গোরু খুবই উপকারী প্রাণী। কিন্তু এই গরু আর আগের গরু নেই।বদলে দাও,বদলে যাও এর অভিঘাতে ওরাও বদলে গেল।গোরু আগে কত ভাল ছিল। গ্রামের মানুষের চাষাবাদে খুব কাজে আসতো, মশার কামড় খেয়ে গৃহস্তের বাড়ি পাহারা দিত। আগে অবসর সময়ে এর ওর ক্ষেতের ধান খেয়ে সমাজ সেবা করতো।আজকাল শুরু করেছে চাঁদাবাজি।গোরুদের এই মাস্তানী ষাঁড়েরা আর কতদিন মুখ বুঁজে সহ্য করবে।
মন্দিরের ঘন্টা বাজলেই কিছু উন্মত্ত ষাঁড় মন্দিরে ঢুকে সব লন্ডভন্ড করে, তারপর ফেনসিডিল খেয়ে হরিণীদের স্কুলের সামনে মোবাইল ফোনে পিয়া বলে পিউ রিঙ্গার টোন বাজিয়ে ফ্লার্টিষাস হরি্ণীদের আকৃষ্ট করে,সরোয়ার ফারুকির নাটক দেখে দেখে হরিণীগুলো সব বাংঢাকা-বাংলিশ কিচির মিচির করতে থাকে।তাতে ষাঁড়েরা পুলকিত হয়ে হরিণীর পেছনে পেছনে গিয়ে আমি চিরতরে জেলে চলে যাবো,তবু আমারে দেবো না ভূলিতে ফিউশন গায় তাহসানের মত।হরিণী মাইফুট বলে তিশার মতো মুখ ঝামটা দিয়ে তার কুমীর বাবার প্রাডোতে উঠে যায়।
মন ভেঙ্গে যায় ষাঁড়ের,কই গেলো সেই হাওয়া আর মেওয়া খাওয়ার দিন।সমাজ সেবার নিকুচি করি।হরিণীরা সেবক ষাঁড়দের ভয় পায়,অথচ ওরা একবার বললে আর কারো মন্দিরে ঢুকবে না।আর গোরুদের খেয়া পারের নৌকা গুলো শিং দিয়ে ভেঙ্গে দেবে না।ষাঁড় মোবাইল ঘুরায় কেউ ধরে না ফোন।হয়ত ফ্লেক্সিলোড করার সামর্থ্য আর ষাঁড়দের নেই।গোরুদের থেকে কেড়ে খাওয়া ছাড়া আর কিছু কী শিখেছে ষাঁড়েরা।
গরুরা আর হরিণী টিজিং এ আসার সময় পায়না, খোয়াড় বানানোর টেন্ডার পেয়েছে,খুব ব্যস্ত।খোয়াড়ে যেহেতু মোষ বেশী থাকবে, তাই ঠিকাদার পচা বাঁশ দিয়ে খোয়াড় বানিয়েছে,এতে ওপর মহল অসন্তুষ্ট।বাণীচিরন্তণী বুড়োদের বকাঝকায় অনেক টেন্ডু গরু কী করবে ভাবছে।জোয়াল কাঁধে নিয়ে হাল চষার কাজটা তো শেখেনি,শুধু পরের ধন-ধান্যে-পুষ্পে মুখ দেয়া।একজন ওপরমহল সৈয়দ অশ্রুসজল এইসব দুষ্টু গোরুর চেয়ে শূণ্য গোয়াল ভালো বলছেন।এরা তো ষাঁড়দের কাছ থেকে উতকোচ নিয়ে খোয়াড় ভেঙ্গে পালিয়ে যাবার বন্দোবস্ত করে রাখা ঘরের বন্ধু বিভীষণ।
ওপর মহল কয়েকজন পেঁচার মারফত জানতে পেরেছেন,অপরাধী বরাহরা তাদের ছাগুদের মধ্যে রামছাগু ছিলো যারা তাদের ওই কগাছা দাড়ি তেলাপোকাদের পার্লারে ক্লিন করে দিয়ে,বাছুর সাজিয়ে তাদের দিয়ে খোয়াড়-নদীর ঘাটের চাঁদাতোলার কাজ করে ছবি তুলে ছাগুদন্তটিভিতে দিয়ে দিচ্ছে।
