নন্দিত নগরে - পর্ব ৫ (সিয়াটল)

মইনুল রাজু এর ছবি
লিখেছেন মইনুল রাজু [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২০/১২/২০১৩ - ১০:১০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমেরিকার একটা শহরও যদি নিজেকে প্রকৃতির রাঙা রাজকন্যা বলে দাবী করতে পারে, তবে সে-শহরের নাম হবে ‘সিয়াটল’। বাস্তবের রাজাধিরাজরা নিজ রাজত্বের চারদিকে সীমানা প্রাচীর গড়ে বহিরাগতদের জানিয়ে দেয়, “হে পথিক! ক্ষান্ত হও! এতটুকুই তোমার সীমানা!” আর, সিয়াটল শহরের চারপাশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপ্রাচীর আগন্তুক দেখে ঘোষণা করে, “হে পথিক! সৌন্দর্য রাজ্যে স্বাগতম তোমায়! বিচরণ কর যেথায় খুশি!”

কি নেই, এই শহর আর তার চারপাশে! সমুদ্র, পর্বত, ঝর্ণা; অরণ্য, হ্রদ, রহস্যভরা জনপদ। প্রকৃতির এত এত সব মহৎ আয়োজনের মাঝে গড়ে উঠা এই শহরও প্রকৃতির মতই নান্দনিক, প্রশান্তির মত সাবলীল। একদা, সাতটা পাহাড়কে কেন্দ্র করে যেমন করে গড়ে উঠেছিলো প্রাচীন নগরী রোম, ঠিক তেমন করে আজ গড়ে উঠেছে আধুনিক সাত পাহাড়ের শহর সিয়াটল। পাহাড়গুলোর মধ্যে ‘ক্যাপিটল হিল’ শহরের সবচেয়ে জমজমাট এবং প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর এলাকা। অবশ্য, দুষ্টু লোকেরা বলে থাকেন, এত প্রাণপ্রাচুর্যের কারণ ভিন্নধারার, প্রথাবিরুদ্ধ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং বিশেষ করে সমকামি সম্প্রদায়ের সরব উপস্থিতি। আর, কে না জানে, দুষ্টু লোকেরাই যুগ যুগ ধরে সঠিক কথাগুলো বলে এসেছে।

ছবিঃ সিয়াটল শহর, রাত ও দিনে।

প্রথম যখন এই শহরে আসি, যেদিকে যাই শুধু ‘সাউন্ড’ শব্দটাই শুনতে পাই। বাস সার্ভিসে নাম সাউন্ড, গ্যাস-বিদ্যুৎ সার্ভিসের নাম সাউন্ড। নাটোরে যেমনটা পোলট্রি ফার্ম থেকে শুরু করে ব্রিকফিল্ড সব কিছুর নাম ‘বনলতা’, তেমনটা সিয়াটলে সব কিছুর নাম ‘সাউন্ড’ দিয়ে। আরো নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে 'পিউজিট সাউন্ড'। এমনকি স্থানীয় ফুটবল দলের নামই হলো 'সাউন্ডারস'। ভেবেই পাচ্ছিলাম না ঘটনাটা কি। কে আর জানতো এই ‘সাউন্ড’ শব্দটারই একটা অর্থ ‘সমুদ্রপথ’, দুই স্থলভূমির মাঝে সৃষ্ট হওয়া জলের রাস্তা।

ছবিঃ সেঞ্চুরি লিঙ্ক ফিল্ড, খেলা চলছে সিয়াটল সাউন্ডারস এবং এফসি ডালাস এর মাঝে।

ওদিকে, ‘পিউজিট’ শব্দটা নেয়া হয়েছে ক্যাপ্টেন জর্জ ভ্যাঙ্কুভারের সহঅভিযাত্রী নেভি অফিসার পিটার পিউজিটের নাম থেকে। ব্রিটিশ অভিযাত্রী ভ্যাঙ্কুভার তার ১৭৯১ সালে শুরু করা সমুদ্র অভিযানের সময় আমেরিকার উত্তর পশ্চিম উপকূলের বেশ কিছু অংশ পরিভ্রমণ করেন। তাই, এই অঞ্চলের বেশ কিছু জায়গা এবং নামকরা প্রায় সব পর্বতচূড়ার নামই ভ্যাঙ্কুভার সাহেবের বন্ধু-বান্ধব কিংবা সহযাত্রীদের নামে নামকরণকৃত। ক্যাপ্টেন ভ্যাঙ্কুভারের নামেই নামকরণ করা হয় সিয়াটল শহরের অদূরে অবস্থিত কানাডিয়ান শহর ভ্যাঙ্কুভারের।

