হৃদয়ে শাহবাগ, প্রতিবাদে প্রবাস এবং আমার কিছু পর্যবেক্ষণ

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি
লিখেছেন এস এম মাহবুব মুর্শেদ (তারিখ: রবি, ১০/০২/২০১৩ - ৪:০৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইউনিভার্সিটি অভ ইলিনয় এট শিকাগোর (UIC) পক্ষ থেকে আমরা শিকাগো বাসীরা গতকাল এক হয়েছিলাম শাহবাগের সাথে কণ্ঠ মেলাতে। আমাদের সাথে যোগ দিতে, সচল জি এম তানিম, রানিয়া আর আসিফ এসেছিল ১৫০ মাইল দূরের শহর মিলওয়াউকি, উইসকনসিন থেকে। বাবার কোলে করে এসেছিলো এক বছর বয়সী নিভৃতিও।

শাহবাগের আগুন এখন দেশের বাইরে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের বাইরের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত ছাত্ররা শাহবাগের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে প্রতিবাদ মুখর শ্লোগান প্রচার করছে ফেইসবুকে, ফ্লিকারে। তারই এক সেট ছবি পেলাম এনামুল হকের ফ্লিকার এলবামে।

শাহবাগের আন্দোলনে যে দুটো বিষয়ে বিরক্ত হয়েছি তার একটা হলো এই আন্দোলনকে নিজেদের প্রচারে কাজে লাগাতে চাওয়া অনেক পল্টিবাজদের দেখে। হিমু ইতিমধ্যে এ বিষয়ে লিখেছে

দ্বিতীয়ত, বিরক্ত হয়েছি ফাঁসি দাবী বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো শিশুদের দেখে। শিশুদের যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে সঠিক জ্ঞান দেয়া দরকার, কিন্তু অবুঝ এই শিশুদের মনে ফাঁসির মতো ভয়ঙ্কর বিষয়টি ঢুকিয়ে দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা দেখি না। শিশুদের "ফাঁসি" সংক্রান্ত কোনো মেসেজের বাইরে রাখার অনুরোধ থাকবে আমার আন্দোলন কারীদের প্রতি।

শাহবাগের আন্দোলন কোন দিকে মোড় নিবে? এই প্রশ্ন অনেকের। উত্তর হচ্ছে আমরা জানি না। আমার আশংকা হচ্ছে জামাতী ইসলামের নাশকতা মূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে। সচল কৌস্তুভ আন্দবাজারে প্রকাশিত একটি সংবাদ শেয়ার করেছিলেন এ বিষয়ে। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম সংবাদটি মূল লিংক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গুগলের ক্যাশে পাওয়া পুরো সংবাদটা লেখার শেষে জুড়ে দিলাম। চুম্বক অংশটি হলো:

জামাতে ইসলামির এক প্রথম সারির নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে আনন্দবাজারের সঙ্গে কথায় স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁদের নেতাদের ফাঁসির দাবিতে এমন জনজোয়ারের বিষয়টি তাঁরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি। এর ফলে এক দিকে যেমন তাঁদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, তেমনই দেশ জুড়ে বড়সড় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ওই নেতার মতে, স্বতঃস্ফূর্ত এই বিক্ষোভের হাওয়া সরকারের পালে লাগাতে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা-শহিদ দিবসের আগেই জামাতের আর এক শীর্ষ নেতা দেলোয়ার হোসেন সাইদিকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হতে পারে।

জামাত নেতার আশঙ্কা, আর তা হলেই দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সইদির বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে রায় দেওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই রায় পিছিয়ে দেওয়ার জন্য জামাত দেশজুড়ে আরও হাঙ্গামা করতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন ওই নেতা। ইতিমধ্যেই শনিবার চট্টগ্রামে ফের হরতালের ডাক দিয়েছে জামাতে ইসলামি

এ আশংকা অমূলক নয়। যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবীদারের পক্ষ হয়ে একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেললে পুরো ব্যাপারটা অপ্রীতিকর দিকে মোড় নিতে পারে।

