প্রতি প্রতিক্রিয়া, আদমচরিত

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি
লিখেছেন মাসকাওয়াথ আহসান (তারিখ: শনি, ২৯/০৫/২০১০ - ৬:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিখ্যাত লোকদের নিয়ে রম্যরচনা সবসময়ই হয়েছে। সচলায়তন এর আদম চরিতের লেখককে যে কোন সাহিত্যের শিক্ষক দশে ছয় দিতে বাধ্য, সেখানে পাঠক আরো বেশী দিয়েছেন।আমি সেই পাঠকদের একজন। একজন তির্যক লেখককে আরেকজন তির্যক লেখক দ্রোণ ছুঁড়েছেন।অনেকদিন পর ভারতের দেশ পত্রিকার সাতের দশকের মত আজকাল সচলায়তনে কিছু দ্রোণাচর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে।নীলক্ষেত থেকে আজ অবধি যারা দেশ পত্রিকা পড়েন, তারা নিশ্চয়ই খানিকটা মাথা চুলকে তারপর সাঁয় দেবেন।

যে লেখককে নিয়ে সাম্প্রতিক আদমচরিত, তিনি আমার পরিচিত, লেখক হিসেবে তার লড়াইএর দিনগুলোর খানিক সহগামী বলে তরুণ পাঠকদের সংগে সে সময়ের কিছু কথা ভাগাভাগি করতে চাই।

আনিসুল হক(ভোরের কাগজের মিটুন ভাই) রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন কবি হতে। বুয়েটের ছাত্র হলেও সাহিত্য ছিল তার সবকিছু।আজকের কাগজকে ঘিরে সংবাদপত্রের যে নবায়ন ঘটেছিল, সেখানে লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন থেকে এসে জাতীয় পত্রিকার খোলনলচে বদলে দেয়া তরুণদের একজন তিনি।পত্রিকা থেকে সরকারী চাকুরীতে গিয়ে তিষ্টাতে না পেরে ফিরে আসেন পত্রিকায় কিংবা তার কবিতার কাছে। নিজের কবিতার বই বাঁধাই করিয়ে রিকশা করে প্রেমিকা মেরিনা সমভিব্যহারে, বইমেলাই ঢুকতেই কবি হুমায়ূন রেজা আর আমি লিটল ম্যাগাজিন এলাকায় বসে কাঁচা বইএ মিটুন ভাইয়ের অটোগ্রাফ চাইলাম। তিনি তখন নতুন কাগজের গন্ধ নিচ্ছিলেন, সব প্রথম বইএর লেখকের কাছেই সম্ভবত সেরা গন্ধ সেটা।ওইদিন তার চোখে যে লেখকের দ্যুতি দেখেছিলাম তিনিই আজকের আনিসুল হক।আপাদমস্তক লেখক। তিনি আজকের শোবিজের একজন বলেই সবাই একজন তারকা আনিসুল হককে দেখে।সেটা কোন ভুল দেখা নয়।

হুমায়ুন আহমেদ বিটিভির পথ ধরে যখন পাঠক রাজ্য শাসন করছেন, আনিসুল হক তখন সরোয়ার ফারুকীকে নিয়ে তখনকার অল্টারনেটিভ মিডিয়ায় নাটক দেখাতে শুরু করলেন।এছাড়া আর কোন পথ ছিলনা। তখন তো আর ব্লগ বা ইউটিউব নেই, ফলে লেখক হিসেবে বেশী পাঠক পেতে টিভি নাটক ছাড়া আর কোন উপায় ছিলনা।প্রথম প্রথম বইমেলায় তারকা সমাদরে তিনি খুশী হতেন, বই বিক্রি নিয়ে টেনশন করতেন, কিন্তু ২০০৮ এর বইমেলায় দেখা হতেই কবিতার কথা বললেন। কবি হতেই তো তার ঢাকা আসা। আবুল হাসানের কবিতার সঙ্গে আমাদের পরিচয় মিটুন ভাই-ই করিয়ে দিয়েছিলেন,মিটুন ভাই রোমান্টিক কবি ছিলেন, তাই নির্মাণ কবিরা একটু নিরুতসাহিত করতো তাকে,গদ্য কার্টুনের প্রশংসাই বেশী আসতো,সামরিক জান্তার স্যাটায়ার তাকে জনপ্রিয়তার জলসার দিকে টানতে থাকে। তাই কবিতা যেন লাবণ্য হয়ে গেল। অমিত গাঁটছড়া বাঁধল গদ্যের সাথে।প্রথম আলো জড়িয়ে গেল তার জীবনের সমান্তরালে।বদলে যাও বদলে দাও প্রচারণাতেও অংশ নিতে হয়।সুনীল আনন্দবাজারে যেমন ছিলেন।হয়ত এই নিরাপত্তা মধ্যবিত্তকে খুঁজতে হয়। নইলে জীবনানন্দের মত অদ্ভুত আঁধার কিংবা আবুল হাসানের মত হিরণদাহ হতে হয়। যেখানেই যায়, তাদের কেবল রাত হয়ে যায়…

আনিসুল হক আবার কবিতা লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কারণ নব্বুইএর বইমেলায় আবুল হাসানের কবিতার বই খুঁজে না পেয়ে হতাশ হয়ে তারপর মনে হয়েছিল এই জন্যই হয়ত মানুষ লেখে, তার মারা যাবার এতবছর পরেও এখন তরুণ পাঠকেরা ভর দুপুরে বইমেলা তন্ন তন্ন করে খোঁজে আবুল হাসান।তিনি মৃত্যুর বিছানায় শুয়ে বলেছিলেন মিলনই মৌলিক।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনার বর্ণিত মানুষটির সাথে প্রথম আলোতে পর্বতারোহণ বিষয়ক ওরকম তেলতেলে লেখাগুলোর লেখকের ব্যাপক বৈসাদৃশ্য পেলাম। কি জানি, হয়তো বোঝার ভুল।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

হয়ত গদ্যের প্রজন্ম ব্যবধান। অনুজপ্রতিমের সাফল্যে আবেগতাড়িত। আমি কেবল আমার ভাবনার গল্প তুলেছি। সামনা সামনি দেখা হলেও আজ এই গল্পটা তুলতাম।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মাসকাওয়াথ ভাই,

প্রথম বুঝতে পারিনি কে এই আনিসুল হক। এখন বুঝতে পেরে আপনার মন্তব্যের সাথে তীব্র অমত প্রকাশ করতে চাই। প্রথমত যিনি সাহিত্য চর্চা করেন তিনি অনুজের সাফল্যে আবেগতাড়িত হতেই পারেন। তাই বলে মুসাবন্দনা না হয়ে সেটা আলো বন্দনা হয়ে গেলে সেটা সাহিত্য থাকে বলে আমার মনে হয়না। এখানেই একজন সাহিত্যিকের পরাজয়। উনি হয়তো মুসার সাফল্যে আবেগতাড়িত, তবে স্পষ্টতই সেটা আলো-তেলানীতে পরিণত করেছেন, আমি একজন নগন্য পাঠক সেখানে মুসা বন্দনা খুঁজে পাইনি।

সেদিন প্রথম আলোতে মুসার এভারেস্ট চূড়া থেকে নেমে আসার কাহিনী পড়ে যতটা আবেগতাড়িত হয়েছি জনাব আনিসুল হকের লেখায় তার প্রকাশ কমই মনে হয়েছে। যদিও লেখাটা ওনারই, হয়তো উনি আবেগী হয়েই লিখেছেন, কিন্তু এ প্রসঙ্গে তাঁর লেখাগুলোতে, আবারো বলছি, আলো বন্দনাই চকচক করে ফুটে উঠেছে। যেটা লেখার মূল ফোকাসকে সরিয়ে নিয়ে গেছে আলোর মাহাত্ম/ঔদার্য ইত্যাদির কাছে।

তবে আপনার লেখার বিরোধীতা আমি করছিনা। আপনি পরিচিতির সূত্র ধরে আনিসুল হক সাহেবের অন্য দিকগুলো তুলে ধরেছেন বলে ধন্যবাদ। নীচে অনিন্দ্যের মন্তব্যে আপনার সেই যুক্তির বিষয়টাতে আমি সহমত জানাচ্ছি।

ভালো থাকবেন।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

আমাকে না আমার আপোষ কিনছো তুমি। ধন্যবাদ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

হিমু এর ছবি

রংপুরের জল-হাওয়া-মাটির গুণ কি না জানি না, রংপুর থেকে কবি-হতে-ইচ্ছুক যারাই এই বাসনার কথা ঢাকায় এসে ঢাক বাজিয়ে প্রকাশ করেছেন, তারা কবি বাদে বাকি সব কিছুই হয়েছেন। আরেকটি উদাহরণ মনে পড়ে গেলো, কামরুজ্জামান কামু।

এটি নিশ্চয়ই খুব গ্লানির ব্যাপার, কবি হতে গেলেও আজকাল ঢাকায় চলে আসতে হয়। গভীর নলকূপ কিংবা হ্যাচারির কাজে ঢাকায় আসাই একটা বিরাট পশ্চাদপদতার উদাহরণ, সেই জায়গায় কবি হওয়ার জন্যে এই অভিবাসন আমাদের কবিতার জগতের জন্যে একটা অপমানসূচক ব্যাপার হওয়া উচিত।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এখন আনিসুল হকের কবিতার লিংক পেলে হয়ত বোঝনো যেত টেলিফিল্ম শোবিজের গ্রীণরুমে তার কবিতাগুলো কত মন খারাপ করে বসে। মঞ্চে যখন অপি করিম, কবিতার ডাক আর পড়ল না। একি রকম গুণী কবি মাসুদ আলী খান আমার আই ওয়ান্টেড টু বি লাইক হিম গল্পের এর নায়ক অর্থকষ্টে মারা গেছেন, গ্রুপ থিয়েটারের লোকেরা তাকে চেনে , এখন নাও চিনতে পারে। আনিসুল হকতো তবু আলোচনায় আছেন। আর আপনি জার্মানীতে পেশাগত কারণে গেলেও আমরা পাঠকরা লিখবো, হিমু লেখক হতে ইউরোপ গিয়েছিলেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

হিমু এর ছবি

আনিসুল হকের কবিতা আমি অল্পবিস্তর পড়েছি। শেষ পড়েছি বহু আগে ফেসবুক নিয়ে পড়েছিলাম একটা ফালতু কবিতা, যেটা হক বাদে অন্য কেউ লিখলে আলুপেপারে ছাপা হতো কি না সন্দেহ আছে। আনিসুল হক কবিতা না লিখে মেগাসিরিয়াল লিখছেন, আমি কিন্তু এতে দোষ দিতে আসিনি। বরং বলতে চাইছি, মেগাসিরিয়াল লিখে এত সঙ্কোচ বোধ করার কারণ নাই, আর সেই কাজ করতে গিয়ে "কবিতা লিখতে পাল্লুম্না" "কবি হতে পাল্লুম্না" গোছের কান্নাকাটিকে অদক্ষ অভিনয় আর পাবলিক স্টান্ট মনে হয়। তিনি মেগাসিরিয়াল না লিখে কবিতা লিখলে বাংলা সাহিত্য উপকৃত হতো কি? মনে হয় না। আবুল হাসানের সাথে এক পঙক্তিতে তার নামোচ্চারণের ধৃষ্টতাও কবিতার পাঠকের থাকা উচিত না। "কবি হতে ঢাকায় আসা" টাইপ রোমান্টিক ওভারগ্লোরিফিকেশন সামগ্রিকভাবে আমাদের বিরক্তি বাড়ায় কেবল। আনিসুল হক ঢাকায় এসেছিলেন পুরকৌশলী হতে, সেটা তিনি হতে পেরেছেন।

অতীতে বাঘ মারলে সেটার স্বীকৃতি কিন্তু অতীত জুড়েই চোকানো হতে থাকে। বর্তমানে মশা মারলে মশামারা নিয়েই কথা শুনতে হবে, কবে কে বাঘ মেরেছিলো, সেই ইতিহাস গৌণ হয়ে যায়। টাইগার সিদ্দিকি তো একটা সময় জুড়ে দুর্ধর্ষ যোদ্ধার ইমেজ ধরে রেখেছিলেন, আজ তিনি কী করে বেড়ান? পত্রিকায় তার নামে ঠিকাদারি কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে জমি দখল, হুমকিধামকি সবই আসে। সেগুলোর সমালোচনা করলেই কেউ যদি কাদের সিদ্দিকির ৭১ সালের মহিমাকীর্তন শুরু করেন, তাতে অসত্যভাষণ না হলেও প্রসঙ্গান্তর হয়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

হিমু আপনি যেভাবে আনিসুল হকের কবিতার প্রাণদণ্ড দিলেন, একবার রাইসু ওইরকম হুমায়ুন রেজার কবিতাকে প্রাণদণ্ড দিয়েছিল, আমি শুধু বলেছিলাম, শিল্পসমালোচনা তো শব ব্যবচ্ছেদ নয়।
ব্লগের সংস্কৃতিতে রবিনসন ক্রুসো-ফ্রাইডে মানস নেই, ক্রুসোর ভাবনার বিপরীতে ফ্রাইডে হয়ত অন্যকথা লিখতে পারে?আপনার বিরক্তিতে ফ্রাইডে বিব্রত।
কোনটা প্রসংগ কোনটা প্রসঙ্গান্তর এটা ঠিক করে ব্যক্তি ব্লগার, সেটাই অনলাইন মুক্তির ধৃষ্টতা।
আপনি 'আমাদের' শব্দটা হয়ত, প্লুরালিস্টিক এপ্রচে ব্যবহার করেছেন। সাধুবাদ। তবে ব্লগার হিমু তো ব্লগার মাসকাওয়াথের সাথে অনলাইন সংলাপে একজন ব্যক্তি একক। প্রত্যাশা করি সময়ের পরীক্ষায় একসময় আপনি সামষ্টিক দার্শনিক বলে আমাদের ভাবনাকে আন্দোলিত করবেন। তবে ভিন্নমত পোষণে সহমত হও্যাটাই সংলাপের শক্তির জায়গা। সেটা জারী থাকুক।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

হিমু এর ছবি

আপনাকে চোপার জোরে আমার কণ্ঠে কণ্ঠ মেলাতে বলা আমার উদ্দেশ্য নয়। তবে বিরক্তি কনভে করতে পেরে সফল মনে হচ্ছে নিজেকে। আর লেখকের প্রাণভোমরা যেহেতু পাঠকের মনের কৌটায়, প্রাণদণ্ড তো পাঠকই দেবে। অন্য কেউ লেখকের সেই প্রাণদণ্ডের বিপরীতে রাজত্ব রাজকন্যা লাখেরাজ করে দিয়ে দিতে চাইলেও যেমন আপত্তির সুযোগ থাকে না।

ব্যক্তি পাঠক অনেক সময় কথার অরণ্যে বক্তব্যের বৃক্ষটি হারিয়ে ফেলেন। প্রসঙ্গান্তরের কথা বলে তাই কয়েকটি বৃক্ষের একটির গায়ে সাইনবোর্ড মারার চেষ্টা করলাম আর কি।

"আমাদের" শব্দের ব্যবহারে আপনার বিরক্তি অতিশয় যথার্থ। মার্জনা করবেন।

শিল্প সমালোচনা শব ব্যবচ্ছেদ যেমন নয়. তেমনি মাজারসজ্জাও নয়।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

বিরক্তি শব্দটা আমার অভিধানে নেই। আপনার সাফল্যে তবুও আমি খুশী। যেমন মুসার সাফল্যে খুশী। আপনার প্রাণদণ্ড বনাম আমার ধরে নিলাম অতি উপহার, সহমত।
আড্ডার সূত্রধারের মত প্রসঙ্গ হারিয়ে যেতে দেননি। সহমত। আমাদের আমারো মুদ্রাদোষ। ভাল। আপনার মধ্যে ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টি বড়ো। সাধুবাদ। মাজার শব্দটি হুমায়ুন আজাদ হয়ে আমারো প্রিয় কৌতুক। কিন্তু আমাকে সেই কৌতুকটা শোনালেন আপনি, অনলাইনে এমন জেনেরিক কমেন্ট আসতেই পারে। সময় সেসব মন্তব্যের উত্তর দেবে। আমরা অপেক্ষা করতে পারি।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

