হ্যাভেনলি হাওয়াইইঃ পর্ব ২ (ইতিহাস পর্ব)

মইনুল রাজু এর ছবি
লিখেছেন মইনুল রাজু [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১০/০৫/২০১৫ - ৪:৩৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


ছবিঃ দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সী

পুর্ববর্তী পর্বের লিঙ্কঃ হ্যাভেনলি হাওয়াইইঃ পর্ব ১ (সৃষ্টি পর্ব)

শতকের পর শতক ধরে হাওয়াইইয়ের বিশাল পরিমাণ ভূখন্ডজুড়ে বসবাস করছিলো বেশ কয়েকটি আদিবাসী গোত্র, উপগোত্র। মূলত পলিনেশিয়ান এই মানুষগুলো নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ-বিগ্রহ ঘটিয়ে ‘জোর যার হাওয়াইই তার’ নিয়মেই তাদের রীতি-নীতি নির্ধারণ করে আসছিলো। ইউরোপিয়ানদের মধ্যে সর্বপ্রথম, প্রশান্ত মহাসাগর তন্ন তন্ন করে ঘুরে বেড়ানো সমুদ্র অভিযাত্রী, 'রকস্টার অফ দ্যা সী' নামে খ্যাত ক্যাপ্টেইন কুক হাওয়াইই দ্বীপপুঞ্জে গিয়ে উপস্থিত হন ১৭৭৮ সালের ১৮-ই জানুয়ারী।


ছবিঃ কিলাউয়া (Kīlauea) সক্রিয় আগ্নেয়গিরি

দ্বীপবাসীরা অবাক হয়ে, নতুন আসা জাহাজ আর অতিথিদের দিকে তাকিয়ে থাকলেও, খানিক পরেই, প্রচুর পরিমাণ খাবার-দাবার আর আদর-আপ্যায়ণ দিয়ে নবাগতদের অভ্যর্থনা জানাতে কার্পণ্য করেনি। তবে, প্রকৃতির মাঝে বেড়ে ওঠা দ্বীপবাসী এই মানুষগুলো জানতো না, শুধু সুবিশাল জাহাজ আর দলবল নিয়েই আসেনি সাদা চামড়ার এই নতুন মানুষগুলি; সাথে করে নিয়ে এসেছে মৃত্যু, নিয়ে এসেছে সিফিলিস, গণোরিয়াসহ নানান রকমের ইউরোপিয়ান ব্যাধি। সারাজীবন বাইরের জগতের রোগের সাথে পরিচয় না থাকা দ্বীপের মানুষগুলোর কোনো ধরণের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ছিলো না। রোগই ছিলো না, সেটা প্রতিরোধের ক্ষমতাই-বা থাকবে কি করে!

এই নিদারুণ সত্যটা ঠিকই জানতেন ক্যাপ্টেইন কুক। যার কারণে, তার সাথে আসা নাবিকদের জাহাজের ভিতরই থাকার নির্দেশ দিয়ে, কেবলমাত্র বিশ্বস্ত কয়েকজন সঙ্গীকে নৌকায় করে দ্বীপে পাঠালেন খোঁজ-খবর করার জন্য। তবে, সাফ সাফ জানিয়ে দিলেন, কোনোভাবেই কেউ যেন স্থানীয় নারীদের সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত না হয়। কিন্তু, ফিরে এসে কুক’র সঙ্গীরা জানালেন, দ্বীপের সব খবরা-খবর নিয়ে এলেও, আসল শর্তটাই তারা মানতে পারেনি। অর্থ্যাৎ, স্থানীয় নারীদের সাথে ঠিকই গড়ে তুলেছিলো শারীরিক সম্পর্ক। কুক বুঝে গেলেন, সর্বনাশ যা হবার হয়ে গেছে; তবে, সে সর্বনাশ সাথে সাথে দেখা যাবে না, দেখা যাবে কালের পরিক্রমায়।


