কোনো এক কৈশোরে

মেঘা এর ছবি
লিখেছেন মেঘা [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২৮/০১/২০১৩ - ২:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাঝে মাঝেই নিজের জীবনের বিভিন্ন সময়গুলোকে উল্টেপাল্টে দেখতে বেশ ভাল লাগে আমার। মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা কোন কথা হয়ত বিষণ্ণ করে দেয় অথবা ছেলেমানুষি স্মৃতি নিয়ে আসে ঠোঁটের কোণে একটু হাসি। নিজের ছোটবেলার কথা বলতে, লিখতে, শুনতে সব সময় আমার ভাল লাগে। মনে করলেই আমার মন ভাল হয়ে যায়। আমি হেসে উঠি। তবে আজ কেন যেন আমার কিশোরী বেলার কথা বলতে ইচ্ছে করছে। আমি জানি না সবার ছোটবেলা যেমন রঙিন হয় কৈশোর তেমন হয় কিনা! পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝতে শেখার পর হয়ত কৈশোরেই রঙিন জীবনগুলো একেক রঙের হয়ে যেতে শুরু করে! আমার যেমন অতিরিক্ত রঙিন জীবন হয়ে গিয়েছিল অপেক্ষাকৃত ম্লান! আমি বুঝে গিয়েছিলাম আমি ‘মানুষ’ না আমি ‘মেয়ে’। আমার অনেক কিছু করতে, ভাবতে, শখ করতে মানা! আমার বাড়ির বাইরে একা যাওয়া মানা। জানালার পর্দা সরিয়ে রাস্তায় উঁকি দেয়া মানা। জোরে কথা বলা মানা! এমন নানান রকম বিধিনিষেধে ছোট্ট জীবন যেন কারাগার বন্দী!

সেই আড়াই বছর বয়েসে ঢাকা চলে আসার পর থেকে আমাদের ঢাকার বাইরে আর যাওয়া হয় নি তেমন। সেই থেকে ঢাকাতেই বসবাস। স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি সব কিছু ঢাকা কেন্দ্রিক হবার কারণে ঈদের ছুটি ছাড়া আমাদের আর নানী-দাদী বাড়ি যাওয়া হতো না। একটা সময় যখন আব্বু-আম্মুর নাড়ির টান আলগা হয়ে গেলো তখন আর ঈদের ছুটিতেও আমাদের কোথাও যাওয়া হয়ে ওঠে না। এই ঢাকাতেই আমাদের প্রত্যেকদিন, ছুটির দিন, ব্যস্ত দিন, আনন্দ অথবা বেদনার দিন গুলো কেটে যায়। সেই ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত হয়ত হিসেব করলে সবগুলো দিন অসাধারণ ছিল না। না পাওয়ার দিন ছিল কিছু, কিছু মন খারাপের দিন ছিল, কিছু আনন্দের দিন ছিল, আমার কৈশোরের দিন ছিল, আমার বড় হয়ে ওঠার দিন ছিল, ভীষণভাবে মেয়ে হয়ে ওঠার দিনগুলো এই ঢাকাতেই কেটেছে। জানি না অন্য কোথাও যেয়ে থাকতে কেমন লাগে! জানি না অন্য কোথাও জীবন কেমন হয় এক কিশোরীর!

