জয় এলো বাংলাদেশের। বিশ্বকাপে ২য় জয়। অনেক নাটক করে জয়টি ধরা দিলো। বিশ্বকাপটি ঘরে তুলতে হবে এমন কোন আবদার করেনি বাংলাদেশের মানুষ। শুধু একটু ভালো খেলুক এটাই চেয়েছে। প্রথম খেলায় ভারতের সাথে হারার পরও মানুষ খুশী। ২য় খেলায় আয়ারল্যাণ্ড এর সাথে জয়ে কে কতটুকু খুশী আমি জানি না। তবে আমি একটুও খুশী না। আয়ারল্যাণ্ড এই সেদিন ক্রিকেট খেলতে এসেছে, এখনও টেষ্টে সুযোগ পায়নি, কিন্তু এখন পর্যন্ত আয়ারল্যাণ্ডই চমক দেখিয়ে যাচ্ছে! হিসেব করে বললে বাংলাদেশের থেকে বহুগুণ বেশি ভালো খেলছে। তারাতো আর আমাদের মতো গ্যালারীতে অসংখ্য দর্শক পাচ্ছে না! যারা খেলেন বা খেলেছেন তারা জানেন, দর্শকের হাততালি কিভাবে যে কাজে লাগে অথবা উপকারিও বলা যায়, অনেক সাহস পাওয়া যায়। তাই আয়ারল্যাণ্ড এর সাথে হেরে হেরে জয়টা দেখে মন ভরাতে পারিনি। ওয়েস্টইণ্ডিজ এর সাথে খেলাটা আসলে দূর্ঘটনা। বাংলাদেশ দল থেকে আরো বড় দল বলে আমরা যাদের জানি তারাও এর থেকে ছোট স্কোর করেছে। আজকের এই জয়ের পেছনে ওয়েস্টইণ্ডিজ এর সাথে হারটা বেশ করে কাজে দিয়েছে। ওয়েস্টইণ্ডিজ এর সাথে যদি একটু ভালো খেলে বাংলাদেশ হেরে যেতো তাহলে আজকে হয়তো সে জিদটা থাকতো না যে "ভালো খেলতে হবে"।
কথা হলো আজকে যে জয় এলো, সেই জয়ে সারাদেশ আনন্দে ভাসতেছি। কোয়ার্টার ফাইনালে যাবার মৃত্য স্বপ্নটা নতুন করে জেগে উঠেছে, হাতছানি দিচ্ছে খুব নিকটে থেকে। আয়ারল্যাণ্ড যেহেতু আজ ও. ইণ্ডিজ এর সাথে হেরে গেছে তো নেদারল্যাণ্ডকে হারিয়ে আমরা কোয়ার্টার ফাইনালে যাবার সম্ভাবনা বেশি! এই খেলা খেলে কোথায় যাচ্ছি আমরা? প্রতিদিন কি শফিউল এর মতো বোলার ব্যাট হাতে জিতিয়ে দেবে আমাদের? আজ যখন ৮টা উইকেট পড়ে গেলো অনেককেই ফেসবুকে লিখতে দেখেছি হাল ছেড়ে দিতে। আমি ও হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাল ছাড়ারি কথা। বাংলাদেশের বোলার যে এরকম একটা ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারে সেটা অবিশ্বাস্য ছিলো আমার কাছে। এর আগে মাশরাফি বা শাহাদাত কে দেখেছি যে খেলা টেনে নিয়ে গেছে। বোলারদের কাজ তো আর রান করে খেলা জেতানো না, সেটা সবাই জানি। যাদের কাজ ব্যাট হাতে নিয়ে ম্যাচ জেতানোর তারা কি করছেন? ৪ ম্যাচে কে এমন কি করেছেন ব্যাট হাতে? ইমরুল কায়েস ৬০ রান করলেও ম্যাচ বের করার যে সাহসটা লাগে সেটা এনে দিয়েছে তামিম ই। তামিম আরো একটু মাঠে থাকলে ম্যাচ আরো আগেই বের হয়ে যেতো। তামিম, সাকিব ছাড়া আর কে এমন কি করছেন বা করে যাচ্ছেন? জুনায়েদ, রকিবুল, নাইম, মুশফিকুর