চোখের সামনে সাদা কাগজ খুলে বসে আছি। বোতামে আঙুল। এক অদ্ভুত সংক্রান্তিতে কেটে যাচ্ছে সময়। বিষাদ আর আস্বাদের, জীবনের মধ্যে সন্নাস্যের, অভ্যাসের সাথে আচ্ছন্নতার সংক্রান্তি । কাল থেকে নিজকে খুব একা মনে হচ্ছে। জানি না কেন। কেন জানি না কোন আনন্দের উপলক্ষ হলেই আমার চারপাশে আততায়ীর মত বিষণ্নতাগুলো ঘুরঘুর করতে থাকে। এক ধরনের আত্মকুণ্ডলায়নের চক্রব্যুহে আমি আটকে গেছি মনে হচেছ। কিন্ত সেই বৃত্তের কেন্দ্রেও যেতে পারছি না, বৃত্ত ভেঙে বেরোতেও পারছি না। এক ঘোর লাগা কষ্টের ভেতর দিয়ে কুয়াশার পুরু স্তরের ভেতর দিয়ে অতলান্তিক জলরাশির গভীরতায় আমার চলাচল। হয়তো এটাও একটা ভ্রান্তি। আসলে মানুষের পুরো জীবনটাই একটা বিভ্রান্তির মধ্যে কেটে যায়। একটা ভ্রান্তি কাটতে না কাটতেই আরেকটা ভ্রান্তির মধ্যে পড়ি আমরা। একেই রবীন্দ্রনাথ তার অসাধারণ বাগভঙ্গিতে বলেছিলেন-মনুষ্য জীবন একটা জটিল ভ্রমের জাল। আর সেই ভ্রান্তি কিছুতেই ঘোচে না। যুক্তিশাস্ত্রের বহুবিধান অগ্রাহ্য করিয়া প্রবল প্রমাণকেও অবিশ্বাস করে দুই হাতে ঠেলে মিথ্যা আশাকে বুকে জড়িয়ে ধরে। আর সেই আশা যখন সকল বন্ধন ছিন্ন করে চলে যায় তখন চেতনা হয় এবং “ দ্বিতীয় ভ্রান্তিপাশে পড়িবার জন্য চিত্ত ব্যাকুল হইয়া ওঠে “। দ্বিতীয় ভ্রান্তিপাশে পড়িবার জন্য চিত্ত ব্যাকুল হইয়া ওঠে.... দ্বিতীয় ভ্রান্তিপাশ.... কি জানি হয়তো দ্বিতীয় কোন ভ্রান্তি তৈরি হয়ে আছে আমার জন্য। মাঝে মাঝে কাব্য করে বলি, সংসার আর আমার সাথে সম্পর্ক হল হাতুড়ি আর পেরেকের। শত চেষ্টা করেও সম্পর্কটাকে উল্টে দিতে পারবো না। এভাবেই হয়তো মেনে নেয়ার দর্শন তৈরি হয়। মানিয়ে নেয়াও বলে কেউ। যেভাবেই বলি না কেন- মনে নেয়া তো আর নয় ! এডজাস্ট করা.... জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে শুধু এডজাস্ট আর এডজাস্ট, প্রথমে ভ্রান্তিপাশ পরেও ভ্রান্তিপাশ মাঝখানে ঐ ভয়াবহ শব্দ এডজাস্ট। সে এক ভিন্ন সংগ্রাম। আজ আর লিখতে ভাল্লাগছেনা।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন