জুবায়ের কখনো কখনো সখের বসে কবিতা লিখতো, মুখে মুখে রচিত কবিতা আবৃতি করে শোনাতো, সে সব আমি জানি। কিন্তু জুবায়ের যে কখনো ছড়া লিখতো বা লিখেছিল, সেটাই আমার জানা ছিল না। এবার ঢাকা থেকে ওর প্রকাশিত হওয়া বেশ কিছু পুরনো লেখার কাটিং (যে সব কিনা ওর বোন ঝর্ণা সংগ্রহ করে রেখেছিল।) সাথে করে নিয়ে এসেছিলাম।
১৪
১৯৭১
মেহবুবা জুবায়ের
১৩
১৯৭১
মেহবুবা জুবায়ের
বাংলা খবর পড়তেন সরকার করির উদ্দিন, রাত নয়টায় বাংলা খবর হত। সাধারণত আব্বা রাতের খাবার খেয়ে তারপর খবর শুনতেন। রোজার দিন বলে নিয়মটা বদলে গিয়েছিলো। খবর শুনে তারপর রাতের খাবার খাওয়া হত। যদিও আব্বা তখন নামাজও পড়তেন না, রোজাও রাখতেন না, তবে আমাদের সাথে খুব জাঁক করে ইফতার খেতেন।
1971
পাকিস্তান আমলে প্রতিটি ইসলামি অনুষ্ঠান খুব ঘটা করে পালন করা হতো। শবেবরাত থেকে শুরু হতো উৎসবের আমেজ আর তার রেশ চলতো ঈদ পর্যন্ত। রোজা শুরুর আগেই এ্যনুয়াল পরিক্ষা শেষ হয়ে যেতো। শুরু হতো আমাদের লাগাতার ফুর্তি আর আনন্দ!
সচল আড্ডা
মেহবুবা জুবারের
অনেকদিন থেকেই ভাবছিলাম একটা সচল আড্ডা করার কথা। কিন্তু একা একা কী এসব হয়? তাই মনের ইচ্ছে মনে চেপে রেখে বড় বড় নিশ্বাঃস ফেলে ঢাকার/জার্মানীর সচল আড্ডার বর্ণনা পড়তাম, ছবি দেখতাম আর মনকে বলতাম, দেখিস আমরাও একদিন...
আমেরিকা উন্নত দেশ। ঠিক। আমেরিকা অনেক এগিয়ে গেছে। ঠিক। আগামি ৫০ বছরেও বাংলাদেশ আমেরিকার ধারে কাছে আসতে পারবে না। হয়ত সেটাও ঠিক। এতোদিন এই সব কথাই শুনে, বলে ও বিশ্বাস করে আসছিলাম, কিন্তু একযুগ পর এবার বাংলাদেশে গিয়ে সে ধারণা হলো সেটাই এখানে একটু বিস্তারিত বলার চেষ্টা করছি। তার আগে একটু গৌড়চন্দ্রিকা সেরে নেই।
প্রথম পর্ব > দ্বিতীয় পর্ব > তৃতীয় পর্ব > চতুর্থ পর্ব > পঞ্চম পর্ব > ষষ্ঠ পর্ব > সপ্তম পর্ব > অষ্টম পর্ব > নবম পর্ব > দশম পর্ব > একাদশ পর্ব
শবেবরাতের কয়েকদিন পর একদিন খুব সকালবেলা একটা চটের বাজারের ব্যাগ নিয়ে লালু মামা (আমার ছোট খালার দেবর) আমাদের বাসায় এসে হাজির হলেন। লালু মামা মানে মোজাম্মেল হক লালু, বগুড়ার দৈনিক করোতোয়ার সম্পাদক। লালু মামার মুখে শোনা...
[লালু মামা ৭১ সনে আজিজুল হক কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বা এই রকম কিছু একটা ছিলেন, অসহযোগ আন্দোলন ও বগুড়া অবরোধের সময় প্রবল আন্দোলন করেছিলেন, ফলস্বরূপ মিলিটারি বগুড়ার দখল নেবার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বগুড়া ছাড়তে হয়েছিলো। “হামি দুই ছোল দ্যাশের জন্য কুরবানী কোরিছি, তুই হামাক কথা দে যুদ্ধে যাবু না” - বাড়ি ছাড়বার সময় তাই মা'র মাথা ছুঁয়ে তাঁকে প্রতিজ্ঞা করতে হয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারবেন না।
ওরা বলতো:
ইন্দিরা পাড়লো ডিম
মুজিব দিলো তা
ডিম ফুইটা বাইর হইলো
বাংলাদেশের ছা।
আমরা বলতাম:
ইলিশ মাছের তিরিশ কাঁটা
বোয়াল মাছের দাড়ি
টিক্কা খান ভিক্ষা করে
শেখ মুজিবের বাড়ি।
প্রথম পর্ব > দ্বিতীয় পর্ব > তৃতীয় পর্ব > চতুর্থ পর্ব > পঞ্চম পর্ব > ষষ্ঠ পর্ব > সপ্তম পর্ব > অষ্টম পর্ব > নবম পর্ব
আমার নানা যখন ঢাকায় বেড়াতে আসতেন, তখন আমাদের নিয়ে তিনি রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ভেতরে প্রতিদিন প্রাতঃভ্রমণে যেতেন। মাঠটায় বার দুয়েক চক্কর দিয়ে আমরা এসে দাঁড়াতাম পেছনে আস্তাবলের সামনের যে রাস্তাটা ছিলো সেখানে। ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম সকালের কুচকাওয়াচের জন্য সহিসরা ঘোড়াগুলিকে তৈরি করছে। গা ব্রাশ করা, লেজ আঁচড়ানো, ঘাড়ের কেশর আঁচড়ানো, লাগাম পরানো আরো কতো কিছু যে করতো তারা ঘোড়াগুলিকে নিয়ে। কবে থেকে ওখানে যাওয়া শুরু করেছিলাম, ঠিক মনে করতে পারবো না; তবে জ্ঞান হবার পর থেকেই পুলিশ লাইনের ভেতর চরে বেড়াতাম।