তিনবছর অ্যরিজোনার টেম্পিতে থেকে পাড়ি জমিয়েছিলাম পশ্চিম পেনসিলভিনিয়ার পিটসবার্গে। আর আমার স্ত্রী ইন্ডিয়ানাতে। তারপর আরো তিন বছর বিভিন্ন চেষ্টা শেষে শিকাগোতে থিতু হবার মতো একটা অপশন পাওয়া গ্যালো।
আমেরিকার অর্থনৈতিক যে মন্দাটা ২০০৮ থেকে শুরু হচ্ছিল সেটা ২০০৯ এর শেষে গিয়ে চরমে পৌছায়। ২০১০ পার করে ২০১১ এর শুরুতে খানিকটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে চাকুরীর বাজার। আমরা কয়েকটা কম্বিনেশনে একত্র হবার চেষ্টা করি। প্রথমতঃ আমার স্ত্রী আমার এখানে এবং আমি তার ওখানে চাকুরীর চেষ্টা করি। দ্বিতীয়তঃ মৌটুসী শিকাগোতে চাকুরী এবং আমি আমার শিকাগো অফিসে বদলের চেষ্টা। তৃতীয়তঃ আমি সিনসিনাটি ওহায়োতে একটি চাকুরীর চেষ্টা করি।
দ্বিতীয় এবং তৃতীয় অপশন দুটোতেই আমাদের চাকুরীর অফার আসে। অনেক চিন্তা ভাবনার পর আমরা শিকাগো যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।
যারা এই মুর্হুতে চাকুরীর বাজারে আছেন তাদের কয়েকটি টিপস। ঠিক এই মুহুর্তে প্রচুর চাকুরী আছে বাজারে। এমনকি ইন্টারন্যাশনাল লোকদেরও নেয়া হচ্ছে। কিন্তু বাজার ঠিক চাঙ্গা নয় অতটা। অর্থাৎ বেতন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চাকুরী খুঁজতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। আর যদি চাকুরী খুঁজতে খুঁজতে হতাশ হয়ে থাকেন তাহলে হতাশা কাটিয়ে আবার নতুন করে শুরু করতে পারেন জব হান্টিং।
গন্তব্য স্থির হবার পর একটা ক্লান্তি আসে। মনে হয় আবার বাসা বদল! আবার নতুন শহরের থিতু হবার চেষ্টা! আবার নতুন মুখ!
পিটসবার্গ থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। খুব উদার মনের কিছু মানুষ। কিছু ভালো বন্ধু। কিছু মিউজিশিয়ানের সাথে পরিচয়। আমার প্রথম সন্তানের জন্ম।
তবে পিটসবার্গের সাথে গভীর বন্ধনটা তৈরী হয়ে ওঠেনি। প্রায় সপ্তাহ শেষে দৌড়াতাম স্ত্রীর ওখানে। তাই এখানে সামাজিকতা রক্ষা করতে পারিনি তেমন। তাই শেকড় ছেঁড়ার কষ্টটা অতটা কষ্ট দিচ্ছে না।
তবুও সকালে পাখির ডাক শুনে উদাস হয়ে যাই। দুপুরের রোদে সান রুফ খুলে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। দিনশেষে পাহাড়ের দিকে একটু করে তাকাই। ম্লান সূর্যটার ডুবে যাওয়া দেখি। আর মনে হয়:
পথে পথে দিলাম ছড়াইয়ারে সেই দুঃখে চোখের পানি।
ও আমার চক্ষু নাই।
পাড় নাই। কিনার নাইরে।
ঘর নাই। ও মোর জন নাই।
তবু দিলাম ভাঙ্গা নায়ে অথৈ সায়রও পাড়ি।
|
মন্তব্য
যাক, অবশেষে এক সাথে হবেন আবার... অনেক অনেক শুভ কামনা।
ধন্যবাদ ইশতি।
অনেক অনেক শুভকামনা। এইবার প্রতিদিন পোনার একটা নতুন ছবি চাই
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
ধন্যবাদ টিউলিপ। চেষ্টা করব।
চমৎকার লিখেছেন। আপনারা তা'ও তো পরিবারের সান্নিধ্যলাভ করতেন সপ্তাহান্তে কিন্তু আমাদের জীবন আরও টাফ। এখানে অবশ্য কিছু বাংলাদেশী আছেন যাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়, মন খুলে দু'টো কথা হয়। তারপরও লাইফটাকে প্রায়ই 'জাস্ট এ ফাকিং লাইফ' মনে হয়। তাই অবশেষে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত পাকাপাকি। যে চাকরীটা পেয়েছি সেটা করতে থাকবো। সীমিত যোগ্যতার কারণে জব মার্কেটে সুবিধে না ও হতে পারে। তাও কেয়ার করি না। পয়সা থেকে শান্তি অনেক বেশি প্রয়োজন।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
হুম, পরিবার ব্যাপারটা ভালো করে বুঝেছি এই কয় বছরে।
বেশ বেশ। শিকাগোপাড়ির শুভেচ্ছা রইল। ওদিকের বন্ধুরা প্রায়ই ডাকেটাকে, বলা যায় না কখনও আপনাদের সঙ্গে হয়ত রাস্তাতে দেখাই হয়ে যাবে...
শিকাগোতে যুধিষ্ঠির ভাই ছিলেন, কিন্তু আমি যখন যাই ওসময় না থাকায়, প্লাস আরো নানা কারণে যাওয়া হয়নি। এখন আপনি উনি দু'জনই আসেন, সামনে আমেরিকায় আসলে যাওয়ার ভাল ব্যবস্থা।
পিটসবার্গ আর পশ্চিম পেনসিলভানিয়া আপনার কল্যাণে দারুণ দেখা হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ মুর্শেদ ভাই!
তোমাকে তেমন আদর যত্ন করতে পারিনি। তোমাকেও ধন্যবাদ সিরাত।
আমরা যাবার পর সময় করে চলে আসুন। আড্ডা দেয়া যাবে।
গান বাজে না তো!
আর ছবি দিলেন না যে!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
গান বাজছে না। গানে নীচে লিংকে ক্লিক করে শুনতে পারেন।
নতুন চাকরিতে অনেক শুভকামনা।
পাপুন্তসের ভাগ্যেই না এমন হলো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ধন্যবাদ।
সুন্দর হোক আপনাদের আসছেদিন গুলো। গান কিন্তু আসলেই বাজছে না বাবুটার ছবি দান দেখি
-আয়নামতি
ধন্যবাদ। গানের লিংকে ক্লিক করে দেখতে পারেন।
সুন্দর হোক আগামীর দিনগুলো। দয়া করে ইন্ডিতে কোনো বাংলাদেশী কোনো কমিউনিটি অথবা দোকান পাট আছে কিনা জানাবেন কি? ইন্ডি/স্টেটসে প্রথম ভ্রমনের প্রহট গুনছি, বিদেশে বাংলার মুখ দেখলে ভালো লাগে। :)
ইন্ডি হিলটন ইনের আশেপাশে থাকা হবে।
ধন্যবাদ।
আমিতো ইন্ডিয়ানাপলিস থাকি না। দুসপ্তাহ পরপর ভিজিট করি। তাই ১০০% শিওর না। যতদূর জানি বাংলাদেশী কোনো দোকান নেই ইন্ডিতে। ইন্ডিয়ান দোকান আছে ৬৫ নর্থ নিয়ে ৩৮তম স্ট্রিটে এক্সিট নিয়ে রাইট নিতে হয়।
বড় একটা বাংলাদেশী কমিউনিটি আছে। আমি তেমন কাউকে চিনি না। দুঃখিত।
আপনি মিয়া দারুণ লেখেন। আগামী দিনগুলো আরো আনন্দে কাটুক। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা রইল। এক শহরে চাকরি যোগাড় করতে অনেকটা ভাগ্যের উপরও ভরসা করতে হয়। তখন মনে হয় ঢাকা শহরই ভালো, দুই ঘন্টা জাম পেরিয়ে কাজে যেতে হলেও একটাই সংসার।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
ঠিক কথা।
আগুনের গোলা নিয়ে আনন্দে দিন কাটুক।
ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ।
গান বাজছে না।
পাপুন্তসের জন্য আদর।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
গানের নীচে লিংকে ক্লিক করে শোনা যাবে। ধন্যবাদ।
হা হা হা...
ভালো থাকুন। কয়েকদিন আপনাকে বেশ প্রেমকাতর মনে হচ্ছে
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমার জন্মের পর থেকে আমরা কোথাও স্থায়ীভাবে দীর্ঘদিন থাকি নাই। সর্বাধিক পাঁচ বছর কোন বাড়িতে ছিলাম মনে হয়। আগে মজা লাগতো, তারপর বিরক্ত লাগতো গোছগাছে, প্যাকিং আবার আনপ্যাকিং। এখন আর কিছুই মনে হয় না। বরং লাভের লাভ যেইটা হয়েছে আমি রীতিমতো গোছগাছ বিশারদ হয়ে গেছি, মাঝে ভেবেছিলাম একটা সাইড বিজনেস শুরু করবো প্যাকিং আনপ্যাকিং-এর, প্রতি কিউবিক মিটার কার্টুন প্যাকে ১০০০টাকা, আনপ্যাকে ২০০০ (খাটনি বেশি এটায়)!!
জায়গা ছেড়ে আসার সময় আমি আর তাকাই না, কিছু সময়ে জোর করে, কিছু সময়ে স্রেফ দৌড়ের উপরে থাকি বলে। কিছু কিছু জায়গায়, কিছু মানুষের কাছে ফিরে যাওয়া হয়, কখনো আবার চাইলেও হয় না। তবে পৃথিবীটা ছোট হয়ে গেছে অনেক, আর তা ছাড়া দুই দিনের দুইন্যা!
আপনাদেরকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ATB! আর আপনারা সেটল হলে টিউপুর মতো আমিও বাবুর প্রত্যেকদিনের ছবির আশায় থাকলাম।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আমিও প্রচুর মুভ করেছি। কিন্ত দু জায়গা থেকে সংসার তুলে আবার মার্জ করতে হবে। নতুন শহরে লাইসেন্স, রেজিষ্ট্রেশন, সেটল ডাউন - সব মিলিয়ে গায়ে জ্বর আসছে।
শুভকামনা রইল।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন, মুর্শেদ ভাই। একসাথে থাকতে পারাটা বেশ কঠিন মনে হয়, পড়ার জায়গা, কাজের জায়গা এসব মেলাতে হিমশিম অবস্থা।
আজ খবরে এসেছে এই মার্চে আমেরিকার জব মার্কেটে ২০১,০০০ চাকুরী যুক্ত হয়েছে। (সুত্র)
ঘরবাড়ি বেচা বিক্রীর মার্কেটে এখনও মন্দা বিরজা করলেও আমেরিকার অর্থনৈতিক মন্দার মেঘটা অনেকটা কেটে গ্যাছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নতুন মন্তব্য করুন