নিরপেক্ষদের ইতিকথা

মাসুদ সজীব এর ছবি
লিখেছেন মাসুদ সজীব (তারিখ: রবি, ২১/১২/২০১৪ - ৮:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রাণ (জীবন) একবার দেহ থেকে বেরিয়ে যায় তাকে পৃথিবীর কোন চেষ্টায় ফেরানো যায় না। তাই মৃতের মাঝে কোন সম্ভবনা থাকে না, মৃত্যু মানে সবকিছুর পরি-সমাপ্তি চিরতরে। অপরদিকে জীবন মানের প্রাণচাঞ্চল্যতা আর তাই জীবিতরা কর্মশীল, চিন্তাশীল। চিন্তা আর কর্ম যেখানে এক হয়ে কাজ করে মানুষ তথা উন্নয়নের সকল সম্ভাবনা সেখানেই থাকে।

জীবিত আর মৃত নিয়ে এত ভূমিকা পারার কোন প্রয়োজন ছিলো না, এগুলো সবাই বুঝে, জানে। কিন্তু তারপরও লেখতে হলো। জিয়া হায়দার নামের এক সু-বিখ্যাত লেখকের লেখা বাংলাদেশ মৃত চিন্তা ভাবনার দেশ এবং সেটার প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের লেখার সমালোচনা নিয়ে গত কয়েকদিন ফেসবুক ভরে উঠেছে নিরপেক্ষ সুশীলতায়। সেই আলোচনার অন্যতম মূল বিষয় ছিলো এই মৃত শব্দটি। ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল কয়েকটি বিষয়ের উপর আলোকপাত করে লেখার জবাব দিয়েছেন যার মাঝে মৃত চিন্তা-দুই মহিলা-দেশ সমালোচনা উল্লেখযোগ্য।জাফর ইকবালকে নিয়ে যাদের এলার্জি আছে তারা ধরাকে সরা করে সেই তিনটে বিষয়কে পুঁজি করে এবং তার সাথে শত সহস্র কু-যুক্তি আর মামার বাড়ীর আবদার নিয়ে সমালোচনায় মেতে উঠেছে।

(১)
মৃত মানে পরিসমাপ্তি, সম্ভবনাহীন নিথর জড়তা। মৃত মানে যার পক্ষে আর কোন কিছু সৃষ্টি করা সম্ভব না। তাহলে একটি দেশের চিন্তাকে যখন মৃত বলা হয় তার মানে কি দাঁড়ায়? তার মানে কি এই নয় যে সে দেশের মানুষের পক্ষে নতুন কোন চিন্তা সম্ভব না, চিন্তা না থাকলে উদ্ভাবন হয় না আর উদ্ভাবন না হলে সম্ভাবনাও থাকে না। সম্ভাবনাহীন একটা দেশতো দিনে দিনে মধ্যযুগের দিকে হাঁটবে তাই না? মৃত বললে অবশ্যই তাই বুঝায়, এটা বুঝতে কাউকে পিএইচডি করতে হয় না। তাহলে বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব না নতুন কিছু সৃষ্টি করা, উন্নতি করা সম্ভব না! বাংলাদেশ তাহলে হাঁটছে মধ্যযুগের দিকে? বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধী এবং শেখ মুজিব হত্যার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হেনরি কিসিঞ্জারও স্বাধীনতার পর বলেছিলেন বাংলাদেশ একটি "বটমলেস বাস্কেট”। কিন্তু সেই তলাবিহীন ঝুড়ি আজ উন্নয়শীল রাষ্ট্রের তালিকায় প্রথম দিকে অবস্থান করছে। সেই তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ থেকে সর্বোচ্চ পরিমান পোশাক আমদানী করে আম্রিকা। এটা সবাই জানে বাংলাদেশের এখনো অনেক সমস্যা আছে যেমন কম বেশী সব উন্নয়শীল রাষ্ট্রেই আছে। কিন্তু সেই সমস্যার জন্যে একটি দেশ মৃত হয়ে যেতে পারে, তার সব সম্ভাবনা নি:শেষ হয়ে যেতে পারে? নুতন কিছুই কি আসছে না ছাপান্নো হাজার বর্গমাইলের এই ভূখন্ডে? একজন মাকসুদুল আলম যে পাটের জীবন রহস্য আবিস্কার করলেন সেটি কি মৃত চিন্তার ফসল? নাকি মাকসুদুল হক একজন ইংরেজ? অনলাইনে বাস-ট্রেনের-প্লেনের টিকিট কাটা-স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং পাবলিক পরীক্ষঅর ফলাফল সহ নানাবিধ তথ্যের সহজলভ্যতা সহ তথ্য প্রযুক্তিতে আধুনিকরণ, সব কি মৃত চিন্তা থেকে ঘটেছে? মানুষের দারিদ্রতা কি মৃত চিন্তা থেকে কমেছে? যদি এর কোনটার উত্তর না হয় তাহলে কিভাবে বাংলাদেশ মৃত চিন্তার দেশ হয়? কিভাবে?

