অনেকদিন ধরে বুয়েটে মৌলবাদী রাজনীতিরে আগ্রাসনের উপর একটা তথ্যনিষ্ঠ লেখা লিখবো বলে ভাবছিলাম। কিন্তু দেশের বাইরে থেকে বুয়েটের তথ্য জোগাড় করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু আজকের এই সংবাদটা দেখে একটা ছোট আকারের সাধারণ অবজারভেশন না লিখে পারলাম না।
বুয়েটে পড়ার সময় থেকেই দেখেছি আমার সহপাঠীরা ছাগু বান্ধব। এমনকি আমিও তেমন একটা সচেতন ছিলাম না এ বিষয়ে। প্রচন্ড প্রেসারে থাকতে হয় বলে, হোয়াটএভার বলে পাশ কাটিয়েছি অনেক সময়। আমাদের ক্লাসে একটা বখে যাওয়া হুজুর ছিলো, যে একবার কথাচ্ছলে জানিয়েছিলো সে আন্ডারগ্রাউন্ড জিহাদের সাথে যুক্ত। এর কতটা চাপা তা অবশ্য প্রশ্নসাপেক্ষ। আমাদের সময় নিবার্চনে সম্ভবতঃ প্রথম শিবির অংশগ্রহণ করেছিলো। আমারা সে ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করলেও তেমন একটা আপত্তি করিনি।
আমেরিকায় এসে একটা বৃহত্তর বুয়েট কমিউনিটির মধ্যে এসে আমার চোখ খুলে গেলো। অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম বুয়েটের একটা বড় অংশ ছাগু কিংবা ছাগুবান্ধব। এরা নিয়মিত বাসায় বাসায় হালাকা পালন করে। একজনের বাসায় শুনলাম সাঈদী (খুবসম্ভব নিজামী অথবা সাঈদী) বেড়াতে এসেছিলেন।
শাহবাগ আন্দোলনের সময় এদের আসল চেহারা ধরা পড়ল আরো বিকটভাবে। আমার এক ইমেইলের জবাবে এক বুয়েটিয়ান লিখলেন:
Just for clarification: I understand the term যুদ্ধপরাধী and যুদ্ধপরাধী should be prosecuted, but, when we use the term রাজাকার, people might get confused if we are talking about Pakistani রাজাকার or Indian রাজাকার.
আরো অবাক হলাম এর পরবর্তী ঘটনায়। আমি এবং আরো কয়েকজন এই উস্কানীমূলক ইমেইলের প্রতিবাদ করায় আমাদেরকেই বরং বলা হলো উগ্র। শাহবাগ আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করে আমরা যখন একত্র হলাম, লক্ষ্য করে দেখলাম বড়জোড় ৫% (~১৫০ জনের গ্রুপ থেকে ~৮জন) বুয়েটিয়ান সত্যিকারের এই কারণটিকে মনে প্রাণে বিশ্বাস করে যোগ দিয়েছেন আমাদের সাথে।
তৃতীয় লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো ফেইসবুক ফিড। ফেইসবুকে বুয়েটের বিভিন্ন গ্রুপে এবং বন্ধুদের পোস্ট থেকে ঠিক একই অনুভুতি হলো।
সুতরাং সহপাঠী, অ্যালামনাই এবং ফেইসবুকে বুয়েটিয়ানদের মনোভাব পর্যবেক্ষণ করে আন্দাজ করলাম, ছাগু এবং ছাগু বান্ধব ছাত্র বুয়েটে শতকরা ৯৫ (উপরের তথ্য মতে)। আচ্ছা নাহয় ধরলাম ৯০%। সার্ভে করা গেলে মন্দ হতো না। তবু এই সংখ্যাটি কিন্তু বিশাল! তাই আজকের এই দশ বুয়েটিয়ান গ্রেফতার বা হেফাজতের আন্দোলনে বুয়েটিয়ানের মৃত্যু কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং এরকম ঘটনা ভবিষ্যতে আরো বাড়বে বলেই আমার আশংকা।
কয়েকটি প্রশ্ন মাথায় আসে। প্রথমতঃ বুয়েটের এই বিশাল ছাগু বান্ধব অবস্থার কারণ কি? দ্বিতীয়তঃ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় কি একই ভাবে আক্রান্ত হতে পারে? তৃতীয়তঃ এর থেকে পরিত্রানের উপায় কি?
প্রথম প্রশ্নের উত্তর ভালো দিতে পারবেন হয়ত সমাজতত্ত্ববিদেরা। আমার মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশে ভালো ছেলে বলতে বোঝানো হয় রাজনৈতিক চিন্তা বিহীন ছাত্রদের। যারা কোনো প্রশ্ন করবে না, দেশের চিন্তায় ফালতু (!) সময় নষ্ট করবে না। একটি দেশে এভাবে একটা সিলেকশন প্রেসার তৈরী হয় এবং প্রচুর ছাত্র তৈরী হয় যারা রাজনৈতিকভাবে ইনডিফারেন্ট এবং কোনো রাজনৈতিক মতবাদকে বর্জন করতে পারে না। ফলে ছাত্র পর্যায়ে ভীষণভাবে সক্রিয় জামাত-শিবির সহজে জায়গা করে নিতে পারে।
এছাড়া আমাদের জনসংখ্যাধিক্য এবং অর্থনৈতিক দূর্বলতার কারণে একটা মধ্যবিত্ত ছাত্র খানিকটা মেধাবী হলেই তার উপর আরো ভালো করার প্রচন্ড চাপ তৈরী করা হয়। শিক্ষা তখন জানার, শেখার এবং ক্রিটিকাল প্রশ্ন করার প্রক্রিয়া থেকে সরে গিয়ে হয়ে যায় আরো বেশী নাম্বার তোলার দৌড়। এর পাশাপাশি সামাজিকভাবে নামাজ কালাম করা ছেলেকে একটু ভালো চোখেই দেখা হয়। এই মানসিক প্রেশার, সামাজিক প্রেশারের চাপে ভালো ছাত্রদের ধর্মমুখী হতে দেখা যায় খুব বেশী। ধর্মমূখীতা সরাসরি খারাপ ফলাফল তৈরী না করলেও এক্সট্রিম বা জিহাদি ধারণাগুলোকে সহজেই গ্রহণযোগ্য করার সুযোগ তৈরী করে।
এই যুক্তিগুলো খুব সহজেই অন্যান্য ছাত্রদের উপর প্রয়োগ করা যায়। তাই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় খুব সহজেই এই সমস্যায় পড়তে পারে। যেটা আমরা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ক্ষেত্রে দেখেছি।
আরেকটি বিষয় মনে হয়েছে ঢাকার বাইরে থেকে আসা ছাত্রদের ক্ষেত্রে। ঢাকায় প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি অনেক হওয়ায় বুয়েট সহ অন্যান্য ইউনিভার্সিটতে প্রচুর ছাত্র পড়তে আসে ঢাকার বাইরে থেকে। এদের অনেকে রক্ষণশীল পরিবার থেকে এসেছে। অনেকে এসেছে অনেক টাকা খরচ করে পড়তে, কিন্তু হাত খরচের টাকা হয়ত জোগাড় করতে পারছে না। অনেকে সামাজিকভাবে মিশে যেতে পারছে না ক্লাসের অন্য ছাত্রদের সাথে। উগ্রবাদী ইসলামী সংগঠন এই ধরণের সুবিধা বঞ্চিত ছাত্রদের ধীরে ধীরে ব্রেইন ওয়াশ করে ভিড়িয়ে নিচ্ছে নিজেদের মধ্যে। বুয়েট এর ব্যতিক্রম নয়। ব্যতিক্রম নয় অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।
এর থেকে পরিত্রানের উপায়টি আমার জানা নেই। এটি বিশাল একটি দুষ্টচক্র। ধীরে ধীরে দেশ ব্যাপি এবং ইউনিভার্সিটি ব্যাপি পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সমাধাণ সম্ভব নয়।
এর প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে, অ্যাকনলেজমেন্ট। হেফাজতে ইসলামের প্রথম সমাবেশে বুয়েট থেকে খিচুরী পাঠানো এবং দ্বিতীয় সমাবেশে একজন ছাত্রের মৃত্যুর পর বিষয়টাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে ধামা চাপা দিতে চেয়েছেন ছাত্র এবং প্রসাশন উভয়ই। কিন্তু প্রথমে স্বীকার করে নিতে হবে বুয়েটে মৌলবাদী পচন ছড়িয়ে পড়েছে, তারপর বিস্তার ঠেকানোর পরিকল্পনা করতে হবে।
যেটা আমি লক্ষ্য করেছি জাহাঙ্গীর নগর ইউনিভার্সিটি তুলনামূলকভাবে বেশ প্রগতিশীল। এই ধারণা হয়েছে ইন্টারনেটে এবং ব্যক্তিগত পরিচয়ের সুত্রে পরিচিত প্রাক্তন জাহাঙ্গীর নগর ছাত্রদের সাথে যোগাযোগর ভিত্তিতে। সেখানেও ছাগু বান্ধব নেই তা নয়, তবে মনে হয়েছে সেখানে ৯০% ছাগু বা ছাগুবান্ধব নয় আরো কম। আমার এই ধারণার কোনো তথ্য নির্ভর ভিত্তি নেই। আমার কাছে মনে হয়েছে এর কারণ হলো সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি মুক্তবুদ্ধি চর্চা, তর্ক-বিতর্ক ইত্যাদি চর্চার সুযোগ অনেক বেশী। আর আমার মনে হয় মুক্তবুদ্ধিচর্চার বিষয়টি একটি অনুকরণীয় পদক্ষেপ।
পাঠকের কাছে শেষমেষ তাই একটি খোলা প্রশ্ন: উগ্রবাদী ইসলামী দলগুলোর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আপনার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কি করা যেতে পারে?
আসুন এ বিষয় নিয়ে আমরা সর্তক হই, খোলা মনে আলোচনা করি এবং উগ্রবাদী ইসলামী দলগুলোকে না বলি।
ডিসক্লইমার: লেখাটিতে উগ্রবাদী ইসলামী দলগুলোর ব্যাপারে কথা বলা হয়েছে। ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হয়নি। ধর্মের ব্যাপারটি অপ্রাসঙ্গিক বিধায়, এই দৃষ্টিকোন থেকে কোনো কথা আসলে মডারেটরদেরকে কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রন করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
ডিসক্লইমার ২:
এখানে ব্যবহৃত সংখ্যাগুলো কোনো পরিসংখ্যান থেকে আসেনি। সর্তকভাবে গ্রস কিছু সংখ্যা তুলে ধরে যে কথাটা বলতে চেয়েছি সেটা হলো ছাগু বান্ধব ছাত্র সংখ্যায় হিউমংগাস। সংখ্যাগুলোকে প্রশ্নবিহীন ভাবে সঠিক মনে করার কোনো প্রয়োজন নেই।
মন্তব্য
ভীষণ প্রয়োজনীয় একটা আলোচনা শুরু করেছেন, ধন্যবাদ। আশা করি বুয়েট সংশ্লিস্ট অনেকেই তাদের মতামত জানাবেন। আমার শুধু মনে পড়ে একটা সময় টানা প্রায় বেশ কয়েক বছর ইউকসুর নির্বাচনে প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির প্রতিনিধিদের বিজয়ী হতে দেখতাম বিশেষ করে ছাত্র ইউনিয়ন ছিল জনপ্রিয়তার শীর্ষে বা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। প্রগতিশীলতার, সৃস্টিশীলতার চর্চার ক্ষেত্রে বুয়েটকে কিন্তু অনুস্মরনীয় ভুমিকাই পালন করতে দেখেছি - পচন শুরুর সময়কাল টা কি ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হউয়ার সময় থেকেই শুরু?
অবাক ব্যাপার হচ্ছে ৬০/৬৫ বছর বয়সী বুয়েটিয়ানদের দেখেছি ছাগুবান্ধব মনোভাবে প্রকাশ করতে। এরা স্বাধীনতা যুদ্ধ দেখেছেন। এদের এই মনোভাবের কারণ আমি উদ্ধার করতে পারিনি। সুতরাং বুয়েটে অনেক আগে থেকেই ছাগুবান্ধব পরিবেশ লালিত হয়েছে এমনটা আমার ধারণা।
ওভারঅল বুয়েটিনদের মধ্যে পরীক্ষা পাশের পড়াশোনার বাইরে লেখাপড়া করার প্রবনতা খুব কম। এই কমেন্টটা সুইপিং কমেন্ট মনে হলেও এটা সত্য। বুয়েটকে গত চব্বিশ বছর ধরে খুব কাছ থেকে দেখছি, সুতরাং জানি। আর এই অন্য পড়াশোনা না থাকার কারণে কার্যকারণ, যুক্তির ফাঁক, ফ্যালাসি, ভ্রান্ত অনুপপত্তি এই ব্যাপারগুলো অনেক বুয়েটিয়ানই ধরতে পারেন না। ফলে এদেরকে বিভ্রান্ত করা সহজ। এইভাবে একটু একটু করে গত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বুয়েট আদর্শ ছাগুবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
স্যাম, ইউকসুতে ছাত্র ইউনিয়ন বা জাসদের জয়ের ব্যাপারটা নব্বইয়ের দশকের প্রথম ভাগেই শেষ হয়ে গেছে। পরবর্তীতে বুয়েটে পতিত সামরক স্বৈরাচার এরশাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র সংহতি পর্যন্ত নির্বাচন করেছে। দীর্ঘদিন রাজনীতি বন্ধ থাকাটা শিবির-হিজবুত তাহরীরের মতো সংগঠনকে গোপনে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। ইউকসু না থাকায় সৃষ্টিশীলতার চর্চ্চার সুযোগ কমায় আগাছা অবাধে বাড়তে পেরেছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
পান্ডব্দা লাস্ট ইলেকশন এর ভোট কোন দলে পড়েছিল মনে আছে? কত সনে?
লাস্ট ইলেকশনে ছাত্রদল জিতেছিল। লায়ন ভিপি হয়েছিল।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বুয়েটকে সময় থাকতে থাকতে আল্লামা শফির নিয়ন্ত্রণাধীন বেফাকের আওতায় নিয়ে আসা হৌক সুবহানাল্লাহ। বুয়েট যতোদিন বিশ্ববিদ্যালয় আইনে চলবে ততোদিনই পাবলিক গ্যালো গ্যালো বলে চিল্লাবে।
আরো বড় মন্তব্য চাই হিমু। বিষয়টি গভীর। বলার অনেক কিছু নিশ্চয়ই আছে তোমার।
মৌচাকে ঢিল ছুড়লেন। আমাদের দেশে ধর্মানুভূতির পর সবচেয়ে ছেঞ্ছেতিভ অনুভূতির একটা হইল বুয়েটানুভূতি । কত পারসেন্ট সেটা ব্যাপার না কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই কোনভাবেই যে এই ইস্যু নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবার সময় এসেছে। আমার ব্যক্তিগত মত তিনটা কারণ মৌলবাদের বিস্তারের পেছনে -
১ রাজনৈতিক অসচেতনতা, I hate politics , I love GRE TOEFL ইত্যাদি টিপিক্যাল মনোভাব
২ সাংস্কৃতিক অসচেতনতা (নাটক, গান, গল্প এধরণের কর্মকাণ্ডকে মৌলবাদী দলগুলো চরম অপছন্দ করে, এবং তাদের চাপাতির বিরুদ্ধে এগুলোই হতে পারে বেশ ভালো অস্ত্র)
৩ নিজের ক্যারিয়ার ভবিষ্যৎ এগুলোর পেছনে অন্ধ হওয়া (ক্যারিয়ার সবার কাছেই ইম্পরট্যান্ট কিন্তু নিজের জিপিএ .০১ বাড়ানোর জন্য যেই প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা আমার অনেক বুয়েটের ব্যাচমেটের দেখেছি তার একশ ভাগের একভাগও মনে হয়না আমি বাইরের ইউনিভার্সিটিতে দেখেছি)
মৌচাকে ঢিল ছোঁড়াটা এখন খুব জরুরী। কারণ তিনটার সাথে একমত। কিন্তু সমাধাণের উপায় কি?
সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ব্যাপক হারে বাড়ানো
জাহাঙ্গীরনগরেও এটি অন্যতম কারণ।
৩ নম্বর পয়েন্টে একটা কথা শুনেছি যে এইসব উগ্রবাদী ইসলামিক দলগুলোর নেটওয়ার্কিং সুবিধার জন্য পরবর্তীতে ক্যারিয়ারে ভালো বন্দোবস্ত করে দেবার আশ্বাস দেয়া হয়। এবং এরা এরকম কথা রাখেও। ফলে অনেকেই এইসব সুবিধার জন্য জামাত শিবিরের লাইনে চলে যায়।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
রাজনৈতিক অসচেতনতা, I hate politics , I love GRE TOEF
এইটাই যদি হয় তাহলে এরা আম্রিকাত গিয়া হালকা পাতলা জমায়েত কেন করে? তারা তো পলিটিকস পছন্দ করেনা। তাহলে কারণটা কি?
অঃটঃ ১) বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার মত সাহস কারো নাই।
২) তোমাকে বধিবে যে গোকূলে বাড়িছে সে। এই কালসাপ গোকূলে বাড়ে নাই। এই কালসাপকে নিজের ঘরে দুধ কলা দিয়ে পোষা হয়েছে। এখন যখন ঘরের মানুষকে কামড় দেয়া শুরু করেছে তখন সবার মনে হচ্ছে এই সাপ কোথায়। কিন্তু সাপ চিনতে পেরেও সেই সাপ মারার সাহস বা ইচ্ছা কোনটাই কারো নাই। ঠিক যেমনটা এই পোষ্ট এ ঘটেছে।
মানে বলতে চাচ্ছেন সাপ মারার সাহস বা ইচ্ছা এই পোস্টে ব্যক্ত করা হয়নি?
বুয়েট শব্দটা "বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের অধিকাংশ ছাত্র ছাত্রী" দিয়ে রিপ্লেস করলে সঠিক হয়। এই সমস্যা শুধু বুয়েটের একার সমস্যা না। এটা সবজায়গাতেই আছে। বুয়েটের ছাত্ররা ইন্টারনেটে এ্যাকটিভ বেশি বলে তাদেরটা চোখে পড়ে বেশি।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
বুয়েটের ছাত্রদের জিজ্ঞেস করে দেখবেন। তাদের ধারণা বুয়েটে এরকম ছাত্র থাকতেই পারে না। হেফাজতে ইসলামে যে ছাত্র মারা গেলো তখন এরকমই বক্তব্য শুনেছি। ছাত্র এবং প্রসাশন দুইয়ের কাছ থেকেই।
এই ধরণের ডিনায়াল যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা তাদের ব্র্যান্ডের বিষয়ে অতি সচেতন থাকে তাদের মধ্যে পাবেন। ঢাবি (আইবিএ বাদে), জাবিতে এই জিনিস পাবেন না। বুয়েটে পাবেন, আইইউটিতে পাবেন, ক্যাডেটে পাবেন এই ব্র্যান্ড ভ্যালু নিয়ে মোহিত লোকজন। এরা তাদের প্রতিষ্ঠানের কোন বদনামই সহ্য করতে পারে না। উল্টো আপনাকে শত্রু জ্ঞানে তাড়া করতে চাবে। এই ডিনায়ালের পরিণতি হলো মৌলবাদের শিকড় সবার অগোচরে বাড়তে থাকা।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
গুরুত্বপূর্ণ লেখা। আমার ধারণা এই সমস্যা বিজ্ঞান বিভাগের (শুধু বুয়েট না, আমি মেডিক্যাল কলেজ এবং সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাও বলছি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশী। আমি জানিনা এর কারণ কি। তবে এটা পরিষ্কার যে বিজ্ঞান পড়লেই বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া যায় না; আর বিজ্ঞানমনস্ক হওয়ার জন্য বিজ্ঞান পড়া আবশ্যিক না।
এইটা একটা ভালো কথা বলছেন
হিম্ভাই'র তথ্য দেইখা চমকায় উঠলাম
১। জিরো টু ইনফিনিটির দায়িত্বে ত্রিভুজ থাকতে পারে স্বপ্নেও ভাবি নাই... উহাতে খান দুয়েক লেখাও পাঠিয়েছিলুম... ভবিষ্যতে পাঠাবার আগে দু'বার ভেবে নেব।
২। এই জন্যই কি পত্রিকাটির ফেসবুক পেইজে বিজ্ঞানঘন প্রশ্নের চাইতে ইদানীং নায়েকঘন প্রশ্ন বেশি দেখছি??
৩। ইতোমধ্যে সারাদেশে ছড়িয়ে যাওয়া বিজ্ঞান পত্রিকাটির ই যদি এই অবস্থা হয়, শেষ কালে এসে "সাংস্কৃতিক আন্দোলন" কি আদৌ কাজে দেবে? নাকি সেটাও বেহাত হয়ে যাবে??
এটা জুড়ে দিয়েছি:
হতাশ এবং সংক্ষুদ্ধ- এখন নয়, আরো আগে থেকেই! মাঝে মাঝে শুধু আগুন জ্বলে উঠে!
সমস্যার সমাধান আমার কাছে পরিস্কারঃ রাজনৈতিক সচেতনতা-ইতিহাস চেতনা জাগ্রতকরণ, অত্যধিক পরিমাণে সাংস্কৃতিক চর্চা অব্যাহত রাখা!
আলোচনা শুরু হৈছে, চলুক, বিস্তারিত আসুক!
বাই দ্যা অয়ে, ছাগুতো অনেক ধরণের, জামাতী-হিজবুতী-হেফাজতী-তাবলীগী-নরম-গরম-উগ্র-পশ্চাৎ অনেক। আমার পর্যবেক্ষণেও বুয়েটে ছাগু এবং ছাগবান্ধবসংখ্যা আসলেই অনেক ভারী!
_____________________
Give Her Freedom!
ধন্যবাদ।
শতকরা হিসাবটা আসলে যথেষ্ট পরিমান ওয়ানিংয়ের সাথে দিয়েছি বলে আমার মনে হয়। প্রথমে বলেছি তথ্যনিষ্ঠ আলোচনা এটা নয় বরং সাধারণ অবজারভেশন। পরে প্রতিটি ডেটার সাথে বলেছি কিভাবে পেয়েছি। প্রথম ৯৫% এসেছে ১৫০ জনের মধ্যে ৮ জন থেকে। দ্বিতীয়টা ৯৫% পিওর স্পেকিউলেশন, আগের ৯৫% এর হিসেবের ভিত্তিতে। সেটাও কমিয়ে নিয়েছি খানিকটা। আর সার্ভের প্রয়োজনীয়তাটাও উল্লেখ করেছি।
সর্তকভাবে গ্রস কিছু সংখ্যা তুলে ধরে যে পয়েন্ট বলতে চেয়েছি সেটা হলো ছাগু বান্ধব ছাত্র সংখ্যায় হিউমংগাস।
সংখ্যার বিষয়টি পরিষ্কার না হলে অনুগ্রহ করে জানাবেন। আরো পরিষ্কার করার চেষ্টা করবো।
বারবার যেটা ঘুরে ফিরে আসছেঃ একটা সার্ভের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য! সহমত।
আমার ব্যাচের আমর ডিপার্টমান্টের ১২০ জনের উপর পর্যবেক্ষণ করলে ছাগুবান্ধব সংখ্যাটা এত নয়। ৫০ ভাগেরও নিচে। তবে এরা বিদেশে গেলে সেটা বেড়ে ৯০ ভাগ হবে কী না জানি না!
_____________________
Give Her Freedom!
রাজনৈতিক সচেতনাটা আসলে সংস্কৃতি চেতনাটা অটোমেটিক চলে আসে। আমাদের সংস্কৃতিতে যে প্রতিরোধের ইতিহাসটা আছে সেটা আসলে রাজনৈতিক চেতনার ফসল।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
সংস্কৃতির ব্যাপারে একটা কথা বলি। বুয়েটের ছেলেমেয়েরা যে আসলে কোন বিষয়টাতে আগ্রহী সেটা আজ পর্যন্ত বুঝে উঠতে পারিনি। অডিটোরিয়ামে গান, নাটক, কবিতা, জাদু, বিতর্ক, নাচ, আলোচনা, সেমিনার যা-ই চলুক সেখানে লোক হয় না। খেলার মাঠে নিজের দলের খেলা চললেও কেউ যায় না। অ্যাকাডেমিক সেমিনার বা কনফারেন্সেও বিশেষ লোক হয় না। এরা সবাই যে খুব সিরিয়াসলি পড়াশোনা করে তাও না। এমনকি নিজের পাঠ্য বিষয়ের গভীরেও খুব কমজন যায়। এরা প্রায় সর্ব বিষয়ে অচেতন/অসচেতন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দাদা, এই অবস্থা সর্বব্যাপী।
মেডিকেল কলেজের অধিকাংশ ছাত্রশিক্ষক অনেক বিখ্যাত সাহিত্যিক বা বিজ্ঞানীর নাম শুনলে ফটিকের মত চেয়ে থাকে। আমার এক কলিগ সহকারী রেজিস্ট্রার, যিনি কিনা আবার কে হবে কোটিপতিতে প্রথমে ২৫ লাখ জিতেছিলেন- রাহুল সাংকৃত্যায়নের নাম পর্যন্ত শোনেননি! বই না পড়তে পারে, কিন্তু প্রথিতযশা লেখকদের নাম পর্যন্ত না জানার একটাই মানে হয়- অপাঠ্য কেতাবের সাথে কোন প্রকারের সংস্রব না রাখা। ছাত্রাবস্থায় দেখতাম বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী থেকে আমরা দু একজন বাদে সবাই শুধুই হুমায়ুন আহমেদ নিত। তিনি অবশ্যই বড় সাহিত্যিক- কিন্তু শুধুই তাঁর বই কেন পড়ব?
