১৯৭১

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মেহবুবা জুবায়ের [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১৯/০২/২০১২ - ৭:০৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম পর্ব > দ্বিতীয় পর্ব > তৃতীয় পর্ব > চতুর্থ পর্ব > পঞ্চম পর্ব > ষষ্ঠ পর্ব > সপ্তম পর্ব > অষ্টম পর্ব > নবম পর্ব > দশম পর্ব > একাদশ পর্ব

শবেবরাতের কয়েকদিন পর একদিন খুব সকালবেলা একটা চটের বাজারের ব্যাগ নিয়ে লালু মামা (আমার ছোট খালার দেবর) আমাদের বাসায় এসে হাজির হলেন। লালু মামা মানে মোজাম্মেল হক লালু, বগুড়ার দৈনিক করোতোয়ার সম্পাদক। লালু মামার মুখে শোনা...

[লালু মামা ৭১ সনে আজিজুল হক কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বা এই রকম কিছু একটা ছিলেন, অসহযোগ আন্দোলন ও বগুড়া অবরোধের সময় প্রবল আন্দোলন করেছিলেন, ফলস্বরূপ মিলিটারি বগুড়ার দখল নেবার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বগুড়া ছাড়তে হয়েছিলো। “হামি দুই ছোল দ্যাশের জন্য কুরবানী কোরিছি, তুই হামাক কথা দে যুদ্ধে যাবু না” - বাড়ি ছাড়বার সময় তাই মা'র মাথা ছুঁয়ে তাঁকে প্রতিজ্ঞা করতে হয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধে যেতে পারবেন না।

মা'র কথার মর্যাদা রাখতে প্রথম দিক পালিয়ে পালিয়ে বেড়ান মাস কয়েক। কিন্তু ক্রমেই পালিয়ে বেড়ানো অসহ্য হয়ে ওঠে তাঁর কাছে। মাথা ছুঁয়ে প্রতিজ্ঞা করেও তাই মা'র কথা রাখা সম্ভব হয়নি তাঁর পক্ষে। দু'জন বন্ধু নিয়ে রতনপুর হয়ে হিলি বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়া গিয়েছিলেন তিনি যু্দ্ধে যোগ দেবার জন্য।

ইন্ডিয়াতে পৌঁছে তারা খুবই অসুবিধের মধ্যে পড়ে যান। লালু মামাদের অপরাধ তাঁরা ছাত্র ইউনিয়ন করেন, আওয়ামী লীগ নয়। আওয়ামী লীগের নেতারা (সবাই নয়) তাদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ শুরু করেন। তাঁরা কোনো রকম সহযোগিতা তো করছিলেনই না। উপরন্তু কিছুতেই লালু মামারা যেন ট্রেনিং বা অন্য কোন সুবিধা নিতে না পারেন, তার জন্য সব রকম চেষ্টা-চরিত্র বজায় রাখেন। এই সব নেতারা ইন্ডিয়াতে বসে দেশ স্বাধীন করবার চাইতে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি ও হানাহানিতে ব্যস্ত ছিলো বেশি, তাদের সে সময়ের ব্যবহারে এমনটাই প্রকাশ পেতো যে, মুক্তিযুদ্ধ শুধু মাত্র আওয়ামী লীগের একার সম্পত্তি, ওখানে নাক গলানোর আর কারো অধিকার নেই। লালু মামার মুখে আরো শুনেছি, থাকা-খাওয়া নিয়ে তারা এতো কষ্টে ছিলেন যে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে, গাছের কচি পাতা আর পানি পান করে পেট ভরাতেন। তিনি অনেক চেষ্টা করেও বড়ভাই মঞ্জুরুল হকের (আমার ছোট খালু) কোনো খবর বের করতে পারেন নি, তবে “জয় বাংলার” (ইন্ডিয়াতে তখন ও ভাবেই বলা হতো) ব্যাংকের লুটের টাকায় যে হরিলুট চলছে তা নিজের চোখে দেখে এসেছিলেন। বগুড়া স্টেট ব্যাংক লুটের একজন সদস্য তপন বোম্বের নায়িকা সোনিয়া সাহনীকে বিয়ে করে তখন বোম্বে প্রবাসী। ধারণা করা যায়, লুটের টাকার একটা বড় অংশই তার ভোগে লেগেছিলো। চিত্র নায়িকা কবরী ও আজমুল হুদা মিঠু ব্যাংক লুটের টাকায় ভাগ বসিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ওপর ছবি বানাবেন বলে।]

