[১]
এই বারই নাকি শেষ বারের মত ডিভি’র আবেদন করা যাবে। এর পর আর কেউ জীবনেও করতে পারবেনা। তাই যেদিন এ্যাপ্লিকেশনের জন্য অনলাইনে বলা হয়েছে সেদিনই বিলি প্রথম এ্যাপ্লিকেশন করে। কে যেনো একবার বলেছিল যে প্রথম দিকের এ্যাপ্লিকেশ থেকেই নাকি ডিভি লটারী লেগে যায়। গত দুইবার এ্যাপ্লাই করেও বিলি ডিভি পায়নাই। এইবার নিয়ে তিনবার। তাই এবার অনেক আশা নিয়ে ডিভি এ্যাপ্লাই করেছে যদি দানে দানে তিন দান হয়ে যায়! ইস একবার যদি যাওয়া যেত স্বপ্নের দেশটাতে। পুরো জীবন বদলে যেত তাহলে।
গতবার ডিভি পেয়েছিলো বিলি’র খালাতো ভাই জনি। জনি’র চেহারা দেখে মনে হচ্ছিলো যেনো সাত রাজার ধন পেয়ে গেছে। মাঝে মাঝে সে স্বপ্নের দেশ থেকে ছবি পাঠায়। রূপালী নদীর তীরে অথবা উঁচু হাই রাইজ কোন বিল্ডিং এর ছাদে দাঁড়িয়ে তোলা কোন ছবি। বিলিরও খুব ইচ্ছা একদিন সেও পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী এই দেশটার কোন এক ব্যাস্ত রাস্তায় এরকম ছবি তুলবে। শুধু দরকার একবার ঐ দেশটাতে ডিভি পাওয়া। তাহলেই এই জঞ্জালের আমেরিকা ছেড়ে স্বপ্নের বাংলাদেশে উড়ে যাওয়া যায়। উপরওয়ালা কেনো যে বিলি’র দিকে তাকায়না!
[২]
ডিভির ডেডলাইনের আরো এক সপ্তাহ বাকী আছে। কিন্তু এরই মধ্যে ইনফরমেশন নিতে আসা লোকের সংখ্যা যেন অসীমের সূচক আকারে বেড়েই চলেছে। ইনফরমেশন বুথ খোলা হয়েছে বিশটা। তাতেও কুলোচ্ছেনা। দূতাবাসের কর্মীরা সব দম না ফেলে কাজ করে যাচ্ছে। কারো সাথে কারো কথা বলার সমায় নাই।
দূতাবাসে নিজের অফিস রুমে বসে সামাদ শাকুর সামনের বিশাল প্লাজমা স্ক্রীনে বসে প্রতিটা রুমের অবস্থা দেখছে। বাংলাদেশ এম্বেসীতে সামাদ আছে প্রায় দুই বছর। গতবারের তুলনায় এবারের ভীড় যেন লাগাম ছাড়া। হবেই বা না কেন, এবার যে শেষবারের মত ডিভি চেয়েছে বাংলাদেশ। স্বপ্নের দেশে পা রাখার এটাই যে শেষ সুযোগ! কে হারাতে চায় এ সুযোগ! সামাদের মনে পড়ে যায় তার দাদার কথা। ছোট থাকতে তার দাদা একবার বলেছিল তাদের সময় নাকি আমেরিকা যাবার জন্য মানুষ এমন হাপিত্যেস করত। কী আজব সময় ছিলো সেটা! এক সময় নাকি আমেরিকা পুরো পৃথিবী শাসন করত। অথচ আজকে এই দেশ তৃতীয় বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ।
মাঝে মাঝে সামাদ ভাবে, কেন যে মরতে এই দেশে এসেছিলো সে। ঢাকাকে খুব মিস করছে সামাদ। উঁচু উঁচু বিল্ডিং থেকে নীচের প্রশস্ত রাস্তায় ছুটে চলা গাড়ি দেখার মজাই আলাদা। গতবছর বাংলাদেশ সরকার কয়েকটি বাই ভার্বাল বা উড়ুক্কু গাড়িকে এক বছরের জন্য পরীক্ষামূলক লাইসেন্স দিয়েছিলো। শোনা যায় ওগুলো নাকি সফল ভাবে চলেছিল। তাহলে নিশ্চয়ই এবার বাংলাদেশে গিয়ে খোলা আকাশটুকুও দেখা যাবেনা। বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলো বা পৃথিবীর সাত আশ্চর্যের একটি কক্সবাজারের সৈকত কোনটিকেই ভুলেনি সামাদ।
সামাদ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। অনেকদিন বাংলাদেশের নীল আকাশটা দেখা হয়না। বাংলাদেশে যাবার জন্য মন আনচান করতে থাকে। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেইতো আর সব হয়না। পৃথিবীর সবচেয়ে সম্পদশালী দেশের অংশ সে, এটা ভেবেই মনকে প্রবোধ দেয় সামাদ।
মন্তব্য
ইসস সত্যিই যদি বাংলাদেশ এমন হত
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
মাঝে মাঝে এমন স্বপ্ন দেখতে আমার বেশ ভালো লাগে..।।
_________________________________
| আমার বাংলা ব্লগ | আমার ইংলিশ ব্লগ |
_________________________________
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
মডারেটরগন, আমার এই পোস্টে ছোট্ট একটা সংশোধন দরকার। আমার এই পোস্টের ক্যাটাগরী উল্লেখ করতে আমি ভুলে গেছি। এটাকে কি গল্পের ক্যাটাগরীতে ফেলা যায়। যেহেতু আমি এখনো অতিথি লেখক, পোস্ট এডিট করার ক্ষমতটা আমার নাই।
_________________________________
| আমার বাংলা ব্লগ | আমার ইংলিশ ব্লগ |
_________________________________
_______________
::সহজ উবুন্টু শিক্ষা::
গল্পটা পড়ে ভালো লাগলো।
হাঁটুপানির জলদস্যু
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
এমন যদি হতো...
ইচ্ছে হলেই আমি হতাম প্রজাপতির মতো।
গল্পটা ভাল্লাগছে।
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
আগে কোনও কারনে লেখাটা চোখ এড়িয়ে গেছল।
পড়ে ভাল লেগেছে।
--------------------------------------------------------
নতুন মন্তব্য করুন