নির্বাচন : জাতীয় দায়িত্ব বনাম একক কৃতিত্বের ঢাকঢোল

মাহবুবুল হক এর ছবি
লিখেছেন মাহবুবুল হক (তারিখ: শুক্র, ০৬/০২/২০০৯ - ১১:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম আলো পত্রিকার ‌'তেলা মাথায় তেল দেওয়া'র স্বভাবটা ক্রমেই বাড়ছে। আর আনন্দবাজার স্টাইলে 'বাক্যের খোয়াড়' বানানোর লেখক গোষ্ঠীও তারা তৈরি করে রেখেছে। তাই আমাদের, মানে যাদের নামের পাশে কবি,বুদ্ধিজীবী, প্রাবন্ধিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, শিক্ষাবিদ, সাবেক আমলা ইত্যাদি ওজনদার উপাধি নেই , দুএকটা মৌলিক বা মন্তব্যসূচক লেখা পাঠালেও ঠাঁই হয় না কোথাও। কিন্তু প্রথম আলোয় প্রকাশিত লেখার প্রতিক্রিয়া বা প্রতিবাদ প্রথম আলোতেই না পাঠিয়ে উপায় নেই। সে রকম একটি লেখা পাঠিয়েছিলাম এবং যথারীতি তা ডেস্কের নিচের ডাস্টবিনে চলে গেছে বলেই মনে হচ্ছে। এ নিয়ে সম্ভবত চারটি লেখার এ দশা হল। তবে এখন আর আমি ততটা হতাশ হই না কারণ ' সচলায়তন ' আছে-- সচল পাঠকদের জন্য আমার আরো একটি প্রত্যাখ্যাত লেখা :

নির্বাচন : জাতীয় দায়িত্ব বনাম একক কৃতিত্বের ঢাকঢোল

গত ৮ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে প্রথম আলোর ‘খোলা কলম’ পাতায় ‘প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট : নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের অনন্য মডেল’ শিরোনামে জনাব মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরীর ( সচল পাঠকদের জন্য জানাচ্ছি জনাব মুনীর , এডিসি-বগুড়া , জাতীয় নির্বাচনে বগুড়া জেলার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক - ) একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে যা মূলত ৩১ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে প্রকাশিত জনাব মিজানুর রহমান খানের একটি লেখার প্রতিক্রিয়া। জনাব মুনীর চৌধুরী যা লিখেছেন তা সরকারের একটি বিশেষ ক্যাডারকে মহান ও দক্ষতার প্রতিমূর্তি হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা । এ লেখায় অসত্য এবং সমর্থনযোগ্য নয় এমন অনেক মন্তব্য রয়েছে। যেমন, জনাব মুনীর চৌধুরী আরো অনেক কৃতিত্বের পাশাপাশি পরীক্ষায় নকল প্রতিরোধের কৃতিত্বও প্রশাসন ক্যাডারের দাবি করেছেন। অথচ পরীক্ষার হলে নকল প্রতিরোধের কাজটি সম্পূর্ণভাবে হল পরিদর্শকের এখতিয়ার, যিনি একজন শিক্ষক। পরীক্ষায় নকল প্রতিরোধের নামে প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের অনাবশ্যক দৌড়-ঝাঁপ শিক্ষার্থী বা শিক্ষককে মনস্তাত্ত্বিকভাবে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয় যা আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে মানানসই নয়। উন্নত বিশ্বের কোথাও এ ব্যবস্থা আছে বলে আমার জানা নেই । শিক্ষাবোর্ডগুলোর দুর্বলতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতার অভাব, পাবলিক পরীক্ষা আইন ও পরীক্ষা কেন্দ্রের চারপাশে ১৪৪ ধারা জারি করার মত অতি সাধারণ আইনী গুরুত্বের কারণে এক্ষেত্রে প্রশাসনিক সম্পৃক্ততা উপেক্ষা করা যাচ্ছে না। কিন্তু আমি মনে করি এ ধারা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব এবং তাতে সকল পাবলিক পরীক্ষা আরো সুষ্ঠু ও নিষ্কলুষভাবে অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ( তিনি যে চাকুরেই হোন না কেন) যেমনভাবে নির্বাচনী আইনের অনেকগুলো ধারা প্রয়োগ করতে পারেন তেমনি ভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবকে (সাধারণত প্রতিষ্ঠান প্রধান) পাবলিক পরীক্ষা অর্ডিন্যান্স প্রয়োগের ক্ষমতার্পণ করলে পরীক্ষা আরো সুষ্ঠুভাবে নেয়া সম্ভব হয় এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত অনেক জটিলতারও অবসান ঘটে। তাছাড়া পরীক্ষার হলে নকল নির্মূলের বিষয়টি একটি রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির ব্যাপার, যার প্রমাণ আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। জনাব মিজানুর রহমান খান কারো অবদানকে খর্ব করেন নি, নির্বাচনী কাজে মাঠ-পর্যায়ে জুডিশিয়াল ও এগ্জিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেসির নানা অসঙ্গতির চিত্র তুলে ধরেছিলেন যা যথার্থ এবং প্রামাণ্য।

