প্রতিদিন ১৫ই আগস্ট

মেঘ এর ছবি
লিখেছেন মেঘ (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৬/০৮/২০০৭ - ১২:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজকের দিনটা ভিন্ন সে তো জানি। বাংলাদেশী বাঙ্গালী হিসেবে পৃথিবীর বুকে যতটুকু জায়গা করে নেবার কথা ছিল আমার, ধনাত্মক দিক থেকে, এদিনে তার সবটুকু উপড়ে নেয়া হয়। তারপর আরও আরও গভীর অন্ধকার। বঙ্গবন্ধু কিছু মানুষের হঠকারীতায় চলে গেলেন, শহীদ হলেন সপরিবারে। এরপর জাতীয় চার নেতা। অনেকে অনেক কথা বলবেন। আজ আমার কোন কথা শুনবার মানসিকতা নেই। এ আমার একান্ত ব্যক্তিগত বোধ। কোন বিরূপ মন্তব্য নাই বা করলেন। আপনার মতের সাথে না মিললে নীরবে অন্তত আজকের দিনটিতে চলে গেলেন লেখাটি পড়ে।

যেদিন থেকে নিজের ইচ্ছায় জাতির ইতিহাস জানা শুরু করেছি তারপর থেকে একটা কথাই মনে বেজেছে যারা এভাবে এতগুলো মানুষকে মেরেছে তাদের স্রেফ লটকিয়ে দিলে কি হয়! তাদের জন্যে আমার দেয়া টাকায কিসের বিচার বিচার খেলতে হবে? কিছু জলপাই এর ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থের জন্যে সমগ্র জাতি ৩২বছর ধরে খেসারত দিচ্ছে। ক্রসফাযারে ফেলে দিলে এমন কি হয় কর্নেল ফারুক এবং তার অন্যান্য দোসরদের? জিয়াকে তো এখন আর শাস্তি দেয়া যাবে না, তবে জিয়া তার প্রাপ্য পেয়ে গেছে কড়ায় গন্ডায়।

মনোযোগ কম ছিল আজকে, পেপারের এই কলাম সেই কলামে চোখ ঘুরে বেড়িয়েছে শুধু। মন দিয়ে একটা লিখাও পড়িনি। চ্যানেলে চ্যানেলে মাতম দেখলাম, ফখরু ইয়াজ না কি টুঙ্গিপাড়ায় যাবে না গেছে? গরু মেরে জুতা দান! হাসিনা কে গ্রেফতার করবা আর বঙ্গবন্ধুর মাজার না কবর জিয়ারত করবা! ভালো ভালো বেশ ভালো। ভালোই খেলতাছো কিন্তু আমার মতো মাথামোটা মানুষও যখন বুঝতাছি তাহলে তোমরা বেশ মোটা দাগেই ...অবশ্য ইয়াজ তো এখন আবার গণতন্ত্র বিষয়ক সেমিনারেও বক্তব্য দেয়, ওর গণতন্ত্রের জন্যে কত মায়া..............আচ্ছা ইয়াজ কোন স্কুলে বাংলা আর ইংরেজি পড়ছে? ্ওরে কে ডক্টরেট ডিগ্রি দিছে? ওরে খুঁজে বাহির করছে কে? একটা দেশের প্রেসিডেন্ট...ইয়া খোদা...একই উচ্চারণভঙ্গীতে যে বাংলা ইংরেজি দুটাই বলা যায় এটা তারে না শুনলে আমি বুঝতাম না।

সুলতানা কামাল রে কেন মারছিলো? ৩২ বছরে আরেকটা সুলতানা কামাল কোন জলপাই এর বউ এর পেট থেইকা বাহির হয় নাই। গো.আ বাঁইচা আছে আইজো কোন জলপাই তারে কিছু কয় নাই গো.আ এর পুত জলপাই এ যাইয়া দেশ চালাইতে পারব। কিন্তু তাজউদ্দিন, নজরুল, মনসুর তাদের এ দেশে বাঁচার কোন অধিকার আছিলো না। তবু জলপাই রা আমগো আইজো বন্ধু। হেরা না কি আমগো রে এবার খুব বিপদ থেকে বাঁচাইছে। বন্যায় ঝাঁপাইয়া পড়ছে...মাবুদ.....

ওহ হো, আরেকটা জিনিস দেখলাম ঢাকা শহররে না কি সিসিটিভির আওতায় আনব নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করনের লাইগা। ভাত নাই ঘরে সালুন সালুন করে...সিসিটিভি কি জলপাই এর তেল দিয়া চালাইবো? কারেন্টই তো থাকে না। আমার পেটে নাই খাওন...আর কইলাম না....

দিনটাই ছিল খিচুড়ি মার্কা। শেষ বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার পেলাম...১২টা খাদ্য দ্রব্যের আমদানীর জন্যে কেউ ঋণ নিলে ১২% এর বেশি ইন্টারেস্ট নেয়া যাবে না। গাধারা ভাবছে ব্যাংকার সুদ কম নিলে বাজারে জিনিসের দাম কমে যাবে! দাম থাকবে একই মাঝখান দিয়ে আমদানীকারকদের লাভটা আরও বেশি হবে। অনেক জলপাই ও আমদানী ব্যবসায় জড়াবে সেজন্যই পথ কিয়ার করা আর কি!রোজায় খেজুর না খাইলে কি রোজা হইবো না? খেজুর না খাইলে আমদানী কইরা কি হয়? সুগার আছে এমন ফল কি এদেশে আর একটাও নাই?

