আমি এখনো গ্রামে যাই, সবুজ ধানক্ষেতে হাঁটি, পুকুর পাড়ের সেই ছায়াতলে বসে এখনো নিজের ছেলেবেলা কে দেখি। যদিও স্মৃতির ঘরের সেই ছেলেবেলা আজকের মতো এত রঙিন ছিলো না, দিকে দিকে তখন অভাবের রাজত্ব ছিলো, ক্ষুধার অব্যক্ত কষ্ট ছিলো মানুষের সমস্ত শীরর জুড়ে। গ্রামে আমাদের বাড়ি বড় বাড়ি হিসেবে পরিচিত ছিলো, সেই বড় বাড়িতেই সেই সময় দু-একটা পরিবার একবেলা ভাত খেয়ে আরেক বেলা গুড়-মুড়ি চিবিয়ে দিন পার করতো। বড় বাড়িতে যখন এই অবস্থা তখন পাশের ছোট বাড়িগুলোর অবস্থা কেমন ছিলো সেটি সহজেই বোধগম্য। এছাড়া প্রতিবছর প্রাকৃতিক ঘুর্ণিঝড়, বন্যা, খরা কিংবা অতি বৃষ্টি প্রভৃতির কাছে সেই সময়ের মানুষের জীবন ছিলো অনেক বেশি অসহায়।
বছর পঁচিশ আগের ছেলেবেলার সেই বাংলাদেশের সাথে আজকের বাংলাদেশের অনেক ফারাক। এখন গ্রামে গেলে সেটি কে আর গ্রাম মনে হয় না। ধুলোমাখা মাটির সড়ক বদলে গিয়ে সেখানে পিচঢালা ঝকঝকে সড়ক হয়েছে, বিদুৎ, দালান ঘর, ঘরে ঘরে ফ্রিজ-রঙিন টেলিভিশন সহ আধুনিক জীবন যাপনের সকল সুযোগ সুবিধাই প্রবেশ করেছে এখন গ্রামে। বাড়ি থেকে গ্রাম, গ্রাম থেকে থানা, থানা থেকে জেলা, উপশহর থেকে শহর সর্বত্রই আজ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ কে দেখি আমরা। হ্যাঁ অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশ এখন অনেক বদলে গেছে, এক সময়ের ঝুঁড়ি বিহীন রাষ্ট্র এখন নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে, জিডিপি সাত ছুঁয়েছে, রিজার্ভ ব্যাংকের জমানো অর্থের পরিমাণ ও দিন দিন বেড়ে চলেছে। এটা সত্য যে এই উন্নয়নে, এই অগ্রগতিতে রাজনৈতিক দল তথা রাজনৈতিক সরকারগুলোর অবদান সবচেয়ে বেশি। এর পাশাপাশি বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা ও মানুষের জীবন যাপন, সমাজের অর্থনৈতিক চিত্র সহ সব কিছু খুব দ্রুত বদলে দিতে সহায়তা করেছে।
অবকাঠামোর দিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন তথা উন্নয়নটা শুরু হয়েছে ২০০৮-০৯ সাল থেকে। এই সময়ে বিদুতের ব্যাপক উৎপাদন, মূল সড়কগুলো চারলেনে উন্নতি কাজের সূচনা, রেলওয়েতে ডাবল লাইন স্থাপন, যানজট নিরসনে ঢাকা-চট্রগ্রাম শহরে অনেকগুলো উড়াল সেতু নির্মাণ, তথ্য প্রযুক্তিতে উন্নয়ন, কৃষিতে সমৃদ্ধি প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এ কথা নি:সন্দেহে বলা যায় সামরিক শাসনের অতল গহীনে ডুবে থাকা সময় কে বিদায় দিয়ে গনতান্ত্রিক সরকার ফেরার পর থেকে কিছু ধারাবাহিক উন্নয়ন হলেও মহাজোট সরকারের সময়টাতে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অগ্রসর হয়েছে।
একটা রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে দুটো বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। প্রথমত উন্নয়নমূলক যে কাজগুলো হচ্ছে তার কতটুকু পরিকল্পনা মাফিক হচ্ছে, দ্বিতীয়ত এই উন্নয়ন মানুষের জীবন কে কতটুকু প্রভাবিত করছে, মানুষ কে কতটা নিরাপদ আর স্বাস্থ্য সম্মত জীবন যাপনের সুযাগ তৈরি করে দিচ্ছে এবং এসবের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য কতটুকু বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলা হচ্ছে। এদুটোর উত্তর সন্তোষজনক না হলে কোন উন্নয়ন-ই জনগণের জন্য অর্থবহ হয় না।