আব্বু সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হবার কারণে আব্বুর প্রজেক্ট যেখানে থাকত আব্বুকে সেখানেই চলে যেতে হতো। আগে যখন ছোট ছিলাম স্কুলে ভর্তি হই নি তখন আব্বু আমাদের সাথে নিয়েই সব জায়গায় যেত। যেমন আগে বলেছি আমাদের রাজশাহীতে থাকার কথা আমার এক টুকরো শৈশব লেখায়। কিন্তু ঢাকা এসে স্কুলে ভর্তি হবার পর থেকে আমাদের আর সেই সুযোগ ছিল না আব্বুর সাথে ছুটে বেড়ানোর। যতদূর মনে পরে আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি তখন আমি প্রথম দেখলাম আব্বু আমাদের একা ঢাকায় রেখে চলে যাচ্ছে রাউজান! মনে আছে আমি আর আপু রাত ১০টার সময় আব্বুর পিছে পিছে রাস্তার মোড় পর্যন্ত গিয়েছিলাম এগিয়ে দেবার জন্য। আমার আব্বুর জন্য তেমন কোন মায়া দয়া আছে আমার ধারণা ছিল না। তবে যেই মাত্র আব্বু ব্যাগটা হাত থেকে নিয়ে চলে যেতে শুরু করলো সাথে সাথে আমার বুক ফেটে কান্না পেতে লাগলো আব্বুর জন্য! আব্বু বার বার পিছনে ফিরে আপুকে বলছিলো “একা দাঁড়িয়ে থাকে না যাও বাসায় যাও!” দেখতে পাচ্ছিলাম আমাদের কান্না দেখে আব্বুর চোখ ভর্তি পানি! আমি আর আপু কাঁদতে কাঁদতে বাসায় এসেছিলাম। সারারাত ধরে আমাদের দুই বোনের কী কান্না! সেই যে আব্বু গেলো ঢাকার বাইরে আমাদের একা রেখে তারপর থেকে আব্বু হয়ে গেলো আমাদের বাসার মেহমান। মাসে একবার তিন দিনের জন্য আসতো! আবার চলে যেতো! সেই তিন দিন ছিল আমার আর আপুর জন্য একটা বিভীষিকা! এক মাসের সব অপরাধের বিচার ঐ তিন দিনে হতো! জানি না কেমন করে যেন ছোটবেলায় আম্মুর মারের হাত থেকে আমাদের সব সময় বাঁচানো আব্বুটা খুব ভয়ের কেউ হয়ে গিয়েছিল আমাদের দুই বোনের জন্য! তখন আব্বুর সাথে আহ্লাদী করা যায় না এমন মনে হতো। হয়ত আব্বু কিশোরী হয়ে ওঠা মেয়েকে যে বকা দিয়ে সব বলা যায় না এটা বুঝতে পারতো না। তাই ক্রমেই আব্বু হয়ে গিয়েছিল দূরের একজন!

একা থাকায় অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা। আমাদের তেমন কোন অসুবিধা হতো না। জানি না আম্মুর কোন অসুবিধা হতো কিনা! পড়ি ক্লাস সিক্সে। নতুন বাসায় উঠেছি আমরা তখন। আব্বু একদিনের জন্য ঢাকায় এসে কোন রকমে বাসায় উঠিয়ে দিয়ে চলে গেছে। কিছু গুছানো হয় নি। আমরা পারিও না কিছু! ভারী ভারী সব ফার্নিচার যেখানে আম্মু নাড়াতেই পারে না সেখানে আর গুছবে কি?! অবস্থা ভয়াবহ! যে বাড়িতে আমরা উঠেছিলাম সে বাড়ি সম্পর্কে আমাদের আসলেই কোন ধারণা ছিল না তখন। আমরা বেশ ভালোই ছিলাম এক বছরের মত। সিক্সে পড়লেও কাউকে যদি বলা হতো আমি ক্লাস থ্রি’তে পড়ি সে অবিশ্বাস করতে পারবে না। আমি এতোটাই পিচ্চি ছিলাম দেখতে! ক্লাস সেভেনে উঠে যাবার পর একটু একটু করে আমার শিশু সুলভ চেহারা হয়ত ঝরে পরেছিল। তাই একটু একটু করে জীবনটা হয়ে যাচ্ছিল কিশোরী মেয়ের জীবন! আমি একটু একটু করে নিজের অজান্তেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম এক কারাগারের দিকে!