পাকিমনা ছাড়া আর কেউই বলবেন না বাংলাদেশ মৃত চিন্তার দেশ। সেই পাকিমনা কিংবা সুশীল নিরপেক্ষরাই জিয়া হায়দারের সাথে গলা মিলিয়েছে আর জাফর ইকবালের সমালোচনার উৎসবে মেতেছে। জাফর ইকবাল সমালোচনার উর্ধে কেউ নন তিনিও মাঝে মাঝে ভুল লোকের পক্ষ নিয়ে কলম ধরেন-সস্তা আবেগের লেখা লেখেন কিন্তু যে যুক্তি দিয়ে জাফর ইকবালের সর্বশেষ লেখা নিয়ে সমালোচনা করছেন বিজ্ঞরা সেগুলো কু-যুক্তি ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের দাবি কেন জাফর ইকবাল অমুক নিয়ে এতদিন লেখেন নি, কেন জাফর ইকবাল তমুক নিয়ে লেখেননি, লেখছেন না। এই সমালোচনার মাঝে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল ইসলাম সাহেবও রয়েছেন। তিনিও বলছেন কেন জাফর ইকবাল সুন্দরবন নিয়ে লেখেন নি, রামপাল নিয়ে লেখেন নি। জাফর ইকবালের চেয়ে আনু-মকসুদরা জাতীয় ইস্যু নিয়ে বেশি লেখেন। আনু-মকসুদরা জাফর ইকবালের চেয়ে বড় দেশপ্রেমিক এই পরিমাপও তিনি করে ফেলেছেন। তো কামরুল সাহেবের কাছে উনার ঢঙে ছোট করে একটা প্রশ্ন করি ৫ই নির্বাচনের আগে দেশে যে বাসে আগুন দিয়ে মানুষ মারার উৎসব করেছিলো জামাতে ইসলাম এবং তাদের সহযোগী বিম্পি তখন প্রতিবাদ স্বরুপ কয়টা লেখার জন্ম দিয়েছিলেন এইসব মহান দেশপ্রেমিক বৃন্দ? কামরুল সাহেব অভিযোগ করেছেন জাফর ইকবাল সরকার বিব্রত হয় এমন কোন লেখা লেখেননি কোনদিন। এদেরকেই আসলে গোল্ড ফিশ মেমরীর প্রাণী বলে। না হলে এই লেখা কিংভা এই লেখাটির কথা ভুলে গেছেন! এই সমস্ত লেখায় সরকার বিব্রত হয়নি! তাহলে সরকারকে আর কিভাবে ব্রিবত করা যায়? জাফর ইকবাল কি দেশের সব সমস্যা নিয়ে লেখবেন? প্রতিবাদ করবেন? সবখানে প্রতিবাদের দায়িত্ব কি শুধু উনার? অন্তত এদের এইসব বালখিল্য আবদার শুনলে তাই মনে হবে। জাফর ইকবাল সুন্দরবন-রামপাল কিংবা নির্বাচন নিয়ে কথা লেখলেই কি জিয়া হায়দারের কথাকে তখন মিথ্যে মেনে নিতেন আপনারা? এই আপনাদের যুক্তি?

(২)
দুই নেত্রী বিষয়ে জাফর ইকবাল যে ব্যাখা দিয়েছেন সেটি তিনাদের কাছে গ্রহনযোগ্য মনে হয়নি। একটা মানুষকে যখন তার মূল পরিচয় বাদ দিয়ে তার জাত-বর্ণ কিংবা ধর্মীয় পরিচয় দিয়ে ডাকা হয় কিংবা বিচার করা হয় তখন সেটি অবশ্যই অবমাননা। তুচ্ছার্থেই কিংবা অপমানার্থে এই জাত-ধর্ম-বর্ণের ব্যবহারগুলো মানুষ করে থাকে। খালেদাকে খালেদ আর হাসিনা কে হাসান না বানাই, ধরি ওবামার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও একজন কৃষাঙ্গ। কিংবা ভারতে দুজন নেতাই হিন্দু, তাহলে কি ভারতে বলা হয় দুই হিন্দুর য্যাতাকলে পড়েছে ভারত? কিংবা জিয়া হায়দারের মতো কেউ কি বলতে পারবে দুই নিগ্রোর পাল্লায় পড়ে আমেরিকার আজ বেহাল দশা? কোনদিনও পারবে না, বললে জেলের ভাত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে যাবে তার ভাগ্যে। পৃথিবীতে বেশিভাগ রাষ্ট্রেই সরকার এবং বিরোধী দু-দলের প্রধান-ই পুরুষ কিন্তু সেসব দেশের কোথাও(দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবি থেকে শুরু করে মিডিয়া) বলা হয় না দুই পুরুষের কারনে দেশের আজ এই অবস্থা। পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির কথা হয়তো অনেকাংশেই সঠিক বাংলাদেশে কিন্তু তারমানে এই না আপনি এই অজুহাতে কাউকে তার জাত-ধর্ম-বর্ণ নিয়ে ছোট করতে পারেন। কারো সমালোচনা করার প্রয়োজন হলে তার কর্ম নিয়ে করা উচিত।

(৩)
তৃতীয় যে বিষয়টিকে পুঁজি করে নিজেকে নিরপক্ষে দাবি করা নিখাদ দেশপ্রেমিকরা ত্যানা প্যাঁচিয়ে আরো মহৎ নিরপেক্ষতার জন্ম দিয়েছে তার নাম দেশের সমালোচনা করার অধিকার। জাফর ইকবাল নাকি বিদেশে বসে সমালোচনা করার অধিকার হরণ করেছেন। প্রথম প্রশ্ন সমালোচনা কার করবেন? নিশ্চয় কোন দল, সংঘ আর গোষ্ঠির। যারা দেশের উন্নয়ের পথে বাধাঁ সৃষ্টি করে, মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে, মানবতার বিপক্ষে দাঁড়ায়, মৌলবাদ-ঘুষ-দুর্নিতী-সন্ত্রাস-কালোবাজারি করে কিংবা তাদের মদদ দেয়, তাদেরি তো সমালোচনা করবেন নাকি? গুটি কয়েক মানুষ কিংবা প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করতে গিয়ে আপনি যদি পুরো দেশকে ধুয়ে দেন, জিয়া হায়দারের সুরে বলে বসেন বাংলাদেশ মৌলাবাদীদের দেশ, বাংলাদেশ পাপীদের স্বর্গরাজ্য, বাংলাদেশ একটি নষ্ট ভূখন্ড। তখন সেটা আর সমালোচনা থাকে না, সেটি হয়ে যায় সরলীকরণ। যেই সরলীকরণের মাধ্যমে আপনি আপনার নিজের মা(দেশ)কে অপমান করছেন, ছোট করছেন। বিদেশে গেলে আপনি নিশ্চয় আপনার মায়ের বদনাম সবার কাছে করে বেড়ান না। দেশের সমালোচনা করার আগে অন্য উন্নয়শীল কিংবা মুসলমান রাষ্ট্রগুলোর সাথে বাংলাদেশের তুলনা করুন। বাংলাদেশ এখনো পৃথিবীর যে কোন মুসলমান রাষ্ট্র থেকে সর্বদিকে আধুনিক। রাষ্ট্রীয় কাঠামো, সমাজ ব্যবস্থা, ব্যাক্তি স্বাধীনতা, আইনের শাসন, জবাবদিহিতা, বাক-স্বাধীনতা, সহ যে কোন বিষয়ে অন্য যে কোন মুসলমান রাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে। আরব রাষ্ট্রে যান, আপনি কোন বাদশাহর নামে একটা সমালোচনা করতে পারবেন? কোন আরব রাষ্ট্রে কি মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে? পত্রিকায় যা ইচ্ছে তা লেখার অধিকার আছে? ঘরে-বাইরে নারীর সমান অধিকার আছে? গনতন্ত্র আছে? নেই। তারপরও চিন্তা-চেতনা-অধিকার মৃত না হয়ে আমাদের দেশের চিন্তা-চেতনা মৃত? হ্যাঁ আপনি উন্নত রাষ্ট্রের সাথে নিজের দেশকে তুলনা করতে পারেন সে অধিকার আছে। যে দেশ স্বাধীনতার পর তার স্থপতিকে হত্যা করে প্রায় অর্ধেকটা সময় সেনাশাসনের ছায়ায় বেড়ে উঠেছে, ইতিহাসকে ইচ্ছেমত দূষিত করা হয়েছে, দেশ বিরোধীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরষ্কিত করা হয়েছে, অন্ধ ধর্মের বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে, সেই দেশ খুব সহজে কি আম্রিকা-জার্মানী হয়ে যাবে? একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন যে দেশ ভেঙ্গে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে তার চেয়ে বাংলাদেশের ব্যাংক রিজার্ভ এখন বেশি, মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বেশি, সামাজিক জীবনস্তরের মান তাদের চেয়ে বেশি।তারপরও যদি উঠতে বসতে দেশকে ধুঁয়ে দিতে মান চায় সেটা করতেই পারেন, সেই অধিকারও আছে। শুধু বুঝে নিতে কষ্ট হবে না পাপিস্থান ভেঙ্গে যাওয়ার দু:খ আপনার এখনো সদা জাগ্রত আছে। আর সেই বেদনা থেকে সুশীলতায় ভরা কু-যুক্তিতে দিনে রাতে জন্ম হচ্ছে মুখোশ পরা নিরপেক্ষতা।


মন্তব্য

এক লহমা এর ছবি

৫ তারা। চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মাসুদ সজীব এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

অনেকদিন তো হলে লেখা ছাড়ছেন না, কাহিনী কি বলেন তো?

