• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

বিশ্বায়ন থিওরি কিংবা একটি আদর্শ খামার

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/১০/২০০৭ - ১১:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(আমার ২০০৫ এর কবিতার বই 'মাংসপুতুল' এর একটি কবিতা। ২৩ বছর পর গতকাল ১৫ অক্টোবর সুবই পাত্রের সাথে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম)

আপনারা কেউ কি সুবই পাত্রের ঠিকানা জানেন?
কেউ কি আমার একটা সংবাদ পৌঁছাতে পারেন তার কাছে তার আদিবাসী কথায় অনুবাদ করে?

সুবইরা রাজা গৌড় গোবিন্দের বংশধর
তেরো শ’ সালে তারা বনবাসী হয় সেনাপতি নাসিরুদ্দিনের ভয়ে
বিশ শতকে শা’জলালের নামে করা সেনা ছাউনিতে হারায় বনের দখল
তারপর তাদের কেউ ধরা পড়ে যিশুর খোঁয়াড়ে। কেউ মিশে যায় খাসিয়ার দলে আর কেউ মাঝে মাঝে দেখা দিত কয়লার পসরা নিয়ে

এখন বৃক্ষ নিধনও নিষিদ্ধ আর কয়লার ব্যবহারও ভুলে গেছে নাগরিক লোক
এবং আমি জানি না
জালালি আক্রমণ আর খ্রিষ্টের জাল থেকে পালিয়ে পাত্র নামে কোনো আদিবাসী আজও আছে কি না পৃথিবীতে কোথাও

সুবই শিখিয়েছে আমায়- বালাবালি দাহাং মানে ভালো আছো তুমি?
আর দাহাং দাহাং মানে আছি আছি। ভালো আছি

ভালো নেই কথাটি পাত্র ভাষায় কী করে বলতে হয় আমাকে শেখায়নি সে
হয়ত পাত্র ভাষায় ভালো নেই বলে কোনো কথা নেই
তবু তাকে আমার জানাতে ইচ্ছে করে- নট দাহাং- নট দাহাং সুবই; দাহাং নেহি- দাহাং নেহি অথবা না দাহাং- না দাহাং সুবই। আমি ভালো নেই- আমি ভালো নেই- ভালো নেই কেউ
আমাকেও তাড়ায় অন্য নামের নাসিরুদ্দি। আমাকেও জাল পেতে ধরে নিয়ে যায় কেউ শুভাকাঙ্ক্ষী সেজে

নো দাহাং- নো দাহাং সুবই। তুই আর আমি দুজনেই এখন একই ফিশারিতে চাষ করা তেলতেলে মাছ
২০০৪.১১.১৮ বিষুদবার


মন্তব্য

মাহবুব লীলেন এর ছবি

২৩ বছর পরে হঠাৎ করে গিয়ে হাজির হলাম আমার জন্মস্থানে। চা বাগানের যে টিলাটায় আমার জন্ম তার আশেপাশে ছিল পাত্র আদিবাসী বস্তি। আমাদের বাসার ঠিক নিচেই ছিল সুবইদের বাড়ি।

একবার যখন সুবইকে আর খুঁজে পাবো কি না সন্দেহ হয়েছিল তখনকার সময়ে এই কবিতাটি লেখা। গতকাল সেখানে গিয়ে সুবইকে খুঁজে বের করলাম। বিশ্বাস হয়নি যে সুবইকে পাবো। শুধু বড়ো হওয়া ছাড়া সুবই বদলায়নি একটুও। কিন্তু সুবই আমাকে আরেকটি বিষয়ের মুখোমুখি করে দিলো কথায় কথায়

তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম পাখি শিকার এখনও করে কি না। সুবই বলল- গত ৯ বছর ধরে সে আর কোনো প্রাণী হত্যা করে না। তার বড়ো ছেলের বয়স নয় বছর। ছেলে হবার পরে সব প্রাণীকেই তার সন্তানের মতো মনে হয়

সুবইর বাড়ি থেকে যখন বের হচ্ছিলাম তখন মনে হলো প্রকৃতি-সন্তান সুবই প্রাণী হত্যা ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু আমরা সভ্যরা এখনও উদ্বাস্তু করে চলেছি সুবইদের

এখনও পাত্ররা উচ্ছেদ হচ্ছে তাদের ভিটেমাটি থেকে। বাংলাদশে পাত্র আদিবাসীদের সবচে বড়ো বসতিগুলোর মধ্যে একটি 'দেবতার টিলা' থেকেও তারা এখন উচ্ছেদের আতংকে আছে

আমি সুবইর জন্য কবিতা লেখা ছাড়া কি অন্য কিছু করতে পারবো??????????

