ফেসবুক-এ “আমার মনে কী আছে?” এই প্রশ্নের জবাবে লিখেছিলাম - ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি সে দেশে বুরখা ও চোখ-মুখ ঢাকা হিজাব নিষিদ্ধ করেছেন, খুব শীগ্গিরই আইন করে তা বন্ধ করা হবে। আজকে লন্ডন শহর গলছে, গরমে, এর মাঝে কালো বুরখায় আপাদমস্তক মোড়া মেয়েদেরকে দেখে আমার কষ্ট হচ্ছিলো খুব- ধর্ম মানুষকে এভাবে কেন বেঁধে রাখে? চেতনার বিকাশকেই কি ধর্ম এভাবে কালো কাপড়ে ঢেকে রাখে?
আলোচনাটি এই প্রশ্ন রেখেই শুরু করতে চাই। হিজাব বা বুরখা পরা নিয়ে বাদানুবাদ আছে, থাকাটাই স্বাভাবিক। ধর্মকে ডিফেন্ড করার জন্য মানুষ অনেক কু-যুক্তিও হাজির করবেন। ব্যক্তি স্বাধীনতার প্রশ্নে আমি মানতে রাজি যে, কেউ ইচ্ছে করলে হিজাব বা বুরখা পরবেন, তার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে কেন রাষ্ট্র? কিন্তু একথাও তো ঠিক যে, পৃথিবীর প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপেই মানুষ গিলেছে, ইসলাম-এর রাজনৈতিক রূপতো সেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মানুষকে হাজারো নিয়মের নিগড়ে বেঁধে রেখেছে, যদিও দোহাই পাড়া হয়েছে পরকালে অপার শান্তির। রক্তপাত, ভয়-ভীতি আর রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে যদি ধর্ম বিস্তার হয়ে থাকে তাহলে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপকে কেন “ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ” বলে বলা হবে? আফগানিস্তানে অমুসলিম বা হিটলারের আমলে ইহুদিদের বিশেষ চিহ্ন ধারণ করার রাষ্ট্রীয় নির্দেশ ছিলো কিন্তু ধর্ম দিয়ে আগাপাশতলা মুড়ে নিজেকে আলাদা করার এই প্রবণতাকে সুস্থ বলে মানতে পারি না। সবচেয়ে বড় কথা হলো, সভ্যতা এতোটা এগিয়েছে যে, নারী নিজেকে “খোলা খাবার” আর পুরুষকে “মাছি” ভেবে কাপড়ের জালি দিয়ে ঢেকে রাখার এই চিন্তাকে হাস্যকর মনে হয়।
একজন মানুষের সঙ্গে আপনি বসে কাজ করছেন, তার সঙ্গে গল্প করছেন অথচ তাকে আপনি কখনও দেখেননি। তার উপস্থিতি আছে কিন্তু তিনি নেই, ভাষার সঙ্গে বাচনভঙ্গী ও শরীরের ভাষা, পোশাক-আশাক ইত্যাদি বিষয়গুলি জড়িত, সব মিলিয়ে একজন সম্পূর্ণ মানুষকে জানা যায়। কিন্তু যে মানুষ পা থেকে মাথা পর্যন্ত কালো কাপড়ে মোড়া তাকে জানাতো দূরের কথা, তার সম্পর্কে ধারণাও তৈরি হবে কি? হয়তো বলবেন, ধারণা তৈরি হওয়ার কী দরকার?
আমার ভাবনার জবাবে একজন বলেছেন, ফ্রান্সের রাস্তায় নাকি নগ্ন হয়ে চলাফেরার অধিকার আছে! তিনি সারকোজির এই ঘোষণাকে স্ট্যান্টবাজি বলেছেন, কী আর বলবো? কিছুই বলার নেই। প্রকৃতির সন্তান বলে নিজেদের নগ্ন করে রাখায় বিশ্বাসীদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা আছে, সেখানে গিয়ে তারা দিগম্বর হয়ে প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যেতেই পারেন কিন্তু জনগণের মাঝে নগ্ন হয়ে নামলে তাকে নিরাপত্তাকর্মীরা হয় হাজতে, নয় মানসিক চিকিৎসালয়ে নিয়ে যান। এইতো সেদিন, ফ্রেন্স ওপেন টেনিস চলাকালে এমন একজন হঠাৎ নগ্ন হয়ে নেমে গেলেন ময়দানে, ব্যস তাকে ধরে-বেঁধে সরিয়ে নেয়া হলো, নেয়ার সময় তাকে একটা কাপড় দিয়ে ঢাকাও হলো। আসলে এই সব যুক্তি দিয়ে কী হবে? এই উপলব্ধি মনে-মননে তৈরি হতে হয়, কারো মগজে ঢুকিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। হ্যাঁ, মগজে ঢুকিয়ে দেয়াও সম্ভব, যখন মানুষ শিশু থাকে, হিজাব বা বুরখার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে বাচ্চা মেয়েদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি যে, তাদেরকে শেখানো হয়, মাথা না ঢাকলে লম্বা চুল পরকালে সাপ হয়ে তাদেরকে দংশন করবে। কী ভয়ঙ্কর কথা, একটি শিশু বেড়ে উঠছে তার চুলকে ভয় পেয়ে। নিজের শরীরকে এভাবে ভয় পেলে তার বেড়ে ওঠাটাই যে অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে? সে শিখছে, বাইরে সমস্ত পুরুষরা ঘুরে বেড়াচ্ছে তাকে ধর্ষণ করার জন্য, সে জানছে সে একটি লোভনীয় ‘ডিস’, তাকে তাই ঢেকে-ঢুকে থাকতে হবে, নইলে যে কেউ তাকে খেয়ে ফেলবে। বাচ্চা বাচ্চা এই মেয়েগুলোর জন্য কষ্ট হয় খুব, তারা যে ইচ্ছে করে হিজাব পড়ছে তা নয়, তাদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে। এই গরমে, প্রচণ্ড গরমে হিজাবের নীচে ঘামাচিতে মেয়েটি কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু কিছুই করার নেই। ছোট্ট বেলায় পড়েছিলাম, ইঁট দিয়ে ঘাস ঢেকে রাখলে দিনে দিনে তা হলুদ হয়ে মারা যায়, আর মানুষের শরীর যদি এভাবে সূর্যালোক-বঞ্চিত থাকে তাহলে তাও কি ফ্যাকাসে হয়ে ধীরে ধীরে নানা চর্মরোগের জন্য উপযুক্ত ক্ষেত্র হবে না? আচ্ছা শরীরের কথা বাদ দিই, মানুষের মন? শরীর যার কাপড়ের কারাগারে বন্দী, মন-তো তার কতোটা উদার হবে? এই মেয়ে শিশুটি বড় হয়ে যদি বলে সে স্বেচ্ছায় বুরখাকে বেছে নিয়েছে তাহলে তার চেয়ে বড় মিথ্যে আর দুনিয়াতে আছে কি? প্রশ্ন হলো, পৃথিবীতে ক’জন নারী স্বেচ্ছায় বুরখা পরেন আর ক’জন বাধ্য হয়ে তার খতিয়ান না থাকলেও আশেপাশের বা পরিচিতদের কথা বলতে পারি, তারা কেউই স্বেচ্ছায় এই পোশাকের কারাগার বেছে নেননি, ধর্ম দিয়ে তাদেরকে বাধ্য করা হয়েছে।
মন্তব্য
অসাধারণ মাসুদা আপা, আপনার সাথে একমত, এ বিষয়ে একদিন লেখা দিব, সত্য ঘটনা অবলম্বনে, তাহলে বুঝবেন, এই ঘোমটার নিচে মানুষ কতপ্রকারের খেমটা নাচে এবং কতটা মানসিক প্রতিবন্ধি হয়ে দাড়ায়
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
কীভাবে নামাজ পড়তে হয় বা ওযু করতে হয় এ নিয়ে যেমন পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক আছে বোরখা পড়ার ব্যাপারেও আছে। যেমন মুখমণ্ডল ঢাকা থাকবে না মুখমণ্ডল খোলা থাকবে। এ বিষয়ে আমি যেসব পণ্ডিতগণ মুখমণ্ডল খোলা রাখার পক্ষে তাদের সমর্থক। এবং আমি পর্দা করার পক্ষে। আবার যেসব ভুল-ভয়ভীতি উদ্রেককারী গল্প বলে প্রচলিত বোরখা পরতে বাধ্য করা হচ্ছে তার সমর্থন করি না। ধর্ম যেহেতু কর্মের কথা বলে সেহেতু ধর্ম ব্যক্তিস্বাধীনতাকেও সমর্থন করে। কারণ কারো কর্মের জন্য আসলে অন্য কেউ দায়ী না।
বোরখা এক ধরনের শালীন পোষাক। বোরখা ছাড়াও জাপানিদের কিমোনো আমার কাছে শালীন পোষাক বলে মনে হয়। রাগিবের মন্তব্যে খ্রিষ্টান নানদের পোষাকও শালীন পোষাক। অনেক পোষাকেই শালীন হওয়া যায় - সেটা নির্ভর করছে কীভাবে সেটা পরা হচ্ছে। আমি যতদূর জানি প্রচলিত বোরখা দেখতে যেমন, পর্দা করে চলার মূল বক্তব্যে তেমন কিছু বলা নেই। শুধু বলা আছে আঁটসাট কাপড় পরিহার করতে এবং শরীরকে ঢিলাঢালা অস্বচ্ছ কাপড়ে আবৃত করতে। শুধু শাড়ী পরেও শালীনতা বজায় রেখে চলা যায়। সেটা ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের ব্যাপার যে, কেউ নিজেকে কীভাবে publicly উপস্থাপন করতে চান। বোরখা নিষিদ্ধ করা নিয়ে আমি উৎসাহ বোধ করছি না। কারণ নিষিদ্ধ করার মানসিকতা সাম্প্রদায়িকতা ও গোঁড়ামিরই অপর পিঠ।
শরীর যার কাপড়ের কারাগারে বন্দী, মন-তো তার কতোটা উদার হবে?
কাপড়ের কারাগার কথাটা artfully coined. তাছাড়া যার মন উদার হবে তাকে আপনি কোন কারাগারে বন্দী করেও আটকাতে পারবেন না। মনের ব্যাপারটা উভয় দিক থেকে দেখা যায়। যারা পর্দা করেন তারাও উদার হতে পারেন, আবার যারা পর্দা করেন না তাদের মধ্যেও সঙ্কীর্ণতা থাকতে পারে।
এখানে প্রতিদিন আঁটসাট জিন্সের প্যান্ট পরা মেয়েদের দেখি; আমার মনে হয় স্কিন টাইট জিন্সও কম অস্বস্তিকর না। কিন্তু তারা স্টাইল হিসেবে সেটাকে মেনে নিয়েছেন।
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
বস, আটকায় রাখতে পারবেন না বলছেন কিন্তু তাদের সেই সুযোগটাও তও দিতে হবে, তালেবানি স্টাইলে যখন ব্যক্তি স্বাধীনতা কেড়ে নিবেন, তখন মনে কি চাইল না চাইল তাতে কি আসবে যাবে? এভাবে নিজের ভেতরে নিজে বন্দী থাকতে থাকতে এক সময় তারা ভুলেই যান যে, বোরখার বাইরে একটা জগৎ আছে।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
- যা বলবো বলে ঠিক করেছিলাম, রাগিব ভাই দেখলাম সেটা মোটামুটি বলেই দিয়েছেন।
কেবল নিনজা বোরখা ছাড়া আর কোনো পোষাকেই আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সাধারণ বোরখা পরার ব্যাপারে সারকোজি, অথবা অন্য যে কেউ যদি কেবল ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের ব্যাপারে আপত্তি করে তাহলে সেই কথায় আমিও আপত্তি করবো।
পোপ যখন কোনো রাস্ট্রীয় সফরে যান, তিনি যখন কোনো দেশের রাস্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন স্যুট-টাই পরে তো আর তিনি ডেকোরাম মেইনটেইন করেন না। তাঁর আলখাল্লা সদৃশ পোষাক, মাথায় বিশাল টোপর, এসবে তো কারুরই কোনো আপত্তি তুলতে শুনি নি।
কিংবা দালাই লামা! ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের হিজাব, বোরখা, কুর্তায় কেউ আপত্তি তোলে তাহলে তো কাপড় প্যাঁচানো দালাই লামাকেও কোথাও ঢুকতে দেয়া ঠিক না। আগে বলতে হবে "যা ব্যাটা, প্যাণ্টালুন পরে আয়। তখন তোর আব্দার শুনবো, তার আগে না!"
