি থেকেই। এবং এই টিউশন যেহেতু শিক্ষক সমিতি ঠিক করবে এইটা হবে অনেক বেশি। তাই বাবার উপার্জনের কথা জিজ্ঞেস করা বা ধনী-গরীব কোটার দরকার নাই, পার ক্রেডিট ৫,০০০ টাকা টিউশন ধরলে ধনী-গরীব বিভাজনটা এমনিতেই হয়ে যাবে।
এই ব্যপারে আমাদের অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। একই শিক্ষক পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিলে তার পড়ানোর কোন উন্নতি হয় না। এছাড়া তিনি দু'জায়গায় সমানভাবেও গ্রেডিং করেন না। রাতে ছাত্ররা বেশি পয়সা দিলে তারা ভালো গ্রেড পাবে, সেইটা নিশ্চিত। এজন্য পয়সা দিয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট কেনার সুযোগ তৈরী হবে। যেটা নিশ্চিতভাবেই সত্যিকারের মেধাবি ছাত্রদের আরো হতাশ করে তুলবে।
রিসোর্স না বাড়িয়ে ছাত্র বাড়ালে শিক্ষার মান আরো কমবে। যদি সংখ্যাই বিচার্য হয়, গুন নয়, তাহলে তো এই আলোচনারই প্রয়োজন পড়ে না, অলি-গলিতে আরো অনেকগুলো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি খুলে নিলেই হয়।
আপনার সন্দেহ কতটা অমূলক সেটা পড়তে যাযাবরের মন্তব্যটা পড়ুন। আপনার সন্দেহ অনুযায়ী খানিকটা অপব্যবহার যে হবে না সেটা মানছি। কিন্তু গেইনটা আমার মতে অনেক বেশী। তাই সান্ধ্য শিক্ষার পক্ষেই থাকব আমি।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
মুর্শেদ ভাই, খুবই ব্যস্ততা যাচ্ছে। আমি আপনার লিঙ্কটা পড়ে দেখার সময় পেলাম না। পরে অবশ্যই পড়ে দেখব। পোস্ট আর মন্তব্যগুলো দৌড়ের উপর পড়লাম। আমার অভিজ্ঞতাও বেশ কম, তবে আমি অল্প কিছু কথা যোগ করতে চাই।
ঢাবির কথা ভালো জানি না। রাবিতে বেশ কবছর হলো এমবিএর সান্ধ্য কোর্স চলছে। আর কোন ফ্যাকাল্টিতে সান্ধ্য কোর্স নেই এখনো। হবে কিনা বলা যাচ্ছে না। এমবিএ-র সান্ধ্য কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েই ভর্তি হতে হয় বলে জানি। খরচ বেশি। কতটা জানি না। বিবিএ (আন্ডারগ্র্যাড লেভেলে সান্ধ্য কোর্স নেই)।
রাবিতে সায়েন্স ফ্যাকাল্টির একেকটা বিভাগে গড় ৫০ টা করে সিট আছে, (বিভিন্ন বিভাগে ভিন্ন ভিন্ন), গত বছর পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে অধিকাংশ বিভাগেই আলাদা আলাদা। এবছর পুরো রাবিতে সম্ভবত মোট ৭টি ইউনিটে হবে বলে জেনেছি। সায়েন্সের একটি বিভাগের ৫০টি সিটের এগেন্সটে এর আগে পর্যন্ত প্রায় ৬০০০+ পরীক্ষার্থী প্রতিযোগীতা করেছে। এরা কেউই খারাপ রেজাল্টের নয়, পরীক্ষা দেবার নূন্যতম ক্রাইটেরিয়া যেহেতু ফুলফিল করছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ ভর্তি হতে চাই বললেই ভর্তি হতে পারে না! ভিসি-র নিজেরো ক্ষমতা নাই যে তার নিজের ছেলেমেয়েকে ভর্তি করাতে পারে যদি না সে ভর্তি পরীক্ষায় অ্যালাও হয়!!