ছবিঃ "আকাশে ছড়ানো মেঘের কাছাকাছি, দেখা যায় তোমাদের বাড়ী"- হাওয়াইইতে আসলে গানের এ-কথাগুলো আর আদ্ভুত লাগে না, মেঘের কাছকাছিই যে সব বাড়ী।

পরবর্তীততে, ক্যাপ্টেইন কুক তার দলবল নিয়ে পাড়ি জমান উত্তর আমেরিকার দিকে। সম্পন্ন করেন আলাস্কাসহ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলের মানচিত্র তৈরির কাজ। উল্লেখ্য, ক্যাপ্টেইন কুক অবিশ্বাস্য রকমের দক্ষ এবং নিখুঁত মানিচত্র প্রস্তুতকারী; এবং তাঁর সমস্ত অভিযানেই তিঁনি এ-কাজটি সিদ্ধহস্তে করে গেছেন। প্রায় একবছর আমেরিকার উপকূল ঘেঁষে রাশিয়ার বেরিং প্রণালী অবধি অভিযান সম্পন্ন করে কুক সাহেব আবার ফিরে আসেন হাওয়াইইয়ান দ্বীপপুঞ্জে। তবে, এবার আর প্রথমবার এসে নোঙ্গর করা দ্বীপটিতে নয়, অন্য আরেকটিতে। কুক দেখলেন, হাওয়াইই দ্বীপপুঞ্জের অন্তর্গত এই নতুন দ্বীপেও স্থানীয়রা আদর আপ্যায়ণ, খাতির-যত্নের কমতি করলো না। বস্তুত, স্থানীয়দের বিশ্বাস ছিলো, কুক বুঝি কোনো অবতার, অজানা কোনো জায়গা থেকে আসা পরম এক দেবতা।


ছবিঃ রাস্তার দু'পাশের যত ভূমি, সবকিছু আগ্নেয়গিরির লাভা হতে সৃষ্ট


ছবিঃ 'এই পথ যদি না শেষ হয়'-- আসলেও এই পথ শেষ হয় না, কারণ পথ এগোতে থাকলে দ্বীপের চারপাশে অনন্তকাল চক্রাকারে একই পথ আসতেই থাকবে।

তবে, পরম আতিথ্য আর আনুগত্যের সর্বোচ রূপ দেখার সাথে সাথে, কুক সাহেব এবার দেখলেন আরো একটা জিনিস। এই বছরখানেক সময়ের মধ্যেই, তাদের বহন করে আনা ইউরোপিয়ান ব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে হাওয়াইয়ানদের মাঝে, এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে। ইতিমধ্যে, মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে স্থানীয়দের জীবন। উপনিবেশ স্থাপণ করা ক্যাপ্টেন কুক’র অভিযানের উদ্দেশ্য ছিলো না; উদ্দেশ্য ছিলো উত্তর-পশ্চিম প্যাসিফিকের ভেতর দিয়ে কার্যকরী কোনো সমুদ্রপথ খুঁজে বের করা, যাতে করে মহাসাগরের ভেতর দিয়ে সমুদ্র পথের যোগাযোগটা সুগম হয়। অতএব, নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে, স্থানীয়দের মরণব্যাধিকে থোড়াই কেয়ার করে, দলবল নিয়ে দ্বীপ ছেড়ে, আবারো প্রশান্ত মহাসাগরে বেরিয়ে পড়লেন ক্যাপ্টেইন কুক।

কিন্তু, এবারে ভাগ্যদেবী আর সুপ্রসন্ন ছিলেন না। ঝড়ের কবলে পড়ে তাদের জাহাজ এবং সমস্ত নাবিকদের নিয়ে হাওয়াইইতে ফিরে আসতে বাধ্য হন ক্যাপ্টেইন কুক। নাহ, ভাগ্যদেবীর সাথে সাথে এবার হাওয়াইয়ানরাও অপ্রসন্ন। তারা আর আতিথ্য দেখাতে প্রস্তুত হলো না। অচিনপুরী থেকে আসা যে মানুষকে তারা দেবতার আসনে ঠাঁই দিয়েছিলো, সে দেবতা যদি তার দলবল নিয়ে সামান্য ঝড়ের কবল থেকে উদ্ধার হতে না পারে, মহাসাগরের ঝড়কে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তবে সে কিসের দেবতা!