রহিমদের কে কি শুধু ১১জন পূরণ করতে রাখা হয়েছে? আজকে যখন খেলাটা ডুবে যায় তখন কি তাদের কারো চিন্তা ছিলো না খেলাটা বাঁচিয়ে জয় নিশ্চিত করার? কাউকেই তো মনে হয়নি সেরকম কোন চিন্তা নিয়ে খেলতে। শুধু এলেন আর গ্যালেন! দক্ষিণ আফ্রিকাকে ইংল্যাণ্ড যেভাবে আটকে ছিলো সেই অবস্থাই হতো আমাদের যদি না শফিউল এই অবাক বিস্ময় না দেখাতো, শফিউল যে একাই দেখিয়েছে তা তো আর না, কেউই শফিউল এর ওপর ভরশা করেনি করেছে মাহমুদউল্লার ওপর, মাহমুদউল্লা টিকে ছিলো বলেই শফিউল এই চমক দেখিয়ে ছিনিয়ে নিলো জয়।
জয় আসুক চেয়েছি। আরো জিততে চাই, হয়তো জিতবো হয়তো না। তবে খেলার মতো করে খেলুক। ব্যাটসম্যানরা রান করুক। শুধু ২জনের ওপর নির্ভর করে বসে থেকে থাকলেতো আর হবে না। এই প্রথা ভাঙুক।
মন্তব্য
আশফাক
হ, এই প্রথা ভাঙুক।
...........................
Every Picture Tells a Story
সেটাই, এই প্রথা ভাঙুক।
তবে নিজের দেশে, চেনা পরিবেশে, আপন সমর্থকদের মাঝে খেলার মধ্যেও চাপ থাকে কিন্তু! সেটা হলো প্রত্যাশার চাপ। অনেক সময় বুমেরাং হয়ে দেখা দেয় এটাই। আমাদের ক্ষেত্রেও হচ্ছে হয়ত এটা, কে জানে!
একেক দিন একেক জন্য নায়ক হবেন, আজকে যাদের দিন ভাল যায়নি আশা করি সামনে তারা দলে নিজেদের মূল্য বোঝাতে সমর্থ হবেন
একেক দিন একেজন নায়ক হচ্ছেন না কথা সেটাই। আমাদের বোলিং ভালো হচ্ছে, মাশরাফি না থাকায় যে ক্ষতিটা হবে মনে হয়েছিলো সেটা হয়নি! কিন্তু ব্যাটিং? কিচ্ছু হচ্ছেনা।
____________________________________________________________________
"জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা
অন্য সবাই বহন করে করুক;
আমি প্রয়োজন বোধ করি না :
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো
এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।"
মুশফিকুর রাহিম'র চেয়ে কি ভালো কোনো কিপার বাংলাডেশে নাইককা |
মনে প্রাণে চাই এই প্রথা ভেঙ্গে যাক।
একদম ঠিক। এভাবেই অনন্তকাল ধরে আশ্রাফুল খেলে যাচ্ছে।
অন্য দিকে শাহরিয়ার নাফিস, জহুরুল এর মত হাতে স্ট্রোক থাকা খেলোয়ারদের বসিয়ে রাখা হচ্ছে।
.........
আমাদের দুর্বলতা, ভীরুতা কলুষ আর লজ্জা
সমস্ত দিয়েছে ঢেকে একখণ্ড বস্ত্র মানবিক;
আসাদের শার্ট আজ আমাদের প্রাণের পতাকা
জহুরুলকে বিশ্বকাপের পরে সুযোগ দেওয়া উচিত। সে কিপিং ও করে তবে আমি জানিনা কিপার হিসেবে কেমন। মুশফিক এতো স্টাইলিশ স্ট্যান্স নিয়েও একটা সিংগলস নিতে পারেনা। কাল্কে ১৮বলে ১ রান তুলে খেলাটা নিজের হাতে গলা টিপেছে সে
সেইটাই...