রাবির ছাত্রদের বেতন হল মাসিক ১২টাকা। এত কম খরচে আর কোন দেশে উচ্চ শিক্ষার ব্যাবস্থা আছে বলে আমার জানা নেই। মানের ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞেস করলে নিজের ছাত্রাবস্থার অভিজ্ঞতা থেকে বলব, আমার বিভাগের শিক্ষার মান বাংলাদেশের যেকোন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে খারাপ ছিল না। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। কারো সাথে অমিল হতেই পারে।
সান্ধ্য কোর্সে কী লাভ হতে পারে তার মধ্যে প্রথমেই আমার যেটা মনে আসে তা হল -
সান্ধ্য কোর্সে যারা কর্মজীবি বা কোন কারণে আগে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে পারেন নাই, তারা সহজে ডিগ্রি অর্জনের একটা উপায় পাচ্ছেন। বিশেষ করে যেখানে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বেশি নেই।
এছাড়া এতে বিভাগের বা বিশ্ববিদ্যালয়ের, বা উভয়ের আর্থিক লাভ হবে। কারণ সান্ধ্য কোর্স হবে এক্সট্রা একটা ব্যাপার, কর্মচারী (এনারা অনেক জরুরি কিন্তু! বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রশাসনিক কাজে শুধু শিক্ষক হলেই চলেবে না)! থেকে শিক্ষক, সবাই আসল সময়ের বাইরে এক্সট্রা সময় দেবেন। খরচ বেশি হবেই। তা ছাড়া লাভের কথা ভেবেই সান্ধ্য কোর্সের চিন্তাটা এসেছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অর্থনৈতিক অবস্থা যা দেখা যায় তার চেয়ে আসলে অনেক বেশি খারাপ বলে আমার ব্যক্তিগত মত। এখানে যন্ত্রপাতি কেনা থেকে শুরু করে রিসার্চের কাজে যে অনুদান ইউজিসি বা বাইরে থেকে পাওয়া যায়, শুধু তার উপর এখনো নির্ভর করে থাকাটা অনেক বড় ভুল হবে আজকের সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে, বিশেষ করে যদি আমাদেরকে সত্যিই ইউরোপ বা নর্থ আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমকক্ষ হতে হয়। বাস্তবতা হল আমাদের অনেক বেশি অর্থ প্রয়োজন যন্ত্র আর আনুষঙ্গিক ল্যাব-এর জন্যে, রিসার্চের জন্যে। এই অর্থের জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যদি শুধু সরকার, বিদেশি গ্র্যান্ট এসবের আশায় চেয়ে না থেকে স্বাবলম্বি হতে পারে তাহলে কিন্তু বহু মূল্যবান সময় বেঁচে যাবে।
হুট করে শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ানো যাচ্ছে না। অথচ একসময় ইংল্যান্ডের পাবলিক ইউনিগুলোতেও কম বেতনেই পড়া যেত। শিক্ষকদের ইভালুয়েশন সিস্টেমো ছিল না। আমার জানা ভুল না হলে মার্গারেট থ্যাচারের সময়ে এই বেতন বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। আমাদের দেশে এক্ষেত্রে সান্ধ্য কোর্স অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে। আমার নিজের কোর্সের বাইরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বাড়ানোর আরো কিছু আইডিয়া আছে, কিন্তু তাতো বললেই হয়ে যাবে না। পরে সময় পেলে অন্য কখনো শেয়ার করা যাবে। অন্যান্য প্রায় প্রতিটা দেশের প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়েই এমন কোর্স চালু আছে। তারা কী করে নিয়মিত আর স্পেশাল কোর্স একত্রে মান সম্পন্নভাবে সমাধা করছে দেখে নীতি নির্ধারণ করা যেতে পারে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের ইভালুয়েশন হয় না, চাকরিও চুক্তিভিত্তিক না, এই বিষয়গুলিতে নজর দেবার সময় হয়ে এসেছে। (আবার প্রাইভেটে কিন্তু ইভালুয়েশন যেমন হয়, আবার তাতে দুর্নীতিও সহজ)! তবে শুধু ইভালুয়েশন করে রেখে দিলাম, তাকে কোন কাজেই লাগালাম না এমন করে কোন লাভ হবে না। এখন সান্ধ্য কোর্স হোক বা রেগুলার কোর্স সবখানে আসলেই কোয়ালিটি কন্ট্রোল জরুরি।
শিক্ষকরা সান্ধ্য কোর্সেই বেশি মনোযোগ দেবে রেগুলার বাদে, কারণ ওখানে অর্থাগম বেশি এই ভয় অমূলক নয়! শিক্ষকদের বেতন আসলে বাড়াতে হবে। এটা একটা অসীম জরুরি ব্যাপার। এখনই এমনিতেই প্রাইভেটের সাথে পাবলিকের তফাৎটা অসম্ভব বেশি। ঢাকার মতো বড় শহরে খরচ বেশি বলে সেই তফাৎ আরো প্রকট হয়ে ধরা পড়ে। বেতনের বৈষম্য দূর করতে, ইভালুয়েশনের আর তার উপর ভিত্তি করে বোনাস বা এমন ব্যবস্থা নিতে পারলে সান্ধ্য আর নিয়মিত-এর মাঝের ব্যাবধান হয়ত কমতে পারে। একটা বিষয় কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, সকল শিক্ষকই যে অধিক উপার্জনে আগ্রহী এমন নন। উপরে বলাই দার মন্তব্য বেশ ভালো লেগেছে, আসলেই শিক্ষকের নিজের একটা লিমিট আছে। যাঁরা মনে করছেন যে দুটোই সমান তালে চালাতে পারবেন শুধু তাঁরাই হয়ত বেতন বাড়ানো হলে সান্ধ্য কোর্সে ক্লাস নেবেন। তবে হ্যাঁ ইভালুয়েশন, তার বেসিসে বা এমনিতেও চাকুরি চুক্তিভত্তিক করা, নিয়মিত আর স্পেশাল সর্বত্রই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া এগুলো নিশ্চিতকরণ জরুরি!
তবে মনে রাখতে হবে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কিছুই হুট করে করা যায় না। একটা বিভাগের একাডেমিক কমিটি থেকে শুরু করে সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, এরকম বহু ধাপ পেরিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রীহিত হয়। আবার কোন সিদ্ধান্ত একবার গ্রীহিত হলে তা পরিমার্জন, সংশোধন বা বাতিল করাও অনেক জটিল প্রক্রিয়ার মাঝ দিয়ে যায়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শর্টকাটে একটা মন্তব্য করি:
আমরা প্রায় সময়ই তুলনা করে সিদ্ধান্ত নেই কোন একটা পদক্ষেপ ভালো না মন্দ।
১। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-বেতন ১০/১৫টাকা। যারা রাতের শিফটে পড়বে তাদের বেতন হবে এর থেকে কয়েক হাজার গুন।
২। পাবলিকে বেতন বাড়ানো আমাদের সমাজে সম্ভব নয়। শিক্ষা যেহেতু মৌলিক অধিকার সেই কারণে বেতন কম রাখার পক্ষেই অধিকাংশের মত। যদিও স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে কিনা না নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে।
৩। ছাত্র বেতনে সাম্যাবস্থা থাকলেই তবেই কেবল দিন বা রাতের শিফটের কথা চিন্তা করা যায়। অর্থাৎ সেক্ষেত্রেই সমতা বজায় রেখে একটা বিশ্ববিদ্যালয় দুই শিফট চালু করতে পারে। অন্যথায় সমতা রাখা সম্ভব নয়।
৪। যারা বেশি টাকা দিয়ে পড়বে তাদের প্রতি কি শিক্ষকরা একটু বেশী যত্নবান হবেন? হতে পারেন। হয়তো মানুষের স্বভাবই এমন।
৫। যারা কম টাকা দিয়ে পড়ছেন তারা ভাবতে পারেন যারা বেশী টাকা দিয়ে পড়ছেন তারা ডিগ্রী কিনছেন।
৬। ভবিষ্যতে যারা বেশী টাকা দিয়ে পড়ছেন তারা আন্দোলন শুরু করতে পারেন যে তারা কেন বেশী টাকা দিয়ে পড়বে।
৭। সাধারণ ছাত্ররা যে রিসোর্স ব্যবহার করবে ১০ টাকা বেতন দিয়ে, অন্যেরা একই রিসোর্স ব্যবহার করবে হাজারগুন বেশি টাকা দিয়ে। এমনটা কোন ধরনের সমতা?
