আমাদের এক সহকর্মী গিয়ে উপস্থিত হলেন রাশিয়ায়। তার রাশিয়ান উচ্চারণ থেকে শুরু করে গায়ের রঙ, বেশভূষা দেখে বোঝার উপায়টুকু নেই তিনি রাশিয়ান না-কি অন্যদেশীয়। কিন্তু, সবকিছু উলোটপালোট হয়ে গেল পানীয়ের দোকানে হাসিমুখে সামান্য ভদ্কার অর্ডার করতে গিয়ে। ভদ্কার গ্লাস এগিয়ে দেয়ার সাথে সাথে দোকানী তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “কোন দেশ থেকে বেড়াতে এসেছো?” তিনি উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলেন, “তুমি কি করে বুঝলে আমি অন্যদেশ থেকে এসেছি? কি করে নিশ্চিত হলে আমি রাশিয়ান নয়।” দোকানীর সোজাসাপ্টা উত্তর, “খুব সহজ, রাশিয়ানরা কখনো হাসিমুখে ভদ্কা অর্ডার করে না”।
আহ্! রাশিয়া! মাদার রাশিয়া। কত গল্প, কত মুভ্যি, কত গোয়েন্দাবৃত্তির কাহিনীই না শুনেছি এই দেশটাকে নিয়ে। নীলক্ষেতের রাস্তায় দাঁড়িয়ে কত বইয়ের প্রচ্ছদেই না দেখেছি রাশভারী রাশিয়ান লেখকের ছবি। নিকোলাই গোগলের ‘তারাস বুলবা’ কিংবা টলস্টয়ের ‘ওয়ার এন্ড পিস্’। তার উপর ‘রাদুগা’ প্রকাশনীতো আছেই। শৈশব কৈশরের স্মৃতি হোক আর হলিউডের মুভ্যিতে রাশিয়ান সাবমেরিনের বিধ্বংসী কার্যকলাপের জন্যই হোক, রাশিয়ান শহর সেইন্ট পিটার্সবার্গের পুলকভ বিমানবন্দরে নেমেই সমস্ত দেহ মন রোমাঞ্চে ভরে গেল।
ইমিগ্রেশান লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে দেখলাম খুব দ্রুত কাগজপত্রে সই করে ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে যাত্রীদের। বেশিরভাগ যত্রীই আশপাশের ইউরোপিয় দেশগুলো থেকে এসেছেন। আমারো কম সময় লাগবে এই ভেবে খুশি হয়ে উপস্থিত হলাম অফিসারের সামনে। লেডি অফিসার। আরেকটু যুতসই করে বলি- রাশিয়ান লেডি অফিসার। গুডমর্নিং কিংবা ইভিনিংয়ের কোনো কারবারই নাই। বাজখাই কণ্ঠে সরাসরি বলে, “পাসপোর্ট”। পাসপোর্ট দিলাম। আমার দিকে না তাকিয়েই, টেলিফোনে ডায়াল করতে শুরু করলো। আমার আগের কারো ক্ষেত্রে এমনটা হয়নি। বুঝলাম ঘটনা খারাপ। তার রাশিয়ান ভাষার এক বিন্দুও বুঝতে পারলাম না, কিন্তু মুখভঙ্গি দেখে আন্দাজ করলাম, সে তার বসকে বলছে, “বদমাইশটাকে হাতে নাতে ধরে ফেলেছি স্যার”। কথা বলছেতো বলছেই, মাঝে মাঝে পাসপোর্ট দেখে কি সব নাম্বার বলছে। শুধু মাঝখান থেকে শুনতে পারলাম, “আমেরিকা”। আমার আর বুঝতে বাকী থাকলো না, বেটি বসকে জানাচ্ছে, “হালায় একটা আমেরিকান স্পাই স্যার, শক্ত কইরা দড়ি দিয়ে বাইন্দা রাখি”। নাহ, যা ভেবছি তা না। কিছুক্ষণ পর ফোন রেখে, কি সব সাইন টাইন করে হেডমাস্টার স্যারদের সমান গম্ভীর মুখ করে বলে, “গো”।