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

মেঘলা মানুষ এর ছবি

বুঝলাম না , দেশটাকে মৃত ঘোষণা করলে কিছু মানুষের মনে এত আনন্দ কোত্থেকে আসে?
দেশটা মরলে তাদের কি লাভ?

ফেসবুকে বোধ হয় একটা স্যাটায়ার (এবং কয়েকটা মনে হয় আসল) পেজ আছে, সেগুলো নাম, "জাফর ইকবাল, জবাব দ্যান"

তাদের যুক্তিও (কিংবা বায়নাও বলা যায়) অদ্ভুত।
লাউয়ের তরকারি লবণ বেশি হয়েছে বললে শুনতে হয়, "কেন? শাকে লবণ বেশি কী না সেটা নিয়ে কোন কথা শুনি নাই ক্যান?"

মাসুদ সজীব এর ছবি

দেশকে মৃত প্রমাণ করতে পারলে অনেক ফয়দা, এরচেয়ে পাপিস্থানে ভালো ছিলাম এই আমোঘ বাণীকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে যারা জাফর ইকবাল স্যারের বিরুদ্ধে লিখে তারা কতটুকু লেখা বুঝে সেইটা নিয়ে আমার সন্দেহ । অনেক আগে থেকে স্যারের লেখা পড়ি । সমসাময়িক বিষয়ে এখনো স্যারের রুমে গিয়ে কথা বলি স্যারের সাথে । উনি কখনো একপক্ষীয় নন । উনি যেইটা ঠিক মনে করেন সেই পক্ষের আর সেইটা হলো আত্নপক্ষ । যাকে বলে স্বকীয়তা ।

অদৃশ্য চয়ন

মাসুদ সজীব এর ছবি

জাফর ইকবাল একপক্ষী নন কিন্তু মাঝে মধ্যে তিনিও ভুল মানুষদেরজন্যে( ইউনূছ/খন্দকার) কলম ধরেন, সস্তা আবেগী লেখার জন্ম দেন।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

হিমু এর ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আটচল্লিশ সালে এক হাফসায়েব জিন্নাহ এসে ফতোয়া দিয়েছিলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। ছাত্ররা সাথে সাথে তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ছেষট্টি বছর পর আরেক হাফসায়েব এসে ফট করে বলে বসলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে ল্যান্ড অব ডেড আইডিয়াজ। কেউ কোনো প্রতিবাদ করলো না। কাজেই ধরে নেওয়া যায় যে ছেষট্টি বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মানজ্ঞান, দুটোই কমেছে।

বাংলাদেশের সব কিছু শেষ হয়ে গেলো বা যাচ্ছে, এই চিন্তাটার অনেক কাস্টোমার আছে। সাধারণত এরা হচ্ছে সেই লোকগুলো, যারা রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্র নিয়ে হল্লাচিল্লা করে, কিন্তু রাজনীতিতে ফটোশপ বিষয়ে চুপ থাকে এবং মিথ্যা কথাকে "গুজব হচ্ছে দুর্বলের হালাল অস্ত্র" বলে জায়েজ করার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকে। জিয়া হায়হায় গোস্যা করেছে, বাংলাদেশে নাকি নতুন কোনো আইডিয়া এলে সমাজ ও রাজনীতি সেই আইডিয়ার টুঁটি চেপে ধরে। তো দুনিয়ার কোন সমাজ এই প্রবণতা থেকে মুক্ত? বৃটিশ সমাজ তো অ্যালান টুরিঙের মতো লোককে ইস্ট্রোজেন ইনজেক্ট করে খাসি বানিয়ে দিয়েছিলো, আর সেটার জন্য মাফ চেয়েছে ছয় দশক পর, তা-ও বিস্তর লেখালেখি হওয়ার পর। বৃটিশ সমাজ চৌধুরী মঈনুদ্দিনের মতো লোককে আগলে রাখে, অগুস্ত পিনোশে থেকে শুরু করে তারেক জিয়া পর্যন্ত দুনিয়ার সকল লুটেরা তাদের ওখানে রাজার হালে থাকে, আর জুলিয়ান আসাঞ্জকে ইকুয়েডরের দূতাবাসে নজরবন্দী হয়ে থাকতে হয়।

জিয়া হায়হায় লোকটা স্পষ্ট করেনি, কোন ধরনের আইডিয়া বাংলাদেশে অকালে আক্রান্ত হয়ে মারা পড়ছে। যদিও আরেক জায়গায় সে বলেছে, একাত্তর প্রসঙ্গে নাকি "সিভিল" আলোচনা করা সম্ভব হয় না। সম্ভবত একাত্তর প্রসঙ্গে কিছু "সিভিল" মিথ্যাচার বাংলাদেশে এখনো ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়ে বলে জিয়া হায়হায় রহমানের কোনো প্রত্যঙ্গে জ্বলুনি হয়ে থাকতে পারে। জিয়া হায়হায় একবার পারলে ইসরায়েল যান, তেল আবিবের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বলেন যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলে কোনো সিভিল আলোচনা সম্ভব না, তারপর দেখেন কীভাবে আপনার ইস্ট এন্ড মেরে খাল বানিয়ে দেওয়া হয়।

দুইদিনের বৈরাগী ভাতরে বলে অন্ন।

এক লহমা এর ছবি

চলুক "দুইদিনের বৈরাগী ভাতরে বলে অন্ন।" - পুরাই! হতচ্ছাড়ার দল!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মেঘলা মানুষ এর ছবি

নমাটা পছন্দ হয়েছে। "জিয়া হায়হায়"

মাসুদ সজীব এর ছবি

গুল্লি গুল্লি

শুধু ছাত্রদের নয় শিক্ষকদেরও বোধহয় আত্নসম্মানজ্ঞান শূণ্যের কোটায় পৌছেছে। কোন শিক্ষক জিয়া হায়হায়ের বক্তব্যের প্রতিবাদ তো করেইনি বরং সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক কামরুল ইসলাম সাহেব মকসুদ সাহেব/জিয়া হায়হায়ের সমালোচ না করে নাজাফর ইকবালের সমালোচনায় মেতেছেন।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক
কামরুল স্যারের একপেশে লেখাটার কথা যুক্ত করতেই এসেছিলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

নিরপেক্ষ বা সুশীল সমাজের ভদ্রতার আড়ালে যেসব জামাতি ছাগুরা বাংলাদেশে বিশ্বের কাছে একটি বাজে দেশ হিসেবে উপস্থাপন করতে চায়, জাফর ইকবাল স্যারের কলাম তাদের মুখে থুথু ছিটিয়ে দেওয়ার মতো আঘাত করেছে । এই থুথুর লজ্জায়, ঘৃণায় এখন তারা উন্মাদ হয়ে জাফর ইকবাল স্যারের সমালোচনা করবে বা তার নামে কুৎসা রটাবে সেটাই কি স্বাভাবিক নয় ?

রেজাউর রাতুল

মাসুদ সজীব এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- সেটাই।নিজের আত্নসম্মানবোধ নেই বলে ওরা ভেবেছে দেশে কারো আত্নসম্মানবোধ নেই। দেশ এতই যখন মৃত তো যা তোদের স্বর্গভূমি পাপিস্থানে যা।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

আসলে এর উদ্দেশ্য তো অন্য। যাকে বলে ভাইকে ভাইয়ের পাশেই রাখা। যেভাবেই হোক এই বাংলাদেশকে মৃত বলে চালু করে দিতে পারলে আরেকটি মরে পঁচে গলে যাওয়া দেশের পাশেই ভাইয়ের মতো গলাগলি করে থাকা যাবে। পিতৃভূমির টান বলে কথা রে ভাই। বর্তমানের দুষ্টু প্রজন্ম তো এক্কেবারে গ্রাফ করে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে কত শত দিক থেকে ঐ নর্দমার নোংরাগুলো থেকে আমরা এগিয়ে। এতেই তাদের জ্বলুনি, একটা উপলক্ষ দরকার ছিলো এটাকে পেট থেকে উগড়ে দেবার। তারা এখনো সেই '৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশের আবহ থেকে বেড় হতে পারেনি, এখনও তারা মনে করে প্রপাগান্ডা দিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে পঙ্গু করে রাখবে। আমরা এখন অনেক এগিয়ে, অপেক্ষার দিক থেকেও! হ্যাঁ, এদের মরার অপেক্ষা এখন আমাদের, তারপর এইসব কীটকে ভাগাড়ে ফেলে আমরা আরো এগিয়ে যাবো।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

মাসুদ সজীব এর ছবি

চলুক

কিছুদিন পরপর এদেরকে পাকিপ্রেম কে জাগ্রত করতে একেকজন সেলিব্রেটির আগমন ঘটে। কখনো সেটা শর্মিলা বসু, কখনো এ কে খন্দকার, কখনো বা জিয়া হায়দার। নতুন জোয়ারে কয়েকদিন বিষ্ঠা উৎপাদন করে যায় সবখানে। তারপর যখন তথ্য প্রমাণে হেরে লেজটা বেরিয়ে পড়ে তখন তাদের সেই প্রেম চলে যায় হিমাঘরে। আবার প্রতীক্ষায় থাকে কোন ছেলিব্রেটি কোন ওহী নিয়ে আসে। এভাবেই চলছে এদের পাকপ্রেম চক্র।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

রণদীপম বসু এর ছবি

মৃত প্রাণীর চোখে যেমন গোটা জগতটাই মৃত, তেমনি মৃত চিন্তকের দৃষ্টিতে সকল ধরনের সৃজনশীলতাকেও মৃত বলে মনে হয় !
সমস্যাটা কি এই নতুন চিন্তকের চোখের, না কি তাঁর পচে যাওয়া মস্তিস্কে জন্ম নেয়া কৃমিকীটগুলোর কে জানে !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মাসুদ সজীব এর ছবি

এমন মিথ্যাচারে ভরা নতুন চিন্তকের তো অভাব হয় না, তাই কীটগুলোও কিছুদিন পর পর নিরপেক্ষতার নাম করে মিথ্যাচারে জেগে ওঠে।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

কিঞ্চিৎ অফটপিকঃ যাদের জাফর স্যারের ব্যাপারে এলার্জি আছে তারা চাইলে রেফারেন্স হিসেব এই লেখাটিও ব্যবহার করতে পারে। সেক্ষেত্রে করণীয় কী?

-সুবীর

হিমু এর ছবি

সেক্ষেত্রে করণীয় হচ্ছে, জাফর ইকবালের সকল কথাকে বিনা প্রতিবাদে মেনে নেওয়াটা মূর্খামি, এই উপলব্ধিতে পৌঁছানো।

শফি হুজুরের ছাত্রদের সঙ্গে জাফর ইকবালের ছাত্রদের কিছু পার্থক্য তো থাকা উচিত।

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু, শফির অনুসারীরাও তো সেকাজটিই করছে, তাই না?

-সুবীর

হিমু এর ছবি

কোন কাজটি?

অতিথি লেখক এর ছবি

জাফর ইকবালের সকল কথাকে বিনা প্রতিবাদে মেনে না নেওয়ার কাজটি।

হিমু এর ছবি

আক্কেলের পথে তারা হয়তো ৫০% পথ অতিক্রম করে গেছে তাহলে। যেদিন শফি হুজুরের সব কথা বিনা প্রতিবাদে মেনে না নেওয়ার কাজটি করতে পারবে, সেদিন তারা জাফর ইকবালের ছাত্রদের পেছনে ফেলে দেবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

সে "উল্টো-যাত্রায়" পেছনে পড়ে থাকাটা খারাপ হবে না আশাকরি হাসি

হিমু এর ছবি

নাহ, পেছনে পড়বেন না। দুই দল এখন একেবারে এক দাগে পা দিয়েই আছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন, একেবারে "নিরপেক্ষ" জবাব চলুক

হিমু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। শফি হুজুরের ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাই না, মাঝেমধ্যে সে অভাব জাফর ইকবালের দুয়েকজন ছাত্র পুষিয়ে দেন। আবার আসবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমারও খুব কম সুযোগ হয় এরকম "স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন" মানুষের সান্নিধ্যে এসে নিজেকে আলোকিত করার। ভালো থাকুন।

-সুবীর

হিমু এর ছবি

আশা করি জাফর ইকবালের প্রিয় ব্যক্তিত্ব ইউনূস আর আবু সায়ীদের সঙ্গে মিশে এই তিন খাতে আরো আলো হাছেল করার সুযোগ পাবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

জাহানারা ইমামের নাম নিলেন না- লজ্জায় বুঝি?

-সুবীর

হিমু এর ছবি

জাহানারা ইমামের সঙ্গে এই দুই লোকের নাম না নেওয়ার মতো কাণ্ডজ্ঞান আছে, তাই নিলাম না। যে লোক জাহানারা ইমামকে এই দুইজনের সঙ্গে এক পাত্রে চড়ায়, তার বুদ্ধি পুরো বিকশিত হয়নি।

বিশ্বাস না হলে গণআদালতের ছবিগুলোতে এই দুইজনকে শহীদ জননীর আশেপাশে খুঁজে দেখতে পারেন। খুঁজে পেলে ছবিটা আমাকে দেখিয়েন।

অতিথি লেখক এর ছবি

ওই দুইজনকে নিয়ে কথা হচ্ছিলো না। জাফর স্যারের প্রিয় ব্যাক্তিত্বের তালিকা দিলেন, অথচ জাহানারা ইমামের কথা বললেন না- সেটা বলছিলাম।

হিমু এর ছবি

জাফর ইকবালের প্রিয় ব্যক্তিত্বের তালিকা হেফজ করা হয়নি ভাই। মুখস্থ করলেও স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ-আন্তর্জাতিক আলোর জন্য ওনার নাম নিতাম না কখনো।

আর জাফর ইকবাল লোকটাও যেন কেমন। ওনার যে লেখাটা এই পোস্টের আলোচ্য, সেখানে বাংলাদেশের মানুষের নানা আইডিয়ার কথা বলতে গিয়ে উনি ইউনূস আর আবু সায়ীদের নাম নিয়েছেন, জাহানারা ইমামের অবিস্মরণীয় জাগরণী আন্দোলনের কথা লেখেননি। ইউনূস-সায়ীদদের কথা বলতে বলতে যদি উনি নিজেই জাহানারা ইমামের কথা বলতে ভুলে যান, তাহলে চলবে?