৮। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকেরা যেখানে মাসের খরচের টাকা ওঠাতে এখানে ওখানে দৌড়ে বেড়ান, তাদের জন্য এই ব্যবস্থা হয়তো সুফল বয়ে আনবে। তবে মোটের উপর নানা অসমতা এবং তা থেকে নতুন ধরনের সমস্যার তৈরীর পথ উন্মুক্ত হবে।
একমত
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
এই পোস্টের একটা বিষয়ের সাথে আমি এক মত যে আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সান্ধ্য কোর্স চালু করা উচিত। কারন বাংলাদেশে যে সকল শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ভর্তি হয় তাদের মাত্র ৪-৫% উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পায়।যেহেতু ১ট নতুন বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা অনেক সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ,তাই সান্ধ্য কোর্স চালু করা উচিত। তবে যে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে সেটা হল কোয়ালিটি কন্টোল,শিক্ষার মূল্য আরও কতগুলো বিষয়ে। যেমন ধরুন কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সাধারন শিফট এর জন্য প্রয়োজনিও শিক্ষক নেই, তাহলে সান্ধ্য কোর্সে তারা পরাতে পরাবে কি করে। যেহেতু শিক্ষা সবার মৌলিক অধিকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক জন শিক্ষার্থির পড়াশুনা সম্পূর্ন ফ্রি হওয়া উচিত(যদিও কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুযোগ আজ আর নেই)।এ সম্পর্কে কারও কোন আপত্তি থাকা উচিত নয়। তবে এই পোস্টে লেখক ১টি বিষয়ে ইচ্ছা কৃত ভাবে বা অন্য কোন কারনে কোন কথা বলেননি।সেটি হলো সান্ধ্য কোর্স টাকার বিষয়। এত দিন যে সকল বিশ্ববিদ্যলয়ে সান্ধ্য কোর্স চালু হতে গিয়েছে সেখানে টাকার অংক ছিল অনেক বেশি। যেমন বুয়েটে সান্ধ্য কোর্সে ফির মোট পরিমান ছিল প্রায় ৪০০০০০।অন্যান্য জাগাতেও এর থেকে কম ফি দিয়ে সান্ধ্য কোর্স পড়া যায় বলে মনে হয় না। এখানে আমার একটি প্রশ্ন - ধরুন এক জন গরিব ছাত্র বুয়েট ভর্তি পরিক্ষায় ওয়েটিং লিস্টে ১ম আর তার টাকা দিয়ে প্রার কোন সাম্যর্থ নাই, আর এক জনের টাকা আছে সে সান্ধ্য কোর্সে ভর্তি পরিক্ষায় লিস্টে লাস্ট।এখন বুয়েটে কে পরার সু্যোগ পাবে? যদি সান্ধ্য কোর্সে পরার জন্য টাকা মাপকাঠি হয় তো সান্ধ্য কোর্সের কোন দরকার নাই।আর প্রয়োজনিয় শিক্ষক,কর্মচারি,শিক্ষার্থিদের সুযোগ সুবিধা ও একই ফি থাকলে অবশ্যই সান্ধ্য কোর্স চালু করা উচিত।
যাঁরা মনে করছেন সান্ধ্যকালীন কোর্সে পয়সা দিয়ে গরু-ছাগলেরাই ভর্তি হয় তাঁদের একটা ছোট উদাহরণ দিচ্ছি।এই অধম একটি প্রাইভেট ভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে অনার্স করার পর ২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স ইন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে ভর্তি হই।