রুশ দেশের বিশেষ করে সোভিয়েত যুগের রাজনৈতিক কৌতুক প্রসৃদ্ধ, বিশেষ করে বাম-যুগের রাজনীতি নিয়ে যে দুঃখ মেশানো হাসাহাসি তা পরবর্তী যুগে যে সাহিত্যকীর্তি হয়ে উঠতে পারে তা নিয়ে হয়তো অনেকেই ভাবেননি।
সম্প্রতি এককালে বিলেতের বামপন্থী দৈনিক নিউ স্টেটসম্যানের রাজনৈতিক স্যাটায়ারের লেখক বেন লিউইস সেই সুদূর বাম-অতীত খুঁড়ে হাজির করেছেন তার “হ্যামার এ্যান্ড টিকল” গ্রন্থ। যেখানে তিনি হাতুড়ি ও কাস্তের নীচে থাকা গোটা পূর্ব ইউরোপ থেকে হাজারও রাজনৈতিক কৌতুক উপস্থাপন করেছেন।
সচলায়তনের পাঠক মাত্রেই সংসারে এক সন্নাসী নামক ব্লগবান্ধবের ছোট্ট “ছোট্ট গোল রুটি” সিরিজটি পাঠের পর বুঝতে পেরেছেন যে, সোভিয়েত রাজনীতি নিয়ে সেই অসম্ভব কড়াকড়ির যুগেও মানুষ কিন্তু নিজেকে এবং রাজনীতি নিয়ে উপহাস করতে ছাড়েনি। সন্নাসীর কমণ্ডলু থেকে জল চুরি করার অভিপ্রায় নেই, তাই তার সবিনয় অনুমতি চেয়ে, বেন লিউইস-এ “হাঁতুড়ি ও কাতুকুতু” থেকে কয়েকটি অনুবাদ-প্রচেষ্টা:
১. রুশ বিপ্লবের প্রথম দিককার কথা। এক কৃষক রমণী একদিন মস্কো চিড়িয়াখানা দেখতে এলেন। কিছুক্ষণ ঘোরাফেরার পর তিনি এলেন উঁট-এর খাঁচার সামনে। এসেই চিৎকার করে উঠলেন, “দ্যাখো দ্যাখো, বলশেভিকরা ঘোড়াটির কী হালটাই না করেছে”।
২. ১৯১৭ থেকে ১৯২১ সালের মধ্যে কোনও এক সময়ের ঘটনা। তখন রাষ্ট্রায়াত্ত্ব প্রতিষ্ঠানগুলির কোনও একটি পরিদর্শনে এসেছেন একজন সরকারী কর্মকর্তা। তিনি একজন শ্রমিককে প্রশ্ন করলেন,
“তুমি এখানে কী করো?”
শ্রমিকের উত্তর, “কিছু না”
কর্মকর্তা আরেকজন শ্রমিককে প্রশ্ন করলেন, “তুমি কী করো?”
উত্তর এলো, “কিছু না”।
কর্মকর্তা তার পরিদর্শন-নোট বইতে লিখলেন, “দ্বিতীয় শ্রমিককে অপ্রয়োজনীয় রকমের ডুপ্লিকেশনের জন্য অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হোক”।
৩. হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, চেকোস্লাভাকিয়া ও রোমানীয়রা একে অপরের কাছে যখন জানতে চান যে, রুশরা তাদের বন্ধুদের সঙ্গে কী ভাবে দ্যাখা করতে যায়?
সমস্বরে উত্তর আসে, কেন ট্যাঙ্কে চড়ে!!!
৪. ১৯৬৬ সালে সোভিয়েত পলিটব্যুরো সদস্যদের বয়সের গড় ছিল ৮১ বছর। ১৯৮১ সালে সদস্যদের বয়সের গড় ৭০ বছর। এখন বলুনতো, কার চল্লিশটি দাঁত এবং চারটি পা আছে?
একটি কুমিরের।
কিন্তু কার চারটি দাঁত এবং চল্লিশটি পা আছে?
দ্য সেন্ট্রাল কমিটি অব দি কম্যুনিস্ট পার্টি।
৫. গর্ভাচেভের আমলে যখন ভোদকা’র ওপর ব্যান আরোপ করা হয়েছিল তখনকার কথা। লম্বা লাইনে লোকজন ভোদ্কা ক্রয় করছে। কিন্তু দীর্ঘ লাইন একটুও এগুচ্ছে না। এক লোক ক্ষেপে গিয়ে বললো, তোমরা লাইনে দাঁড়াও আমি যাচ্ছি ক্রেমলিনে, গর্বাচেভকে হত্যা করে তবেই ফিরবো। বলেই হন্হনিয়ে চলে গেলো লাইন ছেড়ে।
ঘন্টাখানেক পর লোকটি ফিরে এলো, লাইন তখনও মাত্র কয়েক গজ এগিয়েছে। লোকটির বিমর্ষ মুখ দেখে লাইনে দাঁড়ানো তার সঙ্গীরা প্রশ্ন করলেন, কী হে গর্বাচেভকে হত্যা করতে পারলে?
নাহ্, সেখানে তো এখানকার চেয়েও দীর্ঘ লাইন।
মন্তব্য
শেষ টা জোস!!
তবে রাশিয়ায় কমিউনিজম থাকলেই মনে হয় ভাল হত। এইসব ব্যপার অবশ্য আমি বুঝিনা তেমন।
[][][][][][][][][][][][][][][][][][]
ওরে বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর,
এখনি, অন্ধ, বন্ধ, কোরো না পাখা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
সারা দুনিয়ায়র জন্যই তো এর চেয়ে ভালো কিছু আছে বলে মনে হয় না রে ভাই , আমার জন্য তো না -ই
---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
ফাটাফাটি হইছে! বিশেষ কইরা ৪ আর ৫।
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
“হাঁতুড়ি ও কাতুকুতু”! তোফা!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
প্রথম দুটো ছাড়া বাকিগুলো একটু ভিন্ন ফর্মে আছে বাংলাদেশ থেকে প্রকাশিত "সোভিয়েতস্কি কৌতুকভ"-এ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আপনার হাতুড়ির চন্দ্রবিন্দুটি আমাকে ভাবাচ্ছে।
চন্দ্রবিন্দুর অনধিকার প্রবেশ দেখতে পাচ্ছি সচলায়তনে। এমনকি "বিক্রি করে = বেচে" কথাটিও এই চন্দ্রবিন্দুর শিরস্ত্রাণ ধারণ করে "জীবিত থেকে = বেঁচে" হয়ে যাচ্ছে অনায়াসে। যেখানে সেখানে স্পাইডারম্যানের মতো অনায়াসে লাফিয়ে পড়ছে এই চন্দ্রবিন্দু। শফিক্রেহমানের মতো একেবারে দূর করে দেয়ার কথা বলছি না, তবে যেখানে থাকা প্রয়োজন, চন্দ্রবিন্দুকে সেখানেই রাখা উচিত বলে কেন যেন মনে হয়। এ প্রসঙ্গে আপনার কী ভাবনা ?
হাঁটুপানির জলদস্যু
হাতুড়ির মাথার চন্দ্রবিন্দু সহ পুরোটাই মজার
তোফা চীজ? আর এক নম্বরটা লাজওবাব। এখনো হাসি থামে নাই।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আশ্চর্য হাতুড়ির ওপর চন্দ্রবিন্দু খেয়াল করলেন আর লেখার শরীরে যে হাতুড়ি তাতে চন্দ্রবিন্দুর অনুপস্থিতি লক্ষ্য করলেন না!!!
এই চন্দ্রবিন্দু ইচ্ছাকৃত, তবে স্বীকার করছি, বানান-রীতি বা বানান সম্পর্কে আমার জ্ঞান সীমিত। যাহোক, আপনাদের ভালো লেগেছে, আমি আনন্দিত, অত্যন্ত আনন্দিত।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
প্রিয় হিমু, "শফিক্রেহমান" নামটির জন্য ধন্যবাদ। বাংলা বানানের অহেতুক পরিবর্তন করে বারোটা বাজানোর জন্য তার উপর বহুদিন ধরে মেজাজ খারাপ হয়ে আছে। আপনার আবিষ্কারটির জন্য একটু হলেও শান্তি পেলাম।
শুধু শিরোনাম পড়েই তো হেসে চলেছি...
নতুন মন্তব্য করুন