যতই গম্ভীর মুখে বলুক না কেন, সে যাত্রা বেঁচে গেলাম। বিমানবন্দর থেকে বের হতেই দেখি সাদা কাগজে বড় বড় করে Mainul Raju লিখে দাঁড়িয়ে আছে একজন। ইমিগ্রেশান অফিসার যদি হেডমাস্টার হয়, তাহলে এই লোক ডিগ্রি কলেজের প্রিন্সিপাল। দেখেই মনে হয়, ভাবের ভারে কথাই বলতে পারবে না। গিয়ে বললাম, আমি মইনুল রাজু। তারপর, কোনো কথা না বলে সোজা হাঁটা শুরু করলো। আমিও পিছন পিছন হাঁটা শুরু করলাম। হোটেল থেকে গাড়ি নিয়ে এসেছেন। আমাকে অবশ্য আগে থেকেই আমেরিকান বন্ধুরা সতর্ক করে বলেছিলো, “রাশিয়ানরা কিন্তু বেশী কথাবার্তা বলে না”। এয়ারপোর্ট থেকে একটা লোক কয়কে মাইল পাড়ি দিয়ে আমাকে হোটেলে নিয়ে গেলো, একটা কথাও বললো না। আমি বলতে চেষ্টা করেও, দুই একটা 'হু' 'হা' ছাড়া আর বেশি সুবিধা করতে পারলাম না। বুঝতে পারলাম, ইংলিশ ভালোভাবে পারেন না বলে হয়তো। কিন্তু, আমাদের দেশে যারা ক্যাব চালান, তারাওতো ততটা ইংলিশ বলতে পারার কথা না। তাই বলে তারা কি বিভিন্ন ধরণের মুখভঙ্গি করেন না! তারা কি হাসি দিয়ে অতিথিকে বুঝানোর চেষ্টা করেন না, ইংলিশ না জানার কারণে আমি কিছু বলতে পারছি না, কিন্তু, আমার দেশে তোমাকে অন্তর থেকে স্বাগতম, হে অতিথি। যাই হোক, হোটেলে গিয়ে চাবি বুঝে নিয়ে নিজের রুমে চলে গেলাম।
কিছুটা বিশ্রাম সেরে বিকেল বেলা বের হলাম শহর দেখতে। প্রথম পদচিহ্ন রাখলাম সেইন্ট পিটার্সবার্গের রাস্তায়। রাস্তায় নেমে বুঝতে পারলাম, একি! এ কি দেখছি আমি! শহরের প্রতিটা গলিতে গলিতে আনন্দ। কি অনায়াসে হেসেখেলে একে অপরের কাঁধে হাত রেখে হেঁটে চলছে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আপন মনে রঙ-তুলিতে ছবি আঁকছেন শিল্পী। গিটার নিয়ে কেউ মনের সুখে বাজিয়ে যাচ্ছে গান। একেবারেই হাসিখুশিতে ভরপুর জমজমাট একটা শহর। তাহলে, কি শুনে এসেছি এতদিন! একজন দুজনকে দিয়ে কখনোই একটা শহরকে কিংবা একটা জাতিকে বিচার করা যায় না। রাশিয়ার সব মানুষই কেজিবির এজেন্ট নয়; সবাই বাসার ছাদে নিউক্লিয়ার বোম্ব সেট করে আমেরিকার দিকে তাক করে বসে নেই। এখানেও শিল্পী আছে, গায়ক আছে, উচ্ছ্বল টিনেজার তরুণ-তরুণী আছে; আমার মত, আমাদের মত, সুখে উদ্বেলিত, দুঃখে জর্জরিত হাজার হাজার সাধারণ মানুষ আছে।
বুঝতে পারলাম, শুধু পূর্ব একটা ধারণা মনের ভেতর আঁকড়ে রাখার কারণে ইমিগ্রেশান অফিসার কিংবা ড্রাইভারের আচরণ আমার কাছে গুরুগম্ভীর মনে হয়েছিলো। আসলে অন্য সব জায়গাতেও একই জিনিস হয়। পার্থক্য শুধু একটা “গুড মর্নিং” কিংবা “গুড ইভনিং” বলার। কি জানি, রাশিয়ান ভাষায় তারা হয়তো কোনো সম্ভাষণ করেছেও, আমিই হয়তো বুঝতে পারিনি। কি জানি, হয়তো আমাদের আমেরিকান বন্ধু