কূপমন্ডুকতার অচলায়তন

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি
লিখেছেন মাসকাওয়াথ আহসান (তারিখ: সোম, ২৪/০৮/২০০৯ - ৭:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ের পর অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনুস এবার যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানে সম্মানিত হলেন। আন্তর্জাতিক পরিসরে অধ্যাপক ইউনুসের অর্জন বাংলাদেশের অর্জনের সমার্থক হিসেবে সূচিহ্নিত।

একাত্তরে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে জাতির জনককে হত্যা, জিয়া হত্যা, একাধিক রাজনৈতিক ও সামরিক হত্যাযজ্ঞ, সামরিক শাসন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে অগণন মৃত্যু, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, হরতাল, নৈরাজ্য, দলীয় স্বার্থে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশর ভাবমূর্তি হনন, দুর্নীতিতে ধারাবাহিক চ্যাম্পিয়ানশীপ, উগ্র জঙ্গিবাদ, পৌনপুনিক ইতিহাস বিকৃতি, প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আরো প্রান্তে ঠেলে দেয়া, ক্ষমতা দখলের উগ্র লড়াই-এ বহির্বিশ্বকে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তেক্ষেপের সুযোগ করে দেয়া; এইসবের মাঝ দিয়ে থেকে গ্রামীণ ব্যাংক এবং অধ্যাপক ইউনুসের নোবেল পুরস্কার লাভ বাংলাদেশকে সুনামের একটি জায়গায় নিয়ে গেছে।

বৈশ্বিক পরিসরে যে কোন ফোরামে কিংবা অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক একটি মনোভঙ্গী ধারণের জায়গা তৈরী হয়েছে অধ্যাপক ইউনুসকে ঘিরে।

কিন্তু অধ্যাপক ইউনুস রাজনীতিতে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেবার পর থেকেই বাংলাদেশের সনাতন রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিবেচনায় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের অপছন্দের পাত্র হয়ে পড়েন তিনি। রাজনীতিতে জড়ানোর সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল এটি দ্রুত উপলব্ধি করে দ্রুত তিনি তার নিজের জগতে ফিরে যান। কিন্তু কেন তিনি রাজনীতিতে নামার ঘোষণা দিলেন, কেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সমালোচনা করলেন, এই অপরাধ ক্ষমতা কাঠামোর কাছে ক্ষমার অযোগ্য। যেমন অযোগ্য নোবেল জয়ী শিরীন এবাদী তেহেরানের রাজনৈতিক ক্ষমতা কাঠামোর কাছে।

বারাক ওবামা ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক স্বীকৃতি ও সম্মাননা পদক বিতরণ আনুষ্ঠানিকতায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপক্ষ থেকে কোন প্রতিনিধি না থাকায় ; এমনকি অধ্যাপক ইউনুসের ওয়াশিংটন অবস্থানকালে দূতাবাসের অনুশীলিত নিস্ক্রিয়তা একটি রাষ্ট্রের দলীয় মনোভঙ্গী প্রকাশ করেছে।

যদিও ওবামার স্বীকৃত বিশালতার পাশে অধ্যাপক ইউনুসের জন্য তার মাতৃভূমির চাকুরে দূতদের অনুপস্থিতি ব্যক্তিগত আবেগের জায়গা বাদ দিলে বর্হিবিশ্বের চোখে পড়ার মত কোন ঘটনা নয়।
যদিও পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যগুণীজনদের প্রত্যেকেরই মাতৃভূমির রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ইরানের কেউ পুরস্কৃত না হওয়াই এ যাত্রা একটি মাতৃভূমির রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতি একটি বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত হিসেবে রয়ে গেল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অর্মত্য সেন ভারতীয় নাগরিক বলেই বোধ হয় এ ধরনের দলীয় অসম্মানের হাত থেকে বেঁচে গেছেন। ভারতের টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে দেশজুড়ে যে বিক্ষোভ চলছে সেখানে ভারতীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির সুনাম করতে ভয় হচ্ছে। তবে সত্য প্রকাশে সাহসী হওয়াই শ্রেয়।

জার্মানীতে ভারতের রাষ্ট্রদূত মীরা শঙ্করকে বছর দুয়েক কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিল। ফ্রাঙ্কফূট বইমেলা, বন থিয়েটার উৎসব, লাইপসিগ বইমেলা, বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব; যেখানেই ভারতীয় গুণীজনদের আমন্ত্রিত হতে দেখেছি, সেখানেই মীরা শঙ্কর রাষ্ট্রপক্ষের উঞ্চতা নিয়ে হাজির হয়েছেন। ঐসব গুণীজনদের মধ্যে কে কংগ্রেস সমর্থক, কে বামপন্থী, কে বিজেপি এইসব বিষয় নিয়ে তাকে মাথা ঘামাতে দেখিনি। কেন্দ্রের তীব্র সমালোচক ঠোঁটকাটা মহাশ্বেতা দেবীর হুইল চেয়ার ঠেলে নেয়ার উদ্যোগে একজন রাষ্ট্রদূতের সক্রিয় হতে দেখেছি। সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আসা মহাশ্বেতা দেবীর প্রটোকল করতে গিয়ে তাকে ভাবতে হয়নি এই অপরাধে নতুন দিল্লী তাকে ডেকে পাঠিয়ে ওএসডি করে দেয় কিনা।

যদিও ভারতীয় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী যশওয়ান্ত সিং একটি বিতর্কিত গ্রন্থ লেখার সুবাধে বিজেপি থেকে বহিস্কৃত হলেন, কংগ্রেসও প্রায় কিংকর্তব্যবিমূঢ়; কিন্তু ভারত যেহেতু একটি বৃহত্তর ও প্রতিষ্ঠিত গণতন্ত্রের দেশ কাজেই ক্ষমতা কাঠামো তাকে যে কোন অসম্মানজনক পরিস্থিতিতে সমর্থন জুগিয়ে যাবে; অবস্থাদৃষ্টে তেমনই মনে হচ্ছে।

বাংলাদেশে একটি বিতর্কিত গ্রন্থ লেখার অপরাধে অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ জঙ্গী নিগ্রহের শিকার হলে রাষ্ট্র নিস্ক্রিয়তা দেখায়, তাঁর অকাল মৃত্যুর পর পরিবার অসহায় জীবন যাপন করে। ক্ষমতাসীন সেক্যুলার সরকারের হাতে সময় নেই একজন মৃতপন্ডিতের পরিবারের খোঁজ খবর নেয়ার।

স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী হওয়ার দায়ে কিংবদন্তীর কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহকে জাতীয় কবিতা উৎসবে ডেকে এনে অপমান করা হয়। অপমান সইতে না পেরে তিনি স্ট্রোকে মারা যান। পরে সেই স্বৈরাচারী পুনর্বাসিত হন গণতন্ত্রের ‘বড় ভাই’ হিসেবে। অথচ 'আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’র কবির মৃত্যু বিস্মৃতিতে হারিয়ে যায়। অমর কথাশিল্পী সৈয়দ মুজতবা আলী জার্মাণী, বরোদা, কায়রো, কাবুল ঘুরে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে এসে স্থানীয় মাতবরদের হাতে নিগৃহীত ও অপমানিত হন। সৈয়দ ওয়ালি উল্লাহর ট্র্যাজেডী একই রকম। অপারেশনে পা হারানোর পর আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে ঢাকা কলেজের দোতলায় ক্লাস নিতে উঠতে বাধ্য করা হয়। 'সোনালী কাবিন'-এর কবি আল মাহমুদকে দাড়ি টুপি পরিধান করে প্রতিক্রিয়াশীলতার দিকে ধাবিত হলে সেইটিই প্রধান বিবেচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, তার কবিতার কিংবদন্তী তখন আর বিবেচনার বিষয় নয়।

একই অপরাধ করে ভূপেন হাজারিকা ভারতে এখনো তার শিল্পী প্রতিভার জন্যই আদৃত।

সদ্য পান্ডিত্য খ্যাতি পাওয়া এক উত্তরাধুনিক সমালোচক সেদিন দেখলাম শামসুর রাহমানকে নিয়ে যা-তা লিখেছেন একটি অন লাইন সাহিত্য পাতায়। জানিনা সেটা সাহিত্য সমালোচনা কিনা। আমাদের দোজখের কড়াই এ বাড়তি পাহারাদার লাগে না। আমরাই পা ধরে একে ওকে নামাই। নীচ থেকে টেনে ধরে রাখি। আমরা কেন এমন কুৎসা প্রবণ; প্রতিহিংসা পরায়ন আমি জানি না। কথাশিল্পের আরেক কিংবদন্তী হাসান আজিজুল হক মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় রাজশাহীতে নানা অপমানজনক পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। আরেক গুণী কথাশিল্পী আবু বকর সিদ্দিকের একটি লেখাও না পড়ে তাকে বিদিশার পিতা হিসেবেই চিহ্নিত হতে হয়। কারণ তাঁর লেখার শক্তিমত্তার চেয়ে বিদিশার পিতা পরিচয়টিই আমাদের আদিম প্রবণতাকে শিহরিত করে। বিদিশার স্বামী কিন্তু গণতন্ত্রের ডাইনোসর হিসেবে, মহাজোটের ট্রামকার্ড হিসেবে ক্ষমতা কাঠামোতে জামাই আদর পেতে থাকেন। শুধু কদর নেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইনজ্ঞ হিসেবে স্বীকৃত ডঃ কামাল হোসেনের। কিংবা সূচিকিৎসক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর। কারণ তারা অধ্যাপক ইউনুসের মত ক্ষমার অযোগ্য।

জার্মান নোবেল বিজয়ী গুল্টার গ্রাস তরুণ বয়সে হিটলারের অনুসারী ছিলেন। এ নিয়ে গণমাধ্যমে একাডেমিক বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু কোন সাহিত্য উৎসবে ডেকে এনে অপমান করা হয়নি। ফলে কোন হার্টস্ট্রোকের শিকার তাকে হতে হয়নি। অধ্যাপক ইউনুসকে যেমন অনায়াসে ‘সুদখোর’ বলে দেয়া যায়, গ্রাসকে তেমন করে কেউ ‘ইহুদীখোর’ বলার কথা তার দেশে কেউ স্বপ্নেও ভাববে না। আমাদের এই উগ্র প্রতিক্রিয়াশীলতা লাগামহীন জিহ্বাচর্চা কোন আলোকিত সংস্কৃতির পরিচায়ক আমি জানি না।

তবে একটি প্রত্যাশাই বুকে বেঁধে রাখি একটি স্বশিক্ষিত নতুন প্রজন্ম বৈশ্বিক সংস্কৃতির জানালা খুলে রেখে বিকশিত হচ্ছে।
কুৎসা নির্ভর বদ্ধ অচলায়তনের কূপমন্ডুকতার বাইরে গিয়ে তারা নিশ্চয়ই সত্য, সুন্দর আর মঙ্গলকে চিহ্নিত করবে নৈর্ব্যক্তিকভাবে।


মন্তব্য

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

লেখাটা পড়তে গিয়ে খুব মন খারাপ হয়েছে। অধমের তারা দেয়ার ক্ষমতা নাই - থাকলে বিশ কোটি তারা দিতাম।

মামুন হক এর ছবি

তবে একটি প্রত্যাশাই বুকে বেঁধে রাখি একটি স্বশিক্ষিত নতুন প্রজন্ম বৈশ্বিক সংস্কৃতির জানালা খুলে রেখে বিকশিত হচ্ছে।
কুৎসা নির্ভর বদ্ধ অচলায়তনের কূপমন্ডুকতার বাইরে গিয়ে তারা নিশ্চয়ই সত্য, সুন্দর আর মঙ্গলকে চিহ্নিত করবে নৈর্ব্যক্তিকভাবে।

-- দুর্দান্ত লেখা মাসকাওয়াথ ভাই। অনেক ধন্যবাদ।

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী হওয়ার দায়ে কিংবদন্তীর কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহকে জাতীয় কবিতা উৎসবে ডেকে এনে অপমান করা হয়। অপমান সইতে না পেরে তিনি স্ট্রোকে মারা যান। পরে সেই স্বৈরাচারী পুনর্বাসিত হন গণতন্ত্রের ‘বড় ভাই’ হিসেবে। অথচ 'আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি’র কবির মৃত্যু বিস্মৃতিতে হারিয়ে যায়। অমর কথাশিল্পী সৈয়দ মুজতবা আলী জার্মাণী, বরোদা, কায়রো, কাবুল ঘুরে বগুড়া আজিজুল হক কলেজে এসে স্থানীয় মাতবরদের হাতে নিগৃহীত ও অপমানিত হন। সৈয়দ ওয়ালি উল্লাহর ট্র্যাজেডী একই রকম। অপারেশনে পা হারানোর পর আখতারুজ্জামান ইলিয়াসকে ঢাকা কলেজের দোতলায় ক্লাস নিতে উঠতে বাধ্য করা হয়। 'সোনালী কাবিন'-এর কবি আল মাহমুদকে দাড়ি টুপি পরিধান করে প্রতিক্রিয়াশীলতার দিকে ধাবিত হলে সেইটিই প্রধান বিবেচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, তার কবিতার কিংবদন্তী তখন আর বিবেচনার বিষয় নয়।

বিরোধী যেই হোক, তাকে 'কঠোর হস্তে' দমন করতে হয়। আমাদের দরকার পলিটিশিয়ান। রাজনীতিবিদ, সুশীল, লেখক- ওসব ধার করে আনলেই হবে! মেজাজ শান্ত রাখতে পারছি না এমন একটি লেখা পড়ে।

কে জানে, আর কত দিন নিজেদের ধড় আর মেরুদন্ড আলাদা করতে থাকবো নিজেরাই।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বিতর্কের ঊর্ধ্বে কিছু সত্যের সাথে প্রশ্নসাপেক্ষ কিছু ব্যাপার জুড়ে আছে। সার্বিক বিচারে তাই লেখাটা ভালো লাগলো না, মাসকাওয়াথ ভাই। একে একে বলছি।

এ-কথা আমি মানি যে বৈশ্বিক পরিসরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো কিছু আলোচনার সুযোগ হয়েছে ডঃ ইউনুস বিভিন্ন পুরস্কার পাওয়ায়। সরকার চাইলে এই অনুষ্ঠানে দু'একজন পাঠাতে পারতো। এটুকু দাক্ষিণ্য দেখালে মন্দ হতো না।

আমি আর দশ জনের তুলনায় একটু কম ইউনুস-মুগ্ধ, তাই দাক্ষিণ্যই বলছি। দুর্বল অবস্থায় গণতন্ত্রের পাছা মেরে দেওয়ার চেষ্টা এই মহাজনও করেছেন সোৎসাহেই। সেই স্মৃতি ভুলতে একটু সময় লাগছে বলে দুঃখিত। ইদানীং বাড়ন্ত এই কাল্ট-অফ-ইউনুস নিয়ে আমার বিরক্তিও প্রচুর। দেশের জন্য তিনি সম্মান আনছেন, দেশকে পরিচিত করছেন, সেজন্য আমি তাঁকে সাধুবাদ জানাই। তাই বলে গত দুই বছরের কার্যকলাপ ভুলে যাওয়া কষ্টকর।

গণতন্ত্র একটি অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে উন্নীত হয়ে আজকের পর্যায়ে এসেছে। ভারতে এমনটা কখনও হয়নি, তাই ভারতের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সাথে সরাসরি তুলনা মেলে না।

ডঃ ইউনুস স্রেফ রাজনীতিতে যোগ দেওয়ায় শীর্ষ রাজনীতিকদের রোষে পড়েছেন, এই বক্তব্য একেবারেই মানতে পারলাম না। ইউনুস ছিলেন উড়ে এসে জুড়ে বসা ক্ষমতালোভী। তিনি প্রথম প্রণোদনায়ই পুতুল-সরকারের প্রধান হতে রাজি হয়েছিলেন। তিনি ইয়াজুদ্দীনের মত দালাল রাষ্ট্রপতি -- যিনি কিনা সজ্ঞানে খালেদা-নিজামী-তারেক-বাবরদের তাঁবেদারি করছিলেন -- তাঁকে বলেছিলেন দৃঢ়তার সাথে তাঁর মর্জি মাফিক কাজ করে যেতে। এগুলো আপনি ভুলে যেতে রাজি হলেও আমি রাজি নই। নই বলেই এই সরলীকরণ ও শাপমোচনের প্রয়াসে ভুলছি না।

একাদিক্রমে বেশ কিছু নোবেল বিজয়ীর উদাহরণ দিয়েছেন। যে-কথাটি লেখায় উঠে আসেনি তা হলো, এই বিজয়ীদের কেউই কয়েক মাসের মধ্যেই পুরষ্কারের সম্মাননা কাজে লাগিয়ে অস্বাভাবিক পথে রাষ্ট্রক্ষমতা বাগিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করেননি। যদি তা করতেন, তবে তাঁদের দেশেও এমনই অপ্রিয় হয়ে থাকতেন তাঁরা।

বিভিন্ন উদাহরণ থেকে তাই অবশ্যই অনেক কিছু জানার ও শেখার আছে। আমি নিজে আবু বকর সিদ্দিক স্যারের ছাত্র। আমি ব্যাক্তিগত পর্যায়ে কষ্ট পাই যখন তাঁকে "বিদিশার বাবা" বলে পরিচিত করানো হয়। নির্যাতনের শিকার হওয়া একজন অসামান্য মানুষের প্রাপ্য এর চেয়ে অনেক বেশি।

তবে ঐ যে বললাম, এঁদের কেউই অন্যত্র অর্জিত সম্মান ব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতা হাতাতে চাননি। এখানেই লেখাটির ফাঁকি, এবং এ-কারণেই লেখাটির প্রতিক্রিয়ায় এত অপ্রিয় কথা বলতে বাধ্য হলাম।

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

এ-কথা আমি মানি যে বৈশ্বিক পরিসরে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো কিছু আলোচনার সুযোগ হয়েছে ডঃ ইউনুস বিভিন্ন পুরস্কার পাওয়ায়। সরকার চাইলে এই অনুষ্ঠানে দু'একজন পাঠাতে পারতো। এটুকু দাক্ষিণ্য দেখালে মন্দ হতো না।

ইশতি ভাই - উপরের কথাটা এতো অবগ্গা ভরে বললেন, চোখে লাগলো। যা পেয়েছেন তা তার অর্জন করা। মাসকাওয়াথ ভাইয়ের লেখাটা পড়ে আমার যা মনে হয়েছে - তা হলো - ইউনুসের যা প্রাপ্য সন্মান তা দেয়া সরকারের দায়িত্ব - আপনি 'দাক্ষিণ্য' বলছেন কেন? আপনার যুক্তি মতন ইউনুস সুদখোর মহাজন, ক্ষমতালোভী, দালালের দালাল - যা ইচ্ছা হোক, এক জন 'বাঙালি' সন্মান পাচ্ছেন বিদেশে - দেশের সরকার তাতে সমর্থন ও আনুষ্ঠানিক সাধুবাদ জানাবেন - এইটাই স্বাভাবিক। যেখানে ভালো কাজের স্বীকৃতি নেই - খালি খারাপ কাজের ফিরিস্তি - সেখানে কে কাজ করবে? মাফ করবেন - বলতে বাধ্য হলাম - আপনার পক্ষপাতিত্বমূলক মন্তব্য হতাশাব্যাঞ্জক।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এই দিন আসবে, ভাবি নাই। এখানে দেখুন। এই অধমেরই ইংরেজি ব্লগ পোস্ট। ডঃ ইউনুস নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার রাতের। সেহরির সময় উঠে এই খবর পেয়েছিলাম। মোটামুটি দু'দিন আত্মহারা হয়ে ছিলাম খুশিতে। অতএব, আমাকে অন্ধ বিদ্বেষী ভাবলে ভুল বুঝবেন। ডঃ ইউনুসের কার্যকলাপের কারণেই আমি তাঁর সমালোচনা করি, তাঁর অর্থনৈতিক মডেলের জন্য না।

কোনো ধরনের অন্ধ আবেগই ভালো না। অর্থনৈতিক মডেল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক থাকবেই। সেটা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যাথা নেই। রাজনীতির মঞ্চে তাঁর সার্কাসের কারণেই আমি তাঁর ব্যাপারে খুব একটা মুগ্ধ অনুরাগী নই।

ডঃ কামাল ও বদরুদ্দোজা চৌধুরীর কথা সবজান্তাই বলেছে, সেই পথে গেলাম না। 'বাঙালি' বলেই কি ওআইসি মহাসচিব হলে সাকা চৌধুরীর হয়েও গীত গাইতে হতো? এই রকম বেসামাল ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ উদাহরণের কারণেই আমি বলেছি যে লেখাটা পছন্দ হয়নি আমার। মানুষ হিসেবে আমার বিবেচনাবোধের প্রয়োগটা কোথায় হবে তাহলে?

একটা ইনিংসে সেঞ্চুরি যেমন আশরাফুলকে গালি খাওয়ায় থেকে বাঁচায় না, তেমনি ডঃ ইউনুসের নোবেল পুরষ্কারের কারণে তাঁর পরবর্তী কালের তাঁবেদারিও মেনে নিতে পারছি না। হাসি

আশরাফ ফারুক (পলাশ) এর ছবি

তিনি ইয়াজুদ্দীনের মত দালাল রাষ্ট্রপতি -- যিনি কিনা সজ্ঞানে খালেদা-নিজামী-তারেক-বাবরদের তাঁবেদারি করছিলেন -- তাঁকে বলেছিলেন দৃঢ়তার সাথে তাঁর মর্জি মাফিক কাজ করে যেতে

এতে দোষের কি দেখলেন। তিনি এখানে ইয়াজুদ্দীনকে শক্ত হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। আরো ভালভাবে বললে নিজামী-তারেক-বাবরদের তাঁবেদারি না করার জন্যই বলেছিলেন।

দুর্বল অবস্থায় গণতন্ত্রের পাছা মেরে দেওয়ার চেষ্টা এই মহাজনও করেছেন সোৎসাহেই।

একটু অশ্লীল মনে হল টোনটা।
বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ব্যাপারটাইতো বুঝলামনা। যেখানে বড় বড় দলগুলোতে পরিবারতন্ত্র এবং সরকারী কাজকর্মে দলীয় লেজুড়বৃত্তি ও দূর্নীতি প্রবল, সেখানে তিনি একটা পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। অন্য অনেকের মত তখন আমিও আশাবাদী হয়েছিলাম।

দুঃখিত ইশতি ভাই, আপনার মন্ত্যবটা কে একচোখা ও নেতিবাচক মনে হল

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

তিনি এখানে ইয়াজুদ্দীনকে শক্ত হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। আরো ভালভাবে বললে নিজামী-তারেক-বাবরদের তাঁবেদারি না করার জন্যই বলেছিলেন।

না রে ভাই। আপনি-আমি দুই জনেই জানি ডঃ ইউনুস এই অর্থে বলেননি কথাটা। অতএব, এই দিকে আর সময় নষ্ট করছি না।

একটু অশ্লীল মনে হল টোনটা।

অশ্লীল মনে হলে দুঃখিত। সুযোগ থাকলে সংশোধন করে দিতাম। তবে আমি স্পষ্ট ভাবেই মনে করি যে গণতন্ত্রের দুর্বল অবস্থার সুযোগ নিতে সারিবদ্ধ হওয়া ব্যাক্তিদের মধ্যে ডঃ ইউনুস অন্যতম ছিলেন।

অন্য অনেকের মত তখন আমিও আশাবাদী হয়েছিলাম।

মাত্র কিছু দিনের ব্যবধানে আশাহতও তো হয়েছিলেন, তাই না?

রাগিব ভাই ও ওয়াইল্ড-স্কোপ ভাইয়ের মন্তব্যের জবাবে আমার মতামত পাবেন। যে-সময় বিএনপি-র লোকজনও বিএনপি-জামাতের কাজ-কর্মে বীতশ্রদ্ধ, সে-সময় ডঃ ইউনুস সুযোগ বুঝে সমর্থন দিয়েছেন। রাজনীতি হলো ক্রমযোজিত গুণফলের খেলা। আমার চোখে, নিজের সব অর্জনকে ডঃ ইউনুস শূন্য দিয়ে গুণ করেছেন সেই দিন। আগের কোনো কিছু নিয়ে কথাবার্তাই তাই আমাকে ভোলায় না।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সাহস করে আরো অনেক কিছুই বলতে পারতেন, বললেননা। আমরা দুই বছরের শুধু সামরিক কায়দায় শাসনই দেখলাম। শুধু দেখিনা তুলসীপাতাদের দূর্নীতি, কারণ সেগুলো কখনোই প্রমাণ করা যায়না। একজন তো বলেই দিলেন তার দূর্নীতি প্রমাণ করবে এমন কেউ জন্মায়নি।

কর্ম পরিচয়ে নয়, সুবিধামতো কোপ মারাই আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য, তাতেই পরিচয়, তাতেই সুখ।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আমাদের দোজখের কড়াই এ বাড়তি পাহারাদার লাগে না। আমরাই পা ধরে একে ওকে নামাই। নীচ থেকে টেনে ধরে রাখি। আমরা কেন এমন কুৎসা প্রবণ; প্রতিহিংসা পরায়ন আমি জানি না।

চমৎকার লেখা। মন খারাপ হলেও আশা রাখি আস্তে আস্তে ঘৃণাবাদি সংস্কৃতি কাটিয়ে উঠতে পারব।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

দুঃখিত ! ড.ইউনুস,ড.কামাল আর বি.চৌধুরীকে শুধু খ্যাতি আর পান্ডিত্যের কারনে তাদের দালালি , সুবিধাবাদি, ভন্ডামি ও কপটতাকে বিনাপ্রশ্নে ছাড় দিতে আমি নারাজ ।

আপনার যুক্তি মানলে ভিসি প্রফেসর ড. সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইনকেও শ্রদ্ধা করতে হয় কিন্তু একাত্তরে তার ভূ্মিকার জন্য তাকে ঘৃণা ছাড়া আর কিছু আমার দেওয়ার নেই ।

এদেশে অনেক লেখক ছিলেন /আছেন যারা কোন দালালি না করেই অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপুর্ণ ভূ্মিকা পালন করেছেন কিন্তু যথার্থ সম্মান পাননি , তাঁদের কথা বলতে পারতেন এই লেখায় ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সুজন চৌধুরী এর ছবি

লেখাটা স্ব-বিরোধীতায় ঠাসা।
পড়ে মনে হলো ইউনুস সাহেবের ঘাড়ে বন্দুক রেখে দিগ-বিদিক (বানান মনে নাই)জ্ঞানশূন্য হয়ে গুলি চালালেন!!!
যেটা আপনার কাছ থেকে আশা করিনা।


লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ

সবজান্তা এর ছবি

মাসকাওয়াথ আহসান, আপনি বয়সে আমার চেয়ে বেশ বড়, সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত, এমনকি সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন। রাজনৈতিক অঙ্গনের অভিজ্ঞতা আপনার আমার চেয়ে বেশিই থাকার কথা। তবু সাধারণ যুক্তি-বুদ্ধিতে আপনার লেখার কিছু অংশের প্রতি প্রশ্ন রাখছি।

আপনি যুক্তি দিচ্ছেন, ড: কামাল হোসেনের কিংবা ডা: বদরুদ্দোজার। তাঁদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রের পান্ডিত্যের কিংবা দক্ষতার প্রতি প্রশ্ন রাখতে চাই না। কিন্তু তাঁদের রাজনৈতিক চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন রাখতে চাই। ড. কামাল হোসেন ১/১১- এর আগে মহাজোটের সাথে গলায় গলায় ভাব, আর পরে একদম চেহারা পুরো পালটে যায়। পারলে তওবা করেন যে আওয়ামী লীগের সাথে আর থাকবেন না। তিনকাল যেয়ে এককালে ঠেকা এই রাজনীতিবিদ বুঝি ১/১১-এর পরই আওয়ামীলীগের স্বরূপ চিনতে পেরেছিলেন ? নাকি নগদ লাভের আশায় আর্মি ব্যাকড সরকারের ধামা ধরেছিলেন যাতে শেষ রক্ষা হয় নি।

২০০৭ সালের সাপ্তাহিক ২০০০ ঈদ সংখ্যায় এক সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম। প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর। অত্যন্ত মেধাবী, অকপট নাস্তিক এবং নিবেদিতপ্রাণ এই বামকর্মী সেই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির মিটিং-এ প্রথম দিকে থাকলেও, যখন সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে (শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ) আহবায়ক করা হয়, তার পর থেকে ড. কামাল হোসেন সে জায়গায় নিজের অংশগ্রহণ একদম সীমিত করে ফেলেন।

এই ড. কামাল হোসেনই শুনি কোন সব বিদেশি কোম্পানির হয়ে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা লড়েন। আরো শুনি আমেরিকান তেল গ্যাস কোম্পানীর গুলি পকেটে বন্দী হয়ে থাকেন কামাল হোসেন সহ দেশের আরো বড় আইনজীবিরা।

আর ডা. বদরুদ্দোজা ? অসম্ভব মিষ্টভাষী, পটু বক্তাকে কেন যেন শ্রদ্ধা করবো ? এই জন্য যে তিনি এতো শিক্ষিত একজন ব্যক্তি হয়েও ২০০১ এর নির্বাচনের আগে টিভিতে সাবাস বাংলাদেশে এক হাতে গীতা, আরেক হাতে কোরান শরীফ রেখে তুলনা করে বলেছিলেন, "কী চান- কোরানের শাসন নাকি গীতার দাসত্ব ?"

প্রচলিত রাজনীতির বলতে গেলে কাউকেই আমি শ্রদ্ধা করি না। এটাও মাথায় রাখি যে, কাদায় নামলে কিছুটা নোংরা হতেই হয়। তবুও বলি, স্মৃতি দুর্বল কিন্তু এতোটা দুর্বল না।

দুঃখিত মাসকাওয়াথ আহসান। আপনার লেখার সাথে সম্মত হতে পারলাম না।


অলমিতি বিস্তারেণ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এতো নানান জনের প্রসঙ্গ এনেছেন যে আলাদা করে লিখতে গেলে জান হয়রাণ হয়ে যাবে। খালি একটাই প্রশ্ন করি, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কবি, লেখক, আইনবীদ হলেই তাদের সাতখুন মাফ? এমনকি দেশ মানবিকতা বিক্রি করে দিলেও তাদের পিছনেই সাফাই গাইতে হবে?

নিজের দেশকে বিক্রি করেও কিন্তু আন্তর্জাতিক খ্যাতি কুড়ানো যায়।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

নজুর মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

রণদীপম বসু এর ছবি

@ নজু ভাই
আপনার প্রশ্নগুলো বড় হাইপোথিটিক্যাল হয়ে গেলো না ? তার চেয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোন্ কোন্ প্রশ্ন বা বিষয়গুলো ড. ইউনূসের উপর আরোপ করতে চান তা জানলে আমাদেরও চিন্তা করতে সহায়ক হতো। মিলিয়ে দেখতে পারতাম।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

রণদা,
এই পোস্ট তো শুধু ড. ইউনুসকে নিয়ে থাকেনি। আরো অসংখ্য নাম এসেছে। আমি মূলত এর পরের কথাগুলো নিয়েই বলেছি। বিশেষ কাউকে নির্দিষ্ট করে না, আমি জিজ্ঞেস করেছি কোনো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কবি যদি অমানবিক কোনো কাজ করে তাহলেও তাকে সম্মান করতে হবে কি না? এখানে কবির বদলে অন্য অনেক কিছুই হতে পারে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনি আসলে কী বলতে চান?



অজ্ঞাতবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

শুধু একটাই প্রশ্ন করে যাই, পৃথিবীতে এমন একজন মানুষও কি আছেন যিনি সকল বিতর্কের উর্ধ্বে ? যার মধ্যে কোনই ক্ষুঁত খুঁজে পাওয়া যাবে না?

>>>
ফুট্টুস

সাবিহ ওমর এর ছবি

গুন্টার গ্রাসের কথা বলা হল, কিন্তু ফ্রান্সের লুমিয়ের ব্রাদার্সের কথা তো বলা হলো না। তারা কিন্তু ক্ষমা পায়নি। আর সবকিছুতে সাদা চামড়াদের উদাহরণ টেনে আনাটাও বোধহয় আমাদের একটা দোষ।

ধানশালিক এর ছবি

খুব অবাক হইলাম মাস্কাওআথ ভাই এর এরকম একটি লেখা পরে।তার সম্মন্ধে ধারনা পালতে দেয়ার মত লেখা।সারা জীবন ভাল কাজ কইরা একটা গুনার কাজ কইরাও অনেকে দজখে যাইতে পারে।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনার লেখার টোনটা আসলে একটু ঝাপসা হয়ে গেছে।
অনেকের খ্যাতি এবং স্বদেশে দুর্ভোগের কথাই লিখলেন। কিন্তু কেন? মানে, মোদ্দা কথাটা কী? বাঙালিরা কূপমণ্ডুক, পরশ্রীকাতর? গুণীর কদর করতে জানে না?
কথাটা সত্য। খুব একটা ভুল কথা না। তবে সেটা কোথায় দেখুন। রাজনৈতিক অঙ্গণে, মিডিয়ায়, সরকারি মহলে। সাধারণ মানুষ কিন্তু এইসব বিখ্যাত মানুষদের অনেক সম্মান দেখায়।
একটা সত্যি কথা বলি। আমাদের রাষ্ট্র, রাজনৈতিক দল এবং মিডিয়া কিন্তু আমাদের আমজনতার নিজস্ব মতামতের প্রতিনিধিত্ব করে না। এরা প্রত্যেকেই প্রতিটি পদক্ষেপ নেয় স্বার্থগত কারণে। কাজেই এদের দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে বিচার করা ঠিক হবে না।
লেখক, কবি, রাজনীতিবিদ এখনো দেশের সাধারণ মানুষদের কাছে অনেক সম্মানের পাত্র। তাঁরা কোথাও গেলে সাধারণ মানুষের ভিড় হয়ে যায়।
তবে যাদের বিখ্যাত মানুষ বলছেন, তাঁদের প্রায় কারোরই পেশাগত, নীতিগত অবস্থান কিন্তু খুব একটা সুবিধার অবস্থায় নেই। তাঁরা গুণী মানুষ সন্দেহ নেই। কিন্তু একজন বুদ্ধিজীবি হিসেবে তাঁদের এই অনৈতিক অবস্থানগুলো মেনে নেই কী করে?
ব্যাপারটা কিন্তু এত সরল না। আমাদের বর্তমান সময়ের যাবতীয় দুর্ভোগের পেছনে কিন্তু এখনকার অনেক বিখ্যাত মানুষদেরই অবদান রয়েছে। গুণী বলেই তাঁকে সব বিষয়ে ছাড় দিতে হবে, এই সরলীকরণ করা কি সম্ভব? আপনিই বলুন?
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

দুই দুইটা বড় পদক প্রাপ্তির সংবাদ ও উচ্ছাস দেখে আজ মনে হয় যে, ড. ইউনুসের টার্গেটে এইসব বিদেশি পদক যতটা ছিল, দেশের মানুষের সেবা বা উন্নয়ন ততোটা ছিল না।
পুঁজিবাদী বিশ্বের কাছে দরিদ্রদের ক্রয়ক্রমতা বাড়ানোর ফর্মুলা আবিষ্কারক হিসেবে তিনি সমাদৃত হলেও দেশে তার পরিচয় হলো সুদখোর।
বিস্ময়ের বিষয় হলো বাংলাদেশের গ্রামেগঞ্জে সুদখোর মহাজনরাও ভোটে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার-চেয়ারম্যান হয়, কিন্তু ইউনুস ভোটাভুটিতে যাওয়ার সাহস রাখেন না। তিনি চান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ক্ষমতার সিংহাসন।

মাসকাওয়াথকে ধন্যবাদ, নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে ড. ইউনুসকে উপস্থাপনের জন্য।
কিন্তু গ্রামীণ ফোনের বিজ্ঞাপনের লোভে দেশের মিডিয়া যে সমালোচনা করা থেকে ড. ইউনুসকে রক্ষা করে আন্তর্জালে বোধ হয় সেটুকু সুরক্ষা তিনি পাবেন না।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

লেখাটা শুধু প্রথম ২/৩ টা প্যারায় সীমিত থাকলে হয়তো আপনাকে এতো মন্তব্য হজম করতে হতো না।

পরের আলোচনাটুকু খুব বেশী মাত্রায় লাইনচ্যুত হয়ে গেলো ভাই।

প্রোটোকলের কথাতে যদি আসেন, আমিও মনে করি - সরকার কোনও ব্যক্তি নয়, সরকার হচ্ছে একটা ব্যবস্থার নাম। এই ব্যবস্থার উচিত ছিলো ড. ইউনুসকে বিদেশের মাটিতে সম্মাননা পাওয়ার সময়টুকু হেসে হেসে সাহচর্য দেওয়া।

কেউ একজন সাকা'র উপমা দিয়েছেন; ও.আই.সি-র কিছু একটা হওয়ায় বাংলাদেশ নিশ্চয়ই তাকেও বিদেশে প্রোটকল দেবে না; হ্যাঁ তখন দেবে না। কিন্তু ইউনুসের ক্ষেত্রে দেবে; দেওয়া উচিতও হবে। দুঃখিত হলাম একজন রাজাকারের সাথে ড. ইউনুসের তুলনা দেখে। ড. ইউনুসের বিষয়ে আমার অবস্থানটা পুরোপুরি ইশতিয়াকের অবস্থানের মতোই। লোকটারে আমিএ একদমই পছন্দ করি না। তাই বলে সাকার সাথে মেলাবো না। ঐ প্রাণীটার সাথে কাউকে তুলনা করার আগে ১০০ বার ভেবে নেওয়া উচিত।

সুজন চৌধুরী এর ছবি

এই বিষয়ে আসলে রাষ্ট্রীয় প্রটোকলটা কি? কারো জানা থাকলে জানাবেন অনুগ্রহ করে।


লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সাকা-র উদাহরণটা আমিই টেনেছিলাম। সাকা-র মতো নরাধমের সাথে তুলনা করতে না মোটেও। বলতে চেয়েছিলাম, বাইরের দুনিয়া কোনো 'বাঙালি'কে সম্মান দিচ্ছে বলেই আমাদেরও তা-ধিন তা-ধিন নাচতে হবে, এমন কথা নেই। ঠিক মতো বলতে পারিনি।

অন্যরা যেভাবেই দেখুন না কেন, আমার দৃষ্টিতে ডঃ ইউনুসের অবস্থান ছিলো গণতন্ত্রবিরোধী ও স্বার্থপর। ক্ষমতা যদি তাঁর হাতে থাকতো, তবে তিনি আরেকবার সেনা-শাসিত বাংলাদেশ দেখতেও প্রস্তুত ছিলেন। ইয়াজ-আজিজ-খোকাদের যখন সারা দেশ বর্জন করছে, তখন তিনি আগ বাড়িয়ে গিয়ে ওদের শক্তি যুগিয়েছেন। দু'বছর ধরে ধরপাকড়ের পর রাজনৈতিক সরকার এটা কখনই ভুলবে না এত সহজে।

হামিদ কারজাইকে গালি দেই, কিন্তু যেই লোক বাংলাদেশের হামিদ কারজাই হতে গিয়েছিলেন তাঁকে কিছু বলা যাবে না; বললে সভ্যতার বিনাশ হয়ে যাবে। কূল খুঁজে পাই না এই রকম চিন্তার।

আরও স্পষ্ট করে বলি। ডঃ ইউনুস স্পষ্টতই একজন কট্টর আওয়ামী-বিদ্বেষী মানুষ। দেশের একটা ক্রান্তিলগ্নে তিনি অনেক বড় পুরষ্কার পেয়েও নিজের মনের এই ক্ষুদ্রতার ঊর্ধ্বে উঠতে পারেননি। নোবেল পুরষ্কার পেয়েই ছুঁটে গেছেন সেটা কিছু চোর-বাটপারের কাজে লাগাতে, যাদের একমাত্র যোগ্যতা হলো তাদের আওয়ামী-বিরোধিতা। এটা আমার চোখে লেগেছে। আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার কোনোই কারণ নেই এরপরও তাঁকে কোনো বাড়তি দরদ দেখানোর।

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

ডঃ ইউনুস স্পষ্টতই একজন কট্টর আওয়ামী-বিদ্বেষী মানুষ ... আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার কোনোই কারণ নেই এরপরও তাঁকে কোনো বাড়তি দরদ দেখানোর

এইতো এতক্ষণে ঝেড়ে কেশেছেন - দলীয় ব্রান্ডের কারণে সরকারের এই অবস্থান. সেটা না হয় মানলাম - পলিটিক্সে এই রকমভাবে বিপক্ষকে শাস্তি দেয়া বা নিগ্রহন করা নতুন কিছু না. বাংলাদেশের ইতিহাসে কমন প্রাকটিস, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই. তবে দুঃখিত হলাম এই দলীয় মনোভাব আর অন্ধত্ব দেখে - সেই জিনিস আপনি জেনেশুনে সাপোর্ট করছেন. এর পর আর বলার কিছু থাকে না.

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

"এতক্ষণে" তো না রে ভাই। আমি কট্টর আওয়ামী সমর্থক নই, কট্টর ইউনুস-বিরোধীও নই। আফসোস এটাই যে একটার উদাহরণ হিসেবে পুরনো লিংক দিতে হলো, আরেকটার উদাহরণ হিসেবে হয়তো এখন আওয়ামী লীগের কোনো সমালোচনা তুলে এনে দেখাতে হবে!

আমার কথা হলো -- রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থাকার কাজটা ডঃ ইউনুস করেননি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। বাংলাদেশের প্রথম নোবেল বিজয়ী যদি সেনাবাহিনী, রাষ্ট্রপতি ইয়াজুদ্দীন, ব্যারিস্টার মঈন, আর বিচারপতি আজিজ, আর মেয়র খোকার লেজ ধরেন ক্ষমতায় আরোহন করতে, তাহলে আওয়ামী লীগ সরকারের কী ঠেকা পড়েছে তাঁকে আলাদা করে সম্মান দেওয়ার?

যেমনটা রাগিব ভাইয়ের মন্তব্যের জবাবে বলেছি, ডঃ ইউনুস সহ আরও কয়েকজন তাঁদের সবকিছু নিয়ে রাজনৈতিক জুয়ার টেবিলে 'all-in' হয়ে গিয়েছিলেন। বাজি তাঁরা হেরেছেন, হাসিনা জিতেছেন। সোজা ব্যাপার।

ডঃ ইউনুসের ক্ষেত্রে cause-and-effect অনেক বেশি দৃশ্যমান বলেই হয়তো এভাবে চোখে পড়ছে, আলোচনা হচ্ছে। তবে, রাজনীতির জুয়ায় তো "হারলে পয়সা ফেরত" বলে কিছু নেই। থাকতেন তিনি নোবেল পুরষ্কার নিয়ে, আমিও সবার মতো নাচতাম তাঁকে নিয়ে।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

তাত্ত্বিকভাবে লেখাটি প্রশংসার দাবিদার। ডঃ ইউনুসের রাজনীতিতে নামার শপথ নিয়ে লেখা চিঠিতেও এরকম অনেক ভালো ভালো কথা ছিলো। কিন্তু বাস্তব বোধ হয় একটু ভিন্ন আর কিছু কিছু বিষয় অস্পষ্টও। যেমন, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্তের সাথে রাষ্ট্রদূত থাকা বাধ্যতামূলক কিনা, তা বুঝতে পারলাম না। ডঃ ইউনুসকে আমি পছন্দ করি না; কিন্তু এরকম বিধান থাকলে তা ফলো করা উচিত।

কিন্তু অধ্যাপক ইউনুস রাজনীতিতে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেবার পর থেকেই বাংলাদেশের সনাতন রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিবেচনায় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের অপছন্দের পাত্র হয়ে পড়েন তিনি।

এটা আসলে নোতুন কোনো সমালোচনার বিষয় হলো না। বাংলাদেশের সনাতন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তো পঁচা-গান্ধা; ডঃ ইউনুস কি এই পঁচা শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের প্রিয়ভাজন হবেন বলে আশা করেছিলেন? অবশ্য তার চিঠি পড়লে বোঝা যায়, এসব পঁচা দল থেকে রাজনীতিবিদ ভাগিয়ে আনাটা তার প্ল্যানে ছিলো।

রাজনীতিতে জড়ানোর সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল এটি দ্রুত উপলব্ধি করে দ্রুত তিনি তার নিজের জগতে ফিরে যান।

ভুল হবে কেন? তিনি একজন মেডেলধারী নোবেলবিজয়ী লোক। অর্থনীতির তত্ত্বের বাস্তব প্রয়োগের জন্য মানুষের সাথে তাকে মিশতে হয়েছে। এরকম একজন যোগ্যতা সম্পন্ন লোক রাজনীতিতে অবদান রাখতে পারবেন, এটা উপলব্ধি করার পরেও পিঠটান দিলেন কেন? তাহলে তার কথাগুলো কি শুধুই কথার কথা?

কিন্তু কেন তিনি রাজনীতিতে নামার ঘোষণা দিলেন, কেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির সমালোচনা করলেন, এই অপরাধ ক্ষমতা কাঠামোর কাছে ক্ষমার অযোগ্য।

ভাই, ইউনুস রাজনীতিতে না আসায় ক্ষমতা কাঠামোই সবচেয়ে খুশি হয়েছে। কারণ, তাদের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী বারলো না। ক্ষমার অযোগ্য বরং সাধারণ মানুষের কাছে, যাদেরকে গাছে তুলে নিয়ে, তিনি মই কেড়ে নিয়েছেন, আশা দিয়ে নিরাশ করেছেন।

পৃথিবীটা বড় আজব যায়গা। মেডেলের সুনামধারী আর ভালো মানুষ যদি সমার্থক হতো, তাহলে মানুষের মস্তিষ্কের অনেক কোষই নিশ্চিতভাবে অকালমৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেতো।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

প্রকৃতিপ্রেমিক(অফলাইনে) এর ছবি

ভাই, ইউনুস রাজনীতিতে না আসায় ক্ষমতা কাঠামোই সবচেয়ে খুশি হয়েছে। কারণ, তাদের একজন প্রতিদ্বন্দ্বী বারলো না। ক্ষমার অযোগ্য বরং সাধারণ মানুষের কাছে, যাদেরকে গাছে তুলে নিয়ে, তিনি মই কেড়ে নিয়েছেন, আশা দিয়ে নিরাশ করেছেন।
চলুক

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌২০০৬ সালের শেষ থেকে ডঃ ইউনুস কারো কারো কাছে মহাপাতক হয়ে গেছেন। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আপাতঃ দৃষ্টিতে তার পাপগুলো দেখা যায়, এভাবে।

১. রাজনীতি করতে চেয়েছেন সেটা একটা পাপ
২. ইয়াজউদ্দিনকে ভরসা দিয়ে গেছেন সেটা আরেক পাপ
৩. সাদেক হোসেন খোকার সম্বর্ধনা গ্রহন করেছিলেন সেটা একটা পাপ
৪. নোবেল পেয়েছেন, সেটা একটা পাপ

বাকী পাপগুলো, ক্ষুদ্র ঋনবিষয়ক, ঋন আদায় বিষয়ক। যেগুলো আরো দশ বছর আগেও ছিল, এখনো আছে। ক্ষুদ্রঋনের পাপগুলো জেনেশুনেই সরকার গ্রামীন ব্যাংকের অনুমতি দিয়েছে, জেনেশুনেই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ক্ষু্দ্রঋনের পাপগুলোতে গ্রামীন নয়, পৃথিবীর তাবৎ এনজিওকে দায়ী করা যায়।

২০০৬ সালের আগেও আমরা ডঃ ইউনুসকে নিয়ে গর্ব করেছি। মাথায় তুলে নেচেছি। যারা হঠাৎ সুদখোর বলে গালি দেয়া শুরু করেছে, তারাও নেচেছে। কিন্তু ২০০৬ সালের পর এমন কি ঘটেছে, এমন অমোচনীয় পাপ ঘটে গেছে যাতে আমরা হঠাৎ তাঁকে অচ্ছ্যুত ভাবতে শুরু করেছি? যেসব পাপের জন্য আমরা প্রায় ইউনুস বর্জন করছি, তার চেয়ে অনেক বড় পাপী এদেশের রাজনীতিতে নোংরা কাদা ছিটিয়ে সসম্মানে টিকে আছে। আর ডঃ ইউনুস হয়ে গেল ছি ছি!

