ঐ হাউ কাউ পর্যন্তই। শেষ পর্যন্ত কোন কামড় টামড় খেতে হলোনা। বোনান রণংদেহী কুত্তাগুলোকে ঠিক সামলে নিল। অফিসে ঢুকে লম্বা আলোচনা শেষ করতে করতে সন্ধ্যা। ওর বাড়িতেই খেয়েদেয়ে হোটেলে ফিরে ঘুম।
ঘুম ভাঙলো মাঝরাতে। ভাঙলো তো ভাঙলোই—আর জোড়া লাগার নাম নেই। বুঝলাম বায়োলজিক্যাল ক্লকের পাল্লায় পড়েছি। জোরাজুরি করে কাজ হবেনা। এর চেয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করে আসা ভালো । ফেরার সময় সকালের মতো ততোটা ঠান্ডা লাগেনি।
রাস্তায় নেমে অভ্যাসমতো সিগারেটের খোঁজে পকেটে হাত দিয়েই খেয়াল হলো শেষ সিগারেটটা অনেক আগেই পুড়িয়ে ফেলেছি। এখন উপায়! ধুমপায়ীদের জন্য কাজের সময় হাতের কাছে পোড়াবার মতো কিছু না থাকার যন্ত্রণার কোন তুলনা হয় না। আশে পাশে কোন দোকান ও দেখছিলাম না। হোটেলের রিসেপশনে গিয়ে জানতে চাওয়ায় একটা গলি দেখিয়ে দিল, ওটা ধরে মিনিট দশেক হাঁটলেই একটা লিকার শপ-সিগারেটও ওখানে পাওয়া যাবে।
একটু বেখেয়ালী ধরনের মুসাফির আমি, সহসা ভয় ডরও খাইনা। আগা মাথা না ভেবেই আধা-অন্ধকার গলির মধ্যে ঢুকে পড়লাম। বেয়ারা শীতকে শরীরে জাঁকিয়ে বসার সুযোগ না দিতে লম্বা লম্বা পায়ে হাঁটছিলাম। রাত গভীর। লোকজনের চলাচল খুব কম। খুব বেশিদূর যেতে হলোনা, চার-পাঁচ ব্লক পরেই আলোর দেখা পেলাম। পা চালিয়ে গিয়ে দেখি লিকার শপ না, অন্যকিছু। সাইন বোর্ডে অর্ধনগ্ন তরুনীর ছবি, দরজায় দাঁড়ানো লোকজন খুবই অতিথিপরায়ন বলে মনে হলো—তাদের বিনীত ডাকাডাকি শুনে। না থেমে এগিয়ে গেলাম। আলো ঝলমলে দালানটির পাশ দিয়েই একটা ছোট গলি, তার মুখে রীতিমতো কিচিরমিচির করা পাখিদের জমায়েত। আমার চেয়েও দেড়হাত উঁচু আফ্রিকান ললনারা যেমন আছেন, আবার মুখে কয়ের পর্দা প্রসাধনী চড়ানো ইওরোপিয়ানদেরও দেখলাম। বোঝা গেল লাল বাতি এলাকায় চলে এসেছি। আমার কাপের চা না, দুদ্দাড় হেঁটে লালায়িত লালাবাঈদের পেরিয়ে গেলাম।
এরপর আবার খানিকটা আলো-আঁধারী। তবে অল্প দূরে বড় রাস্তা দেখা যাচ্ছিল। কাছাকাছি চলে এসেছি ভেবে একটু নিশ্চিন্তবোধ করতে শুরু করতে না করতেই অন্ধকারের মধ্যে হতে বিশালদেহী এক লোক এসে সামনে দাঁড়ালো। আমি একটু চমকে গেলেও সামলে নিলাম। কী ব্যাপার জানতে চাইলেই ভদ্র ভাষায় জানালো তারা একটা নতুন ব্যবসা খুলছে আমি যেন খদ্দের হয়ে তাদের একটু সাহায্য করি। ভাজা মাছটিও উলটে খেতে জানিনা ( তখন আসলেই জানতাম না) এমন ভঙ্গীতে কী ব্যবসা তা জানতে চাইলাম। বিগলিত উত্তর আসলো- পীপ শো।
