ত্বকীর মৃত্যুর খবর যখন শুনলাম তখন বুকের ভেতর একটা বিশাল শূন্যতা আমাকে পেয়ে বসল। মনে হচ্ছিল একটা কালো ব্ল্যাক হোল পৃথিবীর সমস্ত আলো শুষে নিচ্ছে। গলার ভেতর কি যেন একটা শক্ত লেগে আছে।
আমি ঘরে ফিরে আমার সন্তানকে বুকে নিয়ে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম।
আমি কল্পনাও করতে পারছি না কতখানি শূন্যতা ত্বকীর বাবা মার বুকে। সন্তান না হারিয়ে যদি আমার কাছে সন্তান হারানোর বেদনা এতখানি অসহ হয় তাহলে তাদের শোকের ব্যাপ্তি নিশ্চয় মহাশূণ্যতার চেয়েও অনেক অনেক বেশী। আমরা যারা এই দুঃসহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যাইনি তাদের কল্পনার বাইরে এই শোক।
বরাহের দল তোরা জেনে রাখ, রুমীর মৃত্যু যেমন জাহানার ইমামকে শক্তিশালী করেছে, জন্ম দিয়েছে লাখো কোটি রুমীর, তেমনি ত্বকীর মৃত্যু তার বাবা মার জন্য তৈরী করবে লক্ষ কোটি ত্বকীর আর লক্ষ কোটি ত্বকীর বাবার। এই আমি বলে রাখলাম।
আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, ত্বকীর মৃত্যুতে দাঁড়িয়ে আমি শপথ করছি, যতদিন না এই খুনী, ধর্মান্ধ বরাহদের হাত থেকে বাংলাদেশ এবং পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারছি ততদিন আমি, আরেকজন বাবা, ত্বকীর বাবা হয়ে লড়ে যাবো।
ত্বকী তুমি শান্তিতে ঘুমাও।
মন্তব্য
এই বই গুলোর সাথে থেকে 'হয়ে উঠা' মানুষ টা হত বাংলাদেশের মানুষ --- অসম্ভব কস্ট লেগেছে, লাগছে ত্বকীর জন্য -
বই গুলোর বাইরে থাকা অমানুষগুলো বুঝলোইনা জীবন কত সুন্দর - বরং যে বুঝেছিল তাকে আর সময় দিলনা ---------
(একটু আগে বন্ধুদের একটা অনলাইন গ্রুপে কিছুটা হাল্কা মেজাজেই ছিলাম - আপনার লেখাটা মন ভারী করে দিল মুর্শেদ ভাই)
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
এক অসম্ভব কষ্টে ভিতরটা ভরে আছে।
এই ক্ষোভ, রাগ কষ্ট কিছুতেই মিটবার নয়।
এই ধর্মান্ধ বরাহগুলোর বিরুদ্ধে আমরা লড়ে যাব, আমরা জয়ী হব।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
ছবিটার দিকে তাকাতেই চোখ ভারী হয়ে আসে।
__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে
কোন কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
এত কষ্ট লেগেছে যে বলে বঝাতে পারবোনা।। নিজের সন্তানের কথা মনে হচ্ছিলো লেখাটা পড়ার সময়।।।।।।
রাব্বি ভাইকে (রফিউর রাব্বি, তানভীর মুহাম্মাদ ত্বকীর বাবা) দেখছি আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি তখন থেকে। সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন, জাতীয় দিবসগুলির অনুষ্ঠান আয়োজন, সাংস্কৃতিক সংগঠন করা এগুলোতে রাব্বি ভাই সামনের সারির মানুষ। পরে তাঁকে আরো দেখেছি প্রগতিশীল সামাজিক আন্দোলন, নাগরিক সুবিধা আদায়ের আন্দোলনগুলোতে। বাস ভাড়া বৃদ্ধি রোধের আন্দোলন, রেলওয়ের জমি উদ্ধারের আন্দোলন, নির্বাচনে নাগরিক কমিটি গঠন করা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে গণজাগরণ মঞ্চ করা এমন সব মুভমেন্টেও রাব্বি ভাই সামনের সারির লোক। এমন ধারা লোককে বলা যায় বোকা লোক, যারা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান। এই বোকা লোকগুলিকে বেশি বাড়তে দিতে নেই। তাহলে অনেকের স্বার্থে আঘাত লাগে। নিঃসন্দেহে রাব্বি ভাই সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে অনেকের স্বার্থে আঘাত দিয়ে ফেলেছিলেন। তাই তাঁকে চরম মূল্য দিতে হলো।
মানুষ কতোটা নীচ হতে পারে যে নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের কারণে মাত্র সতের বছর বয়সী অমিত সম্ভাবনাময় এক কিশোরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতে পারে! ত্বকী নিখোঁজ হবার পর পুলিশকে, র্যাবকে জানানো হয়েছিল। তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন জানি না। ফলাফল হচ্ছে দেড় দিন পর ত্বকীর লাশ উদ্ধার করা। বিদ্যমান ব্যবস্থায় যে গলদগুলো রয়ে গেছে সেগুলো আর কতো মূল্য দিলে শোধরানো হবে?
