এক.
শয়নকাঠে দুর্বোধ্য সংকেত তুলে বলেছিলে
‘ওরা আসছে। লাল গাড়ি নিয়ে।’
সে-ভাষা যাদের বোঝার কথা তারা ঠিক
তোমাকে চিনে নেবে, তুলে নেবে এঘর থেকে
অথচ দৃশ্যমান শুধু স্তব্ধতার আততায়ী সাজ
একটি লাল গাড়িতে চড়ে অপহৃত হওয়ার স্বপ্ন ছিলো তোমার
যেখানে তোমাকে অভ্যর্থনা জানাবে কড়া হাভানা চুরুট, শ্যাম্পেন হাতে সিন্ডারেলা
দেবতা তোমাকে বর দিলেন
দেবলোকে উচ্চারিত অভিলাষই ধর্ম এই নিয়তি মেনে
তুমি জতুগৃহের ভস্মীভূত নিষাদ পুত্র হলে।
দুই.
আমাকে বন্দরের জেটিতে তুমি বারবার বলেছিলে,
ওদেরকে যেন ফিরিয়ে না দেই
কারণ ওরা ফিরতে জানে না
আমার সতর্ক চোখ বারবার ঘুরে দেখে
কোথায় কারা দাঁড়িয়ে আছে আততায়ীর মত।
ওদের চিনতে হবে, নতুবা ফেরানো যাবে না তোমাকে।
তোমার দুচোখ ঠিকরে পড়ছে ব্যাকুলতার দীর্ঘশ্বাস
তোমার কোনো শত্রু ছিলো না-
অথচ হেঁসেলে ছোরা হাতে তুমি এক
কল্পিত শত্রুর সাথে লড়াইয়ে নেমেছিলে।
যাদের জন্য তুমি দূর সমুদ্র সৈকতে অপেক্ষায় ছিলে
তারা চেয়েছিলো কপর্দকহীন যুবকের স্বপ্ন
তুমি সর্বস্ব তুলে দিলে তাদের হাতে
তারা ফিরিয়ে দিলো পৌনপুনিক স্বপ্নের দুষ্টচক্র।
তুমি তাতে ঘুরতে ঘুরতে বুনে চললে অনিঃশেষ ঊর্ণজাল আর
কখন যেন নিজের উদর গ্রাস করতে থাকলে নিঃশব্দে।
তিন.
‘পাথরে কখনো জমবে না কাদা,
কাদা মানে মাটি, কাদা মানে জল’ -বলতে বলতে
আমরা ভীষণ বৃষ্টির স্বপ্নে ডুবে থাকতাম
প্রগাঢ় কাদায় লুটোপুটি খাওয়ার ইচ্ছে ছিল আমাদের
অথচ আমরা হারিয়েছিলাম এক পাথরের দুঃস্বপ্নে
তুমি ডিপফ্রিজ থেকে আইস কিউব ভেঙে
বরফের নিয়তির কথা শোনাতে আর বলতে
‘পাথরে কখনো জমবে না কাদা,
কাদা মানে মাটি, কাদা মানে জল’
অথচ সারা গায়ে চিরস্থায়ী কাদার প্রলেপ নিয়ে
তুমি মগ্ন হলে স্মৃতি আর পাথরের সংঘর্ষে
অবিরাম স্ফুলিঙ্গ এখন তোমার স্বপ্ন।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন