জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি (পাস) পরীক্ষার বাংলা (আবশ্যিক) প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্ন--
১০। বাংলায় অনুবাদ কর ঃ-
Rabindranath Tagore won the Noble prize in 1913. He won this prize for the English translation of the `Gitanjoli'. This excellent translation made by himself. There were 103 songs in the English Gitanjoli. Rabindranath Tagore made Bengali literature well-known in the world literature.
মাত্র কয়েকটি বাক্যের এই অনুচ্ছেদে ইংরেজির ভাষাগত দূর্বলতা যেমন আছে তেমনি আছে তথ্যগত ভুল। রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলির জন্য নোবেল পেয়েছিলেন কথাটি সর্বজনবিদিত হলেও প্রকৃত তথ্য হল 'সং অফারিংস' (বাংলা নাম গীতাঞ্জলি) নামের যে গ্রন্হের জন্য তিনি নোবেল পেয়েছিলেন তাতে বাংলা গীতাঞ্জলি থেকে ৫৩ টি কবিতার অনুবাদ ছিল। বাকি ৫০ টি ছিল অন্য ০৯টি কাব্যগ্রন্হের। কিন্তু উপরের ২য় বাক্যটির অর্থ হয়, গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ করার জন্য তিনি পুরস্কার লাভ করেন। এর মর্মার্থ বাংলাভাষীদের বুঝতে অসুবিধা না হলেও বিভাষীদের পক্ষে বোঝা মুশকিল। ৩য় বাক্যটি তো সরাসরি ভুল, শিথিল ইংরেজিও বটে। হওয়া উচিত-tUheinstt
This excellent translation was made by himself.
উপরন্তু এমন বাক্য প্রশ্ন জাগায়, গীতাঞ্জলি রচনার জন্য তিনি নোবেল পেয়েছিলেন নাকি অনুবাদের জন্য ? তাছাড়া 'বাংলা' শব্দের ইংরেজিতে প্রতিবর্ণীকরণ হয়, ইংরেজি হয় না। অর্থাৎ বাংলাanglaকে
Bangla ই বলতে হবে
একইভাবে বাঙালি কখনও বেঙ্গলি হয় না। এসব শব্দ ক্রমশ পরিত্যাজ্য।
উপরের ইংরেজি অনুচ্ছেদটি তাই নানাভাবে ত্রুটিপূর্ণ। আশা করি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রশ্নপত্রের ব্যাপারে আরো সতর্ক হবেন।
মন্তব্য
বাংলা সাহিত্যের ইংরেজী বেঙ্গলি লিটারেচার হবে না কেন?
সাহিত্যের ইংরেজি 'লিটারেচার' কিন্তু 'বাংলা' শব্দটি 'বাংলা'-ই এটার ইংরেজি হয় না। ইংরেজিভাষীরা বাংলাকে bbeWnmবেঙ্গলি নাম দিয়েছে। যেমন ঢাকাকে করেছিল Dacca,
তারা আমাদেরকে নিজেদের শব্দও তাদের মত করে বলতে শিখিয়েছিল।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
মোদ্দা কথা Proper noun-এর transliteration হয় , translation হয় না। Bengali 'বাংলা'-র translation-ও না, transliteration-ও না -- স্রেফ বিকৃতি।
****************************************
অভিধান অনুসারে তো বাংলার ট্রান্সলেশন বেঙ্গলি।
তার কারন ঐসব অভিধানকাররা ব্রিটিশদের আনোণ্ডোবাজারীয় বিকৃতির আসল মর্ম না বুঝেই তার আত্নসম্মানহীণ দাসসুলভ অনুকরন করে যাচ্ছেন এখনো। হাতির মতই এই অদৃশ্য মানসিক বৃত্ত থেকে বেরুতে পারছেন না। এটাও এক ধরনের বিকৃতি। সাধারনত এপিং-এর এই বিকৃতি উপনিবেশের ম্যাকোলাইড শিক্ষিত বা এলিট শ্রেণির মধ্যে দেখা যায়। উপনিবেশের বিলুপ্তি ঘটার পরেও এই বিকৃতি ছুটতে বেশ সময় লাগে। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এটা ছুটিয়ে দেয়া। শুভস্য শীঘ্রম!