এমন কোন ক্লাস, সেমিনার বা সাধারণ বক্তৃতা পাইনি যেখানে বুদ্ধিদীপ্ত ডিজাইনের কথা জোর করে আনা হয় নি। যে দেশে শুধু টাকার জন্য বিজ্ঞানব্যবসা আছে, বিজ্ঞানচেতনা নেই- সেখানে এর বেশি কিছু আশা করা যায় না। খুব বেশি হতাশ হতে হয়।
নীচের অংশটা জুড়ে দিয়েছি।
ধন্যবাদ মাহবুব ভাই।
_____________________
Give Her Freedom!
আমি কিছু দিন আগে জানলাম যে বুয়েটে কোন ছাত্র সংসদ নেই। রাজনৈতিক কর্মকান্ড অনেক স্থবির। আমাদের সময়ে (৮৮ ব্যাচ, ১৯৮৯-১৯৯৫) বুয়েটে শিবির কর্মী ছিল খুব হাতে গোনা কয়েকজন। ছাত্রদল এতোখানি ছাগুপ্রেমি দল ছিল না, ইনফ্যাক্ট অনেক ক্ষেত্রেই তারা জামাত বিরোধী অবস্থানে গেছে।
বর্তমানে বিএনপি ও ছাত্রদল জামাত ও শিবিরের অন্তর্গত হয়ে গেছে। বিএনপির কোন গভীর রাজনৈতিক ভিত্তি নেই - এইটা মূলত আওয়ামী বিরোধীদের জোট হিসাবে রাজনীতিতে এসেছে। সুতরাং বিএনপি-জামাত জোট বাঁধলে সেটা জামাতের গর্ভে যেতে বেশি সময় লাগে নি। যেই ধর্মীয় মূল্যবোধের মূলা নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করে সেই মূলা নিয়ে জামাতের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বেশি দিনের।
আমি প্রথমত মনে করি বিএনপি জামাত জোট ছাগুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া একটা বিরাট কারণ। বিএনপি সমর্থক বলে আর কিছু নেই এখন।
বুয়েটে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের অভাব আরেকটা কারণ।
এ ছাড়াও আমার মনে হয়েছে বুয়েটের অনেক ছাত্র-ছাত্রী মানসিকভাবে অনেকটা স্কুল শিক্ষার্থীদের মতো। বুয়েটের কঠিন পরিবেশ একটা কারণ। এইখানে শিক্ষকদের প্রায় ঈশ্বর জ্ঞান করা হয়। শিক্ষার্থীদের নিজস্ব চিন্তা করার ক্ষমতা কম। পড়ার বইয়ের বাইরের জ্ঞানের অভাব এই মেন্টাল স্টেইটে নিয়ে যায় বলে আমার ধারনা। এইরকম একটা জায়গাতে মৌলবাদ বিস্তার পাওয়া অনেক সোজা।
তবে আমি আমার ফেসবুকে যেইসব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দেখেছি তাদের অবস্থাও প্রায় একই রকম। আমাদের দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠির মধ্যে বিএনপি জনপ্রিয় বেশি - এরাই এখন ছাগু সমর্থক।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
আপনার অবজারভেশনের সাথে একমত হয়েও অর্ন্তগত একটা মেসেজের সাথে একমত হতে পারলাম না। আমার অবজার্ভেশনে দেখেছি সত্তরের এবং আশির দশকের প্রথম দিককার বুয়েটিয়ান একদম গণহারে ছাগু বান্ধব, কিন্তু তুলনামূলকভাবে কম ছাগু। আশির দশক আর নব্বই দশকের এরা মিশ্রিত। তারপর আবার ছাগুর এব ছাগু বান্ধবের পরিমান বেড়েছে। আমার অবজার্ভেশন বিচ্ছিন্ন হতে পারে। এ বিষয়ে আসলেই একটা সার্ভে করা দরকার।
রাজনৈতিক কর্মকান্ড আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই নিষিদ্ধ। বিশেষত নতুন গঠিত সবগুলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েই এটা নিষিদ্ধ। কিন্তু সেখানে বুয়েটের মত এত ছাগুবান্ধব ছেলেপেলে দেখি নি।
-----
মিলন
বুয়েটের গ্রেফতার হওয়া স্যারের রিসার্চ ইন্টারেস্ট দেখলাম লোকে শেয়ার করছে এই প্রকার:
- Filtering Obscenity using Machine Vision
- Extracting Information about the Chain of Narration of Hadith
চউদার কোমল সাহিত্য মেশিন বাস্তবে রূপ পেতে আর দেরি নেই!
এই করে টিচারও হয়ে গেছে সে!
Filtering Obscenity using Machine Vision -
মার ডালা , ও ও ও ও মার ডালা
জীবনের এক গাদা বছর ব্যয় কইচ্চি Machine Vision এ কাম করতে করতে। একসময় হিউম্যান স্কিন ডিটেকশন নিয়ে কাম করতাম। আমার তুর্কি রুমমেট কুপ্রস্তাব দিল চল আমরা দুইজনে মিলে ইন্টারনেটে ন্যুডিটি ডিটেক্ট করার এলগরিদম বানাই। কোথাও কোন প্রয়োজনের বেশী চামড়া দেখা গেলেই আমাদের মেশিন ট্যাঁ ট্যাঁ করে চিৎকার করে সংকেত দিবে। (এরকম এলগরিদম নিয়ে অনেক কাজ হইছে অবশ্য)।
আমি উল্টা প্রস্তাব দিলাম সব কাজ মেশিন দিয়া করানর দরকার কি। তুমি ইন্টারনেট যেই যেই ওয়েবসাইট , ফটো, ভিডিও নিয়ে সন্দেহ হয় সেইগুলা বল। আমি সারারাত দেখে বলে দেব কই চামড়া দেখা গেল আর কই গেল না। এক্কেবারে ফ্রিতে। ছোকরা সন্দেহের দৃষ্টি হেনে চলে গেল। আমারও আর Filtering Obscenity করা হইল না জীবনে।
এইখানে কোন মেশিনের কথা বুঝানি হৈতেছে?
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
আমার মনে হয় আরেকটা বিষয়ে সার্ভে হওয়া প্রয়োজন। সেসমস্ত শিক্ষক বাইরের দেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তাদের মধ্যে কত জন ছাগু বান্ধব আর কতজন ছাগু। আমাদেরকে যারা জ্ঞান্দান করছেন তারা কোন মাইন্ডের সেটার ব্যাপারে একটু ভেবে চিন্তে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বইকি।
এখন ফেইসবুকের মাধ্যমে বিদেশ ফেরত শিক্ষকের নেটওয়ার্ক এবং তাদের বন্ধু বান্ধবদের খোঁজ খবর রাখতে পারেন। সেখান থেকে খানিক ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
আচ্ছা আমেরিকার ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের উপর ছাত্রদের মন্তব্য, রেটিং ইত্যাদি নিয়ে ওয়েবসাইট আছে বেশ কয়েকটি। বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের নিয়ে এরকম কিছু নেই?
বাংলাদেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র কর্তৃক শিক্ষকদের মূল্যায়নের প্র্যাকটিস কি আদৌ আছে? বুয়েটের কথা জানিনা, যখন ঢাবিতে পড়তাম, তখন সেখানে ছিল না।
আচ্ছা বুয়েটে এক সময় তাবলিগের অনেক উতপাত ছিল। এরাই কি পরে জামাত-শিবির হিজবুত তাহরি হয়ে যায়? আর একটা প্রশ্ন যদ্দুর জানি জামাত-শিবির আর তাবলিগ দুইটার মধ্যে অনেক বিরোধ। কিন্তু ছাগুত্বের সময় কিভাবে এক হয়ে যায়??
তাবলিগদের একটা জিনিস লক্ষ্য করেছি। এরা অন্তত বাইরে বাইরে জামায়াত বিরোধী। কিন্তু বিভিন্ন ঘটনায় জামাতের আক্রান্ত হওয়াকে এরা ইসলাম আক্রান্ত হওয়ার সমতুল্য মনে করে!
সাফি, যে কোন তাবলীগের আমীরকে মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধ, সাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করে দেখুন যা উত্তর পাবেন তাতে আপনার সব ফক্ফকা হয়ে যাবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ঠিক।
বুয়েটে ক্লাবের একটিভিটি বাড়ানো প্রয়োজন। আমরা যখন হলে থাকতাম, তখন হিজবুত তাহরীরের সেমিনারে গেলে বিরিয়ানি পাওয়া যেত। অনেকেই বন্ধু বান্ধবের সাথে সাথে স্রেফ বিরিয়ানি খেতে, মজা করতে, যেত। প্যাসিভ ধূমপানের মতন সেই নেশাও পরে তাদের কাউকে আক্রান্ত করেছে।
আমার আমলে (আপনার দুই বছর পরেই আমি) তাবলীগে এই ধরনের খাওয়া-দাওয়ার ব্যপার ছিল।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
বুয়েটের ছাত্রদের মৌলবাদীতা তাদের ভর্তি প্রক্রিয়ার মধ্যে নিহীত। মুখস্তনির্ভর অতিপ্রতিযোগীতা স্টিরিওটাইপদের বাছাই করে।
একমত না। ভর্তি প্রক্রিয়া মুখস্তনির্ভর !! নাহ ঠিক হজম হলনা।
বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় আমাকে কাদার রাসায়নিক গঠণ লিখতে হয়েছিলো। বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা মোটেই মুখস্ত নির্ভর নয়। নইলে আমি কখনই ভর্তি হতে পারতাম না।
'মুখস্তনির্ভর' শব্দটা আগে ডিফাইন করতে হবে। আমি যা বলতে চেয়েছি তা হচ্ছে বুয়েটে চান্স পাওয়াটা অনেকটা 'কেতাবী মেধা' নির্ভর। হয়তো ঠিক ভর্তি পরীক্ষাটা ততটা নয় কিন্তু ভর্তীপূর্ব বাছাইতে সেই স্টিরিওটাইপেরা বাছাই হয়। আমার কথাকে কেতাবী অর্থে না নিলেই বুঝতে সুবিধা হবে।
কেতাবী মেধা বাদ দিয়ে কোন গায়েবী মেধায় ভর্তি চান ভাইজান?
বুয়েটে যারা ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছেন, তারা এ কথা (মুখস্ত নির্ভর) বলতে পারার কথা না। বুয়েটে হয়ত অনেক মেধাবী ছেলে ভর্তি হবার সুযোগ পান না, যারা ভর্তি হবার সুযোগ পান তারা সবাই মেধাবী। অন্য সমস্যাগুলো বুয়েট থেকেই শুরু - আমার ধারনা।
আমার ভাগ্য হয়ত ভাল - আমার পরিচিত মানুষদের মধ্যে ছাগুর সংখ্যা ৫% এর কম হবে। সাম্প্রতিক খবর খুবই দুঃখ/আশংকাজনক। আমি বিশ্বাস করতে চাই বুয়েটে ছাগুর সংখ্যা ৫% এর কমই হবে।
বুয়েটের সাথে দেশের কওমী মাদ্রাসাগুলোর মৌলিক পার্থক্য কী কী?
বুয়েটে চান্স পাই নাই তাই বুয়েট সম্পর্কে খারাপ কথা বললে লোকে বলবে আমার প্যাট ভর্তি হিংসা।
শাহবাগ আন্দোলনের প্রতি জনসমর্থন পাওয়া গেছে ২৫% এর ও নীচে। তাহলে পুরো দেশ এর সাথে বুয়েট এর পার্থক্যটা কতটুকু? তারচেয়ে সরাসরি এটাই বলুন না যে বাংলাদেশের ৯০% লোকই স্বাধীনতা বিরোধী। নিজের স্বাধীনতা বিরোধী দেশ হিসেবে দুনিয়ায় একটা রেকর্ড করে ফেলি?
এই শতাংশের হিসাবগুলি কোথায় পেলেন?