আব্বু তখন কুতুবদিয়া থাকে। সাগরের মধ্যে এক ছোট্ট দ্বীপে বসবাসের কারণে আব্বু প্রত্যেক মাসেও তখন আর আসতে পারে না ঢাকায়। এমন অনেকবার হয়েছে তিন মাস, চার মাস হয়ে গেছে আব্বু ছুটি পাচ্ছে না। আব্বুর অফিস থেকে বাসায় বেতন দিয়ে যাচ্ছে না। বাসা ভাড়া বাকি পরে যাচ্ছে! বাড়িওয়ালা এসে আম্মুকে কী সব কথা শুনিয়ে যায়! আম্মু খুব কাঁদে মাঝে মাঝেই। মন খারাপ হতো খুব কিন্তু বুঝতে পারতাম না কীভাবে করে আম্মুর মন ভাল করে দেয়া যায়। বই পড়তে শুরু করেছি তখন ভীষণভাবে। স্কুলে যাই, কোচিং এ পড়তে যাই, বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দেই, হৈ চৈ করতে করতেই সারাদিন পার হয়ে যেতো। বাসায় এসে আম্মুর মন খারাপ দেখলেও তেমন পাত্তা দিতাম না। হয়ত মাঝে মাঝে বলতাম “আম্মু তিন গোয়েন্দার নতুন একটা বই পেয়েছি শুনবে নাকি?” আম্মু আমাদের সময় দিতো অনেক। তিন জন মিলে বই পড়ে ভালোই সময় কাটাতে পারতাম আমরা। একটা সময় দেখতাম আম্মুর মন ভাল হয়ে গেছে। প্রায় বলতো নতুন কোন বই পেলে যেন নিয়ে আসি বাসায় আম্মুও পড়বে আমাদের সাথে। ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে আমাদের। রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করি আর মজার মজার সব বই পড়ে খুব ভাল সময় কাটাচ্ছি তখন। সেই বই পড়ে কাটানো ব্যস্ত দিনগুলোর কোনো একদিন বাসায় এক অদ্ভুত ধরণের চিঠি এলো। আমাদের বাসার ঠিকানা লেখা। আর নামের জায়গায় আমার নাম আছে ঠিকই শুধু সামনে একটা এক্সট্রা সাথী লাগানো! খুব অবাক হয়ে আমি পিয়নকে বলছিলাম “আমার নামের আগে তো কোন সাথী নেই! এটা আমাদের না!” পিয়ন তবু কেন যেন জোর দিয়েই বলছিল এটা নাকি আমাদের চিঠি আর চিঠিটা নাকি আমাকেই লেখা হয়েছে! আমি হাতে নিলাম চিঠি ভীষণ অবাক হয়ে। কে লিখেছে চিঠি দেখতে যাবার আগেই পিয়ন ব্যাটা আমার কাছে চিঠি বাবদ ২টাকা জরিমানা চেয়ে বসলো! কী অবাক করা ঘটনা! দিলো অন্য লোকে চিঠি তার জন্য নাকি আমি দিবো ২টাকা। আমি জিজ্ঞেস করলাম “কেন? আমি কেন দিবো ২টাকা? চিঠি আসলে কোনদিন টাকা দিতে হয় নাকি?” আমার কথা শুনে পাশের বাসার মামী বের হয়ে এসে জিজ্ঞেস করলো কি সমস্যা? আমি সব বুঝিয়ে বলার পর সে বলল “ও বুঝতে পেরেছি ডিয়ারিং চিঠি!” আমি এতো আশ্চর্য জীবনে হই নি বোধ হয় এর আগে! চিঠি আবার ডিয়ারিং হয় কিভাবে করে? আমি চিঠি হাত থেকে ফেলে দিয়ে বাসায় দৌড়। ডিয়ারিং মানে বিপদজনক! ডিয়ারিং চিঠির আমার দরকার নেই। তবে পাড়া প্রতিবেশীরা সব সময় অন্যের বাড়ির মেয়ের ব্যাপারে প্রয়োজনের অতিরিক্ত আগ্রহ রাখে তাই সেই চিঠি ২টাকা দিয়ে মামী নিয়েছিল আর পরে সেটা আমার আম্মুর কাছে অতি আনন্দিত হয়ে দিয়ে গিয়েছিল আর জানিয়েছিলো, “ভাবী আপনার মেয়ে বড় হয়ে গেছে! হে হে হে! প্রেমপত্র এসেছে! তাও আবার ডিয়ারিং!” আমি আজো জানি না সেই ডিয়ারিং (!) চিঠিতে কী লেখা ছিল আমার জন্য! আম্মু আমাকে পড়তে দেয় নি। বাসায় কোন চিঠি এলে আম্মুকে জিজ্ঞেস না করে যেন না নেই শুধু সেটা বলে দিয়েছিল। বেশ পরে জানতে পেরেছিলাম ডাকটিকেট ছাড়া চিঠিগুলোকে বিয়ারিং চিঠি বলে ডিয়ারিং না! অল্প লেখাপড়া জানা মামী বুঝেই বলুক আর না বুঝেই বলুক না কেন উড়ো চিঠির ব্যাপারে আমার মধ্যে একটা ভয়াবহ ভীতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল তখন। আমাদের বাসায় পড়া দেখিয়ে দেবার জন্য তখন আম্মুর মামাতো ভাই শিমুল মামা আমাদের পড়াতে আসতো। বাসায় চিঠি এসেছে তাও আবার আমার কাছে এবং বিয়ারিং চিঠিকে ডিয়ারিং ভেবে আমার মহা-আতঙ্ক দেখে মামা তো পারলে হাসতে হাসতে মরেই যায়! হাসাহাসি শেষ হলে বুঝিয়ে বলেছিল, “মামু শোনো, এই বয়েসে ছেলেরা একটু একটু ডিয়ারিং ডিয়ারিং সব চিঠিপত্র দেবেই। সেইসব চিঠি শুধু পড়া যাবে না। ব্যাস তাহলেই আর কোন অসুবিধা নেই।” আচ্ছা! বেশ তাহলে না হয় পড়লাম না ডিয়ারিং চিঠি! একটাই তো মাত্র চিঠি এসেছে তাই সেটা নিয়ে কেউ তেমন বেশি চিন্তিত হবার প্রয়োজন মনে করে নি।