ছবিঃ শহরের বাহনগুলি। সব থেকে নীচের ছবিটায় উভয়চর বাহন, যেটি জল ও স্থল দুই জায়গাতেই চলতে পারে। স্থানীয় নাম Duck।

ছবিঃ স্পেইস নিডল্‌ চত্ত্বর থেকে তোলা।

ছবিঃ ওয়াশিংটন স্টেইটের প্রথম কার ওয়াশ স্টেশান।

আমেরিকার ওয়াশিংটন স্টেইটের বেশ কয়েকটি শহর গড়ে উঠেছে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে বিক্ষিপ্ত হয়ে তৈরি হওয়া এই ‘পিউজিট সাউন্ড’-এর তীর ঘেঁষে। সিয়াটল সেই শহর গুলির মধ্যে একটি। এক পিউজিট সাউন্ডই এই শহরগুলোর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। পিউজিট সাউন্ডে নৌকা ভাসালে, চোখের সামনে ভেসে উঠে ঝকঝকে শহর সিয়াটল; দেখা যায়, আকাশের বুকে খোঁচা মারার অভিপ্রায়ে, অনবরত আকাশমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ‘স্পেইস নিডল্’। ঢাকার যেমন শাপলা চত্ত্বর, সিয়াটলের তেমন স্পেইস নিডল্, শহরের আইকন।

ছবিঃ পিউজিট সাউন্ডে, ফেরি থেকে তোলা, শহরের স্কাই লাইনে থাকা বাম পাশের লম্বা টাওয়ারটাই স্পেইস নিডল্‌।

ছবিঃ পিউজিট সাউন্ডে, ফেরি থেকে তোলা ছবি।

তবে, রৌদ্রজ্জ্বল দিনে, চারপাশের সবকিছুকে ম্লান করে দিয়ে, সদর্পে আপন মহিমার জানান দিয়ে, ‘চির উন্নত মম শির’ বলে, সিয়াটলের আকাশে ভেসে থাকে দৈত্যাকৃতির পর্বত ‘মাউন্ট রেইনিয়ার’। আকৃতিতে ‘ডেইমন’ হলে কি হবে, প্রকৃতিতে কিন্তু ‘এঞ্জেল’ সেই পর্বত। অসংখ্য উদ্ভিদ আর প্রাণিবৈচিত্রের উৎসস্থল এই রূপবতী পর্বত মাউন্ট রেইনিয়ার বদলে দিয়েছে চারপাশের জনপদ আর সেই জনপদের অধিবাসী সহস্র মানুষের জীবনধারা।

ছবিঃ রূপবতী পর্বত মাউন্ট রেইনিয়ার এবং আশপাশ।

সিয়াটল শহরের কথা বলতে গিয়ে ‘স্টারবাকস্’ কফির কথা না বলা, মিশরের গল্প করতে গিয়ে পিরামিডের কথা না বলার মতনই। আমেরিকার বিখ্যাত কফি চেইনশপ স্টারবাকস্, ১৯৭১ সালে এই সিয়াটল শহরেই সর্বপ্রথম তাদের কার্যক্রম শুরু করে। সারা বিশ্বে এদের যত এমপ্লয়ি আছে, গোটা গৃনল্যান্ডে তার অর্ধেক মানুষও নেই। সারা বিশ্বে এত বেশি সুপরিচিত যে, এক পর্যায়ে তারা কাপের গায়ে আর কোম্পানির নাম না লেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। লোগো দেখেই মানুষ স্টারবাকস্ বুঝতে পারবে। তবে, শুরুর দিকে তারা যে লোগো ব্যবহার করেছিলো, বিভিন্ন সময়ে সেটাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আবারো, দুষ্টু লোকদের কথায় ফিরে যেতে হয়। তারা বলে, স্টারবাকস্ এর প্রথম দিককার লোগো ছিলো কিছুটা অশ্লীল, পরবর্তীতে জনপ্রিয় হবার পর কোম্পানি সেই লোগো নিয়ে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে, যার কারণে লোগো পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় স্টারবাকস্। কিন্তু, যে স্টোর দিয়ে স্টারবাকস্ ব্যবসা শুরু করে, সেটি এখনো আছে সিয়াটল শহরে এবং গিয়ে দেখি, ঐতিহ্যগত কারণে এখনো সেখানে ব্যবহার করা হয় সেই প্রথমদিককার স্টারবাকস্ লোগো।

ছবিঃ স্টারবাকস্ এর আগের লোগো (বামে) এবং বর্তমান লোগো (ডানে)।

ছবিঃ প্রথম স্টারবাকস্ স্টোর।

ঐতিহ্যবাহী ‘স্টারবাকস্’ স্টোরটা যেখানটাতে অবস্থিত, সেখানটার (ওয়াটার ফ্রন্ট) 'পাইক প্লেইস মার্কেট' আবার আমেরিকার অন্যতম প্রাচীন এক 'ফার্মারস্ মার্কেট'। ফার্মারস্ মার্কেটগুলো কিছুটা আমাদের দেশের হাটের মত, তবে, শহুরে হাট। ছোট ছোট ফার্মারস্ কিংবা গৃহস্থরা তাদের খামারজাত পণ্য এনে বিক্রি করে এই ফার্মারস্ মার্কেটে। ক্রেতারাও আসেন একেবারে তরতাজা ফলমূল, মাছ-তরি-তরকারি কিনবার জন্য। মার্কেটের বিশেষত্ব হলো, বিক্রেতারা সেখানে দৈনিক ভিত্তিতে স্টল ভাড়া নিতে পারেন, অন্যদিকে পুরো মার্কেটের মোটোই হচ্ছে ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে- ‘মিট দ্যা প্রোডিউসার’ অর্থ্যাৎ পণ্য কিনুন এবং সাথে সাথে সে ব্যাক্তিটিকেও দেখুন, যার বাড়ীতে অথবা যার খামারে উৎপাদিত হয়েছে সে পণ্য।

ছবিঃ ফার্মারস্‌ মার্কেট।

এবার একজন কবি এবং দার্শনিকের কথা বলি। নাম 'ব্রুস লি'। হ্যাঁ, একটু অবাক হবার মতনই ব্যাপার। সারা পৃথিবীতে যিনি পরিচিত মার্শাল আর্ট এর জন্য, সেই ব্রুস লি দর্শনের ছাত্র ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনে। নিজ দর্শনের উপর ভিত্তি করে রচনা করেছেন কাব্য। ওদিকে, তার অভিনেতা পরিচয়ের কথাতো বাদই রাখলাম। হংকংয়ীয় বংশোদ্ভুত এই বিশ্বখ্যাত মার্শাল আর্টিস্ট আমেরিকার স্যান ফ্র্যান্সিসকো শহরে জন্মগ্রহণের কিছুদিন পর, পরিবারের সাথে ফিরে যান হংকংয়ে। পরবর্তীতে ব্যাপক পরিমাণে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় জড়িয়ে পড়ার কারণে, আঠারো বছর বয়সে, তার পিতা তাকে মাত্র ১০০ ডলার পকেটে দিয়ে পাঠিয়ে দেন আমেরিকায়। একসময় পড়াশোনার উদ্দেশ্য সিয়াটলে বসবাস করতে শুরু করা ব্রুস লিকে তার মৃত্যুর পর সমাহিত করা হয় সিয়াটল শহরেই। যে সমাধিস্থলে তাকে সমাহিত করা হয় সেখানে গিয়ে দেখি, সত্তর ভাগ মানুষের নেইম প্লেইটে লেখা নামই হলো ‘লি’। সেখানে এমন কেউ উপস্থিতও নেই, যাকে জিজ্ঞেস করতে পারি সমাধিস্থলটি কোথায়। একটা কাপল অবশ্য কবরস্থানে বসে এমন সৃষ্টিছাড়া প্রেম করা শুরু করলো যে, বেরসিকের মত আর জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হলো না। অন্যদিকে, জায়গাটা এত বড় যে একটা একটা করে নেইম প্লেইট পড়ে খুঁজতে গেলে 'বিশ লক্ষ লোকের বাইশ বছর' লাগার মত অবস্থা হয়ে যাবে। অবশেষে, উদ্দেশ্যহীণভাবে ঘুরতে ঘুরতে একটা জায়গা খানিকটা আলাদা করে চোখে পড়লো। সৌভাগ্যক্রমে সেটিই ছিলো ব্রুস লি’র সমাধিস্থল। সেখানে নিজ ছেলের পাশে শায়িত আছেন কিংবদন্তির এই শিল্পী।

ছবিঃ ব্রুস লি'র সমাধিস্থল।

সিয়াটল শহরকে নিয়ে মজা করে বলা হয়ে থাকে যে, এই শহরে প্রতি চারজন মানুষের একজন মাইক্রোসফট্, অ্যামাজন কিংবা বোয়িং কোম্পানিতে কাজ করে থাকে। এই জায়ান্ট কোম্পানিগুলোর প্রধান শাখা সিয়াটল শহরের আশেপাশেই অবস্থিত, যেখানে কর্মরত আছেন অজস্র মানুষ। বস্তুত, সত্যিকারের জায়ান্ট কোম্পানি আসলে কি, সেটা বুঝতে পারা যায় মাইক্রোসফট ক্যাম্পাসে গেলে। সারা বিশ্বজুড়ে কর্মরত এই কোম্পানির এক লক্ষ এমপ্লয়ির মাঝে, তেতাল্লিশ হাজারই কাজ করেন এই পিউজিট সাউন্ডের আশেপাশে অবস্থিত শতাধিক ভবন নিয়ে গড়ে উঠা ক্যাম্পাসগুলোতে। দুই শিফটে তাদের সাতশো জন ড্রাইভার কর্মরত থাকেন শুধু এমপ্লয়িদেরকে ক্যাম্পাসের এক ভবন থেকে অন্য ভবনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। অনেকে মজা করে বলে থাকেন, মাইক্রোসফট্‌ যদি আইটি বিজনেস ছেড়েও দেয়, তাহলেও, শুধু রিয়েল স্টেইট আর অ্যাপার্টমেন্ট বিজনেস করেই মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করতে পারবে।

ছবিঃ আমি যে সেখানে গেছি তার প্রমাণ। দেঁতো হাসি

মাইক্রোসফট্-এ কাজ করা বাংলাদেশি ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যা শতাধিক। অ্যামাজন কিংবা বোয়িংয়েও কাজ করেন অনেকেই। তাছাড়া, সিয়াটল শহরের পাশেই থাকা ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনে আছেন বেশ কিছু বাংলাদেশী স্টুডেন্ট। অন্যান্য, প্রতিষ্ঠান এবং কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত বাংলাদেশীর সংখ্যাও কম নয়। সব মিলিয়ে গড়ে উঠেছে ছোট্ট কিন্তু চমৎকার একটা বাংলাদেশি কমিউনিটি। হৃদয়ে দেশকে ধারণ করে বিভিন্ন সময় তারা আয়োজন করেন বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠানের, একসাথে মেতে উঠেন প্রাণের স্পন্দনে।

ছবিঃ উৎসবে বাংলাদেশ।

আমেরিকা বেশ বৈচিত্রময় একটা দেশ। একেকটা জায়গা একেক রকম, জায়গাগুলোর সৌন্দর্যও বিভিন্ন মাত্রার। কিন্তু, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে ওয়াশিংটন স্টেইটের কোনো তুলনা হয় না। আর, সেই স্টেইটের সবচাইতে সুপরিচিত শহর সিয়াটল। তবে, সত্যি বলতে কি, একটা শহর প্রকৃতির মাঝে গড়ে উঠতে পারে; কিন্তু, সেটি কখনোই প্রকৃতির চেয়ে বেশি সুন্দর হয়ে উঠতে পারে না। তাই, সিয়াটল শহর সম্পূর্ণ হয়ে উঠে তার চারপাশে ঘিরে থাকা অপূর্ব, অনিন্দ্য, অসামান্য, অবর্ণনীয় সৌন্দর্যের প্রকৃতিকে নিয়ে। সবুজ বনানীর আধিপত্যের কারণে ‘এমারেল্ড সিটি’ তথা ‘পান্না শহর’ নামে খ্যাতি পাওয়া এই সিয়াটল শহর, যুগ যুগ ধরে তার বুকে ধরে রাখুক সবুজ-সতেজ প্রকৃতিকে, হয়ে থাকুক অরণ্যের অভয়ারণ্য।

মইনুল রাজু
ফেইসবুক

অন্যান্য শহর নিয়ে লেখা পর্বগুলোঃ
আমস্টার্ডাম, নিউ ইয়র্ক, প্যারিস, শিকাগো, লস এঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, ডেট্রয়েট, লাক্সেমবার্গ সিটি, কলাম্বাস, পোর্টল্যান্ড, ওয়াশিংটন ডিসি, রিচ্মন্ড, স্যান ডিয়েগো


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমেরিকার একটা শহরও যদি নিজেকে প্রকৃতির রাঙা রাজকন্যা বলে দাবী করতে পারে, তবে সে-শহরের নাম হবে ‘সিয়াটল’।

কলারাডো গিয়েছো? কলারাডো আমার কাছে বেশী সুন্দর মনে হয়।

মইনুল রাজু এর ছবি

মুর্শেদ ভাই, কলোরাডোর কথা অনেকের কাছে শুনেছি। সবার খুব পছন্দের জায়গা। আমি এখনো যাইনি, লিস্টে আছে। তবে, ওয়াশিংটন বা ক্যালিফোর্নিয়া প্যাসিফিক কোস্টে হবার কারণে, আমার কাছে একটু বেশিই ভালো লাগে।

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

দীনহিন এর ছবি

অসাধারণ! চোখ জুড়ানো ছবি, আর নিপাট বর্ননা লেখাটাকে অসম্ভব সুখপাঠ্য করেছে!
১, ১৩, ১৪, ১৫ এবং ১৬ নং ছবি স্বপ্নের জগতে নিয়ে যায়!
ছবিগুলোর ক্যাপশানে গোলমাল হয়েছে কিছুটা। বিশেষত, "পিউজিট সাউন্ডে, ফেরি থেকে তোলা, শহরের স্কাই লাইনে থাকা বাম পাশের লম্বা টাওয়ারটাই স্পেইস নিডল্‌।" শীর্ষক ছবিটিতে।
৩ নং ছবির ডালগুলি এমন নীল কেন? সবসময়ই থাকে নাকি এমন? ব্রস লির সমাধিস্থল এত জৌলুসহীণ কেন? উৎসবটি কখনকার? 'উৎসবে বাংলাদেশ' কখন হয়েছিল?

সবশেষে না বলেই পারছিনা, সিয়াটল সত্যি সত্যি সাউন্ড! আর লেখাটি? তাও মারাত্মক সাউন্ড!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

মইনুল রাজু এর ছবি

ক্যাপশানটা ঠিক করে দিলাম। ডালগুলি কৃত্তিমভাবে কালার করা। কয়েক মাস পরে আবার গিয়েও আমি একইরকম কালার করাই দেখেছিলাম। উৎসবে বাংলাদেশ ছবিটা ২ জুলাই, ২০১৩- তে তোলা।

ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

অতিথি লেখক এর ছবি

যথারীতি দুর্দান্ত বর্ণনা আর অপরুপ সব ছবি। চলুক
আপনার সিরিজগুলো দারুন উপভোগ করি, আর প্রতিবারি মনে হয় ঘুরে দেখার লিষ্টে আরেকটা শহর বাড়ল। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

মাসুদ সজীব

মইনুল রাজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ছবি আর লেখায় সুন্দরভাবে সিয়াটলকে তুলে এনেছেন।

স্টারবাকস দেখলেই টিম হর্টনস এর কথা মনে পড়ে। টিমের সাথে এর তুলনাই চলে না (ব্যক্তিগত পক্ষপাতদুষ্ট অপিনিয়ন)। টিম হর্টনস এর কফি ব্যাপক মিস করি।

মইনুল রাজু এর ছবি

ব্যক্তিগতভাবে স্টারবাকস্‌ দেখলে আমি দশ হাত দূরে থাকি, একদম ভালো লাগে না। ক্যামন করে যেন 'ডানকিনে' অভ্যস্থ হয়ে গেছি। হাসি ধন্যবাদ আপনাকে।

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

কি নেই, এই শহর আর তার চারপাশে! সমুদ্র, পর্বত, ঝর্ণা; অরণ্য, হ্রদ, রহস্যভরা জনপদ।

অনেক পুরনো একটা মাসুদ রানায় কাজীদা' চট্টগ্রাম সম্পর্কে কাছাকাছি একটা কথা বলেছিলেন।

এই শহরে প্রতি চারজন মানুষের একজন মাইক্রোসফট্, অ্যামাজন কিংবা বোয়িং কোম্পানিতে কাজ করে থাকে।

কথাটা বোধকরি সঠিক। আমার যতগুলি বন্ধুবান্ধব সিয়াটলে থাকে তাদের সবাই বোয়িং-এ কাজ করে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দীনহিন এর ছবি

রহস্যভরা জনপদ।

চট্টগ্রামে কোথায়? কাজীদা যখন বলেছিলেন, তখন ছিল? পার্বত্যচট্টগ্রামের কথা বোঝাননি তো?
যাই হোক, এখন লিখলে কাজীদা হয়ত বলতেন, সাম্প্রদায়িকতার চারণভূমি!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

মইনুল রাজু এর ছবি

সব জনপদইতো কিছুমাত্রায় রহস্যে ভরা। অবশ্য সিয়াটল বেশ কিছু নেটিভ, ইন্ডিয়ান জনপদ আছে, সেগুলো বেশ ঐতিহাসিক রহস্যে ভরপুর। কাজি দা'র লেখাটা আমি পড়িনি, চট্রগ্রাম বলতে কিছুটা পার্বত্য চট্টগ্রামও বুঝিয়ে থাকতে পারেন। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

মইনুল রাজু এর ছবি

আপনি বলার পর মনে হলো, আসলেও, আমাদের চট্টগ্রামেও এ সবগুলোর সমাবেশ আছে। আর, বোয়িংয়ে আমারো বেশ কিছু বন্ধুবান্ধব কাজ করে। কি জানি, হয়তো হতে পারে, আপনারো ফ্রেন্ড সার্কেলে তারা আছে। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

চলুক

মইনুল রাজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মইনুল রাজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

আশরাফ ফারুক (পলাশ) এর ছবি

চলুক চলুক চলুক
বর্ননা বারাবরের মতই অসাধারণ হয়েছে।
আপানার চোখ দিয়ে সিয়াটলকে আরেকবার দেখলাম।

মইনুল রাজু এর ছবি

আর আমি সিয়াটল দেখলাম আপনার লেক্সাস দিয়ে। অনেক ধন্যবাদ পলাশ ভাই। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

প্রথম ছবিটাই তো চোখ জুড়িয়ে দিল! পড়া বাদ দিয়ে কিছুক্ষন হাঁ করে তাকিয়ে ছিলাম ছবিটার দিকে।

শীত কেমন ওখানে?

____________________________

মইনুল রাজু এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি
আমি সামারে গিয়েছিলাম ওখানে। সিয়াটলে শীত অত বেশি নাই, কিন্তু, বৃষ্টি হয় অনেক। তবে, আশপাশের পার্বত্য এরিয়াগুলোতে (মাউন্ট রেইনিয়ার, মাউন্ট সেইন্ট হেলেন্স, মাউন্ট বেইকার, অলিম্পিক ন্যাশনাল পার্ক) স্বাভাবিকভাবেই বেশ ঠাণ্ডা।

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আইচ্ছা, পরেরবার আমেরিকায় গেলে সিয়াটল যাব। ঐখানে আমার এক আত্মীয় আছে। অছিলাও আছে।
লেখা, ছবি দারুণ ! চলুক

মইনুল রাজু এর ছবি

@ প্রৌঢ় ভাবনা
আমি সিয়াটলের অনেক বাসায়, অনেক প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। দেখা যাবে হয়তো আপনার আত্মীয়ের বাসায়ও গেছি। দেঁতো হাসি যদি সামারে যেতে পারেন সবচেয়ে ভালো। সবকিছু সুন্দরভাবে দেখতে পারবেন। আর, আবার শিকাগো আসলে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

এক লহমা এর ছবি

লেখায় ছবিতে জমজমাট। চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মইনুল রাজু এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক মাউন্ট রেইনিয়ারের ছবির দিকে বারবার চোখ ফিরে যায়।

.........জিপসি

মইনুল রাজু এর ছবি

দিলাম আপনার জন্য রেইনিয়ারের ছবি আরেকটা। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

নিটোল এর ছবি

ছবিগুলো যেন একেকটা লোভনীয় বার্গারের মত, দেখেই জিভে জল চলে আসে.........মাউন্ট রেইনিয়ার আর জলের ছবিগুলো তো ভাবের জগতে নিয়ে গেছে। পুরো বর্ণনাটাই বরাবরের মত দারুন হয়েছে।

উপস্থিতির প্রমাণস্বরূপ বিল গেটসের মাথায় চড়ে বসার আইডিয়াটা ভালই...... আর হ্যাঁ, এটা কিন্তু সত্যিই যে দুষ্টুরা দুষ্টুমির ছলে সর্বদা সত্যিটাই বলে- যতই জ্বলুনি হোক না কেন চোখ টিপি

মইনুল রাজু এর ছবি

আমি দুইবার মউন্ট রেইনিয়ারে গিয়েছিলাম। অসম্ভব রকমের সুন্দর একটা জায়গা। আর মাউন্ট সেইন্ট হেলেনস, মাউন্ট বেইকার এগুলোও অন্যমাত্রার সুন্দর পর্বতমালা।

বিল গেটস্‌'র সাথে দেখা হয়েছিলো আমার। কফি মেশিন থেকে উনি কফি নিলেন, পাশে দাঁড়িয়ে আমিও কফি নিলাম। কিন্তু, আমি এত বিমোহিত হয়ে দেখছিলাম, একটু যে কথা বলবো উনার সাথে সে চিন্তাও মাথায় আসেনি। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

নিটোল এর ছবি

এরকমই বুঝি হয়.....বিখ্যাতদের দর্শন সময়ের জন্য স্তম্ভিতই করে দেয় হো হো হো

আপনার অন্য লেখায় পড়েছিলাম মাইক্রোসফটে আপনার জব হয়েছিল- তো গেলেন না কেন? পড়াশোনার জন্যই ছাড়লেন নাকি?

মইনুল রাজু এর ছবি

জব অফার আছে এখনো। চাইলে পড়াশোনা শেষে যেতে পারবো। ওরা বছরেরও বেশি সময় দেয় পড়াশোনা শেষ করার জন্য। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

মনি শামিম এর ছবি

ছবিগুলি সুন্দর। আপনার সিয়াটল ডাইরি চমৎকার লাগল। আপনি কয়েকটি ছবিতে এইচডিআর করেছেন দেখছি। দুটি ছবির আকাশ কেমন বিক্ষিপ্ত মনে হয়, চোখের আরাম দেয়না। আপনার প্রথম ছবিতে বৃত্তাকার একটা খুব হালকা দাগ দেখছি। সেন্সরে কি ময়লা জমেছে? আপনার কিছু ছবির কম্পোজিশন বেশ ভাল লাগলো। তবে সব ক্ষেত্রে তাতে ধারাবাহিকতা বজায় থাকেনি। আপনার লেখা খুব মুগ্ধ করে। ভাল থাকবেন।

মইনুল রাজু এর ছবি

আপনি বলার আগ পর্যন্ত আমি খেয়ালও করিনি বৃত্তাকার একটা দাগ আছে। আপনি ঠিকই বলেছেন, আমি লেন্স কাভার ব্যবহার করে ছবি তুলেছিলাম, কাভারে বেশ ডাস্ট থাকে। আর, কম্পোজিশান নিয়ে আমার বেশেষ কোনো ধারণা নেই। ফটোগ্রাফির অনেক বেসিক জিনিসই আমার অজানা। তবে, এ-নিয়ে অন লাইন থেকে একটু পড়ালেখা করার পরিকল্পনা করছি।
আপনার পর্যবেক্ষণগুলো পারফেক্ট। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

amnoman এর ছবি

এই দেশে নতুন এসেছি। আপনার পোষ্ট ধরে ধরে ঘুরার প্ল্যান করছি।

মইনুল রাজু এর ছবি

স্বাগতম আপনাকে। আমার বাসা শিকাগোতে। এদিকে আসলে জানাবেন। আর, যে কোনো তথ্যের প্রয়োজন মনে করলে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করবেন। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।