অজ্ঞাতবাস
আমার মনে হয় বর্তমান বুয়েটে ছাগুপ্রবণতা বৃদ্ধি আর সত্তর-আশি দশকের বুয়েটিয়ানদের ক্রমশ ছাগুবান্ধব হয়ে ওঠা দুটো জিনিস ঐতিহাসিকভাবে আলাদা। আমি নিজে বুয়েটের না। আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব মিলিয়ে বুয়েটের বেশ কয়েকটা প্রজন্মের বেশ কিছু মানুষকে দেখবার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। তাই যা বলছি সেটা কোন সিদ্ধান্ত না। অনুসিদ্ধান্ত তৈরীর প্রক্রিয়া হতে পারে বড়জোর।
বুয়েটে একসময়কার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের বলয়টা তৈরী হয়েছিল প্রগতিশীল ছাত্ররাজনীতির হাত ধরে। (টিউশানি করে পেট চালানো ছাত্র তখনো মেজরিটি ছিল। এবং তাদের বেশিরভাগই ঢাকার বাইরে থেকে আসা গ্রামের-মফস্ব:লের মানুষ। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এদের অংশগ্রহণ ঢাকা কেন্দ্রিক মধ্যবিত্তের তুলনায় কম
ছিল না। সুতরাং ঢাকা/নন-ঢাকা কোন কথা না।) পূর্ব ইউরোপ আর সোভিয়েত ইউনিয়নে কমিউনিস্ট সরকারগুলি ক্ষমতাচ্যুত হবার কয়েক বছরের মধ্যে বুয়েটে বামপন্থী রাজনীতি দূর্বল হয়ে আসে। এই সময় সাংস্কৃতিক সংগঠণগুলি টিকে থাকার জন্য গা থেকে লালরঙ মুছে ফেলার চেষ্টা করতে থাকে। অন্যদিকে বেশ কিছু সংস্কারের ফলে শিক্ষাকার্যক্রম আগের তুলনায় অনেকবেশি করে সময় নিয়ে নিতে থাকে। এই দুই প্রক্রিয়ার সিন্থেসাইজড প্রতিক্রিয়ায় বুয়েটে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ঝিমিয়ে আসে অথবা প্রগতিবিরোধি শক্তির দখলে চলে যায়। নব্বই দশকের দ্বিতীয়ার্ধে খুব ধীরে ধীরে হোম ওয়ার্ক করে তারপর বিএনপি-জামাত ক্ষমতায় এলে শিবির এবং অন্যান্য মৌলবাদী দলগুলি বিভিন্ন মুখোশে বেরিয়ে আসতে থাকে। ব্যাপারটার ভয়াবহতম রূপ হয়তো আমরা এখনো দেখি নাই।
পুরনো (১৯৯০ এর আগের)বুয়েটিয়ানদের অনেকের ছাগুবান্ধব হয়ে ওঠার ব্যাপারটা মনে হয় ক্যারিয়ারে থিতু হবার সাথে জড়িত।
আর একটা কথা মনে হলো। নামাজরোজা করা লোক বুয়েটে, ঢাবিতে, জাবিতে চিরদিনই ছিল। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এইসবের পাশাপাশিই চলেছে। সুতরাং নামাজঘরে নজর দিতে গেলে মূল মনোযোগটা দিতে হবে নামাজের পরের খোৎবা এবং ছোট ছোট জটলার আলোচ্য বিষয়বস্তুর দিকে।
অজ্ঞাতবাস
গুড অবজারভেশন। একজন বুয়েটিয়ান হিসাবে এই বিশ্লেষণকে সঠিক এনডোর্স করলাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ভালো অবজারভেশন! বৈশ্বিক রাজনীতি কিভাবে আমাদের সমাজে ছাগু প্রভাব ফেলেছে এটা নিয়ে একটা লেখা দিতে পারেন সুমনদা।
যথার্থ! আপনার মন্তব্যটা সম্ভবত আমার চোখেই প্রথম পড়ে, কিন্তু মোবাইল থেকে লিখতে তো পারিনা
এসময়টাই আমি আমার মন্তব্যে উল্লেখ করতে চেয়েছিলাম, পান্ডব্দার মত আমিও এনডোর্স করলাম।
বুয়েট নিয়ে আমার অম্ল-মধুর স্ম্রিতি কাজ করে, সে গল্প আরেকদিন করা যাবে, আপাতত মুর্শেদ ভাই এর টপিকে থাকি।
সত্যায়িত!
পোস্টের বক্তব্যের সাথে মূল অনেকগুলো পয়েন্টেই অমিল আছে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
লেখাটা ভালো লাগলো, কারন religious extremism is a severe problem world wide. এর থেকে প্ররিত্রান পাওয়া খুব জরুরি। BUET এ পচন ধরা অনেক আগের, কিন্তু আমরা গন্ধ পেলাম অনেক পরে। Lot of issues been focused in the writing, some are really significant, if we believe in humanity and want to have a peaceful world for us and our next generations.
অজ্ঞাতবাস
একমত। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
প্রকৌশল বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করার জন্য আজো সবার কাছে বুয়েট একটা স্বর্গীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশের আর ৮-১০ জন মানুষের থেকে বুয়েটের ভ্যালু এই নব-ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে অনেক বেশি। আর এখন ছাগুগুলা এই জায়গাটারেই টার্গেট করল। ফ্রেশ মাথা, মগজগুলাকে ধবল ধোলাই করা ছাগুদের জন্য বেশ ইজি।
লেখকে অনেক ধন্যবাদ এই টপিকটা এইখানে শুরু করার জন্য। বিশ্বাস করি দেশের মাথা তৈরির কারখানাটা ছাগুদের হাতে থেকে মুক্তি পাবে।
আর আপনার প্রস্নর উত্তর তো আপনি নিজেই দিলেন - "ধর্মমূখীতা"। মুক্ত চিন্তার চর্চা, মুক্তিযুদ্ধর ইতিহাসের চর্চা, কালচারাল কর্মক্যান্ডই পারে এই প্রবলেম সলভ করতে।
বাঙ্গালিয়ানা
"প্রস্ন" আর "কর্মক্যান্ড" কী?
অজ্ঞাতবাস
পড়বার এবং মন্তব্য করবার জন্য ধন্যবাদ।
জামাত যে কাজটা করে সেটা হলো, প্রথমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কিশোরদের মধ্যে একটা বিভ্রান্তি তৈরি করে তারপর ইসলামের সাথে রাজনীতি মিশিয়ে নিজেদের আদর্শ ভরা মওদুদির চটি বইগুলা সাপ্লাই দিয়ে তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনের দিকে তাদের আকৃষ্ট করতে থাকে।
একদিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস চর্চা করে, দেশের প্রত্যন্ত স্থানের স্কুল কলেজ গুলোতে ক্যাম্পেইন করে, এবং ফুলকুড়ি আর কিশোরকন্ঠের মতো প্যারালাল অগরানাইজেশন দাড় করাতে পারলে জামাত শিবিরের এই দেশে ভাত হওয়ার কথা ছিলো না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে হচ্ছে নেটে জামাত-শিবিরকে গালাগালি করে খুব কম পরিশ্রমে কম খরচে দেশ উদ্ধার করা যায়, তাই এই পথে হাটতে কেউই খুব একটা আগ্রহী না
কচি-কাঁচার মেলার একটা ভালো নেট ওয়ার্ক ছিল আগে। রিটন ভাই বোধ হয় এর বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ভালো বলতে পারতেন। মুকুল ফৌজের কাউকেও দেখিনা আজকাল
আপনি তো খুউব খ্রাপ!! একদম জায়গা মতো দিয়ে দিলেন।
জামাত-শিবিরের প্রতি আমার হ্যাশ্রেস্পেক্ট কারণ তারা বিশাল ভিলেন হয়ে যাওয়ার পরেও মাত্র চল্লিশ বছরের মধ্যে কী দুর্দান্ত প্রতাপের সাথে ফিরে আসছে। তাদের সারাদেশের নেটওয়ার্ক, কর্মীদের ডেডিকেশান, আর্থিক সামাজ্র্য প্রতিটা জিনিসই দেখার মতো। বিপরীতে আমরা সবসময়ই শেষরাতের খেলোয়াড়। সেটা টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা হোক, আর দেশরক্ষার মিশন হোক। সবকিছুই একরাতে কমপ্লিট করার চেষ্টা আমাদের।
প্যারালাল অর্গানাইজেশান দাঁড় করানোর চেষ্টা নিয়ে গত এক দেড় বছরে দেশের ১৫-১৬টা জেলাতে ঘুরে এসেছি। অভিজ্ঞতা হল সবাই পিঠ চাপড়ে দেবে এবং কাজের সময় তেমন কাউকেই পাওয়া যাবে না। এমনকি এই ব্লগে দেশোদ্ধারে ব্রত কয়জনা ময়দানের কাজে সহায়তায় আগায়ে আসতে পারে সেই বিষয়েও ধারণা হই গেছে।
মওদুদীর বইয়ের বিপরীতে মুক্তচিন্তার বইগুলো প্রসার এবং প্রচারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। অন্যরকম ধ্রুব আইডিয়া চাইছিলেন। এই যে একটা আইডিয়া:
গুডরিডসে বা ফেইসবুকে একটা "বইপড়ুয়া" গ্রুপ করুন। মুক্তচিন্তার বইগুলো ডিস্ট্রিবিউট করুন। বইয়ের ব্যাপারে আমি সহায়তা করতে পারি। একেকটা সেমিস্টারে বা আরো মাসে একটা করে বই পড়ার ব্যবস্থা করুন। বইটা নিয়ে মাসে একবার আলোচনা/আড্ডার ব্যবস্থা করুন।
আচ্ছা বুয়েটে ইরিডারের প্রচলন কেমন এখন? বুয়েট কর্তৃপক্ষ সস্তায় সবাইকে ইরিডার কেনার ব্যবস্থা করে দিতে পারেন না?
সাহিত্য সংসদকে কেন্দ্র করে একটা পাঠচক্র করা যায় কিনা দেখছি। এটা টার্মের শেষ সপ্তাহ চলছে। সামনের টার্ম শুরু হবে অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে। তখন আশা করি বাস্তবায়ন দেখতে পাবেন। সাথে একটা লাইব্রেরি করা যায় কিনা দেখি।
আর কোন আইডিয়া থাকলে দিতে পারেন। ফাইনাল ইয়ারে আছি তো, কাজ করার সর্বোচ্চ সুযোগ আছে এখন। এই করা যায়, সেই করা যায় আলোচনার সাথে সাথে যদি দু-চারটা আইডিয়া বাস্তবায়ন করে ফেলা যায় তাহলে ভাল না?