পীপ শো কী বস্তু –খায় না মাথায় দেয় সে সম্পর্কে আমার কোন ধারণাও ছিলনা । পথ আটকানো ভাই সাহেব বুঝিয়ে বলতেই বাজে ঝামেলার গন্ধ পেলাম। সুন্দরী কোন বালিকা আমাকে ঘিরে নাচবে, নাচতে নাচতে তার পোষাক খসে পড়বে। চোখের সুখ মেটানোর পর যদি আরও কোন চাহিদা থাকে তাহলে সে ব্যবস্থাও আছে, তবে গাঁটের কড়ি খসাতে হবে। যাই করি মিনিমাম চার্জ ৭৫ ইউরো । কড়া কন্ঠে আগ্রহী নই বলে চলে যেতে উদ্যত হতেই অন্ধকারের ভেঙ্গে আরও তিনজন উদয় হলো। মাশাল্লা একই রকমের সাইজ সবার, দৈর্ঘ্যে প্রস্থে তাদের সামনে আমাকে শাহেনশাহ সিমনের পাশে বিডিআরের মতোই লাগবে। এক পর্যায়ে খেয়াল করলাম চারজনে মিলে আমাকে ঘিরে ফেলেছে, চাইলেই এই বষ্টনী ভেঙ্গে বের হওয়া সুপারম্যান ছাড়া আর কারও পক্ষে সহজ হবেনা। শুধু ঘিরে ফেলাই না, তারা আমাকে হালকা ধাক্কা দিতে দিতে কানাগলির একটু ভেতরেও নিয়ে ফেলল। ছোট একটা দরোজা ছিল সেখানে। বুঝলাম ওখানেই তাদের নাখান্দা বানিজ্যের আখড়া।
হঠাৎ মনে পড়লো বোকার মতো মানিব্যাগে বেশ ভালো অংকের টাকা রেখেছি , কোটের আরেক পকেটে আছে পাসপোর্ট, টিকেট ইত্যাদি। এখন এরা যদি দেশী ছিনতাইকারীদের মতো সর্বস্ব লুটে নিয়ে ছেড়ে দেয় তাহলে প্যারিসের রাস্তা ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় থাকবেনা। দেয়ালে পীঠ ঠেকে যাবার মতো পরিস্থিতি—শক্ত হওয়া ছাড়া গতি নেই। চাপা মারার একটা প্রয়াস নিলাম, বললাম যে আমি একজন আমন্ত্রিত অতিথি ফরাসী সরকারের,আমার সাথে বেশি হাঙ্গামা করলে পস্তাতে হবে। কাজ হলোনা। তারা হেসেই উড়িয়ে দিল—বলে ঝামেলার কথা কোত্থেকে আসছে? আমরা তো শুধু চাই যে তুমি কাস্টোমার হয়ে আমাদের একটু সাহায্য করো।
সামান্য দূরেই বড়ো রাস্তায় একটা পুলিশের গাড়ি থামছে দেখে একটু আশার আলো দেখছি মনে করতেই গাড়িটা হুশ করে গতি বাড়িয়ে চলে গেল। আমাকে গলা লম্বা করতে দেখে ওদের হাসির মাত্রা আরও বাড়লো। একই কথা—আমার ভয় পাবার কিছু নেই , ভেতরে গিয়ে ক্যাটালগ দেখে যদি কাউকে পছন্দ না হয় তাহলে আমি বিনা বাধায় চলে যেতে পারব। উপায়ন্তর না দেখে রাজী হলাম। ভেতরটা অনেকটা থাই মাসাজ পার্লারের মতো , একদিকে দরিদ্র চেহারার একটা কাউন্টার আর অন্যদিকে ছোট ছোট কয়েকটা পর্দাঘেরা ঘর। ক্যাটালগে চোখ বুলালাম। সব সল্পবসনা মেয়েদের ছবি। অস্বস্তি আর মৃদু আতংকের দোলাচলে কাউকে ভালো লাগার প্রশ্নই আসেনা। সাফ বলে দিলাম পছন্দ হয়নি কাউকেই। বলেই দরজার দিকে হাঁটা শুরু করলাম, কিন্তু বড় হলে কেউ কথা রাখেনা, এরাও রাখলোনা। পথ আটকে দিল আবার। বলে পছন্দ হয়নি ঠিকাছে, চলে যাবে সেটাও তোমার ইচ্ছা। তবে যাবার আগে বলে যাও কোন ধরনের মেয়ে তোমার পছন্দ । আগামীতে তোমার মতো ( ভাদাইম্যা) কাস্টোমার পেলে যেন সন্তুষ্ট করতে পারি। আমি ভেবে দেখলাম ক্যাটালগে ভারতীয় উপমহাদেশের কোন মেয়ের ছবি দেখিনি। ঝামেলা এড়াতে বললাম আমার পছন্দ শুধু ইন্ডিয়ান মেয়েদের।
