এদেশে আন্দোলন শুরু হয় কিন্তু শেষ হওয়ার আগেই আন্দোলন ছিনতাই হয়ে যাওয়ার ঘটনা নতুন নয়, বহু পুরাতন। একমাত্র ব্যতিক্রম ৭১। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধ এই নেতৃত্বই শেষ করতে সক্ষম হয়, যদিও মাঝে ভাসানী থেকে শুরু করে চীনপন্থী উগ্র বাম মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে জাপ্টা-জাপ্টি করার চেষ্টা করে ব্যারথো হয় এবং চীনপন্থী নেতৃত্ব পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বণ করে চীন থেকে বিষ মেশানো ধানের পাতা এনে বাংলাদেশের মাটিতে ছড়ায়, যেহেতু মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগিই খালি পায়ে যুদ্ধ করে, যাতে এই বিষে পা কেটে তারা যুদ্ধ করতে না পারে- এটাই ছিল উদ্দেশ্য। বিরোধীতার জন্য, আন্দোলন ছিনতাইয়ের জন্য একাত্তরের নয় মাস এই চীনপন্থীরা যে কষ্ট করেছে তার অংশবিশেষও যদি স্বাধীনতার জন্য করতো তাহলে নয় মাসেরও কম সময়ে স্বাধীনতা আসতো হয়তো। সে ভিন্ন বিতরকো, কিন্তু একাত্তর পরবরতী কালে তারা বাংলাদেশে শুরু করে নতুন “সংগ্রাম”, তারা এই সংগ্রামে যুক্ত করে নিতে সক্ষম হয় পাকিস্তানপন্থী দেশজ শত্রুদেরও।৭১-এর ১৬ই ডিসেম্বর থেকেই তারা নিজেদের “মুক্তিযোদ্ধা” হিসেবে পরিচিত করাতে চায় এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (আজকের রূপসী বাংলা) থেকে বন্দুক হাতে বেরিয়ে আসে এই ষোড়শ বাহিনী। তাদের নেতারা তখনও গোপনে ভুট্টোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যাচ্ছেন, হক-তোয়াহা ভুট্টোকে চিঠি দিয়ে এদেশকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত কনফেডারেশনের নামে। ভাসানী মাওলানা ভুট্টোকে চিঠি দিয়ে জানাচ্ছেন, এদেশে খাবার নেই, শেখ মুজিব ব্যারথো দেশ চালাতে।নালিশ জানানোর মোক্ষম জায়গাই বটে!!!!
মজার ব্যাপার হলো গিয়ে, ৭১ থেকে ৭৫, এই চীনা প্রতিবিপ্লবীরাই বঙ্গবনন্ধুর সরকারকে ঘরে-বাইরে, ভাতে-পানিতে মারার সরবাত্মক সংগ্রাম চালিয়েছে, তাদের সঙ্গে জুটেছে পাকিস্তানপন্থী, স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার, ধরমোপন্থী এবং অবশ্যই পাকিস্তান ফেরত সেনা করমোকরতা, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের নামে যারা “সময়ের প্রয়োজন” মিটিয়েছে সেইসব লুনাটিক “মুক্তিযোদ্ধা সেনাপতিরাও”।দলটি তখন বেশ ভারি। আর প্রথমবার ক্ষমতার সাধ পেয়ে আওয়ামী লীগ তখন দিশেহারা, যদিও বঙ্গবন্ধু বিপদ টের পেয়ে, সবদল মিলে জাতীয় সরকার গঠন করার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন কিন্তু ততোদিনে দেরি হয়ে গিয়েছে ঢের।