আতিথ্যের বদলে দ্বীপবাসীরা এবার উপেক্ষাই করতে শুরু করলো তাদের। কুক এবং তার সঙ্গীসাথীদের কাপুরুষ অভিধা দিয়ে তির্যক বাক্যবাণে জর্জরিত করতেও ছাড়লো না। শুধু তাই নয়, কুক’দের জাহাজের আশেপাশে এসে তাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপে বিঘ্ন ঘটাতে শুরু করে। এক পর্যায়ে, কোনো এক অশুভ দিনে, কুকদের জাহাজ থেকে ছোটো একটা নৌকা নামিয়ে নিয়ে চলে গেলো একদল স্থানীয় হাওয়াইইয়ান। নানান ঘাটের পানি খাওয়া ক্যাপ্টেন কুক ঠিকই জানতেন, কি করে বিশৃঙ্খল একটা ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হয়; জানতেন কি উপায়ে হাতছাড়া হয়ে যাওয়া সম্পত্তির পুণরুদ্ধার করতে হয়।

প্রশান্ত মহাসাগরের আরেক দ্বীপ তাহিতি অভিযানের সময়কার এক ঘটনায় কুক বুঝতে পেরেছিলেন, দুর্যোগের সময় যদি দ্বীপের অধিবাসীদের গোত্রপ্রধানকে অবরুদ্ধ করা যায়, তাহলে দ্বীপবাসীর কাছ থেকে যে কোনো কিছুই আদায় করা যায়, যে কোনো ধরণের শর্ত মেনে নেয়ার জন্য তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করা যায়। তাহিতির সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ক্যাপ্টেন কুক এবার একই ধরণের বুদ্ধি খাটাতে গেলেন হাওয়াইইয়ানদের উপর। জিম্মি করতে গেলেন হাওয়াইইয়ান প্রধান ‘কালানিওপু’কে। হাওয়াইইয়ান প্রধানের কোনো ধরণের ক্ষতি করার ইচ্ছা কুকের ছিলো না, উদ্দেশ্য ছিলো তাঁকে জিম্মি করে হারানো নৌকা পুনঃরুদ্ধার করা।


ছবিঃ নাম না জানা হাওয়াইই দ্বীপের পাখি

হাওয়াইইয়ান প্রধানকে যখন জিম্মি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন কুক, তখন দ্বীপবাসী পুরুষেরা রাগে ফুঁসতে থাকে, নারীরা হাহাকার করে কাঁদতে থাকে। যত অনগ্রসর জাতিই হোক না কেন, আধুনিক পৃথিবীর থেকে যত পিছিয়ে থাকা গোত্রই হোক না কেন, সত্যিকারের একজন নেতা নেতাই। কিন্তু, আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত কুকুদের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করার ক্ষমতাতো আর সেই নেতার ছিলো না। তাঁর ভয় ছিলো কুক হয়তো তাকে মেরেই ফেলবে, আর সে ভয় থেকেই হয়তো কুকের থেকে দূরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ‘প্রধান’। তখন ক্যাপ্টেন কুক শক্ত হাতে ধরে ফেলেন দ্বীপ-প্রধানকে।

আর, ঠিক সেখানটাতেই ঘটে যায় সর্বনাশ। যত যাই হোক, দ্বীপপ্রধানের গায়ে হাত দেয়া দ্বীপবাসীদের নিকট অমার্জনীয় অপরাধ। সভ্য জগতের, ইউরোপিয়ান, ক্যাপ্টেন কুক বুঝতে পারেননি, যত সাধারণই হোক না কেন, এই দ্বীপপ্রধানই হচ্ছে দ্বীপবাসীদের ক্যাপ্টেন। তাই, প্রধানের গায়ে কুক হাত দেয়ার সাথে সাথে তার পিঠে ঢুকে গেলো ছুরি, ঢুকে গেলো বল্লম। অতর্কিত আক্রমণ! কুকরা বন্দুক চালাতে লাগলেন, কিন্তু, কাজ হলো না। হাওয়াইইয়ান একের পর এক আক্রমণে যোগ দিতে শুরু করলো, ছিনিয়ে নিতে থাকলো কুকদের অস্ত্রশস্ত্র; কুকদের সাথে করে আনা ছুরিই প্রবেশ করিয়ে দিতে থাকলো কুকদের শরীরে।