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই, লেখাটায় ইউনুস-সায়ীদের নাম আর কাজের বর্ণনার আগের প্যারাগ্রাফেই গণজাগরণ মঞ্চের কথা লেখা আছে। স্বীকার করি জাহানারা ইমামের নাম আলাদা করে বলা নাই, কিন্তু যুদ্ধাপরাধের বিচারের আন্দোলনের যে কথা গুলো আছে, সেগুলো জাহানারা ইমামেরই মূল স্পিরিটের সাথেই যায়। এটানিয়ে অনর্থক জল ঘোলা করে কী লাভ?

-সুবীর

হিমু এর ছবি

ঠেস দিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন, এখন জাফর ইকবালের লেখায় খুঁত দেখে আপনার মৌসুমী তর্কসুখী মন দমে গেছে। জাহানারা ইমামকে নিয়ে খোঁটা দিতে এসেছিলেন, এখন দেখতে পাচ্ছেন খোদ জাফর ইকবালই জাহানারা ইমামের কথা লিখতে ভুলে গিয়ে গরিববণিক ইউনূস আর আলোয়াল আবু সায়ীদের কথা আওড়ান শুধু। এখন আপনি একে বলছেন জল ঘোলা করা। আপনার ভক্তির প্রাবল্য যতো বেশি, যুক্তির প্রাবল্য ততোই কম।

আমাকে যেভাবে ঠেস দিয়ে বললেন, আমিও এখন সেভাবেই বলি, আপনার শিক্ষক জাহানারা ইমামের নাম নিলেন না কেন? লজ্জায় বুঝি?

অতিথি লেখক এর ছবি

জাহানারা ইমামের নাম নিলেও আপনার মত সমালোচকদের এজেন্ডার অভাব হত না। আর আপনি নিজেই শফি হুজুর, ইউনুস, সাইয়ীদের কথা নিয়ে আসছেন- নিজেকে কভার করার জন্য- পড়ে দেখুন।

-সুবীর

হিমু এর ছবি

আমার মতো সমালোচক ব্যাপারটা প্রথমে খেয়ালই করেনি। কিন্তু আপনার মতো মুরিদ এসে একেবারে হাতেনাতে ধরিয়ে দিলো, কীভাবে আপনার পীর জাফর ইকবাল জাহানারা ইমামের নামটাকে শীতের সোয়েটারের মতো বছরে অল্প কয়েকদিন ব্যবহার করেন, আর বাকি সময় আলমারিতে তুলে রেখে ইউনূস-সায়ীদের ফিনফিনে গ্রামীণ চেক দিয়ে কাজ চালান। আপনাকে ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।

মাসুদ সজীব এর ছবি

ভাইটি আমার মনে হচ্ছে কোনটি বস্তুনিষ্ঠ সমালোচনা আর কোটি ব্যাক্তিগত বিদ্বেষ সেটা বুঝার ক্ষমতা আপনি এখনো অর্জন করেননি। সেই ক্ষমতা অর্জন করে আলোচনায় আসলে সুবিধা, বেহুদা বে-লাইনে আলোচনা করে ফয়দা নেই, নিজেকে অন্ধগুরু ভক্ত প্রমাণ করে সচলে নেকী হাসলেরও কোন সুযোগ নেই।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাইরে, সমালোচনা বস্তুনিষ্ঠ হলে কোন সমস্যা নাই। কিন্তু একজনের বিরুদ্ধে কিছু লিখতে হবে, তাই লিখতে বসে গেলাম- এটা মোটেই বস্তুনিষ্ঠ হতে পারেনা। আমি মনে করি- জাফর স্যার তাঁর পাঠক-প্রতিক্রিয়া পড়বেন, না ইগ্নোর করবেন সেটা একান্তই তাঁর ইচ্ছা (যদিও এই মন্তব্য এখানে অপ্রাসংগিক)। এটা নিয়ে সমালোচনা করাটা বস্তুনিষ্ঠ হয় কীকরে? আর আপনার কমেন্টের বাকীটা তো ব্যাক্তিগত আক্রমনই, তাই না?
-সুবীর

হিমু এর ছবি

"জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে কিছু লিখতে হবে", এই এজেণ্ডা নিয়ে তো সচলায়তনে কেউ লেখেন না। জাফর ইকবাল যদি বলেন যে তিনি তার পাঠকের মন্তব্য পড়েন না, পাঠকের সে কথার বিপরীতে কথা বলার অধিকার আছে। আপনার পছন্দ না হলে আপনি পাল্টা যুক্তি দেন।

আপনি এই পোস্টে এই অপ্রসঙ্গ টেনে এনেছেন, কারণ আপনি সহ্য করতে পারছেন না যে জাফর ইকবালের কোনো কথার যৌক্তিক ব্যবচ্ছেদ হতে পারে। এটা শফি হুজুরের ছাত্রদের বৈশিষ্ট্য।

ব্যক্তি-আক্রমণ নিয়ে কথা বলার আগে যে পোস্টের প্রসঙ্গে টেনে কথা শুরু করেছেন, সেখানে আপনার মন্তব্য দেখুন:

কপাল খারাপ, নাহয় এই আবাল দেশের কতিপয় অর্বাচীন মুক্তবুদ্ধিরচর্চাকারীদের কাছে তাঁর নৈতিকতা শিখতে হতো না।

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম, আমার মন্তব্যের শুধু এই অংশটুকুই আপনার চোখে পড়লো!