পড়ি ক্লাস এইটে। আমার আতঙ্কজনক জীবনের শুরু।
নতুন ক্লাস যেমন করে খুব উৎসাহ নিয়ে শুরু হয় তেমন ভাবেই শুরু হলো! নতুন বই, নতুন সব বিষয় পড়তে হবে। গতবারের চেয়ে যেভাবেই হোক আরও বেশি ভাল করার ইচ্ছে নিয়ে, খুব বেশি ভাল লাগা নিয়ে একটা নতুন বছর শুরু হলো! যে বাড়িতে আমরা ছিলাম সেই বাড়ি ছিল অনেক পুরনো একটা বাড়ি। পাকিস্তান আমলের বাড়িওয়ালার ইচ্ছে মত চাঁদ তারা আঁকা বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠলেই ডান দিকে খোলা বড় বারান্দা। পাশাপাশি দুটো ইউনিট। বারান্দাটা ভাগ করে ব্যবহার করতে হতো। বারান্দা পার হলেই দুই ইউনিটের দরজা। প্রোটেকশনের কোন ব্যবস্থা ছিল না। যে কোন সময় চোর আসতে পারতো! মাঝে মাঝেই বারান্দা থেকে চুরি হয়েও যেতো আমাদের কাপড়! বাড়ির নিচের মেইন গেটেও কোনদিন তালা লাগানো থাকত না! জানি না বাড়িওয়ালার এতো দুঃসাহস কেমন করে ছিল! বাড়ির এতো বর্ণনা দিচ্ছি এটা বোঝানোর জন্য যে এই বাড়িতে যে কোন মানুষের ঢুকে যাওয়া কত সহজ ছিল সেটা বোঝানোর জন্য। একদিন সন্ধ্যার দিকে শিমুল মামা তখনো আমাদের পড়াচ্ছে সময় নিয়ে আর অপেক্ষা করছে আর একটু দেরি করতে পারলেই হয়ত আম্মু বলবে “শিমুল ভাত খেয়ে যাও!” খেতে বললে মামা খুব খুশি হতো। হলের পচা খাবার খেয়ে খেয়ে তখন মামাদের জীবন অতিষ্ঠ তখন। কেউ বাসায় খেতে বললেই খুশি হয়! যা বলছিলাম সেটাতে ফিরে যাই আবার, মামা পড়াচ্ছে এমন সময় কেউ দরজায় নক করেছে। আমি জানি না কী কারণে যেন কেউ দরজা নক করলে আমি খুব উৎসাহ নিয়ে খুলতে যেতাম। স্বভাব মত আমি গেছি খুলে দিতে। দরজা খুলে দেখি কেউ নেই। কিন্তু খুব সুন্দর একটা সুবাস বাতাসে! আমি বুঝতে পারছিলাম এই মাত্র কেউ একজন দাঁড়িয়েছিল দরজার কাছে! জানি না কী মনে করে আমি দরজা দিয়ে বের হয়ে বারান্দায় রাস্তায় কেউ আছে কিনা উঁকি দিয়ে দেখতে গেলাম! আমি নিচে তাকিয়েছিলাম কিন্তু অন্ধকার সিঁড়ির দিকে আমি তাকাই নি। সে সময় কেউ আমার নাম ধরে ফিসফিস করে ডেকে আমার দিকে কিছু একটা ছুঁড়ে দিয়েছিল! আমার শুধু মনে আছে ভেজা কিছু একটা আমার মুখে এসে পরেছে আর মুখে বিঁধে গেছে। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় আমি চিৎকার দিয়ে উঠেছিলাম! বাসা থেকে যখন মামা আর আপু বের হয়ে এলো তখন আমি গালে হাত দিয়ে কাঁদছিলাম। একটু একটু রক্ত বের হতে শুরু করেছে। বারান্দায় আলো জ্বালিয়ে দেখা গেলো কেউ একজন আমার দিকে বিশাল বড় একটা গোলাপ ফুল ছুঁড়ে দিয়েছিলো! আমি ফুল পেলাম না পেলাম কাঁটার আঘাত! যেই কাঁটার দাগ এখন পর্যন্ত মুখে রয়ে গেছে! জীবনে প্রথম পাওয়া ফুলের অভিজ্ঞতা আর কারও এমন হয়েছে কিনা কে জানে!

