ছড়াকার শারিক শামসুল কিবরিয়া মারা গেছেন কাল রাতে। আজ সকালে শুনলাম আহমেদুর রশীদের ফোন থেকে
১৯৮৯ এ যখন আমরা আড্ডাকে সাহিত্যের সঙ্গে একটু একটু করে যুক্ত করতে শিখছিলাম তখন আমাদের সাহিত্যের প্রথম আড্ডাকেন্দ্র হয়ে উঠে সিলেটের জিন্দাবাজারের সাপ্তাহিক ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচার অফিস। এই পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন শারিক ভাই
তার অফিসেই আমরা আড্ডা শুরু করলাম সাহিত্য নিয়ে। আমাকে সেখানে প্রথম নিয়ে গিয়েছিল ছড়াকার রেজুয়ান মারুফ। কলেজ শেষ করে দুপুর বেলা প্রায়ই সেখানে গিয়ে হাজির হতাম হেঁটে হেঁটে। আরও অনেকেই আসতো
অফিসটা চলে গেলো উল্টোপাশে। কাজী ম্যানশনের চার তলায়। সাপ্তাহিক ফেঞ্চুগঞ্জ সমাচারের সাথে শারিকভাই যুক্ত করলেন সুপ্রিয় কম্পিউটার। আমাদের আড্ডাও সেখানে স্থানান্তরিত হলো
পত্রিকার সাথে ছাপাখানা
আড্ডার পরিধি আরো বেড়ে গেলো। মারুফ আর আমি হয়ে উঠলাম রেডিমেড লেখক। কোথাও কারো কোনো ম্যাগাজিনে যদি দুয়েকটা পাতা ফাঁকা থেকে যেতো তাহলে রেডিমেড লেখক হিসেবে নামে কিংবা বেনামে মারুফ অথবা আমি একটা কিছু ঢুকিয়ে দিতাম। এই আইডিয়াটাও শারিক ভাইয়ের। তার পরে ছিল বিভিন্ন ধরনের বাণী আর ম্যাগাজিনের সম্পাদকীয় লেখা। শুভেচ্ছা লেখা। আর যেহেতু বসে থাকতাম সেহেতু চেনা অচেনা সবার প্রেস ম্যাটারের প্রুফ দুয়েকবার দেখতেই হতো
এবং সেখানেই আমি পেশা হিসেবে শুরু কলাম প্রুফ দেখা। এটাও শারিক ভাইয়ের বুদ্ধিতে। প্রতি পাতা ২০ টাকা। এখান থেকেই আমি শুরু করলাম পেস্টিংয়ের কাজ। প্রতি ফর্মা ১৫০ টাকা....
এখানেই শারিক ভাই বলেছিলেন- ভালো মন্দ যা কিছুই লেখো না কেন বই বের করার কথা মাথায় রেখো। তাহলে জিনিসগুলো ডকুমেন্টেড থাকবে
এক সময় আমাদের আড্ডা চেঞ্জ হয়ে গেলো। আরো এক সময় সুপ্রিয় কম্পিউটারও বন্ধ হয়ে গেলো। এবং আরো এক সময় শরিক ভাই সিলেট ছেড়ে দিয়ে ঢাকা চলে আসলেন
তার সঙ্গে যোগাযোগ নেই হয়ে গেলো। বছর চারেক আগে বোধ হয় কোথাও তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল... আলাপ হয়নি বেশি
আর আজ সকালে শুনলাম কাল রাতে তিনি মারা গেছেন হার্ট অ্যাটাকে হঠাৎ...
মন্তব্য
ইদানিং ব্লগের পাতা কিংবা মেইলবক্স খুলতে গেলেই ভয় পাই । এতো বেশী দুঃসংবাদ । সত্যি বলতে কি, আর ভাল্লাগছেনা । বোধশক্তি কেমন থ্যাতাভোঁতা হয়ে যাচ্ছে ।
চিনতাম ওনাকে । খুব ছোটবেলা দেখেছি ।
-----------------------------------------
মৃত্যুতে ও থামেনা উৎসব
জীবন এমনই প্রকান্ড প্রচুর ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
...............................
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
আরে ধ্যাৎ... ভাল্লাগেনা
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
উনার একটা কবিতার বই কার মারফত জানি হাতে পেয়েছিলাম। বইয়ের প্রথম কবিতার ২টা লাইন এখন মনে আছে,
"গাঙেয় ব-দ্বীপে বাস
দেখনি পদ্মার তুমি সোনালী সন্ত্রাস।"
পড়ছি। আর জানছি আপনার অনেক কথা লীলেন ভাই।
ডাকঘর | ছবিঘর
নতুন মন্তব্য করুন