শাহবাগে কাউকে আসতে বলতে রীতিমতো ভয় পাই আমি। আমার এক পিচ্চি ফ্রেন্ড আছে যে একদিন এখানে এসে দুতিন মিনিট থেকেই বলেছিল- এ্যান একুইরিয়াম অব ডেড ফেইসেস
এখানকার সবাইকে তার কাছে মরা মানুষ মনে হয়েছে। এবং আমি কেন মরা মানুষদের সাথে থাকি তার জন্য ঝাড়ি দিয়ে সোজা উঠে গেছে গাড়িতে
আর আমার আরেকটা ফ্রেন্ড আছে যাকে ক্ষেপাতে হলেই আমি ফোনে বলি- শাহবাগে চলে আয়
কারণ সে যে কোনো জাহান্নামে যেতে রাজি শুধু শাহবাগ ছাড়া
সচলায়তনে গিয়েছিলাম দেখা করার জন্য। গিয়ে বুঝলাম সবার আগেই চলে এসেছি। ওইদিনই একটা প্রকাশনা অনুষ্ঠান ছিল শাহবাগে। আমাদের বন্ধু নাজিব তারেক তার স্টল বাঙ্গাল থেকে টি শার্টে পাক্ষিক কবিতাপত্র বের করে। ১৫ তারিখ একটার প্রকাশনা ছিল ৬ টায়। আমি ভেবেছিলাম চারুকলায় কয়েকচামচ আড্ডা দিয়ে চলে আসবো। কিন্তু ওখানে বসতে না বসতেই উঠে যাবার জন্য গার্ড এসে তাড়া দিতে লাগলো। কী আর করা? অন্য কোথাও যাবার ব্যাপারে কারো কোনো প্ল্যান নেই। সেহেতু ভয়ে ভয়ে বললাম শাহবাগ যাই... (ওখানে নাজিব তারেক পিঠা খাওয়ানোর কথা। চারুকলায় তার সাথে দেখা হয়েছিল। আমি এমনি এমনিই বলে রেখেছিলাম যে ২০/২৫জনকে নিয়ে আসছি)
দেখলাম সবাই রাজি হয়ে গেছে। ফোনে শুদ্ধস্বরের আহমেদুর রশীদকে জানালাম সবাইকে নিয়ে আসছি তোমার ওখানে। কিন্তু আজিজের তিন তলায় শুদ্ধস্বরে গিয়ে অনেককেই মন খারাপ করতে দেখলাম। সেখানে যায়গা খুবই ছোট্ট। পাটি বিছিয়ে বারান্দায় কিছুক্ষণ বসলাম। তারপর গেলো কারেন্ট...
একে তো একজন আরেকজনের মুখ চেনে না। তার উপর অন্ধকারে যদি নতুন নতুন একেকজনের সাথে পরিচিত হতে হয় তাহলে যা অবস্থা হবার তাই হলো। পরিচিতরা আধা পরিচিতদের সাথে গুচ্ছে গুচ্ছে আড্ডা দিতে থাকলো আর অপরিচিতরা বসে থাকলো বোকার মতো...
সেখান থেকে সাবইকে নিয়েই চলে গেলাম বাঙ্গালের সামনে। ততক্ষণে কারেন্ট চলে এসেছে এবং বাঙ্গালের সামনে অনেক স্পেসের সাথে চেয়ারও পাতা আছে। একটু স্বস্তি দেখলাম অনেকের ভেতর। অনেকেই ছবি টবি তোলা শুরু করে দিলেন। কিন্তু যখনই শুরু হলো সাহিত্য নিয়ে আঁতেলেকচুয়াল আলোচনা...
(মনে মনে ভাবলাম না আনলেই মানুষগুলোকে কম কষ্ট দেয়া হতো)
অবশ্য এর মধ্যে অরুপ ইন্টারনেটে লেখালেখি এবং ব্লগ এবং সচলায়তন নিয়ে বেশ একটা ঝাড়া লেকচার দিয়ে উপস্থিত লেখক সম্পাদকদের সচলায়তন ব্যবহারের আহ্বনা জানিয়েছে...
আমি যেহেতু সবাইকে ডেকে এনেছি সেহেতু আমি আর কারো মুখের দিকে তাকাই না। কারণ তাকালেই তাদের এই অসহায় মুখটা দেখবো আমি জানি
আমি মাথা গুঁজে বসে আছি। এক সময় দেখি এদের মধ্যেই কেউ একজন টিএসসি তে যাবার প্লান করে ফেলেছেন। শুনেই ভাবলাম- যাক বাঁচা গেলো। লোকজনকে ডেকে এনে বন্ধ দালানে আটকে রাখার দায় থেকে বাঁচলাম
অনেক পরে টিএসসি তে গিয়েও দেখি অন্ধকার (তার উপর আমি কানা মানুষ)। কারা কারা ওখানে ছিল আর কারা কারা ছিল না বুঝে উঠার আগেই থার্ড আইয়ের টেলিফোন ইন্টারভিউর সামনে পড়ে গেলাম- আমি কেন নিজেকে বস্তিবাসী বলি সেটা নিয়ে একেবারে পুলিশি স্টাইলে একটা প্রশ্ন করলো থার্ড আই। যা উত্তর দিলাম তা শুনলো কি শুনলো না বুঝবার আগেই আমাকে তাড়া দিয়ে বলল- আপনার সাথে পরে আবার আলাপ হবে। আমাদের একজন পাঠিকা এখানে উপস্থিত আছেন। তাকে একটু দেবেন?