তাঁরা ছবি বানিয়েছিলেন কিনা সে সম্বন্ধে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। হয়ত বানিয়েছিলেন। কেউ কিছু জানাতে পারবেন কি?

লালু মামাকে আমরা তেমন একটা চিনতাম না। ৭০ সালের নভেম্বরে ছোটখালার বিয়েতেই যা একটু পরিচয় হয়েছিলো। কিন্তু এবার তিনি আসলেন, দেখলেন এবং আমাদের সবার মন জয় করে নিলেন কথাটা সম্পূর্ণভাবে তাঁর জন্য প্রযোজ্য ছিলো। আমরা লালু মামার অন্ধভক্ত হয়ে গেলাম। তিনি আমাদের নিরানন্দ, বিষণ্ণ দিনগুলিকে আনন্দে হাসি-গানে ভরে দিয়েছিলেন। সারাদিন তিনি আমাদের সাথে হই-চই করতেন, হাসাতে হাসাতে পেটে খিল ধরিয়ে দিতেন। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই অন্য মানুষ হয়ে যেতেন, বলতেন তোমরা পড়াশোনা করো, আমি একটু ঘুরে আসি।

আমরা স্কুলে যেতাম না বলে আম্মা আমাদের পড়াশোনার বিষয়ে কঠিন নিয়ম বেঁধে দিয়েছিলেন। সকাল, দুপুর ও সন্ধায় খুব নিয়ম করে পড়তে বসতে হতো। খুব ভোরে ফজরের নামাজ ও কোরান শরিফ পড়তাম, তারপর বেদীন পড়ালেখা শুরু হতো। দুপুরে হাতের লেখা ও সন্ধ্যায় নিয়ম করে পড়তে বসতে হতো, তাই বেশী রাত জাগতে পারতাম না। লালু মামা কখন ফিরে আসতেন তা আর দেখা হয়ে উঠতো না। কিন্তু সকালে গেস্টরুমে গিয়ে দেখতাম তিনি উপুড় হয়ে ঘুমাচ্ছেন।

লালু মামা সাদার মাঝে নীল স্ট্রাইপ দেওয়া আন্ডারওয়্যার পরতেন। ওটাকে আন্ডারওয়্যার না বলে বক্সার শর্টস অথবা হাফ-পায়জামা বলা যায়। জানতাম কারণ আমাদের গেস্ট বাথরুমের সিস্ট ট্যাংকের ওপরে তার একটা বক্সার শর্টস মুড়িয়ে রাখা ছিলো। একটু ভেতর দিকে, পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের ওপর ভর দিয়ে পা উঁচু করে দাঁড়ালে দেখা যেতো।

আমিন আলী বলতো, “হ্যায় মুক্তিবাহিনী করে, ওইখানে বন্দুক লুকায়ে রাখছে। দেখবা?”
“ছি! আন্ডারওয়্যারে হাত দিতে বলে! মারবো একটা কিল! তুই যদি আর কখনো আমাকে কিছু দেখাস, তাহলে আমি আম্মাকে সব বলে দিবো।”
এর পরে আর কথা এগোতো না। তখন আমীন আলী আমাকে একটু ভয়ও পেতো, আমি ওকে দাবড়ানি দিলে চুপ করে যেতো।

