এই লেখাটি লিখতে গিয়ে কঠিন যন্ত্রণায় ভুগলাম কয়েকদিন। যেহেতু বিষয়টা দরকারী হলেও বেশ কাঠ খোট্টা, তাই একবার লিখলাম গল্পের ছলে, নিজের কাছেই ভালো লাগেনি, মুছে দিয়ে আবার সিরিয়াস টোনে লিখলাম টমাস আলভা এডিসনের উদ্ধৃতি দিয়ে- এটাও দুই এক প্যারা পরেই কেমন যেন বিস্বাদ লাগতে লাগল। অলেখক বা কুলেখকের রাইটার্স ব্লকেজ কথাটা বড়ই হাস্যকর শোনায়, তাই কাদায় গেড়ে যাওয়া মহিষের গাড়ির চাক্কা ঘোড়াতে প্রিয় লেখদের পুরানা ব্লগগুলো পড়তে শুরু করলাম। তাতে কাজ হলো কিনা জানিনা, তবে নিজের মতো করে লিখে যাওয়ার সৎসাহসটা ফিরে এসেছে।
আচ্ছা মূল প্রসঙ্গে আসি, আমার আজকের লেখার বিষয় বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক্স শিল্প বিকাশের পথে প্রধান সমস্যা সমূহ। আমি এই ব্যাপারে আগে থেকেই উৎসাহী ছিলাম, কিন্তু তারপর এনকিদুর জয়স্টিক সংক্রান্ত লেখাটি পড়ে আমার আগ্রহ আরো বাড়ে, আমি দেশে প্রচলিত নিয়ম নীতি সম্পর্কিত বই পুস্তক যোগাড় করি, দেশে বারবার ফোন করে তথ্য-উপাত্ত ইত্যাদি সংগ্রহ করি। ইলেক্ট্রনিক্স মানে এখানে অবকাঠামো উন্নয়নে অপরিহার্য এবং নিত্য ব্যবহার্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি বুঝিয়েছি। এই শিল্পের সম্ভাবনা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নাই। একে উন্নয়নশীল দেশ আমাদের, তার পর রয়েছে বিশাল স্থানীয় ভোক্তা বাজার। গ্রামে গঞ্জে বিদ্যুতায়নের ফলে এই জাতীয় পন্যের চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। খসড়া হিসাবে বছরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার বাজার আমাদের দেশে , চাহিদার গ্রাফ বরাবরই উর্ধ্বমূখী । দক্ষ প্রকৌশলী এবং সস্তা অদক্ষ শ্রমিকের প্রাচুর্য আমাদের দেশে। এই শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিও সহজলভ্য। অবকাঠামোগত চাহিদাও এমন কিছু হাতি ঘোড়া নয় যে তা অর্জন করা দুঃসাধ্য। স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি উন্মুক্ত আছে বিশাল আন্তর্জাতিক বাজার। ওয়ালমার্টে বাংলাদেশী শার্টের পাশাপশি মেড ইন বাংলাদেশ টোস্টার বা বৈদ্যুতিক বাল্ব বিক্রি হচ্ছে এটা মোটেও ছেঁড়া কাথা গায়ে লাখ টাকার স্বপ্ন নয়। তো প্রশ্ন হলে তাহলে গার্মেন্টস শিল্পের মতো ইলেক্ট্রনিক্স শিল্পের বিকাশ সেভাবে ঘটছে না কেন?
মূল কারণ হলো উপযুক্ত পরিবেশের অভাব। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ কর্মঠ এবং শান্তিপ্রিয়। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যথোপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে উদ্যোক্তাদের একেবারে প্রাথমিক চাহিদাগুলো পূরণ করে দিতে পারলে তারা নিজেরাই এই শিল্পকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। এর সাথে যদি সরকারী উদ্যোগে আর এন্ড ডি, ডিজাইন এবং মোল্ডিং এর মতো অতি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে একটু সহায়তার হাত বাড়ানো যায় তাহলে দশ-পনের বছরের মধ্যেই আমরা চীন না হোক অন্তত থাইল্যান্ড বা ভিয়েতনামের পর্যায়ের পৌছে যেতে পারব।
বর্তমানে এই শিল্প স্লো পয়জনিংয়ের শিকার। সরকারের অদূরদর্শিতা এবং বিমাতা সুলভ আচরনের জন্য উদ্যোক্তারা ধুঁকে ধুঁকে মরছেন। এর আগে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তারা দায়সারা গোছের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েই ভেবে বসেন তাদের দায়িত্ব শেষ। রাজস্ব বোর্ডে নির্ঘাৎ গাঁজার চাষ হয়, আর নয়তো অন্তত কল্কি ফ্রী। তারা আমদানীকৃত ইলেকট্রনিক্সের উপর খাপছাড়া শুল্ক বসিয়েই হাত ধুয়ে ফেললেন। মূলত সরকার আর আমদানী কারকদের ইঁদুর-বিড়াল খেলার কারণেই এই শিল্পের সুষম বিকাশ প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের উচিৎ ছিল আমদানীকারক বা দেশি উদ্যোক্তা কাউকেই গাঁজাখুরী আইনের বলি না বানিয়ে দূরদর্শী এবং বাস্তব সম্মত নিয়ম নীতির প্রয়োগ করা, আমার মাঝে মাঝে মনে হয় তারা নিজেরাই জানেনা যে তারা আসলে কী করছে।
যাক এবার ইঁদুর-বিড়াল খেলার ধারা বিবরণী শোনেন, শেষ পর্যন্ত পড়ার ধৈর্য রাখতে পারলে কিছু উত্তর পেয়ে যাবেন বলে আশা করি।
মাথা মোটা রাজস্ব বোর্ড ভাবল যে যদি, বিদেশে উৎপাদিত পণ্যের উপর বিশাল আমদানী শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দেয়া যায়, তাহলে দাম বেশী পড়ে যাওয়ায় আমদানী নিরুৎসাহিত হবে, স্বদেশী পণ্যের চাহিদা শণৈঃ শণৈঃ বাড়বে। এভাবে দেশী শিল্পের চারার মাথায় তারা পানি ঢালতে লাগল কিন্তু একই সাথে কাস্টমস এর নিয়ম নীতিতে প্রচুর ফাঁক ফোকড় আর সীমাহীন দূর্নীতি রেখে দিয়ে গোড়ায় করাত চলতে লাগল পূর্ণোদ্যমে।
আমদানী শুল্কের বহর দেখেন- ফিনিশড গুডসের উপর মূল শুল্ক ২৫%, তার সাথে আছে ১৫% ভ্যাট এবং পণ্য বিশেষে ২০% সম্পূরক কর, এর সাথে ৫ থেকে ৮% আরো নানা হাবি জাবি। ভুলেও সোজা হিসাবে যোগ করতে যাবেন না, কারণ দেশরত্ন কাস্টমস কতৃপক্ষ আপনার আমার মতো সোজা হিসাবে বিশ্বাসী না, তারা এগুলো জটিল কম্পাউন্ডিং মেথডে হিসাব করেন, যে কারণে আমদানী শুল্ক গিয়ে দাড়ায় প্রায় ৮০% এর কাছাকাছি যা বর্তমান বিশ্বে বিরল। ইম্পোর্টাররা তো আর বেকুব না, ব্যবসায় টাকা পয়সা খাটিয়ে তো কেউ বসে বসে লস করবেনা। তারা কাস্টমস এজেন্ট-অসাধু অফিসারদের যোগ সাজশে কাগজ পত্রে ভেজাল করে শুল্ক মুক্ত কম্প্যুটার দেখিয়ে ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে আসতে শুরু করল। হারামখোরদের বিরাট লাভ, আর দেশের প্রাপ্তি বাস্তবিক অর্থেই আইক্কাওয়ালা ব্যাম্বু। অন্যান্য সব পণ্যের ট্যাক্স আকাশ ছোয়া রেখে শুধু কম্প্যুটার গুডস শুল্ক মুক্ত ঘোষনা করাই একটা বিরাট বেওকুফি ছিল, সেই প্রসঙ্গে অন্য একদিন আসা যাবে।
এভাবে কিছুদিন চলার পর দেশি উদ্যোক্তাদের চাপে সরকার প্রতিটি আমদানীতে ঋণপত্র খোলা বাধ্যতামূলক ঘোষনা করল, লেনদেন সব ব্যাংকের মাধ্যমে হবে, এতে নাকি বৈদেশিক মুদ্রা পাচার বন্ধ হবে (এই কৌতুকটায় হাসতে পারলাম না বলে দুঃখিত) । তার সাথে প্রি শিপমেন্ট ইন্সপেকশনও বাধ্যতা মূলক করে এন বি আর তাদের হাতের শেষ কার্ডটিও খেলে ফেলল। অসৎ ব্যবসায়ীরা তাদের চেয়ে অনেক বেশী কুবুদ্ধি রাখে ঘটে, তারা আস্তিন থেকে লুকানো বিষাক্ত কার্ডটি বের করে যুযুৎসুর এক প্যাঁচে সরকারকে নক আউট করে দিল, আর দেশী শিল্পোদ্যাক্তারা শেল বিদ্ধ পাখির মতো ছটফট করতে লাগল।
বিষের নাম আন্ডার ইনভয়েসিং।
আপাতঃ নিরীহ দেখতে এই বিষটি দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যাধুনিক মারণাস্ত্রের চেয়েও বেশী ক্ষতিকর। এর কারণে সরকার তার ন্যায্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়, দেশের প্রাপ্য রেমিটেন্স বিদেশেই হারিয়ে যায়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গিয়ে টাকার মান নেমে যায়, সস্তায় পঁচা বিদেশি পণ্যে দেশ ছেয়ে গিয়ে দেশি পণ্যের সম্ভাবনাময় বাজার ধ্বংস করে । এটা এখন আমদানী ব্যবসার অব্যর্থ অস্ত্র , প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার অপরিহার্য নিয়ামক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
আন্ডার ইনভয়েসিং এর মধ্য দিয়ে ১০ টাকায় কেনা পণ্যের মূল্য ১ টাকা বা কখনও কখনও আরো কম দেখানো হয়। নাম মাত্র মূল্যে এল সি খোলা হয়, বাকী টাকা বিদেশ থেকেই হুন্ডির মাধ্যমে সাপ্লায়ারের অ্যাকাউন্টে চলে যায়, টাকা পেলেই তারা খুশী, ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী তারা চালান-পত্র তৈরী করে। রপ্তানীকারক দেশ প্রায় সব সময়েই তাদের উৎপাদকদের স্বার্থ আগে দেখে, তাদের চাপে ইন্সপেকশন কোম্পানী আমদানীকারকদের অনুরোধ অনুযায়ী ঋণপত্রে উল্লেখিত মূল্যেই ছাড়পত্র প্রদান করে। আর তারপর আমাদের মহাত্মন কাস্টমস কতৃপক্ষের দিকে কিছু উচ্ছিষ্ট ছুড়ে মারলেই সেই মূল্যের উপরেই শুল্ক ধার্য করা হয়, কোন হাঙ্গামা ছাড়াই। আর পানির দামে খালাস হওয়া পণ্য দেশী পণ্যকে ভয়াবহ রকমের কঠিন পরিস্থিতির সামনে ফেলে দেয়।
ভাবছেন অনেক হলো, যন্ত্রণার এ বুঝি শেষ। কিন্তু দুঃখিত, কষ্টের শেষ এখানেই নয়। আরেকটি সরকারী খড়গ দেশী শিল্পোন্নয়নের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে যাচ্ছে ক্রমাগত। সেটি হলো ডাবল ভ্যাট। দেশী উদ্যোক্তারা পণ্যের কাচামাল আমদানী করার সময় একদফা ভ্যাট প্রদান করে থাকেন, তার পর অনেক খেটে খুটে, বিশাল ঝুঁকি মাথায় নিয়ে পণ্য উৎপাদন করে যখন বিক্রি করতে যান তখনও হাড় হাভাতে সরকার তাদের কাছ থেকে আরেক দফা ভ্যাট আদায় করে নেয়। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিকই কেবল নয়, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বছর শেষে এই ভ্যাটের কিছু অংশ ফেরত পাওয়া যায়, কিন্তু লাল ফিতার দৌরাত্মে তা আদায় করতে গিয়ে তাদের কালো ঘাম ছুটে যায়।
আমি একটা কথাও বাড়িয়ে বা বানিয়ে বলিনি। সমস্যা আরো অনেক আছে, কিন্তু সেগুলোর সহজ সমাধান সম্ভব। আপাতত এই দুটি মূল সমস্যার মূলোৎপাটনের পাশাপাশি দেশে যদি ইলেক্ট্রনিক্স গুডসের জন্য ইপিজেডের মতো করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরী করে দেয়া যায় তাহলে এই শিল্পকে কোমা থেকে বাঁচিয়ে তাকে নিজের পায়ে দাঁড় করানো সম্ভব বলে করি। পোষাক শিপ্লের মতো এখানেও দেশের লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হতে পারে, প্রচুর বিদেশী বিনিয়োগও আনা সম্ভব। রপ্তানীযোগ্য পণ্যের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে ইলেকট্রনিক্স শিল্প।
সরকারও যে এগুলো জানেন না তা কিন্তু না। আপনার আমার চেয়ে অনেক ভালো করেই জানেন। কিন্তু তাদের অবস্থানটা হচ্ছে মরুঝড়ের কবলে পড়া উটপাখির মতো যে বালিতে মুখ লুকিয়ে সমস্যার ভয়াবহতা উপেক্ষা করে কাল্পনিক নিরাপত্তা খুঁজে নিয়ে নিজেকে আশ্বস্ত করে। কান্ডজ্ঞানহীন নীতি নির্ধারকদের খপ্পরে পড়ে আমাদের বিপুল সম্ভাবনাময় দেশীয় শিল্প আজ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন।
আশায় আছি একদিন হয়তো সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় ঘটবে, দেশ পরিচালনার পদ্ধতিকে বাস্তবমুখী, প্রশাসনকে জনমুখী এবং দুর্নীতিমুক্ত করতে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবেন। দেশের স্বার্থেই ঝাঁ চকচকে ছায়া উন্নতির আলেয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে প্রকৃত উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করবেন।
এ ব্যাপারে পর্যাপ্ত জনমত তৈরীতে আমাদের সকলেরই এগিয়ে আসা উচিৎ ।
মন্তব্য
সুলিখিত, কিন্তু মেজাজ খারাপ অবস্থায় লেখা সম্ভবত। মেজাজ খারাপ হওয়ার যৌক্তিক কারনও আছে।
ট্যাক্সেশনের ফাজলামি নিয়ে আপনার কাছ থেকে একটা ডিটেইলড লেখা চাই মামুন্ভাই।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
দেশ চিন্তা করতে গেলে মেজাজ খারাপ না করে থাকা যায় বলো?
আমি অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষোভের রাশ টেনে লিখেছি।
কী কী জানতে চাও প্রশ্ন আকারে দিলে আমি আমার সাধ্যমতো উত্তর দিতে চেষ্টা করতাম
কাস্টমস কাহিনী নামে আমি শুরুতে অতিথি হিসাবে কয়েকটা লেখা দিয়েছিলাম, দেখি মুর্শেদ ভাইকে বলে ওগুলো আমার ব্লগে নিয়ে আসা যায় কিনা। ওখানে ট্যাক্স নিয়ে ফাজলামোর কিছু মর্মান্তিক কাহিনী আছে।
সকাল থেকে মাইগ্রেনের ব্যাথা । ঔষুধ সেবন করে চুপ মাইরা বইসা আছি । বিধায় আপনার সিরিয়াস লেখায় সিরিয়াসলি ঢুকলাম না শুধু চোখ বুলালাম ।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
অনেক ধন্যবাদ মানিক ভাই। মাইগ্রেন আপনার মাথা থেকে মাইগ্রেট করে দেশবিরোধী চক্রের মাথায় স্থায়ীভাবে বাসা বাঁধুক সেই কামনা করছি
আপনার এই দেশচিন্তামূলক পোস্টগুলো আমার খুব পছন্দ হচ্ছে। আরো লিখুন, অন্তত এসব অনিয়ম সম্বন্ধে জানতে পারছি। প্রতিকার-প্রতিরোধের প্রথম পদক্ষেপ তো বিষয়টা নিয়ে জানতে পারা।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
ধন্যবাদ ভুতুম। তোমার মন্তব্যের সাথে একমত।
ধন্যবাদ পান্থ।
আমারও। জানি অনেক কিছু! চালান, প্লিজ!
ধন্যবাদ সিরাত। চলবে
ভাল পোস্ট ।
ভবিষ্যত উদ্যোক্তাদের অনেক উপকারে আসবে।
কৃষিভিত্তিক শিল্পের সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে পরবর্তীতে লিখবেন আশা করি।
এই যেমন ধরেন, গরু অথবা ছাগলের মাংস, শাক সবজি, দুধ,মসলা,ডাল, পাট,পাটজাত দ্রব্য বিদেশে (বিশেষ করে ASEAN দেশ সমূহ, এমনকি আপনার তাইওয়ান,অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত )এইসব পন্যের বাজার কেমন, কি কি সমস্যা আসতে পারে,বাংলাদেশের জন্য আদৌ সম্ভাবনাময় কিনা? এইসব নিয়ে একটা লেখার দেওয়ার অনুরোধ থাকল।
কৃষিভিত্তিক শিল্পের সম্ভাবনা বিশাল। অন্যান্য শিল্পের চেয়ে বেশী বই কম নয়। বিশেষ করে অর্গানিক ( রাসায়নিক সার, গ্রীন হাউজ বা দ্রুত ফলনের বিষ মুক্ত) কৃষি পণ্যের চাহিদা উন্নত বিশ্বে রকেটের গতিতে বেড়ে চলেছে। এগুলো লোকে দাম বেশী দিয়েও কেনে।
তবে চাই সরকারী উদ্যোগ, নয়তো কমপক্ষে যৌথ খামার। মূল ঝামেলাটা হলো অর্গানিক সার্টিফিকেশন, এটা ছাড়া বড় কোন ক্রেতা এসব বাজারজাত করবেনা। আমাদের দেশের কাছাকাছি অর্গানিক বা নির্বিষ পণ্য সার্টিফায়িং বডি সম্ভবত জাপানে আছে। দীর্ঘ মেয়াদী প্ল্যানিং দরকার। সাথে চাই দ্রুত শিপমেন্ট , সাস্থ্যকর স্টোরেজ এবং বিশ্বমানের প্যাকিংয়ের সুবিধা, এগুলো নিশ্চিত করতে পারলে মার্কেটিং আমরা নিজেরাই করে নিতে পারব। আমি আরো কিছু খোজ খবর নেই, তার পর বিস্তারিত লিখব। আপনি কিন্তু ভালো একটা বিষয়ে আলোকপাত করলেন
কৃষিবিত্তিক শিল্পের সম্ভাবনা বিষয়ে লেখাটা তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলেন।
আমি ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালির অনেকের কথা জানি যারা দেশে বড় মাত্রার বিনিয়োগ করতে যেয়ে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। একজন অনেক কষ্টে এক সচিবের সংগে দেখা করার সুযোগ পান। তারপর সেই মিটিঙে তাকে খোদ সচিবের থেকেই এই উপদেশ শুনতে হয় যে খামাখা দেশে এসব ঝামেলায় জড়ানোর কোনও মানে নাই, বিদেশেই উনি অনেক ভাল আছেন।
- কথাটা একজন মন্ত্রী সাহেব বললেও হয়তো শোভা পেতো। কিন্তু এতো শিক্ষিত আর বাংলাদেশের রাস্ট্রযন্ত্রের ভেতরের অপরিহার্য একজন এমন বললে ধরে কী করতে ইচ্ছে করে!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
কৃষিভিত্তিক শিল্পের কথা লিখতে চাচ্ছিলাম।
কিন্তু একটা ঘটনা মনে পড়ায় একটু দমে গেছি।
৮০'র দশকে হঠাৎ করে ইউরোপীয়ান দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে ব্যাঙ আমদানী করা শুরু করে। গ্রামে গঞ্জে সব জায়গায় তখন লোকজন পাল্লা দিয়ে ব্যাঙ শিকার করে রপ্তানী কারকদের কাছে বিক্রি করা শুরু করল।
প্রাথমিক ফলাফলঃ মাঠ ঘাট ব্যাঙ শূন্য, সরকারী হিসাবে ব্যাঙ রপ্তানী প্রায় ৩০০ কোটি টাকার মতো আর রপ্তানী কারক , ম ন্ত্রী-আমলা সবার ব্যাঙাচির মতো উলম্ফন। ব্যাঙ কৃষি জমির গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক অনুষঙ্গ, তারা নানা রকমের পোকা মাকড় খেয়ে শস্যের সুসাস্থ্য নিশ্চিত করে, এ সহজ কথাটি কারো মাথায় আসল না।
চুড়ান্ত ফলাফলঃ ক্ষেতে খামারে বিনা ব্যাঙে পোকাদের মহোৎসব। তাদের জ্বালায় বাধ্য হয়ে রাসায়নিক কীট নাশকের আমদানীতে ( ঐ ইউরোপীয়ান দেশ গুলি হতেই) দেশের নাভিশ্বাস। হাজার কোটি টাকা চলে যায় প্রতি বছর ঐ খাতে।
এখন আবার কৃষি ভিত্তিক শিল্প গড়ে তুলতে গিয়ে আবার না দেশের মানুষের দুবেলা দু মুঠ ডাল ভাত খাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়ে সেই দুর্ভাবনায় আছি। দেখা যাবে কেউ আর বাজারে ঝিঙে, শসা বা মাছ-মাংস তুলছে না , সব চলে যাচ্ছে বিদেশে।
ঘর পোড়া গরু...বোঝেনই তো
আমি অর্গানিক ফার্ম নিয়ে একটু খোজখবর নিতে চাচ্ছিলাম আর কি।
চমৎকার পোস্ট!
=======================
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
ধন্যবাদ ফাহিম।
বাংলাদেশে ইলেক্ট্রনিক ইনস্যুলেটরের অনেক প্রয়োজন। প্রচুর বিদ্যুৎ এর খাম্বা, সেই সাথে ভোক্তা বিস্তারের আরো সম্ভাবনা রয়েছে। সমস্যা হচ্ছে, এ কাজের জন্য খালি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি'র প্রোডাক্ট তৈরী করলেই কী হবে? সাথে রয়েছে টুকু সাহেবকে সামলানো। ডঃ চৌধুরী বীর বিক্রম কে ভেট দেয়া।
আলোচনার জন্য অনেক কিছুই আছে বাংলাদেশের ট্যাক্সেশনের ব্যাপারে। মামুনভাই, আপনি ছাইড়েন না, ফাজিলগুলা X বানাচ্ছে, এর জন্য আমরা পিছন দিক দিয়ে Y খাচ্ছি, Z হলে আমাদের মলম লাগার সাথে সাথে এই এই উন্নতি ঘটবে- এভাবে চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় দেন বস!