ক্লাস শুরু হবার কিছুদিন পর কৌতুহলবশতঃ খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, প্রায় ১২০০ জন ক্যান্ডিডেটের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে(লিখিত ও ভাইভার পর) মাত্র ৩৫ জনকে নির্বাচিত করা হয়েছে।এই ৩৫ জনের মধ্যে আমি হচ্ছি সবচাইতে লো প্রোফাইলের এবং এই ছোট ক্লাসটিতে বুয়েটের গোটা তিনেক ইঞ্জিনিয়ার,আইবিএর অন্তত ৩ জন এমবিএ ডিগ্রিধারী,বিভিন্ন পাবলিক ভার্সিটির সেরা সেরা ডিপার্টমেন্টগুলোর প্রথম শ্রেনীধারী,ডিফেন্সের সিনিয়র অফিসার(দুজন লেফটেনেন্ট কর্নেলকে ক্লাস করতে দেখেছি),বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের ৫ জন এসিস্টেন্ট ডাইরেকটর,বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ৩ জন ক্যাডার এবং প্রাইভেট সেক্টরের সেরা জায়গাগু্লোতে কাজ করছেন(ব্রিটিশ এমেরিকান টোব্যাকোর একজন এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিপিং কোম্পানির একজন এইচআর অফিসার) এরকম মানুষেরা রয়েছেন।পরীক্ষা দেবার সময় যদি জানতে পারতাম যে এত বিপুল সংখ্যক এবং এধরণের রথী-মহারথীদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে তাহলে হয়তো পরীক্ষা দিতেই সাহস পেতাম কিনা সন্দেহ।আমি ছিলাম গুটিকয়েক ফুলটাইম ছাত্রদের মধ্যে একজন,বাকি যাঁরা এসেছেন তাঁরা তাঁদের প্রচন্ড ব্যস্ত শিডিউল থেকেই পড়াশোনা(এবং সেইসাথে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট) করার জন্য এখানে এসে ভর্তি হয়েছেন।
সান্ধ্যকোর্স মানেই যাঁদের কাছে ধনীদের পয়সা খরচ করে একটা নামেমাত্র ডিগ্রী পাবার ধান্ধা ছাড়া কিছুই না,তাঁরা আশাকরি এ বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন।
আপনাকে আর আরও যাঁরা বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ডের থেকে এসে পড়ছেন আপনার সাথে সবাইকে সাবাস। সাফল্যের শুভেচ্ছা রইল।
আর আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সব বিশ্ববিদ্যালয়েই সান্ধ্য কোর্সেও এমন কড়াভাবে যাচাই বাছাই করেই অ্যাডমিশন দেয়া উচিত।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
স্কুল বাদে দেশের সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৩ শিফটে করে দিলে কেমন হয়? ৮ঘন্টা করে ২৪ ঘন্টা চলবে।
আমাদের দেশটা ছোট, মানুষ বেশী। কলেজ ভার্সিটি কম, শিক্ষিত কম, বেকারত্ব বেশী। এখানে খুব কম লোকের জ্ঞানের চাহিদা, বেশীরভাগের সার্টিফিকেট চাহিদা, শিক্ষকদের জ্ঞান দেবার চাইতে চাকরীর দরকার বেশী।
এই রকম একটা দেশে তিন শিফটে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এখানে থাকবে তিন রকম ছাত্র, তিন রকম শিক্ষক। যাদের পড়াশোনা দরকার তারা দিনে পড়বে। যাদের কেবল সার্টিফিকেট হলেই দরকার, তারা রাতের শিফটে পড়বে।
যেসব শিক্ষকদের যাদের জ্ঞান বিতরনের ইচ্ছা তারা দিনের শিফটে পড়াবে। যাদের কেবল চাকরী দরকার তারা রাতে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পড়াবে কেবলসার্টিফিকেটচাই ছাত্রদের। যার যার চাহিদা অনুসারে শিফট নির্ধারন করা হবে। বেতন নির্ধারণ হবে।
এক দশক পর দেখা যাবে সবার ইচ্ছেপুরন হয়ে দেশে উচ্চ শিক্ষার হার বেড়ে গিয়ে বেকারত্ব নেমে এসেছে শূন্যের কোটায়। দারিদ্র্য চলে গেছে যাদুঘরে, ড. ইউনুস ছুটি নিয়ে অবসরে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো আপনার পুরো মন্তব্য, বিশেষত কোটেড অংশটুকু পড়ে।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
হ্যাঁ এই অংশটা খুব বেশি জেনেরালাইজেশন হয়ে গেছে। ওনার চশমার কাঁচের রংটা জেনে একটু অস্বস্তি বোধ করেছি আমিও।
যাদের শুধু সার্টিফিকেট দরকার তাঁদের কষ্ট করে+সময় নষ্ট করে পড়ার দরকার কি .... কিছু জায়গা আছে যেখান থেকে সার্টিফিকেট কিনতে পাওয়া যায় বলেই মনে হয়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
মেজাজ খারাপ হবারই কথা। দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উপর মেজাজ খারাপ করেই কমেন্ট করেছি। তবে কমেন্টের টোনটা বিশেষতঃ শেষ প্যারাটা খেয়াল করলে বোধহয় অতটা মেজাজ খারাপ হতো না
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
এসব ব্যাপারে আমি কোন বিশেষজ্ঞ নই বলেই মন্তব্য করতে ইতস্তত করছি।
যাই হোক সব জিনিষেরই ভাল-মন্দ দুই দিক থাকে।আর আমাদের স্বাভাবিক একটা প্রবনতা আছে নতুন যেকোন কিছুকে সন্দেহের চোখে দেখার।তবে আমার ব্যক্তিগত মত হলো সান্ধ্যকালীন শিফটের কল্যানে যদি আরো কিছু ছেলেমেয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় সেটাকে স্বাগত জানানো উচিত। সান্ধ্যকোর্সে বেশী টাকা দিয়ে পড়লেও মনে হয়না প্রাইভেট ভার্সিটির মতো এত বেশী টাকা দিতে হবে।সেটাও আমাদের মাথায় রাখা উচিত।
সন্ধ্যাকালীন কোর্স চালু করা উচিত এ বিষয়ে দ্বিমত নেই।
কিন্তু অসংখ্য সমস্যায় জর্জিত পাবলিক ভার্সিটিতে এর ফলে আরও সমস্যার সৃষ্টি হবে।
আমি অর্নাস লেভেলে সন্ধ্যাকালীন কোর্স খুলবার কিছু সমস্যা আছেঃ
১# নির্ণায়কের সমস্যা
১# আবাসন সমস্যা
২# শিক্ষক সমস্যা
৩# আর্থিক সমস্যা এবং সর্বোপরি
৪# দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা
নির্ণায়কের সমস্যা বলতে আমি কি মাপকাঠি দিয়ে সন্ধ্যাকালীন শিক্ষার্থী নেওয়া হবে তা বুঝা্চ্ছি।
তবে এক্ষেত্রে আমি মনে করি যদি এক সাথে পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং পরীক্ষাপত্রে যদি সময় উল্লেখ করে যেকোন একটি পছন্দ করতে বলা হয় তবে সমস্যা হবার কথা নয়। প্রথমে রেজাল্টের ভিত্তিতে এবং পরবর্তীতে সময়ের ভিত্তিতে ভাগ করে দিলেই হবে। যদি কোন এক সময়ের ছাত্র বেশি হয়ে যায় তবে সে তার মেধা অনুযায়ী অন্য সময়ে সুযোগ পাবে। যদি অন্য সময়েও না হয় তবে ওয়েটিং লিস্টে।
আবাসন সমস্যা নিয়ে বেশি কিছু না বললেও চলবে। সবাই বিষয়টাতে একমত হবেন। এখনই ভয়াবহ এক অবস্থা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে। এর কোন সমাধান আমার মাথায় আসেনি।