এই ছিল শুরু। আমার মধ্যে তৈরি হলো একটা আতঙ্ক। আর সেই আতঙ্ক আরও হাজার গুণ বাড়িয়ে দিতো যখন প্রত্যেকদিন রাতে বারান্দায়, জানালার পাশে সেই অদ্ভুত সুন্দর ঘ্রাণ পেতাম। আমার বুকের মধ্যে কাঁপতে শুরু করে দিতো সাথে সাথে। আমি সব বাদ দিয়ে আম্মুর কাছে যেয়ে বসে থাকতাম। সেই ঘটনার পর থেকে দরজা খুলতে, বারান্দায় যেতে খুব ভয় লাগত। যখনই বাতাসে সেই পারফিউমের ঘ্রাণ পেতাম সাথে সাথে আমি বুঝে যেতাম কেউ এসেছে, বাইরে দাঁড়িয়ে আছে আমার জন্য! অজানা এক ভয়ে আমার শরীর কাঁপতে থাকত!। সকালে দরজা খুললেই দেখা যেতো আমার নাম লেখা কোন না কোন গিফট পরে আছে দরজার কাছে। কোনদিন চকলেট, কোনদিন ফুল, কোনদিন হয়ত কোন মেকআপের জিনিস, গানের নতুন কোন এ্যালবাম।

প্রায় পুরো বছর জুড়েই এই সব বিভিন্ন রকম উৎপাত লেগেই ছিল আমাদের বাসার উপর। আব্বু যখন থাকত তখন কোন সমস্যা হতো না কিন্তু আব্বু চলে গেলেই আবার শুরু হয়ে যেতো বারান্দায় কারো হাঁটা-হাঁটি, পারফিউমের ঘ্রাণ, নয়ত বেনামে লেখা প্রেমের চিঠি! যতই এগুলো বেড়ে যাচ্ছিল আমার আম্মুর ভয় তত বেড়ে যাচ্ছিল। ক্লাস এইট শেষ করে নাইনে যাবার আগেই আমার জীবন মোটামুটি গৃহ বন্দী হয়ে গেলো। তবে একটা মেয়ের জীবন কেমন হাত-পা বাঁধা রকমের হতে পারে সেটা টের পেলাম আর কিছুদিন পর থেকেই!

(চলবে)


মন্তব্য

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আমার এক পত্রবন্ধুকে রাগ করে ৪ টা বেয়ারিং চিঠি দিয়েছিলাম, পরে এটা নিয়ে খুব দুঃখ করেছি। ডেয়ারিং-বেয়ারিং এর জায়গায় মজা পেয়াছি কিন্তু শেষে এসে দুঃখ লাগছে। মন খারাপ
মেয়েদের জীবনটাই এমন। বন্দী।

মেঘা এর ছবি

মজার অনেক কিছুই ছিল আসলে সেই জীবনে। তবে সেগুলো খুঁজে নিতে হয়েছিল। লিখবো আস্তে আস্তে। তবে কাউকে এভাবে চিঠি পাঠানো ঠিক না খাইছে

মেয়েদের জীবনটা কেন এমন হবে? কেন একটা মেয়ে তার বড় হয়ে ওঠার সময় এতো ভয়ের মধ্যে থাকবে? এটা কি মানুষের জীবন? মন খারাপ হয়। আমার নিজের জন্য ভীষণ মন খারাপ হয়।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