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
মামুন হক সাহেব, আপনাকে ধন্যবাদ এ বিষয়ে পর পর দুটি গুরুত্বপুর্ন ব্লগ লিখার জন্য। তবে বিষয়টিকে আরেকটি পরিপ্রেক্ষিত থেকে দেখা যায়। আমদানীর উপর 'শুল্ক-বিন্যাস' ভাল করে পরীক্ষা করলে দেখতে পাবেন যে 'ফিনিশড' দ্রব্যের উপর শুল্ক 'রো-ম্যাট্যরিয়াল' (বা সি,কে,ডি/এস,কে,ডি ফর্ম) এর উপর শুল্কের থেকে অনেক বেশী। এর কারন হিসাবে দেশীয় শিল্পকে বা দেশীয় উদ্যোক্তাদের রক্ষা করার যুক্তি দেওয়া হয়। সরকার যদি ফিনিশড দ্রব্যের উপর শুল্ক কমিয়ে দেয় , তবে সরকারের বিরূদ্ধে 'দেশীয় শিল্পকে ধ্বংসের চেষ্টার' অভিযোগ আনা হতে পারে। দেশীয় উদ্যোক্তারা সরকারের উপর চাপ দেবে। প্রশ্ন থাকে এভাবে কতক্ষন আপনি দেশীয় উদ্যোক্তাদের রক্ষা করবেন। যারা আমদানী করছে তাদের কিন্তু বিদেশী ক্রেতাদের পণ্যের পুরো মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছেই (আন্ডার ইনভয়েসিং করা হচ্ছে শুধুমাত্র শুল্ক কম দেবার জন্য)। এখন আমদানীকারক যদি বিদেশ থেকে পণ্যের পুরো মূল্য, আমদানী পরিবহন খরচ এবং 'প্রসেস মানি' দেওয়ার পর দেশীয় উদ্যোক্তাদের চেয়ে কম খরচে দিতে পারে তবে এই 'দেশীয় শিল্প' কী টিকে থাকতে পারবে ? - রপ্তানীতো দুরের কথা। (প্লীজ, আমি আমদানীকারকও নই, বা ঢালাও ভাবে আমদানীকার পক্ষেও নই)।
আমি কিন্তু যোগ্য দেশী উদ্যোক্তারার অভাবও দেখি কিছুটা। এই 'শুল্ক-বিন্যাস' অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে । একদম মিনিমাম শুল্কের ব্যাবস্থা করতে হবে - 'ফিনিশড' বা 'রো-ম্যাট্যরিয়াল' যেটাই হোক না কেন। আন্ডার ইনভয়েসিং এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে শুল্কের হার খুব কমে গেলে। সরকার অবশ্যই দেশী উদ্যোক্তাদের প্রোটেক্ট করবে , কিন্তু স্পেসিফিক সময়ের জন্য এবং অবশ্যই পরিকল্পনা অনুযায়ী। (প্রশ্ন আসতে পারে সরকারের রাজস্ব আয়ের - উত্তর আছে।) মামুন সাহেব আপনি তো সিংগাপুর থাকেন । আমার জানা মতে সেখানে সর্ব্বোচ্চ ব্যক্তি খাতে করের হার ২০%, এবং স্ল্যাব খুব উঁচু । অথচ আমাদের এখানে ২৫%। শুল্ক-বিন্যাসও আমার জানা মতে খুবই কম। সিংগাপুরে রাজস্ব আয়ের সমস্যা আছে??
মামুন হক সাহেব, আমি শুধু আরেকটি পরিপ্রেক্ষিত থেকে বললাম। আপনার এ বিষয় গুলো তুলে আনার জন্য আরেকবার ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
অনেক ধন্যবাদ ভাই কষ্ট করে এই লেখাটি পাঠ এবং ম ন্তব্য প্রদানের জন্য। আপনার পয়েন্টগুলো খুবই যুক্তিযুক্ত এবং এর প্রতিটির জবাব ও দেয়া সম্ভব।
-এ কথাটি আমিও বলেছি, আমাদের সরকার এই উচ্চ শুল্ক নির্ধান করেই দায়সারা ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন । উচ্চ শুল্কের ব্যাপারটাতো আমদানী কারকেরা আন্ডার ইনভয়েসিং করেই ম্যানেজ করে নেন। কিন্তু স মস্যা বাধে কাচামাল আমদানীর ক্ষেত্রে। এর আমদানী শুল্ক কম ...আবারো এখানেও সরকার ভাবছেন তাদের দায়িত্ব সম্পন্ন, শুল্ক বিন্যাস করে দিয়েছি তোমাদের স্বার্থে, এখন খাইট্টা খাও--এ জাতীয় চিন্তা ভাবনা। কিন্তু প্রি ফর্মড কাচামাল প্রসেস করার বা সিকেডি/এসকেডি ম্যাটেরিয়াল আসেম্বল করার ক্ষেত্রে স রকারী সুবিধা বলতে গেলে নেই। আপনি চীন, ভিয়েতনাম এমনকি কম্বোডিয়া গেলেও দেখবেন সেখানে সরকারী সহায়তায় উদ্যোক্তাদের ডিজাইন তৈরী করে দেয়া হচ্ছে , কেসিং উৎপাদনের জন্য মোল্ড তৈরী করে দেয়া হচ্ছে, ট্রেনিং বা সুপার ভাইজের ব্যাপারটাতো আছেই। সাথে আছে বিভিন্ন ট্রেড শো করে উৎপাদিত পণ্যের বাজার ধরার ব্যাপারেও আন্তরিক ভাবে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের জন্য এতটুকু আশা করা বাতুলতা মাত্র, কিন্তু সবেধন নীলমনি শুল্ক বিন্যাসটাকেও যদি দুর্নীতি মুক্ত রাখা না যায় তাহলে আমরা আর যাই কই??
আমি থাকি তাইওয়ান, সব মিলিয়ে ১১% ট্যাক্স দেই এবং ব্যবসা বা ব্যক্তিজীবন উভয়ক্ষেত্রেই সর্বাত্মক সরকারী সুযোগ-সুবিধা ভোগ করি, চিকিৎসা বলতে গেলে ফ্রী আর বছর শেষে ট্যাক্স রিফান্ডও পাওয়া যায়। এখানে সরকারের কাছে গদির চেয়ে মানুষ বড়। মানুষও জান প্রাণ দিয়ে খেটে দেশকে আর সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আবারো ধন্যবাদ আপনাকে
ধন্যবাদ । চীন, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ার সরকারী সহায়তায় কথাটা জানলাম। তাইওয়ানতো রপ্তআনীতে অনেক এগিয়ে আচে। লিখুন আপনার অভিঞ্জতা - অপেক্ষায় থাকলাম।
মামুন ভাই, অসাধারণ হচ্ছে
আপনার অভিজ্ঞতা থেকে লিখতে থাকুন, থামবেন না। সুবিধাবাদীরা যদি এত ফাকফোঁকর তৈরি করতে পারে, জনগণ চাইলে সেগুলো একদিন বন্ধ করাও সম্ভব। সেইকারণে, জনমত তৈরিটা আসলেই অনেক বেশি প্রয়োজন।
অনেক উৎসাহ পেলাম ফারুক ভাই। ধন্যবাদ। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে আগেও লিখেছি, আপনারা বললে আগামীতেও লিখে যাব
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষন। শুধু স্থানীয় বাজারের চাহিদাকে পুঁজি করেই এই দেশের অর্থনীতি অনেক এগিয়ে যেতে পারে। আমার ধারনা এই কারনেই বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার বাতাস বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তেমন মারাত্মক প্রভাব ফেলার কথা নয়। অবশ্য আরএমজি বা অন্যান্য রপ্তানিমুখি শিল্পের কথা আলাদা।
সহমত। আসলে এখন ইলেকট্রনিক্সের বাজার পরবর্তি টার্গেট হওয়া উচিৎ বলে মনে করি। বাংলাদেশের যেহেতু শ্রমের মূল্যে তুলনামূলক সুবিধা (comparative advantage) রয়েছে বিশ্বায়নের বাতাসকে কাজে লাগাতে হবে এবং এই শ্রমের বাজারকে মাথায় রেখেই। সেক্ষেত্রে আপনার লেখায় আপনি যখন আমদানির কথা বলছেন সেটা কি ফিনিশড প্রোডাক্টের কথা বলছেন না কাচামালের কথা বলছেন পরিষ্কার হওয়া দরকার। ইলেক্ট্রনিক্সের উৎপাদন আমদানি নির্ভর হতে পারে। এটা কোন সমস্যা নয়। সমস্যা নয় যদি শিল্পটিকে রপ্তানিমুখি করা যায়। কিন্তু দেখার দরকার প্রয়োজনীয় কাচামালের কম্পোজশন কি, সেটা কোথায় পাওয়া যাবে (procurement cost বোঝার জন্য), এবং বিদ্যমন শুল্ক কাঠামো কতটা অনুকুল ইত্যাদি। এছারা উৎপাদিত পন্যের বিপননের সুবিধা কেমন সেটাও দেখার বিষয়।
এই উপযুক্ত পরিবেশের বিষয়টিকে একজন ব্যবসায়ি হিসাবে আরো ব্যবচ্ছেদ করুন। আমার জানামতে বাংলাদেশে ওয়র্ল্ড ইকিনমিক ফোরামের হয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ প্রতি বছর এই ব্যাবসার পরিবেশ নিয়ে একটি জরীপ পরিচালনা করে। এরমধ্যে বেশ কয়েক বছর পার হয়ে গেছে। কাজেই এই বিষয়ে ট্রেন্ড কোনদিকে সেটা জানা থাকলে ভাল হত। আমি সময় পেলে চেষ্টা করে দেখব এই গবেষনার/জরীপের সারসংক্ষেপ যোগার করতে পারি কিনা। কারো কাছে থাকলে জানালে খুব সুবিধা হয়।
regulation এর ভাল বাংলা করলেনতো। মজা পাইলাম। সাধারনভাবে আমি মনে করি বাংলাদেশের আরো কিছুদুর ডিরেগুলেশনের রাস্তায় হাটা দরকার - পরীক্ষামূলক ভাবে হলেও - অবশ্যই খাত বুঝে। এন্টি ট্রাস্টের ব্যপারটি মাথায় রাখতে হবে অবশ্যই। যেসব খাতে মোনোপলির সম্ভাবনা আছে (যেমন শক্তি উৎপাদন, বিতরন, বিপনন ইত্যাদি) সেখানে নজরদারির দরকার আছে। শুনেছি সরকার প্রাইস কমিশনের কথা ভাবছে। আমার ভয় বেকার খাটনি হয়ে উঠতে পারে এই চেষ্টা। বাজারের শক্তিকে অগ্রাহ্য করলে বাজারকে বাঁধা দেয়া হতে পারে কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা কঠিন।
যতদূর জানি বিশ্ব বানিজ্য সংস্থা বিশ্বায়নের চাপে বাংলাদেশের বাজারে বিদেশি পন্যের প্রবেশকে আরো সহজ করা হয়েছে। যাতে করে শুল্ক কমার কথা। আমার কৌতুহল আমাদের আমদানির কম্পোজিশান নিয়ে। যেমন এই আমদানির কতভাগ রপতানিমুখি কাচামাল, কতটা স্থানীয় ভোগ্যপন্যের কাচামাল আর কতটা ফিনিশড প্রোডাক্ট ইত্যাদি।
যতটুকু বুঝি বিভিন্ন প্রেসারগ্রুপের মধ্যে ব্যবসায়ীরা সরকারের উপর সবচেয়ে জোরাল চাপ প্রয়োগের ক্ষমতা রাখে। দেখার বিষয় এখানে বিশেষ কোন স্বার্থের দ্বন্দ্ব (conflict of interest) আছে কিনা। যেমন ব্যবসায়িদের মধ্যে বিভক্তি থাকতে পারে অথবা রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীদের হঠাৎ ব্যবসায়ী হয়ে ওঠার খায়েস তৈরি হতে পারে ইত্যাদি।
রিয়াজ ভাই,
আপনার কমেন্টে এতগুলো বিষয় উঠে এসেছে যে, ঠিক মতো জবাব দিতে গেলে তা পোস্টের চাইতে আকারে বড় হয়ে যেতে পারে, তাই সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করে দেখি .
আমি আমার লেখায় ফিনিশড গুডস এবং কাচামাল উভয়ের শুল্ক হারের মধ্যে সামঞ্জস্যতা রক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে চেয়েছি। বোধ হয় সল্প পরিসরে ভালো ভাবে বুঝাতে পারিনি।
ঠিকভাবে ব্যবচ্ছেদ করতে গেলে এই বিষয়ে আলাদা পোস্ট দিতে হবে, সামনে দিব ভাবছি। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ এর রিপোর্ট আমি পড়ে দেখেছি কয়েক বছর আগে, সব সত্য কথা তারাও বলেন না। আমি উইন্ডো ড্রেসিং ছাড়াই প্রকৃত চিত্রটি তুলে ধরার চেষ্টা করব।
--একমত। নামকাওয়াস্তে একটা প্রাইস কমিশন আছে কাস্টমস কতৃপক্ষের আওতাধীন। তবে সময়-অসময়ে তারা নিজেরাই বিক্রি হয়ে যায় বা সক্রিয় হয় কেবল বখরা নিয়ে মনোমালিন্য হলে।
-একদম সত্যি কথা। না বলা সত্যি কথাটা হলো বেসিক ব্যাপারটাগুলো ঠিক ঠাক না করেই বাংলাদেশের মতো দেশকে মুক্ত বাজার অর্থনীতি গ্রহনে বাধ্য করা আর দুম করে তাহিতি দ্বীপকে টেস্ট স্ট্যাটাস দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে নামানো একই মাত্রার বেওকুফি।
--আহ এই এক জায়গায় এসে সরকার নিজেই বারবার নতজানু হয়ে যায়। মাল্টি বিলিওনার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের ক্ষুদ্র ব্যক্তি স্বার্থের কাছে দেশ ও জাতির স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে দেয় অবলীলায়। আজ পর্যন্ত কোন সরকারই কর্পোরেট চক্রের কাছে মেরুদন্ড খাড়া করে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি। অসংখ্য উদাহরণ আছে, কোনটা রেখে কোনটা বলব!
