এই পর্বে পাঁচটি প্রাথমিক স্ট্রামিং প্যাটার্ন দেখানো হয়েছে নীচের ভিডিওতে। খুব বেসিক এই প্যাটার্ন গুলো পরবর্তীতে অন্যান্য স্ট্রামিং শেখার জন্য কাজে লাগবে। ভিডিওটিতে E মেজর কর্ড ব্যবহার করে স্ট্রামিংগুলো দেখানো হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনে বাম হাত দিয়ে স্ট্রিংগুলো চেপে ধরে স্ট্রামিং প্যাটার্ন প্র্যাকটিস করতে পারেন।
স্ট্রামিংগুলো আট নোটের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে। বেশীরভাগ গান 4/4 বিটে তৈরী হয়। চার বিটের প্রতিটিতে একটা & যুক্ত করে আট নোট পাওয়া যায়। এভাবে বিট 1-2-3-4 হয়ে যাবে, 1-&-2-&-3-&-4-&।
আট নোট - দুই বার
প্রথম প্যাটার্ন: ডাউন স্ট্রোক
আটটি নোটের প্রতিটিতে ডাউন স্ট্রোক করতে হবে।
প্রথম প্যাটার্ন
খুব সহজ হলেও সময় প্র্যাকটিস করার জন্য মেট্রোনোম ব্যবহার করে সময় জ্ঞানটাকে পোক্ত করে নিন। যখন আমরা শব্দ বেশী হবার জন্য জোরে স্ট্রাম করি, কিংবা আস্তে স্ট্রাম করি তখন অনেক ক্ষেত্রে সময় বা বিট অনুযায়ী বাজাতে পারি না। সহজ এই স্ট্রামিংটা ব্যবহার করে জোরে এবং আস্তে বাজিয়ে, কিন্তু একই বিটে এই প্র্যাকটিসটি করতে পারেন।
দ্বিতীয় প্যাটার্ন: একটি ডাউন এবং একটি আপ স্ট্রোক
সংখ্যার ঘরগুলোত ডাউন এবং & এর ঘরগুলোতে আপ স্ট্রোক করতে হবে। এক্ষেত্রে কব্জিটাকে আলগা করে বাজালে শ্রুতিমধুর হবে। তাছাড়া ডাউন স্ট্রোকের সময় ছয়টা স্ট্রিংয়ের সবগুলো বাজালেও, আপ স্ট্রোকের সময় চারটা স্ট্রিং বাজালে শ্রুতিমধুর হবে।
দ্বিতীয় প্যাটার্ন
খানিকটা বৈচিত্র্য আনতে একসেন্ট বা জোর দিয়ে বাজানো যায়। ২ এবং ৪ নম্বর বিটে একসেন্ট বা জোর দিয়ে বাজাতে পারেন।
একসেন্ট সহ দ্বিতীয় প্যাটার্ন
তৃতীয় প্যাটার্ন: মিউটেড স্ট্রোক
তৃতীয় প্যাটার্নের ক্ষেত্রে একটা স্ট্রোক আমরা হাত দিয়ে মিউট করে দিবো। মিউট করার জন্য স্ট্রোক করার সাথে সাথে হাতের তালু দিয়ে স্ট্রিং গুলো চেপে ধরতে হবে। মিউট করার বিষয়টি ড্রামারের স্নেয়ার (snare) ব্যবহার করার সাথে তুলনীয়। ড্রামার ১-২-৩-৪ এই তালে বাজাতে বাজাতে অনেক সময় তৃতীয় বিটে স্নেয়ার ব্যবহার করে। মিউট করে আমরা সেই শব্দ বা অনুভূতিটি তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
তৃতীয় প্যাটার্ন
মিউটেড স্ট্রিং বাজানোটা একটু কষ্ট হলেও ভবিষ্যতে অনেক কাজে লাগবে। তাই এই টেকনিকটি শিখে নেয়া জরুরী।