ছবিঃ ক্যাপ্টেইন কুক'র মৃত্যু (ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীকৃত)

ক্যাপ্টেন কুক কোনো ভাবে হামাগুড়ি দিয়ে পালাতে থাকলেন তীরের দিকে, যেখানে তাদের নৌকা রাখা আছে। উদ্দেশ্য নৌকায় করে জাহাজে ফিরে যাওয়া। কিন্তু, দেরী যা হওয়ার হয়ে গেছে। কুকের সাথের যারা জান নিয়ে বাঁচতে পেরেছিলেন, তারা সে নৌকাগুলো নিয়ে ইতিমধ্যে তীর থেকে খানিকটা দূরে সরে গেছে। তবে, তীর থেকে খানিক দূরের সেই নৌকায় শত চেষ্টায়ও পৌঁছাতে পারলেন না কুক। অবিশ্বাস্য শোলানেও, ‘রকস্টার অফ দ্যা সী’-খ্যাত সমুদ্রের নায়ক ক্যাপ্টেইন কুক জানতেন না (বিতর্কিত) কিভাবে সাঁতার কাটতে হয়।


ছবিঃ দ্বীপের একদিকে মনোরম-সতেজ-সজীব সবুজ, আর আগ্নেয় লাভায় জ্বলেপুড়ে একাকার হয়ে যাচ্ছে অন্যদিক (নীচের ছবি)


ছবিঃ আগ্নেয় লাভা এভাবেই তার চলার পথ করে নেয়, আর পুড়িয়ে দিয়ে যায় চলার পথের সবকিছু (হেলিকপ্টার থেকে তোলা)

পরবর্তীতে ক্যাপ্টেইন কুক’র সমস্ত শরীর কেটে টুকরো টুকরো করে, আগুনে সেদ্ধ করে মাংস থেকে হাঁড় আলাদা করে হাওয়াইইয়ানরা। তা থেকে ইউরোপিয়ানদের ধারণা হয়েছিলো তারা বুঝি নরমাংসভোজী। আসলে ঘটনা তা নয়। হাওয়াইইয়ানদের প্রথা অনুযায়ী, যেকোনো মৃতদেহের শরীর থেকে হাঁড় আলাদা করা হয় এবং তারা ধারণা করতো মৃত ব্যক্তির হাঁড় যার কাছে থাকবে, সে ব্যক্তি মৃত মানুষের সমস্ত আধ্যাত্বিক শক্তি প্রাপ্ত হবে। ক্যাপ্টেইন কুক’র মৃতদেহ নিয়ে যা করা হয়েছে, সে–সময়ে অন্য হাওইইয়াইনদের মৃতদেহ নিয়েও সেটাই করা হতো।

যে জায়গাটাতে ক্যাপ্টেইন কুককে হত্যা করা হয়, বর্তমানে সেখানে নির্মাণ করা হয়েছে একটি স্মৃতিস্তম্ভ। সে স্তম্ভের আশপাশে সৌখিন জলযান এসে ভীড় করে। স্নোর্কেলিং করার নিমিত্তে দলে দলে পর্যটকের দল পানির নীচে ডুব দেয়। প্রশান্ত মহাসাগরের পানির নীচে ডুব দিয়ে, রঙ্গিণ মাছ আর কোরালের দিকে তাকিয়ে থেকে, ফিরে যাই শত বছর আগের সেই অতীতে; ভাবতে চেষ্টা করি, সে-দিনের সেই দৃশ্য। মনে হচ্ছিলো, কী ভেবেছিলেন সে-দিন ক্যাপ্টেইন কুক, কী-ই বা ছিলো হাওয়াইইয়ানদের মনে। কোরালের গায়ের, তাক হয়ে থাকা কাঁটা হাতে বিঁধে, আবার ফিরে আসি বাস্তবে। নাহ্‌ সেদিনের সেই ক্যাপ্টেইন কুকুও নেই, ‘কালানিওপু’ আর তার গোত্রের লোকজনও নেই।


যেখানে মনুমেন্টটা আছে সেখানে নয়, ক্যাপ্টেইন কুক এবং তার সঙ্গীদের হত্যা করা হয় খানিকটা দূরে, যে জায়গাটা ছবির বাম দিকে দেখা যাচ্ছে সেখানটাতে

যতই রোগব্যাধি নিয়ে আসুক না কেন, ক্যাপ্টেইন কুক আর তার সঙ্গীসাথীরা তাদের অজানতেই আরেকটা জিনিসও সাথে করে নিয়ে এসেছিলো- পশ্চিমের জ্ঞান আর সমরকৌশল। কিন্তু, প্রশ্ন হলো, জ্ঞান-বিজ্ঞান আর সমরবিদ্যা সাথে করে নিয়ে আসলে কি হবে, হাওয়াইইয়ানদের সেটা শিখতে পারার সামর্থ্য থাকতে হবে তো! ঠিক এখানটাতেই অবাক হতে হয়। হাওয়াইয়ানদের মধ্যে সে-রকম একজন ঠিকই ছিলো, যে হাওইয়ান প্রধান ‘কালানিওপু’কে জিম্মি করতে গিয়ে মারা যান ক্যাপ্টেইন কুক, সেই প্রধানেরই বোনের ছেলে ‘কামেহামেহা’। আজ থেকেও কয়েকশো বছর পূর্বেও, পশ্চাদপদ এক জাতিগোষ্ঠির মাঝেও উন্নতির চরম শিখরে উঠার মাধ্যম ছিলো 'জ্ঞান', যে বা যারা সেই জ্ঞানকে যত আগে আয়ত্তে আনতে পেরেছে, শিখতে পেরেছে দ্রুত, সে বা তারাই এগিয়ে গেছে অন্য আর সবাইকে পিছনে ফেলে। ইউরোপিয়ানদের অর্জিত জ্ঞান থেকে শিখতে পারার সামর্থ্য নিয়ে জন্ম নেয়া এই ‘কামেহামেহা’ই একদিন হয়ে উঠেছিলো হাওয়াইই সাম্রাজ্যের সম্রাট।

হাওয়াইইয়ান কিংবদন্তি অনুযায়ী কামেহামেহার জন্মই হয়েছিলো মহাপুরুষ হবার জন্ম। তাদের প্রচলিত গল্পে, যেদিন কামেহামেহার জন্ম হয়, সেদিন স্বর্গের আকাশে আবির্ভাব ঘটছিলো নতুন এক নক্ষত্রের। ১৭৫৮ সালের সেদিনে, স্বর্গের আকাশে কি হয়েছিলো সেটা জানা সম্ভব না হলেও, মর্ত্যের আকাশ আলো করে ঠিকই ফুটে উঠেছিলো আশ্চর্য এক বস্তু; মর্ত্যের মানুষ আশ্চর্য সে বস্তুর নাম দিয়েছে- ‘হ্যালির ধূমকেতু’।

মইনুল রাজু
ফেইসবুক
অন্যান্য সব লেখা


মন্তব্য

তানিম এহসান এর ছবি

হুম! হাসি

মইনুল রাজু এর ছবি

হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

অতিথি  এর ছবি

দারুন পো্স্ট !

বাই দ্য ওয়ে, আপনি কি শহীদুল্লাহ হলে থাকতেন?