নির্বাচনের কাজ একটি জাতীয় দায়িত্ব। কোন ব্যক্তি বিশেষ বা ক্যাডার বিশেষের একক দায়িত্ব যেমন এটি নয় তেমনি সুষ্ঠু নির্বাচনের সাফল্য এককভাবে কোন বিশেষ ক্যাডারের নয়। মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার থেকে শুরু করে ভোটকেন্দ্রের আনসার সদস্য এমনকি এলাকার ভোটাররাও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের সাফল্যের অংশীদার। সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা নির্বাচনের প্রতিটি স্তরে যার যার দায়িত্ব পালনের জন্য সচেষ্ট থাকেন। প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যদের এ কাজের ব্যবস্থাপনাজনিত অভিজ্ঞতা রয়েছে সত্য কিন্তু এ কাজটি করার জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের বেতনভুক্ত কর্মকর্তা কর্মচারীরা রয়েছেন; নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনার ‘চাবিকাঠি’টি কেন তাদের হাতে নেই এটি একটি বড় প্রশ্ন। নির্বাচনের কাজে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বরং এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে থাকেন। ব্যবস্থাপনার অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সমাধান করতে হয় তাত্ ক্ষণিকভাবে সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগ ও তত্ পরতায় এবং অত্যন্ত দ্রুততার সাথে। মূলত সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক-বীমার প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাগণ প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু ভোটের সরঞ্জামাদি নেয়ার পর থেকে শুরু হয় তাদের এক অনিশ্চিত অভিযাত্রা । হাজার হাজার ভোট কেন্দ্র প্রত্যন্ত এলাকার কোন এক অরক্ষিত বা ভাঙা স্কুল ঘর যেখানে পাকা সড়ক নেই, একাধিক যানবাহন ব্যবহার করে বা পায়ে হেঁটে কেন্দ্রে পৌঁছতে হয়, যাতে কোন শয্যা উপকরণ ছাড়া বেঞ্চে বা মেঝেতে রাত কাটানো ছাড়া উপায় নেই, খাবার বা পানীয় জলের ব্যবস্থা করা দুঃসাধ্য। এহেন পরিস্থিতেতেও সবাইকে নিয়ে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার কাজ করতে হয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার। কিন্তু নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে যে ‘চিরায়ত দৃশ্যে’র বর্ণনা জনাব মুনীর দিয়েছেন তার সাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আমার ৫টি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার মিল খুব সামান্যই। এরকম অনেকগুলো বিষয়ে জনাব মুনীরের লেখাটি চরম পক্ষপাতদুষ্ট, নির্বাচনের কাজে সরকারের অন্যান্য বিভাগের কৃতিত্ব খাটো করার অপচেষ্টা। বর্ণনা বাহুল্য যে, উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে প্রশাসনের হাতে গোণা কয়েকজনমাত্র কর্মকর্তা নির্বাচনের কাজে যুক্ত থাকেন। সারা দেশে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই দায়িত্বটি পালন করে থাকেন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষকগণ এবং পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা । সে সূত্রে সরকারের শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যগণ প্রতিটি নির্বাচনে উজ্জ্বল ভূমিকা রেখে আসছে। একই সাথে উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে কর্মরত অন্যান্য ক্যাডারের সদস্যগণও যার যার দায়িত্ব সুচারুভাবে সম্পন্ন করে থাকে বলেই একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হয়।