ওপর মহল বিক্ষুব্ধ নেমক হারাম পেচাদের ওপর, এইযে মদেভাতে গরুবন্দনা উতসবে গোরুর পিঠে চড়ে পেঁচা আর পাখিরা যাচ্ছে হনুমানরাজ্যের গরুতীর্থে। ফিরে এসেই লিখবে,ভোগান্তিতে পেঁচা ও পাখীরা,পেঁচার বাচ্চা প্যাঁচা।যেন ফাইভস্টার গাছে থাকেন তারা।
এক ইংরেজী পেঁচা আর ধূর্ত শেয়াল পন্ডিত আজকাল বরাহদের প্রতি সমব্যথী চিড়িয়াখানা টকশোতে।বরাহরা হায়নাদের দূর গ্রাম থেকে ডেকে নিয়ে এসে পুরোগ্রাম উজাড় করে দিয়েছিল।ওপর মহল এবার বোকা গরুদের দাবী অনুযায়ী হায়েনাদের দোসর বৃদ্ধ বরাহদের বিচার করছে।বরাহরা মামলার খরচ চালাতে গিয়ে হিমশিম,উটেরা টাকা পাঠাতে গড়িমসি করছে,কারণ গাধাদের গ্রামের নদী ভেসে গেছে,খচ্চরস্তানের ওপরমহলের হায়েনারা খচ্চর ও গাধাদের আগুনে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল।এখন আবার পানিতে ডোবার পালা।ওপর মহলের ঊট-খচ্চর ফোন ধরেনা।হায়নারাতো আর পাত্তাই দেয়না।নিকাব আই মেক আপের এক হরিণী ফোন ধরে বলে ওপরমহল পাথর ছুঁড়ে শয়তান তাড়াতে গেছে।
বৃদ্ধতম বরাহ ফোনে কাউকে না পেয়ে গরু-ষাঁড়ের গ্রাম ছেড়ে গিয়ে ডাইনোসরদের বুড়ী মার উঁচু ঢিবির নীচে শুয়ে। অসুস্থ বরাহ,লালবাদর উকিলদের কথা শুনছে।লাল বাদররা খুব আশা দিতে পারেনা।বরাহ চোখে আজকাল সর্ষের ফুল দেখছে চারপাশে,ভোর বেলায় লোম ওঠা শরীরে মশা মাছি এসে বিরক্ত করছে, কানের কাছে পি পি করে গান করছে তুই রাজাকার।বরাহর চোখ একটু বুঁজে আসলে মাছি এসে বলে যায় তোমার চার্লিগুলিরে ডিম চিকিতসা দেয়া হছে, তুমি কি গায়েবানা ডিম নিবা, বরাহ ধর মড় করে উঠে পড়ে।
বরাহকে তার ছেলে জলপাই বরাহ দেখতে এসেছে। সে অপরাধী বরাহর পক্ষে দেন দরবার করছে।
আব্বাজান,এতো ভয় কিসের। আপনার নখের যোগ্য বাংলা-শায়খবরাহ হাসি মুখে জান্নাতে চলে গেল।আর আপনে এইরকম পু হয়্যা থাকেন।মুঙ্কার নাকীর, কীরামান কাতেবীন কেহই খুশী নয় আপনার ওপর। আপ্নার ঈমানে ডিফেক্ট ধরছেন উনারা।চলুন শাহী বরাহ প্রাসাদে ফিরে চলুন।
পুত্রের সামনে আদর্শ ফলাতে আর্তনাদ করে, হায়েনাদের আমানত খিয়ানত করে ওই শাহী-প্রাসাদ বানিয়েছিলাম, ঐখানে গেলে ঈমান ডিম হয়ে যাবে। এই সময় মাছি এসে বলে, লর্ড বরাহ আপনার গায়েবানা ডিমের সময় হয়েছে।লাল বাদররা দেখা করতে এসেছে, চক্ষু কোটরাগত বাদরেরা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে কোন এক অদৃশ্য যাতনায় লুলবৃদ্ধ বরাহ চোখ বুঁজে কুঁ কুঁ করছে।
বাপের এই কষ্ট দেখে জলপাই বরাহ একটা পাক্কা কসমের কাছে।
আব্বাহুজুর ওই নাস্তিক গরুদের আমি লাদেন দিয়ে লাদিয়ে ছাড়বো।
আবার একটা আশার আলো বৃদ্ধ বরাহের চোখে,আজ জলপাই বরাহের অভিষেক। যুবরাজ ষাঁড়ের মেরুদন্ড ভাঙ্গা তাই তার মনপছন্দ ছাগু স্কোয়ার্ড গড়ে তুলবে এই জলপাই। যেভাবেই হোক গোরুদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে যুবরাজ ষাঁড়কে বসাতে হবে, ষাঁড়ের বৃদ্ধা মা হাঁটতে পারেন না। তাই হুইল চেয়ারে করে শয়তানকে পাথর ছুঁড়তে গেছে,উনি আর পারতেছেন না।
জলপাই বরাহ কসম করে, হতমেরুদন্ডী যুবরাজ ষাঁড়ি হবেন ইসলামী অমেরুদন্ডী ষাঁড়স্তানের প্রথম খলিফা।জাতীয় পতাকা দেখতে হবে সবুজ ছেঁড়া গেঙ্গী তাতে জলপাই তারা,জিহাদী চাঁন।
বৃদ্ধ বরাহ আবার একটু উঠে বসতেই মাছি এসে বলে যায়,গায়েবানা ডিম জনাব। আবারো এক অদৃশ্য বলয় বরাহের ভেতরে বাহিরে অন্দরে বন্দরে এক ষাঁড়োস্তান জাতীয় সঙ্গীতের মূর্ছনা তৈরী করে।
বৃদ্ধ বরাহ কূঁ কুঁ করে গেয়ে ওঠে পাক-সার-জমিন-গরুবাদ,গরু সিয়াসতি থিকা বাদ।
জলপাই বরাহ স্যালুট করে আমীরবরাহকে।আব্বাহুজুর আপনার আখেরী খায়েশ,
এক—টাই-খায়ে—শ, গোরুগুলিরে লাদেন দিয়া লাদাইবা,উহারা যাহাতে হনুমান রাজ্যে হিজরত করিতে বাধ্যহয়।
আল বিদা সিপাহসালার। ষাঁড়োস্তান।ঝিন্দাবাদ।।
মন্তব্য
বুঝছি।
--------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
তাই।আমিও আপনার নায়কের শুয়ে থাকার গল্পটা বুঝছি। মেটামরফসিস মনে হচ্ছে গ্রেগর সামসার বেদনা হয়ত।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।
আপনার লেখা দিন দিন সুমন চৌধুরির জেনেসিসে কনভার্জ করছে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সেইটা মনে হয় পজিটিভ। ধন্যবাদ।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।
মাথার উপর দিয়ে গেল
---- মনজুর এলাহী ----
গোরু!!!
আচ্ছা, আপনি কি ব্রাত্য রাইসুর 'দোরা কাউয়া' কবিতাটা পড়েছেন?
(পশু পাখির ছবি দেখে মনে পড়ল)
না তো। পেঁচার সঙ্গে পাখির দৃশ্যত ভালো সম্পর্কের একমাত্র শর্ত পেঁচা পাখির কবিতা পড়বে না,পাখি পেচাঁরো কিছু পড়বে না। তবে কনটেন্ট নিয়ে কথা হতে পারে। কী আছে ওখানে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।
নতুন মন্তব্য করুন