মইনুল রাজু এর ছবি

হ্যাঁ, শহীদুল্লাহ হলে থাকতাম। ধন্যবাদ। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

কবে?? চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মইনুল রাজু এর ছবি

২০০০-২০০৭। এক্সটেনশান-১ এর ২৮ নম্বর রুম এবং মেইন বিল্ডিংয়ের ১০১৮ নম্বর রুমে থাকতাম। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

কোলাকুলি সালাম বড়ভাই। আমাদের স্থান-কাল স্থানাংকের কিছুটা অংশ তাহলে উপরিপাতিত। ঠিক ঐ দুটি স্মৃতিঘেরা ভবনেই কাটিয়েছি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ও স্মৃতিঘেরা একটা অংশ। এক্সটেনশন-১ এখন আর নেই, তার নাম হয়েছে 'শহীদ শরাফত আলী ভবন'। হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মইনুল রাজু এর ছবি

চলুক হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চমৎকার বর্ণনা। অনেক ধন্যবাদ।

মইনুল রাজু এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

এক লহমা এর ছবি

উপভোগ করলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মইনুল রাজু এর ছবি

চলুক ধন্যবাদ।

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

ময়ুখ কিরীটি এর ছবি

খোমাখাতা-য় দেখে পড়তে আসলাম....কিন্তু সুয্যি মামুর ইদানীং রূপের তেজ থেকে কিছুটা "পরিত্রাণের আশা"র সাপেক্ষে আপনার লেখাটা যেন বেশ ছোটই লাগল আজ......রসে আরও খানিকটা চুবিয়ে চপচপ করবেন দ্বীপটাকে- সেটা আশা করছিলাম চোখ টিপি শুধু কুক দিয়েই কাজ সারলেন? শুরুতে কুকের সাথে "হ্যাভেনলি" ছবিগুলো একটু বেমানান লেগেছে......পরে যদি তারা চাপাচাপিও করত খুব খারাপ লাগত না তাতে হাসি

ছবিগুলো এত জীবন্ত যে গিলে খেতে ইচ্ছে করছে বরাবরের মতই.....ঘুরাঘুরিটা আরেকটু বাড়িয়ে দিন.....আমাদের সুবিধা হয় তাতে দেঁতো হাসি

মইনুল রাজু এর ছবি

এই সিরিজটা চারটা পর্বে লেখার পরিকল্পনা আছে। ২য় ও ৩য় পর্বে ছবিগুলো লেখার সাথে খুব একটা সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখতে পারবো না বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু, ১ম ও ৪র্থ পর্বে আবার এত ছবি দেয়ার ইচ্ছে নেই। তাই, বেমানান বুঝতে পেরেও, ২য় ও ৩য় পর্বে কিছু ছবি যোগ করে দিচ্ছি। হাসি

আর আমি যদি আপনার মন্তব্য ঠিক মত বুঝতে পারি, তাহলে আপনি যে-রকমটা আশা করছেন সেটা পাবেন ৪র্থ পর্বে। তার আগে অন্য পর্বগুলোতে সামান্য করে হলেও ফ্যাকটস্‌গুলো লিখে রাখতে চেষ্টা করছি।

ধন্যবাদ। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মইনুল রাজু এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ছবিগুলো কি রং সংশোধনের কারনে একটু বেশি রঙিন? নাকি দুনিয়াটাই এতো রঙিন?
ক্যাপ্টেইন কুক, হাওয়াই দ্বীপ, তাহিতি প্রভৃতির ইতিহাস কিছুটা জানা ছিলো। যে ইতিহাস মূলত ইউরোপিয়ানদের হাতে লেখা। লোকাল ইতিহাস চর্চা, লোকাল অধিবাসীদের বর্তমান জীবন এসব নিয়ে লিখলে আরেকটু ভালো লাগতো।

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মইনুল রাজু এর ছবি

ছবিগুলো গুগল প্লাস-এ আপলোড করা। ওরা দেখলাম নতুন এনহ্যান্সার ফিচার যোগ করেছে, যার কারণে কিছু ছবি কালার এনহ্যান্সড্‌। আমি নিজেও বেসিক কিছু জিনিস, যেমন ব্রাইটনেস, শ্যাডো চ্যাঞ্জ করি। তবে, পানির রঙ বা নারকেলের গাছের যে রঙগুলো আছে, সেগুলো আসলেও এরকমটা রঙ্গিণ।