কিছু মনে না করলে বলি কী, কী কারণ, কেন হচ্ছে এইসব আলোচনা তো অনেক হইলো! এরচেয়ে চলেন কয়টা ওয়ার্কপ্ল্যান বানাই। স্পেসিফাই করি এক্স্যাক্টলি কী কী করা উচিত, কিভাবে করা যায়, কতদিনের পরিকল্পনা। তারপর সেটার বাস্তবায়নে নেমে পড়ি।
এইখানে বুয়েটকে ম্যালাদিন ধরে চিনেন এমন সিনিয়র আছেন, আবার আমরা যারা এখন বুয়েটে পড়ছি তেমন ক'জনও আছি। বুয়েটের ক্লাবগুলার দায়িত্বও এখন আমাদের হাতে। আপনাদের পরামর্শ আর উৎসাহ পাইলে মনে হয় ছোটখাটো করে হলেও কিছু কাজ করতে পারব। নিজেদের কিছু ইচ্ছাও তো আছেই। সময়টা মনে হয় কথা না বাড়ায়ে কাজে নামার। মুর্শেদ ভাই পাঠচক্রের কথা বললেন, সেটা সামনের টার্ম নাগাদ চালু করতে পারব আশা করি। আপনারাও এইরকম স্পেসিফিক কিছু বলেন। পারলে সেগুলা বাস্তবায়নের সময়েও সাথে থাকেন। তাহলে কিছু পরিবর্তনের আশা করাই যায়।
আর নয়তো ময়দানে এইসব আলোচনার তেমন প্রভাব পড়বেনা। ময়দান দখল করে বসে আছে ছাগলের পাল।
ছাগুরোগের বিরুদ্ধে একটা ইউনিভার্সাল ওষুধের কথা বলতে পারি, যেটা আপনাদের পাঠচক্রের সদস্যদের ওপর প্রয়োগ করে দেখতে পারেন (প্রয়োগ করা উচিৎ হবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত আপনার )। ওষুধটা হল এই কথাঃ স্বর্গ থেকে পশ্চাদ্দেশে লাথি মেরে কেউ আমাদেরকে পৃথিবীতে ফেলে দেয়নি; ৫৫০ মিলিয়ন বছর ধরে প্রাণের উদ্ভব, বিকাশ, এবং পরিবর্তনের যে প্রক্রিয়া পৃথিবীতে চালু আছে, আমরা সেই প্রক্রিয়ার ফসল (product); কিন্তু আমরাই একমাত্র, সর্বশেষ, এবং শ্রেষ্ঠতম ফসল না (অবশ্যই পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত সহকারে)। বিজ্ঞানের বোর্ড স্ট্যান্ড, এ+, কিম্বা পারফেক্ট জিপিএ পাওয়া ছাত্রদের মধ্যে মুক্তচিন্তা এবং বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তুলতে চাইলে আমার মনে হয় এই ওষুধের বিকল্প নেই। আর ছাত্ররা যদি এই ওষুধের প্রতি receptive হয়, ছাগুরোগ নির্মূলের পথে আপনি অন্ততঃ ৯০% এগিয়ে যাবেন।
বুয়েট পচনের শুরু নয়... শেষ। জামাত মতাদর্শ আর সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বুয়েট এও কিছু আছে, কিন্তু তা বড় কিছু নয়। যখন সব বিশ্ববিদ্যালয় এম্নকি DU ও লেজুরবিত্তি নিয়ে ব্যস্ত, তখন বুয়েট স্বমহিমায় নানা আন্দোলন করেছে... পুজার ন্যায্য ছুটি থেকে শুরু করে ছাত্রদল, ছাত্রলীগ এর সহিংস রাজনীতি, বিএনপি আওয়ামীলীগ এর চামচা ভিসিদের অপ্সারনের জন্য বুয়েট লড়েছে। আর তথাকথিত DU বা অন্যরা কি করেছে, হয় লেজুড়বৃত্তি না হয় টেন্ডারবাজি।
আপনি বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নাকি অনেক প্রগতিশীল...।। না বুয়েট তাদের মত টেন্ডার নিয়ে মারামারি করে না, বুয়েট ধর্ষণে সেঞ্ছুরি করে না...।। পড়াশুনা মাথায় তুলে রাজনেইতিক লেজ ধরে নাচে না... প্রগতিশীলঃ আসুন একবার বুয়েট এ, বুয়েট এর প্রতিটি দেয়াল এ আপনাকে বলে দেবে কে কত প্রগতিশীল...।
ভাই, আপনার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলতেছি, আপনার স্পেকুলেশনে ভুল আছে।
প্রথম ভুলটা হচ্ছে, আপনি নিজ প্রতিষ্ঠানের ভুলটাকে অন্যগুলার সামনে ধরে ছোট প্রমাণ করতে চাচ্ছেন। এটাতে লাভ কি ?? এরচে সমস্যাটাকে স্বীকার করে নেওয়া কি বুদ্ধিমানের কাজ না ?? সমস্যার গ্র্যাভিটি ধরতে না পারলে, সমস্যা ছোট হোক বা বড়, জিন্দেগীতে সমাধান আসবে না।
দ্বিতীয় ভুলটা মুর্শেদ ভাই খুব ভালোভাবে হাইলাইট করেছেন।
আমাদের যে নাকউঁচা ভাবটা আছে (এটা আছেই ভাই, অস্বীকার করে লাভ নাই !!) সেইটার কারণে আমরা এইসব রাজনীতি মার্কা জাগতিক বিষয়গুলার অনেক ঊর্ধ্বে ভাবি নিজেদেরকে। এবং এই কারণে আমরা বারবার ভুলে যাই, মেইন নীলনকশা করে যে গুটিকতক, তাদের চেয়ে অনেক বেশি ডেঞ্জারাস এই প্যাসিভ মনোভাব নিয়ে বসে থাকা বাকি ৮০-৯০% আমজনতা, যারা এগুলা দেখে নীরবে সমর্থন দেবে, খুব বেশি অস্বস্তি লাগলে হালকা পাশ কাটিয়ে চলে যাবে। ব্যস এইটুকুই।
নিজেকে প্রগতিশীল বলে দাবি করতেই পারেন, কিন্তু আপনি যে শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করতেছেন, আগে সেটার অবস্থাটা দেখে নিন, তারপর যদি সম্ভব হয়, প্রগতিশীলতাটা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। একলা ঝাণ্ডা উড়ায়া, গলার রগ ফুলায়া শ্লোগান দিয়া লাভ নাই।
এটা প্রগতিশীলতা না, জাস্ট কমনসেন্স আর অবজার্ভেশনের অভাব।
সাজ্জাদ, আমি একজন বুয়েটিয়ান এবং বুয়েটকে কাছ থেকে দেখছি দুই যুগ ধরে। আমি বলছি, বুয়েটে প্রগতিশীলরা অতি ক্ষুদ্র গ্রুপ, এবং এই গ্রুপের আকার ক্রমক্ষীয়মান। আপনার মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে 'প্রগতিশীলতা' ব্যাপারটি সম্পর্কে ধারণা পরিষ্কার নয়। অন্যকে চ্যালেঞ্জ করার আগে নিজের ধারণাটি পরিষ্কার করে নিন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
'অন্যরা আমাদের চেয়ে খারাপ, তাই আমাদের আরো ভালো হবার চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই।' আপনার বক্তব্যটা এমন মনে হলো। বলা বাহুল্য আমি একমত নই।
জামাত শিবির বলতে আমরা যাদের বুঝি তাদের সম্পর্কে ধারনা আমাদের খুব ই কম। তারা কারা, তারা কি করে, তাদের কার্যক্রম কেমন, তাদের চলাফেরা কাদের সাথে, তাদের ফিউচার প্লান কি?? এগুলা নিয়া আমরা খুব একটা ভাবি নাহ। অন্য রাজনৈতিক দলের মত তাদের কে একপাল্লাই মাপলে আমাদের ভুল হবে।
তাদের দীর্ঘও মেয়াদি প্লান এর কারণগুলা ছিন্তা করেন, যেমন ভাল ইউনিভার্সিটি থাকে পুলাপাইন বের হইয়া দেশের বড় বড় অবস্থানে যাবে তাই ছাত্র অবস্থাতাই এদের দলে এনে ফেলতে পারলে একটা সময় দেশ এ বরবরা আমলা, ইঞ্জিনিয়ার, বড় কর্তা বেক্তিগুলা এদের নিয়ন্ত্রনে থাকবে। আজ বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি ও সরকারের উপরের দিকে তাকালে আমার কথার সত্যতা খুজে পাবেন।
দলে টানার জন্য বিভিন্ন প্রলভন, কাওকে আর্থিক সহযোগিতা এবং ধর্মীয় আবেগ এর মাদ্ধুমে এদেরকে দলে টানা হয়। একবার দলে ডুকে গেলে র কারোও বের হবার পথ থাকে নাহ। কেও বের হতেও চায় নাহ ভবিষ্যতের কথা ভেবে এবং এত সহযোগিতা ছেড়ে। এদের কার্যক্রম তখন চালিত হই গোয়েন্দা সংস্থা গুলার মত। সবাইকে সরাসরি রাজনীতি করতে হয়না, যে যে জার জার অবস্থান এ সামনে এগাইয়ে গেলেই হই।
তাই বুয়েট, মেডিকেল, বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি এদের টার্গেট। এসব জাইগাতে পড়া স্টুডেন্টদের আমরা দশ দিতে পারিনা কারন আমরা তাদের ফেরাতে পারিনি। তাদের দেখাতে পারিনি কোণটা ভাল আর কোনটা মন্দ। উলটা আমরা হেরে গাসি শিবিরের সামাজিক নেটওয়ার্ক এর কাছে। তারা এর নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে ঘড়ে তুলছে নতুন কর্মী বাহিনী।
আপনার অবজার্ভেশন সঠিক। একইভাবে মুক্তচিন্তার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারলে কাজ হতে পারে।
বুয়েটের যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি পীড়া দেয় তা হল এখানকার ছাত্রছাত্রীদের বুয়েটপ্রেম বা আরো ভালো করে বললে বলতে হয় বুয়েটানুভূতি খুব বেশি। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা দেশপ্রেম নামক গাঁজাখুরি অনুভূতির থেকে অনেক অনেক তীব্র। দেশ যাক গোল্লায়, মৌলবাদ সব লুটেপুটে খাক, কী এসে যায়? একটা ভালো সিজি হাঁকিয়ে ইয়াহুদি নাসারাদের দেশে গিয়ে আরামসে ওদের তৈরি সভ্যতার প্লেট চাটব আর ওইখানেই হেগেমুতে সবাইকে দেখাব। এইতো পাক্কা বুয়েটিয়ান(বেশিরভাগ ক্ষেত্রে)।
হাতুড়ির একটা বড়সর আঘাত খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে এখন। মুক্তবুদ্ধির চর্চা করাটা সবসময়কার জন্যেই একটি কার্যকর পদক্ষেপ কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রথম আঘাতটা আসলে আগাছা উৎপাটনের ভেতর দিয়েই আসতে হবে। কমবেশি সবাই জানে তার কোন সহপাঠি, শিক্ষক, কোন পরিচিত সিনিয়র/জুনিওর সন্দেহজনক কাজকর্ম করে, জামাতশিবির, হেফাজতি, হিজবুতি গঙের সাথে যুক্ত । প্রথমে চিহ্নিতকরণ তারপর থেরাপি।
সন্ত্রাসী বা সম্ভাব্য সন্ত্রাসী, দেশবিরোধী বা গণবিরোধীদের চিহ্নিতকরণ ও উৎখাতের কাজটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিভাগের, বুয়েট কর্তৃপক্ষের নয়। বুয়েটের কারিকুলামে পরিবর্তন আনা, ১৯৭৩-এর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ চালু করা, ছাত্রসংসদ চালু করা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি, মুক্তবুদ্ধির চর্চ্চা পরিস্থিতর উন্নতি ঘটাতে সহায়তা করবে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আপনি এবং অন্য অনেকেই মন্তব্যে যা বলেছেন সেগুলো আজকের এ অবস্থার জন্য দায়ী। তবে এটা শুধু বুয়েটে নয়, মেডিকেল কলেজ বা এ ধরনের শুধুমাত্র applied বা ফলিত বিষয়গুলো যেখানে পড়ানো হয়, সেখানেও এ সমস্যা আছে।
প্রকৌশল বা চিকিৎসা বিদ্যা মুলতঃ কারিগরি বিদ্যা বা applied science, অন্য আর দশটা কারিগরি শিক্ষার মত এখানেও যারা লেখা-পড়া করেন তারা বিশেষ বিষয়েই দক্ষতা অর্জন করেন - বিজ্ঞানসম্মত দৃষ্টিভঙ্গী অর্জন করেন না। নামের সাথে science শব্দটি যুক্ত থাকলেও চিকিৎসা কারিকুলামে (এবং অন্য অনেক applied science curriculum -এও) সমাজ এবং বিশ্বকে জানার জন্য বিজ্ঞান্সম্মত দৃষ্টিভঙ্গী/scientific outlook অর্জনের শিক্ষা দেয়া হয় না, কোর্স-কারিকুলামেও তা নাই ( বুয়েটে ১ম বর্ষে বোধকরি দুয়েকটা বিষয় আর মেডিকেলে ক্যমুনিটি মেডিসিন বিচ্ছিন্নভাবে পড়ানো হয়)। ফলে সেই অর্থে বিজ্ঞানপড়া মেধাবী ছাত্রদের মাঝে আপনি বিজ্ঞান্সম্মত আচরণ কমই খুঁজে পাবেন - এটা মেডিকেল-বুয়েট-কার্জনহল বা আইবিএ কেন্দ্রিক ছাত্রদের জন্য গড়পড়তা সত্য। অন্যদিকে নামে arts faculty হলেও সেখানে যেহেতু social science বা সামাজিক বিজ্ঞান পড়ানো হয়, কোর্স-কারিকুলামের ভেতরেই সংশয়-সন্দেহ-প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা-যুক্তি সৃষ্টির ব্যবস্থা আছে, তাই এখানে যারা লেখাপড়া করেন তারা তুলনামুলকভাবে একধরণের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী অর্জন করেন। এখানের subject -গুলো সৃজনশীল/সৃষ্টিশীল বিধায় সমাজ ও বিশ্বকে তারা দেখেন বিজ্ঞানের চোখে।
আর সবচেয়ে বড় কথা নানা কারণেই এইসব প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড হয় না বললেই চলে আর যাও হও তাও প্রায় গৎবাধা। ফলে একধরণের বদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গী নিয়েই এরা বেড়ে উঠে আর এটাই মৌলবাদের চারণভূমি।
ব্যক্তিগত ভাবে বা সচেতন রাজনৈতিকভাবে যারা এই পরিস্থিতির বিরোধিতা করেছেন, পালটা চর্চা অব্যাহত রেখেছেন তারা এর খপ্পর থেকে বেড় হয়ে অন্য রকমভাবে ভাবতে পারছেন।
একদম একমত। বুয়েটের ফিজিক্স প্রফেসর আলী আসগর এ ব্যাপারে একজন অগ্রগামী মানুষ। অথচ বুয়েটে সেরকম কোনো কার্যক্রম দেখিনি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
মুর্শেদ ভাই, সম্ভবত তিনি বড় একলা...