মন্তব্য

মাল্যবান এর ছবি

বোঝাই যাচ্ছে মাননীয় এডিসি সাহেব উচ্চাকাঙ্খী এবং তিনি পদস্থজনদের, সে রাজনৈতিক বা আমলাতান্ত্রিক হোক, কৃপাদৃষ্টিলাভে ততপর হয়েছেন। আলোচ্য লেখাটি তার একটি বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
আর প্রথমআলোর কথা নতুন করে বলার কী আছে? বিশেষ বিশেষ মহলের সাথে গাঁঠছড়া বেঁধে গান করে যাওয়াই যে সাংবাদিকতা তাই শিখতে হচ্ছে নতুন করে।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

...........প্রথম আলো না ছাপলে আসেন,এমনিতে আসতে দোষ কি?

---------------------------------------------------------

আমরা যারা শিখিনি চাষবাস,ফসলের গীত
গুলালিতে পাখি হত্যা

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

মাহবুবুল হক এর ছবি

ভাই, লেখা প্রকাশিত না হওয়ার কষ্ট যে কী তা আমি হাড়ে হাড়ে জানি। কিন্তু প্রত্রিকার কিছু কিছু বিষয় যে উপক্ষো করা যায় না তাই পোড় খাওয়া মুখেও বারবার ভুল করি।
তবে সচলায়তন আমাকে অনেক যন্ত্রণা থেকে উদ্ধার করেছে।
.................................................................................................................
কোথাও রয়েছে যেন অবিনশ্বর আলোড়ন:
কোনো এক অন্য পথে - কোন্ পথে নেই পরিচয়;
এ মাটির কোলে ছাড়া অন্য স্থানে নয়;
সেখানে মৃত্যুর আগে হয় না

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চ্রমোদ্ধকার

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এই লেখা পড়ে মনে হলো এটা না ছাপানোটা যুক্তিযুক্ত । পত্রিকায় কাজ করার প্রাগৈতিহাসিককালের অভিজ্ঞতা থেকে মতামত দেই যে এই লেখাটা আসলে " ছাপনযোগ্য " না ।

পরপর ৪টি লেখা ছাপা না হওয়ার পরে শুধু পত্রিকাকেই দোষ দেয়ার চেয়ে নিজের অবস্থানকেও মূল্যায়ন করলে আখেরে উপকৃত হবেন ।
প্রথম কথা হচ্ছে , মিজানুর রহমান খানের লেখার প্রতিক্রিয়ায় মুনীর চৌধুরী লেখা দিয়েছেন । জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে এই প্রাথমিক তর্ক তাই তাদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকাটাই শোভন , তারাই একে অন্যকে খন্ডন করুন , সেখানে আপনি বা আমি কোন লেখা দিলে , খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু না হলে সেটা ছাপা না হওয়াটাই স্বাভাবিক ।

আপনি যে অবস্থান নিয়েছেন সেটা হচ্ছে চরম অবস্থান ।
আপনার লেখা থেকে ছোট্ট দুয়েকটি উদাহরন দিচ্ছি ।

অথচ পরীক্ষার হলে নকল প্রতিরোধের কাজটি সম্পূর্ণভাবে হল পরিদর্শকের এখতিয়ার, যিনি একজন শিক্ষক। পরীক্ষায় নকল প্রতিরোধের নামে প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের অনাবশ্যক দৌড়-ঝাঁপ শিক্ষার্থী বা শিক্ষককে মনস্তাত্ত্বিকভাবে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয় যা আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে মানানসই নয়।

