মিথিলা: আমার ভূমিকা

মাশীদ এর ছবি
লিখেছেন মাশীদ (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/০১/২০০৭ - ৫:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ব্যাপারটা কি হল ঠিক বুঝতে পারছি না।

আমার এখনো শুধু আই পি র ভিত্তিতে ব্যাপারটা বিশ্বাস হচ্ছে না। ব্লগের কাউকে নিয়ে পোস্ট দেয়া আমার স্বভাব না, তবু 'মিথিলা'র ব্যাপারটায় আমি ইনভলভড বলে এই পোস্টটা দিচ্ছি।

রুবেল বা মিথিলা - কারো পোস্টই আমি তেমন একটা পড়িনি আগে। রুবেলের পোস্টে ওর এক বন্ধুর অসুস্থতার কথা পড়ে শুভ কামনা করেছিলাম। এরপরে মিথিলার নিউ ইয়র্ক থেকে করা পোস্টগুলো চোখে পড়ে। একটা ছোট অসুস্থ মেয়ের জন্য কষ্ট হয়। কিন্তু এ পর্যন্তই। ব্লগের বাইরে খুব কম ব্লগারের সাথেই আমার যোগাযোগ। তাই এ নিয়ে খুব ভাবিনি তখন। তাছাড়াও সে সময় আমি থিসিস লেখার কাজে খুব ব্যস্ত ছিলাম।

এরপর 1লা জানুয়ারি আমার পুঁথি সিঙ্গাপুরা পোস্টে কমেন্টের মধ্য দিয়ে ওর সাথে হুট করে গল্প শুরু হয়। আমি ততদিনে জানি মিথিলা খুব অসুস্থ একজন। তাই ইচ্ছা করেই টুকটাক ফাইজলামি করি as an attempt to divert her mind from thoughts of death. এরপর ও আমার ইয়াহু আইডি চায়। আমি সেটা ওকে দিয়ে ইয়াহুতে ঢুকি। আমি এমনি ইয়াহুতে খুব ইররেগুলার। যা হোক, সেদিন অনেক গল্প হয়। রুবেলে পোস্টে এক সাথে কেমো আর ডায়ালিসিস পড়ে যে সন্দেহ জেগেছিল সেটার ভিত্তিতে ওকে জিজ্ঞেস করি ওর আসলে কি হয়েছে। ও বলে ওর কিডনি সমস্যা সাথে ইউটেরাস ক্যানসার। ওর হাতে সময় আর মাত্র এক বছর। বেশ মায়া লাগে ওর জন্য। রুবেলকে নিয়ে কথা হয়। রুবেল ওর সাথে যেতে চেয়েছিল কিন্তু ভিসা পায়নি, ও মারা গেলে রুবেলের কি হবে - এই সব। কথা আমিই বেশি বলছিলাম। এমনিতেও বেশি কথা বলি, তার থেকেও বেশি বলেছিলাম এই ভেবে যে একটা মেয়ের মন খারাপ and i should try to cheer her up. রুবেল আর মিথিলা তখন দু'জনেই অনলাইনে ছিল। মিথিলা ভেবেছিল রুবেল ওকে নিয়ে পোস্ট দেবে কিন্তু পোস্ট দিল কুয়াকাটা নিয়ে। এ কারণে ওর হালকা মন খারাপ হয়েছিল মনে আছে, যেটা আমার কাছে খুব স্বাভাবিক মনে হয়েছিল। কে না চায় অন্য কেউ তাকে নিয়ে পোস্ট দিক।

ব্লগের কার কার সাথে ব্লগের বাইরেও যোগাযোগ আছে সেটা নিয়ে চ্যাট হচ্ছিল। মিথিলা বলেছিল ওর সাদিকের সাথে চ্যাট হয়েছে। আমি বললাম আমার সাথে কয়েকজনের মাত্র যোগাযোগ এর মধ্যে রাগ ইমন আপুর সাথে চ্যাট হয় মাঝেমাঝেই। ও তখন রাগ ইমন আপুর ইয়াহু আইডি চাইল। আমি আপুকে জিজ্ঞেস করে ওকে সেটা দিলাম। রাগ ইমন আপুর সাথেও ওর কথা হয় সেদিন থেকেই। আমার মাধ্যমেই।

আমাকে বলল আমি যেন ইয়াহুতে থাকি এরপর থেকে। কিন্তু কাজের চাপে এরপর আর 2-1 দিন শুধু লগইন করে হাই-হ্যালো পর্যন্ত কথা হয়েছিল। একবারো মনে হয়নি যে মিথিলা সত্যি কেউ নয়। বা কোন ছেলে। আমার সব সময়ই মনে হয়েছে যে একটা ছোট মেয়ে যার কি-না এ বছর এইচ এস সি দেবার কথা - তার সাথেই কথা বলছি।

এরপর হুট করে শুনলাম মিথিলা নেই। ভীষণ শকড হয়েছিলাম। খুব কষ্টের সাথে মনে কিছু প্রশ্ন এসেছিল। যেমন - ও কেন মারা গেল? was it due to kidney failure or the cancer? ক্যানসার মনে হচ্ছিল না কারণ ইউটেরাস ক্যানসারে এভাবে হুট করে চলে যাবার কথা না। আর মেজার কোন অপারেশনের পরে এত তাড়াতাড়ি বাড়িতে ব্যাক করারও কথা না। রিকভারির টাইম বেশ লেগে যায়। কিভাবে অনলাইনে থাকত তাহলে? যাক, অত ভাবার সময় পাইনি। ভেবেছিলাম রুবেল একটু বেটার হলে ওকে নিজেই জিজ্ঞেস করব।

আমি এখনো ঠিক বুঝতে পারছি না কি হল। অনেক প্রশ্ন মনে। এ নিয়ে অন্য টাইপ অনেক কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির আভাসও পাচ্ছি।

রাগ ইমন আপু, এটা যদি আসলেই ভুয়া হয়ে থাকে, আমি খুব দুঃখিত যে আমিই আপনার ইয়াহু আইডি ওকে দেই। এই কারণে আমার মতই ওর মৃত্যুর কথা শুনে অন্য অনেকের থেকেই অনেক বেশি দুঃখ পেলেন আপনি।

অনেক কান্নাকাটি করেছি গত শনিবার রাত থেকে রবিবার প্রায় সারাদিন। এটা তামাশা হয়ে থাকলে অবাক লাগছে। ইন্টারনেটে অনেক কিছুই সম্ভব কিন্তু মিথিলা যদি না থেকে থাকে আসলেই then whoever has played her part has done a good job. যার সাথে কথা বলেছি সে যে একটা টিনএজ মেয়ে নয় সেটা মনেই হয়নি।

কি বিশ্বাস করব জানি না। I don't really care anymore. ব্লগের পোস্ট পড়া বা কারো সাথে চ্যাট করা নিয়ে আগের মত আবার খুব সিলেকটিভ হয়ে যাব ভাবছি। মাঝখানে কিছু সময় নষ্ট হল এই যা।

আর আশা করব, এটা নিয়ে রুবেল ছাড়া অন্য কাউকে জড়িয়ে জল ঘোলা যেন না করা হয়।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।