জরিপ করে দেখেন, কয় জন আসগর স্যারকে চিনে, আর কয়জন শমসের স্যারকে...
শাবিপ্রবি সিলেটের মতো ছাগু অধ্যুসিত এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পরেও এর অবস্থা যতটা খারাপ হবার কথা ছিলো ঠিক ততটা খারাপ না। শাবিতে ফ্রি থিঙ্কারেরা মোটামুটি বেশ শক্তিশালী একটা গ্রুপ। এর প্রধান কারন সম্ভবত ব্যাপক সাংস্কৃতিক চর্চা। ঐখানে অনেক কিছুর অভাব থাকলেও কালচারাল সংগঠনের কোনই অভাব নাই এবং প্রতিটা সংগঠনই ব্যাপক অ্যাকটিভ এবং চিন্তা-চেতনায় ছাগুবিরোধী।
শুনে ভালো লাগল। এই গ্রুপটাকে আরো বড় করতে হবে। জাতীয় স্কেলে নিয়ে আসতে হবে।
শাবিপ্রবি থেকে কেউ সচলায়তনে লিখেন না। আপনাদের গ্রুপটাকে সচলায়তনে মুক্ত চিন্তার বিষয়গুলো নিয়ে লিখতে অনুপ্রানিত করছি।
গুরুত্বপূর্ণ লেখা।
facebook
ধন্যবাদ।
দিপরে জামাত-হিজবুতের কর্মীর কোপানির পরে পচনের শুরু কি ভাবে হয়? পচন হয়ে গেছে- বুয়েট পচে গেছে এটা ধরে নিয়ে লেখা শুরু করেন- জাহান্গীর-আফসান যে ইশকুলের মাষটর সেটা পচে গেছে
ঠিকই বলেছেন।
কোন সন্দেহ নাই বুয়েটে মৌলবাদী গোষ্ঠীর প্রভাব দিনকে দিন বাড়ছে। আমার কাছে এর সবচেয়ে বড় কারণ বুয়েটিয়ানদের 'সফল' হবার আকাঙ্ক্ষা!! প্রথমে এরা চোখ মুখ বন্ধ করে পড়ালেখা করে, বুয়েটে ঢোকে, আরো পড়ালেখা করে, জিপিএ বাড়ায়; তারপর একটা সময় এসে আবিষ্কার করে - আইসসালা! আমার তো ইহকালে টেকাটুকা নিশ্চিত হয়া গেছে, এইবার তাইলে একটু পরকালের ইনকাম বাড়াই। শুরু হয় তাদের পরকাল আদায়ের সংগ্রাম। অথচ কথা বলে দ্যাখেন ধর্ম হিসাবে ইসলাম, কিংবা আদর্শ হিসাবে ইসলাম কোনটা নিয়েই এদের বড় অংশের মাথা ব্যথা নাই! এরা নিয়মিত নামাজ পড়ে, পড়ালেখা করে, সবার সাথে ভাল ব্যবহার করে এবং সবমহলে ভাল ছেলে খেতাব পায়। এবং ইন জেনারেল এদের 'সফল' হিসাবেই সবমহল থেকে প্রশংসা করা হয়। এই ছেলেগুলা হল মৌলবাদীদের কাঁচামাল। সস্তা কাঁচামাল যেমন উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে, তেমনি এই ছেলেদের উপর বেজ করেই বুয়েটে মৌলবাদীরা নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করে। এদের সবাই ছাগুবান্ধব না হলেও, এদের সবাই প্রো-ছাগুবান্ধব!! (ডিস্ক্লেইমারঃ যারা সবসময়ই নামাজ-কালাম আদায় করে আসছেন, বুয়েটে ঢুকে নতুন নতুন না, তারা ক্যাক করে উইঠেন না!!!)
এইবার একটু বর্তমান বুয়েট নিয়া কথা বলি। উপরে বড় ভাইয়েরা বিশ বছর, তিরিশ বছরের ফিরিস্তি দিয়া যেভাবে বলতেছেন যে বুয়েটে সাংস্কৃতিক কাজকর্ম কমে গেছে ইত্যাদি হ্যানত্যান। তাদের কাছে আমি আসলে একটু জানতে চাই অন্যান্য সময় (যখন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম অনেক জোরদার ছিল!) বুয়েটে কী এমন হইতো যেটা এখন হয় না। ইউকসু হয়না, এইটা জানি। আর কী কী হয় না একটু জানা দরকার। জিজ্ঞাসাটারে মনে কইরেন না বুয়েটানুভূতিতে আঘাতের বহিঃপ্রকাশ। বরং আপনারা কষ্ট কইরা একটু জানাইলে পরে আমরা সেগুলার কতটুকু নতুন করে চালু করতে পারি হিসাব করতে পারতাম। (আবারো ডিস্ক্লেইমারঃ বুয়েটের সমালোচনা করি বইলে 'সেলফ হেটিং বুয়েটিয়ান' হিসাবে আমার সুনাম আছে। তাই মুরুব্বীরা আমারে 'বুয়েট বলতে অজ্ঞান' শ্রেণী মনে কইরা ক্যাক কইরা উইঠেন না!!!)
আরো একটা ব্যাপার, বুয়েটে রাজনীতি নিজেরে পল্টিক্সের লেভেলে নামায়া আনছে। (ইউকসু না থাকা এইটার মূল কারণ।) তাই লীগের পোলাপান ছাগু খেদাও শুরু করলেও সবাই সেটারে জাস্ট এনাদার পল্টিক্স হিসাবেই বিচার করে। ফলে বর্তমান সমাজ কিংবা রাজনীতি নিয়া হতাশরা একটা আশার আলো খুঁইজা পায় হিযুদের কাছে। বড় হয় হিযুদের নেটওয়ার্ক, ছাগুদের আস্তানা ট্যাগ খায় বুয়েট। আমরা সারাবছর খাটাখাটুনি করার পরও মাথা নিচু করে মেনে নেই আমার ভার্সিটি প্রগতিশীল না।
খুবই চমৎকার অবজার্ভেশন। নিজেদের ভুল ধরতে পারাটা একটা গুন, দোষ নয়। নাহলে ভুল শুধরে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না।
বুয়েটে সাহিত্য ক্লাব, একটি মাসিক নিউজ/সাহিত্য চটি (পাতলা বই বোঝাচ্ছি), সঙ্গীত ক্লাব (ছোট একটা ক্লাব আছে মনে হয়), ডিবেট ক্লাব (এই ক্লাবটা বেশ শক্তিশালী বলে জানি), নেচার/ফটোগ্রাফি ক্লাব (এটাও প্রমিনেন্ট), সিভিক ডিসকাশন/মুক্ত চিন্তা ক্লাব, ক্রীড়া ক্লাব সহ আরও কিছু ক্লাব করা দরকার।
বুয়েট কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে অ্যক্টিভলি কাজ করতে হবে। প্রতি সেমিস্টারে এই বিষয়ে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থ জোগান দিতে হবে। গাইডলাইন দিতে হবে।
সার্বিক উন্নতি ছাড়া আসলে যেমন সঠিক মানুষ গড়ে তোলা সম্ভব হয় না, তেমনি শক্তিশালী সমাজ গড়ে উঠে না। বুয়েটে এবং অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এসব বিষয়ে জোর দিতে হবে।
সাহিত্য সংসদ লাস্ট টার্মে ট্র্যাকে ফিরছে, স্বাধীনতা দিবসে ভাঁজপত্র বের করছে, মূর্ছনা (সঙ্গীত ক্লাব) গত তিন চার বছর ধরে ইন্টার ইউনিভার্সিটি লেভেলের প্রোগ্রাম নামাচ্ছে, ডিবেটিং ক্লাব সবসময়ের মতোই ফাটাচ্ছে, ফটোগ্রাফি ক্লাবের কল্যাণে এখন বুয়েটের প্রায় সবার হাতেই ডিএস্লার, খেলাধুলায় এই সেদিনও ঢাকা ভার্সিটিকে পর্যন্ত হারাইছে বুয়েটের ছেলেরা। হ্যাঁ, একটা পয়েন্ট মিস করে গেছি - সিভিক ডিসকাশন/মুক্ত চিন্তা ক্লাব। রেজিস্টার্ড ক্লাব হিসাবে এই ধরণের সংগঠনের ফিজিবিলিটি কতটুকু আমার জানা নাই। সাহিত্য সংসদ থেকেই আড্ডা আয়োজন করা যাইতে পারে। আর নয়তো ইনফর্মাল ডিসকাশনই ভরসা। ক্লাব হিসাবে থাকতে হইলে কিছু রেগুলার কাজকর্ম, কিছু বার্ষিক কাজকর্ম থাকা দরকার তো।
এইবার বলি বুয়েট কর্তৃপক্ষের কথা। আমি বুয়েটে দুইজন ভিসি পাইছি, শফিউল্লাহ স্যার আর ভিসি নজরুল। ভিসি নজরুলের যতই বদনাম থাকুক না কেন, ক্লাবগুলার জন্য অন্তত আমি তারে বেশ পজিটিভই পাইছি। এখনকার ডিএসডাব্লিউ স্যারও ক্লাবের কাজেকর্মে কোন বাঁধা দিছেন এমন দেখি নাই। বরং ট্র্যাডিশান অনুযায়ী অনেক চিঠিই ভিসির কাছে ফরোয়ার্ড না করে নিজে গিয়ে ভিসির অ্যাপ্রুভ্যাল নিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটছে। ফলে প্রতি সেমিস্টারেই বুয়েটে দু-চার-পাঁচটা মাঝারি থেকে বড় প্রোগ্রাম হয়ই। অর্থের জন্য এখন আমরা অতটা বুয়েটের উপর নির্ভরশীল না। একটু চেষ্টা তদবির করলে স্পন্সর যোগাড় করা যায়।
আসলে আমি এতগুলা কথা বলছি কারণ আমার মনে হয়নি পজিটিভ কাজকর্ম না থাকাই বুয়েটের এই অবস্থার কারণ। বরং আমার মনে হয়েছে পজিটিভ কাজকর্ম বুয়েটে ঠিকই আছে, কিন্তু নেগেটিভঅলারা কোন না কোনভাবে বেশি অ্যাট্রাক্টিভ। গানের চেয়েও, প্রাণের চেয়েও শক্ত কোন টান ওদের আবদ্ধ করে রাখে।
আমাদের মনে হয় আরো ইন ডেপথ চিন্তা করা উচিত।
আমি মনে করি শিবিরের ইনডক্ট্রিনেশন পদ্ধতিটা(যেটা তারা কমিউনিস্টদের হতে ধার করেছে) আমাদের গ্রহণ করা দরকার, যদিও হুবহু সেটা অনুসরণ করা সম্ভব না। শিবির পোলাপানকে "দ্বীনের দাওয়াত" দেয়, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে পীড়াপীড়ি করে প্রথমেই টার্গেটকে দুর্বল করে দেয়(এক্ষেত্রে এই সমাজের ধর্মাসক্তি অনুঘটক হিসেবে কাজ করে, অর্ধেক কাজটা এই ধর্মাসক্ত সামাজিক আবহই করে দেয়)। এর সেকুলার কাউন্টারপার্ট হিসেবে প্রগতিশীলরা কী করতে পারে তা আমি জানি না কারণ প্রগতিশীলরা কোন একক জীবনব্যবস্থা ও আচার-অনুষ্ঠানে বিশ্বাস করে না, তবে আমরা অন্তত কঠোরভাবে পাঠচক্রের চর্চা করতে পারি ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের(বিশেষ করে নবাগতদের) দলে ভেড়ানোর জন্য লোকসংযোগ করতে পারি।
আমার বক্তব্য হল - ইনডক্ট্রিনেশন প্রক্রিয়াটা অপরিহার্য, এটা ছাড়া কোন মতাদর্শের মূলই গভীরে প্রোথিত হয় না। জাশি যেই কৌশল ব্যবহার করে এত সাফল্যের সাথে মগজধোলাই করে যাচ্ছে, আমরাও কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে ইনডকট্রিনেশনের সেই কৌশল অবলম্বন করতে পারি। জাশির ইনডকট্রিনেশন কৌশলের মান নিয়ে কোন সংশয় থাকার কথা না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পাঠচক্র গঠণ করা ও গণসংযোগ করে সেই পাঠচক্রের প্রভাববলয় বিস্তৃত করাটাও অতীব জরুরী।
একটিভিজমে অভিজ্ঞ বর্তমান বুয়েটিয়ানরা পাঠচক্রের ব্যাপারটা ভেবে দেখতে পারেন। বুয়েটের ভেতরের ও বাইরের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে প্রচুর পড়ুয়া ও প্রাজ্ঞ বুয়েটিয়ান(বর্তমান শিক্ষার্থী) দেখেছি, সবাইকে সংগঠিত করতে পারলে যথেষ্ট শক্তিশালী পাঠচক্র গড়ে তোলা সম্ভব।
Big Brother is watching you.