তবে বৃহত্তর পরিধিতে এই আন্দোলনের ফলাফল কি হতে পারে সেটাও ভাবলাম। এটি আংশকা করা অমূলক নয় যে, ট্রাইবুনালের বিচার এই বিশাল গণচাপের মুখে পড়ে বদলে যেতে পারে। কোনভাবে যদি বিচার কাজ বায়াসড হয়ে যায় তাহলেই কিন্তু ভবিষ্যতে এতো গুরুত্বপূর্ণ বিচারের রায় প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। তাছাড়া, বাংলাদেশে চর্চা করার ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিগুলোর মধ্যে থেকে যুদ্ধাপরাধীরা বেরিয়ে গেলে ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো খুব সহজে ডাল পালা মেলতে পারে বলেও আমার আশংকা হয়।

আমি মনে প্রাণে আশা করি যে আমরা আশংকাগুলো ভুল প্রমানিত হোক। জয় হোক শাহবাগ আন্দোলনের। জয় হোক গণ চেতনার।

আনন্দবাজার পত্রিকা - ২৭ মাঘ ১৪১৯ রবিবার ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
ফাঁসির দাবিতে পথে শিশুরাও
জামাত নিষিদ্ধ হতে পারে, ইঙ্গিত বাংলাদেশের মন্ত্রীর
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঢাকা

ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ারের অবস্থান বিক্ষোভের তৃতীয় দিনেও একই উদ্দীপনা। কাদের মোল্লা-সহ একাত্তরের গণহত্যার নায়কদের ফাঁসির দাবিতে হাজার হাজার মানুষ আজও রাস্তা অবরোধ করে স্লোগান দিয়েছেন। তিন দিন ধরে এক নাগাড়ে চলছে প্রতিবাদী গান, নাটক, সিনেমা। এর মধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানিয়েছেন, সন্ত্রাসের রাজনীতির প্রবক্তা, একাত্তরে দেশের স্বাধীনতার সক্রিয় বিরোধিতা করা জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করার জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। বামপন্থী নেতা ইনু বলেন, সরকার এ জন্য নির্বাচনী আইন খতিয়ে দেখছে। মৌলবাদী শক্তি জামাতে ইসলামির সঙ্গে গাঁটছড়া ভাঙার জন্য বিএনপি-র প্রতিও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

কায়রোর তাহরির স্কোয়ারের তকমা পাওয়া ঢাকার শাহবাগ স্কোয়ারের মঞ্চ থেকে শুক্রবার মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই সমাবেশে যোগ দিতে বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। এর ফলে এ দিন বিকেল থেকেই এই চত্বর জনসমুদ্রের রূপ নিয়েছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর, রাজশাহি, সিলেট-সহ সর্বত্র একই ভাবে অবস্থান বিক্ষোভ চলছে। জামাতের ডাকা দু’দিন হরতালের বন্ধ থাকার পরে আজই ঢাকার স্কুল-কলেজগুলি খুলেছে। কিন্তু সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা দল বেঁধে শাহবাগ স্কোয়ারে ভিড় জমান। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের পাশাপাশি বহু শিশু-কিশোরকেও দেখা যায় বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ‘রাজাকারদের ফাঁসি চাই’ স্লোগান দিতে। ঢাকার অলি-গলিতে আজ শিশু-কিশোরদের মিছিলও নজর কেড়েছে। লেখক-কবি, শিল্পী, অভিনেতা, নাট্যব্যক্তিত্বদের পরে আজ প্রাক্তন ফুটবলার ও ক্রিকেটাররাও সমাবেশে এসে সংহতি জানিয়ে যান। আজও সারারাত গানে-স্লোগানে সরগরম থাকছে শাহবাগ স্কোয়ার।