অমিত আহমেদ এর ছবি

ভাল লেগেছে।
আমাদের হাত-পা বাঁধা... লেখা ছাড়া আর কিই বা করার আছে?


ভালবাসি, ভালবাসি, ভালবাসি তোমায়!
ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

মন্তব্যটা মন ছু্ঁয়ে গেল। মনুষ্যত্ব একেই বলে।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আমাকেও তাড়ায় অন্য নামের নাসিরুদ্দি। আমাকেও জাল পেতে ধরে নিয়ে যায় কেউ শুভাকাঙ্ক্ষী সেজে...

কী আর করা বলো ।পাত্র সম্প্রদায় মনে হয় সিলেট থেকে বিলুপ্তই হয়ে গেল শেষতক ।

আমরাও তাড়া খেতে খেতে কোথায় যাচ্ছি ,কে জানে ।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

মন ছুঁয়ে গেল।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

দুর্বাশা তাপস এর ছবি

চমৎকার লেখা। এদেশে মানুষ কই?

==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

দারুণ!



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ডালডার ঘি
আর লেমিনেটেড সুখ?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

লীলেন ভাই,
একটা সুত্র খুঁজছি আমি । সেই সময়টাতে যখন শাহজালাল এসে গৌড়গোবিন্দকে পরাজিত করলেন । গৌড়গোবিন্দ সহ পাত্র সম্প্রদায় পালিয়ে গেলো শহর ছেড়ে । অধিকৃত সিলেটের যারা ধর্মান্তরিত হলো তারা কি সবাই পাত্র ছিলো? মানে এখনকার সিলেটী যারা তাদের পুর্বপুরুষ কি পাত্র ছিলো মুলতঃ ? কিন্তু পাত্রদের মুখের ভাষা,গায়ের রং,শারীরিক কাঠামো,চেহারা এখনকার সিলেটীদের সাথে কিন্তু মিলেনা? তবে কি সে সময়ের পাত্ররা সংখ্যালঘু শাসক আর সিলেটী বাংলাভাষীরা সংখ্যাগুরু প্রজা ছিলো? বুরহান উদ্দীন কি পাত্র ছিলো না বাংগালী?
এই বিষয়গুলো বেশ ইন্টারেস্টিং
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

একটা সুন্দর প্রশ্ন এবং বিষয়টি আমাকেও আগ্রহী করলো ।এ দিকটা কখনো ভাবি নি ।

তবে আমার ধারনা (শুধুই ধারনা )পাত্র সম্প্রদায় বহিরাগত শাষক ছিলো। সম্ভবত:আশেপাশের কোন পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর অংশ ।
সিলেটের মতো এলাকাকে দখলে আনার জন্য যে কূটনৈতিক কৌশল,সেই কৌশলের অংশ হিসেবে বুরহান উদ্দীনকে এখানে
চালান করা হয়েছিল। অথবা পুরো বিষয়টিই "তুই না করলে,তোর বাপ ঘোলা করেছে "জাতীয় নেকড়ে যুক্তিও হতে পারে ।

নইলে বৃহত্তর সিলেটে একজন মুসলমান হঠাৎ করে কিভাবে গজিয়ে ওঠে,যেখানে এই জনপদ দুর্গম ছিল এই সেদিন পর্যন্ত ।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বুরহান উদ্দিন ছিলেন তখনকার সিলেটের তিন ঘর (যতদূর মনে পড়ে) মুসলমানের মধ্যে একজন। তখন সিলেটে মাত্র তিনঘরই মুসলমান ছিলেন
গৌড়গোবিন্দ পাত্র ছিলেন বলে ঐতিহাসিক কোনো প্রমাণ আমি পাইনি। আবার তিনি কোন গোত্রের হিন্দু ছিলেন তাও পরিষ্কার না। তবে কিছু কিছু পাত্র উপকথায় তার পালিয়ে যাওয়া এবং পালানোর সাথে পাত্রদের সম্পর্কের কথা পাওয়া যায়। অনেক পাত্র দাবি করেন যে তারা গৌড়গোবিন্দের বংশধর

তবে আমার ধারণা তারা গৌড়গোবিন্দের বাড়িতে কাজকর্ম করতো। কারণ গৌড়গোবিন্দ পালিয়ে যাবার সময় তাদেরকে সাথে করে নিয়ে যায়নি। সে তার বংশের লোকজনকে নিয়ে চলে গেছে। যাবার সময় বলে গেছে যে আমি যেদিকে যাবো সেদিকে গাছ কাটতে কাটতে যাবো। তোমরা পরে কাটা গাছ দেখে পথ চিনে চিনে আমার সাথে এসে মিলবে