Goodreads shelf
বুয়েট সাহিত্য চর্চা রীতিমত রুগ্ন। আমি যখন বুয়েটে ঢুকি তখন একটা মাত্র পত্রিকা প্রকাশিত হতো। সাহিত্য ক্লাবের কর্ণধার সেবারই বুয়েট থেকে পাশ করে বের হয়ে যান। এবং যতদূর মনে পড়ে সেখানেই সাহিত্য ক্লাবের সমাপ্তি ঘটে।
(আবারো বলি!) সাহিত্য সংসদ ট্র্যাকে ফিরছে, কিছু কাজও হচ্ছে। আপনাদের স্পেসিফিক কোন আইডিয়া থাকলে বলেন, আশা করি বাস্তবায়ন দেখতে পাবেন।
মূর্ছনা কিংবা অন্য গ্রুপগুলোর তুলনায় সাহিত্য সংসদের এ্কটিভিটি খুব একটা চোখে পড়ে না, এছাড়াও সাহিত্য সংসদ সম্ভবত কেবল শিক্ষার্থীদের মৌলিক সাহিত্য চর্চা নিয়েই কাজ করছে।
আমি বলছি পাঠচক্রের কথা। ব্লগে-ফেসবুকে আমরা নিজেদের কমফর্ট জোন বা বন্ধুবৃত্তের মধ্যে রাজনীতি-দর্শন প্রভৃতি নিজেদের আগ্রহের বিষয়বস্তু নিয়ে আলাপ করে থাকি, আমি চাচ্ছি এই ব্লগীয়-ফেসবুকীয় আলোচনাগুলো পাঠচক্রের মাধ্যমে একটি সাংগঠনিক রুপ দেওয়া ও অন্যদেরকেও পাঠচক্রে অংশ নিতে আহবান করা; অনেকটা যেভাবে শিবির-হিযবুত unsuspecting ছেলেপেলেদের ধীরে ধীরে ইসলামিস্ট মতাদর্শে দীক্ষিত করে তুলে। এর জন্য যদি শিবির কায়দায় জুনিয়রদের বিভিন্ন হোটেলে ট্রিট দিয়ে কিংবা পড়াশোনা-থাকা-খাওয়া সংক্রান্ত নানা সহায়তা করে অতি সূক্ষ্মভাবে ইনডকট্রিনেট করতে হয়, তবে তাই হোক। এই কৌশলে এত সফলভাবে গাদা গাদা নব্য-রাজাকার বানাইতে পারলে নব্য-মুক্তিযোদ্ধা বানাইতে সমস্যা কোথায়?
আর্কির এক ভাইয়ের সাথে মুক্তিযুদ্ধের পাঠচক্র করা নিয়ে কথা বলব, দেখি কতদূর এগুনো যায়। আপনার পরিচিত গন্ডির ভেতরে দেখতে পারেন পাঠচক্র পরিচালনায় আগ্রহী কাউকে পান কিনা। বুয়েটের চরম রাজনীতিবিমুখ পরিবেশে সবচেয়ে বেশি জরুরী বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস নিয়ে পাঠচক্র। ছেলেপেলেদের মধ্যে আমি এই মনোভাবটা খুব বেশি দেখি যে রাজনীতি মানেই "পলিটিক্যাল" বড় ভাইদের তেলিয়ে হলে রুম দখল করা, অথবা ক্ষমতার ছড়ি ঘুরিয়ে ব্লাডি সিভিলিয়ান ছা্ত্র-শিক্ষকদের সদা ভীত-সন্ত্রস্ত রাখা। রাজনীতি-চেতনার এই নৈরাজ্যে সুশৃঙ্খল ইসলামিস্ট মতবাদ খুব সহজেই নিজের আবাস গড়ে নেয়। পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে বর্তমানকাল পর্যন্ত্য রাজনীতিতে কী কী ঘটেছে এবং ঘটছে - এসব নিয়ে পাঠচক্রের সদস্যরা নিজেরা নিজেরা কথাবার্তা বললে রাজনীতির বিচিত্র ও পরিবর্তনশীল চেহারা হোপফুলি উপলদ্ধি করতে পারবে, "রাজনীতি মানেই গুন্ডামি" জাতীয় অতি-সরলীকৃত অবস্থান থেকে সরে আসবে।
আইডিয়ার অনুপস্থিতিতে আমি স্রেফ একটা আইডিয়া দিলাম(এবং আগেই বলে নিই যে পাঠচক্র নিয়ে আমার কোন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নেই, পাঠচক্রের এই ধারণা একান্তই আমার নিজস্ব ভাবনাপ্রসূত), এ্কটিভিস্টরা বাস্তবতার কষ্টিপাথরে যাচাই করে নিলে আমি ধন্য হব
Big Brother is watching you.
Goodreads shelf
পাঠচক্র নিয়া সাহিত্য সংসদের প্রেসিডেন্ট সা'বের সাথে এই সন্ধ্যাতেও কথা বললাম। সামনের টার্মে পাঠচক্র আসছে। সাথে একটা লেখালেখি উৎসব করা যায় কিনা ভাবছি। বড় ভাইরা পারলে টেকাটুকা (স্পন্সর!!) ম্যানেজে হেল্প কইরেন। মনে রাইখেন শিবিরের মুরুব্বীরা কিন্তু টেকাটুকার ক্ষেত্রে খুব উদার!!
_____________________
Give Her Freedom!
এই পোস্টের কমেন্টগুলিও দেখেন পাঠকরা।
অজ্ঞাতবাস
হ, লিঙ্ক দেবার জন্য এই পোস্টটা খুঁজছিলাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
বুয়েটের সমস্যা আরো অনেক গভীরে প্রথিত। কিছু পয়েন্টে কথা বলি:
১-বুয়েটে যারা এডমিশন নেয় তাদের বেশিরভাগই স্কুল-কলেজে ফার্স্ট-সেকন্ড পজিশনে বা প্রথমদিকে (টপ ৫%) থাকে, মোট কথা তারা কাইন্ড অব এলিট এই চিন্তা করার সুযোগ আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা, অভিভাবকমহল এবং ক্ষেত্রবিশেষে রাষ্ট্র করে দিয়েছে। এবং আর্থ-সামাজিক যে সেটআপ তৈরী করে দেয়া হয়েছে, তাতে জিপিএ এবং একাডেমিক সাফল্যই সমাজে ভাল এবং সুশীল ছেলে হিসেবে পরিচিতি পাবার মাপকাঠি। আর তাই বুয়েটের ছেলেরা রাজনীতি, দেশ নিয়ে সক্রিয় ভাবনাতে সম্পৃক্ত হতে ১% এফোর্ট দেয়না, কিন্তু চরম উদাসের কথামতো জিপিএ ০.০১ বাড়াতে ৯৯% এফোর্ট দেয়।
২- সারাজীবন টপ এ থাকা সবগুলো ছেলে যখন একটা ক্লাসরুমে এসে ঢুকে, এরপর তাদের মধ্য যে রেস শুরু হয় সেটা সামাল দিতেই তাদের প্রথম দেড়-দুই বছর চলে যায়, ছাগু-ছাগুবান্ধব-ধর্মীয় উগ্রপন্থী এসব পছন্দ না হলেও ঘাটাঘাটি করার সাহস কারো থাকেনা, এই কাজে কেউ সময় অপচয় (!) করেনা। এরপর একটু সিনিয়র হয়ে গেলে তাদের মনে কেরিয়ার কিভাবে গড়তে হবে, দেশের বাইরে কিভাবে যেয়ে সফল হতে হবে এসব ভাবনা এসে ঢুকে মনে, আবারো তারা দেশের জন্য এগিয়ে আসতে পারেনা। মোটকথা প্রথম দুই বছর তারা খরচ করে নিজের মেধা প্রমানে, শেষ দুই বছর নিজের আখের গুছাতে। যে দেশের প্রতিষ্ঠানে পড়ে দেশের প্রফেশনাল সেট আপের দুর্বলতার জন্য তারা দেশে থাকার কথা বিবেচনা করতে পারেনা, সেই দেশকে কিছু দেয়ার জন্য তারা রিস্ক নিতে চায়না। ইন ফেক্ট, দেশ এখনো তার নাগরিকের কাছ থেকে কিছু নেয়ার জন্য তৈরী না।
৩- আমি ঢাকার বাইরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। বুয়েটে এম.ফিল. করা উপলক্ষে আড়াই বছর ছিলাম এবং বুয়েটের নিকটবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়াশুনা করার কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে এবং এর ছাত্রদের বেশ ভালভাবেই জানি, বুঝতে পারি। আমার ছোটভাইটি বুয়েটের বর্তমান ছাত্র, সে ছাগু বা ছাগুবান্ধব না। কিন্তু সে তার ছাগুবান্ধব বন্ধুদের প্রতি সহানুভুতিশীল। ব্যাপারটা অনেকটা এমন, ইইই বিভাগে ছাগু ধরলাম ৫ জন, এই ৫ জনের প্রতি সহানুভূতিশীল আরো ১৫ জন, এই ১৫ জনের প্রতি সহানুভূতিশীল আরো ৪৫ জন। শেষের ৪৫ জন কিন্তু প্রথম ৫ জনের প্রতি সহানূভুতিশীল না, তেমন একটা পছন্দও করেনা। এটা হয়েছে রাজনীতিবিমুখতার কারণে, ছাত্র সংসদ বন্ধ থাকার কারণে এবং বুয়েট ছাগু সমাজের টার্গেট হবার কারণে।
৪- আমার ছোটভাই এর এইচএসসি ২০০৯ এ, তার বুয়েট সহপাঠীদের ৯০% ই অনলাইনে সক্রিয়, এর উল্টোদিকে আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করি আমার ক্লাসের ১৫-২০% ছাত্র-ছাত্রী অনলাইনে সক্রিয়, তাদের ফেসবুক কর্মকান্ড, ব্লগ পোস্ট শেয়ার করা বা ব্লগিং করা থেকেই আমার এই ধারণা। বুয়েটের ছেলেরা অনলাইনে বেশি একটিভ, এর বড় একটা প্রমান সচলায়তন থেকেই পাই। এই ব্লগ প্লাটফর্মের একটা বড় অংশ বুয়েটিয়ান, কিন্তু আপনারা কিন্তু ছাগু বা ছাগুবান্ধব নন, আপনারা পচে যাওয়া নন, কারণ আপনারা যখন ছিলেন আপনাদের কেউ টার্গেট করেনি। ফেক্ট ইজ দেট, আপনাদের বুয়েট ২০০৮/২০০৯ থেকে ছাগুসমাজের রিক্রুট টার্গেটে পরিনত হয়েছে। কারণ বুয়েট ছাত্রদের অনলাইনে অতি সক্রিয়তা, মাঠের রাজনীতিতে অতি নিষ্ক্রিয়তা। ঢাবি বলেন বা জাবি বলেন বা চবি বা রাবি এগুলোর রাজনৈতিক কাঠামো অনেক আগেই পচে গেছে, এখানে নতুন করে টার্গেট নিয়ে শুরু করার কিছু নাই। কিন্তু বুয়েট সে তুলনায় একটা টেস্ট সেম্পল, সোনার ডিম দেয়া হাঁস।
৫-ছাগু সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতৃত্বে নজর দিলে দেখবেন সেখানে বুয়েটিয়ান কেউ নেই, কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের থিঙ্ক ট্যাঁক হিসেবে বুয়েটিয়ানদের গুরুত্ব বাড়তেছে, এটাই বুয়েটে ছাগু এবং ছাগু বান্ধব পরিবেশ তৈরির পেছনে মূল ভূমিকা রাখছে। হিজবুত তাহরীর মোটামোটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাত দিয়ে তৈরী হওয়া সংগঠন। শুরুতে এর নেটওয়ার্ক ঢাবি, ঢাকা কলেজ এবং বিভিন্ন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে সীমাবদ্ধ ছিলো। এটাকে যখন নিষিদ্ধ করে বিলুপ্তির পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তখন বুয়েটকে টার্গেট করা হয়েছে সমর্থনবৃদ্ধির জন্য, যোদ্ধা বাড়ানোর জন্য। ঠিক তেমনি, যুদ্ধাপরাধী বিচার, শিবির নিধন এসব জাতীয় ইস্যু তৈরী হবার পর বুয়েটে রিক্রুট শুরু হয়েছে ঝড়ো গতিতে। এবং মাঠের রাজনীতিতে অজ্ঞ বুয়েটিয়ানরা সহজ শিকারে পরিনত হচ্ছে। শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা, নজরদারির অভাব, কো-কারিকুলার কর্মে অনুত্সাহ এসবই মূল কারণ।