জামাতে ইসলামির এক প্রথম সারির নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে আনন্দবাজারের সঙ্গে কথায় স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁদের নেতাদের ফাঁসির দাবিতে এমন জনজোয়ারের বিষয়টি তাঁরা আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি। এর ফলে এক দিকে যেমন তাঁদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে, তেমনই দেশ জুড়ে বড়সড় সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ওই নেতার মতে, স্বতঃস্ফূর্ত এই বিক্ষোভের হাওয়া সরকারের পালে লাগাতে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা-শহিদ দিবসের আগেই জামাতের আর এক শীর্ষ নেতা দেলোয়ার হোসেন সাইদিকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
জামাত নেতার আশঙ্কা, আর তা হলেই দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। সইদির বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে রায় দেওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই রায় পিছিয়ে দেওয়ার জন্য জামাত দেশজুড়ে আরও হাঙ্গামা করতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন ওই নেতা। ইতিমধ্যেই শনিবার চট্টগ্রামে ফের হরতালের ডাক দিয়েছে জামাতে ইসলামি।

আওয়ামি লিগের বহু নেতাকে সমাবেশে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করতে দেখা গেলেও বিএনপি-র নেতারা অদৃশ্য। বিএনপি-র এক শীর্ষ নেতা, আগের আমলে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকেও একাত্তরে গণহত্যার জন্য কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। প্রথম দিকে বিএনপি-র সভা থেকে বিচার বাতিলের দাবি করা হলেও, এখন তারা সেই দাবি থেকে সরে এসেছে। তবে মৌলবাদী জামাতে ইসলামির সঙ্গে জোট ছাড়ার বিষয়ে এখনও কোনও ঘোষণা তারা করেনি।

সুত্র ,


মন্তব্য

মরুদ্যান এর ছবি

পরশু দিন দেখলাম টিভিতে (যেদিন জাফর ইকবাল গেলেন) বারবার সবাই ব্লগার এ্যান্ড একটিভিস্ট ফোরামের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে এই আন্দোলন শুরু করার জন্য।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমাকেও একজন জানালেন তাদের ইনিশিয়েটিভের কথা। এ বিষয়ে আমার মন্তব্যগুলো অজ্ঞানতা প্রসূত মনে হওয়ায় মুছে দিলাম।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

দ্বিতীয় পয়েন্টটা গুরুত্বপূর্ণ। রায় যেটাই হোক সেটা নিয়েই জামাত এবং তার সহযোগীরা পক্ষপাতের অভিযোগ তুলতে পারে। পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে সেটা অবশ্য সময়ই বলে দেবে।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

এই চিন্তাগুলো গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের স্বাভাবিক ক্ষোভ থেকে এই আন্দোলন। প্রথমে কোনো নির্দিষ্ট দিকনির্দেশনাপূর্ণ দাবি সামনে রেখে এই আন্দোলন শুরু হয়েছে বলা যাবে না। এই আন্দোলন আওয়ামী লীগের দলীয় পরিকল্পনা এই কথা একেবারে অবিশ্বাস্য। স্বতস্ফূর্ত বলেই এখানে জামাত শিবির বাদে সকলেরই ঠাঁই হয়েছে, বাছবিচারের সাংগঠনিক তৎপরতা শুরুর দিকটা থেকে অতি আলবৎ ছিলো না। এখানে শিশুদের না থাকাটাই কাম্য। তথাপি তাদের দায়িত্ব তো তাদের বাবা মারই। তারাই যদি নিয়ে আসেন, কী করার আছে।

আন্দোলনটা যেমন একেবারে অকস্মাৎ ছিলো, সকল অনুমানের বাইরে, এর ভবিষ্যত নিয়ে কল্পনা করাটাও ততোধিক দূরুহ। আন্দোলনটা বিচার বা ট্রাইবুনালকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে বাস্তবনিষ্ঠ দিকনির্দেশনার দিকে যেতে পারে। বিচারে সরকারের সত্যিই যদি হস্তক্ষেপ থাকে আর ফাঁসিতে অনিচ্ছা থেকে থাকে, তাহলে আগামী বিচারগুলো তার জন্যে অগ্নি পরীক্ষা হবার কথা। তবে সরকারের হাত থাক বা না থাক, দ্রুত সাঈদী বা এমন কারও ফাঁসীর আদেশ ও সরকারের তরফ থেকে কোনো আশ্বাস আসলে আন্দোলনে ভাটা পড়তে পারে। সেই ভাটা আন্দোলনকারীদের এই মুহূর্তের চাওয়া হোক কি না হোক। তবে এই আন্দোলনে ভাটা পড়ুক সেটা সরকার নিজেও চাইবে বলে মনে হয় না।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তবে এই আন্দোলনে ভাটা পড়ুক সেটা সরকার নিজেও চাইবে বলে মনে হয় না।

আন্দোলনটাকে সরকার ও সরকারী দল সমর্থন দিলেও এর নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নেই। পিনখোলা গ্রেনেড কেউই হাতে রাখতে রাজী হবে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

Pritha Baroi এর ছবি

This is the failure of all post-independence govt. of Independent Bangladesh -that after forty years the nation had to be united against the same issue for which it had already shed blood before fourty years, which is a shame for us.