কিন্তু গৌড়গোবিন্দ যাবার সময় যে গাছগুলো কেটেছে তা হলো কলা গাছ। (সিলেটের পাহাড়ে এখনও প্রচুর বন-কলা গাছ আছে)। সমস্যা হলো কলাগাছ কাটার কয়েকদিন পরেই আবার বড়ো হয়ে যায়। ফলে গৌড়গোবিন্দ পালানোর কয়েকদিন পরে পাত্ররা যখন তাকে ফলো করতে যায তখন তারা আর কোনো পথ খুঁজে পায় না। কারণ সবগুলো কাটা কলাগাছই তখন আবার পূর্ণ গাছ হয়ে গেছে। এই কারণে তারার আর রাস্তাও খুঁজে পায় না- গৌড়গৌবিন্দকেও না। তারা পথ হারিয়ে জঙ্গলে থেকে যায়

এই কাহিনীটা আমি তাদের মুখ থেকেই শুনেছি

আর তাদের মধ্যে যারা যেতে পারেনি তারা গিয়ে শাহজালালকে বলেছে যে আমরা রাজার বাড়িতে সেবাযত্নের কাজ করাতাম (গৃহস্থালী)। আমার কারো সাথে কোনো শত্রুতায় নেই এবং আমাদের কোনো যাবারও যায়গা নেই
শাহজলাল তাদেরকে বলেন- ঠিক আছে তোমরা আগে যা করতে সেই কাজই করবে এবং যেখানে ছিলে সেখানেই থাকবে
এই যারা থেকে গিয়েছিল তাদেরকেই আজকে আমরা শাহজালালের খাদেম বংশ হিসেবে চিনি
এরা পরে মুসলিম হয়ে যায় এবং শাহজালালের সাথের লোকজনের সাথে বিয়ে শাদি হয় তাদের
শাহজালালের ৩৬০জনের মধ্যে শুধু তিনি আর তার ভাগিনা শাহপরান ছাড়া বাকি ৩৫৮জনই কিন্তু ভারতের লোক। মূলত পাঠান এবং দিল্লির সম্রাটের সৈনিক
এরাই মূলত এখানে বিয়ে শাদি করে। প্রত্যেকেই একাধিক বিয়ে করে। শাহ জালাল এবং শাহপরান যেহেতু বিয়ে করনেনি সেহেতু এই ৩০৬ এর বংশধর যারা দাবি করে যে তারা আরব বংশের লোক সেখানে সন্দেহ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে

বর্তমানে যারা খাদেম হিসেবে আছে তাদের বংশধরদের মধ্যে আমি কিন্তু পাঠান চেহারা সাথে মোঙ্গলয়েড চেহারার অনেকগুলো লক্ষণ দেখেছি। এতে মনে হয় এদের পূর্বপুরুষে পাত্রদের রক্ত আছে

সিলেটে শাহজালালের আসার পেছনে বুরহান উদ্দিনের সংযোগটাই মূলত সূত্রপাত
একবার এক কুরবানির সময় বুরহান উদ্দিন নিজের বাড়িতে গরু কুরবানি দেয় (অবশ্যই লুকিয়ে)। একটা কাক একটুকরো গরুর মাংস নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয় গৌড় গোবিন্দের বাড়িতে। গৌড়গোবিন্দ বিষয়টা জেনে শাস্তি হিসেবে বুরহান উদ্দিনের ছেলেকে ধরে নিয়ে জবাই করে ফেলে। তখন বুরহান উদ্দিন মুসলমিদের রক্ষার জন্য দিল্লির বাদশাকে চিঠি লেখেন
কিন্তু দিল্পির তখনকার বাদশা (সম্ভবত শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ) অতদূরে কাউকে পাঠনোর জন্য রাজি করাতে পারেন না। সেই সময় শাহজালাল এসে হাজির হন সেখানে এবং বাদশা জানতে পারেন যে তিনি ভারতে ইসলাম প্রচার করার জন্যই বের হয়েছেন। তখন তিনি তাকে বলেন যে তিনি যদি সিলেটে যান তাহলে তার সাথে তিনি কিছু সৈন্য দিয়ে দেবেন এবং সিলেট বিজয় হলে তাকে সেখানকার সুবেদার করে দেয়া হবে

শাহ জলালের সাথে আসার জন্য মাত্র কয়েকজন সৈনিক রাজি হয়। অনেকটা নির্বাসনের মতো। সম্রাট মূলত এদের দাবি ছেড়েই শাহজালালের সাথে পাঠান। এদের মধ্যে সেনাপতি ছিলেন নাসিরুদ্দিন। আর টিম লিডার শাহজালাল। এই টিমের সাথে রাস্তায় আরো কয়েজনের যুক্ত হবার কিছু প্রমাণও পাওয়া যায়

সিলেট বিজয়ের পরে দিল্পির বাদশা শাহজালালকে সুবেদার বানাতে চাইলে তিনি তা গ্রহণে অস্বীকার করেন। এর স্বীকৃতি হিসেবে দিল্লির বাদশা তখনকার সম্পূর্ণ সিলেটের ভুমি খাজনা আজীবনের জন্য মওকুফ করে দেন। যার ধারাবাহিকতায় এখনও সিলেটের ১ নং ওয়ার্ডের কোনো ভূমি খাজনা নেই (কসবে সিলেট নামে পরিচিত)

আমি বোধহয় অন্য প্রসঙ্গে চলে গেছি...

পাত্ররা কোনোভাবেই বর্তমান সিলেটিদের আদিপুরুষ না। শাহজলাল এখানে আসেন ১৩০০ সালের দিকে। তখন এখানে মূলত চতুর্বণের হিন্দুদেরই থাকার বেশি প্রমাণ পাওয়া যায়। বর্তমান সিলেটিরা মূলত চতুরবর্ণের হিন্দুদেরই বংশধর
এখানে একটা খটকা আছে। খটকাটা হলো হিসেব অনুযায়ী দেখা যায় গৌড়গেবিন্দ আসলে ভারতীয় হিন্দু (বাঙালি কি না তার প্রমাণ পাইনি আমি)। কিন্তু পাত্রদের লোককথায় গৌড়গোবিন্দের সাথে আবার তাদের সম্পর্কটাও বেশ স্পষ্ট
এখানে একটা গোলক ধাঁধা রয়ে গেছে
তবে বর্তমান সিলেট ক্যান্টমনেন্ট (জালালাবাদ সেনানিবাস) ৯৯% পাত্রদের জায়গার উপরে এটা আমার নিজের চোখে দেখা

আরিফ জেবতিক এর ছবি

সুন্দর আলোচনার জন্য ধন্যবাদ @লীলেন ভাই।

তবে এখানে আমার কিছু প্রশ্ন/ধারনা আছে ।

১.খাদেমদের মাঝে সরেকওম পরিবারের বহু মানুষকে আমি দেখেছি যাদের চেহারার সাথে পাত্র সম্প্রদায়ের মানুষের চেয়ে
বরং আরব বংশোদ্ভূত চেহারার মিল বেশি পাওয়া যায়। স্থুল ভাবে উদারহন টানলে বান্না ভাইয়ের কথাই ধরা যাক।স্কুলেও আমাদের সাথে এরকম বেশ কিছু ছেলে ছিল।কিন্তু পাত্র সম্প্রদায়ের সাথে মিল চোখে পড়েছে বলে মনে পড়ছে না।

২.জেনারেল ওসমানী পরিবারের বংশলতিকা কিন্তু রক্ষিত হচ্ছে সেই দিল্লী কাল থেকেই ।এই পরিবারের আদি পুরুষ যদিও শাহজালালের সাথে ভারতে আসেন নি,কিন্তু তবু বংশ লতিকা থেকে বোঝা যায় যে উনি সম্ভবত:ইরান অথবা তুর্কিস্থান থেকে এসেছিলেন ।ইনি কিন্তু ৩৬০ আউলিয়ার একজন ।
এটা কি সন্দেহ করা যায় না যে শাহজালালের সাথেই আসুন বা আলাদা,৩৬০ আউলিয়ার মাঝে আরবের বিভিন্ন দেশের কিছু অধিবাসী ছিলেন ?স্বাভাবিক ভাবেই তো একটা দুর্গম এলাকায় রওনা হওয়ার আগে শাহজালাল চাইবেন যে তার কিছু ভাইবেরাদর তার সাথে থাকুক ।এদের হয়তো দিল্লী থেকেই জোগাঢ় করা হয়েছে,কিন্তু এদের অনেকেই হয়তো আদিতে আরবের লোক ।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমরা যাদেরকে অনেক ক্ষেত্রে পাঠান বলি তারা সবাই বংশগত ভাবে পাঠান না। বিশেষত বাংলাদেশে। বাংলাদেশে পাঠান রাজাদের অনেক সৈনিকও পাঠান নামে পরিচিত হয়ে গেছে