তারপরের ইতিহাসতো জানাশোনা কিন্তু এই ইতিহাসের লাইনে লাইনে অক্ষরে অক্ষরে খোদাই করা চীনা বামদের নোংরামি, ইতরামি আর দেশবিরোধীতার ইতিহাস, কারণ ওরা দেশ চায়নি, স্বাধীনতা চায়নি, চেয়েছিল ক্ষমতা। যে কারণে জিয়াউর রহমানের রাজসভায় চীনাপন্থীদের জয়জয়কার। এনায়েতুল্লাহ্ খানের মতো বুরজোয়া-বাম, মান্নান ভূঁইয়ার মতো বকেয়া-বাম আর বিপ্লবের বাণী দিয়ে পূর্বাণী হোটেলে বসে ঠান্ডা বীয়র পানকারীদের দিয়ে জিয়া তখন প্রসব করে চলেছেন একের পর এক অর্ডিনেন্স।সমাজতন্ত্রের গল্প শুনিয়ে তারা হাসিমুখে জিয়াকে দিয়ে সংবিধান থেকে সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ খেদিয়ে দিয়েছে, সংবিধানে সংযোজিত হয়েছে বিসমিল্লাহ্।আর ততোদিনে আওয়ামী লীগের কপালে এঁকে দিয়েছে ধর্মনিরপেক্ষতার রাজটিকা, এই টিকা তার প্রাপ্য কিনা সে বিচার না করেই।
কিন্তু চীনারা বুঝতে পারেনি, তাদের কাটা খালেও কুমির প্রবেশ করেছে, যে কুমিরকে তারাই প্রবেশাধিকার দিয়েছে, দিয়েছে রাজনৈতিক গুরুত্ব। যদিও তাতে এদের কিছু যায়-আসে না।তারা ক্ষমতার খুদকুড়ো পেলেই খুশি।জেনারেল জিয়া যখন জাঁকিয়ে বসেছে তখন তারা বুঝতে পেরেছে যে, একে দিয়েও হচ্ছে না। কিন্তু হাতের কাছে মোক্ষম কেউ নেই, তাই জিয়া যখন খুন হন তখন চীনারা কিন্তু রাস্তায় নামেনি কেউ। শেখ মুজিব হত্যার পর বাংলাদেশে কোনো পাতাও নড়েনি বলে আজকে আমরা বহু তত্ত্ব শুনি কিন্তু জিয়া মরার পর কে প্রতিবাদ করেছিল সে প্রশ্ন তোলা আবার নিশ্চিত ভাবেই বারণ। আচ্ছা নাইবা তুললাম, জিয়ার পর এরশাদ, এরশাদও কিন্তু এই চীনাদের ফেলে দেননি। এতোদিনে বাংলাদেশে এই চীনারা আন্দোলন-ছিনতাইকারী, ষড়যন্ত্রকারী ও সমাজতন্ত্রের নামে বৈজ্ঞানিক ধর্মের ফেরিওয়ালা হিসেবে বেশ প্রতিষ্ঠিত, সুতরাং এরশাদের কাছেও এরা বেশ কদর পেয়েছেন। মজার ব্যাপার হলো, এদের এক ও একমাত্র শত্রু হলো আওয়ামী লীগ। এই রাগ সেই ৫২ থেকেই পুষে আসছে ওরা, একাত্তরে এসে সেই রাগ বদলে যায় প্রতিহিংসায়, রীরংসায়। ৯০-এর আন্দোলনে এরা দূরে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখেছে কিন্তু ৯১-এর খালেদা সরকারে কিন্তু আবার ঠিকই জায়গা করে নিয়েছিল এরা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলেই এদের বিপ্লবী চেতনা চাগাড় দিয়ে ওঠে, তারা রাস্তায় নামে, কখনও নিজেদের চেহারায়, কখনও তারা ধার নেয় জামায়াতি মুখোশ। তারা বাংলাদেশে রাজনীতির ভেনিস উৎসব শুরু করে তখন, নিজেদের চেহারা ঢেকে কুকর্মকে তারা অন্যের নামে চালাতে এরা যথেষ্ট সিদ্ধহস্ত। খালেদা-নিজামী সরকারের আমলে সারা দেশব্যাপী বোমা হামলা হয়, আদালতের এজলাশে বিচারককে টেনে নামিয়ে হত্যা করা হয়, বাংলা ভাই নামের নতুন বিপ্লবীর জন্ম হয়, শেখ হাসিনাকে শেষ করার জন্য ২১শে আগস্ট হয় – এরা চুপ থাকে। কিন্তু শেখ হাসিনার শাসনামলে কোনো মশা ভুল করে “বাতকম্ম” করলে এরা সরকার ফেলে দেয়ার জন্য রাস্তায় নামে, রাস্তায় নামিয়ে দেয় তাদের সেই পুরোনো মিত্র স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মব্যবসায়ীদের।