I believe the nation has already made the govt. (in present as well as in future) to understand - that the time has come up to think in new direction as well as to be prepared to face and manage the future changes.

রু এর ছবি

দ্বিতীয় পয়েন্টটি আমারও চোখে লেগেছিল।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দ্বিতীয়ত, বিরক্ত হয়েছি ফাঁসি দাবী বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো শিশুদের দেখে। শিশুদের যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে সঠিক জ্ঞান দেয়া দরকার, কিন্তু অবুঝ এই শিশুদের মনে ফাঁসির মতো ভয়ঙ্কর বিষয়টি ঢুকিয়ে দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা দেখি না। শিশুদের "ফাঁসি" সংক্রান্ত কোনো মেসেজের বাইরে রাখার অনুরোধ থাকবে আমার আন্দোলন কারীদের প্রতি।

সহমত।

অনেকেই বউ-বাচ্চা-শালা-শালী নিয়ে পিকনিক মুডে শাহ্‌বাগ আসছেন। তাদের সাজ-গোজ, শ্লোগান দেবার ধরন, ছবি তোলা বা ভিডিও করার হিড়িক দেখলে এটা স্পষ্ট হয়। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে খুব স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে শাহ্‌বাগ কোন পিকনিক করার জায়গা না, আর এটা বৈশাখী মেলাও না। পিকনিককারীদের অর্ধচন্দ্র দিয়ে শাহ্‌বাগ থেকে বিদায় দিতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

onogh এর ছবি

পিকনিক বা বৈশাখী মেলা না হতে পারে, তা বলে সাজ-গোজ করে যেতে বাধা কোথায়? "অনেকেই বউ-বাচ্চা-শালা-শালী নিয়ে পিকনিক মুডে শাহ্‌বাগ আসছেন"--সমস‌্যা কোথায়? ইতিহাসের অংশ হতে সবাই যাচছে--যে ভাবেই যাক॥ এই আন্দোলনের

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাধাটা সাজগোজে নয়, সাজগোজ করে শাহ্‌বাগে ফটসেশন করাটাতে আপত্তি আছে। ইতিহাসের অংশ হতে আপত্তি নাই, আপত্তিটা আপনার ভাষায় "যে ভাবেই যাক"-এ। মুক্তিযুদ্ধ বা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এর কোনটাই যে তামাশার বিষয় না এই সহজ সত্যটা বোঝার চেষ্টা করেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

onogh এর ছবি

শালা শালী, নানা দাদা, নাতি পুতি যাকে খুশি নিয়ে আসুক সমস্যা কোথায়? শাহবাগে ইতিহাস রচনা হচ্ছে, নির্ভয়ে প্রতিবাদ করতে আসছে সবাই, আসুক সেজে গুজে- এই অসাধারণ আন্দোলন তাতে অন্যমাত্রা পেয়ে যায়| এই আন্দোলন তো উদযাপনের ও, বাঙালি তা দেখিয়ে দিয়েছে. কেউ যা ভাবতে পারেনি সেটাই হচ্ছে, এই প্রতিবাদ আমার কাছে আনন্দেরও বটে| হুঙ্কার দিয়ে দিক, চিন্কার করে দিক, ফিসফিসিয়ে দিক, মনে মনে দিক, স্লোগান স্লোগানই--সবকিছুই গণ প্রতিরোধের ভাষাকে জোরালো করে|

