এস আই আলম কি পুলিশ বাহিনীর জন্য অপরিহার্য ?

মাহবুবুল হক এর ছবি
লিখেছেন মাহবুবুল হক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৫/০৩/২০১২ - ৯:৩৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কাল থেকে মনটা ফুরফুরে ছিল বঙ্গোপসাগরের ওপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার খবরে। আজ পত্রিকার প্রথম পাতায় এই বিজয়ের খবর বেরিয়েছে লিড নিউজ এ। কিন্তু এস আই আলম, মানে পুলিশের সেই ওসি , সব আনন্দে জল ঢেলে দিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কাদেরকে পাশবিক নির্যাতন, মিথ্যা মামলা হুমকি, তিরস্কার, গালাগালি, মানসিক নিপীড়ন কি করেনি সে ? প্রমানিত হল সবকিছু, কাদের দীর্ঘদিন হাসপাতালে কাটালো, অসহ্য দৈহিক আর মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে দিনের পর দিন রাষ্ট্রের কাছে সুবিচার চাইল । গণমাধ্যম , নাগরিক বিবেক জেগে উঠল বলেই কেবল অপরাধে পারঙ্গম, দুর্বৃত্ত তোষক, পরাক্রমশালি পুলিশকে অপরাধ স্বীকার করতে হল। অথচ আদালতের কি অবাক বিচার ! তাকে মাত্র ১০০০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হল ! কাদেরের ওপর যে অত্যাচার হয়েছে তার নাম হয়ত ধর্ষণ নয়, তবে পুরুষ তান্ত্রিক কোনও শব্দ থাকলে তা সম্ভ্রমহানির সমকক্ষই হত।

দেশ জুড়ে যে পুলিশের বিরুদ্ধে ধিক্কার আর ঘৃণা উচ্চারিত হল তাকে পুলিশ বাহিনীতে রাখাটা কি খুব দরকার ছিল ? ইয়াসমিনকে ধর্ষণকারী পুলিশদের কি ফাঁসি হয়নি ? তাতে কি পুলিশ বাহিনীর লাভ না ক্ষতি হয়েছে ?
এস আই আলম কি পুলিশ বাহিনীর জন্য অপরিহার্য ? এর জবাব কে দেবে ?

এ ঘটনা ও রায় থেকে পুলিশ বাহিনীর আলম শ্রেণির সদস্যরা নিশ্চিন্ত হল যে, যা-ই করি না কেন আদালত তো আছেই, চাকরি যাবে না। কাদেরের কষ্ট আরও বারল কিনা জানা হল না, তবে এই আলম যে উর্দি পড়ে আবার কাদেরের ক্ষতি করার রাস্তা খুজবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এবার হয়ত কোনও প্রমান রাখবে না, আদালত তাকে উরদি ব্যবহার করে সাবধানে অপরাধ করার সুযোগ করে দিয়েছে।


মন্তব্য

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

ঠিক বুঝলাম না, এটা কী হল!
গুরুতর অন্যয়ের যদি এত লঘু শাস্তি হয় তাহলে আইন-আদালতের উপর শ্রদ্ধা থাকবে কী করে!
অন্যয়ের প্রতিকারই বা হবে কী করে?

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আমাদের এখানে অনেক কিছুই ঘটে যেটা হয়তো অন্যত্র একটু আশ্চর্যজনকই মনে হতে পাবে। এই আলোমের বিচারের ক্ষেত্রেও এটা ঘটেছে। এটা কেনো হলো সে বিষয়ে অনেকরকম মতামত থাকতে পারে। তবে সম্ভবত যে বিষয়টাতে কোনও দ্বিমত থাকবেনা তা হলো এই ঘটনাটির দুইরকম ইমপ্যাক্ট হবে-

১। সমস্ত বদ পুলিসগুলো আলোমকে তাদের আইডল বানাবে এবং নব্য আলোম হতে চাইবে। এবং কিভাবে সহজে সফল আলোম হওয়া যায়, সেই বিষয়ে গবেষণা শুরু করে দেবে।

২। ভবিষ্যতে আবার যদি এমন কোনও দূর্ঘটনা ঘটে, এবং সেই সময়ের আলোম যদি দোষী সাব্যাস্তও হয়, তবে হয়তো অর্ডার অফ প্রিসিডেন্সে সেই আলোমকে আদালত ১,৫০০-১,৬০০ বা ২,০০০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেবে। এবং এই অর্ডার অফ প্রিসিডেন্স যুগ যুগ ধরে আলোমদের আইনজীবিরা ব্যবহার করে যাবে। এই ইমপ্যাক্টটা হলো সবথেকে ভয়াবহ।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

আলমকে মাত্র ১০০০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেয়া হল!

জাস্ট বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।
বছরখানেক আগে একইভাবে রুবেলের খুনি পুলিশকেও খালাস দেয় আদালত।
আমাদের শত্রু আমরা নিজেরাই।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

যারা খালাস দেয়, হ্যারা জানে যে ওগোর হাতে ৫৪ বইলা একটা জিনিস আছে। কবে না আবার জজের পোলারে ধইরা সন্দেহভাজন ছিনতাইকারী বানাইয়া নইলে পকেটে দুইটা ডাইলের বোতল ভইরা দিয়া চালান দিয়া দ্যায়!

আল্লার কি কুদরত, লাঠির মইধ্যে শরবত।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ঠিক কথা বলেছেন। আমাদের দেশের পুলিশদের আসল চরিত্র এটাই।
রক্ষক যখন ভক্ষক হয়, তখন সে দেশের কি অবস্হা হয় তার উদাহরণ তো দেখতেই পাচ্ছি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।