শাহবাগে যখন তরুণরা যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে আন্দোলন শুরু হয় তখন এরাও ধূর্ত শেয়ালের মতো বাঘের ছাল পড়ে ঢুকে পড়ে আন্দোলনের ভেতরে। মিন মিন করে বলতে শুরু করে, যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সঙ্গে হ্যান দাবি, ত্যান দাবি যোগ করতে। কিন্তু শাহবাগ বলে, না তারা বাংলা পরীক্ষার সময় বাংলা পরীক্ষা দেয়, অংক নিয়ে ভাবেও না। তখন তারা চুপ মেরে যায় বাধ্য হয়েই কিন্তু ক্রমশঃ তারা স্বরূপে ফিরতে থাকে, তারা শাহবাগকে সরকারের পেছনে আগুন ধরানোর সল্তে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ধান্দা করে। তারা গোপনে গোপনে বৈঠক করে, অর্থ খরচ করে লোক নিয়োগ করে প্রচারণা চালাতে শুরু করে, শাহবাগের আন্দোলন সরকারের পকেটে চলে গেছে, তারা সরকারকে বাঁচানোর কাজ করছে, যেহেতু আওয়ামী লীগ তাদের পছন্দের সরকার নয় সেহেতু এই সরকারের বিরুদ্ধে শাহবাগকে কাজে লাগাতেই হবে। ৯২-তে তারা জাহানারা ইমামের সঙ্গে ছিল না কারণ তখন তাদের পেয়ারের সরকার ক্ষমতায় ছিল। ২০০১-এ খালেদা-নিজামীর সরকারের বিরুদ্ধে তারা কথা বলেনি, তখন যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা দেখে তাদের দেশপ্রেমের চুলা বরফ হয়ে ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ যখন যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু করেছে তখন আবার তাদের চুলায় ভোলা কামারের হাঁপড় ফোঁপাতে শুরু করেছে, তারা অতিবিপ্লবীর বেশে দিনরাত শাহবাগে পড়ে আছে, কখন কীভাবে তারা শাহবাগকে বহুধা করতে পারবে সেই নক্শা নিয়ে তারা এখন নিজেরাই মাইক ভাড়া করে ভীড়ের মধ্যে বসে থাকে, আচমকা শ্লোগান দিয়ে চমকে দেয় সবাইকে। সাহস নেই নিজেদের জবানকে জনতার সামনে প্রতিষ্ঠা করার, গোপনে তারা মিটিং করে প্রতিবিপ্লবের।বিপ্লবের কফিনে পেরেক ঠোকায় তারা একাত্তর থেকে হাত পাকিয়ে এসেছে, সেই অভিজ্ঞতা এখন ২০১৩-তেও শাহবাগে কাজে লাগাতে চাইছে। নিজেদের আলাদা মিছিল দরকার হয় ওদের, আন্দোলনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে হঠাৎ ওরা বলে, “আমাগো বিজয়ী ঘোষণা না করলে আমরা খেলুম না”, ওরা যেহেতু কোনো দিনও কোনো আন্দোলনে জয়ী হয়নি সেহেতু ওরা আন্দোলনকে ছিনতাই করে ষড়যন্ত্রে জয়ী হতে চাইছে আজও, ৭৫-এর মতো।
শাহবাগ আন্দোলন প্রতিবিপ্লব নয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতার দ্বিতীয় পরযায়। এখানে অতি-বিপ্লবী হওয়ার সুযোগ নেই, নেই সহিংস হওয়ারও। কারণ, বাঙালি ধৈরযো হারিয়েছে বহু রাজনৈতিক বিপরযয়ে, এখন শাহবাগ যদি নতুন বিপরযয় তৈরি করে তবে এদেশে যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তিতো দূরের কথা, তারা অবিলম্বে বেরিয়ে এসে এই শাহবাগকে ওরা বানাবে কারবালা, যেখানে ওরা হাসান-হোসেনের বৈধ দাবিকে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেবে কেটে কুচিকুচি করে। সন্দেহ হয়, এই শেষোক্ত চাওয়াটিকে সত্যে পরিণত করার দায়িত্ব পেয়েছে এই প্রতিবিপ্লবীর দল, তাদের তত্ত্বগুরুরা নিশ্চিত ভাবেই কোথাও থেকে অর্থলোভ পেয়েছে কিংবা পাচ্ছে কড়কড়ে নোট। সুতরাং, আন্দোলন ছিনতাই করো, বানচাল করে দাও ঐক্য এবং থামিয়ে দাও বিচার প্রক্রিয়া। আরো সন্দেহ করি, বেগম জিয়া ও তার পারিষদবর্গ যে গণতন্ত্র্র মঞ্চের কথা কিছুদিন আগে আমাদের শুনিয়েছিলেন, আজকে যারা পাল্টা মঞ্চ খোলার জন্য মিছিল করলো তারা সেই কথাই বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন। অসুবিধা নেই, শত্রুপক্ষ যতো শক্তিশালী হয় প্রতিযোগিতা ততোই তীব্র হয়। লড়াই সমানে সমান হওয়াই ভালো, নইলে জিতে কিংবা হেরেও মজা নেই।ওরা তিয়েনামেন স্কোয়ারে বিপ্লবকে গুলি করে হত্যা করে আজ শাহবাগে এসেছে আন্দোলনের পিঠে ছোরা মারতে।
মন্তব্য
জামাতিরা আসলে চীনা বাম?
শাহবাগ, বাংলাদেশী চীনা বাম, তিয়ানান্মেন স্কয়ার, আর চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্কটা ঠিক পরিস্কার হল না।
জাহানারা ইমামের সাথে বাম রা ছিল না ?
আমার তো মনে হয় প্রথম তিনজনের মধ্যেই একজন বাম ছিল
জানি না, গ্যালারীতে বসলাম আপা ।
আওয়ামী মুখপাত্রের লিখিত বয়ান মনে হল। অনেক কিছুই পরিস্কার বুজা গেল না।
হাসতেই আছি । আওয়ামী লীগ একলাই একশ !! দুনিয়ার সব কাম আওয়ামী লীগই করছে !!
কারা এই গোপন বৈঠককারী? "তারা" শব্দটি খুবই ধোঁয়াশা। সবাই যেহেতু এই আন্দোলনের সাফল্য কামনা করে, সেখানে এই আন্দোলন কেউ স্যাবোটাজ করতে চাচ্ছে এমন কোন খবর কেউ পেলে সেটা পরিস্কারভাবেই উল্লেখ করা উচিত। এখানে লুকোছাপার কিছুতো নেই। মাসুদা ভাট্টি, এই "তাঁরা" কারা?
এই দাবী বিএনপি,বাঁশেরকেল্লা, আমারদেশ এবং অনলাইন অফলাইনের ছাগুকুল ছাড়া কেউ করেছে এবং করছে বলেতো শুনিনি। আন্দোলনকর্মীরা (যে প্ল্যাটফর্মেরই হোক) এখনও বাংলা পরীক্ষার দিন বাংলা পরীক্ষাই দিতে চাচ্ছে। দাবী সেই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি এবং জামাত শিবিরের রাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করা, ট্রাইব্যুনালকে আরও শক্তিশালী করা এই। "হ্যান দাবী ত্যান দাবী" কে কোথায় যোগ করলো?
অন্য অনেকের মতো আমিও মনে করছি মাসুদা ভাট্টি সম্ভবত শহীদ রুমি স্কোয়াডের অনশন কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করেছেন (স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তাই এই ধারণা করছি, ধারণা ভুলও হতে পারে); এদের সাথে হক-তোয়াহার সম্পর্ক ঠিক কোন জায়গায়? যে ছয়জন (আজ আরও দুজন যোগ দিয়েছেন) এই অনশন করছে তাঁরা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কালীন হক-তোয়াহার মতো একই মিশন নিয়ে নেমেছে? কড়কড়ে নোট পেয়ে "আন্দোলন ছিনতাই, ঐক্য বানচাল" করতে নেমেছে? এটা একটু কষ্ট কল্পনা না?
শাহবাগ নিয়ে কারও কোন প্রশ্ন থাকারই প্রশ্ন ওঠে না, কিন্তু গণজাগরণ মঞ্চের সব কর্মসূচি কি সবার মনঃপূত হয়েছিল? যেদিন মঞ্চ থেকে ঘোষণা এলো আন্দোলন ৩টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চলবে, আমি ধারণা করছি সেদিন ওই ঘোষণা/কর্মসূচি আপনিও মেনে নিতে পারেননি। এবং আপনি নিশ্চয়ই তার প্রতিবাদও করেছিলেন? মানে কি দাঁড়ালো? আপনি সেদিন আন্দোলন বানচাল করতে চেয়েছিলেন? ঐক্য নষ্ট করতে চেয়েছিলেন? নিশ্চয়ই না।
আর শহীদ রুমী স্কোয়াড কিন্তু স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে যে তাদের কর্মসূচি কোনভাবেই গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা নয়, এটা একটা সম্পুরক কর্মসূচি। তাঁরা তাদেরকে আলাদা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনা না করারও অনুরোধ করেছে।
সৈকত ঘোষ
মস্কো,রাশিয়া
এই সংক্রান্ত শহীদ রুমী স্কোয়াডের প্রেস রিলিজটি তুলে দিচ্ছি তাঁদের ফেসবুক পেজ থেকে(অনুমতি নিতে হতো কিনা জানিনা, নিইনি কারণ ওটা পাবলিক করে দেয়া)
প্রেস রিলিজ
শহীদ রুমী স্কোয়াড এর জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবীতে আমরণ অনশনের ১৫ ঘন্টা
জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবীতে ২৬ মার্চ রাত ১০ টা ৩০ মিনিটে জাতীয় জাদুঘরের সামনে শহীদ রুমী স্কোয়াডের ডাকে শুরু হওয়া আমরণ অনশন কর্মসূচি পার করলো এর ১৫ তম ঘন্টা। গণজাগরণ মঞ্চের ২১ ফেব্রুয়ারির মহাসমাবেশ থেকে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামাত-শিবিরের নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য ২৬ মার্চ পর্যন্ত যে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিলো, সরকার সেটি না মানায়, এবং এখনো পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ায়, শহীদ রুমী স্কোয়াডের সাত তরুণ এই অনশন কর্মসূচীর সূচনা করেন। ২৭ মার্চ সকালে স্বতপ্রণোদিত হয়ে এই অনশনে যোগ দেন আরো দুজন; অনড় এই দাবীতে অনশনে যোগদানকারীর সংখ্যা এখন মোট নয় জন।
সকাল দশটায় অনশনরত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাত তরুণের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা স্কুল শিক্ষক মোহাম্মদ আলিফ প্রধান এবং সাফি নামের একজন ব্লগার। ২৬ মার্চ রাতে এই কর্মসূচির সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে সংহতি প্রকাশ করেন শহীদ জননী জাহানারা ইমাম স্কোয়াড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার মঞ্চ এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন বোধন। এছাড়াও সকাল থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ সশরিরে এসে জানিয়েছেন তাদের সমর্থনের কথা। শহীদ রুমী স্কোয়াডের পক্ষ থেকে বিকেল পাঁচটায় সবাইকে সংহতির আহ্বান জানানো হচ্ছে; এই কর্মসূচির সঙ্গে যে যেভাবে তাদের সমর্থন জানাতে চান, তাদের জন্য উন্মুক্ত এই আহ্বান। এছাড়াও শাহবাগের আন্দোলনকারীদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি হিসেবে সাড়ে ছয়টায় মশাল মিছিলে যোগ দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
আমরণ অনশনের ঘোষণা দেওয়ার সময় থেকেই শহীদ রুমী স্কোয়াড বিষ্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছে, অনেকেই এই কর্মসূচিকে গণজাগরণ মঞ্চের বিপক্ষে দাঁড় করাতে চাইছেন। তাদের সবার প্রতি স্কোয়াডের বক্তব্য হলো, ৫ ফেব্রুয়ারি, শাহবাগে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর সময় থেকেই অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে মূলমঞ্চের প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী তরুণ-তরুণীদের এই দলটি। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনকে বেগবান করার স্বার্থে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচির সঙ্গে সম্পূরক হিসেবে নিজেদের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয় দলটি; যার মধ্যে প্রজন্ম চত্বরে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের প্রতিকৃতি স্থাপন ছিলো অন্যতম। গণজাগরণ আন্দোলনকে সেসময় বেগবান করার পেছনে প্রতিকৃতিটির অবদান যে অনেকখানি, এ ব্যাপারে এখন সন্দেহের অবকাশ নেই কারো। শহীদ রুমী স্কোয়াডের উদ্যোগ এবং দেশ-বিদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের সবধরণের সহযোগীতার ফলেই প্রতিকৃতিটি স্থাপন সম্ভব হয়েছিলো, এবং এটিকে চত্বরে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগও এরই মধ্যে নিয়েছে এই দলটি।
স্কোয়াডের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে জানানো হচ্ছে, আল্টিমেটাম না মানায় পরবর্তী সময়ের জন্য গণজাগরণ মঞ্চের তরফ থেকে যে সকল কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা এবং সমর্থন দলটির আছে। বরাবরের মতোই প্রতিটি কর্মসূচিতে স্কোয়াডের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ থাকবে সক্রিয়ভাবেই।
আর তাই, আমরণ অনশনের যে কর্মসূচি দলটির পক্ষ থেকে পালন করা হচ্ছে, সেটি যে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচিগুলোর সম্পূরক, সেটিও জানানো হচ্ছে স্পষ্টভাবে। কোনভাবেই তাই এই কমূসূচি বা এই সংগঠনটিকে গণজাগরণমঞ্চের থেকে আলাদা কোন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে না দেখার জন্যও অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
যুদ্ধাপরাধী সংগঠন এবং তাদের সহযোগী হিসেবে জামাত-শিবিরের রাজনীতি স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। আমরা জানি, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে সেটি যে কোন মুহুর্তে, যে কোন উপায়েই সম্ভব। আর তাই আমাদের এই প্রাণের দাবীর পক্ষে আমসাদের অবস্থান অনড়, এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে অহিংস উপায়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের কঠোর প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমরা বেছে নিয়েছি আমরণ অনশনকেই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এটি আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং আমাদের আশা এতে সবার সমর্থন আমরা পাবোই।
আন্দোলনের এই পর্যায়ে এসে তাই আমরা আজ বলতে চাই, বিজয়, নাহলে মৃত্যু- একমাত্র এই এই পথেই চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আর তাই অহিংস উপায়েই দাবী আদায়ের সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থান নিয়ে আজ আমরা রাজপথে; আশা আছে বিজয়ের, তবে মৃত্যুর ভয়ে এখন আর ভীত নই আমরা কেউ।
সেঁজুতি শোণিমা নদী
মুখপাত্র, শহীদ রুমী স্কোয়াড
তারিখ: ২৭ মার্চ, ২০১৩
যোগাযোগ-০১৭৬২১৫৮৯১৯
উপরে মন্তব্য আকারে শহীদ রুমী স্কোয়াডের প্রেস রিলিজটি (অনুমতি ছাড়াই) উল্লেখ করেছি।
সৈকত
মস্ক,রাশিয়া।
শহীদ রুমী স্কোয়াড কিন্তু স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছে যে তাদের কর্মসূচি কোনভাবেই গণজাগরণ মঞ্চের বিরোধিতা নয়, এটা একটা সম্পুরক কর্মসূচি। তাঁরা তাদেরকে আলাদা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনা না করারও অনুরোধ করেছে।
লেখিকা বলেছেন,
বাই দা ওয়ে আপনাকে কত দিলে অনশন করবেন?
জানিনা পার্থক্যটা কি। কেউ নাস্তিক বলে বিভেদ করতে চাইছে কেউ বাম-বঙ্গবন্ধুর খুনির অমুক তমুক ইত্যাদি বলে করছে। আওয়ামীলীগ এর আপষের কারনে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের আন্দোলন এখন শুধু জামাত কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। তবু হোক। একটা একটা হলেও হোক। কিন্তু সহযোদ্ধার ইতিহাস এখানে টেনে আনা কি এতই জরুরী ?