পাঠিকার উপস্থিতিতে কথা চালিয়ে যাবার আর কি কোনো সুযোগ আছে? নানি জিজ্ঞেস করার উপায় আছে যে আপনি আমার উত্তরটা বুঝতে পেরেছেন তো?
দিলাম। পাঠিকাকেই ফোনটা দিয়ে দিলাম
তার পরে শুনি সবাই খেতে যাবার আয়োজন করছে। আমার যাওয়া সম্ভব না। এর মধ্যে হাসান মোর্শেদের ফোন। সে সবার সাথেই আলাপ করেছে (জানি না পাঠিকাদের সাথে বেশি করেছে কি না)। অনেক দিন পরে মোর্শেদের সাথে আলাপ
তারপর সবাই গেলো খেতে
আর আমি চলে এলাম হাঁটতে হাঁটতে
অনির্ধারিত এই সমাবেশটা আমার কাছে সমাবেশ নয়। আমার কাছে একটা পরিচয়পর্ব
দারুণ
কিছু করতে না পারলেও দারুন
মন্তব্য
বস, পিঠা কিন্তু পাওনা রইলো... নেক্সটবার ইনশাল্লাহ্ . ... .
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
পিঠা কিন্তু আরেকজনের ঘাড়ের উপর দিয়ে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলাম...
আমি তো থাকিই শাহবাগে। কোন দিক দিয়া আসলেন আর কোন দিক দিয়া গেলেন টেরই পাই নি।
গৌতম
আহারে...
হাঃহাঃ
অতি সুখাদ্য লেখা।
ধন্যবাদ বস্তিবাসী লীলেন ভাই।
(আপনার সাথে থার্ডআইয়ের ইন্টারভিউ পর্বটা বেস্ট... একের পর এক প্রশ্নবান-
আপনি নিজেকে বস্তিবাসী বলেন কেন?
পিঠা খাওয়ানোর কথা ছিল, সবাই খেতে পেয়েছে?)
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
তাকে আমার মনে হয়েছে কোনো কালে হয়তো পুলিশ কিংবা বিডিআর-এ ছিল
এরকম সুসময়ে কেন যে সচল হতে পারি না!
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
কবি তো?
তাই নড়তে চড়তে একটু দেরি হয়ে যায়
সময় চলে যাবার পরে মনে হয়
আহহারে গেলো...
পরিচয় পর্ব হলে তো পরে নিশ্চয়ই আবার সমাবেশ আছে ... তখন উড়ে উড়ে চলে যাব
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
পুরো ফেব্রুয়ারি মাস
বইমেলা
চলে আসেন
সারা মাস আমাদের উৎসব
অনেকেরই ছবি আগে দেখেছিলাম, তাই চাক্ষুষ দেখে খুব অবাক হইনি। তবে সামনাসামনি কথা বলার অনুভূতি অন্যরকম। ঋক (জুনিয়র রাসেল) কে মিট করাটা ছিল বাড়তি পাওয়া।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
তবে আমি সবচে বেশি অবাক হয়েছি অচ্ছুৎ বালাই'র মতো ইরিটেটিং নিকের মানুষকে এরকম ললিপপ-ললিপপ মার্কা দেখে
যে নিজে বিড়িও খায় না কিন্তু অন্যদের জন্য বিড়ির কার্টুন নিয়ে ঘোরে
(আমি ভেবেছিলাম আপনি একটা হাউমাউকাউ মার্কা লোক হবেন)
লীলেন ভাইয়ের মন্তব্যে বিপ্লব।
( সেদিন টিএসসি থেকে কেটে পড়লেন কেনো?)
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
টিভি মিডিয়ার এক দালালের সাথে দেখার করার জন্য
সচল নিয়ে সম্ভবত কোনো কথাবার্তা হয়নি
যা হয়েছে তা হলো- আপনি কোথায় থাকেন?
কোন নামে লেখেন?
বাংলাদেশে কতদিন আছেন?
এর বেশি কিছু না
আমার কাছে কোনো ছবি নেই ভাইজান
ডেড ফেইসেস! পিচ্চি খুব একটা মন্দ বলে নাই।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
শাহবাগে মরা দৃষ্টিতে তাকালে তো মৃতদেরই পড়ে চোখে
শাহবাগে গেলেই মোর বহুদিন আগের কথা পড়ে যায় মনে...
-------------------------------------
আর নয় অকারণ দুঃখ দুঃখ খেলা
এবার হাসিমুখ নিশিদিন সারাবেলা
'
=========================================
নিজেকেই নিজে চিনি না, পরকে চেনার মিছে বাহানা
কেন জানিনা আপনাকে দেখার আমার বড়ই শখ।
মাইর টাইর দেবেন না তো?
- বুবু ভাই, ভালো হৈছে পরিচয় পর্ব সেরে ফেলছেন। নেক্সট আড্ডায় জমবে মজা। একেবারে পাটি বিছিয়ে পাটিসাপটা খাওয়ার আড্ডা। ততোদিন পর্যন্ত দাড়িখান রাইখেন।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ডিসেম্বরের শেষে দাড়ি কাটবো
আবার জানুয়ারিতে উঠবে
এবং ফেব্রুয়ারিতে থাকবে
মজা পাইছি খুব। হা হা হা
ডাকঘর | ছবিঘর
নতুন মন্তব্য করুন