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শ্লোগান দিতে আমি নিষেধ করিনি। শাহ্‌বাগে গেলে শ্লোগান দিতে হবে বা শ্লোগানে গলা মেলাতে হবে। আপত্তি হচ্ছে এটাকে বৈশাখী মেলা বানানোতে। পরিবার পরিজন নিয়ে আসতেও নিষেধ করিনি। আপত্তি করেছি শাহ্‌বাগে পিকনিক করতে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৌরভ কবীর এর ছবি

সহমত। বইদেশিকে তো দেখলাম একজন বাদাম খাওয়ার জন্যে হলেও শাহবাগ যেতে বলেছেন।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তবে বৃহত্তর পরিধিতে এই আন্দোলনের ফলাফল কি হতে পারে সেটাও ভাবলাম। এটি আংশকা করা অমূলক নয় যে, ট্রাইবুনালের বিচার এই বিশাল গণচাপের মুখে পড়ে বদলে যেতে পারে। কোনভাবে যদি বিচার কাজ বায়াসড হয়ে যায় তাহলেই কিন্তু ভবিষ্যতে এতো গুরুত্বপূর্ণ বিচারের রায় প্রশ্নের সম্মুখীন হবে।

আপনার আশংকা সঠিক। এখন ট্রাইবুনাল কোন শুয়োরের বাচ্চার ফাঁসির আদেশ দিলেই ছাগুগুলি বায়াসনেসের ধোঁয়া তুলে ম্যাৎকার শুরু করবে। যেহেতু বিচারের ক্ষেত্রে শাস্তির ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্নসীমা নির্ধারিত থাকে, তাই কোন বিচারকের পক্ষে আইনবহির্ভূত অধিকতর কঠোর সাজা দেবার উপায় নেই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাংলাদেশে চর্চা করার ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিগুলোর মধ্যে থেকে যুদ্ধাপরাধীরা বেরিয়ে গেলে ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো খুব সহজে ডাল পালা মেলতে পারে বলেও আমার আশংকা হয়।

এই জায়গাটাতে আমাদের একটা বড় ভুল হয়ে গেছে। যাবতীয় মনযোগ জামায়াতের দিকে নিবদ্ধ করায় বাকি ছাগুগুলো গোকূলে বাড়া শুরু করেছে। কয়েকদিন আগে ১২ দলীয় ইসলামী জোট নামে একটি গ্রুপ বামদের রাজনীতি নিষদ্ধ করার দাবিতে হরতাল ডেকেছিল। ছাগলের এই তিন নাম্বার বাচ্চার দলও রাজাকারের দল। রঙবেরঙের মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলাম, পিডিপি, কেএসপি'র মতো দলগুলোও শান্তি কমিটি-রাজাকারদের দল। চীনাবাদাম বামগুলোও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ও পরবর্তীতেও পাকিস্তানকে সমর্থন ও সহায়তার জন্য দায়ী। এগুলোর একটাকেও মাফ করা যাবে না।

ক্ষমতায় যায় এমন দলগুলোর মধ্যে ছাগু, ছাগুবান্ধবের অভাব নেই। কোন কোন দলে তো চিহ্নিত ঘাতক-দালাল আছে। তাই এই দলগুলো কেউ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন সেখানে লুকানো ছাগুদের প্রশ্রয়ে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি সঞ্জীবিত হয়। এজন্যই যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগ দেশকে 'ধর্মনিরপেক্ষ' 'ইসলামী রাষ্ট্র' বানিয়ে ছেড়েছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রবাসীদের দেশপ্রেম সবসময়ই দ্বিগুন জ্বলে, বাংলার মানুষ - যেখানেই থাকে না কেন; বাঙালি স্বত্ত্বা তাকে দেশ মায়ের ডাকে সবসময়ই দ্রোহী করে তোলে। (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট)

ন এর ছবি

একমত, ধর্ম ভিত্তিক সব রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ করা হোক

দময়ন্তী এর ছবি

এই যে আনন্দবাজারের খবরটা। ওটা শুক্রবারে খবর ছিল।

http://www.anandabazar.com/archive/1130208/8bdesh1.html

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

কৌস্তুভ এর ছবি

আনন্দবাজারের খবর দিন চলে গেলে আর্কাইভে চলে যায়। ওখানে খবরটা আছে ঠিকই।
http://www.anandabazar.com/archive/1130208/8bdesh1.html

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।