****************************************
বাংলা একাডেমীর অভিধানেও আছে। তাছাড়া লেখক একাধিক স্থানে ইংরেজি (ইংলিশ এর বাংলা) বলেছেন, এটা কি স্ববিরোধীতা নয়?
১. পোস্ট লেখকের কোন রকম কথিত 'স্ববিরোধীতাকে' ডিফেন্ড বা জাস্টিফাই করার দায়িত্ব আমার নয়। প্রশ্নটা ওনাকে করলেই বরং সঙ্গত হবে।
২. বাকি অংশের উত্তর আপনার প্রতিমন্তব্যেই আছে।
****************************************
এইসব বাংলা শব্দের অপ্রয়োজনীয় ইংরেজীকরণ যেমন 'ঢাকা'কে 'ডাক্কা', 'ঠাকুর'কে 'ট্যাগোর' আমার কাছে আনন্দবাজারের ফাত্রামির মত মনে হয়।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
"Noble prize" নাকি "Nobel prize" ? এটা আপনার টাইপো, নাকি মূল প্রশ্নেই এরকম ছিল?!
****************************************
দুঃখিত।এটা আমারই ভুল। শব্দটি
Nobel
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
দেখেন তো স্যার আমার অনুবাদটি সঠিক হইল কি না
১৯১৩ সালে (অনেক লড়াই করে) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার জয় করে ফেলেন। তিনি (শুধুমাত্র) গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের জোরে এই পুরস্কার কব্জা করতে পারেন। (অবিশ্বাস্য হলেও সত্য) এই অসাধারণ অনুবাদকর্মটি (কোনো মাস্টর কিংবা ডিকশনারির সাহায্য ছাড়া) তিনি একেবারে একা একাই করতে সক্ষম হয়েছিলেন (বি:দ্র: গানের অনুবাদ কিন্তু বিয়ের কাবিন অনুবাদের থেকে কঠিন) ইংরেজি গীতাঞ্জলিতে মোটমাট ১০৩টা গান ছিল (অত গানের অনুবাদ এর আগে আর কেউ করতে পারে নাই)। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব সাহিত্যের ভেতরে (সান্ধাইয়া) ভালোভাবে পরিচিত বানিয়ে দেন (খালি গানের অনুবাদ দেখেই বাপ বাপ করে নোবেল পরাভূত হলো। ইভা রহমানের মতো গাইলে তো নিজের ডিনামাইট খাইয়া নোবেলরে আত্মহত্যা করতে হতো)
ইস! আপনি আগে গীতাঞ্জলির অনুবাদ করলে আপনাকেই নোবেল দিত
আপনি ৫-এ ০ পাইছেন। মানে ফেল । তবে ব্রাকেটে যা লিখছেন তার জন্য বিশেষ বিবেচনায় উত্তীর্ণ।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
এইটা ভালইসে।
_____________________
Give Her Freedom!
এছাড়া রবীbন্দ্রনাথ লিখেছিলেন
Gitanjali ,
The Gitanjali নয়। এটাও বড় ভুল।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
ডিগ্রী (পাস) পরীক্ষার প্রশ্নটাই পাস নাম্বার পায় না
শুধু ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। সব পরীক্ষার প্রশ্ন এখন গাইড বই নির্ভর।শিক্ষকরা এখন ব্যবসাতে ব্যস্ত। বিসিএস থেকে শুরু করে কোন পরীক্ষায় এখন যথেষ্ট চিন্তা ভাবনা করে করা হচ্ছেনা। তা নাহলে কেও বিসিএস এর জন্য কোচিং করতনা। ৫/১০ বছর আগে কেও কল্পনাও করতনা যে বিসিএসের জন্য কোচিং করতে হয়।
এই হল অবস্থা
ডাকঘর | ছবিঘর
সং অফারিংস-এ গীতাঞ্জলি ছাড়াও যে অন্যান্য কাব্যগ্রনহের কবিতা ছিলো সেটা জানতাম না।
রবীন্দ্রনাথ 'গীতাঞ্জলির' ইংরেজি ভার্সনের জন্যই তো নোবেল পেয়েছিলেন, নয় কি?