নীলম এর ছবি

আমি এতোই গাধা ছিলাম, মেঘাপু। আমি যে সবার কাছে মানুষ না মেয়ে, এটা প্রথম আবিষ্কার করি ক্লাস নাইনে উঠে। অবশ্য আমার শৈশব কেটেছে রাজশাহী, বগুড়া, নাটোর এসব জায়গায়। এসব জায়গায় ছোটবেলা থেকে বেশ একা একা ঘুরে বেড়াতে পারতাম। নাইনে উঠে হঠাৎ জানতে পারলাম আমার নাকি একা একা সব জায়গায় যাওয়া নিরাপদ না। আমি এসব একদম মানতে চাইতাম না। আমি কি দোষ করেছি আমি ভয় পাবো? কারা না কারা কি করে তার জন্য আমাকে ঘরে বসে থাকতে হবে কেন? ওদেরকে কিছু বলতে পারো না? প্রতিদিন বাসায় এগুলো নিয়ে বিদ্রোহ করতাম। কি যে সব দিন কেটেছে তখন। আজকে আবার মনে পড়ে গেল। আমারগুলো নিয়েও লিখতে চেষ্টা করবো একদিন।

আপনার পরবর্তী লেখার অপেক্ষায় রইলাম। হাসি

মেঘা এর ছবি

আমিও যে কত ঝগড়া করেছি নীলম! আমার মনে আছে আম্মু কোথাও যেতে না দিলেই আমি চিৎকার করে ঝগড়া করতাম আর কাঁদতাম। কতবার আম্মুকে বলেছি দম বন্ধ লাগে মা, আমি মরে যাচ্ছি!
তোমার ঘটনাগুলো লিখে ফেলো না আপু! বেশ তো ঘোরাঘুরি করে এলে এবার বেশি বেশি লেখা দাও।

অনেক শুভকামনা এবং ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

"ডিয়ারিং চিঠি" গড়াগড়ি দিয়া হাসি

চলুক।

ফারাসাত

মেঘা এর ছবি

দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি

ধন্যবাদ ।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেকদিন পর আপনার লেখা দেখতে পেলাম। চমৎকার লেখা।
শুভকামনা রইল।

তুহিন সরকার
tuhin_preeti@Yahoo,com

মেঘা এর ছবি

হ্যাঁ অনেকদিন লিখতে পারি নি। চেষ্টা করছি আবার লিখতে। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা আপনাকেও।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

শাব্দিক এর ছবি

আপনার লেখায় একটা সুইট ব্যাপার হল, শৈশব নিয়ে লিখলে মনে হয় ছোট্ট কেউ লিখেছে, কৈশোর নিয়ে লেখাটা পড়ে মনে হল সত্যি কোন কিশোরী লিখছে, ঠিক স্মৃতিচারণ মনে হয় না।
আপনার কিশোরী মনের ভয়গুলো খুব কষ্ট লাগল পড়ে,

আব্বু যখন থাকত তখন কোন সমস্যা হতো না কিন্তু আব্বু চলে গেলেই আবার শুরু হয়ে যেতো

আসলেই আমাদের দেশে পুরুষ না থাকলে মেয়েরা কত অসহায়।
আমার ভাগ্য বোধ হয় এ জন্য সুপ্রসন্ন ছিল এদিক থেকে, কারণ বাড়িতে বেশীভাগ ভাই আর চাচারা থাকায়। যা ইচ্ছা তাই করতাম, যেখানে খুশী চলে যেতাম, কেউ তেমন বাধা দিত না।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

মেঘা এর ছবি

আপু অনেক ধন্যবাদ। আপনার কাছ থেকে সব সময় খুব ভাল উৎসাহমূলক মন্তব্য পেয়েছি। আমার আম্মু বলে আমি এখনো মনের মধ্যে সেই ছোট্ট মেয়েটাই আছি। তাই হয়ত লেখাগুলো এমন হয়ে যায়। ছোটদের ব্যাপারগুলো আমি খুব ভাল বুঝতে পারি।

আব্বুর অনুপস্থিতিতে আমরা আসলেই খুব বিপদের মধ্যে পার করেছি। পর্বরতী পর্বগুলোতে সে বিষয়ে আরও লিখবো। অনেক ধন্যবাদ এবং শুভকামনা সব সময়।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