শিক্ষক সমস্যাও আছে, যদি নতুন কোর্স চালু করা হয় তবে তা আরো প্রকট হবে। মান কমে যাবে। নিয়মিত সংখ্যক ছাত্রের সমান সংখ্যক ছাত্র যদি সন্ধ্যাকালীন কোর্সে পড়ে তাহলে সমান সংখ্যক শিক্ষকের প্রয়োজন পড়বে। নতুন শিক্ষক প্রয়োজন পড়বে। আগের অভাব পূরণ না করে নতুন শিক্ষক নিয়োগ(সন্ধ্যাকালীন) দেওয়া অনুচিত কাজ হবে। তবে নিয়োগ দেওয়া একেবারেই অসম্ভব নয়। ব্যয়ভার সরকার এবং শিক্ষার্থীরা যৌথভাবে তা বহন করতে পারে।
অর্থের বিষয়ে আসি। পড়ালেখার খরচ যদি রাষ্ট্র বহন করতে পারে তবে উপরের পদ্ধতিতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে আবাসন এবং শিক্ষক।
কিন্তু খরচ যদি শিক্ষার্থী বহন করে তাহলে উপরের পদ্ধতি অকেজো হয়ে পড়বে। লেখাপড়ার ব্যয় যদি ভিন্ন হয় তবে নিয়মিত এবং সন্ধ্যাকালীনের পরীক্ষা পদ্ধতি ভিন্ন হতে হবে। না হলে সমস্যা হবে বহুবিধ এবং সেক্ষেত্রেও বৈষম্যের কথা আসবে।
তবে উপরের পদ্ধতিতে সিট সংখ্যা বাড়ার কারণে বেতন বাড়ানো যাবে। যদি দু-তিন ধাপে তা করা যায়, তাহলে আরো ভালো। এক্ষেত্রে ভর্তির পূর্বেই শিক্ষার্থীদের অবহিত করতে হবে যে কোন বর্ষে কি পরিমাণ ফিস দিতে হতে পারে।
দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা উপরের পদ্ধতিতে হবার সম্ভাবনা কম। কিন্তু যদি তা নয় হয় তবে নিয়মিত এবং সন্ধ্যাকালীন শিক্ষার্থীদের আলাদা দৃষ্টিতে দেখা হবে।
স্নাতকোত্তর পর্যায়ে সন্ধ্যাকালীন কোর্স চালুর তেমন একটা সমস্যা দেখি না। তবে তা যেন সবার জন্য প্রযোজ্য হয় অর্থাৎ যে কেউ যেন পড়তে পারে, শুধুমাত্র চাকুরীজীবি যেন না হয়।এবং অবশ্যই ভর্তি পরীক্ষা থাকতে হবে।
মাস্টার্সের আবাসন সমস্যা সম্পর্কে আমি তেমন কিছু শুনিনি সুতরাং এ বিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না।
আর বুয়েটের বিষয়ে আসি। আমি সবসময় শিক্ষকের ছেলেমেয়েদের কোটা দেবার বিরোধী। কোটা জিনিসটাই আমার খারাপ লাগে, এক ধরনের লাইন টেনে দেওয়া লাইনটা হয়তো আমার চেয়ে নিম্ন না হয় আমার চেয়ে উচ্চতর শ্রেণীর বোঝাতে। তাও মেধার দিক থেকে নয়, বংশগতভাবে। যা আমি কোনভাবেই মানতে পারবো না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কটা বিষয় আমি অপছন্দ করি তার মধ্যে এই কোটা পদ্ধতি একটি। আমার সাথের অনেকে যাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি কোন পাবলিকে সুযোগ পাবার কথা না, তারাও পড়ছে ঢাবিতে বাপের জোরে। একজন শিক্ষকের সন্তান যদি তার বাবার কারণে কোথাও সুযোগ পায় , তবে তো ক্রিকেটারের ছেলেকেও জাতীয় টিমে খেলতে নিতে হবে তার খায়েস পূরণের জন্য।
আমি বুঝি না, কেন তারা এমন বিষয় নিয়ে চিন্তাও করে। একজন শিক্ষককে তার সার্ভিসের জন্য, তার কাজের জন্য আমরা সম্মান দেখাই। কিন্তু বাবার জোরে একজন শিক্ষার্থী পড়বার সুযোগ পেলে আমরা তাকেই বা কি দেখাবো আর তার বাবাকেই বা কি দেখাবো?