আপনাকে আবারো অনেক ধন্যবাদ রিয়াজ ভাই। ভালো থাকবেন।
যাক যে বিষয়গুলো নিয়ে আমি বছরের পর বছর মাথা ঘষতে ঘষতে ঝামা করে ফেলেছি সেগুলো নিয়ে আপনার সুখাদ্য লেখাটি আমার মতো অনেকের চুলকানি কমাবে।
দেশ নিয়ে ভাবতে গেলে মাথা গরম হয়ে যায়। আপনার এই অভিব্যক্তিটা আমি ভুক্তভোগী বলেই বেশী করে অনুভব করি।
সরকারের রাজস্ব বিভাগ স্বয়ং শিল্পোন্নয়নে অন্যতম বাধা। সাদা টাকা, কালো টাকা এসব তালিমালি করে নিজেদের পকেট ভারী করার আইন করা ছাড়া দেশের শিল্পের আর কোন উপকার গত আটত্রিশ বছরে করেছে বলে জানা নেই।
সারা দুনিয়াতে কিভাবে শিল্পোন্নয়ন হচ্ছে তা আমাদের কর্তাব্যক্তিরা জানেন না যে তা নয়। এমন কোন মন্ত্রনালয় নেই বিদেশ সফরের মহরত নেই। তবে বছর বছর দলবেধে বিদেশভ্রমনের তালিকা করে তাদের পেছনে সরকারে ব্যয় ও তাদের মার্কেটিং ব্যয়ের তুলনামূলক হিসেব করলে আউটপুটের হিসেবটা জানা যেত। বিদেশ থেকে কী দেখে আসে, আর কী শিখে আছে। এত বছরেও রাস্তায় গাড়ীটা কোথায় থামবে কোথায় থামবে না এই আইন খোদ রাজধানীতেই প্রয়োগ করতে শেখেনি, আর কী আশা করবে এদের কাছ থেকে।
বৈধ পথে চোরাই পন্য আমদানীর সুযোগ দেবার বিনিময়ে বাংলাদেশে কতগুলো গাড়ী বিক্রি হয়েছে আর কতগুলো ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। বিশ্বমন্দায় সারা দুনিয়ায় গাড়ী কেনাবেচা কমে গেলেও বাংলাদেশে গাড়ী কেনার উৎসবে মাতোয়ারা। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই বিত্ত বৈভবের উৎস কি। ওই ভাগ বাটোয়ারা। সরকার নাকি এখন পিপিপি চালু করছে যাতে পাবলিক ও প্রাইভেট সেক্টর হাত ধরাধরি করে দেশের উন্নতি করতে পারে। কিন্তু সরকার আর বিশেষ বিশেষ পাবলিক জায়গায় জায়গায় হাত ধরাধরি করে আছে বলেই দেশে কুঁড়ে ঘরও বাড়ছে, পাল্লা দিয়ে আকাশছোয়া দালানও বাড়ছে। ধনী দরিদ্রে ব্যবধানটা সংখ্যায় হিসেব না করে টাকার অংকে করলে আরো পরিষ্কার বোঝা যেত। কিন্তু এদেশে কে কত ধনী তা বোঝার জন্য মাটির তলায় হানা দিয়েও খোজ মিলবে না।
বাজেটের কোন খাতে কত বাড়ালে কমালে কার পকেটে কত যাবে তার হিসেবও আগাম করা হয়ে যায়। সরকারের নীতিনির্ধারকদের সাথে বিশেষ বিশেষ ব্যবসায়ীর ভালোবাসার উপর রাজস্বনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়, বাজেট নির্মিত হয়, আরো কতকিছু হয়.......
কোন সেক্টরের কথা বলবেন পুলিশ, বিচার, ভুমি, হাসপাতাল, ......যেখানে হাত দেই সেখানেই পোড়া যায়।
দুর........আর লিখতে ভাল্লাগছে না। দেশপ্রেমের ঘাটতি লেগেছে অনেকদিন ধরেই। এইসব কথা ভাবলে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যেতে ইচ্ছে হয়। চোরের দলে ভিড়ে গেলেই মানসিক শান্তি মিলবে বোধহয়। ওরাই সুখী ওরাই তৃপ্ত এদেশে।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আপনার প্রতিটা শব্দের সাথে আমি একমত, শুধু শেষটুকু ছাড়া
আসলে আমরাই লাস্ট ফ্রন্টিয়ার এটা ভেবে আগাতে হবে, নিজেরাই হেরে গেলে দেশ বাঁচাব কীভাবে? ভালো থাকবেন ।
মামুনের লেখায় যে বিষয়টা লক্ষণীয় তা হলো তত্ত্ব-তথ্যের সাথে নিজের অভিজ্ঞতার মিশেল... আর এর সাথে যোগ হয় তার সহজাত গল্প বলার মত করে বলে যাওয়া।
অভিনন্দন মামুন, গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়গুলোকে সামনে নিয়ে আসার জন্য
বিশিষ্ট ছড়াকার, রাজাকার বিরোধী আন্দোলনের প্রাণপুরুষ আকতার আহমেদের সদয় অভিনন্দন আমাদের গরীব গুর্বাদের সংসদ হতে এক্সপাঞ্জ করা হলো। দীর্ঘদিন ছড়া না লিখে আমাদের অবর্ণনীয় কষ্টে রাখার অপরাধে
দরকারী লেখা
আমার মনে হয় গার্মেন্টস যখন শুরু হয়েছিল, তখনো অনেক বাধা-বিপত্তি ছিল। পরে এ সেক্টরের সাফল্য দেখে সরকার কিছুটা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ইলেক্ট্রনিক্সকেও তেমনি বাধা-বিপত্তি সাথে নিয়ে কোথাও থেকে শুরু করতে হবে। অন্যথায় এসব ব্যাপারে যতই দৃষ্টি আকর্ষণ করা হোক, কুম্ভকর্ণ সরকারের ঘুম ভাঙবে না।
(কইতে চাইছিলাম, আপনেই একটা শুরু করেন, আমরা আছি আপনার পিছে। ঐদিনও তো হেই কথাই কইছিলাম )
আমরা দরকার হলে তোর সাপোর্টে লেখালেখি করবো। ঐযে বলেনা পোষা কলমজীবি গোষ্ঠি? সেরকমই নাহয় হলাম, বিনে পয়সায়
বস ইতিহাস বলে গার্মেন্টস শিল্পে সহায়তা সরকার নিজ গরজে দেয় নাই। শ্রীলংকায় গৃহযুদ্ধ জোরদার হবার পরে বিশ্ব মোড়লরা পরিস্থিতির চাপে সেখানকার ব্যবসা বাংলাদেশে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তবে বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য সাধুবাদ অবশ্যই প্রাপ্য।
আমাদের দেশে শিল্পপতিরা এ জাতীয় দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের চাইতে চানাচুর আর জ্যুস এর ব্যবসাতেই বেশী উৎসাহী। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের সবুজ বাজার ধরতে আগ্রহী হলেও অবকাঠামোগত সমস্যা এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় নিরুৎসাহিত হয়ে ফিরে যায়।
তাই আপনার কথাই ঠিক, আমাদের কাউকেই এগিয়ে আসতে হবে। তানভীর ভাই এগিয়ে চলেন , আমরা আছি আপনার সাথে
তুই তো অনেক কিছু শিকাইলি। আগে বাড়। সামনেই পচুর গিয়ানজাম
হ মামু, গিয়ানজামে ভরা জিন্দেগী।
মামুন ভাইয়ের সাথে একমত, আসলেও সরকার গাঁজার চাষ করে এবং কল্কে না, পুরা হুক্কায় লাগায় খাওয়ার ব্যবস্থা ফ্রি। ড় মেটেরিয়ালে ট্যাক্স কম করে দেশি ভাইদের নিজেদের পন্য নিজেরাই বানাও প্রক্লপে উদ্বুদ্ধ করা উচিত। সেটা করা হলে আমাদের দেশের সোনার ছেলেরা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ ও পাবে।
আমাদের এনকিদু ভায়া যদি তার জয়স্টিক বাজার জাত নাও করে, শুধু পরীক্ষামুলক ভাবে কোন গেম সেন্টারে ১০ জয়স্টিক সেটাপ করে NFS চালিয়ে দেন, একটা গ্রুপ জানতে পারবে, দেশেই এমন ফাটাফাটি জয়স্টিক তৈরি সম্ভব। তবে তার জন্যে দরকার সুলভ মূল্যে ড় মেটেরিয়াল আমদানির সুযোগ আর কাস্টমস থেকে সঠিক সময়ে বিনা গ্যাঞ্জামে তা ছুটিইয়ে আনার সুব্যবস্থা।
এমন লেখা আরো চাই, আর মামুন ভাইএর পাশাপাশি রিয়াজ ভাইকেও অনুরোধ করছি এ বিষয়ে লেখা দিবার জন্য। ডাবল ভ্যাটের ব্যাপারটা জানতাম না, পুরাই বেকুব হলাম জানতে পেরে। আরেকটা মজার ব্যাপার হল, আমাদের দেশে ভ্যাট ১৫%, অথচ আমেরিকার মত পয়সা ওয়ালা দেশেও সর্বোচ্চ ভ্যাট ৮.২৫% (নিউ ইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, আমার জানার ভুল থাকলে ঠিক করে দিয়েন), আর আমি যেখানে আছি, সেখানে ০% । আমরা কী এতই বড়লোক দেশ?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ঠিক বলেছ সাইফ ভাই। তোমার মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত।
আর আমিও মনে করি রিয়াজ ভাইয়ের এ বিষয়ে লেখা উচিৎ
দ্বিমত পোষন করছি না। কিন্তু আমার জ্ঞান এ বিষয়ে একেবারেই তাত্ত্বিক গোছের। প্রকৃত চিত্র সম্পর্কে আমার ধারনা একটু বহিরাগতের মত। দু'টি কারনে - আমি দেশের বাইরে আছি প্রায় তিন বছর। দ্বিতিয়ত আসলে ব্যাবসা বনিজ্যের ক্ষেত্রে কি হচ্ছে সেটার খবর আমি তেমন একটা পাই না। পত্র পত্রিকায় যা আসে তা হয় আংশিক অথবা রঙ চরানো। তবে আপনাদের অনুরোধ ফেলা কঠিন। যতটুকু বুঝি তা নিয়ে কিছু একটা দাড় করানোর চেষ্টা করব। একটু সময় বের করতে পারলেই। আমি যেটা লিখব সেটা হয়ত মামুন ভাইয়ের লেখার পাদটিকা হতে পারে। তত্বজ্ঞান কখনও বাস্তবজ্ঞানের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।
কাস্টমস এর পলিসিগুলো কে তৈরি করে? সরকার না অন্য কোন সংস্থা?
পিপি এগুলা মূলত জাতীয় রাস্ব বোর্ড তৈরী করে। কিন্তু তারা IMF, WTO,WB এবং দেশের হারামখোর পুঁজিপতিদের স্বার্থ সংরক্ষনেই বেশী উদগ্রীব। মুখে তারা অনেক কথা বলে বটে কিন্তু কাজে তার উল্টোটারই প্রতিফলন ঘটে।
খুবই দরকারি লেখা, মামুন ভাই। সিমন ভাইয়ের মত করে আমিও বলবো। একেবারে X-Y-Z করে দেখিয়ে দিন সমস্যাগুলো। বাইরের দেশের সাথে আমাদের তফাৎগুলোও দেখতে চাই এই লেখার মত করেই।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা উঠে আসছে আপনার লেখা ও অন্যান্যদের মন্তব্যে। ব্যবহারিক সীমাবদ্ধতাগুলো জানা হচ্ছে।
ঠিকাছে ইশতি । আমি চেষ্টা করব তাইওয়ানের মতো একটি উন্নত এবং স্বাবলম্বী অর্থনীতির সাথে বাংলাদেশের একটি তুলনা মূলক চিত্র তুলে ধরতে যেখানে আমাদের সমস্যার উৎসগুলো এবং তার প্রতিকারের কিছু সাজেশন থাকবে।
জটিল জিনিস। আমার মতো নাদানের পক্ষে যথেষ্টই জটিল।
মোটামুটি একখান আইডিয়া পাইলাম।
মানে সমস্যাটার একটা চিত্র পাইলাম।
এখন সমাধানের চিত্রটা বল। সবুজ বাঘের ভাষায়, সমাধানের "সীনডা" কী ক।
জনমত গঠন তো আর সাধারণ জনগণ করবে না। করবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। যারা দেশীয়ভাবে ইলেকট্রিক্যার গুডস তৈরি করতাছে। ঐ ব্যাটারা বইসা ক্যান? ওগোরে গিয়া তাড়া দিমু? কমু, যে চায়া চায়া দেখস কী? একটা সাংবাদিক সম্মেলন কর। সরকাররে বুঝায়া বল।
মনে হয় না কোনো কাম হইব!
একটা পথ তো আমার খুব পছন্দ হয়, মানে আমার নাদান বুদ্ধিতে। ধর, আমি পরি এখন দেশি জুতা। আমার বডি স্প্রেও দেশি। জামাকাপড় কমবেশি দেশি। টেলিভিশনও দেশি। বাসার চুলা, ফ্রিজ, আইপিএস সব দেশি। তাইলে আর লাগে কী?
বিদেশি আর যা কিছু আছে নিয়া একদিন শাহবাগের মোড়ে পুড়ায়া ফালাইলাম। সবাইরে কইলাম, আজকে থিকা আমি আর দেশি জিনিস ছাড়া পরুম না, খামু না, চলুম না।
স্বদেশি আন্দোলন নতুন কইরা।
জানি জাতিসংঘ আর বিদেশি সব দেশ মিলা বাংলাদেশরে নানা কায়দায় ছ্যাঁচা দিব... কিন্তু আমরা সবাই মিলা যদি ব্যবহার বন্ধ করি, তাইলে আন্ডার ইনভয়েসিং ক, আর যত যা কিছু আছে, সব তো আন্ডারগার্মেন্টস হইয়া যাইব...
তবে হ্যাঁ, আমার সেলফোন আর ল্যাপটপ আর ক্যামেরা ছাড়া একটু অসুবিধা হইব, কিন্তু মানায়া নিলাম... কী কস? আমগো দেশের পোলাপান বানাইতে পারব না কিছুদিনের মধ্যেই?
দরকার পড়লে বিদেশি নেটওয়ার্ক ব্যবহারও বন্ধ। যে ব্যবহার করে, তারে কমু, ছি ছি! ব্যাটা মিরজাফর কোথাকার? টিএন্ডটি ফোন দিয়া কথা কমু। লাইড ডেড থাকলে পুরান দিনের মতো টেলিফোন অফিস গিয়া মারামারি করমু। কাজ না হইলে তারপর টেলিফোন ম্যানরে ৫০০টা টাকা দিমু।
কোনো মোবাইল অলারে ফোন দিমু না। যতক্ষণ না টেলিকমের পুরা মালিকানা হয় সরকার নয় দেশি কোনো ব্যবসায়ীর হাতে আসে। গ্রামীণ ফোনের ব্যবসা বেইচা বাপ বাপ কইরা পালাইতে হইব তিন মাসের মধ্যে।
এই বিষয়ে কি জনমত তৈরি করা যায়?
নাকি ইহা শুধুই আকাশকুসুম কল্পনা। যা শুধু একমাত্র আমার মতো নাদানের পক্ষেই সম্ভব?