লিখুন, আপনার জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের কথা।
পড়ছি। চলুক

মেঘা এর ছবি

বুঝতে পারছি না কেন যেন আপনাকে দেয়া প্রতি মন্তব্য অন্য বক্সে চলে যাচ্ছে ইয়ে, মানে... পাঠে ধন্যবাদ জানবেন। শুভকামনা।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

গাঙচিল এর ছবি

অসাধারণ লিখেছেন।

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

মেঘা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসি ভাল আছেন আশা করি। শুভকামনা।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

বাতাসে পারফিউমের সুন্দর গন্ধের সঙ্গে আপনার আতঙ্ক মিলিয়ে খানিকটা বিভ্রান্ত হয়েছি। কত আগের ঘটনা এটা?
১৩/১৪ বছরের মেয়েরা সাইকোলজিকালি খুবই অদ্ভুত আচরণ করে অনেক সময়। আপনার গল্প পড়ে অনেকটা সেরকম মনে হল!

গল্প অনেক দ্রুত এগোচ্ছে। আস্তে এগোলে বোধহয় ভালো।
চলুক।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মেঘা এর ছবি

বাতাসে পারফিউমের গন্ধটা আমার মধ্যে আতঙ্ক তৈরী করেছিল আসলে সেই ফুল ছুঁড়ে মারার কারণেই। আমি খুব ভীতু প্রকৃতির এমনিতেও। আমার সব কিছু দেখেই ভয় লাগে ইয়ে, মানে... আর সে সময় অনেক ভয়ের ভয়ের সব মুভি, গল্পের বই, এক্স-ফাইলস দেখা হতো তো! তাই এই পারফিউমের গন্ধের সাথে একটা মানুষের উপস্থিতি টের পেতাম যে কিনা আবার আমার নাম ধরে ফিসফিস করে ডাকে এটা আমার মধ্যে একটা তীব্র আতঙ্ক তৈরী করে দিয়েছিল।

হ্যাঁ গল্প অনেক দ্রুত এগিয়ে গেলো। ধরিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। পরের পর্ব থেকে আরও খেয়াল রেখে এগিয়ে নেবো। মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

নীপবন এর ছবি

মেয়েদের জীবনটা কেন এমন হবে? কেন একটা মেয়ে তার বড় হয়ে ওঠার সময় এতো ভয়ের মধ্যে থাকবে? এটা কি মানুষের জীবন? মন খারাপ হয়। আমার নিজের জন্য ভীষণ মন খারাপ হয়।

আমারও নিজের জন্য ভীষণ মন খারাপ হয়।
চলুক চলুক

মেঘা এর ছবি

আপু এটা মেয়েরাই এক মাত্র বুঝতে পারে হয়ত!

ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অতিথি লেখক এর ছবি

অছাম< এহহেবারে ফিলিমের লাহান।।। ফরের টুক কুনসুম পায়াম? (স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট) আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মেঘা এর ছবি

ফিল্মে র মতো না মনে হয়! পরের পর্ব দিয়ে দেবো এটা নীড় পাতা থেকে চলে গেলেই। ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অনিকেত এর ছবি

মেঘা,
আপনার লেখাটা বুঁদ হয়ে পড়লাম।
লেখাটার মাঝে এমন একটা সরলতা আছে, এমন একটা সততা আছে যে খুব সহজেই মনের খুব কাছে এসে দাঁড়িয়ে যায়। হয়ত ছেলেবেলার কথা বলেই এমন হয়। এই জন্যে মানুষের শৈশবের, কৈশোরের লেখাগুলো পড়তে আমার খুব ভাল লাগে। আপনার লেখাটাও খুব ভাল লাগল।

আপনার কৈশোরের পরবর্ত্তী কাহিনী শোনার অপেক্ষায় রইলাম।

শুভেচ্ছা নিরন্তর---

মেঘা এর ছবি

অনিকেত'দা আমার কৃতজ্ঞতা জানবেন। এটা বোধ হয় আমার লেখায় আপনার প্রথম মন্তব্য। ভীষণ খুশি হয়েছি। লেখা ভাল লেগেছে জেনে খুব ভাল লাগছে। আমি শৈশব নিয়ে অনেক লিখেছি তাই এবার কৈশোর দিয়ে লেখা। তারপর হয়ত বুড়ো হয়ে যাবার পর আমার এই তরুণ বয়স নিয়েও লিখবো কোনদিন দেঁতো হাসি নতুন পর্ব দিয়ে দেবো খুব তাড়াতাড়ি। আমি অনেকদিন কিছু লিখতে পারি না। দেখি আবার ফিরে আসা যায় নাকি।