Bangla/Bengali দু'টোই তো প্রচলিত। Bengali লিখলে অশুদ্ধ হবে কেনো বুঝতে পারলাম না। আমার স্পেলচেকার বরং Bangla লিখলেই অশুদ্ধ দেখাচ্ছে!
পুনশ্চঃ বেঙ্গল/বেঙ্গলী যদি অশুদ্ধ হয় 'রয়েল বেঙ্গল টাইগারকে' কী ডাকব আমরা তাহলে? রয়েল বাংলা টাইগার?
লেখক নিজেই ইংলিশ কে লিখেছেন ইংরেজী!
!!!!!!!!!!!!!!!!
আমরা 'গ্লাস'কে 'গেলাস' বলি, 'টেবল'কে 'টেবিল' বলি। কারণ শব্দগুলো ইংরেজি এবং আমাদের ধ্বনিতাত্ত্বিক শৃঙ্খলা রেখে সৃষ্টি হয়নি।ফলে বাংলা ভাষায় এর আত্মীকরণ একটু বিকৃত হওয়াই বিজ্ঞানসম্মত। গ্রীকরা টেলিফোন শব্দটি উচ্চারণ করে 'তেলিফোনোঁ' বলে। কারণ শব্দটি তাদের নিজস্ব কিন্তু ল্যাটিনে তা গৃহিত হয়েছে 'টেলিফোন' হিসেবে। ৗপনিবেশিক মনস্তত্ব ছাড়াও আমি যা বোঝাতে চাইছি তার সোজা স্যাপটা মানে দাঁড়ায়, আমাদের নিজেদের শব্দ আমরা কেন বিকৃত বা পরিবর্তিত করবো ? কিন্তু বিদেশি শব্দকে আমার ভাষায় ঢুকতে হলে আমাদের ধ্বনিতাত্ত্বিক পরিবর্তন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই আসতে হবে। তখনই সেই শব্দগুলো আমাদের মত শোনাবে। এমন বহু শব্দ বাংলায় আছে যেগুলো বিদেশি হলেও এখন আর চেনার উপায় নেই। 'কোচিং' শব্দটি যখন আমরা যখন ইংরেজি ভাষায় ব্যবহার করি তখন তার উচ্চারণের শুদ্ধতা রাখা বাঞ্ছনীয় কিন্তু সেটি যখন আমাদের কথ্য ভাষায় ব্যবহার হচ্ছে তখন তা বাংলা ভাষার রীতি মেনেই হওয়া উচিত। এসব ক্ষেত্রে যারা শুদ্ধ উচ্চারণের নসিহত দেন তাদেরকে ফ্রেঞ্চ বা জাপানিদের ইংরেজি জ্ঞানের উদাহরণ দিলেই যথেষ্ট হবে।
আমি বলেছিলাম 'বাংলা' শব্দটির ইংরেজি হয় না, এটি আসলে একটি প্রচলিত ভুল। 'বাংলা' ভাষা এবং 'বাঙালি' জাতি এই শব্দদুটির ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব ভাষার শব্দই লাগসই। কিন্তু ঐতিহাসিক কারণে হয়তো 'বেঙ্গল' শব্দটি পরিত্যাগ করা যাবে না। যেমন আমরা কক্সবাজার পরিবর্তন করে 'দরিয়ানগর' এ ফিরতে পারছি না । যুক্তি দিয়ে ভাষার অনেক কিছুই সমাধান করা যায় না কারণ ভাষা পরিবর্তনশীল এবং স্বেচ্ছাচারী।
--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।
নতুন মন্তব্য করুন