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

যেসব পাপের জন্য আমরা প্রায় ইউনুস বর্জন করছি, তার চেয়ে অনেক বড় পাপী এদেশের রাজনীতিতে নোংরা কাদা ছিটিয়ে সসম্মানে টিকে আছে। আর ডঃ ইউনুস হয়ে গেল ছি ছি!

গুল্লি চলুক উত্তম জাঝা! হাততালি

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

নীড়দা, নোবেল পাওয়া পর্যন্ত তার সম্পর্কে বেয়াড়া পাবলিক খুব কম জানতো (তার নিজস্ব পরিচিতি বলয়ের কথা আলাদা)। এরপরে ইয়েস পাগলার তত্ত্ব সরকারের সময়ে কিছুটা জানলো। পলিটিক্সের পলটিবাজির ফলে পাবলিক আরেকটু জানার সুযোগ পেলো। আমার মনে হয়, ডঃ ইউনুস সম্পর্কে পাবলিকের আরো জানা দরকার। বিশেষ করে, দেশের কয়লা ও গ্যাস সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিয়ে তিনি এখন কি ভাবছেন।

This is the time of change. It is the time to make big political and economic decisions and implement those decisions. It is the time to make Bangladesh the hub for regional commerce and communication by taking advantage of our geo-strategic location by linking with regional transport systems and establishing the deep seaport. Our country is filled with the rich coal and gas reserves in a world thirsty for energy. It is the time to use these vast mineral resources for the country's development.

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

বলাই দা, আপনার এই উদ্ধৃতিটার তাৎপর্য বুঝলাম না। কয়লা আর গ্যাস সম্পদের ব্যবহার নিয়ে তিনি আপত্তিকর কিছুকি এই খানে বলেছেন? একটু পরিষ্কার করলে সুবিধা হয়।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

রিয়াজ ভাই, না, আপত্তিকর কিছু না, তিনি বিরাট সম্ভাবনার কথা বলেছেন। একদিকে শুনছি দেশে নাকি আর ৩/৪ বছর পরেই গ্যাসের ভান্ডার শেষ হয়ে যাবে। অন্যদিকে ইউনুস বলছেন, আমাদের দেশ কয়লা ও গ্যাসে পরিপূর্ণ, যেখানে সারা পৃথিবী শক্তির তৃষ্ঞায় জান ছটফট করছে। কোনটা বিশ্বাস করি? ইউনুসের কথা সত্যি হলে বিরাট আশার ব্যাপার, তারপর ধরেন, তিনি রাজনীতিতে না আসেন, তাকে চাপাচাপি করে ধরলে হয়তো এই 'vast' খনিজ সম্পদ দেশের উন্নয়নে ব্যবহারের তরিকা বাতলে দিবেন।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

দই আর চুনের পার্থক্য আমিই কি আর ধরতে পারি? তেল আর গ্যাস যে আমাদের নিজেদের উন্নয়নের জন্য তাড়াতাড়ি ব্যবহার করা দরকার এই ব্যপারে নিশ্চয়ই দ্বিমত নেই আপনার। ব্যবহারের কথাই তিনি যখন বলেছেন তখন সরাসরি 'ব্যবহার' বলতে যেটা বোঝায় সেটাই না হয় ধরি।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এইজন্যই তো তার কাছ থেকে আরো শুনতে চাই, কয়লা ও গ্যাস তাড়াতাড়ি ব্যবহার করে কিভাবে উন্নয়ন করা যায়। আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এসেছে। স্বাভাবিক অবস্থায় নাকি ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যেই আমাদের গ্যাস শেষ হয়ে যাবে। তার মানে আমরা সময় পাচ্ছি মাত্র ১০ বছর। 'তাড়াতাড়ি' করতে গিয়ে গ্যাসের ব্যবহার বাড়ালে ১০ বছর আরো কমে নেমে আসবে। এ অবস্থায় দেশের উন্নয়ন যা করার এর মধ্যেই করে ফেলতে হবে। আমরা যদি গ্যাস নির্ভর পাওয়ার প্ল্যান্ট বানাই, তাহলে কোনো কাজ হবে না। ৫/৭ বছরেই তার বেইল শেষ। তারচেয়ে গ্যাস বিক্রি করে, সেই টাকা দিয়ে আমাদের পারপেচুয়াল-বিজ্ঞানীদের (পানি থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ছাড়া বিদ্যুৎ, হাওয়া থেকে প্লেন, পাথরকুঁচির পাতা থেকে তড়িৎ, বিদ্যুৎবিহীন পাম্পের জনকগণ) জন্য গবেষণাগার বানাতে পারি। তারা গবেষণা করে নিশ্চয়ই কোনো একটা উপায় বের করে ফেলবেন। আমাদের মেধার অভাব নাই, অভাব আছে টাকার। গ্যাস বিক্রি করে টাকা উপার্জন করা যাবে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

এক কথা থেকে আরেক কথায় চলে যাচ্ছি আমরা। আসলে গ্যাস ব্যবহারের অর্থনৈতিক দিকগুলো ভাবার ইচ্ছা ছিল; কিন্তু আলসেমির জন্য হয়ে ওঠেনি। তবে সংক্ষেপে এটা বলতে পারি কার্যকর ব্যবহার করতে পারলে কেবল ভবিষ্যতের জন্য ফেলে রাখলেই যে সেটা কাজে আসবে এমন মনে হয়না। দশবছর পরের ১০০ টাকা আজকের ১০ টাকার চেয়ে কম হতে পারে। তবে এটা নিয়ে আমার আরো ভাবার ইচ্ছা আছে। ভাগ্যে থাকলে অন্য কোন পোস্টে এটা নিয়ে আলাপ করা যাবে।

রাধারমন কর্মকার এর ছবি

সম্পুর্ন একমত। এরকম সত্যি কথা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আর শোনা যায় নাই।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

অনেক সময় সমালোচনাকে গতিশীলতার সমার্থক বলে ভাবি আমরা। কিন্তু সমালোচনার একটা গঠনমূলক দিক থাকা দরকার। সেটা না হয়ে যদি তা ব্যক্তি অভিমতের বা পছন্দ অপছন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় তখন গতিশীলতার চেয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক বন্দিদশায় আক্রান্ত হবার ভয়ই বেশি থাকে।

ইউনুসের রাজনীতিতে আসার চিন্তায় আমার কাছে স্বার্থপরতার কিছু চোখে পড়েনি। বাংলাদেশের একজন হয়ে নোবেল বিজয় করার পর তাঁর কাছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীত্ব একটা বড় পাওয়ার বিষয় নয় (এম্ফেসিস এডেড)। কিন্তু অনেকের মত তিনি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন দেখতে চেয়েছিলেন। সেদিক থেকে একধরনের দায়বদ্ধতা তাঁর মনে কাজ করেছে বলে মনে হয়েছে। এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের চাওয়াটা কিন্তু কেবল তাঁর নয়। এটা অনেকেই চান। কিন্তু আজকে হঠাৎ কেউ যদি দাঁড়িয়ে পড়েন আর বলেন তিনি এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিতে চান সবাই তাকে বিশ্বাস করে তার পিছনে দৌড়াতে লেগে যাবে না। কিন্তু ইউনুস যখন নোবেল প্রাইজ পেলেন তখন অনেকের হয়ত মনে হয়েছিল তিনি এই বাঁধাটা কাটিয়ে উঠতে পারবেন এই স্বিকৃতির জোড়ে। কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের মত কুটবুদ্ধি এই বিশ্বে কোন কোণায় খুঁজে পাবেননা। ফলে যা হবার যাই হবার তাই হয়েছে। ঝাড়ে মূলে উৎপাটন করা হয়েছে সেই সম্ভাবনাকে। ইউনুসের বিরুদ্ধে নানারকম প্রচারনা চালান হয়েছে সঙ্ঘবদ্ধ উপায়ে। অনেকে যেমন স্বপ্রনোদিত হয়ে ইউনুসের পক্ষে প্রচারনা চালিয়েছিল তেমনি ভুয়া এবং বিভ্রান্তিকর তথ্যম দিয়ে বিপক্ষ প্রচারনাও এসেছিল অনেক। এর সবই স্পষ্ট রাজনৈতিক দলের আশির্বাদপূষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে এসেছিল। এবং বেশ আটঘাট বেঁধেই নামা হয়েছিল তখন। তাদের সাফল্য যে আজকে কোন পর্যায়ে গেছে সেটা দেখলে অবাক হতে হয়।

"ভিক্ষা চাইনা কুত্তা সামলান" বলার পরও রেহাই হয়নি তার। দুঃখজনক। সেসব দিনে ইউনুস সমালোচনার যেসব ধারা ছিল সেগুলো আস্তে আস্তে ডালপালা বিস্তার করেছে। যা হোক আসলে আমার ইচ্ছা ছিল তার অর্থনৈতিক মডেলের উপর আলোচনা সীমিত রাখতে। সেই চেষ্টাই করব।

তানবীরা এর ছবি

যারা আর্ন্তজাতিক খ্যাতি অর্জনের যোগ্যতা রাখেন, সমাজ তাদের কাছে কি দায়িত্বশীলতা আশা করতে পারে না? (যেহেতু আমাদের দেশের সংস্কৃতিতে বিদেশি সার্টিফিকেটই অনেকটা মূল কথা )

একজন আন্তর্জাতিক মিডিয়াকর্মী হিসেবে বলুনতো, ডঃ ইউনুসের নোবেল প্রাপ্তির খবরটা কয়জন বিদেশি শুনেছেন কিংবা মনে রেখেছেন? বা কোন দেশেরটা মনে রাখে? নিজের দেশেরটাও বোধ হয় না।

কেউ যদি ভাবে নোবেল কিংবা আর্ন্তজাতিক পুরস্কার পাওয়াই জীবনের শেষ কথা তাহলে শুধু এটুকুই বলবো, কোন ব্যক্তিই পুরস্কারের মাধ্যমে প্রাতঃ স্মরনীয় হয়ে এই পৃথিবীতে নেই। নিজের জাতির জন্য নিঃস্বার্থ কাজই পারে একজনকে স্মরনীয় করতে।

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

ডঃ ইউনুসের নোবেল প্রাপ্তির খবরটা কয়জন বিদেশি শুনেছেন কিংবা মনে রেখেছেন?

তানবীরা আপু, মনে হয় আমি ভুল শহরে আছি - আমার ইউনিভার্সিটির এমন দেশী/বিদেশী কাউকে পাওয়া দুস্কর যে ইউনুসের নাম শোনেনি (বিশ্বাস না হলে আপনার পরিচিত কাওকে ইমেইল করে দেখেন). গত বছর তাকে ডক্টরেট দেয়ার সময়কার ভিডিওগুলি দেখলে হয়তো বুঝবেন এদের মধ্যে কি ক্রেজ কাজ করেছে তার অনুষ্ঠানের টিকেট কেনার জন্য. লিঙ্কটা দিলাম, প্লিজ দেখেন - দেখে বলেন কেন এতো বিদেশী উন্মুখ হয়ে তার কথা শুনতে এসেছে? আমি বা অন্য সব বাঙালি যে গর্বিতভাবে তার নাম বলে বলতে পারি - আমাদেরও নোবেল পুরুস্কারপ্রাপ্ত লোক আছে - এইটা কি কিছুই না? আর কি চান তার কাছে, যেখানে আমাদেরই দুতাবাস তাকে নুন্যতম শ্রদ্ধা দেখাতে পারে না? এবং তা আপনারা সমর্থন করেন? এতো যে গালি দিচ্ছেন - বলার মতন ভালো কিছুই কি নেই? মানছি আপনাদের প্রত্যাশা আরো অনেক, কিন্তু যতটুকু পেয়েছি তা কি পায়ে দলার মতন? নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন.

