এই লেখায় আপনাদের আলী হোসেনের দুর্ভাগ্যের কথা জানিয়েছিলাম। আজকে সেই ব্যাপারটার একটা সুরাহা হলো। দীর্ঘ পাঁচ মাসের কবর-শ্মশানের টানাটানি, সরকারী-বেসরকারী অফিসে দেন-দরবার, সচিবালয়-দূতাবাস-আইন-আদালত- ডাক্তার-হাসপাতাল-পুলিশ-আবেদন-নিবেদন-হতাশা-দাঁতে দাঁত চাপা -নির্বিষ দীর্ঘশ্বাস সব মিলিয়ে সে এক নিদারুণ অভিজ্ঞতা বটে। ভুল সময়ে ভুল জায়গায় মরে গিয়ে লাল ফিতার দৌ...
বাপ হবার পর থেকে কাজ-কারবার অনেক কমিয়ে দিয়েছি। লাঞ্চের পরে অফিসে যাই , ঘন্টাকয়েক হা পিত্যেশ করে আবার ঘরে ফিরে আসি। কী করবো মন যে পড়ে থাকে ঘরে, মেয়েদুইটার কাছে। সবাই বলে যমজ ছানাপোনা মানেই ডাবল ব্লেসিং, ডাবল জয়, ডাবল ব্লিস...কথা ঠিক তবে এর সাথে আরেকটা অনিবার্য সত্য কথা যোগ করতে ভুলে যায়। সেটা হলো যমজ মানে ডাবল ট্রাবল। তো এই আনন্দময় দ্বিগুণ উৎপাতের দৌরাত্মে কোন কাজই সময়মতো করা যায়না। ...
সারারাত বুকভরা উথাল পাথাল কান্নার সাথে লড়াই করতে করতে ক্লান্ত সুফিয়া ভোররাতে ঘুমিয়ে পড়ে—কাঁদতে কাঁদতে। তবুও সূর্য ওঠার সাথে সাথেই বিছানা ছাড়ে—সংসার বলে কথা। রাতে ভিজিয়ে রাখা চাল গুড়ো করে , নারকেল কুরিয়ে, পাটালী গুড়ের পুর দিয়ে ধবধবে ভাপা পিঠা বানিয়ে জয়নালের সামনে যখন রাখে চারদিক তখন সকালের সোনারোদে ঝকমকে।
গত শীতেও দেখা যেত আগুন গরম পিঠা নামিয়ে রাখার সাথে সাথেই জয়নাল প্রায় হ...
ফেসবুকে সেদিন হঠাৎ করে দেখা হয়ে গেল প্রিয় মানুষ, প্রিয় আঁকিয়ে সুজন্দার সাথে। বাপ হবার আনন্দে আমি তখন উদ্বেল। সুজন্দা জিগাইলেন আছি কেমন, কইলাম বড্ড আনন্দে আছি, মেয়ে দুইটার দিকে তাকাইলেই হাসি একান-ওকান হয়ে যায়। তারপর মনে পড়লো অনেক আগে নিজের একটা খোমা সুজন্দার দপ্তরে পাঠাইছিলাম আজ পর্যন্ত প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে উঠি নাই। সংকোচের মাথা খেয়ে ভাইজানকে বলে বসলাম, আমার একটা খোমা একে দেন, না হ...
হাবাগোবা ধরনের লোকদের অনেকে উজবুক বলে। এককালে উজবেকিস্তানের লোকজন নাকি বোকাসোকা হিসেবে জগৎজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছিল, সেই থেকেই এই নামের উৎপত্তি। কিন্তু বাস্তবে আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে যে দুই চার জন উজবেকের সাথে দেখা হয়েছে তাদের কাউকেই সে অর্থে উজবুক বলে মনে হয়নি। সেদিক দিক দিয়ে বলতে গেলে পাকিদের মতো বেওকুফ আমি মাশাল্লাহ খোদার দুনিয়াতে কমই দেখেছি। তেনাদের হারামীপনা নিয়ে কথা ব...
আমার দীর্ঘদিনের আক্ষেপ—সময়ের ঘোড়া এত দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকে যে প্রায়শই এর কোন কুল কিনারা করতে পারিনা। বিশেষ করে ৯২ সালের পর থেকে জীবন যেন রকেটের গতিতে ছুটে চলেছে। বছর কেটে যায় মাসে , মাস সপ্তাহে আর সপ্তাহ দিনে। দিন শুরু হতে না হতেই শেষ। কোথায় ছুটেছি, কোথায় চলেছি জানার বা বোঝার আগেই।
কিন্তু ইদানীং সময়ের ঘোড়া ছুটছে তো নাই, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েও হাঁটছে না, কেমন যেন স্থবির হয়ে আছে। আসলে...
এই লেখাটা লিখতে গিয়ে বারবার থেমে গিয়েছি। লিখে কিছু হবে কিনা জানিনা, আবার না লিখেও পারছিনা। অসহায় এক অনুভূতি গ্রাস করে আছে। ভালো-মন্দ, হাসি-কান্না, সুখবর-কুখবর মিলেই তো আমাদের জীবন। তবুও মাঝে মাঝে এমন কিছু দুঃসময়ের সাক্ষী হয়ে যাই নিজেরও অজান্তে যা ভাসিয়ে নিয়ে যায় , ডুবিয়ে দেয় অবশ করা বিষাদের সাগরে।
ঘটনাটা শুনি গত শুক্রবার দুপুরে। মিশরী এক বন্ধু জানালো যে বাংলাদেশী এক অবৈধ অভিবা...
আমার বন্ধু রবার্ট হুবার। জর্মন দেশের লোক। পেশায়-নেশায় ফটুরে। হং কং এ পরিচয়, তারপর মেসেঞ্জার আর কালেভদ্রে দুয়েকটা ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা। এভাবেই চলছিল অনেকদিন। এখন আবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, কোথাও খুঁজে পাচ্ছিনা। এই লেখাটা নাজিল করার প্ল্যান ছিল অক্টোবরে, আশায় ছিলাম রবার্টের হদিস পেলে রঙ-চঙে একটা সচিত্র পোস্ট দেবার। কিন্তু নিরুদ্দেশ বন্ধুর পাত্তা না মেলায় আপাতত এই সাদা...
অনেকদিন ধরেই কোন কিছু লেখা হয়না। সময় হয় তো মুড থাকেনা, আর মুড থাকেতো ফুরসৎ মিলেনা। আজ তাই নিজেরে জোর করে কম্পুর সামনে বসিয়ে এই মাঝরাত্তিরে খোলামকুচির মতো কিছু শব্দ খরচ করে ফেললাম। পড়তে দিয়ে কারো ধৈর্যচ্যুতি হলে সেটা এই হতচ্ছাড়া লেখকের ততোধিক হতশ্রী লেখারই দোষ।
০১.
আজ রেডিওতে একটা খবর শুনে চমকে গেলাম। সামনের বছর থেকে তাইওয়ানেও বাচ্চা ফুটালে বেবী বোনাস দেয়া হবে। হয়তো ভাবছেন ধন...
নতুন বাসায় উঠেছি মাস কয়েক হলো। পড়শীদের সাথে এখনও তেমনভাবে আলাপ-পরিচয় হয়ে ওঠেনি। তবে প্রায়ই পাশের অ্যাপার্টমেন্টের জানালায় ছোট একটা বাচ্চাকে দেখি। বছর চার-পাঁচ হবে হয়তো বয়স। মিস্টি একটা ছেলে। আমাকে দেখলেই বলে উঠতো শুশু নি হাও (ছোট চাচ্চু হ্যালো )। আমিও নি হাও , কেমন আছো, কী খেয়েছ ইত্যাদি দুয়েকটা কথা বলে বিদায় নিতাম। সপ্তাহদুয়েক আগে ছেলেটাকে আবার দেখলাম, তড়িঘড়িতে ওর নি হাওয়ের জবা...