গত শুক্রবারে আমি নারায়ণগঞ্জে ছিলাম। আমি সেখানে সাধারণ মানুষের ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া, আহাজারী আর কান্না দেখেছি। আমি জানি না ত্বকীর হত্যাকারীদের আদৌ গ্রেফতার করা, বিচারের মুখোমুখি করা ও উপযুক্ত শাস্তি দেয়া সম্ভব হবে কিনা। বিচারহীনতার যে নোংরা সংস্কৃতি এদেশে গড়ে উঠেছে তার মূলোচ্ছেদ না করলে বার বার এভাবে আমাদেরকে চরম মূল্য দিয়ে যেতে হবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সংগ্রামী, ত্যাগী এই মানুষগুলোকেই কেন যেন সবসময় চরম মূল্য দিতে হয় - মনটা খারাপ হয়েই আছে পান্ডব দা
খবরটা শোনার পর থেকেই অসহায় লাগছে খুব -এই অমানুষগুলোর হাত হতে নিস্তার পেতে ,এই কলঙ্ক হতে মুক্তি পেতে আমাদের আর কত ত্বকী হারাতে হবে !
মনের দাগ বাড়ছে প্রতিদিন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সন্তান বিদেশ-বিভুঁইয়ে থাকার কারনে মনের মধ্যে বিশাল এক শুন্যতা অনুভব করি। আর যদি চিরতরে সে হারিয়ে যায় তাহলে কি হবে, ভাবতে পারিনা। লেখাটা পড়ে মনের মধ্যে এক অব্যক্ত যন্ত্রণা অনুভব করছি।
এ সব কিছু দেখেশুনে ক্ষোভে দুঃখে সব ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।
জামাতি জানোয়ার গুলো তাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় সাহসী মানুষগুলোর আপনজনদের নিষ্ঠুর ভাবে খুন করে তাদের মনোবল ভেঙে দেয়ার মিশন হাতে নিয়েছে বলে হচ্ছে। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ভাইকে খুন করা তারি ধারাবাহিকতা। কতোখানি নিষ্ঠুরতা এই জঘন্য জানয়ারদের মাঝে আছে ভাবলেই রক্ত হিম হয়ে যায়! প্রতিদিন আতংকে হিম হয়ে থাকি নুতন কোনও মানুষের খুন হয়ে যাবার আশঙ্কায়!
আমরা স্তব্ধ, নির্বাক। কোন শান্তনাই পারবেনা ত্বকির পরিবারের শুন্যতাকে এতটুক পূর্ণতা দিতে।
আমরা স্তব্ধ, নির্বাক। কোন শান্তনাই পারবেনা ত্বকির পরিবারের শুন্যতাকে এতটুক পূর্ণতা দিতে।
যতবারই ত্বকীর ছবিটার দিকে তাকাই, কান্না আটকাতে পারি না!
"সংগ্রামী, ত্যাগী আর ভালো মানুষগুলোকেই কেনো যেনো সবসময় চরমমূল্য দিতে হয় !"
প্রকৃতির এই বিচিত্র বিধান আমার বোধের বাইরে।
আমি পারছিনা, আমি পারছিনা পুত্রশোকাতুর পিতার জন্য কোনো স্বান্তনাবাণী আবৃত্তি করতে
আমি জানিনা কবে ফুরাবে এই অস্তিত্ববিনাশী অন্ধকারযাত্রা ---
বিজন কথক
কিছু বলার আসলেই কোন ভাষা নেই
খুব ই খারাপ লাগসে।
আমিন।
শোক শক্তিতে পরিণত হউক।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এভাবে এক দেবশিশু কেন অকালে ঝরে জাবে ? এত মেনে নেয়া অসম্ভব ।
ত্বকীর বাবা’র কথা শুনছি আর শ্রদ্ধা বাড়ছে। সাথে বাড়ছে ক্ষোভ, এইরকম একটা সম্ভাবনাময় শিশু’র জীবন যারা এইভাবে নিভিয়ে দিতে পারে তাদের জন্য ঘৃণা।
এই খবরটা জানার পর থেকে আমার ছেলের মুখের দিকে তাকাতে পারিনি। বারবার মনে হচ্ছিল যদি কিছু হয়ে যায়। কিছু যদি হয়ে যায়
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
কিছুতেই স্বস্তি পাচ্ছি না। ক্ষত বাড়ছেই।
বুকের ভিতরে রক্তের চাপ বেড়ে ওঠে,
আপন রক্তে রাঙাতে চাই ঘাতকের মুখ।
ফিরে আসি; বারবার আসি.......
আপন অক্ষমতায়।।
এখন আর কেউ ত্বকীর বাবা হতে চায় না।
নতুন মন্তব্য করুন