........... মূল আলোচনাটা ছিল যে ম্যাজিস্ট্রেটরা নকল প্রতিরোধে অবদান রাখেন । সেটা " আধুনিক শিক্ষার সাথে মানানসই কি না " সেটা ভিন্ন আলোচনা , আপনি এই দুটোকে গুলিয়ে ফেলছেন ।

ম্যাজিস্ট্রেটরা নকল প্রতিরোধে অবদান রাখেন না , এটা যুক্তি সহ উপস্থাপন না করলে এটা প্রকাশযোগ্য কিছু না । নকল প্রতিরোধের এখতিয়ার সম্পূর্ণভাবে শিক্ষকের হয়ে থাকলে , ম্যাজিস্ট্রেট কোন আইনের বলে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন ? আমাদের সরকার কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেটদেরকেও এখতিয়ার দেয় । কিন্তু আপনি এমন স্টেটমেন্ট দিচ্ছেন যাতে মনে হয় ম্যাজিস্ট্রেটরা সেখানে বেআইনিভাবে প্রবেশ করেন ।
আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে নকলে সহায়তা করার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষককেও বহিষ্কার করা হয় ।

কিন্তু নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে যে ‘চিরায়ত দৃশ্যে’র বর্ণনা জনাব মুনীর দিয়েছেন তার সাথে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আমার ৫টি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতার মিল খুব সামান্যই।

এধরনের স্টেটমেন্ট পত্রিকায় ছাপা হয় না যদি না আপনি আপনার ৫টি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা , স্থান ও সময় সহ বর্ণনা না করেন ।

-------
এই কমেন্টের উদ্দেশ্য আপনাকে কোনভাবেই আহত করা নয়, আপনার লেখার দোষত্রুটি খুঁজে বের করাও নয় । কমেন্ট করার উদ্দেশ্য একটাই । পত্রিকায় লেখা বিষয়ে আমার ক্ষুদ্র ধারনাগুলোকে শেয়ার করা ।

মাহবুবুল হক এর ছবি

পরপর নয় বিগত ৩/৪ বছরে বিভিন্ন ইস্যুতে ৪টি লেখা দিয়েছিলাম । তন্মধ্যে দুটি ছিল একেবারেই মৌলিক লেখা । আপনার কয়েকটি মন্তব্য সম্পর্কে আমার বক্তব্য শেয়ার করতে চাই --

জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে এই প্রাথমিক তর্ক তাই তাদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকাটাই শোভন , তারাই একে অন্যকে খন্ডন করুন

--বিষয়টি ছিল জাতীয় নির্বাচন । জনাব মুনীর সেখানে কেন ধান ভানতে শিবের গীত গাইলেন আর ‌'প্রথম আলো 'সেটি ফলাও করে ছাপলো আমিও বুঝলাম না। মুনীর সাহেব এই তর্কে কোন পক্ষ নন, তিনিও পাঠক , আমিও পাঠক। তিনি পাঠক মিজানুর রহমান খানের লেখার আর আমি মুনীর সাহেবের লেখার।

নকল প্রতিরোধের এখতিয়ার সম্পূর্ণভাবে শিক্ষকের হয়ে থাকলে , ম্যাজিস্ট্রেট কোন আইনের বলে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন ?