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
এরকম চিন্তাভাবনা যদি ম্যানেজমেন্ট করতো, তাইলে আমরা এখন টপ ৫ টীমের একটা থাকতাম।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আর কিছুদিন সময় লাগবে। বাংলাদের এই প্রথা ভাঙার পথে আছে বলে আমার ধারণা। সুন্দর লেখা।
প্রথা ভাঙার প্রথা চাই।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে হতাশ! পাখির মতো হালকা পাতলা শফিউল যখন ব্যাট হাতে মাঠে নামলো, ভাবতেই পারিনি এই ম্যাচটা আমরা জিতে যাচ্ছি।
ঠিক বলেছেন বালক ভাই। আমার কাছে এই মুহূর্তে ব্যাটিং এ প্রধান তিনটি গুরুতর সমস্যা মনে হচ্ছে-
এক, মিডল অর্ডার এ ধারাবাহিক ব্যর্থতা
দুই, সিঙ্গেলস নিতে না পারা
তিন, রানিং বিটুয়িন দ্য উইকেটের চরম বাজে অবস্থা।
ওপেনিং আর মাঝে সাকিব কিছু রান করাতে এই দুর্দশাগুলো আপাত কারও নজরে পড়ছেনা মনে হয়। কিন্তু এই জায়গায় ফেইল করলেই দলের ভরাডুবি ঘটছে, যার প্রমান আমরা পাচ্ছি মাঝে মাঝেই। গতম্যাচে ইমরুল একটা ভিত্তি দাড় করালেও রান নেওয়ার সময় অনেকবার মূর্খতার পরিচয় দিয়েছে। জুনায়েদকেও আমি বলব সেই আউট করেছে। এবং নিজেও আউট হয়েছে অপ্রয়োজনীয়ভাবে। তার রান নেওয়ার সময় কল দেওয়ার কিংবা কোনদিকে তাকাতে হয় সেই সেন্সওনাই মনে হয়েছে। জুনায়েদ ভালো খেলতেছিলো কিন্তু দুর্ভাগ্যের শিকার।
তিরিশ থেকে চল্লিশ, এই দশ ওভারে মাত্র একুশ রান হয়েছে! বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এক সমস্যা, ডিফেন্স মানেই মনে করে জানপ্রাণ দিয়ে ঠ্যাক, আর পাওয়ার প্লে মানে ব্যাট উচা দিয়ে হাকানো। ডিফেন্স করেও গ্যাপ দিয়ে সিঙ্গেল বের করা যায় কিংবা ব্যাট কেবল উচাতে না তুলে গ্রাউন্ড শট খেলে চার মেরেও রানের গতি বাড়ানো যায় এই জিনিসটা মনে হয় আমাদের ব্যাটসম্যান কমই জানে। উইকেট পড়ে গেলেও একমাত্র শাহজাদ ছাড়া কারও বল ঐসময় তেমন কঠিন কিছু ছিলোনা। কিন্তু মনে হচ্ছিলো ভয়েই আমাদের জান শেষ। ওভারে তিন-চারটা করে সিঙ্গেল বের করা এমন কিছু কঠিন ছিলো না। ফিল্ডিং ও ঐসময় ডিফেন্সিভ ছিলো বলা চলে। কিন্তু নিজদোষে ম্যাচটা প্রায় হাতছাড়া করে ফেলেছিলাম আমরা প্রায় যদিনা শফিউল এসে সেই অমানুষিক ইনিংস্টা খেলত।
যাইহোক জয় পেয়ে সমস্ত ভুলগুলো ভুলে গেছি কিন্তু পরের ম্যাচের আগেই এসব বিষয় শুধরে নেয়া উচিত। বারবার ভুল করা ভুল নয়, অন্যায়।
-অতীত
নতুন মন্তব্য করুন