ভেবেছিলাম সওয়াল-জবাব শেষ, এবার আমি মুক্ত। কিন্তু মুক্তির ঘোষনার বদলে শুনলাম একজনের কন্ঠে উচ্ছ্বাস। ‘আরে আমাদের এখানে একজন ইন্ডিয়ান মেয়েও আছে! নতুন এসেছে তাই ক্যাটালগে ওর ছবি নেই। টিনা! টিনা!!’
কিছু বুঝে ওঠার আগেই টিনা নামের সেই বালিকা সামনে এসে হাজির । ভারতীয় না ছাই, ল্যাটিনা হবে দেখেই বুঝলাম। মেয়েটাকে ওদের একজন ফরাসী ভাষায় কী সব বলেই ঘর ছেড়ে বাইরে চলে গেল। ফাঁকা ঘরে শুধু শিকার আর শিকারী। ভ্যাবাচ্যাকা খুব সুস্বাদু কিছু নয় কিন্তু সেদিন কপালে সেটার অনেকগুলো ডোজ ছিল। এক লহমায় টিনা তার গায়ের গাউন খুলে ফেলল। অন্তর্বাস ছাড়া আর কিছু নেই পড়নে। মদির হাসিতে এগিয়ে এসে আমার হাত ধরে ভেতরে যেতে ইশারা করলো।
শুষ্ক হৃদয় লয়ে আমি ঝটকা দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হতেই আবার সেই চারজনের আবির্ভাব। তাদের বক্তব্য হলো টিনা অর্ধ নাঙ্গা যেহেতু হয়েই গেছে আমার সেবায়, আমি বাকী সার্ভিস নেই বা না নেই ৭৫ ইউরো আমাকে দিতেই হবে। মেজাজটা চরম খাপ্পা হয়ে গেল। যা হবার হবে আমি এখান থেকে বেরিয়ে যাব, রাগে অন্ধ হয়ে ওদের ধাক্কা দিয়ে পথ করে নিতে চাইলাম। নেতাগোছের তালগাছটার মুখে তখনো আকর্ণ বিস্তৃত হাসি। সে হাসতে হাসতেই আমার হাত নিয়ে তার কোমরে ছোঁয়ালো। ধাতব কিছুর স্পর্শ টের পেলাম। ভালো বিপদ!
মাথা ঠান্ডা করতে সিগারেট অনেক সময় কাজে দেয়। সেটা কিনতে গিয়ে যে এই ঝামেলায় পড়তে হবে তা কল্পনায়ও আসেনি। আমি জোর করে মাথা ঠান্ডা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। বললাম যে আমি আসলে শুধু সিগারেট কিনতেই বেড়িয়েছি সাথে টাকা পয়সা তেমন নেই। সে বলে সিগারেট আমাদের এখানে আছে, বিয়ারও আছে, তোমার কী লাগবে বলো টাকা দিলেই এনে দিচ্ছি। একটু আগে বেহুদা ধাক্কা ধাক্কি করে বিপদ বাড়িয়েছি, পরিস্থিতি হালকা করতে ব্যাটার নাম জানতে চাইলাম।
এক কথায় উওর আসলো ‘মোহাম্মদ’।
এবার আমার হাসার পালা, — ‘বলো কী ? মোহাম্মাদ! আমার নামও তো মোহাম্মদ, শুধু তাই না , আমার বাবার নাম, ভাইয়ের নামও মোহাম্মদ। তুমি নিজে মোহাম্মদ হয়ে আরেকজনের সাথে এই ধরনের ব্যবহার কীভাবে করছ?’