৬- মাসখানেক হলো পিএইচডি করে দেশে ফিরলাম। শাহবাগ আন্দোলনের সময় দেশের বাইরে ছিলাম এবং দেখেছি দেশের বাইরের প্রতিটি শহরে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বুয়েটিয়ান দের ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে ছাগুবিরোধী সক্রিয় অংশগ্রহন। এসব প্রতিবাদ সমাবেশ কিন্তু রাজনীতি অজ্ঞ বুয়েটিয়ানরাই আয়োজন করেছে, ব্যানার-ফেস্টুন বানিয়েছে, লিখেছে। তাই আমি এখনো আশাবাদী। দেশের বাদবাকি পুরাতন প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক আগেই পচে গেছে, বুয়েট পচে যাবার পথে। বুয়েটকে শুধু 'ছাগু' ট্যাগ দিয়ে বাঁচানো সম্ভব না, আপনার সহযোগিতা এবং সচেতনতাই বুয়েটকে কেবলমাত্র বাঁচিয়ে রাখার ক্ষমতা রাখে। 'ট্যাগ' দিলে অবস্থা আরো খারাপ হবার চান্স বেশি।
৭-আরেকটা কথা, দিনশেষ এ দেশে ছাগুদেরই রাজত্ব। লিখিত আদর্শের উপর আস্থা রেখে দেশের মানুষ টিকে থাকতে পারতেছেনা, নিগৃহীত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আর তাই বিএনপি-জামাত ছাগু জেনেও, তাদেরকে খারাপ জেনেও চক্রে পড়ে পাঁচ বছর পর পর ভোট দিয়ে ক্ষমতার স্বাদ দেয়া হচ্ছে। দেশে গড়ার দায়িত্ব বা দেশকে খারাপ করার দায়িত্ব শুধু বুয়েটিয়ানদের না, তাই অযথা বুয়েট নিয়ে আমরা দিনের পর দিনের নষ্ট না করি। ছাগু সংগঠন কোনটারই শীর্ষ নেতৃত্বে বুয়েটিয়ান নাই এবং তাদের মাঠের কাজ-কর্মেও রাজনীতিবিমুখ এবং জিপিএ ছাড়া আর সবকিছু নিয়ে অলস বুয়েটিয়ানদের অংশগ্রহন নাই বললেও চলে। তবে হ্যা, অনলাইন কর্মকান্ডপ্রেমিক বুয়েটিয়ানদের মাঝ থেকে যে ছাগু রিক্রুটমেন্ট চালানো হয়েছে তা সফল, তাই বাঁশের কেল্লা টিকে আছে। বহাত তবিয়তে। দিন বেলাশেসে বর্তমান বুয়েটিয়ানদের দৌড় অনলাইন পর্যন্ত, প্রাক্তনতো বেশিরভাগই দেশের বাইরে, তাদের দৌড়ও অনলাইন পর্যন্ত। কিন্তু অনলাইনের দৌড়টা ধীরে ধীরে বিগ ফ্যাক্টর হয়ে উঠছে এবং সেটা অনলাইনেই। মাঠের ফলাফল অনলাইন কর্মকান্ড দ্বারা প্রভাবিত না, সেটা সিরি কর্প নির্বাচন থেকেই স্পষ্ট।
শব্দে শব্দে একমত।
আচ্ছা, বুয়েটিয়ানদের ছাগু হওয়ার পেছনে ধর্মের অবদান কেমন? বুয়েটে নামাজ কালাম কি খুব বেড়েছে ইদানিং?
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
ছোট ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, নামাজ-কালাম বাড়ে নাই আই মিন বুয়েটে ঢুকার পর সাড়ে তিন বছরে সে কোন বৃদ্ধি দেখে নাই। ইন ফেক্ট, শিবিরের পোলাপানও নামাজ-কালামে নাই। নিয়মিত নামাজী বলতে কিছু তাবলীগের পোলাপান।
তবে, বুয়েট ছাগুদের বিশাল টার্গেট, এটা বুয়েটের ছেলেপেলেদের অনলাইনে সক্রিয়তার জন্যই। বুয়েটের ছেলেদের মেধা যতোটুকু আছে সেটা ছাগু কর্মকান্ডে ব্যবহার করাই উদ্দেশ্য।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। মুসলমান মানেই তাইলে সম্ভাব্য সন্ত্রাসী না, নামাজ কালাম করা মানেই সম্ভাব্য শিবির/হিজু না। ফলোআপের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আপনার এই চমৎকার মন্তব্যটির উত্তর দেয়া হয়নি বলে দুঃখিত। অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যটির জন্য!
এই কথাগুলো মাথার মধ্যে ঘুরছিলো। কিন্তু এতোটা গুছিয়ে বলতে পারতাম না। অসংখ্য ধন্যবাদ
সব মিলিয়ে কি তবে এটাই দাড়ায় যে, ভাল ছাত্ররাই কেবল মাত্র জামাত-শিবির বা আপনাদের কথিত ছাগু। এর অর্থ আওমিলিগ বা বিএনপি নয় শিবির-ই এক মাত্র ছাত্রদের পড়ালেখার জন্য চাপ দিয়ে থাকে।।।।।।
শিবিরের পড়াশোনার চাপের নমুনা। আরো কিছু বলে যান ভাইয়া।
কী বললেন একবার ভালো করে ভেবে দেখেন। ভালো ছাত্ররাই কেবল ছাগু হবে কেন? কথা হচ্ছে ছাগুদের নির্বিঘ্নে বংশবিস্তার করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে কেন সেই বিষয়ে।
নির্বিকার ঔদাসীন্যের প্রভাব হয়তো আজকে তেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে না আপনার কাছে, কিন্তু এটাতো সত্যি যে এখনকার ছাগুবিস্তার হবার প্রধান কারণ আমাদের পূর্বসুরিদের এরকম ঔদাসীন্য। আজকে আমাদের নির্লিপ্ততার কারণে কে জানে, হয়তো অদূর ভবিষ্যতে বুয়েট থেকে রগ কাটার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একেকটা নিজামী, সাঈদী, মুজাহিদ বের হয়ে আসবে। তার দায়ভারটুকু কে নিবে?
বিঃদ্রঃ 'আপনাদের কথিত ছাগু' বলে কিছু নাই, ছাগু মানেই পাকি বীর্যজাত শুয়োর সম্প্রদায়।
সেটা বলিনি। ছাগু এবং ছাগু বান্ধব সর্বত্র বিদ্যমান। কিন্তু সাধারণ দৃষ্টিতে বুয়েটের ছাত্রদের, কিংবা আরেকটু বড় পরিসরে তাকালে প্রায় সব ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের যুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন মননে ছাগু বীজ বপন আপাত দৃষ্টিতে অসম্ভব মনে হতে পারে। আমি দেখাতে চেয়েছি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সামাজিক রীতিনীতিতে যারা ভাল ছাত্র হিসেবে উপরের দিকে উঠে আসে তাদের মধ্যে ছাগু বীজ বপন অপেক্ষাকৃত সহজতর। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছাগু আইডিওলজি প্রস্ফুটিত না হলেও ছাগুদের প্রতি এদের সহানুভুতিশীল হতে দেখা যায়।
এটা কিভাবে শোধরানো যায় বলে মনে করেন?
রাজনৈতিক আর নৈতিক সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া উপায় দেখি না। যদিও আমার সন্দেহ আছে রাজনীতি করা আর রাজনৈতিক সচেতনতা মধ্যে পার্থক্য বুঝতে মানুষজন ইচ্ছুক কিনা। রাজনীতি করতে পারলে কিছু প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়ে, কিন্তু সচেতনতায় আখের গুছানোতে কি কাজ দিবে?
আমার কাছে মনে হয় না দরিদ্র পরিবারের সাথে মৌলবাদী হওয়ার তেমন কোন সম্পর্ক আছে। আমি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে। আরো হাজার রকম চাপের সাথে মেয়েদের বুয়েটে পড়ার মত মেধা আছে কিনা ইত্যাদি চাপের মধ্যে গেছি। কিন্তু সাদা কে সাদা কালো কে কালো দেখার ব্যপারে অর্থনৈতিক অবস্থার চাপ বুঝি নাই কখনো।
আমার ধারনা ২ শ্রেনীর মানুষ মৌলবাদী হয়ঃ
১) ধান্দাবাজ। জামাত করলে আসলেই শুনি অনেক সুযোগ সুবিধা। জামাতের মত ধর্মীয় দলের সাথে থাকলে এক ঢিলে ২ পাখিঃ আখেরে কাজ দিল, ধর্মকর্মও হল।
২) বেকুব। বাবা মা ছোটবেলায় জীবন সংগ্রামে বাঁচার জন্য কিছু নিয়মকানুন শিখায়ে দিছে। বাবা মায়ের দোষ নাই। তারা তাদের সময়ের স্টান্ডার্ডে ধান ধারনা শিখাইছে। সেই ধ্যান ধারনা নিজের সময়ের সাথে আডজাস্ট করে পরিনত করার কোন চেষ্টা নাই। সেই সব এক্সপায়ার ডেট চিন্তাভাবনা, ভালো ছাত্রহওয়ার বেকুবি গর্ব আর অনেক আকাডেমিক জ্ঞান নিয়ে এরা আছে। এদের চিন্তা ধারনার পথ অনেকটা এইরকমঃ ক) বুয়েটের ছাত্র/ছাত্রীরা ভাল খ)প্রাইভেট ভার্সিটি খারাপ গ) বউ/জামাই চরম উদাসের লেখার মত হবে ঘ) ) নিজে যেহেতু ধর্ম ঠিকমত পালন করতে পারছে না তাই মৌলবাদীদের সাপোর্ট দিয়ে পূণ্য লাভ ইত্যাদি ইত্যাদি।
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
চমৎকার অবজারভেশনের জন্য ধন্যবাদ।
জটিল
আমি বুয়েট প্রেমিক নাহ। আমার মনে হয়, সঠিক বিশ্লষেনের জন্য নিচের কয়টা প্রশ্নের উত্তর খুব জরুরী
অবশেষে যে ঘটনার প্রক্ষিতে লেখাটি, সেটা যথেষ্ট উদ্বেগজনক
ধন্যবাদ
খুবই ভালো প্রশ্ন। এগুলো আমার পরবর্তী লেখায় ব্যবহার করার অনুমতি পেতে পারি?
অবশ্যই অবশ্যই বস। এইটা কি জিগান লাগে?
দারুন আলোচনা। বুয়েট এ তবুও তো কিছু সাংস্কৃতিক চর্চা হয় মেডিকেলগুলাতে তো হাতেগোনা, সারাদিন আইটেম, কার্ড দিতে দিতে চলে যায়, আর জারা পলেটিক্স করে তারা অধিকাংশ করে নিজের ধান্দার জন্য, দেশের জন্য না। ছাগু কিংবা ছাগু-বান্ধব কিন্তু এখন বুয়েট এ বেশি তা না, সারাদেশের মানুষের মধ্যে অধিকাংশ ছাগু কিংবা ছাগু-বান্ধব নাইলে কি আর দেশের এই অবস্থা হয়, ধর্মের নামে সবাই মানুশ থেকে অমানুষ হয়ে উঠে।
ঠিক বলেছেন। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
"সারাদেশের মানুষের মধ্যে অধিকাংশ ছাগু কিংবা ছাগু-বান্ধব নাইলে কি আর দেশের এই অবস্থা হয়, ধর্মের নামে সবাই মানুষ থেকে অমানুষ হয়ে উঠে।"
লেখা পড়বার এবং মন্তব্য করবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্যগুলোর আলোকে আমি আরেকটি লেখা লিখতে চাচ্ছি যেটাতে একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করব আমি: কিভাবে বাংলাদেমের ইউনিভার্সিটিগুলোতে উগ্রবাদী ইসলামী দলগুলোর আগ্রাসন কমানো যায়?
এই লেখাটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন