‘ট্যাঙ্গো রবিন?’- সারা ফিসফিস করে বলে।
রবিন কোন জবাব না দিয়ে নিরেট গাম্ভীর্যের সাথে নাচের মুদ্রায় শরীর দোলাতে থাকে। মৃত্যুর সৌন্দর্যে, জীবনের শক্তিময়তায়, অপাপবিদ্ধ সরলতায়।
‘ধ্যাৎ তোমার এই রদ্দিমার্কা হিপ হপ মিউজিকের সাথে আর যাই চলুক, ট্যাঙ্গো চলেনা, আমি তো পা ই মিলাতে পারছিনা’।– সারা নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে বলে।
-‘হোর্হে লুই বোর্হেস একবার বলেছিলেন ট্যাঙ্গো হলো পৃথিবীর সমস্ত শোকার্ত প্রেম-কাতর মানুষের নাচ’-সারাকে একেবারে ছুটে যেতে না দিয়ে রবিন অস্ফুটে বলে।
‘আহ, আবার শুরু হলো তোমার বুলি কপচানো’- সারা বিরক্তি ঢাকার চেষ্টা করেনা, ‘ওয়ান ওয়ে টিকেট ধরনের গানের সাথে ট্যাঙ্গো! এ কথা শুনেছে কেউ কোন দিন?’
-‘সুর তো জীবনের মতোই অর্থহীন, নিজের ইচ্ছা মতো মনের মধ্যে একটা বাজিয়ে নিলেই হয়। এলভিস মিউজিক নিয়ে বলেছিলেন...’
সারা আর সহ্য করতে পারেনা, রবিনের হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে গটগটিয়ে বাইরে চলে যায়।
খুব জমজমাট এই বারটির নাম গ্রুপ থেরাপী। প্রতি সপ্তাহেই সরগরম করা সব আইডিয়া নিয়ে পার্টিবাজ লোকজনের মাথা খারাপ করে দেয়। এই শনিবারের থিম হলো ‘ এইটিজ নাইট’। ফিশিং নেট , হেডব্যান্ড পড়া রংচঙে পোশাকে সব মেয়েরা আর মায়ামি ভাইস ফ্যাশনের কাপড়-চোপড় পড়া মেনিমুখো সব ছেলেদের ভীড়ে ভেতরে হাঁটা দায়, তার উপর এত জোরে গান-বাজনা চলছে যে মাথা ধরে যাওয়ার অবস্থা। সারা রেলিংঘেরা বারান্দায় দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরায়। তারপর কাচের চোখে কাচের দেয়ালের মধ্য দিয়ে বারের ভেতরে তাকিয়ে থাকে। শব্দের ধাক্কা এখানেও এসে লাগছে, তবে বাড়াবাড়ি ধরনের না, কেমন যেন থেমে থেমে আদিবাসীদের বাজানো ঢোলের বাজনার মতো শোনাচ্ছে। দরজার পাশেই একটা নোটিশ বোর্ড। তাতে বড় বড় অক্ষরে লেখা, ‘এইটিজ নাইটঃ ওয়ক ইন, স্টাম্বল আউট!’। নিচে ককটেইলের তালিকা, বাহারী সব নাম। জি স্পট, সেক্স অন দ্য বিচ, উইচ টিটস, স্লিপারী নিপলস, ফাজি স্ক্রু, লিকুইড কোকেইন, কাম শট, সেক্সী উইগলস...সারা আর পড়তে পারেনা, বিরক্তিতে ওর মুখ কুঁচকে আসে। আজকাল সব কিছুতেই দুই এক ফোটা সেক্স মিশিয়ে না দিলে লোকের যেন আর চলছে না, খাওয়া, ঘুম আর সেক্স এই অসার জীবন আর কতদিন।
আবার ভেতরে তাকায় ও। উদ্দাম নাচানাচি, ঝাঁকা ঝাঁকি চলছে। এর মধ্যে লুইস আর রেবেকাকে আলাদা করে চোখে পড়ল ওর। মধ্য তিরিশের শান্ত-সুশীল এই দম্পতি কখনই কোন পার্টিতে এভাবে উন্মাদের মতো নেচে বেড়ায় না, সারা একটু আশ্চর্য হয়, ওদের সাথে গলাগলি করে রবিনকেও উল্টোপাল্টা লাফাতে দেখে ওর সন্দেহ আর বেড়ে গেল।
আকাশ কালো হয়ে আসছে। বৃষ্টি নামতে পারে যে কোন সময়ে। অনেক হয়েছে এইসব পার্টিবাজি, সিগারেট শেষ করেই বাড়ি ফিরে যাব-সারা ভাবে। গাড়ি পার্ক করা আছে একটু দূরে। বৃষ্টি নামলে ভিজতে হবে। পার্কিং লটে রবিনের গাড়িটা চোখে পড়েছে ওর, নতুন মডেলের স্পোর্টস কার, সারা গায়ে বিচিত্র সব আঁকিবুকি - রবিনের জীবনের মতোই রঙিন আর দুরন্ত। ওদের পরিচয় অনেক দিনের, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটাও খারাপ না, যদিও ছোট বড় অনেক বিষয় নিয়েই ওদের মাঝে ঝগড়া হয়। অদ্ভুত প্রাণচাঞ্চল্যের কারণে বন্ধু মহলে রবিনের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বি, কিন্তু সারা তার থোড়াই পরোয়া করে। নিত্য নতুন গায়ে জ্বালা ধরানো সব কান্ডকীর্তি করে বেরালেও রবিনকে ও একেবারেই দূরে সরিয়ে দিতে পারেনা । যে কোন প্রয়োজনে , যে কোন সময়ে ডাকলেই যাকে পাশে পাওয়া যায় , তাকে সরিয়ে দেয়া মোটেও সহজ কোন কাজ না। কিন্তু সবার চেয়ে আলাদা ,ব্যতিক্রমী হবার নেশায় আনকোরা সব চমক নিয়ে হাজির হয়ে বাজিমাত করা ওর স্বভাবে পরিণত হয়েছে। যেমন আজকের পার্টির কথাই ধরা যাক, সবাই এসেছে আশির দশকের পোষাকে, আর রবিনের গায়ে বুনো পশ্চিমের কাউবয়দের পোষাক। রাইডিং বুট, জ্বলে যাওয়া জিন্স, স্ট্র হ্যাট, কোচকানো শার্ট, তার উপরে ভেস্ট এমনকি গলায় বাঁধা রুমাল পর্যন্ত আছে। স্বাভাবিক ভাবেই ও সবার মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেকের কৌতুহল আর আগ্রহের জবাব দিচ্ছে এক কথায়-‘বলা হয়েছে এইটিজ নাইট, কোন শতকের এইটিজ তা তো কেউ নির্দিষ্ট করে বলেনি’। কী আর বলার থাকে এমন সপ্রতিভ জবাবের পরে!
সারা কিছু একটা ভেবে আবার বারের ভেতরে তাকায়, রবিনের বারবার অনুরোধেই এখানে আসা, কিছু না বলে চলে গেলে খারাপ দেখাবে। ভেতরে উকি দিয়ে দেখে রবিন এখনও ব্যস্ত, নাচে। সবার তুমুল হাততালির মধ্যে ট্যাপ ড্যান্স ধরনের কিছু একটা নাচছে ও, কিন্তু হাত পা বড্ড বেশি ছোড়াছুড়ি করে, দেখতে অনেকটা আইরিশ জিগের মতো লাগছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে যদিও আইরিশ জিগ না, বাজছে হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া। এনিয়ে কিছু বলতে গেলেই তো আবার সঙ্গীত-কলা-শিল্প ইত্যাদি নিয়ে লম্বা-চওড়া বক্তৃতা শুনতে হবে। পারেও ছেলেটা, দুনিয়ার সব বই পড়ে পড়ে এক চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া হয়ে গেছে, কী ভাবে আবার যেন সব মনেও রাখে।
আরো কিছুক্ষন থাকবে না চলে যাবে এ নিয়ে সারা যখন দ্বিধায় ভুগছে, ঠিক তখনই হুড়মুড় করে দরজা ঠেলে প্রথমে লুইস আর রেবেকা, তাদের পেছন পেছন রবিন বেরিয়ে এল। লুইস আর রেবেকার চোখ মুখ থেকে অপার্থিব সুখের এক দ্যুতি ঠিকরে বেরিয়ে আসছে, সারা বুঝে নিল ওরা নির্ঘাত রবিনের পাল্লায় পড়েছে। কিন্তু ইদানিং পার্টি ড্রাগস তো সব টিন এজারদের দখলে চলে গেছে, যাই হোক রবিনকে চেপে ধরলেই ব্যাপারটা জানা যাবে। বিগলিত ভঙ্গীতে হাই হ্যালো করেই ওরা ঝটপট একটা ট্যাক্সি ডেকে বিদায় নিল। এটাও সারার কাছে অদ্ভুত মনে হলো, এ ধরনের পরিস্থিতিতে লোকজন সাধারণত ভাঙ্গা রেকর্ড আর না হলে নিদেন পক্ষে নন স্টপ বক বক করার যন্ত্রে পরিণত হয়। ওরা চলে যেতেই চোখে সন্দেহ আর প্রশ্ন নিয়ে ও রবিনের দিকে তাকায়।
রবিন খুব মন দিয়ে কিছু একটা রোল করছে, সারা ভালো করেই জানে , সেটা শুধু মাত্র তামাক না, অন্তত শনিবার রাতে তো হতেই পারেনা। হ্যাশ বা মারিহুয়ানা ছাড়া শুধু তামাক টানার ছেলে রবিন না এই রাতে। সারা সে প্রসঙ্গে যায়না, হাতের ইশারায় চলে যাওয়া দম্পতির দিকে ইশারা করে জানতে চায়-
‘লুইসদের ঘটনা কী আজ রাতে?’
-‘সেক্সট্যাসি’-রবিন এক কথায় উত্তর দেয়, তারপর রোলটা ধরিয়ে গভীর এক টানে ফুসফুস ভর্তি করে ফেলে।
‘মানে?’-সারার কন্ঠে উৎকন্ঠা।
-‘বেশ কিছুদিন যাবৎ ওরা ঘ্যান ঘ্যান করছিল যে কাজের চাপে ওদের সেক্সলাইফের বারোটা বেজে গেছে। এমনকি ছুটির দিনগুলোতেও এত ক্লান্ত থাকে যে ওদিকে কারো মনই যায়না। এভাবে চলতে থাকলে ওরা আর দম্পতি না রুমমেটে পরিণত হবে। তাই আজ রাতে ওদের রাম এন্ড কোকের মধ্যে ভায়াগ্রা আর এক্সট্যাসি মিশিয়ে দিয়েছি। হাহাহা। অন্তত আজ রাতে ওরা মেঘের মধ্যে লুকোচুরি খেলতে খেলতে উইল বি হাম্পিং লাইক রাবিটস’।
‘তারপর সকালে উঠে ওদের মুড যখন আকাশ থেকে ধপ করে মাটিতে নামবে তখন কী হবে?’-বিরক্তিতে সারার মেজাজ খিঁচড়ে আসে।
-‘কাল কী হবে সেটা ওদের ব্যাপার। ইয়েস্টারডে ওয়াজ হিসট্রি, টুমরো ইজ আ মিসট্রি অ্যান্ড টুডে ইজ আ গিফট, দ্যাটস হোয়াই ইটস কলড প্রেজেন্ট’।
সারা আর কথা বাড়ায় না। উঠে গিয়ে নিজের পার্স হাতে নিয়ে চলে যেতে উদ্যত হয়। রবিন এসে ওর পথ আটকায়।
‘প্লীজ সারা, এতদূর এসে আমার সাথে একটাও ড্রিংক না করে চলে গেলে হবে? শুধু একটা ড্রিঙ্ক প্লীজ। আমি জানি তোমার কী পছন্দ, একটু দাঁড়াও আমি নিয়ে আসছি’।
সারাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওর হাতে জ্বলন্ত তামাকের রোলটা গছিয়ে রবিন ভেতরে চলে যায়। পুড়তে থাকে মারিহুয়ানার গন্ধ নাকে এসে লাগে, এক সময় এই বস্তু ওর পরম বন্ধু ছিল। কী ভেবে একটা টান দিতেই সারার মাথা ঝিম ঝিম করতে শুরু করে, কিন্তু একটু পরেই আবার হালকা লাগা শুরু হয়। খুব একটা খারাপ না। রবিন এসে ওর হাতে একটা টেকিলা সানরাইজ তুলে দেয়। আসমানী ধোঁয়ার সাথে এর খুব চমৎকার জুটি মেলে। দুজনেই রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকায়,রবিনের হাতে একটা রুটস বিয়ার।
‘কতদিন হলো সারা?’
-‘এই তো, প্রায় আঠার মাস। এখনও মনে হয় গতকালের ঘটনা’-সারা শান্ত স্বরে জবাব দেয়।
আঠার মাস আগে এক অস্বাভাবিক দুর্ঘটনায় সারার প্রেমিক মাইক মারা যায়। ঐ সময় ওরা শহরের বাইরে আরো বেশ কিছু বন্ধুদের সাথে একটা হ্রদের পাড়ে ক্যাম্পিং করছিল। হঠাৎ করে এক টর্নেডো এসে হামলা করে, হ্রদের পাড়ের একটা বড় গাছ উপড়ে যায়, মাইক তখন ঐ গাছের সাথেই হাউসবোট বাঁধার চেষ্টা করছিল। ওর উপরেই পড়ে গাছটা। হেলিকপ্টার নিয়ে প্যারামেডিকস আসতে আসতেই শেষ। এত পলকা মানুষের জীবন। সেই থেকে সারা নিজেকে একেবারে গুটিয়ে নিয়েছে। কারো সাথেই তেমন করে যোগাযোগ রাখেনা। নিজের ঘরের প্রতিটা দেয়ালই মাইকের ছবিতে ঢাকা। ওর মাইস্পেস বা ফেসবুক স্ট্যাটাস এখনও- ইন আ রিলেশনশীপ।
‘আমার মনে হয় কী জানো? মাইক যদি কোনভাবে তোমার সাথে যোগাযোগ করতে পারত তাহলে আমার মতো করেই বলত মুভ অন। অনেকদিন তো হলো, আর কতকাল এরকম নিরামিশ হয়ে থাকবে?’
-‘জানিনা। এসব নিয়ে কথা বলতে ভাল্লাগেনা’।
‘তুমি চাইলে আমি সাহায্য করতে পারি, পুরানো কষ্ট ভুলে কীভাবে জীবনের গতির সাথে তাল মিলিয়ে চলা যায় সে ব্যাপারে আমার খুব কার্যকর কিছু উপায় জানা আছে’-শেষদিকে রবিনে স্বর একটু চটুল শোনায়, পরিবেশ হালকা করে দিতেই হয়তো ।
-‘জানি কী বলবে। তোমার মতো ছেলেদের কাছে তো সব কষ্টের একটাই সমাধান- টু শ্যাগ এনিথিং দ্যাট মুভস। শারীরিক ভালোবাসার উর্ধ্বে তোমরা কোনদিন উঠতে পারলেনা। মেয়েরা হয়তো তোমাদের কাছে ইজাকুলেশনের টুল আর নয়তো বড়জোর বাচ্চা উৎপাদনের যন্ত্র। সত্যিই ঘৃনা হয় তোমাদের অথর্ব জীবনবোধ দেখলে’-সারা ক্ষোভ ঝাড়তে দ্বিধা করেনা।
‘আরে ধ্যাৎ, তুমিতো পুরোই ক্ষেপে গেলে দেখছি। শোন মেয়ে, জীবন অনেক সময় একটা দুষ্টচক্রে বন্দি হয়ে যায়, ওখান থেকে বের হতে গেলে ঝটকা লাগাতে হয়। হয়তো ধীরে ধীরে কষ্টে, যন্ত্রণায় পুড়ে মর, অথবা কষ্টকে ভুলে যেতে সমান অথবা বেশি পরিমাণ আনন্দের আমদানী ঘটাও জীবনে । হুট করে হবেনা, কিন্তু আস্তে আস্তে তুমি বদলে যাওয়া জীবনের সাথে মানিয়ে নিতে শিখে যাবে। যে কোন একটা বা দু’টা ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো জীবন কাটিয়ে দেয়া জীবন-যৌবন আর সময়ের নিষ্ঠুর অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়। মেয়েদের একটা বড় সমস্যা হলো কষ্ট পেতে পেতে তোমরা সেটাকেই মেনে নাও, তাতে অভ্যস্তও হয়ে যাও। প্রথমে সেটাকেই নিজের নিয়তি বলে একে বদলে দেয়ার চেষ্টা করতেও ভুলে যাও আর পরে নিজের উপরেই এক অদ্ভুত মায়া বা অনুকম্পা তোমাদের গ্রাস করে, আবার এই মায়াবোধটাকেই তোমরা ঢাল বানিয়ে জীবনের দুর্গম সব পথে চলা থেকে দূরে থাক বা নিজের ব্যর্থতার অজুহাত হিসাবে ব্যবহার কর। ব্যালেন্সের উপরেই পুরো পৃথিবীটা টিকে আছে, নিজের জীবনেও সেটা থাকা জরুরী’।