আমাদের ছিলো পাশাপাশি দুটো গ্যারাজ। দুটো রুম আর একটা বারান্দা নিয়ে সারভেন্ট কোয়ার্টারটা ছিলো গ্যারাজের উপর। একটা ছোট্ট কাঠের সিড়ি বেয়ে উঠতে হতো। গনির বস্তির কথা আগেই বলেছি। সেটা ছিলো আমাদের গ্যারাজের ওয়ালের সাথে লাগানো। তখন বেশ শীত পড়ে গেছে। গোসল করার পর সারভেন্ট কোয়ার্টারের বারান্দায় বসে রোদ পোহাতাম, আর গনির বস্তির ভেতরের জীবনযাত্রা দেখতাম। ওদের ওই রান্না-বান্না, ঝগড়া-ঝাটি, উকুনবাছা, এই সহজ জীবনযাপনের দৃশ্য দেখতে খুব ভালো লাগতো। একদিনের কথা... লুঙ্গি-গেঞ্জি পরা একটা শুকনো কালো লম্বা ঝাঁকড়া চুলের লোক (গনি মিয়ার নতুন ভাড়াটিয়া) মাটির তোলা চুলায় মাঠির হাড়িতে রান্না করার ব্যর্থ চেষ্টা করছিলো, লোকটা চুলাতে আগুন টিকিয়ে রাখতে পারছিলো না। ফুঁকনি দিয়ে ফুঁ দিতে দিতে চোখের পানি নাকের পানিতে একাকার হয়ে যাচ্ছিলো। গনির বউ পেছনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাসছিলো, আর লোকটার কাণ্ড দেখছিলো। তারপর হাততালি দিয়ে সুর করে বলে উঠলো, "ওস্তাদ আমার মনতাজ আলী, গ্যাকো গ্যাকো, গ্যাকো গ্যাকো।” কেন বল্লো, এর মানে কী, কে জানে? আমি ওপর থেকে গনির বউকে অনুরোধ করলাম ওকে একটু রান্নায় সাহায্য করতে। শুনে গনির বউ হেসে গড়িয়ে পরলো, যেন কত হাসির কথা বলেছি। লোকটা আমাকে অবাক করে দিয়ে বগুড়ার অ্যাকসেন্টে বলে উঠলো, “দেখিছো ময়না, তুমি বোজ! উঁই বোজে না।” (বগুড়াতে খুকির বদলে ময়না বলা হতো) ঢাকা শহরে তখন বগুড়া বা নর্থ-বেঙ্গলের কোনো ফকির, রিক্সাওয়ালা, ফেরিওয়ালা, কাজের বুয়া, কামলা এসব একটাও দেখা যেত না। তাই আমি অবাক হয়েছিলাম, বগুড়ার লোক এখানে কী করছে ভেবে?(৭৪ সনে আমি প্রথম রংপুরের ভিখারী ও রিক্সাওয়ালা দেখেছি ঢাকা শহরে।)

পরে শুনেছি এই লোকটা ছিলো লালুমামার সঙ্গী। একসাথে অপারেশন করতেন দস্তোগীর ও ফেরদৌসের অধীনে। ১৫ই ডিসেম্বরের রাতের বেলা আমাদের কারপোর্চে (যদিও তার সঙ্গে লালু মামা ছিলেন না। কেন ১৫ই ডিসেম্বরে লালুমামা আমাদের পাশে ছিলেন না সেটা পরে বলছি) স্বপন মামার পাশে দাঁড়িয়ে এই কালো লোকটা স্টেনগান দিয়ে আকাশের দিকে তাক করে গুলি ছুড়েছিলো, এতো কাছে থেকে গুলির টাস-টাস শব্দ শুনে আমাদের কানে তালা লেগে গিয়েছিলো। সেদিন লোকটার পরনে লুঙ্গির বদলে প্যান্ট-শার্ট ছিলো।