যারা সুবিধাবাদী, স্বার্থান্ধ তারা নানা ভাবে নানা কিছু ব্যবহার করবেই, কিন্তু যতক্ষন আমরা নিজেদের কাছে সৎ থাকি, যতক্ষন চেতনায় জ্বলে দেশপ্রেম কোন ষড়যন্ত্রই কোন কিছু থামাতে পারবেনা।
হাজারো ষড়যন্ত্র, দীর্ঘ সামরিক শাষন, ইতিহাস বিকৃতির পরও কিন্তু আমদের চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ সমুজ্বল সুতরাং ঘামের ফোটায় কুমির না দেখে আমরা বরং বিশ্বাষ রাখি সহযোদ্ধার উদ্দ্যেশ্যে
চাইনিজ বিষ মাখানো ধানের ব্যাপারটা ভাট্টি আপা আরেকটু বিধৃত করলে উপকৃত হইতাম
কি একখান লেখা পড়লাম! মাথার মধ্যে তো সব কিছু প্যাঁচ খাইয়া গেল! তিয়েনানমেন- বিষওয়ালা চাইনিজ ঘাস-এনায়েতুল্লাহ খান-বুর্যোয়া বিপ্লবী-ভাসানী-চীনাবাম-বঙ্গবন্ধু-শাহবাগ সব মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে.........অসাধারণ!!!! ফেসবুকে দেখলাম অমি পিয়াল আর কে কে যেন এই পোস্ট শেয়ার করেছেন। মারহাবা! মারহাবা!! এই বাংলাদ্যাশে যে এত যে সমস্যা, বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্বজিৎ পর্যন্ত সকল হত্যাকান্ড, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, যুদ্ধাপরাধ, পদ্মা সেতু, আবুল, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি, পানি-গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যা ইত্যাদি সকল সমস্যার মূলে আছে এই চীনা বাম গোষ্ঠি! মারহাবা! মারহাবা!!
বাই দ্য ওয়ে, এই লেখক কি একবার প্রথম আলোর কোন একটা পুরষ্কার পেয়েছিলেন?
প্রায় বছর তিনেক পর লগইন করলাম।
আপনার লেখার মূল সুরের প্রতিবাদ না করলে বিবেকের তাড়নায় ভুগবো-সেজন্য।
আপনি যদি শহীদ রুমি স্কোয়াডের অনশন কর্মসূচির দিকে ইঙ্গিত করে থাকেন, তাহলে ধোঁয়াশা না রেখে সরাসরি তা পরিষ্কার করে বলার সৎসাহস দেখাবেন বলে আশা প্রকাশ করি।
--- --- --- --- --- --- --- --- --- --- --- ---
মন, সহজে কি সই হবা?
চিরদিন ইচ্ছা মনে আল ডাঙ্গায়ে ঘাস খাবা।
এতসব আপনি কোত্থেকে জানলেন? রেফারেন্স কোথায়? মুক্তিযুদ্ধ করেছে বাংলার সাধারন জনগন। তার মধ্যে বাম, ডান,(আও য়ামী লীগ) সবাই ছিল।
বাম রাজনীতিকে নস্যাৎ করার কোন কারন নেই।
কমেন্টস সেকশনগুলো ডাইরেক্ট গণতন্ত্রের মতই। আজগুবি থিওরি (বাম ইজ দ্যা নিউ ডান ইত্যাদি) আর 'বিপ্লবী'র আগে প্রতি / অতি / মতি / গতি / ক্ষতি বসায় উচ্চমার্গীয় প্যাচাল ধোপে টেকে না। কলাগাছ দাড় করালেই ভোট আসে না। যারা আজকে নন্দিত ব্লগার/লেখক - সত্য লিখেছেন বলেই তাদের এত সমাদর।
এটাই কমেন্টসের শক্তি। সত্যসন্ধানী আম-মানুষের শক্তি।
নতুন মন্তব্য করুন