-‘আমারা মেয়েরা কীভাবে বাঁচি বা ভাবি সেটা পালটে দিতে তোমরা পুরুষেরা এত ব্যস্ত কেনো? তোমরা নিজেরা তো বিবর্তনের হাজার বছরেও এক বিন্দু পাল্টাওনি। গুহাবাসী মানবেরা যেমন কাঁচা বা ঝলসানো মাংস খেতে খেতেই চুলের মুঠি ধরে মাটিতে পেড়ে ফেলে গুহাবাসী মানবীদের সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হতো, হাজার বছর পরেও তোমরা পুরুষেরা শুধু ভাষা বা ভঙ্গী পালটে একই ধরনের কাজ প্রতিদিন করে যাও। সেই গুহাযুগেও মেয়েরা যেমন কাঠিতে গাঁথা মাংসের পাশাপাশি হঠাৎ একটা ঘাসফুল উপহার পেলে বর্তে যেত, আজও মেয়েরা তোমাদের পৌরুষের পাশাপাশি সময়ও চায়, ভালোবাসা চায়, যত্ন চায়। মেয়েদের অন্তর্বাসের মধ্যে ঢুকতে তোমাদের প্রয়োজন শুধ্য এক চিলতে জায়গা, আর তোমাদের সেখানে যেতে দিতে মেয়েদের লাগে এক চিলতে অনুভূতি । এই সহজ ব্যাপারটাই তোমরা বোঝনা, বা বুঝলেও মানতে চাওনা’। -সারা রীতিমত ফুসে উঠে বলে।
রবিন কাছে গিয়ে সারাকে জড়িয়ে ধরে। সারার পীঠে , মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে আন্তরিক কন্ঠে বলে ওঠে-‘সারা, সারা, প্লিজ শান্ত হও। আমি তোমাকে পছন্দ করি, আমি তোমাকে ভালোবাসতে চাই। চলো আমরা মিলে সময়কে থামিয়ে দেই, নতুন করে শুরু করি সব, জীবনটাকে পালটে দেই। তুমি একটু ভেবে দেখ, আমি তোমার জন্য আমার গাড়িতে অপেক্ষা করব’।
রবিন সারাকে রেখে অন্ধকারের মধ্যে মিলিয়ে যায়। বড় বড় ফোটায় আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামে। সারা আরেকটা সিগারেট ধরায়। সিগারেট শেষে সারা উঠে পার্কিং লটের দিকে হাঁটতে শুরু করে।
মন্তব্য
শেষটা বড় দ্রুত হয়ে গেল। মানে একবারে সময় না দিয়েই রবিন গাড়িতে অপেক্ষা করতে লাগল আর সারাও বড্ড দ্রুত পার্কিং লাটের দিকে হাঁটা ধরল। মনে হচ্ছে লেখকেরও বেশ তাড়াছিল গল্পটা শেষ করার।
এমন মধুর একটা গল্প আরেকটু রসিয়ে শেষ না করার জন্য লেখকের ফাঁসি চাই।
রবিন-সারার বাকি গল্পও শুনতে চাই।
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
মিউজিশিয়ান ভাই, মেয়েগো সিগারেট খাইতে কতো সময় লাগে খিয়াল কৈরা দেখছেন? ঐটুকু সময়ে জিন্নাহ মিয়া দেড় আউন্স স্কচ সহযোগে ভারতবর্ষ ভাগ কইরা ফালাইলো আর একটা মাইয়া ছুড একটা ডিসিশন নিতে পারব না? লেখকের তাড়াহুড়াতো আছিলই
তারপর?