লালুমামা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কি না, তা আমি জানি না। তাঁকে এমন কোনো অবস্থায় দেখিনি, যাতে করে আমি জোর দিয়ে বলতে পারবো তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি কখনো আমাদের সামনে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবিও করেন নি। দস্তগীর ও ফেরদৌস কে, তাও আমি জানি না। স্বাধীনতার পর পর এদের কথা শুনেছি, তারপর আর কোথাও এদের কথা শুনেছি বা পড়েছি বলে মনে পরে না। মুক্তিযুদ্ধের ওপর আমার পড়াশোনা নেই বললেই চলে। ১৯৯৯ সনে লালুমামা ডালাসে এসেছিলেন, আমার শ্বশুর-শাশুড়িও ডালাসে ছিলেন তখন। প্রতিদিন মধ্যরাত পর্যন্ত বাবা-মা ও জুবায়ের তাঁর সাথে মুক্তিযুদ্ধ ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলতেন। আর আমি অর্ণবকে নিয়ে পড়-পড়ে পরে ঘুমাতাম। ইশ! তখন যদি একটু শুনতাম তাহলে আজ আর তথ্য খুঁজে মরতে হতো না।

ক'দিন আগে পেপারে দেখলাম বগুড়ার প্রেসক্লাবে কী যেন ঝামেলা হয়েছে লালু মামাকে নিয়ে, খবরটা পড়ে খুব মন খারাপ হয়ে গেলো। লালু মামাদের মতো মানুষও এভাবে বদলে যায় কী করে সেটা বুঝতে না পেরে। ঠিক একই ভাবে মন খারাপ হয়েছিলো যখন শুনেছিলাম, আমার ছোটখালা-খালু জাইমা রহমানের (তারেক জিয়ার মেয়ে) জন্মদিনে তাকে সোনার পুতুল উপহার দিয়েছিলেন। এখানে তারেক রহমান বা জাইমা রহমান কোন বিষয় না, খালুদের টাকা দিয়ে তারা যাকে খুশি তাকে যা ইচ্ছা তা দিবেন, তাতে আমার বলার কী আছে? কিন্তু আমার কিপ্টে খালা-খালুর কতোটা প্রাপ্তিযোগের আশা থাকলে সেই (২০০৬) দুর্মূল্যের বাজারে সোনার পুতুলের মতো দামি একটা উপহার দিতে পেরেছেন, সে কথা ভেবে অবাক হই। আজকাল দুর্নীতিপরায়ণ বা দুর্নীতিবাজ মানুষ খুঁজতে বেশি দুর আর যেতে হয় না, নিজের পরিবারের দিকে ভালো করে তাকালেই তাদের দেখা পাওয়া যায়!


মন্তব্য

মন মাঝি এর ছবি

চলুক আগ্রহ নিয়ে পড়ছি।

****************************************

সাত্যকি. এর ছবি

আপনার লিখা আরো পড়তে হবে তো! এতদিন কেন যেন স্কিপ করে যাওয়া হতো।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

মুক্ত মানব এর ছবি

পুরো সিরিজটা এক বৈঠকে পড়লাম। এটা ই-বুক এবং ছাপার হরফে দু'মাধ‌্যমেই দেখতে চাই। অনেক ধন্যবাদ ভাবী, এ সিরিজ-টা লেখার জন্য।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
দ্যা রিডার এর ছবি

চলুক , লিখতে থাকুন ।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চলুক । ইবুক এবং গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশিত হোক

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

সত্যপীর এর ছবি

সহমত।

..................................................................
#Banshibir.