--পাবলিক এগ্জামিনেশন এ্যাক্ট এর আওতায় । কিন্তু পরীক্ষার হলে বা কেন্দ্রে একজন ম্যাজিস্ট্রেট সাকুল্যে ১০/১৫ মিনিট ব্যয় করতে পারেন। তাও অধিকাংশ কেন্দ্রেই প্রতিনিধি প্রেরিত হয় । কারণ জেলা বা উপজেলার অর্ধশতাধিক কমিটির সভাপতির এত সময় থাকার কথা নয়। পরীক্ষার হলে নকল ধরা এবং এর প্রেক্ষিতে বহিষ্কারসহ পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার কোন পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেটের অংশগ্রহণের আবশ্যকতা নেই , অন্তত আইন তাই বলে।

আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে নকলে সহায়তা করার জন্য প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষককেও বহিষ্কার করা হয় ।

--হ্যাঁ একাজটি ম্যাজিস্ট্রেটদেরই করতে হবে। কারণ প্রচলিত আইনে ইউ.এন.ও বা ডিসি হচ্ছেন জেলা/উপজেলার পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব। কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হবেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান।

এধরনের স্টেটমেন্ট পত্রিকায় ছাপা হয় না যদি না আপনি আপনার ৫টি নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা , স্থান ও সময় সহ বর্ণনা না করেন ।

--জনাব মুনীর কিন্তু তার বর্ণনায় এমনসব দাবি করেছেন যার তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে গেলে, যদি তার থাকেও, আমি নিশ্চিত , পুরো একটা গবেষণা গ্রন্থ হয়ে যাবে। প্রথম আলো সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে লেখাটা ছেপেছে বলে আমি মনে করি না। তা ছাড়া আমার পেশাগত পরিচয় দেয়ার পর ওই সামান্য ৫টি অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সন্দেহ থাকার কথা নয়।

.................................................................................................................
কোথাও রয়েছে যেন অবিনশ্বর আলোড়ন:
কোনো এক অন্য পথে - কোন্ পথে নেই পরিচয়;
এ মাটির কোলে ছাড়া অন্য স্থানে নয়;
সেখানে মৃত্যুর আগে হয় না

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

হেলাল এর ছবি

আমি বুঝলাম না জনাব মাহবুবুল হক কি কারনে প্রথম আলোর প্রতি ক্ষেপা। তার এই লেখাটা মহল্লার পত্রিকাতেও ছাপার যোগ্য নয়। অপরিনত বুদ্ধি দিয়ে আক্রমনাত্বক লেখাই আসে, যা কাউকে স্বস্তি দেয়না। আসা করি রাগ না করে সচেতন হবেন। আর আশা করব, সচলায়তনও তাদের সুনাম অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা করবে। সবাই কে ধন্যবাদ।

হিমু এর ছবি

আপনি নিজেই তো মাহবুবুল হককে "অপরিণত বুদ্ধি"র প্রসঙ্গ তুলে আক্রমণ করলেন। আপনার বক্তব্যটি আবার পড়ুন তো, দেখুন তো নিজের জন্যে খাটে কি না? আর আপনি কি কোন মহল্লার পত্রিকা সম্পাদনার সাথে যুক্ত ছিলেন? থাকলে আপনার অভিজ্ঞতার আলোকে ব্যাখ্যা করতে পারেন, কেন এই লেখা কোন মহল্লার পত্রিকাতেও প্রকাশের যোগ্য নয়। আর যদি সে অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে নিজের বক্তব্য আবার পড়ুন, বিশেষ করে "অপরিণত বুদ্ধি" সম্বলিত বাক্যটি।


হাঁটুপানির জলদস্যু

মাহবুবুল হক এর ছবি

আপনার মন্তব্য অত্যন্ত ইতিবাচকভাবেই দেখছি আমি। আমার লেখা হয়তো দৈনিকে প্রকাশোপোযোগী নয়, যা এতদিন আমার ধারণাতীত ছিল। কিন্তু ‌' অপরিণত বু্দ্ধি ' নিয়ে লিখি তা মানতে পারছি না। দুয়েকটি উদাহরণ দিলে উপকৃত হব।

.................................................................................................................
কোথাও রয়েছে যেন অবিনশ্বর আলোড়ন:
কোনো এক অন্য পথে - কোন্ পথে নেই পরিচয়;
এ মাটির কোলে ছাড়া অন্য স্থানে নয়;
সেখানে মৃত্যুর আগে হয় না

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।