ভদ্কার দোকানে গিয়ে অস্বাভাবিক হাসি দেয়ার কারণেই দোকানী বুঝেছিলো, সে রাশিয়ার কেউ নয়। অন্য কারো কথা জানি না, বছরের পর বছর ধরে হলিউডের সিনেমা আমার মনের মানসপটে যে রাশিয়ার ছবি এঁকে দিয়েছে, এই রাশিয়া সেই রাশিয়া নয়। এই রাশিয়া নাচে-গানে-আনন্দে মাতোয়ারা, উৎফুল্ল এক প্রফুল্ল রাশিয়া। তবে একটা কথা বলে রাখা ভালো, মস্কোর পর রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই সেইন্ট পিটার্সবার্গ শহর একটু অন্য ধরণের। রাশিয়ায় পশ্চিমা সংস্কৃতির সবচেয়ে বেশি প্রসার দেখা যায় এই পিটার্সবার্গ শহরেই। যতটুকু জানি, মস্কো কিংবা অন্য ছোট শহরের রূপ কিছুটা আলাদা।
এমন এক শহর, এমন এক জাতি, যাদের বর্ণমালার একটা বর্ণও আমার চেনা নেই, যাদের ভাষার এক বিন্দু-বিসর্গ বোঝার ক্ষমতাও আমার নেই, সেখানে কেমন করে আমি চলবো ফিরবো, সেটা নিয়েই ভাবছিলাম। কিন্তু, সমাধানটা হয়ে গেলো খুব সহজে। কপালগুণে ব্লগিংটা শুরু করেছিলাম। শহরে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেইন্ট পিটার্সবার্গ শহরে নিজের সগৌরব উপস্থিতির কথা জানান দিলো সহব্লগার তাওসীফ হামীম; মীম নামেই সুপরিচিত। আগে কোনোদিন দেখা হয়নি, কথা হয়নি, তবু দেখা হবার পর মনে হলো আমরা যেন সাত জনমের পরিচিত। দেরী না করে ফেইসবুকে ছবি উঠিয়ে দেয় মীম। সেটা দেখে একজন আবার কমেন্ট করলো- “ দুইটা দামড়া ছেলে খাটে মুখামুখি বসে আছে! ছি ছি ছি”। মীম যে রকম বাংলা বলে, রাশিয়ান তার থেকে কোনো অংশে কম বলে না। তার কল্যাণে যতদূর সম্ভব শহরের সব তথ্য জানাতো হলোই, সাথে সাথে সে স্টুডেন্ট হবার বদৌলতে বহু মিউজিয়াম কিংবা দর্শনীয় স্থানে নামমাত্র মূল্যে মিলে গেল টিকিট। ওদিকে, কোন কোন রাশিয়ান খাবার না খেয়ে ফিরে যাওয়া উচিত হবে না, তার তালিকাটাও পাওয়া গেল তার কাছ থেকেই। শহর থেকে ফিরে আসার আগ দিন পর্যন্ত, যে পরিমাণ আন্তরিকতা একজন সহব্লগার এর কাছ থেকে পেয়েছি, সেটা কখনো ভুলবার নয়।
গোটা সেইন্ট পিটার্সবার্গ শহরে ঘুরে বেড়ালে দেখা যায়, প্রাসাদের ছড়াছড়ি। মানুষের পরিশ্রমকে পুঁজি করে গড়ে তোলা এইসব বৃহদাকার আর সুরম্য প্রাসাদ দেখলেই বুঝা যায়, একদা কত নির্যাতন, দুঃশাসন আর অনাচারের বদৌলতে নির্মিত হয়েছে এইসব অট্টালিকা, কি নির্মমভাবেই না করা হয়েছে সম্পদের যথেচ্ছ অপব্যবহার।
প্রাসাদ আছে, অথচ প্রাসাদ ষড়যন্ত্র থাকবে না, তা কি করে হয়। তাই প্রতিটা প্রাসাদের ঘটনা পরিক্রমায় যুক্ত হয়ে আছে কাকে কিভাবে ষড়যন্ত্র করে কখন হত্যা করা হয়েছে সেই ইতিহাস। কিন্তু, সাধারণ মানুষ চিরকাল ধরে প্রাসাদের বাইরের মানুষ, হয়তো তাই তারা সহজে ভুলে যেতে পারে মর্মান্তিক আর নিকৃষ্ট সব প্রাসাদীয় রাজনীতি। আর, সেই বিস্মৃতির পথে ধরে এগিয়ে চলেই সেইন্ট পিটার্সবার্গ শহরের গলিতে গলিতে এখন বিউগলের করুণ সুর নয়, বেজে চলে রোমাঞ্চের রঙিন বাদ্য।
খুব অল্প কিছু বাংলাদেশী মানুষ আছেন এই শহরে। তাদের একটা সংগঠনও আছে। মীমের কল্যাণে আমার শহরে আসার কথা জানতে পেরেছেন তারা। ঠিকই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট একবেলা খাওয়ার জন্য ফোন করে অনুরোধ করলেন। সময়ের অভাবে সেটা সম্ভব হয়নি। কিন্তু, কৃতজ্ঞতা উনার প্রতি, উনাদের প্রতি। কারণ, যত যাই বলি না কেন, ভিনদেশে এই সামান্য বাঙালিপণাটুকু ভালো লাগে। এই জিনিসগুলো আরো বেশি করে স্মরণ করিয়ে দেয় শিকড়ের কথা, আমার যে নিজের একটা দেশ আছে সেই কথা।
গোটা শহরে একজন সামান্যতম পরিচিত রাশিয়ানও আমার ছিলো না। ছোটোবেলায় শেখা বাল্যশিক্ষার মত করে রাশিয়ান বর্ণমালা পড়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, তাই বলে রাশিয়ান ভাষা বলার বিন্দুমাত্র সাহসটুকু ভুলেও কখনো করিনি। সেইন্ট পিটার্সবার্গের ভুগর্ভস্থ ট্রেইন এত বেশি মাটির নীচে যে, স্বয়ংক্রিয় সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতেই বেশ কয়েক মিনিট লেগে যায়। সত্যি বলতে, সেই টানেলের পথ ধরে নামতে নামতে, চলতি পথে অপরিচিত কারো সাথে পরিচয় পর্ব শেষে, ঢং করে খানিকক্ষণ কথা বলার সুযোগটুকুও মিলে যায়। সেই সুবাদে দেখা হয়েছিলো রাশিয়ান এক তরুণীর সাথে। পরের দিন দেখি সে একই তরুণী, রাস্তায় দেখে খানিকটা চিৎকার করেই এগিয়ে আসলো। নিজের অজান্তেই আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো “প্রিভিয়েত”। রাশিয়ায় “প্রিভিয়েত” মানে হলো “হাই” বা “হ্যালো”। কখন যে সে সম্বোধনটুকু শিখে ফেলেছি, সেটা নিজেই টের পাইনি। আসলেই, মনের ভাব প্রকাশের জন্যই তো ভাষা; সেই ভাব প্রকাশের প্রয়োজন পড়লে ভাষা আপনা থেকেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসবে, সেটাইতো সমস্ত ভাষার ইতিহাস।
অনেক কথার ভীড়ে শহরের রূপসী রুপকথাগুলোই যে বলা হলো না। সে না হয় থাক আজ, অন্য আরেকদিন হবে সে গল্প। নীচে সে গল্পের ভুমিকাটুকু শুধু দিয়ে গেলাম আজ।
মইনুল রাজু
ফেইসবুক
অন্যান্য শহর নিয়ে লেখা পর্বগুলোঃ
সিয়াটল, আমস্টার্ডাম, নিউ ইয়র্ক, প্যারিস, শিকাগো, লস এঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, ডেট্রয়েট, লাক্সেমবার্গ সিটি, কলাম্বাস, পোর্টল্যান্ড, ওয়াশিংটন ডিসি, রিচ্মন্ড, স্যান ডিয়েগো।
[/justify]
মন্তব্য
ভাল্লাগছে। প্রশ্নঃ ১৮ নম্বর ছবিটায় ভদ্রলোক শুন্যে বসে আছে কিভাবে ?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
পরের লাইনগুলোতে উত্তরটা দিচ্ছি। খুব সহজ সমাধান। কিন্তু, কেউ চাইলে পরের লাইনগুলো পড়ার আগে খানিকটা চিন্তা করে দেখতে পারেন। ফ্লোরে যে চাদর দেখতে পাচ্ছেন সেটা দিয়ে একটা ধাতব পাত ঢাকা আছে, যেটা পায়ের ভেতর দিয়ে রডের মত গিয়ে গোটা শরীরকে সাপোর্ট করে। ইউটিউবে খুঁজলে বেশ কিছু ভিডিও পাবেন।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
আমার মামী অলিয়া রাশিয়ান মেয়ে তাই অনেকদিন থেকেই রাশিয়াকে চিনি। আপনার চোখে দেখেও নিলাম। আমারও এমন ৫ টা পুতুল আছে।
ফাহিমা দিলশাদ
পুতুলগুলোর বৈশিষ্ট্য মূল লেখায় বলা হয়নি। সবগুলো পুতুল ক্রমাণ্বয়ে বড় থেকে ছোট আকারের হওয়াতে একটার ভেতরে আরেকটাকে ঢুকিয়ে রাখা যায়, মনে হয় বুঝি বড় একটা পুতুল। আমিও সেইরকম পাঁচটা পুতুল কিনে এনেছিলাম, তবে আমারগুলো ফ্রিজ ম্যাগনেট।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
অনেক সুন্দর লেখা।
একাকী মানব।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
সুন্দর। ছবিগুলো আরো বড়/জুমড হতে পারত কি?
ইন্ডিয়ান গ্রুপটাকে দেখে ভালোরকমের সন্দেহ হলো যে এদেরকে বার্লিনে দেখেছি। এরাই অথবা এদের মতো অন্য গ্রুপ একই সাজে রেডইন্ডিয়ান গান/বাদ্য/নাচ দেখিয়ে পয়সা কুড়ায় ইউরোপের বড়বড় শহরগুলোতে।
আমার দুই রাশান কলিগ আছে। দুটাই বালিকা। এদের কাছে একটু একটু রাশান শিখছি:
" ক্রাসিভা, কাক জেলা? স্পাসিবু...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
বেশ কিছু ছবি দূর থেকে তুলেছিলাম, ওগুলো ওভাবেই রেখে দিয়েছি আসলে। তাওসীফের মতে ওরা ভিয়েতনামিজ একটা গ্রুপ, গোটা শহরে ঘুরে ঘুরে গান করে। কিন্তু, ইন্ডিয়ান টাইপ-ই মনে হচ্ছে। ওদের করা মিউজিক এই ভিডিওটাতে আছে একটু।
বেশি করে রাশান শিখেন, আপনারতো অফিস করতে কখনোই বিরক্ত লাগবে না ।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
রাজু ভাই, আমেরিকা থেকে ইউরোপিয়ান কোন শহরে আসলে কথা কম বলা সংক্রান্ত এই শকটা পাওয়া স্বাভাবিক। আমেরিকানদের মত এত বকবক করা জাতি ইউরোপে খুব কম। এরা প্রয়োজনের বেশি কথা বলা পছন্দ করে না (একান্তই ব্যক্তিগত মতামত)। আমি যখন আমেরিকা গেছিলাম, তখন, এবং আমার এখনকার অফিসে যখন প্রথম একজন আমেরিকার কলিগ এল, তখন আমারও শক লেগেছিল, তবে উল্টো ভাবে। মনে হয়েছিল, এরা এত কথা বলে কেন? কথার তোড়ে আসলে কি বলতে চাচ্ছে তাই বোঝা দায়।
পিটার্সবার্গ গেছি। তবে খুব কম সময়ের জন্য। গিয়ে মনে হয়েছে, পুরো এক সপ্তাও যথেষ্ঠ নয় এই শহর দেখার জন্য। অসাধারন!!
- সুমন্ত
পিটার্সবার্গ যদি পরবর্তীতে যান, শহর থেকে জলপথে টিকিট কেটে সামার প্যালাসে চলে যেতে পারেন। আমার লাইফে দেখা সেরা প্যালেসগুলোর একটি। গালফ অফ ফিনিল্যান্ডের ভিতর দিয়ে যেতে হয়। বেশি সুন্দর।
একটু রেসিস্ট শোনালেও বলছি, সাদা আমেরিকানদের মধ্যে বেশি কথা এবং কম কথা বলা দুই ধরণেরই আছে। কিন্তু, কালোগুলোতে শুধু অযথা কথাই বলে না, পাবলিক বাসে এ উঠে এত জোরে জোরে কথা বলে যে, আশপাশের সবাইকে বিরক্ত করে ছাড়ে। ওরা নীচুস্বরে কথা বলতেই পারে না।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
ছবিগুলো সুন্দর
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
আহা কবে যে যাবো।
চলে যান, দারুণ জায়গা। ভালো লাগবে গ্যারান্টিড।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
ভালো লাগবে সে তো জানিই, ভিসা পাওয়া মেলা সমস্যা। মাঝে যাবার জন্য ভিসার খোঁজ নিলাম, সিঙ্গাপুর থেকে ভিসা দিবেনা ওরা, দেশে গিয়ে ভিসার আবেদন করা লাগবে।
হ্যাঁ, ভিসা সংক্রান্ত কিছু জটিলতা আছে। আর হোটেল থেকেও কিছু কাগজ পাঠাতে হয়। আমাকে ঠিক যে কয়দিন হোটেল বুকিং ছিলো সেই কয়দিনের ভিসা দিয়েছিলো। এজেন্ট এর মাধ্যমে রাশিয়ান ভিসা করানো ভালো।
অবশ্য, আমার ভিসা নেবার ক্ষেত্রে দারুণ একটা ব্যাপার ঘটেছিলো। ওদের ওয়েবসাইটে ভিসা ফি যত লেখা ছিলো, বাস্তবে আমার থেকে অনেক কম টাকা নিলো। জিজ্ঞেস করতে বললো, তোমার বাংলাদেশি পাসপোর্ট হবার কারণে তোমার ফি কম। সারাজীবন বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে পড়লাম ঝামেলায়, কিন্তু রাশিয়ান ভিসা নিয়ে গিয়ে দেখি উল্টো কারবার।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
বেশ ভাল, রাজু ভাই! প্রকৃতি ও মানবী- সবটাই পাওয়া গেল!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
ধন্যবাদ।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
এখানেই ওই রঙিন রঙিন পাকানো পাকানো চূড়াওয়ালা প্রাসাদখানা না? আর এবার কিন্তু গল্পের ভাগে কম পড়েছে। দামড়া পুরুষদের খাটে বসে থাকার গল্প কে শুনতে চায়?
হাহাহা
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
বেশি রঙিণ রঙিণটা মস্কোতে, একটু কম রঙিণ রঙিণটা (২ নাম্বার ছবি) এখানে। আর, আপনি আপত্তি করবেন জেনেইতো শেষের ছবিটা দিলাম।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
অপূর্ব!!!
সেন্ট পিটার্সবার্গ শুনলেই বুকের ভেতর কেমন যেন করে উঠে!!!
শহরটা এত সুন্দর!!!
আর লাস্টে এসে এমন জায়গাতে "পজ" দিলেন!!! আপনে একটা অমানুষ!!! তাড়াতাড়ি রূপকথা চাই।
____________________________
শহরটার সিকিভাগও আমি তুলে ধরতে পারিনি লেখাতে। কিন্তু, আমি আশাতীত রকমের মুগ্ধ হয়েছি এই শহরে গিয়ে। আর, "পজ" যখন দিলামই, "প্লে" তো একসময় করবোই।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
রাশিয়া
ভাষা আসলে কোন বিষয় না। একবার খালি বোলে দেখেন কাউকে আপনি কোনকিছু বুঝেন না, তাহলেই ওরা গড়গড় করে বুঝাইয়া দিবে।
অলস সময়
কি জানি, কাউকে জিজ্ঞেস করা হয়নি আসলে সেভাবে।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
ভাল লাগল। ছাতা ধরার আর বই পড়ার ছবি দুটি বেশী ভাল লেগেছে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ আপনাকে।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
আহা! কী সুন্দর এই পিটার্সবার্গ আর আপনার লেখা। ছবিগুলোও খুব সুন্দর।
তা, শিকাগোতে দেখার মতো কি কি আছে? আগামীতে সেগুলো দেখতে যাব।
শিকাগোতে সবচেয়ে দর্শনীয় জায়গাতো আমার বাসা, সেটাতো আপনি দেখেই ফেলেছেন। অতএব, আর দেখার কিছু নাই।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
বাসা পাল্টায়ে ফেলেন।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
বেশ সুন্দর একটা শহর মনে হচ্ছে। খাওয়াদাওয়ার কি অবস্থা?
ভালো জিনিস মনে করিয়েছেন। আমি ভেবেছিলাম খাওয়া দাওয়া বুঝি অন্য গ্রহের মনে হবে। আসলে, তা নয়। স্পাইসের বা টেইস্টের দিক থেকে রাশিয়ান খাবার আমাদের কাছাকাছি, তবে ঝাল অত বেশি নয়। রাশিয়ান বিখ্যাত খাবার হলো "বরষ" , বলা হয়েথাকে ভদকা এবং কালাশনিকভের পরেই এই স্যুপজাতীয় খাবার "বরষ"-ই হলো রাশিয়ার পরিচয়। এই খাবারে উৎপত্তিটা হয়েছিল ইউক্রেন থেকে। উইকিপিডিয়ায় বিস্তারিত আছে।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
চমৎকার!!
একদিন আপনার 'নন্দিত নগরে' নিয়ে বসতে হবে মনে হচ্ছে
ধন্যবাদ। পড়া শেষ হলে জানাইয়েন।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
মুগ্ধ হলাম আপনার চোখে (বা আপনার ক্যামেরার চোখে) রাশিয়া দেখে।
শুভেচ্ছা
ধন্যবাদ আপনাকে, সেই সাথে শুভেচ্ছাও।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
সুতরাং হলিউডি সিনেমা কিংবা পাশ্চাত্য ইতিহাসের ভাষ্য এক কথায় গ্রহন করতে নেই।
এই ব্লগটি লেখা এবং ছবির কল্যানে অনন্যসাধারন হয়েছে।
সম্ভব হলে দেশে আসার সময় আমার জন্য ছোট্ট একসেট মাত্রিওসকা পুতুল নিয়ে আসবেন।
নাহ, এক কথায় গ্রহণ করাটা ঠিক না। কারণ, রাশিয়ার যদি হলিউডের মত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থাকতো, তাহলে, রাশিয়ার দিকের গল্পটাও দেখা যেত।
এখনতো আমি ইউএসএ-তে। এখানে মাত্রিওসকা পাওয়া যায় কিনা জানি না, পেলে নিয়ে আসবো। ধন্যবাদ আপনাকে।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
আপনার লেন্সের দৃশ্যাচরণ বেশ ভাল লাগলো। ধন্যবাদ, মইনুল ! শেয়ার করার জন্য।
শুভ কামনা।
ধন্যবাদ আপনাকেও।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
আহা......গল্পতো শেষ হইয়াও হইল না শেষ!!! একে তো কিপ্টার মতো এতদিন পরপর লেখা দেন তার ওপর আবার রূপকথার কাহিনী কিনা ভূমিকাতেই আটকে দিলেন?? জলদি ওটা ছাড়েন......তাছাড়া শুরুর ছবিটাই তো রূপসীদের উচ্ছ্বলতার প্রকাশ ঘটিয়ে দিল একটা
প্রাসাদের বিষয়গুলো জেনে ভাল লাগল.....মুভি দেখে যা ধারণা করতাম বাস্তবতাও দেখছি বেশ ওরকমই.....মিউজিয়ামে ক্যামেরা নেয়া কি বারণ ছিল....ছবি দিলেন না যে? বাই দ্যা ওয়ে বরাবরের মতই ছবিগুলো বেশ সুন্দর হয়েছে।
ভাষার ব্যাপারে অস্থির বলেছেন- এটা আমিও ফিল করেছি.......আসলে ভাষা আত্মস্থ করতে পারলে (মুখস্থ নয়) অন্তর দিয়েই তা উগড়ে বের হয়
বেশিরভাগ সময়ইতো 'হা' করে উচ্ছ্বলতা দেখতে দেখতে ছবি তোলার কথা ভুলে গেছি।
মিউজিয়ামের ভেতরে অনেক ছবি তুলেছি। বেশ কিছু বিখ্যাত আর্টওয়ার্ক আছে। আর কিছু কিছু জায়গায়তো সবকিছু স্বর্ণ দিয়ে মোড়ায় রাখসে। হেরিমিটেজ এত বেশি বিখ্যাত মিউজিয়াম যে সেটা নিয়ে আলাদা লেখা না হলে অবিচার করা হয়ে যাবে। সত্যি বলতে কি, ব্লগে একটা লেখায় সবকিছু অত বিস্তারিত লেখা যায় না। আলাদা পর্ব করতে হয়।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
ফাঁকিবাজি করলেন ভাই ! পরের পর্ব ছাড়েন। হার্মেতেজ নিয়ে পোস্ট দিব একদিন, কী দারুণ একটা জায়গা।
এইবার তো হল না, পরের বার দেখা হবে অবশ্যই
facebook
হার্মেতেজ-এ কয়েকশো ছবি তুলসি। এত রিচ্ কালেকশান, মুগ্ধ হয়ে গেছি। দেন দেন, ওটা নিয়ে পোস্ট দেন একটা। আর আমি পরের পর্বে 'লাস ভেগাস' ছাড়তেসি।
ফেইসবুক থেকেতো দেখছিলাম আমি যখন ঢাকায় আপনি ঐ সময়টাতে বেশ ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। আমিও খুব কম সময় নিয়ে গেছি। না হলে এবারই দেখা হতো। যাই হোক, পরের বার মিস হবে না আর।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
বালশাই স্পাসেবা।।।
আফরিন আহমেদ
প্রিভিয়েতস্তোভাচ। হইসে কিনা জানি না।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
আহা, রাশিয়া শুনলেই খালি রাদুগার কথা মনে পড়ে, তাড়াতাড়ি লাইনে আসুন
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এবারের বইমেলা থেকে তিন তিনটা 'লাইনে আসুন' কিনে নিয়ে আসলাম। লাইনে না এসে উপায় আছে।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
নতুন মন্তব্য করুন