এগুলোর সাথে সম্পর্কিত থাকছে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলার কতটুকু উন্নয়ন হচ্ছে, রাষ্ট্রের সকল নাগরিক কি আইনের শাসনের সুফল ভোগ করছে, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, স্বজনপ্রীতি, লুট, গুম, খুন, জমি দখল, অসততা কি কমছে রাষ্ট্র থেকে? সর্বোপরি দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি কি দেশের মানুষের বোধ-চেতনার উন্নতি হচ্ছে?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া ও অনেক বেশি জরুরী। কারণ আমরা জানি,’ পাহাড়-নদী-গাছপালা-রাস্তাঘাট কখনো একটা দেশের পরিচয় হয় না ‘।
দেশ মানে নিদিষ্ট মানচিত্রে বাস করা মানুষ সমষ্টি, তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং সভ্যতা।
তাই আবাদি কিংবা অনাবাদি জমি/পাহাড় কেটে সু-উচ্চ দালানকোঠা নির্মাণ আর রাস্তাঘাটের প্রসার মানেই কোন দেশের মানুষের উন্নয়ন নয়, তার সংস্কৃতির উন্নয়ন নয়। সমাজে-রাষ্ট্রে নাগরিকের ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার না থাকলে, নাগরিক জীবনের সুযোগ-সুবিধা না থাকলে, সর্বোপরি জীবনের নিরাপত্তা না থাকলে শুধু কাঠামোর উন্নয়ন কোন রাষ্ট্রের মানুষের জীবন কে উন্নত করতে পারে না।
দু:খজনক হলো ও সত্যি বাংলাদেশে কাঠামোর কিছু উন্নয়ন হলেও অন্য বিষয়গুলো তে উন্নয়ন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বরং দিনে দিনে বাড়ছে অপরিকল্পিত নগরায়ন, অনিরাপদ সড়ক, মানহীন খাদ্য ব্যবস্থাপনা, ধর্মীয় উগ্রবাদ, আইন শৃঙ্খলার অবনতি, ভোট বিহীন প্রতিনিধি নির্বাচন, পুলিশি অপশাসন, জবর দখল, চুরি, লুট, খুন, গুম প্রভৃতি।
অপরিকল্পিত নগরায়ন: গত কয়েক বছরে ঢাকা সহ সারা দেশেই প্রতিযোগিতা দিয়ে বাড়ছে সু-উচ্চ ভবন নির্মাণ। শিল্পায়নের এই যুগে নগরায়ন বাড়বেই এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই নগরায়ন কতটুকু পরিকল্পনা মাফিক গড়ে ওঠছে সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন বাংলাদেশে। একটি নগর গড়ে উঠার সময় দেখতে হয় সেখানকার ভবনগুলো ভবন কোড মেনে চলছে কিনা, বিদুৎ-গ্যাসের বন্টন ব্যবস্থা নিরাপদ উপায়ে গড়ে উঠছে কিনা, রাস্তাগুলো প্রশস্ত থাকছে কিনা, ড্রেনেজ সিস্টেম, ময়লা অপসারণ পদ্ধতি সহ নাগরিক জীবনের অনান্য সুযোগ সুবিধা যথাযথ থাকছে কিনা প্রভৃতি। বাংলাদেশে এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর মেনে নগারয়নের দিকে দৃষ্টি রাখলে দেখা যাবে খুব কম পরিমাণ স্থানে সঠিক নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে। আমার নিজের বেড়ে উঠা ঢাকার বাহিরে ছোট একটা মফস্বল শহরে। সেখানেও বছর বছর বেড়েছ দালানের সংখ্যা, বেড়েছে পাড়া-মহল্লার সংখ্যা। সেই নতুন জেগে উঠা পাড়া মহল্লায় যে রাস্তা হচ্ছে সেগুলোর প্রস্থ ৭-৮ ফুটের বেশি না। এমন সরু রাস্তা দিয়ে বড় কোন যানবাহন তো দূরের কথা দুটো মাঝারি আকৃতির যানবাহন স্বাচ্ছন্দ্যে চলতে পারবে না। ফলে ভূমিকম্প কিংবা অগ্নিসংযোগ ঘটলে ফায়ার সার্ভিস সহ উদ্ধারকর্মীদের গাড়িগুলোই ঘটনা স্থলে পৌছাতে পারবে না। দ্বিতীয়ত ভবন কোড না মানায় দুটো ভবনের মাঝে দূরত্ব থাকছে একেবারে নগন্য। ফলে আলো-বাতাসহীন বদ্ধ কতগুলো ভবনের জন্ম হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ শুধু ভালোভাবে বেঁচে থাকার পরিবেশ বিনষ্ট করে তা নয় বরং তাদের জীবনের নিরাপত্তা কে ও ঠেলে দেয় বড় ধরণের হুমকির মুখে।
এছাড়া নগরগুলোর ভবন ঘেঁষে বিদুৎ পরিবাহী তারের সাথে আরে শত প্রকার তার যেমন ডিশ, টেলিফোন, ইন্টারনেট, জেনেরেটর প্রভৃতি মাকড়সার মতো জটলা পাকিয়ে এমনভাবে নিয়ে যাওয়া হয় যে কোনদিন এর থেকে যে বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংকা বোধহয় নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কিংবা বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড কেউই করে না। একটা নিরাপদ নগর গড়ে তুলতে এই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়ে কারো কোন নজরদারি নেই। আমাদের দেশের নগরগুলোতে ময়লা অপসারণ আর ড্রেনেজ ব্যবস্থা কতটা নাজুক তা কেবলমাত্র বর্ষাকাল এলে কর্তৃপক্ষ বুঝতে সক্ষম হয়। বিশ্বের উন্নত দেশের শহরগুলো তে প্রতিটি বাড়ির সামনে নিজস্ব বড় ডাষ্টবিন থাকে, যেখানে ঘরের প্রতিদিনের ময়লাগুলো বড় পলিব্যাগ করে মুখ বন্ধ অবস্থায় জমা রাখা হয় এবং সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি পলিব্যাগের বদ্ধ ময়লাগুলো দিনের নিদিষ্ট সময়ে নিয়ে যায়। শুধু বাড়ি ঘর কেন প্রতিটি মলে, প্রতিটি ব্যক্তিমালিকানার দোকানে এই ব্যবস্থা থাকে। আর আমাদের দেশে ব্যক্তিগত ডাষ্টবিনের কোন ধারণাই নেই। সরকারী ডাষ্টবিনের সংখ্যাও এখানে প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই নগণ্য। ফলে মানুষজন হয় ময়লা ফেলছে নর্দমাতে কিংবা বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গা তে। ফলাফল দুর্গন্ধতে সয়লাভ চারপাশ আর সৃষ্টি হচ্ছে মশার ভয়ংকর উপদ্রব। এমতবস্থায় একটু বৃষ্টি হলে নর্দমার পানি আর বৃষ্টির পানি মিলেমিশে মূল সড়কগুলোতে জন্মদেয় দীর্ঘ জলবদ্ধতার। বছরের পর বছর সবগুলো নগরে এ দৃশ্য দৃশ্যায়িত হলেও কোথাও কোন প্রতিকার নেই। অন্যদিকে বড় শহরে হাতে গোনা সরকারী ডাষ্টবিন থেকে সংগ্রহ করা ময়লাগুলো জনবসতির এত নিকটে উন্মুক্তস্থানে জমা করা হয় যে সেই রাস্তা, সেই পথ দিয়ে চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।
এতো সব সমস্যার মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর ও নতুন করে যেখানে নগরায়ন হচ্ছে তার কোথাও এসব সমস্যা কে মাথায় রেখে সমাধানমূলক পরিকল্পনা নিয়ে কাজ হচ্ছে না। ফলে সু-উচ্চ দালানকোঠা দিয়ে নগর সৃষ্টি হলেও সেটি বসবাসের জন্য আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন নিরাপদ আবাস হচ্ছে না। দিন দিন জনসংখ্যা বাড়বে, ফলে আজকের মানুষেরা যদি এ ব্যবস্থাপনায় এতো যন্ত্রনা ভোগ করে তবে ভবিষ্যতে এগুলো কি আদৌ বাসযোগ্য থাকবে? দু:থজনক হলেও সত্য এই ভাবনা কারো কাছে নেই।
অনিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা: সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশে প্রতিবছর যতগুলো প্রাণ ঝরে যায় আর যতগুলো জীবন অকেজো হয়ে যায় তা সারা বিশ্বের জন্যই বিরল ঘটনা। শুধু সড়ক নয় জলপথেও একি অবস্থা! গত কয়েক বছরে দুই লেনের রাস্তা চারলেন হলেও সড়ক দুর্ঘটনা একটুও কমেনি বরং দিন দিন বাড়ছে দুর্ঘটনার পরিমান আর বাড়ছে লাশের মিছিল। শুধু তথ্য দিয়ে এর ভয়াবহতা আসলে তুলে ধরা সম্ভব না। ২০১৫ সালের তথ্যতেই দেখা যায় এ বছর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ এবং আহত হয় প্রায় বাইশ হাজার মানুষ!!
রাস্তার বের হলে আপনি যে আবার ঘরে ফিরতে পারবেন এ নিশ্চয়তা আপনাকে কে দিবে? অবশ্য যে দেশের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী বলে দিতে পারেন গরু আর মানুষ চিনলেই যে কাউকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া যাবে সেই দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মরবে এতে অবশ্য কোন বিস্ময় নেই। দেশ উন্নত হচ্ছে কিন্তু তার নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপণা এখনো হাজার বছর পিছিয়ে আছে। অদক্ষদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, অনিয়ন্ত্রিত গতি, রাস্তা দখল, বিশ্বরোড় গুলোতে নসিমন-করিমন সহ ছোট গাড়ির অবাদ বিচরণ, নজরদারির অভাব আর পুলিশি দুর্নীতির জন্য দিনের পর দিন একই ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটেই চলছে। সামরিক সরকার থেকে গনতান্ত্রী সরকার, জিন্দাবাদ থেকে জয় বাংলার সরকার সব সরকারের আমলেই সড়ক পথে কিংবা জল পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ যাওয়া একটি অগুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে বিবেচিত হয়ে এসেছে, আজও তাই আছে। নিহতদের পরিবারগুলো কে কখনো একটি ছাগল কখনো বা হাজার দশেক টাকা দিয়ে রাষ্ট্র তার সু-মহান দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে এখানে। রাষ্ট্রীয়ভাবে মানুষের জীবনের দাম এতো সস্তা, এতো মূল্যহীন তা বঙ্গদেশে না জন্মালে কারো পক্ষে বুঝা সম্ভব না।
অথচ একটু আন্তরিক আর জনগনের জীবন কে মূল্যবান মনে করলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। মূল সড়কগুলো তে গতি নির্ধারণ করা, সেগুলো মনিটর করা, দক্ষ আর যোগ্যদের ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি কে নিষিদ্ধ করা, নসিমন-করিমন সহ তিনচাকার গাড়ি কে মূল সড়কে সরাসরি নিষিদ্ধ না করে তাদের জন্য মূল সড়কের সাথে আলাদা লেন করে দিলে দুর্ঘটনায় জীবনের অবসান বন্ধ করা যায়। এখানে একটি বিষয় সত্য যে তিন চাকার গাড়ি কে মূল সড়কে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশে সম্ভব না। কারণ গ্রাম থেকে কাছের দূরত্বের শহরগুলো তে মানুষজন মূল সড়ক দিয়েই তিন চাকার গাড়িতে করে আসা-যাওয়া করে। তাই তিনচাকার গাড়ির জন্য আলাদা একটা লেন অত্যাবশক। এর পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের সংখ্যা বাড়িয়ে, সঠিক নজরদারি আর তড়িৎ আইনের প্রয়োগ করে সড়কে দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব।
মানহীন ভেজাল খাদ্য উৎপাদন: বাংলাদেশের বাজারে ফরমালিন ছাড়া ফল-মূল, মাছ-মাংস পাওয়া এখন দুর্লভ। ২০১৫ সালে ফরমালিন যুক্ত লিচু খেয়ে ২২ জন শিশু মারা গিয়েছে, এমন ভয়াবহ তথ্যই বলে দেয় ফরমালিনের কি একক রাজত্ব চলছে বাংলাদেশে। ফরমালিন বাদেও এখানে আছে মানহীন ভেজাল অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের জয়জয়কার। দেশের একেবারে নামী-দামী থেকে পাড়া-মহল্লার একেবারে সাধারণ হোটেল-মোটেল, মিষ্টি-বিস্কুট সহ নানান খাদ্য উৎপাদন কারী প্রায় সব প্রতিষ্ঠান ভেজাল বিহীন স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে খাদ্য উৎপাদন করছে আর দিব্যি তা দিয়ে ব্যবসা করে চলছে। প্রায় সবখানেই স্বাস্থ্যহীন ভেজাল, নোংরা পরিবেশে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। অথচ দেশে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রনে, খাদ্যে ভেজাল রোধে রয়েছ সরকারী সংস্থা। শোনা যায় মাঝে মধ্যে সেই সংস্থা অভিযান চালায় আর দু-চারটি জরিমানা করে আবার শীতনিদ্রায় যায়। ফলে ভেজাল খাদ্যে বাজার সয়লাভ হয়ে যায়। ভাগ্যিস ভেজাল খাদ্য খেয়ে কত মানুষ অসুস্থ হচ্ছে, কত মানুষ ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে তার পূর্ণাঙ্গ কোন তথ্য কারো কাছে নেই। থাকলে হয়তো দৃষ্টিগোচর হতো কি পরিমান বিশৃঙ্খলা, কি পরিমান অনিয়ম আর দুর্নীতি চলছে এ খাতে। এখন প্রশ্ন হলো দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে অগ্রসর হলে এ দিকগুলো তে কেন পিছিয়ে থাকছে? যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন স্বাস্থ্যসম্মত হবে না ততদিন অবকাঠামোর উন্নয়ন জনগনের জীবন কে নিরাপদ করতে পারবে না।
আইনের শাসন ও সাম্যতা: স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে বাংলাদেশ অগ্রসর হলেও তার আইন-শৃঙ্খলার খুব একটা উন্নতি হয়নি, আইন সবার জন্য সমান হয়ে থাকতে পারেনি। সব সরকারের আমলেই অর্থ, প্রভাব, ক্ষমতার কাছে এখানে আইন মাথা নত থেকেছে, এখনো আছে। এখনো বিচার বহির্ভূত হত্যা, পুলিশি গুম চলছে। এগুলো কোন উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের পরিচয় হতে পারে না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে, সবাই আইনের সমান সুফল ভোগ না করলে সেই রাষ্ট্র কখনো সফল আর উন্নত রাষ্ট্র হতে পারে না।
গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সবার অংশগ্রহনে নির্বাচন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অথচ বাংলাদেশে ভোট কেন্দ্র দখল, বিপক্ষ দলের নেতা কর্মীর উপর হামলা-মামলা, জাল ভোট নির্বাচনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। যখন যে ক্ষমতায় থেকেছে সেই এই রীতি কে অক্ষর অক্ষরে মেনে চলেছে। ৯০র শেষভাগে দেশে গনতন্ত্রে ফেরার পরও এই নিয়ম এতটুকু বদলায়নি। বদলায়নি ভোটের সময় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের দৃশ্য। নিম্ন মধ্য আয়ের দেশে এখন ভোট লাগে না, ভোট ছাড়াই পাহাড়ে আদিবাসীদের কিংবা সমতলে হিন্দুদের বাড়ি-ঘর দখল করা যায়, তাদের ধর্ষণ করা যায় এবং কোন প্রকার বিচারের মুখোমুখি না হয়ে বহাল তবিয়াতে থাকা যায়। উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে এগিয়ে চলা দেশে অনুভূতির দোহাই দিয়ে চাপাতি দিয়ে মানুষ খুন করা যায়, রাষ্ট্র আর সরকার দু-পক্ষ কে বকে দিয়ে বিচারের কাজে ইতি টেনে দেয়।
আচ্ছা জিডিপি সাতে পৌছে যাওয়া বাংলাদেশে কি খুন-গুম কমেছে? সন্ত্রাস? ধর্ষণ? ছিনতাই? নারী নির্যাতন? জবর দখল? লুট? সরকারী-বেসরকারী অফিসে দুর্নীতি? মৌলবাদি শক্তির উত্থান? না, এ গুলো কিছুই কমেনি, বরং আগের চেয়ে অনেকক্ষেত্রে এগুলো বেড়েছে। এগুলো যদি না কমে তাহলে সাধারণ মানুষের জীবন নিরাপদ হয় কি করে? জীবন-ই যদি নিরাপদ না হয় তাহলে দালান-কোঠা আর রাস্তা ঘাটের উন্নতি দিয়ে জনগণ কি করিবে?
শুধু ভবন-রাস্তার উন্নয়ন নয় উন্নয়ন প্রয়োজন মানুষের মননের, উন্নয়ন প্রয়োজন বোধের। উন্নয়ন যেন হয় সর্বত্র জনকল্যাণমুখী। জনকল্যাণমুখী উন্নয়ন-ই পারে বাংলাদেশ কে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড় করাতে, পারে মানুষ কে মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে দিতে। কাঠামেরা পাশাপাশি মননে-বোধে, চেতনায় বাঙালি উন্নতি সাধন করুক, সত্যিকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক সর্বত্র।
মন্তব্য
'এটা সত্য যে এই উন্নয়নে, এই অগ্রগতিতে রাজনৈতিক দল তথা রাজনৈতিক সরকারের অবদান সবচেয়ে বেশি।'
আমার ধারনা উল্টো, তাদের কাজ হল সাধারণ মানুষের উন্নয়নকে আরো টেনে নিচে নামিয়ে আনা
'মহাজোটের সরকারের সময়টাতে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি অগ্রসর হয়েছে'
এই প্যারায় বোঝা গেল, আপনার আসল স্বরূপ
আপনার উন্নয়ন মানলাম, শুধু যদি বলি, এই সরকারের আমলে কুশিক্ষার হার বেড়েছে কিংবা আপনার ভাষায় সবচেয়ে বেশি অগ্রসর হয়েছে । আপনি এটা ভুল প্রমাণ করুন
প্রশ্ন ফাঁস হয়নি, এমন কোন একটা পরীক্ষার কথা বলুন তো
গনতান্ত্রিক সরকারের সাথে সামরিক সরকারের পার্থক্য কি, কতটুকু সেটি বুঝতে পাকিস্তানের দিকে চোখ রাখতে পারেন। সামরিক সরকার থেকে ব্যর্থ গনতান্ত্রিক সরকারও হাজারগুণ ভালো।
আমার মনে হয় আপনি ব্যক্তি আক্রমণের দিকে গেছেন । আমি মহাজোট সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়ে লিখতে বসিনি, তাই শিক্ষার বিষয়টাকে যেমন নিয়ে আসেনি, তেমনি রাজাকারের বিচারের প্রসঙ্গটাও আনিনি। সরকার যে শুধু উন্নয়নের বুলি উড়াচ্ছে সেটি কতটা পরিকল্পনা মাফিক হচ্ছে, সেই উন্নয়ন কি আদৌ মানুষের জীবন যাপনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে কিনা তা তুলে ধরতে চেয়েছি। আশা করি লেখার মূল বক্তব্য এবার বোধগম্য হয়েছে, ভালো থাকুন
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
আপনার আসল স্বরূপটাও একটু বুঝতে চাচ্ছি, আপনার মতে কোন সময়টাতে সবচেয়ে বেশি অগ্রসর হয়েছে? এমনি এমনি বললে কিন্তু হবে না, প্রমানপত্র/রেফারেন্স সহ বলতে হবে।
কোন সরকারের আমলে আহামরি কিছু হয়নি, সেখানে ইনিয়ে বিনিয়ে মহাজোট সরকারের আমলে এমন কিছু ফুলে ফেঁপে যায়নি, যার কারণে বলতে হবে এই সরকারের আমলে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের কথা তো বললাম , শেয়ার বাজার, হলমার্ক, সাংবাদিক হত্যা, নারায়ণগঞ্জ সাত খুন...আরো বলবো.....??? আরো দিতে হবে? একটু চোখটা খুলুন আর আমাদের মত সাধারণ মানুষের মাঝে এসে দাঁড়ান
হুমম কিছু হয় নাই। নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্যের হার, জিডিপি, মাথাপিছু আয়, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, সম্ভাব্য পদ্মাসেতু। পদ্মাসেতু হবার পর জিডিপ যখন ১.৫-২ ধাপ বাড়বে তখনও কিছু হবে না।
অন্যান্য দেশের অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার সাপেক্ষে বাংলাদেশ আলাদা এমন না। অস্বাভাবিক মৃত্যু, হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতি হবেই। কথা হচ্ছে আইনের প্রয়োগ হচ্ছে কি না, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পেল কি না। খুনীর বিচার হলো কি না, কত দ্রুত হলো। দু্র্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি শাস্তির আওতায় আসলো কি না। সেটা না আসলে সমালোচনা বৈধ*।
বাঙালি বুঝতে না পারলেও ফোর্বস ম্যাগাজিন বুঝতে পারছে নারীর ক্ষমতায়নে হাসিনা*র ভূমিকা কি। বাঙালির এখনও বুঝে আসে নাই দশম স্থান অধিকার করার মাজেজা কী! যাই হোক, দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা নাই।
*তীব্র সমালোচনা যেটা নিয়া হোয়া উচিৎ তা হৈল মুক্তিচিন্তার মানুষগুলোর পাশে না দাঁড়ানো, একরকমের বৈধতাই দেওয়া যে ধর্মের বিরুদ্ধে লিখলে খুন জায়েজ আছে। এই ইস্যুতে শেখ হাসিনারে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিৎ।
শেষ অনুচ্ছেদ ঘুণপোকার আলোচ্য বিষয় না, লাইনে আসুন মৃষৎ
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমার মনে হয় আপনি পোষ্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়েন নি কিংবা আপনি আশা করেছেন সবাই সমান খারাপ এর চেয়ে সেনা শাসন ভালো টাইপের সিদ্ধান্তে লেখক পৌছাবেন। এই পোস্টে মহাজোট সরকারের সফলতা কিংবা ব্যর্থতার সাফাই গাওয়া হয়নি। আপনি যেমন ব্যর্থতার তালিকা নিয়ে এসেছন, অন্যজন হয়তো সফলতার তালিকা নিয়ে আসবে। রাজাকারের বিচার, সমুদ্রে বিজয়, ছিট মহলগুলো বাংলাদেশের মানচিত্রে অর্ন্তভূক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন, বিদুৎ উৎপাদন, তথ্য প্রযুক্তির ব্যপক প্রসার প্রভৃতি। আগেও বলেছি আমি সফলতা-ব্যর্থতার হিসেব কষতে যাইনি, লেখার মূল বক্তব্য ছিলো অপরিকল্পিত উন্নয়ন-আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ব্যর্থতা, মত প্রকাশের জন্য মানুষ খুনে সরকারের নীরবতা।
আপনি গোল্ড ফিশ মেমোরির বলেই বলতে পেরেছেন কোন সরকারের আমলে কিছু হয়নি। আপনি ভুলে গেছেন দেশ এক সময় বিদুৎ বিহীন খাম্বায় ভরে গিয়েছিলো, ঘন্টায় ঘন্টায় লোড়শেডিং ছিলো। বর্তমান বাংলাদেশে ঘন্টায় ঘন্টায় লোড়শেড়িং নেই। আপনি ভুলে গেছেন বিএনপি-জামাতের সরকার দেশে তথ্য প্রযুক্তি আসতে দেয়নি তথ্য প্রচার হয়ে যাবে, দেশের মানুষের চরিত্র খারাপ হয়ে যাবে বলে। আর আজ এই তথ্য প্রযুক্তি দিয়ে বাংলাদেশ কোথায় গিয়েছে? এখন সবকিছুতেই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। ঢাকা -চট্রগ্রামের মূল সড়ক চারলেন হওয়া, রেলপথ ডাবল লাইন হওয়া, জানজট নিরসনে উড়াল সেতু নির্মান প্রভৃতি বাংলাদেশের অগ্রসর কে প্রমাণ করে আর এ কাজগুলো মহাজোট সরকারের আমলেই হয়েছে। চোখটা আপনি খুলুন, সত্য সত্য বলিয়া স্বীকার করতে শিখুন। ধন্যবাদ
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
পরে তো বিএনপি জামাত কি ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিল? আর কুইক রেন্টালের বিদু্যতের কি বোঝাতে চাচ্ছেন? এই সরকারের সবচেয়ে বাজে দিক হল, এর মন্ত্রীদের লাগামহীন কথাবার্তা, যে লোকের অর্থনীতি সম্পর্কে ধারনা নেই, তাকে বানানো হয়েছে অর্থমন্ত্রী, আরেক মন্ত্রী তো দেশে কিছু হোলেই আইএসএস খুঁজে পান। রংপুরে জাপানি ভদ্রলোক খুন হওয়ার পর প্রধান মন্ত্রীর উপদেষ্টা যেভাবে তাকে আলু ব্যবসায়ী বানিয়ে দিলেন কি আর বলবো। আর রাপা প্লাজা ধ্বসের পর আমানপুরের সাক্ষাৎকারে, আমাদের নেত্রী যেভাবে জলজ্যান্ত মিথ্যা বলতে থাকেন, ভুল স্বীকার করার মধ্যে দোষের কিছু নেই। আর নোবেল প্রাপ্তির জন্য ইউনুস কে হেনস্থা করা আর কি বলবো,
আর সমুদ্র বিজয় নিয়ে যেভাবে বলেন, তাতে আমি ধারনা করেছিলাম, সচলায়তনে যারা লেখেন, তারা বেশ সচেতন হয়ে লেখালেখি করেন। কিন্তু আপনার যেভাবে তৃণমূল পর্যায়ের রাজনৈতিক কর্মীদের মত সেটা নিয়ে গর্ব করেন, তাহলে আমার বলার কিছু নেই। ক্ষমা করবেন, আপনাকে বোঝানোর সাধ্য আমার নেই
আপনে ভালু মন্তব্য করেন। কিপিটাপ।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ধুস, তাইলে তো পাকিস্তানই ভাল আছিল! এনিওয়ে, আপনার এই কনক্লুশনের কোন রেফারেন্স নাই? কোন রকম রেফারেন্স ছাড়া এত বড় সিদ্ধান্ত তো গ্রহণযোগ্য নয়। আর দুঃখিত, আপনার মত সাধারন মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে পারছি না, কারন সাধারন মানুষের ঘিলু বলতে কিছু নাই, হৃদয় বলতেও কিছু নাই, সুতরাং বিবেচনাবোধও শূন্যের কোঠায়।এ দেশে যারা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে, তাঁরা কেউ সাধারন মানুষ নয়, যাদের রক্ত পানি করা পরিশ্রমে একটি নিরন্ন দেশের মানুষ খাদ্যে স্বয়ম্ভরতা অর্জন করেছে, বিদেশ বিভূঁইয়ে প্রাণ বাজি রেখে যারা দেশের মুদ্রাভান্ডার সমৃদ্ধ করেছে, উদয়াস্ত পরিশ্রম করে যারা রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করে চলেছে, তাঁরা কেউই সাধারন মানুষ নয়। সাধারন মানুষেরা যথারীতি খাচ্ছে দাচ্ছে, আর ঝাঁকের কই ঝাকেই মিশে গিয়ে দেদার মাল কামাচ্ছে, কিংবা কামাতে না পেরে হতাশায় আচ্ছন্ন হচ্ছে এবং ভবিষ্যতের আশায় প্রহর গুনছে।
প্রশ্ন ফাঁস, শেয়ার বাজার, হলমার্ক, সাংবাদিক হত্যা, সাত খুন, এসব সত্য, তবে এমন নয় যে আগে এসবের প্রকোপ কম ছিল। তেমনি সত্য হল- অনাহারে মৃত্যুর ভীতি চিরতরে দূরীকরণ, অতি দরিদ্র জাতি থেকে মধ্যবিত্ত জাতিতে উত্তরন ও মেরুদণ্ডহীন ভিক্ষাবৃত্তির অবস্থান পরিত্যাগ করে মর্যাদাসম্পন্ন আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতির দ্বারোদঘাটন। প্রথম অনুষঙ্গগুলি সত্য বলে দ্বিতীয় অনুষঙ্গগুলো মিথ্যা হয়ে যায় না।
পাশাপাশি অবশ্য আর একটি অনুষঙ্গ আছে, বলা চলে একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধ জারি আছে। সেটা হল- এ দেশটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটুকু ধারন করে রাখবে, না কি পাকিস্তানী ভাবধারার পুনঃস্থাপনে সচেষ্ট থাকবে।
আপনি যে সকল অনুষঙ্গ উপস্থাপন করে আপনার মনোভাব ব্যক্ত করেছেন, প্রায়োরিটির দিক থেকে সেসব তৃতীয় সারিতে, যেগুলো প্রথম সারিতে, সেসবের মূল্যায়ন আগে হওয়া উচিৎ।
প্রতিবার যে ভারত থেকে ধার নেন, আর সেটাস সুদে আসলে ফেরত দেন, সেটা কি পাকিস্তান থেকে আসে?
একটা কথা বুঝি না, আওয়ামী বিরোধিতা করা মানেই স্বাধীনতা বিরোধী, আপনার যুক্তি দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। এই লেখায় তো কোথায় বলা হয়নি, পাকিস্তান আমলে আমরা ভালো ছিলাম। যদিও ভালোই থাকতাম, তাহলে আমারা যুদ্ধে গিয়েছিলাম কেন,
এই ৩০ লাখ শহীদের রক্ত কি বৃথা গেল? বরং আপনাদের ভারতমুখী নতজানু রাজনীতি এই সব শহীদের লজ্জা দেয়।
কয়দিন আগে যে ভারতে খেলতে গেলেন, শিক্ষা হয়নি তাদের আচরণ দেখে।
আর খাদ্যের স্বয়সম্পূর্ণ হওয়ার পিছনে সব সরকারের কম বেশি অবদান আছে।
এরা হচ্ছে, আপনারা যারা এই মহাজোটের এই সুবিধাভোগী, যারা মনেই করেন দেশটাকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি।
একটা কথা মাথায় রাখেন, পাকিস্তান আমাদের যেমন জন্মশত্রু, তেমনি ভারত আমাদের জাতিশত্রু
দুঃখিত, এটা শিশুতোষ ম্যাগাজিন নয়, একটু ম্যাচুরিটি অর্জন করে তারপর সচলে লেখালেখি করতে আসেন।
আহা চেতেন কেনু? উনি অনুভূতিতে আঘাত পাবেন।
উপরে অপু ভাই'র করা মন্তব্যখানা দেখে ইজি হন।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
তো ভাইজান ইসরায়েল এর কথা কি ভুলে যাবো? তারা তো ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু নাকি?
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
মাসুদ ভাই,
এরকম জিরাফ সাইজের লেখা হলে অরাজনৈতিক মানুষ 'না পড়ে' মন্তব্য করতেই পারে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আসল কথা ’আমরা পাপিস্তান আমলে বেশি ভালো ছিলাম’ বললেই এমন মহান অরাজনৈতিক মানুষেরা খুশি হয়। আসুন কেন পাকিস্তান ভেঙ্গে বাংলাদেশর জন্ম হলো এই দুক্কে কান্নাকাটি করি
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
লেখাটা ভালো হয়েছে। যে অসঙ্গতি আছে বলে মন্তব্যে বিতণ্ডা উঠেছে তার কোন কারনই খুজে পেলামনা। লেখক সুন্দর লিখেছেন।
সোহেল ইমাম
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
এবার প্রায় বছর খানেক পর লিখলেন মনে হয়.
গুডরিডস
পাঠ এবং প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ।
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
নতুন মন্তব্য করুন