দুনিয়াজুড়া ব্যাপক গিয়ানজাম!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
লেখা আর মন্তব্য গুলো পড়ে মনে হলো "আমি গাই কী আর আমার সারিন্দা বাজায় কী" আমরা বাক স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, আরো কত কত ভারী ভারী কথার ফুল ছোটাই। এগুলো সবখানেই ঠিক আছে শুধু ধর্ম, বিশেষত ইসলামের সাথে যুক্ত হলেই সেগুলো ভিন্ন নিয়মের আওতায়। এসব যুক্তিবাজদের দেখলে আগে মেজাজ খারাপ হতো, এখন বিনোদন লাভ করি।
ঠিক বুঝলাম না প্রকৃতিপ্রেমিক আপনি ঠিক কি বলতে চাইলেন ।
ইউরোপে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর রিপ্রেশন একটা "সবাই-জানে-কিন্তু-কেউ-বলে-না" টাইপ ঘটনা । এবং এই ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর চাপানো ইউরোপিয় ফতোয়াতে অনেক সুহৃদ বুঝে বা না বুঝে ওরিয়েন্টালিস্ট অবস্থান নিয়ে ফেলেন । গোলমালটা সেখানেই ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
ধন্যবাদ হাসিব, সুন্দর মন্তব্যের জন্য। হয়তো আপনি ঠিকই বলেছেন।
আমার কাছে ব্যাপারটাকে মানুষের পোশাক বেছে নেয়ার স্বাধীনতা নিয়ে "স্টেট" আর "চার্চ"-এর দ্বন্দ্ব মনে হচ্ছে। সমস্যা হচ্ছে স্টেট এক পদের চার্চকে ছাড় দিয়ে আরেক পদকে চেপে ধরেছে।
বিষয়টা এরকম যে মসজিদের মাইকে আযান প্রচার চালু রেখে শব্দদুষনের অভিযোগে পুজোর ঢাক নিষিদ্ধ করা । এবং নিষিদ্ধ করার সময় মসজিদের মাইকের কথা বেমালুম চেপে গিয়ে পুজো মানুষের ঘুমের স্বাধীনতার কিরকম ক্ষতি করছে সেটার ফিরিস্তি তুলে ধরা ।
সারকোজি ঠিক এই কাজটিই করেছে ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
শরীর যার কাপড়ের কারাগারে বন্দী, মন-তো তার কতোটা উদার হবে? ---------
আপু, একটু ব্যাখ্যা করবেন কি উদারতা বলতে আপনি কি বোঝাতে চাইছেন ???
ধন্যবাদ।
আমি আমার ঘরের চারদেয়ালের মধ্যে গোটা দিনটাই কাটিয়ে দেই কোথাও না বেরিয়ে। ইচ্ছে হলে এক-আধবার বেরিয়ে দু'কদম গিয়ে সিগারেট নিয়ে আসি। ঠিক সে সময়টাতেই বাইরের আলো বাতাস আমাকে ক্ষাণিকটা স্পর্শ করার সুযোগ পায়।
জেলখানায় যে কযেদিটা চারদেয়ালে বন্দী আছে, দিনে দুবার আলো-বাতাসে বেরুবার সুযোগ পায়, তার সাথে আমার তফাৎ কোথায় ?
গোটা মাস আমি না বের হয়ে ঘরে থাকতে পারি। ইচ্ছে হলেই আমি যে বেরিয়ে যেতে পারবো, এই বোধটাই আমার স্বাধীনতা। আমি ভোগ করি আর না করি, মনটা আমার উন্মুক্ত থাকে সেজন্যই। জেলের কয়েদের সাথে এই যে পার্থক্য, এটাকে কাপড়ের কারাগার দিয়ে কি ব্যাখ্যা করা যায় না ?
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
রাগিব ভাই ও জিজ্ঞাসু ভাইয়ের সাথে সহমত।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
কী বলবো? কিছুই বলার নেই। শুধু এটুকুই, সারকোজি যদি কোনও উদ্দেশ্য থেকে বুরখা নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েও থাকেন তাহলে এখানে যারা বুরখাকে নান কিংবা পোপের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে সমর্থন দিচ্ছেন- উভয়ের চিন্তার সাদৃশ্য আমাকে অবাক করেছে।
মামুন - মাসুদা আপার লেখা পছন্দ করি' বলে উল্টা-সিধা লেখা যাবে না সেরকম দিব্যি নিজের ওপর আরোপ না করলেই খুশি হবো, আপনার মূল্যবান চিন্তা-ভাবনা জানার সুযোগ থেকে সবাইকে কেন বঞ্চিত করবেন। লিখুন দয়া করে।
পুরুষকেও যদি এই আপাদমস্তক কাপড়ের কারাগারে মুড়ে রাখার ধর্মীয় নির্দেশ থাকতো! যতো পর্দা সব নারীকেই- ব্যাপারটা এভাবে দেখেলেও হতো, কিন্তু না আমাদের সারকোজির ইসলাম-বিদ্বেষ খুঁজে বের করতে হচ্ছে।
মাসুদা ভাট্টি মনে হয় সমস্যাটা ধরতে পারেন নাই ।
একটা উদাহরন দেই । টিপাইমুখি বাঁধ নিয়ে বাংলাদেশে এখন দুইটা গ্রুপ কাজ করছে । একটা হলো মোল্লা গ্রুপ । আরেকটা বামপন্থীদের গ্রুপ । এখন আমাকে যদি কোন একটা মিছিলে ঢুকতে হয় তাহলে আমি অবশ্যই ঐ মোল্লাগ্রুপে ঢুকবো না । কারন ঐক্ষেত্রে তাদের নিয়ত ও সেই নিয়ত তাদের কোন চিন্তা থেকে উদ্ভুত সেই প্রশ্ন সামনে আসে ।
ফ্রেঞ্চদের ক্ষেত্রেও সমস্যাটা ওখানে । তাদের নিয়ত নিয়ে আমি সন্দিহান । উপরে যারা মন্তব্য করেছেন তাদের প্রায় সবাইকেই ব্যক্তিগতভাবে চিনি । আমি নিশ্চিত তারা এই একই অবস্থান থেকেই সারকোজির বিরোধিতা করছেন । বোরখা টাইপ রিপ্রেসিভ জিনিস উঠে যাওয়া উচিত । তবে সেই আন্দোলনে আমি কোন সাম্প্রদায়িক পক্ষের সাথে এক জমায়েতে উপস্থিত হবো না ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
বাহ ! চমৎকার ! মেয়েদের শালীন পোষাক নিয়ে প্রায় সবাই দেখি একমত ! নারীদের পোষাক নিয়ে আমাদের সহযাত্রী পুরূষ বন্ধুদের প্রায় একমত হতে দেখে যার পর নাই প্রীত হলাম !!!
সারকোজি বা বার্লুসকোনি বা পোপ বা দক্ষিণ জার্মানীর সিএসইউ বা উত্তর আমেরিকার নয়া-খেরেস্তানছাগু এরা সবাই তো নানান ফ্রেমের ছাগুই , নাকি? কোন অবস্থান থিকা কীসের সমর্থন বা কীসের বিরোধীতা করি সেইটা পরিস্কার না থাকাটা খুবই বিপজ্জনক। কারণ এতে গায়ে ছাগগন্ধ লেগে যাবার সম্ভাবনা থেকে যায়। বুশবিদায়ের পরেও পশ্চিমের অনেক ফাস্টফুড উদারপন্থীদের মধ্যে নব্যছাগুভাবনা ডেভেলপ করছে। টেকমোল্লারা তাঁদের বোঝাচ্ছে যে মুহাম্মদ এট্টা সন্ত্রাসী কিন্তু ঈশ্বরপুত্র শান্তির বার্তাবাহক ইত্যাদি। এখানে আমার অবস্খান কী হবে? যদি আমি টেকমোল্লাদের সাথে আলোচনায় যাই এবং দুজনকেই সাধু বা দুজনকেই সাম্রাজ্যবাদী বা কোন একজনের পক্ষ নিয়ে আরেকজনের পিণ্ডি চটকাই, তাতে টেকমোল্লার উদ্দেশ্য হাসিল হয়। পর্দার মতো জঘন্য প্রতিক্রিয়াশীল প্রথাকে অবশ্যই উঠে যেতে হবে। কিন্তু হিজাবীর কাঁধে নান চাপিয়ে নয়। ছাগু থাকুক ঘাসে ঘাসে কাঁঠাল পাতায় আর খাসী হয়ে আমার বিরানির/রেজালার ডেকচিতে।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
লেখাটার শিরোনাম খুব পছন্দ হয়েছে।
বোরকা কেনো, যেকোন রকম আচার/পোশাকই চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে আমি। বিশেষত বৈষম্যমূলক ভাবে শুধু নারীদের উপরেই শালীনতার দায় দেওয়া দুঃখজনক। পাশাপাশি এটাও সত্য যে আমি আমার পুরুষ মস্তিষ্কের জঘন্য চিন্তাগুলোর সাথে পরিচিত। তখন মনে হয় কিছুটা হয়তো যুক্তি আছে।
যাহোক, শালীনতা বজায় থাকুক, এটাই চাই আমি। কোন রকম জোরাজুরি করা ঠিক না। সমঅধিকারের প্রশ্নেও আর আপোষ করতে হওয়া উচিত না।
ছোটবেলার "কন্ডিশনিং"-এর কারণে মানুষ অনেক সময় বড়বেলায়ও চিন্তার সংকীর্ণতা থেকে বের হয়ে আসতে পারে। বোরকা পরিধানের অভ্যাস করানো নিয়ে আমার আপত্তি নেই, কিন্তু মাথার চুল সাপ হয়ে যাওয়া টাইপ বুজরুকি বন্ধ হওয়া উচিত।
আমি বুঝতে পারছি উপরে কারো কারো কমেন্ট পড়ে মনে হলো তারা লেখাটা ঠিক মতো না পড়েই কমেন্ট করছেন। লেখার মামার্থ ধরতে পারিননি কিংবা চাননি
তবে আমি যেটা জানতে পারলাম ফ্রাস্নে যে আইনটা পাশ হওয়ার জন্য পার্লামেন্টে গেলো সেটা - স্কুল ড্রেসের ক্ষেত্রে। আমরা জানি প্রত্যেকটা দেশের স্কুলে একটা ড্রেস কোড আছে- সেটা মানা বাধ্যতা মূলক । সেটা হলে এখন কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে ড্রেস কোড ভঙ্গ করবে না , এটা শুধু ইসলাম নয় সব ধর্মের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ।
এখন আপনারা ড্রেস কোড না মানা যুক্তিযুক্ত মনে করলে তো কিছু বলার নাই।
কিন্তু একটা ব্যাপার আমার খুব হাস্যকর লাগে - যে ইসলাম নিজেরাই নারীকে বন্দি রাখার জন্য কীসব আইন-ই করলো - এখন আবার আইন করাকেই মানবাধিকার হস্তক্ষেপ বলছে- অনেকুটা ভূতের মুখে রাম নাম!
নতুন মন্তব্য করুন