হিমু এর ছবি

হ্যাঁ। এই অংশে একটা ছবি ফুটে আছে। আপনার পছন্দের লোকের কথা নিয়ে ব্যবচ্ছেদ হচ্ছে, ফট করে বাংলাদেশকে আবাল আর পোস্টলেখককে অর্বাচীন বলে দিলেন। জিয়া হায়হায় রহমানের কথার প্রতিবাদ কেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা করেনি, সেটা আপনার এই কথা দেখলে বোঝা যায়।

মাসুদ সজীব এর ছবি

(১)

জাফর স্যার তাঁর পাঠক-প্রতিক্রিয়া পড়বেন, না ইগ্নোর করবেন সেটা একান্তই তাঁর ইচ্ছা। এটা নিয়ে সমালোচনা করাটা বস্তুনিষ্ঠ হয় কীকরে?

আপনি কি পান্ডবদার পোষ্টটা মনোযোগ দিয়ে পড়েছিলেন? উনি কি শুধু একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন? আবার পড়ুন, আমার যা ইচ্ছে তা লেখবো, কে কি বললো এমন মানসিকতা কি পাঠককে অনেকটা অবহেলা কিংবা ইগনোর করা নয়? (হ্যাঁ, উনি নিদিষ্ট কোন পত্রিকা কিংবা ব্লগে লেখতে পারেন এবং সেখানকার পাঠকদের প্রশংসা আর সমালোচনার জবাব দিতে পারেন, ছাগুদের যেখানে ছেঁকে ফিল্টার করা হয় সেখানেই তিনি পাঠকদের কাছে আসতে পারেন, এমন দাবি/প্রশ্ন তার পাঠক তুলতেই পারে) আর সেটা নিয়ে প্রশ্ন করলে সেই প্রশ্ন কিংবা সমালোচনা কি অবান্তর হয়ে যায়?
(২)
আপনাকে করা আমার প্রথম মন্তব্যে একটা লিংক দিয়েছিলাম সেটা কি দেখেছেন? বোধহয় দেখেননি, তাই সরাসরি বলি একে খন্দকারের পক্ষে কলম ধরে জাফর ইকবাল যে সস্তা লেখার জন্ম দিয়েছিলেন সেটির সমালোচনা করলে সেও কি অর্বাচীন মুক্তবুদ্ধিরচর্চাকারী হয়ে যায়?

মূল বিষয়কে পাশ কাটিয়ে জাফর ইকবালের সমালোচনা করতে এই পোষ্ট লেখা হয়নি, মূল ফোকাস ছিলো বাংলাদেশকে মৃত চিন্তার দেশ বলার যৌক্তিকতা এবং উদ্দেশ্য। তিলকে তাল করে জাফর ইকবালের সমালোচনা নয়, যদিও সেই সেখানে কিছু সমালোচনা করা যেত। উনি মাকসুদুল আলমের নাম নিতে ভুলে যান, জাহানারা ইমামের নাম ভুলে যান, উনার শুধু পীর ইউনূছ সাহেবের নাম মনে পড়ে। কেন?
(৩)
হিমুদার প্রথম মন্তব্যের পরও যখন আপনি বুঝেননি এবং তারপর ক্রমাগত ভুলে ভরা যুক্তিতে তর্ক/আলোচনা করে যাচ্ছিলেন তখন আপনাকে অন্ধ ভক্ত মনে হয়েছে। এটা ব্যাক্তি আক্রমন হিসেবে নিয়ে থাকলে দু:খিত। ভালোথাকুন

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মাসুদ সজীব এর ছবি

হিমু দা আসল জায়গায় দাগা দিছেন চোখ টিপি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

মাসুদ সজীব এর ছবি

এলার্জি এক বিষয় আর প্রমাণ আর যুক্তি আরেক বিষয়। এলার্জিওয়ালাদের বাছ-বিছার নেই, দেখলেই চুলকায় আর যুক্তি-প্রমাণে বিশ্বাসী মানুষজন জাফর ইকবালকে পূজা করে না। প্রশংসার সময় প্রশংসা করতে কুন্ঠিতবোধ করে না আবার সমালোচনা করার মতো বিভ্রান্তিমূলক সস্তা আবেগের লেখা লেখলে এমন সমালোচনা করতে পিছু পা হয় না।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।