হিমু এর ছবি

না মাসকাওয়াথ ভাই। সময়ের হাতে ছেড়ে দিয়েন না সবকিছু। আসুন আমরা নিজেরাও বলি। আপনি যেমন মুখার পোস্টের উত্তর দেয়ার ভারটা সময়ের হাতে না ছেড়ে, অপেক্ষা না করে, নিজের হাতেই নিয়েছেন, তেমনি সরস সক্রিয়তায় আসুন যে কথাগুলো বলে ফেলা প্রয়োজন, সেগুলো বলে ফেলি। ব্লগের শক্তি এখানেই। আপনি ইংরেজির ছাত্র, Ozymandias পড়ে থাকবেন হয়তো। সময়ের হাতে উত্তর দেয়ার ভার ছাড়লে সে আনিসুল হকের মূর্তি থেকে বালু উড়িয়ে কূল পাবে না।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

মুখার চোখে যেটা কমেডী, আমার চোখে সেটা হয়ত ট্রাজেডী। আমরা কিন্তু একি কথা সরস অথচ সটান ভংগীতে বলেছি। আচ্ছা ঐ মূর্তিটাতো বোধ হয় এখন যত্নে আছে। কারো স্মরণে নাই। আমি না হয় কোন রোমান্টিক কিউরেটর হয়ে, মিটুন ভাইয়ের মূর্তিটা দেখে রাখবো। আমার প্রথম বই মৃত্যুর শহর উপন্যাসের প্রথম কপিটা উনি কিনেছিলেন। সেই ২০০০ সালের অনুপ্রেরণার আশ্লেষে আমার আজকের লেখাটা যদি জোলো মনে হয়, আমি আর কীইবা করতে পারি। আপনার সঙ্গে ব্লগ সংলাপে শেষ পর্যন্ত একটা আড্ডার রেশ নিয়ে ঘুমাতে যাচ্ছি। ভালো থাকবেন।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আনিসুল হক ,হর্ষ দত্তদের কোন মিডিয়ার ছাদনাতলায় গিয়ে দালালি করতে দেখলে খুব একটা খারাপ লাগে না। একটা কিছুর তলে না থাকলে এঁরা হারিয়ে যেতেন।

'আত্মপ্রকাশ', 'যুবক-যুবতীরা'-র মতো বইয়ের লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যখন আনন্দবাজারের সাহিত্য বেশ্যাগিরি করেন তখন কষ্ট হয়। নিজের মধ্যের অমিত সম্ভাবনা সামান্য ভালো খেতে পাওয়া, থাকতে পাওয়ার কাছে আত্মসমর্পণ পুরাই ফালতু একটা ব্যাপার। কবিকে খেতে হয় টাইপ কথা শুনতে শুনতে ক্লিশে লাগে। খেতে গিয়ে দালালি করতে হলে আর লেখালেখির দরকার কী।

আপনার লেখার ভাষা ভাল। তবে জাজমেন্টাল টোন লুকিয়া থাকে না। ফলে কেন লিখছেন দাঁত বের করে ফেলে।

---------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এরা টেন্ডার সন্ত্রাসী না হয়ে যে ভাল লেখাগুলো লিখেছেন, সেগুলোর ভক্ত বলেই আমার গ্রামীণ দাঁতগুলো বেরিয়ে যায়। নাগরিক সমাজের কাছে সেটা আউটডেটেড, আপনার সমালোচনার ভঙ্গীতে নাগরিক ঋজুতা নান্দনিক, সেটাকে জাজমেন্টাল না বলি।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

কেমন একটা কলম যুদ্ধ মনে হচ্ছে? যে যাই বলি না কেন আনিসুল হক এখন একজন সাহিত্যিক।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে নিজের পরিবর্তন হতে পারে, বা প্রয়োজনের তাগিদে নিজের অবস্থানের পরিবর্তন হতে পারে তাই বলে আনিসুল হককে অবজ্ঞা করা যাবে না।

কামরুজ্জামান স্বাধীন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আজকের কাগজের সেই 'মিটুন ভাই' এর সাথে আজকের দিনের 'মিটুনদা'র ব্যাপক অমিল। কবি হতে চাওয়া মিটুন ভাই হয়েছেন আলু পেপারের মার্কেটিং সেনানীর প্রধান সিপাহসালার। তিনি এখন আর এভারেস্টের চূড়ায় অপার্থিব সৌন্দর্য খোঁজেন না, তিনি খুঁজে পান 'প্রথম আলো'। বোধকরি 'সেই' মিটুন ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে, যেমনটা হয়েছে 'সেই' হুমায়ূন আহমেদ এর।

আমাদের ঠিক আগের কিছু মানুষ তাঁর কবিতায় প্রাণ খুঁজে পেলেও আমরা তাঁর লেখার অভিব্যক্তিতে খুঁজে পাই তোষামোদী চরিত্র। আমাদের কাছে তিনি কবি হতে ঢাকায় আসেন নি, এসেছিলেন বিবর্তিত হতে। আর তিনি সেটা বেশ সফলভাবেই হয়েছেন। এই বিবর্তনটা 'ওয়ান ওয়ে টিকেট'র মতো। যতোই চেষ্টা করুন তিনি, কখনোই হারানো সেই কবিসত্তা খুঁজে তিনি আর পাবেন না।

তিনি কবি হতে এসে কবি না হয়ে ফারুকীকে নিয়ে বিকল্প মিডিয়ায় নাম লেখাতে উডগ্রীব না হলেই বোধ'য় ভালো করতেন। তা হলে হয়তো আজকে কবি জগতে ব্যর্থ রইচুদা'র মতো লম্পট লোকজনের লম্ফঝম্ফ দেখতে হতো না। কিংবা কে জানে...
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

মেটামরফসিস তো জীবনের নিয়তি অথবা জীবনানন্দের গন্তব্য। এবার বেছে নাও।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

তানভীর এর ছবি

আনিসুল হককে নিয়ে লেখার প্রতিক্রিয়া আনিসুল হক নিজে লিখলেই কি ভালো হতো না? নাকি ওনারা এত ওপরে অবস্থান করেন যে ভক্ত হিসেবে আপনাকেই কলম ধরতে হলো? ফেসবুকে তাঁকে যে পরিমাণ সক্রিয় দেখি, ব্লগকে অচ্ছুত কোন মাধ্যম না ভাবলে এর জন্য কিছু সময় বের করা তাঁর জন্য কঠিন কিছু নয় বোধহয়।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

উনাকে এই আড্ডায় ডাকলে চলে আসবেন। আমি নিশ্চিত।
উনাকে নিয়ে আমি লিখতে পারি, আমাকে নিয়ে তানভীর,তানভীরকে নিয়ে তার কোন অনুজপ্রতিম। লিখলে ক্ষতি কী। ব্লগে ওইটুকু নিশ্চয়তা আছে তো!

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

মাসকাওয়াথ ভাই,
এই লেখাটির মূল বক্তব্য আমি আসলে বুঝতে পারিনি। আনিসুল হক আমাদের অনেকেরই প্রিয় মানুষ, কিন্তু একথা সত্যি যে মানুষকে তার কর্মের জন্যই প্রতিনিয়ত মূল্যায়িত হতে হয়।

ধরা যাক, একসময় আপনি ভোরের কাগজে বিষন্নতার শহর লিখতেন, আপনার লেখা পড়ে আমি রেজা ভাইয়ের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে আপনার সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। এখন সেই মাসকাওয়াথ ভাইয়ের প্রতি মুগ্ধতা যেমন রয়েছে, এখন আপনি যদি ভবিষ্যতে উল্টোপাল্টা কিছু লিখেন সেটার প্রতিক্রিয়াও তেমন করেই পাঠক দেবে।

আদমচরিতের লেখক যে আদমচরিত লিখেন, আমি তার বড় ফ্যান।
একদিন হয়তো, এই মুখফোড় নিজেও এমন কিছু লিখবেন, যার সমালোচনা অন্য কেউ একজন করবে।

কেউ কাজের মাধ্যমে আগায়, কেউ সমালোচিত হয়।
এটাই স্বাভাবিক।

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

আমি শুধু আদমচরিতের টপ্পা শুনে মুগ্ধ হয়ে নস্টালজিয়ার সেতার শুনিয়েছি, আনিসুল হকের কবিতার মূল্যায়ন এত তাড়াতাড়ি করার কারণ নেই। সময়কে কিছুটা সময় দেয়া যেতে পারে। আর আমাকে নিয়ে চিন্তা নাই। সাংবাদিক হিসেবে ড ইউনুসের অর্জন নিয়ে লিখতে গিয়ে প্রতিটি সমালোচনা উপভোগ করেছি। একজন যখন ভয় দেখালেন সারাজীবন বিষণ্নতার শহর লিখে এখন ইউনুসকে নিয়ে লিখলে আমি দোজখে যাব। আমি বিচলিত হইনি। কারণ ২০৫০ সালে একজন তরুণ যদি বইমেলায় বিষণ্নতার খোঁজে, আমি বুঝবো লেখালেখির এই আটপোরে রোমান্টিসিজম সফল হয়েছে। সেটা কারো বিরক্তির কারণ হলেও বিষণ্নতার শহরের ইনিংসটা শেষ পর্যন্ত খেলবো, পারলে বিষণ্নতার শহরের একবার নক্ষত্রের পানে পড়ো, পড়ো আনিসুল হককে নিয়ে কি লিখেছি। মঙ্গা ক্যারাভান গল্পে মাইক্রো ক্রেডিট নিয়ে কি লিখেছি পড়ো। কাজেই আদমচরিতের প্রতি প্রতিক্রিয়া লেখা লেখক হিসেবে সেই মুক্তির অংশ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

মাসকাওয়াথ ভাই,
এই লেখাটির মূল বক্তব্য আমি আসলে বুঝতে পারিনি। আনিসুল হক আমাদের অনেকেরই প্রিয় মানুষ, কিন্তু একথা সত্যি যে মানুষকে তার কর্মের জন্যই প্রতিনিয়ত মূল্যায়িত হতে হয়।

ধরা যাক, একসময় আপনি ভোরের কাগজে বিষন্নতার শহর লিখতেন, আপনার লেখা পড়ে আমি রেজা ভাইয়ের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে আপনার সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলাম। এখন সেই মাসকাওয়াথ ভাইয়ের প্রতি মুগ্ধতা যেমন রয়েছে, এখন আপনি যদি ভবিষ্যতে উল্টোপাল্টা কিছু লিখেন সেটার প্রতিক্রিয়াও তেমন করেই পাঠক দেবে।

আদমচরিতের লেখক যে আদমচরিত লিখেন, আমি তার বড় ফ্যান।
একদিন হয়তো, এই মুখফোড় নিজেও এমন কিছু লিখবেন, যার সমালোচনা অন্য কেউ একজন করবে।

কেউ কাজের মাধ্যমে আগায়, কেউ সমালোচিত হয়।
এটাই স্বাভাবিক।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আনিস সাহেব কবি কি অকবি, সাহিত্যিক কি অসাহিত্যক এই নিয়ে জলীয় আলোচনা, আদমচরিতের মূল লেখাটির সাথে সম্পর্কযুক্ত কেন?
_________________________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

মুসাচরিত লেখার দায়ে এরকম নান্দনিক আদমচরিত খুবই প্রশংসনীয় কিন্তু আনিসুল হকতো কেবল মুসা চরিতের লেখক নন। তাই আড্ডার একফাঁকে সেটা তুলেছি। ভালমন্দ সব মিলিয়েই তো সমালোচনা তাইনা!

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

যুক্তিটি মেনে নিচ্ছি।
_________________________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

ধন্যবাদ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

মুখফোড় এর ছবি

মহাশয়, আমি সচলায়তনে মন্তব্যকুণ্ঠ হইয়া লিখিয়া চলিয়াছি। এককালে প্রচুর মন্তব্য করিতাম, তবে তাহা অন্যত্র। জীবনযাপনের বিরস প্রক্রিয়াগুলি আমার অতীত ব্লগীয় জোশকে বহুলাংশে ক্ষীণ করিয়াছে, তাই অতীতের ন্যায় স-তর্ক হইতে পারি না। আপনি সচলায়তনে আমার একটি পোস্ট পড়িয়া পৃথক পোস্টে তাহার প্রতিক্রিয়া জানাইয়াছেন দেখিয়া একাধারে কৃতজ্ঞ, কৌতূহলী ও বিড়ম্বিতচিত্তে মন্তব্যের শাখা বাহিয়া নামিলাম।

আপনার স্মৃতিচারণ পাঠ করিয়া যাহা বুঝিলাম, আমার আদমচরিতে স্বর্গদূত আনিসাইলের কাহিনি পাঠ করিয়া কোমলমতি পাঠকেরা যেন তাহাকে একটি মতলববাজ ঠাহর করিয়া না নেয়, সে প্রচেষ্টাই আপনি করিয়াছেন। আপনাকে সাধুবাদ। তবে মানুষের চরিত্র কেহ আঁকিতে গেলে আপন মাপেই ক্যানভাস আঁটাইয়া বসে। আমি ক্ষুদ্র মানুষ, গুটিকয় পোস্ট সম্বল করিয়া আন্তর্জালে আড্ডা গাড়িয়াছি, বৃহদাকার ব্যক্তিবর্গের বৃহদানন অঙ্কনের সাধ্য আমার নাই। তাহাদের যে সকল ক্ষুদ্রতা আমার ক্যানভাসের মাত্রানুগ হয়, সে সকলই আমি ছাপ মারিয়া আঁকিতে বসি। ইতিহাস রচনার দায়িত্ব নিয়া থাকে বেতনখোর পঞ্জিলেখক আর পাত্রমিত্রঅমাত্যবর্গ। মহর্ষি আনিসুলের সহিত আমার কোনরূপ আর্থিক কিংবা আত্মিক সন্বন্ধ নাই, তাই সেই দায়িত্ব লইতেও আমি অপারগ।

স্যাটায়ারের উদ্দেশ্য ব্যক্তির সমালোচনা নহে, স্যাটায়ারের উদ্দেশ্য তির্যকরসের যথাযথ প্রয়োগ। স্যাটায়ারের টীকা, টীপ্পনী যোগ করিলে তাহা আর স্যাটায়ার থাকে না, বোধের অগম্য প্রবন্ধ হইয়া দাঁড়ায়। আপনার এই টীকাযোগ তাই অপাত্রে পড়িয়াছে, সন্দেহ করিতেছি।


দুগ্ধপানের জন্য গাভীক্রয়, মোটেও ভাল কাজ নয়

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

মহোদয় আপনার রস রচনার মুগ্ধ পাঠক হিসেবে আপনাকে অভিনন্দন। আপনার রসরচনা যেমন কোন আর্থিক লাভালাভ থেকে দূরে নির্মল শিল্পচর্চা আমার লেখলেখিও আকারে ক্ষুদ্র হলেও অমল আনন্দের চর্চা বৈকি। আমার লেখাটি আপনার মাস্টারপিসে টীকা টিপ্পনী যুক্তের আকাঙ্ক্ষা বিবর্জিত, উপযুক্ত নয়। এটি আপনার নাগরিক লিভিং রুমে গ্রাম থেকে আসা অপাত্র আত্মীয়ের মতই বেমানান। আপনার এই লেখার দিকে চোখ পড়েছে জেনে কুন্ঠা বোধ করছি। যা হোক লেখাটি ল্যাপ্টপে, আপনার সোফায় বসার স্মার্টনেস তার নেই। আন্তর্জালতো গ্লোবাল ভিলেজ, গ্রামের আত্মীয়রা থাকবেই, অভিলাষী মন সোফায় না হোক, লাপ্টপে পাক সামান্য ঠাঁই। আপনার স্যাটায়ারের গুণমুগ্ধ পাঠক।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।