তানবীরা এর ছবি

ওয়াইল্ড, আপনার ইউনিভার্সিটির সবাই ডঃ ইউনুসের নাম জানে, আর ইউনিভার্সিটির সবাই কি কি জানে সেটা জেনে আপনি বসে আছেন !!!। সবাই একটু অতিরঞ্জিত হয়ে গেলো না কথাটা?

আমিও এই দুনিয়ারই লোক ভাবি এখনো নিজেকে। ইউরোপের প্রচুর লোক বিভিন্ন শাখায় নোবেল প্রায় প্রতি বছরই পায়। আমি এদের নিজের লোকদের খবর রাখতেও কম জনকে দেখেছি। সাধারন ম্যাঙ্গো পাবলিকের কথা বলছি না কিন্তু অফিসে বড় পদে চাকুরে, ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, গবেষক সহ বেশ কনসার্নড লোকজনের কথাই বলেছি।

আমাদেরও নোবেল পুরুস্কারপ্রাপ্ত লোক আছে - এইটা কি কিছুই না? আর কি চান তার কাছে, যেখানে আমাদেরই দুতাবাস তাকে নুন্যতম শ্রদ্ধা দেখাতে পারে না? এবং তা আপনারা সমর্থন করেন? এতো যে গালি দিচ্ছেন - বলার মতন ভালো কিছুই কি নেই? মানছি আপনাদের প্রত্যাশা আরো অনেক, কিন্তু যতটুকু পেয়েছি তা কি পায়ে দলার মতন? নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন.

এসমস্ত কথা আমি কোথাও লিখিনি। আপনি নিজে ভাবাবেগে ভেসে যেয়ে আপনার কথা আমার মুখে গুঁজতে চাইছেন। ব্যপারটা ঠিক নয়।

তবুও আমাকে নিজেকে প্রশ্ন করতে বলেছেন তো, তাই প্রশ্নের জবাব লিখছি, একজন নোবেল পাওয়া জ্ঞানী ও গুনী লোক হিসেবে তার কাছ থেকে অনেক দায়িত্বশীলতা আশা করছি সমাজের প্রতি, আমাদের প্রতি।

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

অফ টপিকে চলে গিয়েছে মনে করে জবাব দিবো না চিন্তা করেছিলাম। পরে মনে হলো আমার কমেন্টে বোধহয় বোঝাতে পারিনি - একটা ব্যাখা আপনার প্রাপ্য। ইউনুসকে ডক্টরেট দেয়ার বুদ্ধি এখানকার প্রবাসী বাঙালিদের মস্তিস্ক থেকেই এসেছে, যেমনটি এসেছে ২১ কে বিশ্ব ভাষা দিবসের স্বীকৃতির বুদ্ধি ভ্যাঙ্কুভারে বসবাসরত রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে - এজন্যই বলছিলাম হয়তো ভুল শহরে থাকি (কমপক্ষে আপনার চিত্রিত ইউরোপের থেকে অবশ্যই আলাদা)। এখানে ছোট-খাটো খন্ড যুদ্ধ হয়ে গেছে এই নিয়ে। ব্যাপক ইতিহাস আর প্রচারণার ফলাফল হিসেবে ইউনুসকে এখানে আনতে পেরেছিলাম। তাই ক্রেজ-এর যে কথা বলছিলাম, তা একটুকুও অতিরঞ্জন না। আগে দেয়া ভিডিওগুলি দেখলেই বুঝবেন - এটা সেই গন্ডায় গন্ডায় কেনা ডক্টরেট না, অর্জন করা।

তাছাড়া আমার লেখায় আমি আগের কমেন্টের সুত্র ধরে "আপনারা" বলেছি - আপনি বলিনি। পার্সোনালি নেয়ার মতন কিছু হয়নি। আর দায়িত্বশীলতার কথা বলছেন? আমাদেরটা কোথায়? পছন্দ করি না বলেই আরেকজনের প্রাপ্য সন্মান না দেয়া কোনো দায়িত্বশীলতার পরিচয় হতে পারে না। সচলায়তনেরই এই লেখাটিতে দেখুন (আর জরিপে দেখুন) - ইউনুসের নাম কত বার এসেছে। উন্নাসিকরা ভুলে গেলে যাক - তার নাম কিন্তু বাংলায় রয়েই যাবে সেরাদের তালিকায়।

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

তানবীরা আপু আপনার আপত্তি/প্রশ্নটা ঠিক বুঝলাম না। তিনি কি বাংলাদেশে দিয়েই তার কাজ শুরু করেননি? গ্রামীন ব্যংক তো বাংলাদেশেরই প্রতিষ্ঠান।

তানবীরা এর ছবি

বুঝলেন না, তাহলে বুঝিয়েই বলি। বেক্সিমকো, ঈস্টার্ণ গ্রুপ, বসুন্ধরা, যমুনা, মিল্লাত ও গ্রামীন সবাই বাংলাদেশেই কাজ শুরু করেছে। তারাও ব্যবসা করছে, গ্রামীনও ঠিক তাই। তাদের বাদ দিয়ে গ্রামীনকে মনে রাখার পয়েন্টটা কি ?
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আপনার প্রশ্নটা শুনে আরো বোকা হয়ে গেলাম। ভাবছি আপনি কি আক্ষরিক অর্থেই প্রশ্নটি করেছেন নাকি এর ভিতর আর কোন গূঢ় প্রশ্ন লুকিয়ে আছে? স্বভাবতই এতদিন পর এই প্রশ্ন আক্ষরিক অর্থে হজম করাটা আসলে খুব সহজ নয়। যাই হোক এম.আই.টি থেকে প্রকাশিত একটা বই থেকে কিছু উদ্ধৃতি দিচ্ছি আপনার প্রশ্নটাকে আক্ষরিক অর্থে বিবেচনা করে।

দরিদ্র জনগোষ্ঠী কেন প্রচলিত ব্যবস্থায় ঋন পায়না সেটার কারনঃ
"The important factors are banks incomplete information about poor borrowers and the poor borrowers lack of collateral to offer as security to banks"
এখন কথা হল এই সমস্যা সমাধানে গ্রামীন কি করেছে?
উত্তর সংক্ষেপে আরেকটা উদ্ধৃতির মাধ্যমে দেবার চেষ্টা করছি

1.4: The Grameen Bank and the Beginning of the Microfinance

...........Mohammad Yunus, an economist trained in Vanderbilt University was teaching at Chittagong University in Southeast Bangladesh. (এর পর তাঁর ক্ষুদ্র ঋন প্রকল্প শুরুর ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ আছে)...........One innovation that allowed Grameen to grow explosively was group lending, a mechanism that essentially allows the poor borrowers as guarantors for each other. With the group lending, the bank could quickly grow village by village as funding permitted.......... Today replications exist in thirty countries from East Timor to Bosnia. Group lending programs also operate in Thirty of the fifty states in the United States."
দারিদ্র কমাতে ক্ষুদ্রঋন একমাত্র বা অব্যর্থ উপায় নয়। কিন্তু পৃথিবীব্যপি নানাদেশে এই মডেল দারিদ্র বিমোচনের কাজে প্রয়োগ করা হচ্ছে এবং এই পদ্ধতির কার্যকারিতা নিয়ে প্রচুর গবেষনা হচ্ছে।
এই বর্ননা গুলোতে আপনার বর্ণিত প্রতিষ্ঠানের সাথে গ্রামীনের কোন পার্থক্য চোখে পড়ছে কি?

জানিনা আপনার প্রশ্নের উত্তর হল কিনা তবে চেষ্টা করলাম।
..................
তথ্যসূত্রঃ
Aghion, Armendariz and Morduch, Jonathan (2005) The Economics of Microfinance, MIT Press, Cambridge, Massachusetts

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

আরেকটা পার্থক্য আছে। সেইটার জন্য একটা ছোট ঘটনা বলি। ইউনুস আর গ্রামীনের নোবেল পাওয়ার দিনে যখন খবরটা শুনি ল্যবে বসে আছি। আমি একমাত্র বাংলাদেশি। কাজেই আনন্দটা কারো সাথে ভাগ করা অদম্য ইচ্ছা থেকে ল্যাবে আমার খুব ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে বললাম বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন। খবরটা কারুর সাথে শেয়ার করতে পারছিনা বলে তোমাকে বলছি। সে তখন নাম জিজ্ঞেস করতে আমি যখন ইউনুসের নাম বললাম সে বলল "গ্রামীন ব্যংকের প্রতিষ্ঠাতা ইউনুস"। ওর কথাতো অনেক পড়েছি। তখনো নোবেল প্রাইজের ঘটনাটি সে জানতনা। যাই হোক আপনার উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা আমার চিলিয়ান বন্ধু মার্সেলো জানত কিনা জানিনা। তবে সম্ভবত জানতনা। যদিও বা জানত সেটা আর ইউনুস আর গ্রামীন ব্যংকের কথা জানা যে এক কথা সেটা মনে হয়না।

তানবীরা এর ছবি

গ্রামীন ব্যাঙ্ক সহজ শর্তে ক্ষুদ্র আর ভূমিহীনদের ঋন দিচ্ছে মানে অর্থনীতিতে খুব অবদান রাখছে আর বসুন্ধরা রাখছে না কারণ তাদের অফিসে মিডেল ক্লাশদের চাকুরী হচ্ছে বলে? তাদের কারাখানায় যারা কাজ করছে তারা ভূমিহীনদের কোটা অতিক্রম করছে ?

পৃথিবীর বহু দেশের বহু মানুষ নোবেল পায় কিন্তু বাংলাদেশিদের নোবেল হজম করা বিরাট ব্যাপার দেখছি। মানুষকে দেবতায় রূপান্তর করা হচ্ছে। ডঃ ইউনুসকে দেবতা বানানার অপচেষ্টাই উনাকে সমালোচনায় এনে ফেলেন।

গ্রামীন ব্যাঙ্ক তথা গ্রামীন ফোন, কিংবা গ্রামীনের যে কোন সংস্থায় যে লোকেরা কাজ করে, তাদের অধিকার কিংবা বেতন - ভাতা সম্পর্কে বলুন। একটু শুনি। নোবেল বিজয়ী, দেশ বিজয়ী উনি তার নিজের কাছে কাজ করা লোকদের জন্য কি ভেবেছেন।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

বসুন্ধরার পরোপকার ব্রত সম্পর্কে আমি তেমন জানিনা তবে আপনি যে অর্থে গ্রামীন আর বসুন্ধরাকে এক করছেন তাতে করে জগতের সব কাজই সমান কৃতিত্বের দাবি রাখে। একটা পর্যায় পর্যন্ত কথাটি সত্য। কিন্তু বসুন্ধরা এমন কোন মডেল বা চিত্র তৈরি করে না যেটা বসুন্ধরা না থাকলে অন্য কেউ করতে পারত না বা তারা প্রথমবারের মত করছে এবং কেবল বাংলাদেশেই নয় পৃথিবীতে প্রথমবারের মত করা গেছে। এবং কাজটা এমন যেখানে গোটা পৃথিবীই শত বছরের বেশি সময় ধরে আটকে ছিল, কিছুতেই সফল ভাবে করতে পারছিল না। ক্ষুদ্র ঋন ব্যবারটি তাত্ত্বিক ভাবে অনেক দিন ধরে একটা ধারনা হিসাবে বলবৎ ছিল কিন্তু বাস্তবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে টেকসই এবং দীর্ঘ মেয়াদে ঋন দেয়া অসম্ভব প্রতীয়মান হত। তাই শত বছর ধরে অর্থিনীতি এবং সমাজ বিজ্ঞান ক্ষুদ্র ঋনের ব্যপারে যেখানে আটকে ছিল সেটা থেকে বিশ্বব্যপী দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে তুলে আনার পদ্ধতি বাতলেই তিনি ক্ষান্ত হননি নিজে করে দেখিয়েছেন। আমি উপরে সেই ব্যাপারটি একটা বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে ব্যখ্যা করেছি। আপনি চাইলে আরো রেফারেন্স পেয়ে যেতে পারেন।

আমি যখন চাল কিনছি, বা ভিক্ষুককে দশ পয়সা ভিক্ষা দিচ্ছি আমিও অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছি। সেই হিসাবে আমারো একটা নোবেল প্রাইজ পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ইউনুস বা গ্রামীন কেন পেল সেটাই হচ্ছে আপনার প্রশ্ন। উপরে যা বললাম এরপর আর তেমন কিছু বলার নেই আমার। আপনি একমত না হলে আমার ব্যার্থতা।