অলস সময়
সমান সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সংখ্যক অতিরিক্ত শিক্ষক হয়তো লাগবে না। কারণ সান্ধ্যকালীন কোর্সে দিবাকালীন কোর্সের মত সময় পাওয়া যাবে না। এছাড়া সান্ধ্যকালীন কোর্সের মূল লক্ষ্য কর্মজীবিদেরকে নিজেদের স্কিল ডেভলপমেন্টের সুযোগ দেয়া, চাকুরী করে আসার পর লেখাপড়ার কতটুকু ভার নেয়া সম্ভব সেটাও বিবেচ্য। কাজেই প্রতি সেমিস্টারে ক্রেডিট আওয়ার কম হবে অর্থাৎ ছাত্রদের ডিগ্রী নিতে সময় বেশি লাগবে। তাই শিক্ষকের সংখ্যাও একটু কম লাগবে (ক্রেডিট আওয়ার তুলনা করলে সেটা বোঝা যাবে)।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
গালিব সাহেব এটা কোথায় পাইলো সেটা জানতে মন চায়। আমার জানামতে নর্থ-সাউথে টিউশন ফী সবচেয়ে বেশি সেটা ৫ হাজার টাকা /ক্রেডিট এর মত। এই হিসাবে প্রতি সেমিস্টারে যদি কেউ ১৫ ক্রেডিট রেজিস্ট্রেশন করে তবে তার ৭৫ হাজার টাকা লাগবে + সেমিস্টার চার্জ লাগবে। চার মাসে এক সেমিস্টার (আসলে ট্রাইমিস্টার) হয় বলে মাসিক খরচ হিসাব করতে টাকার পরিমানকে ৪ দিয়ে ভাগ করতে হবে। কাজেই মাসে সেখানেও ২০ হাজারের মত খরচ হয়। ৭০-৮০ হাজার নয় কোনোমতেই।
উল্লেখ্য যে স্বাভাবিক এক সপ্তাহে কোনক্রমেই অ্যাকাডেমিক কাজে সর্বোচ্চ ৬ দিনে ৪৮ ঘন্টার বেশি সময় পাওয়া যাবে না। কাজেই কেউ যদি অতিমানব হয়ে অতিরিক্ত ক্রেডিট নেয় তবে সেটা সর্বোচ্চ ৪৮ ক্রেডিট আওয়ার হতে পারে। এক্ষেত্রেও খরচ ঐ লেভেলে পৌছানো সম্ভব নয়, যদি না কেউ দান করতে ইচ্ছুক হয়। এছাড়া প্রতি সেমিস্টারে সর্বোচ্চ কত ক্রেডিট নেয়া যাবে তার একটা গাইডলাইন ইউ.জি.সি কর্তৃক নির্ধারিত করা আছে। বিশেষত ইভিনিং শিফটে (চাকুরিরত শিক্ষার্থীদের জন্য) এটা ১১ ক্রেডিট বলে জানি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল কলেজ না যে এইখানে দুই শিফটে ক্লাস হবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের সম্মানিত শিক্ষকেরা যে হারে প্রাইভেট ভার্সিটি তে ক্লাস নেন, তাতে সাধারণ শিডিউল ক্লাসগুলাই আমরা নিয়মিত পাই না। এখন সান্ধ্য কোর্স চালু করলে অবস্থা যে আরো করুণ হবে তা বুঝতেই পারছি। তৃতীয়ত, এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, বেশি দুরে যেতে হবে না, এই ঢাবি তে, যতগুলো ছাত্রছাত্রী আছে সে হিসেবে সুযোগ সুবিধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে তো খালি ক্লাস রুম হলেই হবে না, লাইব্ররেী লাগে, লাইব্রেরীতে বই লাগে, সেমিনার লাগে, প্রজেক্টর লাগে, ফ্যান লাগে, বসার জায়গা লাগে, আড্ডা মারার জায়গা লাগে, খাবার জায়গা লাগে, কম্প্উটার লাগে অনেকগুলা, ল্যাবরেটরী লাগে, ল্যাবরেটরীতে জিনিসপত্র লাগে। সবচাইতে বড় কথা ডিপার্টমেন্টগুলাতে কম ছাত্রছাত্রী লাগে। এগুলার ব্যবস্থা না করে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাজার বানানোর কোন মানে নাই। ইতিমধ্যে ঢাবি একটা বাজারের মতো হয়ে গেছে। খালি কার্জন হল এলাকাগুলো একটু সুনসান আছে এখনো। তাও তো বিকাল বা সন্ধ্যা বেলায় ক্যাম্পাসে নিজেদের আউটসাইডার আউটসাইডার মনে হয় আউটসাইডারদের ভিড়ে ...
আগের ১৩ নং মন্তব্যে অনিচ্ছাকৃত ভুল থেকে গেছে একটা - এবার রাবিতে ৭টা না, ১৭টা ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা হবে।
আর একটু অ্যাড করে দেই -
ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির প্রথম ভর্তি পরীক্ষা এবারই হবে।
এই ইউনিটে এবারের মোট রেজিস্টার্ড পরিক্ষার্থী হল ১০,৬৫৭ (আমার জানা তথ্যমতে)।
এই ইউনিটের ৫টি ডিপার্টমেন্ট মিলিয়ে মোট আসনসংখ্যা প্রায় ১৬০টা।
আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারি বলা হলেও এগুলো আসলে সায়ত্বশাসিত।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নতুন মন্তব্য করুন