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
টুইস্ট দেই নাই বইলা বিদগ্ধজনেরা এই কিচ্ছাডারে ভালো পায় নাই, সব মিসমার হয়ে গেল
বিদেশীদের গল্প!!!!!!!!!!!!! বিদেশীরা খুব খ্রাপ। যাকে বলে একেবারে চ্রম খ্রাপ।
গল্প ভালো হয়েছে। শেষটায় এসে এতো তাড়াহুড়া করার কী দরকার ছিল? এমনিতেই বেশ বড় হয়েছে। আরো একটু বড় হলেই বা কী আসতো যেতো?
বিদেশিনী বানান যদি এটা হয় তাহলে বিদেশী বানান কি বিদেশি হবার কথা না!!! আমার ঠিক মনে আসছে না।
ধন্যবাদ বসেরা, নাদান লেখকের আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু কথা বলার আছে। মন্দিয়া পড়তে এই জন্য বলছি যে খেয়াল করে দ্যাখেন সারার গাড়িও কিন্তু ঐ লটেই পার্ক করা। সে কোন গাড়িতে গিয়া উঠবে সেইটা আমাদের জানা নাই। হয়তো সে বিরক্ত হয়ে নিজের গাড়িতে উঠে হন হন করে বাড়ি চলে যাবে, আর নয়তো রবিনের গাড়ির ব্যাকসীটে উদ্দাম প্রেমলীলা চালাবে, কোনটা সেইটা তো আমরা জানিনা, নিজেরাই ভাইবা লন
আপনে কইলাম আমারে কুচিন্তা করার উস্কানি দিতেছেন।
উস্কানি না দিলেও আমি কুচিন্তাই করছি । আসলে বার্ধক্যজনিত কারণে কোনপ্রকার হাড়ের ব্যাথা এখনো আমাকে জ্বালাতন করা শুরু করে নাই। আর তাছাড়া সারা'র বয়সও অল্প। এই বয়সে তার এবং আমার কারোরই রেগে মেগে নিজের গাড়িতে চলে যাওয়া শোভা পায় না। পায়, বলেন?
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চিন্তার কুনো কুয়োরানি বা সুয়োরানি নাই, সাদা বা কালো সবই বিলাই
সঠিক কুনো খেলা ছাড়াই গল্ফ শ্যাষ, এইডা কুনো গল্ফ হইল?
বাঘুরে আগুন নিয়া খেলা কি সঠিক?
আরেকটু বাড়তে দিলে আরেকটু জমতো। ওদের কনভার্সেশন জমতেছিলো ভালো!
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
তাইলে আরেকটা পর্ব নামাই কী কস? বাঘায় কইল পুরা কুপাকুপি দিয়া গলফ না লিখলে আমারে নাকি লৌড়াইব।
বস, একটানে পড়ে গেলাম।
তোমার এই জিনিসটা আমার খুব ভালো লাগে---তুমি একের পর এক, নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো, হুমকি ছুঁড়ে দাও নিজের দিকেই----
একের পর এক নানান ফর্মে লেখার চেষ্টা তোমার চলতে থাকে----এই ব্যাপারটা আমি আর কারো মাঝে দেখি না----প্রতিবারে মনে হয়, আজ কে মামুন কী লিখবে? গল্প?কবিতা? ছড়া? সাই-ফাই??
তোমার এই সর্বত্রগামী হবার প্রচেষ্টার সাধুবাদ জানাতেই হয়----কায়মনোবাক্যে কামনা করি, তুমি সব্যসাচী হও----
ধন্যবাদ বস। এরপর একটা সাইন্স ফিকশন লিখব ভাবছি, আমার প্রিয় অনিকেত ভাইরে নকল করে
বস, দুর্দান্ত হয়েছে, আপনার এই গল্পের ব্যাপারে আমার একটা কন্সপিরেসি থিওরি আছে। জিমেইলে বলব । অসাধারণ আরেকটি লেখা, প্রতি প্যারাতেই কোট করার মত একাধিক লাইন ।আমরা পরবর্তী ঘটনা জানতে চাই, আশা করি ২য় পর্ব পাবো খুব শীঘ্রই
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
কী কইলি বুঝলাম না
রবিন পোলাডা তো ভালোই কথা কইতে পারে ঠিক পর্যাপ্ত পরিমান ফাঁক রেখে দিসে।
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...
হ, ধুগোর থিকা শিখছে।
১. জি স্পট, সেক্স অন দ্য বিচ, উইচ টিটস, স্লিপারী নিপলস, ফাজি স্ক্রু, লিকুইড কোকেইন, কাম শট, সেক্সী উইগলস...
২. উইল বি হাম্পিং লাইক রাবিটস
৩. ইয়েস্টারডে ওয়াজ হিসট্রি, টুমরো ইজ আ মিসট্রি অ্যান্ড টুডে ইজ আ গিফট, দ্যাটস হোয়াই ইটস কলড প্রেজেন্ট
৪. ইন আ রিলেশনশীপ
৫. কাজের চাপে সেক্সলাইফের বারোটা
৬. মুভ অন
৭. শ্যাগ এনিথিং দ্যাট মুভস।
৮. ইজাকুলেশনের টুল
৯. সাদা বা কালো সবই বিলাই
" প্রতি প্যারাতেই কোট করার মত একাধিক লাইন "
অতঃপর,
মেয়েদের অন্তর্বাসের মধ্যে ঢুকতে তোমাদের প্রয়োজন শুধ্য এক চিলতে জায়গা, আর তোমাদের সেখানে যেতে দিতে মেয়েদের লাগে এক চিলতে অনুভূতি
হায় হায় আপ্নে এত মন্দিয়া পড়ার টাইম পাইলেন কেমনে? আমিতো হারিকেন দিয়া খুইজাও আপ্নেরে পাইনা, গত সপ্তায় ফোন দিছিলাম।
তুই আর কি কি বিষয়ে লিখতে পারিস রে? কারো সাথে প্রতিযোগিতা করছিস নাকি?
কী যে বলিস বন্ধু, খোলা মাঠ পেয়ে মনের সুখে লম্ফ ঝম্ফ করছি আর কি, ভালোমানুষেরা ছা সব চারদিকে তাই কেউ গালি গালাজ করেনা।
আপনারে ঈর্ষা করলে আপনি খুশি হবেন, নাকি হিংসা করলে? জানান। আমি লেখক হইতে চাই; আর লেখক হইতে চাইলে নাকি অন্য লেখকের প্রতি এই দুইটা অনুভূতির কোনটা না কোনটা থাকতে হয়!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতম আপ্নে যদি এইসব বলেন তাইলে আর যাই কই?
হিংসা ঈর্ষা চাইনা, পারলে কিছু বেলের শরবত খাওয়াইয়েন
ভালো গল্প। আর কিছুটা বাড়তে দিলে আরো জমতো।
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি।
_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি। ( জয় গোস্মামী)
ধন্যবাদ। চেষ্টা করব আরো ভালো লিখতে।
সারার সংলাপগুলো একটু নাটকীয় মনে হয়েছে
তবে শেষে তাড়াহুড়ার জন্য আপনাকে ঝাড়ি দেয়া হলো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
তাড়াহুড়া না করে উপায় আছে, এমনিতেই গল্প লম্বা হয়ে গেছে। আমি আসলে ভাবছিলাম দেখাব যে সারা তার প্রেমিক মারা যাওয়ার পর লেসবিয়ান হয়ে গেছে, শি হেটস মেন ...এইজন্য এইসব নাটকীয় ডায়লগ। যাই হোক এই গল্পটাই পাঠকদের খাওয়ানো কঠিন, তাই আর বেশি বাড়াবাড়ি করিনি। ভাবিষ্যতে আরো রগরগে করে লেখা ইচ্ছা আছে
শেষটা খুব তাড়াতাড়ি হয়ে গেল মনে হচ্ছে। তবে ভীষণ আধুনিক একটা গল্প পড়লাম। লেখার গতি দুর্দান্ত লাগল। আপনি তো দেখা যায় সব ধাঁচের লেখাতেই সেইরকম বস পাবলিক!
নতুন মন্তব্য করুন