এই ওষুধে কাজ হলো। ওদের একটু বিব্রত বলে মনে হলো।
জানা গেল অন্য তিনজনও মুসলিম। সেনেগালিজ অভিবাসী। নিজেদের মধ্যে কথা বার্তা বলে তারা লম্বা একটা ব্যাখ্যা দিল, তাদের নতুন ব্যবসা কিন্তু লোকজন তেমন আসেনা। তাই বাধ্য হয়ে আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে যদিও তাদের মোটেও বাজে কোন উদ্দেশ্য ছিলনা ইত্যাদি ইত্যাদি। নির্ভার হয়ে এক প্যাকেট সিগারেট চাইলাম, প্যাকেট খুলে ওদেরও দিলাম। একজন বিয়ার এনে সাধল। নিলাম না।
কাউন্টারে ২০ ইউরোর একটা নোট ফেলে সবার হাত ঝাঁকাঝাঁকি করে নিশ্চিন্ত মনে বের হয়ে আসলাম। এর পর থেকে না জেনেশুনে কোন চিপায় আর কোনদিন ঢুকিনি।
এবার কান্ড ম্যাকডোনাল্ডস এ
পরদিন দুপুরে আরেকটা মজার ঘটনা ঘটলো।
হোটেলের পাশের ম্যাকডোনাল্ডসে খেতে গেসিলাম। বার্গারের সাথে কিছু চিকেন নাগেটও কিনলাম। কিন্তু একটা খেয়েই আর ভালো লাগলো না। রেখে দিয়ে চুপুচাপ খবরের কাগজে চোখ বুলাচ্ছি। হঠাৎ পাশে কেউ একজন এসে দাঁড়ালো।
-‘তুমি কি এগুলো শেষ করবে?’— পরিত্যক্ত চিকেন নাগেটের দিকে ইশারা করে এক মেয়ে জানতে চাইছে। না বলতেই অনুমতি নিয়ে আমার সামনের চেয়ারে বসে সবগুলো নাগেট সাবাড় করে দিল। জিজ্ঞেস করতে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে জানালো সে রোমানিয়ান , অবৈধভাবে ফ্রান্সে এসেছে মাস কয়েক । এখনো কাজ কর্ম কিছু পায়নি। মেয়েটাকে বেশভুষা খুব একটা খারাপ না, কিন্তু চেহারায় ভুখা-নাঙ্গা ভাব। আমি ভদ্রতা করে জানতে চাইলাম তার আর কিছু লাগবে কিনা। আইসক্রিমের কথা বললো। কিনে দিলাম। খুচরা পয়সা আমাকে খুব বিরক্ত করে, পকেট ভারী করে দেয়, ঝুন ঝুন করে বাজে। মেয়েটাও খুব হতদরিদ্র অবস্থায় আছে। পকেটের কয়েনগুলো ওকে দিয়ে দিলাম। মিস্টি হেসে ধন্যবাদ জানিয়ে সে বিদায় নিল। আমি আবার পত্রিকায় মন দিলাম , ঘটনার এই শেষ ভেবে।
শেষ হয়েও হইলোনা শেষ, আমি বাইরে আসতেই দেখি পাঁচ-ছয় জনের একটা দল—আমাকেও কিছু খাবার কিনে দাও, আমিও আইসক্রিম খাব—ইত্যাদি বলতে বলতে হৈ চৈ লাগিয়ে দিল। ওদের মধ্যে একজন গর্ভবতী মেয়েও ছিল । দূরে দাঁড়িয়ে সেই মেয়েটা হাসছে, নিশ্চয়ই সে বাইরে এসে তার বন্ধুদের বলেছে যে ভেতরে এক বোকা বিদেশী আছে, চাইলেই এটা সেটা কিনে দেয়। আমি কোনমতে ভীড় এড়িয়ে জোরে হাঁটা দিলাম, একবারও পেছনে না তাকিয়ে। এত লোকের কাজে আসার মতো কাজের মানুষ আমি নই।
ন'টার ট্রেন ক'টায় পৌছায়?
আজীবন ভাবতাম এই কথাটি শুধু আমাদের দেশের জন্যই প্রযোজ্য। ভুল ভাঙলো ফরাসী দেশে গিয়ে। ফ্রান্সের কাজ শেষ করে স্পেনে গিয়েছিলাম, বেড়াতে। ঘোরাফেরা শেষে মাদ্রিদ থেকে প্যারিসে ফিরছি, সারারাতের ট্রেনে। মাঝপথে এসে ট্রেন থেমে গেল। যান্ত্রিক গোলযোগ। ট্রেন সকাল সকালই প্যারিসে পৌছে যাবার কথা। সেদি দুপুরেই আমার তাইওয়ানের ফ্লাইট। বারোটার মধ্যে চেকইন করতে হবে। যান্ত্রিক গোলযোগে ট্রেন প্রায় তিন ঘন্টা বেশি সময় নিল প্যারিসে পৌছাতে। ফ্লাইট মিস করলাম। রেল কোম্পানী জানালো তারা ক্ষতিপূরণ দেবে, অতিরিক্ত যেই কয়দিন থাকব এদেশে তার খরচ পাতি সব তাদের। থাকা-খাওয়ার যাবতীয় বিল নিয়ে তাদের কাস্টোমার কেয়ারে গেলেই হবে। এমনকি তাদের অনুমোদিত হোটেলের ঠিকানাও দিয়ে দিল। পরের ফ্লাইট দুই রাত পর। শেষ দিনে হোটেলের বিল মিটিয়ে কাগজ নিয়ে রেল অফিসে গেলাম ক্ষতিপূরণ আদায় করতে। আহা ফেরেশতার মতো মানুষ সব, নিমেষেই ঝামেলা শেষ। কাগজ পত্রে সিল-ছাপ্পর মেরে আমাকে পাঠিয়ে দিলে আরেক অফিসারের রুমে। ভদ্রলোক সব দেখে বিনাবাক্যে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিলেন।
যা পেলাম দেখে খুশি হবার বদলে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল । নগদ টাকা না, প্রায় চারশ ইউরোর ফ্রী ট্রেন পাস, পুরো ইউরোপ জুড়ে। মেয়াদ এক বছরের। পরের এক বছরে আর মেইনল্যান্ড ইউরোপে যাওয়া হয়নি, সেই ট্রেন পাসগুলো ধুয়ে পানি খাওয়া ছাড়া কোন গতি ছিলনা।
শেষ পর্যন্ত আমার সেই ট্রিপটা অর্থকরী কোন কাজেই আসেনি। বোনানের সাথে প্রজেক্টের কথা বার্তা চুড়ান্ত করে তাইওয়ান ফিরে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই ক্যাসাব্লাঙ্কাতে ইহুদীদের বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক বোমা হামলা হলো। ভয় পেয়ে বোনানের পরিবারের বাকীরাও তল্পিতল্পা গুটিয়ে ফ্রান্সে চলে এসেছিল।
নটে গাছটি ফুরোলো
মন্তব্য
খুব ভাল লাগল আপনার ভ্রমন কাহিনী।
মজা পেলেও পীপ-শোর ব্যাপারটাতে বেশ অস্বস্তি হল। প্রায় ছিনতাইয়ের মতই তো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। বুঝতে পারলাম না ঘটনা কতদূর পর্য্যন্ত গড়াতে পারত - ৭৫ ইউরো নাকি আরো বেশী। সেই পরিবেশে যতটুকু ঠান্ডা মাথায় ব্যাপাটাকে ডিল করেছেন, সবার পক্ষে তা হয়ত সম্ভব না।
ভাল থাকুন।
অনেক ধন্যবাদ নৈষাদ। পীপ শো এর ব্যাপারটা আসলেই খুব খারাপ দিকে যেতে পারতো। কপালগুণে বেঁচে গেছি। আপনিও ভালো থাকবেন
"ফাঁকা ঘরে শুধু শিকার আর শিকারী।"-----------
আহা-হা-হা-হাহা!!!!!!!!!!!!
এম সারোয়ার
----------------------------------
"মোর মনো মাঝে মায়ের মুখ।"
ধন্যবাদ।
হুম। সবই বিজ্ঞান।
তুমি এইখানে বিজ্জান পাইলা কই মামু?
ভালো লাগলো, ধন্যবাদ।
মবনু
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ!
হাহাহা...
লেখায় বুইড়াঙ্গুল !!!
দুনিয়াজুড়া পচুর অপিজ্ঞতা...
-------------------------------------------------------------
মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক
হ, হাড় কালা করলাম রে দুরন্ত পরবাসে...
লালায়িত লালাবাঈদের লুলাবাই শুন্লেন্না তাহলে???
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
ভাইরে পরিস্থিতি , ভাব-সাব দেখলে লুলাবাই শোনার মুড তোরও থাকতোনা।
আরে দূর ভাই ! জোয়ান মরদ মানুষ আপনে এইডা কী কাহিনী লিখছেন ? নাহ্, আপনেগোরে দিয়া বিদেশ-বিভুঁইয়ে কিচ্ছু হইবো না !
তয় অভিজ্ঞতাটা জটিল হইছে !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ধন্যবাদ রণদা। তখন একেবারে নতুন ইউরোপে, ভাওই বুঝতে পারিনাই
দুর্দান্ত ঘটনার নাটকীয় বর্ণনা। নাম তাহলে মাঝে মাঝে কাজেও দেয় দেখছি। লেখা অতি ভালো হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে এরকম লিখবি।
হ মামা , নাম একেবারে ফেলনা কিছু না। প্রতি সপ্তাহে?আচ্ছা লিখবো...তুই বললে মানা করি কেমনে?
-ফ্রান্সে গেলে দেখি রাইতে বাইর হওয়া যাইবো না
-আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কিছু পিচ্চি আছে এক্টাকে যদি একটু ২-৩টাকা দিছি বাকিগুলাও দৌড়ায় আসে!!
-লেখা সিরাম হইছে
---------------------
আমার ফ্লিকার
এগুলা ২০০২ সালের ঘটনা। এখন দুনিয়া অনেক বদলে গেছে। তবুও রাতবিরেতে দেশের বাইরে সাবধান থাকা ভালো
নটে গাছটি এত তাড়াতাড়ি না ফুরালেই ভালো হতো। খুব ভালো লেগেছে মামুন ভাই।
মহসীন রেজা
অনেক ধন্যবাদ মহসীন!
এই সেনেগালীগুলী দেখি "পীপ শো" এর নাম ডুবাইলো।
পুরাই! ঘাড়ে ধইরা কাস্টমার পাকড়াও এইডা একটা কথা হৈল?
মামুন ভাই, আপনি এত্ত বেরসিক বিশ্বাস হয় না! ভাবী কি বাংলা পড়তে জানে? অনেক কথা কইলেন না মনে হয়...
হুম! ম্যাকডোনাল্ডস'এ আমারও এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। একটা জিনিস খুব অবাক লাগছিল, জায়গা বুঝে ম্যাক'এর দাম ওঠানামা করে!
তয় ইউরোপে প্রচুর ধূমপায়ী! উত্তর আমেরিকায় এত দেখি না!
ব্যাপক ভাল লাগল...
-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
হা হা হা, না ভাবী বাংলা পড়তে জানেনা, আর আমিও এত বেরসিক না
পুরা দুনিয়াই আসলে বাংলাদেশ । কোনটা চকচকে, কোনটা ম্যাড়মেড়ে, কোনটা রঙ্গিন, কোনটা একটু বিবর্ণ । তবে আসলে সবই বাংলাদেশ ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
হ রে ভাই, আসলে দেয়ার ইজ নো কান্ট্রি ফর পিপল।
ভ্রমণকথা তো আত্মকথার মতোই, সেখানে আরো কিছুর ( চোখ টিপির ইমো দিতারিনা)অনুল্লেখ,গর্হিত কাজ ।
বিশেষতঃ `মোহাম্মদ`দের জন্য।
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
সব কথা কইতে গেলে তো সাতকাহন হয়ে যাবে সুমন ভাই ( চোখ টিপির ইমো আমিও দিতারিনা)
ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ মূলোদা।
এইবারের লেখা পড়ে বেশ ভয় পইয়া গেসিলাম, শেষমেষ সেনেগালির হাতে মাইর খাইয়া প্যারিসের রাস্তায় নাঙ্গা হইয়া ঘুইরা বেড়াইলেন কিনা। শেষ রক্ষা হোয়াতে দ্বীর্ঘশ্বাস ফালায় বাঁচছি। বড় ফাঁড়া কাটসে মিয়া। লেখার বাকি অংশ তুমুল হইসে, আর ট্রেন ওয়ালারা ক্ষতি পূরণ দিব বিশ্বাস করতে কষ্ট হইতেছিল, কাজেই পরে কি আসতেছে সেটা কিছুটা অনুমান করে নিসিলাম।
পুরাটা মিলায় বিরাফক জটিল লেখা, আর বুঝলাম, চিপা হোক বড় হোক প্যারিসে গিয়া কাম নাই, পোস্ট কার্ডে আইফেল টাওয়ার দেইখা নিমু নে। লেখা ঝাক্কাস হইসে, আপনে লেখনি আর বর্ন্নার কারনে সুখপাঠ্য হয়েছে বস, আপনার কাছ থিকা আরো লেখা চাই, আর ঐ ট্রিপের ২-১ টা ছবি দেন। টিনার ছবি না দেন, প্যারিসের ছবি তো দিবেন
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
ঐ মিয়া আমার একটা বাজে অভিজ্ঞতার কথা শুইনা প্যারিসে যাইবানা ক্যান? না গেলে হিল্টন আফায় মাইন্ড খাইবো
অনেক বছর আগের ঘটনা, ছবিটবি এখন আর কোথাও কিছু নাই। আবার গেলে ছবি তুলে আনবো।
লেখা ভাল্লাগসে। আমার মামুর একটা গল্প কই। গেসিলো লন্ডনে, সেইখান থেইকা যাবার কথা স্পেন। দূতাবাসে যাবার জন্য ভার্জিন কোম্পানির ট্রেনে উঠসে আর ট্রেন গেসে নষ্ট হয়ে। এর পর মামুরে অন্য ট্রেন আইসা লয়ে গেসে মাগার তিন ঘন্টা লেটে। তো মামুর যদিও তেমন ক্ষতি হয়নাই, ভিসাও পাইসিলো, কিন্তু ক্ষতিপূরণের ফর্ম দেইখা আবেদন করসে যে ট্রেন নষ্ট হওয়া্য় তাঁর ব্যপক মানসিক কষ্ট হইসে। তারপরতো দেশে চইলাও আইসে। দুইমাস মতন পর ওরা লন্ডন থেকে ২৫০ পাউন্ড পাঠায় দিসিলো আর আমরা ভাইগনারাও একটা চাইনিজ মাইরা দিলাম
চিপা সর্বত্র বিপজ্জনক!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
ভয় পাইলাম চিপার কথা শুনে।
বিদেশে তো দেখি বাপ ভাইরাও নিরাপদ না!
---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।
---------------------------------------------
ল্যাসিক করাতে ভয় পাই আর লেন্স ভাল লাগে না।
নতুন মন্তব্য করুন