কৌস্তুভ এর ছবি

ভাবী, আপনার গল্প শুনতে আবার ওইদিনের মতই উবু হয়ে বসলাম হাসি

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

খুব ভাল লাগল ।

আমারও মত ই-বুক হোক ।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

মাঝে অনেকগুলো পর্ব মিস হয়ে গেছে। ঐগুলো পড়তে হবে।

মরুদ্যান এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- । এরকম একটা সিরিজ নিয়ে বই না হলে কিভাবে হয়?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কতোদিন পর লিখলেন, বাপ্রে!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কাজি মামুন (অতিথি লেখক) এর ছবি

আপু, আপনার সিরিজটি মাঝ থেকে পড়া শুরু করি; অবশ্য আগের পর্বগুলোও পড়ে নেই তখন। আমি কোন এক মন্তব্যে বলেছিলাম, আপনার লেখাটির ভাষার সারল্য, সহজবোধ্যতা, অনেক না জানা ইতিহাস আমাদের শহীদ জননী জাহানারা ইমামের 'একাত্তরের দিনগুলি' এর কথা মনে করিয়ে দেয়। আপনার আজকের লেখাটিও হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। আগের মন্তব্যে আশা করছিলাম, বই আকারে পাব এবারের বইমেলায়! এই সিরিজের হয়ত আরও অনেক পর্ব আছে; কিন্তু যে কটা পর্ব লিখেছেন, তা নিয়েই অত্যন্ত প্রামাণ্য একটি বই বের হতে পারত এবারের বইমেলায়।

এই সব নেতারা ইন্ডিয়াতে বসে দেশ স্বাধীন করবার চাইতে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি ও হানাহানিতে ব্যস্ত ছিলো বেশি, তাদের সে সময়ের ব্যবহারে এমনটাই প্রকাশ পেতো যে, মুক্তিযুদ্ধ শুধু মাত্র আওয়ামী লীগের একার সম্পত্তি, ওখানে নাক গলানোর আর কারো অধিকার নেই।

এটি ঢালাওভাবে সত্য নয়! তবে এমন অনেকেই ছিলেন। আর সবচেয়ে দুঃখজনক হল, এমন চিত্র আজও দেখতে পাওয়া যায়।

লালু মামার মুখে আরো শুনেছি, থাকা-খাওয়া নিয়ে তারা এতো কষ্টে ছিলেন যে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে, গাছের কচি পাতা আর পানি পান করে পেট ভরাতেন।

এসব ইতিহাস চোখে পানি এনে দেয়; সঙ্গে প্রচণ্ড ক্রোধও; ৪০ বছর পরও আমরা রাজাকারদের বিচার করতে পারিনি; উল্টো তাদের আস্ফালন শুনতে হয় আমাদের দেশেরই অতি উদার মিডিয়া জগতের কল্যাণে!

আজকাল দুর্নীতিপরায়ণ বা দুর্নীতিবাজ মানুষ খুঁজতে বেশি দুর আর যেতে হয় না, নিজের পরিবারের দিকে ভালো করে তাকালেই তাদের দেখা পাওয়া যায়!

আপু, অতি সত্যি কথা বলেছেন। আসলে আমাদের সমাজের সর্বত্রই ক্ষত। দুর্নীতির স্রোতে তলিয়ে যাচ্ছে নগর, বন্দর, গ্রাম, পরিবারসহ প্রায় সবকিছু!

রণ এর ছবি

আজমল হুদা মিঠু বাবার স্কুলের বন্ধু; বাবার কাছে শুনেছি মিঠু ব্যাংক লুটের টাকার সিংহভাগ বাগিয়েছিলেন, এবং তার প্রায় পুরোটাই বোম্বের নিষিদ্ধপল্লিতে উড়িয়েছেন।
আপনার লেখা পড়ছি, লেখার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
রণ

তাসনীম এর ছবি

আপনার এই লেখটা ছড়িয় পড়ুক সবখানে। সাধারণ মানুষের লেখা ইতিহাস ইতিহাসবেত্তাদের লেখা ইতিহাসের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। এই সিরিজটা ই-বুক এবং পুস্তক দুই ভাবেই প্রকাশ করতে আমি অনুরোধ করব।

ভালো থাকুন ভাবি।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

তানিম এহসান এর ছবি

এই সিরিজটা অন্যরকম একটা প্রণোদনা দেয় প্রতিবার। আপনার জন্য শুভকামনা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।