পৃথিবীর বহু দেশের বহু মানুষ নোবেল পায় কিন্তু বাংলাদেশিদের নোবেল হজম করা বিরাট ব্যাপার দেখছি।

বাংলাদেশে যেদিন বহু মানুষ নোবেল পাবে সেদিন হয়ত পাত্তা কমে যেতে পারে। বাংলাদেশেত নয়ই আমেরিকাতেও নোবেল প্রাইজ এখন পিস অব কেক হয়ে যায় নি। কখনো হবেও না। হয়ত বাংলাদেশের মত এত উত্তেজনা আমেরিকায় পাবেন না। কিন্তু সেটা সঙ্গত কারনেই। তবে একজন নোবেল লরিয়েটকে আর দশ জনের চেয়ে অনেক বেশি সমীহের চোখে দেখা হয়।

ডঃ ইউনুসকে দেবতা বানানার অপচেষ্টাই উনাকে সমালোচনায় এনে ফেলেন।

এই অপচেষ্টাগুলো আমার চোখে পড়েনি কেন বুঝতে পারছিনা। আপনি সচলায়তনের সাম্প্রতিক কোন পোষ্টের কথা বলছেন কি। আমার মনে হয় তার কাজের গুরুত্বকেও যথেষ্ট ব্যখ্যা করা হয় নি সেই পোস্টগুলোতে। একটাতে ইউনুসকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান হয়েছিল। আরেকটাতে সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকার সর্বোচ্চ সম্মাননা পাওয়ার জন্য শুভেচ্ছা, আরেকটিতে অমর্ত্য সেনের সাথে তাঁর মিল গুলো দেখান হয়েছে। এই পোস্টে গুনি ব্যক্তিদেরকে তাদের গুনের ভিত্তিতে দেখার কথা বলা হয়েছে। তার দলিয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়।

তবে তাকে যে যে কারনে সমালোচনা করা হয় -
ক) তিনি যে বানিজ্যিক মডেল বাস্তবায়ন করেছেন তাতে "সুদ" এর ব্যবহার করা হয় যেটাকে অনেকে (জামাত বা যে কোন ধর্ম নির্ভর দল) 'হারাম' মনে করেন।

খ) তার মডেলে পূঁজিকে দরিদ্রদের জন্য দরকারি বিবেচনা করে তাদের কাছে সেটা পৌছে দেবার চেষ্টা করা হয়। এই জন্য দেশের দরিদ্ররা আরো দরিদ্র হতে পারছে না এবং সমাজ তন্ত্র জারি হচ্ছে না। সেজন্য বাম রাজনিতিবিদেরা তার ওপর বিরক্ত। বলছেন এটা সমাজ তন্ত্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।

গ) দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলে দেবার একটা চেষ্টা হাতে নিয়েছিলেন যাতে সফল হননি। কারন বাংলাদেশের রাজনীতির রুল অব গেমে তিনি ফিট করেন নি। কিন্তু এই অপরাধে তিনি দুই নেত্রীর রোষে পড়েছিলেন। রাজনীতি যদি করতে হয় তবে প্রচলিত সংস্কৃতি মেনেই করতে হবে। কি করা। প্রচলিত নিয়মে তাকে ক্ষমতালোভী ভন্ড হিসাবে আখ্যা দেয়া হল। তার চিঠিকে, কথা কে টুইস্ট করে পোস্ট আসল এই সচলায়তনে।

উপরের তিনটি কারনের পর আর কিছুকি লাগে সমালোচনার জন্য? বাংলাদেশে? কাজেই তাকে সমালোচনার জন্য তাকে দেবতা বানানর চেষ্টা কোন কারন নয়। বরং এধরনের কোন চেষ্টা তেমন চোখে পড়ে না। আর ইউনুস সাহেব এজন্য টাকা পয়সা দেন বলেও আমার জানা নেই।

গ্রামীন ব্যাঙ্ক তথা গ্রামীন ফোন, কিংবা গ্রামীনের যে কোন সংস্থায় যে লোকেরা কাজ করে, তাদের অধিকার কিংবা বেতন - ভাতা সম্পর্কে বলুন। একটু শুনি। নোবেল বিজয়ী, দেশ বিজয়ী উনি তার নিজের কাছে কাজ করা লোকদের জন্য কি ভেবেছেন।

আমার যেহেতু জানা নেই আপনিই বলুন যদি জানেন। তবে ছিদ্রান্বেষী ইউনুস সমালোচনায় আরেকটা নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে এতে করে। তবে নির্মোহ দৃষ্টিতে বিচার করলে তিনি এই ব্যপারে আর দশজন গরপড়তা নিয়োগকারির চেয়ে খারাপ কিছু যদি করে থাকেন নিশ্চয়ই তাঁর প্রতিষ্ঠানে কেউ কাজ করত না। একজন সাধারন সমালোচকের দৃষ্টিতে তিনি যদি গড়পরতা মান বজায় রেখে থাকেন তাই যথেষ্ট বলে মনে করি। কেননা বই খাতা বা পত্রিকা পড়ে যতটুকু জানি এটা তাঁর নোবেল প্রাইজ পাবার বা সমালোচনার বড় কারন হয়ে ওঠেনি। কারন তাকে নিয়ে আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে ক্ষুদ্র ঋন এবং এর সাফল্য/ব্যার্থতা। অন্য বিষয়গুলো বার বার ফিরে আসায় সমালোচনার উদ্দেশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

তার রাজনীতিতে নামার উদ্দেশ্য, মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভুমিকা এসন নিয়ে তো মঙ্গড়া কথা উঠেছেই এখন প্রশ্ন আসছে প্রতিষ্ঠানের ভেতরের বিষয় নিয়ে, এরপর প্রশ্ন আসবে তার পারিবারিক জীবন নিয়ে, সময় যেতে দেন। আরো অনেক কিছু আসার বাকি আছে। আমাদের সৃষ্টিশিলতার জুরি নেই।

হাসিব এর ছবি

পোস্ট ও কিছু মন্তব্য পড়ে হতাশ হলাম । সমালোচনার স্কোপ খুব বেশী বড় বলে এখানেই থামলাম ।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

জাতি জানতে চায়। হাসি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রণদীপম বসু এর ছবি

পোস্টের টোনটা চমৎকার ছিলো। এবং এ নিয়ে আমাদের আলোচনাটা হওয়া উচিৎ ছিলো আমাদের রাষ্ট্র তার দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটা নাগরিককে কী দৃষ্টিতে দেখার কথা এবং দেখা হচ্ছে কিভাবে। কিন্তু অধিকাংশ মন্তব্যের টোনে একপেশে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিটাই প্রকাশিত হতে দেখে মনে হচ্ছে বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমারই। অন্তত মন্তব্যের টোনগুলোতে তাই বুঝা যাচ্ছে।

আগামীতে যদি আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশ সফরে যান তার ক্ষেত্রে তো আরো খারাপ উদাহরণ তৈরি হওয়া উচিৎ। কেননা যুদ্ধাপরাধীদের প্রশ্রয় দেয়া থেকে শুরু করে সেই সরকারের আমলে হাজার কোটি টাকার চুরি চামারি তথা রাষ্ট্রের বারোটা বাজিয়ে দেয়ার মতো হেন কাজ কি বাকি আছে যা পরবর্তিতে পত্র-পত্রিকায় আমরা পড়ি নি ? বেগম খালেদা জিয়া যেমন সংসদ সদস্য পদ হারানোর পরও পরবর্তী তিন বছর ভিআইপি নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন, ড. ইউনূস কিন্তু বাকি সারাজীবন রাষ্ট্রের ভিআইপি নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবেন, যতদিন না প্রচলিত আইন বা প্রজ্ঞাপন পরিবর্তন না হবে। বিদেশের মাটিতে তাই বলে বেগম জিয়ার কোন অপমান কি নাগরিক হিসেবে আমাদের ছুঁবে না ?

একটা কথা সম্ভবত আমরা ভুলে যাই, রাষ্ট্রবিরোধী আর সরকার বিরোধী এক কথা নয়। সংবিধান সরকার বিরোধিতাকে অপরাধ গণ্য করে না। ব্যক্তি আমি যদি রাজনৈতিক দর্শনে একনায়কতন্ত্রকেই পছন্দ করি এবং সেজন্য আমি আমার এই দর্শনকে প্রচারের অধিকার ভোগ করি কি না, আমাদের সংবিধান কী বলে ? ধরে নিলাম ড. ইউনূন বিএনপির সরকার বা তার রাজনৈতিক দর্শনকে সমর্থন করলেন, তাতে রাজনৈতিকভাবে সমালোচিত হতে পারেন। তাই বলে কি তিনি ভণ্ড হয়ে যাবেন ? বিদেশে যদি কোন রাষ্ট্রীয় প্রটোকল প্রাপ্য হবার কথা থাকে, তা থেকে বঞ্চিত হবেন ? ব্যক্তি ইউনূসের মতো একোটা স্বচ্ছ জীবন-যাপন বাংলাদেশে ক'জন নাগরিক করেন, এর একটা তালিকা দেবেন কি কেউ ?

আমি যদি বুঝতে ভুল না করি, মাসকাওয়াথ ভাইয়ের পোস্টের মূল সুরটা তো এটাই ছিলো। আমরা জনগণ যে কতোটা সচেতনতা বা চিন্তা জগতে কতোটা অগ্রবর্তিতা সংরক্ষণ করি তা তো ইলেকশানেই দেখা যায়। খুব তো স্বৈরাচার স্বৈরাচার বলে লাফালাফি করি আমরা, অথচ এই ঢাকা আসন থেকে সেই প্রাক্তন স্বৈরাচারই বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। তাও আবার সম্ভ্রান্ত নির্বাচনী এলাকা থেকে। আমাদের মাসকাওয়াথ ভাইয়ের মতো শিক্ষিত রুচিবান ভালো প্রার্থীরা কখনো জনপ্রিয় হবেন না, এখন পর্যন্ত এটাই স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের চিন্তাস্রোতের গতি যেদিকে, তাতে অদূর ভবিষ্যতেও ভালো কোন লক্ষণ দেখি না।

বড় চটাশ চটাশ কথা বলি আমরা। যেদিন নেত্রী শেখ হাসিনা বিমান বন্দরে নেমে ড. ইউনূস সম্পর্কে সুদখোর বা কাবুলিওয়ালা জাতিয় যে মন্তব্য করে ফেললেন সেদিন একজনও তো প্রশ্ন করলো না যে ড. ইউনূসকে সুদখোর বলার কী প্রমাণ তিনি রেখেছেন ? যারা প্রশ্ন করবেন তাদের চোখই কতোটা পরিষ্কার ? এখন যে তিনি প্রধানমন্ত্রী, বিশাল ক্ষমতার অধিষ্ঠাত্রী, এখনই তো পারেন তার প্রমাণ হাজির করতে ? রাজনৈতিক বুলি আওড়ে আমার মতো রামছাগল পাবলিককে প্রভাবিত করা যায় সহজেই। তিনিও খুব ভালো করেই জানেন যে, গ্রামীন ব্যাংকই সবচেয়ে কম সুদে ঋণ দিয়ে থাকে এবং সমস্ত লাভালাভের গুড় শেয়ার হোল্ডার হিসেবে সরকারের ভাগেই পরিমাণে সবচেয়ে বেশি যায়। এখানে ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত প্রাপ্তি কিছুই নেই তার বেতনটা ছাড়া। তিনি এও জানেন যে কোন ভর্তুকী ছাড়া এতো কম মুনাফা দিয়ে সরকার নিজে আরেকটা এরকম প্রতিষ্ঠান চালানোর যোগ্যতা এখনো অর্জন করে উঠতে পারে নি। পারলে বহু আগে সরকারগুলো তা দেখিয়ে দিতো। আর এ জন্যই গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরকার কখনোই তার শেয়ার তুলে নেবে না।

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রচারিত এসব অপপ্রচারের সাথে আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় এলে মসজিদে মসজিদে উলুধ্বণি শুনা যাবে বা দেশটাকে ভারত নিয়ে যাবে জাতিয় প্রচারের খুব কি পার্থক্য আছে ?

ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনোই যুক্তিবোধহীন ব্যক্তিপ্রেমী নই। ড. ইউনূস রাজনীতিতে নাম লেখান, ব্যক্তিগতভাবে আমি কখনোই তা চাইনি। আমাদের নোংরা রাজনীতিতে তিনি নিজেকে ডুবিয়ে ফেলুন যেভাবে চাইনি, তেমনি রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে তাঁর নতুন সুরটা কৌতুহলীও করেছিলো আমাকে। আশা এবং হতাশা দুটোই আমার মধ্যেও রয়েছে। ব্যক্তির মৌলিক অধিকারে সবসময়ই সোচ্চার আমি। কিন্তু ব্যক্তি ইউনূস নিয়ে আমার মাথাব্যথাও নেই। একজন স্রষ্টা ইউনূসের কর্মযজ্ঞ নিয়েই আমার আগ্রহ। আমি সবসময় সেখানেই দৃষ্টিটাকে নিবদ্ধ করার চেষ্টা করেছি।

রাজনৈতিক অপপ্রচার এতোটাই কার্যকর প্রভাব রাখে যে, আমাদের ব্যক্তি-চোখগুলো কী নিমেষে রাজনৈতিক চোখ হয়ে ওঠে ! চোখের সামনেই যুক্তিগুলো কী নিদারুণভাবে হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে ! যে দেশে জাতির জনককে তাঁর সন্তানের হাতে বর্বরভাবে প্রাণ দিতে হয়, সে দেশে গড়-মানের চাইতে বড় মাপের ব্যক্তিকে মূল্যায়ন করতে হলে অন্তত এক প্রজন্মের অপেক্ষা তো করতেই হবে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

হাসিব এর ছবি

গ্রামীন ব্যাংকই সবচেয়ে কম সুদে ঋণ দিয়ে থাকে

এইটা আইজকার দিনের ইনকাম ।

রণদীপম বসু এর ছবি

হাসিব ভাই, ইনকামটা যাচাই করতে সরেজমিন তদন্ত করে ফেলতে পারেন। অন্তত এটা নিশ্চিত হবেন, ইনকামটা এতদিন পর আপনার কাছে আসলো, না কি আগেই ছিলো।

চক্ষু-কর্ণের বিবাদ-ভঞ্জন হয়ে যাক ! অন্তত এটা তো জানতে পারবো, আমিই অন্ধ কিনা !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

রেজওয়ান এর ছবি

হুম এখন দেখা যাক আয়টি কোথায় যাচ্ছে। আয়ের পদ্ধতি, যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। কিন্তু আমার জানা মতে গ্রামীণ ব্যাংকের আয় তো শেয়ার হোল্ডার ছাড়া অন্য কারও পকেটে যাবার কথা নয়। এটির শেয়ার হোল্ডার হচ্ছে এর ঋণগ্রহীতারাই সেরকমই জানতাম। কাজেই বেশী আয় হলে তাদের কাছেই টাকা ফেরত যাবার কথা (১০০% পর্যন্ত ডিভিডেন্ড দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি) । আর এর খরচ লক্ষাধিক কর্মীর বেতন (তাদের পরিবারের ভরণপোষণ) ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয় মেটানোর জন্যেই হয় জানি। অন্যথা হলে অবশ্যই জানতে চাই সে গুলো।

http://www.grameen-info.org/index.php?option=com_content&task=view&id=490&Itemid=570

২০০৭ সালের আয় ব্যায়ের হিসাব থেকে মোট খরচের ৬৭% হচ্ছে বেতন ও অন্যান্য ভাতাদি। কত পরিবারের অন্ন সংস্থান করেছে সংস্থাটি জানার ইচ্ছে রইল।

ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আগ্রহ নিয়ে মুহম্মদ ইউনুসের বক্তব্য:
http://philanthropy.com/news/conference/7991/grameen-bank-founder-says-hes-nervous-about-for-profit-microcredit

Mr. Yunus said he is “nervous” that many nonprofit lending groups are converting to businesses and big commercial banks see money-making opportunities in cultivating low-income borrowers.

Over time, these business enterprises will become too focused on the bottom line, and not the customer, he predicted.

He said if an institution is charging somewhere upwards of 15 percent interest on a loan, they have perverted microcredit’s charitable intentions.

“You’re no longer in the microfinance area,” said Mr. Yunus, “you are in the loan-shark area.”

গ্রামীণ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী:
http://www.grameentrust.org/The%20Experience%20of%20Grameen%20Bank.pdf

The interest rate Grameen Bank charges for its loans is lower than the rate of interest the government of Bangladesh has fixed for government run microcredit programs. The interest rate for government program is 11 percent flat. It is only 10 percent flat
for Grameen basic loans. There are in fact four interest rates for loans from Grameen Bank: 20 percent (declining basis) for income generating loans, 8 percent for housing loan, 5 percent for student loan and interest free loans for struggling members who are beggars. All interests are simple interest. The amount collected from the borrowers in interest can never exceed the principal amount.

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

হিমু এর ছবি

বৈশ্বিক পরিসরে যে কোন ফোরামে কিংবা অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক একটি মনোভঙ্গী ধারণের জায়গা তৈরী হয়েছে অধ্যাপক ইউনুসকে ঘিরে।

আমার মনে হয়, ইউনুস সাহেবকে নিয়ে আমাদের আবেগটা ওখানেই। দেশের বাইরে থাকলে যখন প্রতিনিয়ত নির্মম নিরাবেগ সব মন্তব্য শুনতে হয় বাংলাদেশকে নিয়ে, সবসময় একটা রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে থাকতে হয় মানুষকে (তাঁদের কথাই বলছি যাঁরা বাংলাদেশকে ভালোবাসেন এবং দেশ নিয়ে মাথা ঘামান), ইউনুস সেখানে একটা ভালো অস্ত্র যোগ করেছেন।

তবে হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে, বৈশ্বিক দরবারে নোবেল নিয়ে বৈশ্বিক পাবলিক খুব একটা মাথা ঘামায় না। আমাদের দেশে রাস্তাঘাটে কয়জন বলতে পারবেন, ২০০৬ সালে একুশে পদক কে কে পেয়েছেন? কিংবা ২০০৩ বা ২০০৪ সালে শান্তিতে নোবেল পদকই বা কারা পেয়েছেন? একটা প্রতিনিধিত্ববাচক জরিপ করে দেখা যায় কি?

বৈশ্বিক দরবারে লোকে কথা বলে সাম্প্রতিক জ্ঞান নিয়ে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি হচ্ছে আইলা, জলবায়ু পরিবর্তনে ভূমিলোপের বিতর্ক, টিপাইমুখ বাঁধ, দেশে সীমান্তরক্ষীদের বিদ্রোহ, জঙ্গি নেতা আমিনুল হককে দেয়া সিমেন্সের ঘুষের টাকা জঙ্গিবাদের পেছনে ব্যয় হয়েছে কি হয়নি সেই বাহাস, ইংরেজ নাগরিকের বাংলাদেশে মাদ্রাসায় অস্ত্র কারখানা পরিচালনা, ইত্যাদি। এর মধ্যে নোবেল প্রসঙ্গ টানার কোনো স্কোপ আছে? নাই। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা পদক সম্ভবত ইউনুস সাহেবকে আবার আলোচনায় টেনে আনার জন্যেই।

দেশের সুনাম অতীত ঘটনা দিয়ে নিশ্চয়ই বাড়ানো যায়, কিন্তু বর্তমানের নাজুক পরিস্থিতি তাতে বাধা দেয়। ইউনুসের নোবেল বেচে প্রবাসী বাঙালি খুব বেশিদিন খেতে পারবে না। বাংলাদেশকে কয়টা লোকে ইউনুস দিয়ে চেনে, আর কয়টা লোকে প্রচুর গরীব লোকের দুর্নীতিবাজ দেশ হিসেবে চেনে, সেটা চিন্তা করে দেখার বিষয়। আমরা যেহেতু শর্টকাটের প্রেমে মাতোয়ারা জাতি, ইউনুসকেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা। আমাদের দুর্নীতি কমাতে হবে না, নদীহনন বন্ধ করতে হবে না, রমজানে খাবারের দামবাড়ানোর মাদার্চোদগিরিতে খ্যামা দিতে হবে না, কিসুই করতে হবে না, দেশের ভাবমূর্তি ইউনুসের মেডেলগুলির কান্ধে চাপায়ে দিয়ে আমরা গোয়া মারামারি করেই যাবো, করেই যাবো। আর রাজায় কইসে শালার ভাই, আনন্দের আর সীমা নাই। ওবামার মেডেল ধুইয়া পানি খাই চলেন, যেমন পানি খাইছিলাম হাসিনার ডক্টরেটগুলি ধুইয়া।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সাধক শঙ্কু এর ছবি

হাসিনার থিকা পিছাইয়া আছে এখনো। হাসিনার ডক্টরেট ১৫টা। গ্রামীণ মহাজনের এখনো ১৩টা কম।


গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা


গড়ি দালানকোঠা ফেলে দিয়ে শ্মশাণে বৈঠকখানা

সুজন চৌধুরী এর ছবি

দেশের ভাবমূর্তি ইউনুসের মেডেলগুলির কান্ধে চাপায়ে দিয়ে আমরা গোয়া মারামারি করেই যাবো, করেই যাবো। আর রাজায় কইসে শালার ভাই, আনন্দের আর সীমা নাই। ওবামার মেডেল ধুইয়া পানি খাই চলেন, যেমন পানি খাইছিলাম হাসিনার ডক্টরেটগুলি ধুইয়া।

হাহাহহহাহা!!!


লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ

অমিত এর ছবি

বিভিন্নমুখী অনেক ইস্যু চলে এসেছে এই পোস্টে, তবুও মূল বক্তব্যের সাথে অনেকটা একমত
যার যতটুকু প্রাপ্য তাকে সেটা না দেয়াটা যেমন অন্যায়, তার থেকেও বড় অন্যায় হল যেটা তার প্রাপ্য না, সেটা থেকে তাকে দশগুণ দেয়া

গৌতম এর ছবি

থাম্বস আপ

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌তার থেকেও বড় অন্যায় হল যেটা তার প্রাপ্য না, সেটা থেকে তাকে দশগুণ দেয়া

এই অংশটা বুঝলাম না। বুঝিয়ে দেবেন?
আপনি কি নোবেল কমিটির অন্যায়ের কথা বলছেন?

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

আসাধারণ একটা লেখা। ঠিক কি বলে প্রশংসা করবো বুঝতে পারছি না। তবে পুরো লেখাটাই আমার মনের কথা বলেছে।

দ্বিতীয়নাম এর ছবি

দেশের আর্থসামাজিক সচলতায় ন্যুনতম ভুমিকা রাখতে না চাওয়া পলায়নপর 'জ্ঞানীগোষ্ঠির' চাপাবাজীটাই সম্বল। নিজেদের আলস্য আর সুবিধাবাদজনিত ব্যর্থতা ঢাকতে বৈষয়িক, কর্মে, ব্যবসায় সফলদের ছিদ্রান্বেষীতার বাতিক কিছুই যোগ করে না।

রণদীপম বসু এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ক্যারে ভাই, ইউনুসকে নিয়ে কথা বলতে গেলে কি আগে নিজেকে নোবেল পেয়ে আসতে হবে?

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রেনেসাঁ [অতিথি] এর ছবি

লেখক চুপ কেন? উনি কি মৌনব্রত নিলেন নাকি? আমি যতদুর জানি মৌনব্রত নিলেও হাসি কাশি দেওয়া যায়। উনি যে তাও দিচ্ছেন না। আঁচলের নিচে না থেকে বাইরে আসেন ভাই পাবলিক মুখটা দেখুক। প্রতিটা পুরুষের একটা শক্ত দন্ড আছে; আমি মেরুদন্ডের কথা বলছি।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

সবাইকে অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য । প্রতিক্রিয়াগুলো পরের লেখায় কাজে লাগবে ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

এনকিদু এর ছবি

কিন্তু ভাই, এটা তো ব্লগ । আপনি কোন মন্তব্যের জবাব না দিলে কেম্নে কি ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।