ধন্যবাদ এবং শুভকামনা নিরন্তর হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

স্যাম এর ছবি

বাহ! চলুক

মেঘা এর ছবি

আরেহ!!! ব্যানার্জি স্যাম দা তো দেখি সচল হয়ে গেছে! অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য। বলা হয় নি হয়ত আপনাকে তবে আমি কিন্তু আপনার কাজের ভীষণ মুগ্ধ ভক্ত! সচলে এসেই ব্যানারের দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠার জন্য অপেক্ষায় থাকি। এবং বরাবরের মত চমকে যাই হাসি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ দাদা হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মেঘা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

একটা মেয়ের জীবন কেমন হাত-পা বাঁধা রকমের হতে পারে সেটা টের পেলাম আর কিছুদিন পর থেকেই!

মেঘা, আশা করি সেই রহস্যময় উপহার সামগ্রীর জন্য আপনাকে কেউ দায়ী করে নি । আমাদের তো আবার সব কিছুতেই “নন্দ ঘোষ” হতে হয় ।

লেখা ভাল লেগেছে । চলুক এই কৈশোরের কথকতা ।

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

মেঘা এর ছবি

আপু আম্মু তো সব সময় দেখতেই পেতো আমি কী করছি কী করছি না তাই আম্মু কোনদিন কিছু বলে নি। তবে হ্যাঁ অন্য কারো সাথে এমন হচ্ছে না শুধু আমার সাথেই হচ্ছে তার জন্য অবশ্যই আমাকে অনেক মানুষের কাছে অনেক কথা শুনতে হয়েছে। এমন কী আমার বাবার কাছেও। লিখবো সে সব কথা।

ভাল লাগছে শুনে লিখতে আগ্রহ পাচ্ছি। অনুপ্রেরণা দেবার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সাত্যকি এর ছবি

বাহ। কি সুন্দর করে লিখেছেন। হাসি
আচ্ছা, এমন যদি হয়, সেই গন্ধওয়ালা এসে আপনার লিখায় মন্তব্য করে গেল ! কেমন হবে ? হাসি

মেঘা এর ছবি

ধন্যবাদ সাত্যকি হাসি

গন্ধওয়ালা লোক আমার লেখাতে মন্তব্য করে গেলো কিনা এই চিন্তায় আমি সবগুলো মন্তব্য শুরু থেকে আবার পড়ে ফেলেছে ইয়ে, মানে... কী আতঙ্কজনক অবস্থা! আমি তো দেখি এখনো ভয় পাই মন খারাপ

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক
লেখা ভালো হয়েছে মেঘা।
কম বেশী সব মেয়েরই মনে হয় কৈশোরকাল অন্যরকম এক আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে যায়, যদিও আমি তুলনামূলক কম ঝামেলাতেই বড় হয়েছি কিন্তু আমার কিছু বন্ধু, আমার ছোটবোন সবাইকে দেখে পুরো কষ্টটুকু বুঝতে পেরেছিলাম। তবে এটা খুব সত্যি কথা যে একটা মেয়ের জীবন সবসময়েই সমাজের কাছে হাত, পা বাধা হয়ে রয়। মেয়েরা চাইলেই সবকিছু করতে পারেনা।

অ,ট - গোলাপফুল, পারফিউমের গন্ধ--- হাউ রোমান্টিক! চোখ টিপি খাইছে

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

মেঘা এর ছবি

আরজু আপু ব্যাপারগুলো যত রোমান্টিক মনে হচ্ছে সব কিছু ঠিকঠাক মতো হলে হয়ত রোমান্টিক হতেও পারতো। তবে আমার ক্ষেত্রে হয়েছে তো উল্টা! আমি তো গোলাপ পাই নি! পেয়েছিলাম কাঁটা। ইয়ে, মানে... জীবন বাঁশ না হলে কাঁটাময় মন খারাপ

পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপুটা হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।