...ও তোরে ধন্যবাদ। অনেক খাইটা লেখাটা লিখছিস এইজন্য। আজকাল এত খেটে এত দরদ দিয়ে কেউ লিখে না। আমার মতো নাদানদের জন্য পার্ট বাই পার্ট এই পুরো প্রক্রিয়াগুলো লিখিস একটু একটু করে। নাম দিতে পারিস : রাজস্ব-অর্থনীতির অ-আ-ক-খ : নাদানদের জন্য অর্থনৈতিক বর্ণমালা শিক্ষা
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
মৃদুল তোর মতো করে বেশিরভাগ লোকে ভাবলে তো আমাদের আর কোন সমস্যাই ছিলনা। দুঃখজনক হলেও সত্যি আমাদের মন্ত্রী আমলারা দূরে থাক, সাধারণ মানুষেরই স্বদেশী পণ্যের উপর ভক্তি শ্রদ্ধা অনেক কম। তবে আমরা যেহেতু দেশপ্রেমিক এবং হুজুগে জাতি, সঠিক প্রচারণার মধ্য দিয়ে জনগণের মধ্যে স্বদেশী আন্দোলনটা প্রসার করা সম্ভব।
দূরদর্শী এবং জনকল্যাণকামী নীতি নির্ধারনের মাধ্যমে গোড়া থেকেই সমস্যার সমাধান করতে হয়। আমাদের উচ্চাভিলাষী সরকার অনেক ক্ষেত্রেই ঘোড়ার আগে গাড়ি জুতে দিয়ে নিজের পীঠ নিজেই চাপড়ে লাল করে ফেলছে।
আসলে পুরো সিস্টেমটাই অদল বদল করা দরকার।
বস, জটিল কইসেন, আর মোটেই আকাশ কুসুম কল্পনা না, মামুন ভাই, হিমুদা, ইনারা দেশটারে নিয়া ভাবে, নানা রকমের আয়ডিয়া দেয়, এগুলা বাস্তবায়ন করা গেলে আসলেই দেশের উন্নতি সম্ভব বইলা আমি মনে করি।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
বন্ধুরা আমার এখন ঘুমাইতে যাই, কাল সকালে উঠে সবার মন্তব্যের জবাব দিব
চমৎকার লিখা ।
আমাদের অভ্যাসটাই এমন
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর
ধন্যবাদ গৌরীশ।
- আমার মনে ভয়াবহ সন্দেহ আছে, এই জিনিষগুলান সরকারের ভেতরের লোকজন কখনো ভেবে দেখে কীনা! একদল আরেক দলের পুটকিতে আঙুল আর বিভিন্ন উদ্যান, সেতু, স্টেডিয়ামের নামকরণ করতে করতেই তো পাঁচ বছর চলে যায়। তারপর আবার চলে সেই পুরান কাসুন্দী ঘাঁটা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিক কথারে ভাই, নামকাওয়াস্তে গণতন্ত্রের হাতে জিম্মি গোটা জাতি। ক্ষুদ্র স্বার্থ সর্বস্ব রাজনৈতিক দলগুলোর বদলে বিশ বছর একটানা দেশপ্রেমী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে দেশ চালানোর ভার দেয়া দরকার।
দুনিয়া জুড়া পচুর গিয়ানজাম।
।
আপনে লোকটা কেমুন জানি। স্বভাব-রসিক। সব জায়গায় এমুন সব কমেন্ট! পড়ি আর হাসি। চার্লি দ্রোহী!
হ
গতকাল কথা হচ্ছিল টেক্স বিভাগের একজন বড়কর্তার সাথে। বছর বছর কানুন বদলানোর ঝামেলার কথা বলছিলেন তিনি। ৫/১০ দূরে কথা ২ বছরের জন্যও এই খাতের আইন ঠিক রাখা যায়না। এর জন্য তিনি অভিযুক্ত করলেন ব্যবসায়ি রাজনীতিবিদদের। তাদের ভাগ-বাটোয়ারা খেলায় এই অবস্থা। কারণ যখন যিনি/যারা পাওয়ার হ্যান্ডেল করেন-তাঁর সংশ্লিস্ট ব্যবসাকেই আইন করে সুবিধা দেয়া হয় বেশী। হায়, আমাদের নিজস্ব্ ক্ষমতা অর্জনের সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে!
উনি ঠিকই বলছেন। বেক্সিমকো, বসুন্ধরা এবং এ ধরনের আরো অনেক রক্তচোষা কর্পোরেশনের চাপে রাজস্ব বোর্ডকে সকাল বিকাল ভিন্ন ভিন্ন যোগাসনে ব্যস্ত দেখা যায়।
বসুন্ধরা পাইপস এর উদ্বোধনের আগেই রহস্যজনক ভাবে বিদেশী পাইপের উপর অতিরিক্ত ট্যাক্স বসে যায়, কিন্তু তাদের পণ্যের উৎপাদন খরচ অনেক কম হলেও বিক্রয়মূল্য বিদেশি মালের চেয়ে কমেনা। মানুষের কষ্ট বাড়ে, তাদের লাভের হিসাব দশ অংক ছাড়িয়ে যায়।
আপনার প্রতি মুগ্ধতা দিন দিন বেড়েই চলেছে, মামুন ভাই। আপনার ক্ষুরধার লেখনী চলতে থাকুক
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
প্রশংসা করলেন নাকি গালি দিলেন ধরতে পারলাম না!!!!!!!!!!!
আমি একটা শুল্কায়নের খবর যোগ করি।
আমরা চায়না থেকে আগে মোটরসাইকেল বিযুক্ত অবস্থায় আনতাম।
তারপর সেগুলো এখানে আমাদের মেকানিক দিয়ে যুক্ত করা হতো , টেস্ট করা হতো, তারপর বিক্রী করা হতো। ঐ কারখানায় দেড়শ লোক কাজ করতো তখন। এতো হ্যাপা করার কারন হচ্ছে ট্যাক্সে সুবিধা পেতাম আমরা।
সাইফুর রহমান এসে বিযুক্ত মোটরসাইকেল আর রেডি মোটরসাইকেল, দুটোর ট্যাক্সই সমান করে দিল।
এখন চায়না থেকে দুটো মোটরসাইকেলের দামই প্রায় সমান। খুবই সামান্য তফাৎ। সেক্ষেত্রে একদল কনটেইনার ভরে ভরে মোটরসাইকেল এনে সরাসরি গুদামে তুলল, পরের দিন থেকে বিক্রী শুরু।
বাজারে টিকে থাকতে গিয়ে এখন আমরাও কারখানা বন্ধ করে দিয়েছি। সরাসরি পোর্ট থেকে মাল বেরিয়ে ডিলারদের কাছে চলে যাচ্ছে।
নো কারখানা বিজনেস।
ঐ দেড়শ লোকের চাকুরি নেই , এটা তো বলাই বাহুল্য।
সাইফুর রহমান বায়ুগ্রস্থ অর্থমন্ত্রী ছিলেন, কোন এক অলৌকিক কারণে তিনি ভাবতেন বাংলাদেশ অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ না, এমনকি সল্পোন্নত দেশ ভাবতেও তার ইগোতে লাগত! সাইফুর সাবের ছেলে সিন্ডিকেট বানিয়ে বাপের ছায়ায় একচেটিয়া ব্যবসা করে গেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়ে নিছেন, উনিও উটপাখির মতোই বালিতে মুখ লুকিয়ে রাখছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত একজনও বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্ন অর্থমন্ত্রী পেলাম না।
আরিফ ভাই, আপনি নিজে তো সক্রিয়ভাবে দেশে ব্যবসা বানিজ্যে যুক্ত আছেন। একটু কষ্ট করে লিখুন না এইসব অনিয়ম আর দুর্নীতির কথা। আমিতো এখন আর সিনে নাই, বই পুস্তক ঘেঁটে আর শুনে কতোটা আর বর্তমান পরিস্থিতির কাছাকাছি যাওয়া যায়।
এইসব কষ্টের লেখা পড়তে ভালু লাগে না, তার থেকে একটা চাকভুম চাকভুম লেখা দেনতো, পইড়া মনটাতে আরাম আসুক।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ঠিকাছে তনু, বার্থডে গার্লের কথা কেমনে ফেলি? শুধু আপনার জন্য হলেও অনতিবিলম্বে 'চাকভুম চাকভুম' মার্কা একটা লেখা দিব
মামুন ভাই
আপনি এই লেখাটা লিখেছেন ইলেকট্রনিক্স এর জন্য
কিন্তু সব ব্যাবসার জন্যই প্রযোজ্য এই যন্ত্রনা
লেখা ভালো লেগেছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
সত্যি কথা রানা। এভাবেই হোস্টেজ আমরা নিজ দেশের রক্ষকদের কাছে।
আমিও তানবীরাপুর মতো করেই বলতে চাই, চাকভুম মার্কা একটা লেখা দেন
নতুন মন্তব্য করুন