তবে এইসব লোকজনের মধ্যে ইরানি লোকজন রয়েছে প্রচুর। যারা পাঠান নাকি ইরানি নাকি আরবের তা নিয়ে একেবারে নৃতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে না গেলে কিছু বলা সম্ভব না

ইরান থেকে দলে দলে লোকজন বের হওয়া শুরু হয় ১২শ শতকে। এবং এই সময়েই ইরানে সন্যাসবাদ খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এটা মূলত নেস্টোরিয়ান খ্রিস্টানিটির প্রভাব। ১২ শতকে নেস্টোরিয়ান খ্রিস্টানদের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এখন অনেকেই এদের নাম জানে না। এরা পরে মুসলিমদের সাথে মিশে যায়। যেমন আলজেরিয়ার মুসলিমরা কিন্তু মুসলিম না। এরা মূলত নেস্টোরিয়ান খ্রিস্টান। এরা মুসলিমদের মতোই বিশ্বাস করতো যিশু একজন প্রেরিত পুরুষ (ঈশ্বরপুত্র নয়। ঈশ্বর কর্তৃক অপ্রচলিতভাবে জন্ম দেয়া মানুষ); তাকে ঈশ্বর উঠিয়ে নিয়েছেন এবং তিনি আবার আসবেন মৃত্যুবরণ করার জন্য।

এরা সন্যাসবাদ সমর্থন করতো। যা ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না। ইরান এবং মধ্যপ্রাচ্যে যে মুসলিম সন্যাসবাদ (সুফিও বলা যায়; যদিও এর মধ্যে অনেক বিতর্ক আর অনেক ভাগ আছে); তা মূলত এই নেস্টোরিয়ান খ্রিস্টাদের প্রভাবেই ঘটেছে। তখন তরুণদের মধ্যে সন্যাসী হবার হুজুগ পড়ে যায়। অনেকেই বের হয়ে যেত সন্যাসী হয়ে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাঝপথে গিয়ে ফিরে আসতো । কেউ কেউ চুরি ডাকাতিতে লেগে যেত আবার কেউ কেউ সুযোগ বুঝে রাজা বাদশাও হয়ে গেছে অনেক ছোটখাট রাজ্যের

এই গোত্রটি আস্তে আস্তে মুসলিমদের সাথে মিশে গেছে। এই গোত্রের লোকজনকে মুসলিম হিসেবেই ধরা হয়

শাহজালাল ভারতে এসে কার কার সঙ্গে দেখা করেছেন তার মোটামুটি একটা তালিকা পেয়েছি আমি। সেখানে তার সাথে তার ভাগনে থাকার কথাও পেয়েছি। কিন্তু তার সাথে তার দেশ(ইয়েমেন) কিংবা ইরান (যেখান থেকে তিনি ভারতে এসছেন) এর কোনো সঙ্গীর কথা জানা যায়নি। হয়তো রাস্তায় অনেকই তার সাথে ছিল। কিন্তু একেকজনের গন্তব্য একেক দিকে থাকায় তারা চলে গেছে। কিন্তু শাহজালালের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতে ইসলাম প্রচার।
ভারতে এসে অন্যদের অনুরোধে তিনি সিলেট আসেন। এবং সিলেট আসার সিদ্ধান্ত নেবার পরেই আমরা তার সঙ্গীদের বর্ণনা এবং সংখ্যা জানতে পারি

শাহজালাল সিলেট বিজয় করার পরে কিন্তু অসংখ্য প্রশাসনিক লোক এবং সৈনিক আসে বাইরে থেকে। অনেকে এদেরকেও আউলিয়া হিসেবে লিস্টে ঢুকিয়ে দেয়। এদের মধ্যে ইরানের প্রচুর লোক ছিল। (কোনোভাবেই আরবের লোক নয়। আমার হিসেব মতে বাংলাদেশে কোনো কালেই আরব থেকে সরাসরি কোনো প্রভাবশালী লোক আসনি)

যারা সিলেটের প্রশাসনিক কাজে এবং পরে ব্যবসায়িক কাজে এসেছিল তারাও পরে এখানে থেকে যায় এবং সিলেটের লোকজনের সাথে মিশে যায়

এখানে আরো একটা বিষয় শাহজালালের সাথে যারা এসছে এবং পরে যারা এসেছে তাদের ১০০% ছিল পুরুষ। সুতরাং এদের বংশধরদের সবারই মায়ের দিক লোকাল সিলেটি। হোক তা পাত্র অথবা চতুবর্ণী হিন্দু

তাপস শর্মা এর ছবি

কবিতার পাত্রকে চিনিনা। তবে জানলাম এইভাবেও কবিতা লেখা যায়!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।