খাবলায়ে খাবলায়ে ঘু খাওয়া ছাড়া সামনে আর কোন পথ নাই - কৃষক তো ভালো মাইর খাইছে বন্যায়। তার দরকার এখন ভর্তুকি, অফেরতযোগ্য জামানতবিহীন ঋণ। সেখানে আমি কৃষিঋণের সুদের হার প্রায় ৪% বাড়ানোর ব্যবস্থা হাতে নিছি আইএমএফ (ইন্টেলিজেন্ট মাদার ফাকার) এর পরামর্শে। দারুণ আইডিয়া কি বলেন!

এই নাদানের মনে আজকে আরেকটা প্রশ্ন উঁঁকি দিছে। সায়দাবাদের ফ্লাইওভার করার যখন প্রস্তাব আসছে তখন ইসলামী ব্যাংক ৪০০কোটি টাকা বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করছিলো। ওদের এতই আইডল মানি। কৃষি ঋণটা ইসলামী ব্যাংকের সেল থেকে এককভাবে দিলে কেমন হয়? ইসলাম পসন্দদের টাকা একটা ভালো কাজে লাগলো, ব্যাংকটাও আইডল মানির হাত থেইকা বাঁইচা গেল। ধরেন এই ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হার হইলো চাইর পার্সেন্ট। আমারে মাইরেন না। আমি জাস্ট একটা প্রস্তাব দিছি হাসি

আচ্ছা জামায়াত বন্যায় মরা মানুষ গো লাইগা একবারও চউক্ষের জল ফেললো না কেন? না কি ইসলাম কইসে নূহ নবী আমলের প্লাবন না হইলে বন্যা হইছে বলিয়া চিতকার করিও না!

মনে আজকে বহুত রাগ, দুঃখও আছে। এরমাঝে জাতীয় বিচ্ রা জন্মদিন পালন করে.....গালি দিলাম না মুখে আসলেও।


মন্তব্য

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

মেঘ লিখেছেন:
হাসিনা কে গ্রেফতার করবা আর বঙ্গবন্ধুর মাজার না কবর জিয়ারত করবা

এই কথাটা পছন্দ হয় নাই ... হাসিনা আর মুজিব এক না ...

বলছিলেন পছন্দ না হইলে কমেন্ট না কইরা চুপচাপ চইলা যাইতে, কিন্তু তারপরেও করলাম, কারণ লেখার বাকি অংশটুকু যে ভাল্লাগছে সেটা বলতে ইচ্ছা করতেছিলো ...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

প্রজন্ম ফোরামে স্বর্গে যেতে চাইনা মাগো আমি গানটা শুনছিলাম। হঠাৎ করে শুনে খুব ভাল লাগল। আবার পরক্ষণেই মনটা কষ্টে ভরে গেল। বিশেষত: যখন মুজিবকে নিয়ে সচলায়তনের লেখা গুলো পড়ছিলাম। আমি অনেক মানুষের কথা জানি যারা নিজের চেয়েও বঙ্গবন্ধুকে বেশী ভালবাসে। আমার বন্ধু পার্থ'র বাসায় ড্রইং রুমের দেয়ালে তাঁর একটা বাঁধানো ছবি আছে। আমি একদিন জিজ্ঞেস করলাম এই ছবিটা কি শুধুই ভালবাসার কারণে?

বন্ধুর বাবা উত্তরে বললেন, যারা রেসকোর্সের ময়দানে ৭ই মার্চের ভাষণ শুনেছে, তাঁরা কোনদিনই এই মানুষটাকে চোখের আড়াল করতে পারবে না। আমি তাঁর চোখ দেখেই বুঝেছি এই ভালবাসার মূল অনেক গভীরে প্রোথিত।

অফটপিক হয়ে গেলেও কিছু মনে করবেন না। গানটার সাথে তাঁকে কেন যেন মিলিয়ে ফেললাম।

......
যত বড় হোক সে ইন্দ্রধনু দূর আকাশে আঁকা
আমি ভালবাসি মোর ধরনীর প্রজাপতির পাখা

মেঘ এর ছবি

মেঘ

আমি তাঁরে চোখে দেখিনি গল্প শুনে অল্প অল্প ভালোবেসেছি...কখনো সক্রিয় লীগ করিনি, এতটা বয়সে ভোট দেইনি...এইচএসসি পর্যন্ত রুমের দরজায় একটা পোস্টারই সাঁটানো ছিল, তা তাঁর বঙ্গবন্ধুর। আমি জানি বিশ্বাস করি এবং মৃতু্য তক বিশ্বাস করব ‌বঙ্গবন্ধু' না থাকলে আমি পাকিস্তানের শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফের জুতা পরিষ্কার করা চাকরানির বেশি কিছু হতে পারতাম না।

মেঘ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।