লোকাল বা নেটিভদের লাইফস্টাইল আমি তেমনটা দেখার সুযোগ পাইনি। প্রথমত, নেটিভদের জীবন ওয়ালমার্ট আর ম্যাগডোনাল্ডস্‌'র ভারে চাপা পড়ে গেছে। খানিকটা যেটা আছে, সেটাও সংরক্ষিত, টুরিস্টদের যাওয়ার অনুমতি নেই। তবে, পথেঘাটে আধুনিক সমাজের সাথে মিশে যাওয়া হাওয়াইইয়ানদের সাথে দেখা হয়েছে। হাওয়াইইয়ান একটা মেয়ে দেখলাম কোমরে চাকু নিয়ে ওয়ালমার্ট-এ এসেছে। ওটাই নাকি ট্র্যাডিশান। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ওয়ালমার্টের নিচে চাপা পড়ে যাওয়া কথাগুলোই যতটুকু সম্ভব বলুন। আপনার চোখে যা দেখছেন, তা-ই বলুন নাহয়। চাকু সঙ্গে নিয়ে আসা মেয়েটা বা এরকম মানুষদের কথাই বলুন যতোটা সম্ভব

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মইনুল রাজু এর ছবি

পরের পর্বগুলোতে নিয়ে আসতে চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আহা, ছবির মতো দেশগো! ছবিগুলো এত সুন্দর কেন! হাসি

মইনুল রাজু এর ছবি

বেশি সুন্দর। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

মাসুদ সজীব এর ছবি

লম্বা বিরতি দিয়ে এই পর্ব লিখলেন চিন্তিত

আপনার এই পর্বের জন্যে অনেকদিন অপেক্ষায় ছিলাম এইটুকুতেই বুঝতে পারছেন প্রথম পর্বটা কত উপভোগ করেছি। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি আসুক। হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

মইনুল রাজু এর ছবি

পরের পর্ব যেন তাড়াতাড়ি আসে, সে চেষ্টায় থাকবো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। চলুক

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

ওডিন এর ছবি

ইতিহাস লেখা ছবি - তিনটেই চমৎকার লাগলো।

সাগ্রহে পরের পর্বগুলোর অপেক্ষায় থাকলাম। হাসি

মইনুল রাজু এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

anik এর ছবি

কপালে থাকলে একদিন যাবো স্যার ... হাসি

মইনুল রাজু এর ছবি

চলুক

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ, অসাধারণ, অসাধারণ আবারও বলতে হয় অসাধারণ।
And its really 'the Heavenly"
গৌতম হালদার

মইনুল রাজু এর ছবি

চলুক হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

অতিথি লেখক এর ছবি

অনবদ্য। ছবি গুল বেশি ভাল লেগেছে। কিন্তু ছবি টা মনে হচ্ছে একটু বেশি ব্রাইট লাগছে। আসলে কি একদম এরকম ই। যদিও লেখা পড়েই ঘোরার কিছুটা স্বাদ মিটল। হাপিত্যেশ করে বসে রইলাম আর লেখার জন্য।

---------------------------
ইচ্ছে মত লিখি।
http://icchemotolikhi.blogspot.in/

মইনুল রাজু এর ছবি

ছবিগুলোর ব্যাপারে আগের মন্তব্যে একটু বলেছিলাম, সেখান থেকে কপি করে দিচ্ছি- "ছবিগুলো গুগল প্লাস-এ আপলোড করা। ওরা দেখলাম নতুন এনহ্যান্সার ফিচার যোগ করেছে, যার কারণে কিছু ছবি কালার এনহ্যান্সড্‌। আমি নিজেও বেসিক কিছু জিনিস, যেমন ব্রাইটনেস, শ্যাডো চ্যাঞ্জ করি। তবে, পানির রঙ বা নারকেলের গাছের যে রঙগুলো আছে, সেগুলো আসলেও এরকমটা রঙ্গিণ।"

ধন্যবাদ। হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।