চতুর্থ প্যাটার্ন: আপ বিট গ্যাপ সহ
এবারে প্রথম ডাউন স্ট্রোকের পরের আপ স্ট্রোক বাজাবেন না। কিন্তু না বাজিয়ে, হাতটাকে উপরে নিয়ে আসুন, যাতে পরের ডাউন স্ট্রোকটা দিতে পারেন।
চতুর্থ প্যাটার্ন
পঞ্চম প্যাটার্ন: শুধু একটি গ্যাপ
এবারে শুধু তৃতীয় বিট বাজাবেন না। চতুর্থ প্যাটার্নে একটি করে আপ বিট ফাঁকা ছিলো। এবারে তৃতীয় "ডাউন" বিটটি ফাঁকা হবে।
পঞ্চম প্যাটার্ন
পিক ধরার ক্ষেত্রে এতো আলতো করে ধরবেন না যেনো হাত থেকে ছুটে যায়, আবার এতো শক্ত করে ধরবেন না যাতে অমসৃন শোনায়। এই দুয়ের মাঝামাঝি একভাবে আপনাকে পিকটা ধরতে হবে। স্ট্রামিং প্যাটার্নগুলো শিখতে সময় লাগলেও কষ্ট করে লেগে থাকুন। একবার শেখা হয়ে গেলে অন্যান্য প্যাটার্ন শিখতে কাজে লাগবে এগুলো। একবার শেখা হয়ে গেলে একসেন্ট, মিউটেড বা গ্যাপ ব্যবহার করে এই প্যাটার্নগুলোর উপর ভিত্তি করে নতুন প্যাটার্ন তৈরী করে নিতে পারেন। অবশ্যই একটি মেট্রোনোম বা জ্যম বক্স ব্যবহার করতে পারেন। ইদানিং স্মার্টফোনে মেট্রোনোম অ্যাপপ পাওয়া যায়। প্রয়োজনে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
টিউটোরিয়ালের ভিডিও
হোমওয়ার্ক
এই পাঁচটির মধ্যে যেকোনো দুটি প্যাটার্ন ভিডিও রেকর্ড জমা দিন। একস্ট্রা ক্রেডিট হিসেবে পাঁচটি প্যাটার্নের একটি নিজের মতো করে বদলে ভিডিও রেকর্ড করে জমা দিন।
শুভেচ্ছা।
মন্তব্য
মিউটেড স্টোক এর সাউন্ড বেশ পছন্দ হইছে, বাসায় গিয়ে প্রেকটিস করবো।
খালি প্রেকটিস করলে হবেনা, হেডস্যার হোম অ্যাসাইনমেন্ট দিছে। জমা না দিলে ফেল!
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
আহেম আহেম আহেম, আমিতো মজার ইস্কুল ভেবে ভর্তি হইছিলাম, এখন দেখি এসাইনমেন্ট ধারায় দেন .... ভিডিও করতে গেলেই আমি নার্ভাস হয়ে যাই, তারপরেও চেষ্টা করবো।
নার্ভাস হবার কিছু নেই। আমরা আমরাই তো।
ভিডিওটা দারুণ হয়েছে। যখন শিখতে শুরু করেছিলাম, তখন এমন বাংলা ভিডিও থাকলে দারুণ হত।
এইবার অফটপিক প্রশ্ন,
১) ক্যামেরাটা কি DSLR? ডিজিটাল জুম না করে, আরেকটা ক্যামেরা হাতের দিকে ফোকাস করে ভিডিও করলে ভালো হতো। ধরেন DSLR টা জুম করলেন আর নরমাল ফোন ক্যামেরা দিয়ে মূল ভিডিও রেকর্ড করলেন।
২) সাউন্ড কি ভিন্ন ডিভাইসে আলাদা ট্র্যাক হিসাবে রেকর্ড করে পরে সিঙ্ক করেছেন?
৩) মাইকটা হাইফাই মনে হচ্ছে। কী ধরনের এটা? দাম কত?
অফটপিক মন্তব্য,
দ্য বিগ ব্যাং থিওরির শেলডন কুপারের, 'ফান উইথ ফ্লাগ' এর মত একটা ভাব এসে গেছে। মনে হচ্ছিলো নার্ভাস হয়ে গেছিলেন।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সহমত।
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
১) DSLR। ক্যানন 7D। আমার জুম লেন্সটা ভেঙ্গে গেছে। তাই 50 mm ব্যবহার করে রেকর্ড করেছি। মেট্রোনোমের অংশগুলো ক্যামেরা কাছে এনে রেকর্ড করেছি। বাকিটা ক্যামেরা দূরে নিয়ে। যেহেতু 50 mm, ফোকাস করা দুরূহ। প্রিভিউতে ফোকাস ঠিকমত হয়েছে মনে হলেও পরেরদিন এডিট করার সময় দেখি মেট্রোনোমের অংশগুলো আউট অফ ফোকাস হয়েছে। ডিজিটাল জুম করা হয়নি।
২) সাউন্ডটা প্লে ইলেকট্রিক নামের একটা ভোকাল প্রসেসর ব্যবহার করে করা হয়েছে। ভয়েস আর গিটার যুক্ত করেছি ভোকাল প্রসেসরে। তারপরে সেটা যুক্ত করেছি একটা পি এ সিস্টেমে। পাশাপাশি মেট্রোনোমটা যুক্ত করেছি পিএ সিস্টেমে। পিএ সিস্টেম থেকে আউটপুট দিয়েছি সরাসরি ক্যামেরায়। এতে করে বাইরের শব্দ এভয়েড করা গেছে। আর আমিও আউটপুট শুনতে পাচ্ছিলাম পিএ সিস্টেম থেকে। পরে মনে হয়েছে মেট্রোনোম সরাসরি ভোকাল প্রসেসরে যুক্ত করে দিলে পিএ সিস্টেম টানাটানি করতে হতো না।
৩) মাইকটা ভালো মানের, কিন্তু টপ অভ দ্যা লাইন না। Shure SM58। ভোকাল প্রসেসরের কারনে ভালো শোনাতে পারে।
পুরো সেটআপ করতে অনেক সময় লেগে গিয়েছিলো। তারপর একলা একলা রেকর্ড করছিলাম, অনেক শব্দ করে। বাসার কেউ ঘুমাতে পারছিলো না। তাড়াতাড়ি শেষ করার একটা তাড়া ছিলো। মেট্রোনোম জোরে বাজালে রেকর্ডে বাজে শোনায়, আবার আস্তে বাজালে আমি শুনতে পাই না। তাছাড়া স্ক্রিপ্ট তৈরী করিনি, অন ক্যামেরা যা বলার বলেছি। সব মিলিয়ে একটা অ্যাংজাইটি কাজ করছিলো। একটু নার্ভাস হয়েছিলাম সেজন্য। কিন্তু আমার রেকর্ডিংয়ের সময়টায় ধীরে সুস্থে বলেছি যাতে লোকে বুঝতে পারে এবং আমিও নার্ভাস না হই। কিন্তু তারপরও অ্যাংজাইটি ধরা যাচ্ছে সেটা বুঝতে পারিনি।
ভোকাল প্রসেসর হিসাবে যে আলাদা ডিভাইস পাওয়া যায় সেটা জানতাম না। ভাবতাম কম্পিউটারে সফটওয়ারে করে। এটা দিয়ে তো মনে হয় অটোটিউনও করা যাবে। আপনার রেকর্ডিং এ ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ নেই, এটা কি ভোকাল প্রসেসরের কারণে নাকি মাইক্রোফোন, নাকি বাসাতেই কোনো নয়েজ নাই। একবার সচলের ফারুক হাসান ভাই এর সাথে একটা সাইন্স পডকাস্ট বানাতে গিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজের কারণে খ্যান্ত দিতে হয়েছে। Shure SM58 মাইকটা তো বেশ ভালো মনে হল। রিভিউ-স্পেক দেখলাম।
একটা জিজ্ঞাসা, মোটামুটি মানের, নয়েজ ফ্রি রেকর্ডিং এর জন্য কী ধরনের সেট-আপ ব্যবহার করা যেতে পারে? আমি একবার সনির পোর্টেবল অডিও রেকর্ডার কিনব ভাবছিলাম। কিন্তু জিনিসটা কস্ট ইফেক্টিভ হবে কি না বুঝতে পারছি না। ধরেন আমার উদ্দেশ্য, ফোনে ভিডিও রেকর্ড করব। আর আলাদা ডিভাইসে অডিও। এরপর দুটোকে জুড়ে দেব এডিটিং এর সময়।
গিটার স্কুলের টিউটোরিয়ালগুলোর একটা ব্যাপার খুব ভালো হচ্ছে। তা হলো ফিঙ্গার এক্সারসাইজের সাথে সাথে এই কর্ড প্র্যাক্টিস করানো। এই মিক্সটা না থাকলে অনেকেই ধৈর্য্য হারাতো। আমি Justinguitar এর কিছু টিউটোরিয়াল ফলো করেছিলাম, বিশেষ করে কর্ডের ইনটুইশন, ইয়ার ট্রেইনিং আর ছন্দের বেশ কিছু ব্যাপার বুঝতে অনেক সাহায্য করেছে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
মাইকটা ইউনিডিরেকশনাল। যার মানে হচ্ছে সরাসরি মাইকের সমান্তরালে কথা বলতে হবে। নাহলে শব্দ ঢুকবে না। লাইভ পার্ফমেন্সের জন্য খুবই জরুরী এটা। আশেপাশের নয়েজ কাটতে সাহায্য করে। ক্যামেরার সাথে মাইক্রোফোনগুলো দূরে থেকে রের্কড করে বলে মাল্টিডিরেকশনাল হয়, যাতে সব অডিও গ্রহণ করতে পারে। ইউনিডিরেকশনাল মাইক সরাসরি ক্যামেরার সাউন্ড ইনপুটে দেয়া গেলে (ক্যামেরার মাইক এক্ষেত্রে বন্ধ থাকবে) নয়েজ এভয়েড করা সম্ভব। আমার রেকর্ডিংয়ের সময় ঘটর ঘটর করে ডিশ ওয়াশার চলছিলো। সমস্যা হয় নি।
ফোনে ভিডিও রেকর্ড করলে একটা সম্ভাব্য সেটআপ হতে পারে ইউনিডিরেকশনাল মাইক কিনে ফোনের অডিও ইনে যুক্ত করে দেয়ায়। একটা XLR ইনপুট থেকে 1/8 ইঞ্চি অডিও ইনপুট কনভার্টার ব্যবহার করতে হতে পারে। ইন্টারনেটে সার্চ করে দেখে নেয়া ভালো এই সেটআপ কাজ করবে কিনা, কিংবা ফোনের স্পেসিফিক কোনো সমাধান আছে কিনা।
টিউটোরিয়াল গুলো কাজে লাগছে দেখে খুশি হলাম। ধন্যবাদ!
অবশেষে ইশ্কুল আবার খুললো।
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
তোমার মোটিভেশন দেয়ার জন্য ধন্যবাদ!
সাবাশ মুর্শেদ ভাই। পুরা হইসে।
আপাতত কোর্স, রিসার্চ আর কামলা নিয়া চরম চর্কির মধ্যে আছি। শেষ হলেই আক্রমওওওওওওওওওণ
-----------------------------------------------------------
আঁখি মেলে তোমার আলো, প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
ঐ আলোতে নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে
-----------------------------------------------------------
নতুন মন্তব্য করুন