ঔপনিবেশিক ইংরেজের জাহাজে কেউ ঢিল মারলেই তাকে পাইরেট ডাকা হত, যার ঢিল যত বড় সে তত বড় নটোরিয়াস পাইরেট। এইরকম এক দুর্ধর্ষ পাইরেট ভারতের পশ্চিম উপকূলে ইংরেজকে খুবই বিরক্ত করতো, তার নাম কানোজী আংরে। মারাঠা নৌবাহিনীর অ্যাডমিরাল। বম্বে থেকে সাভান্তওয়াড়ি পর্যন্ত আস্ত পশ্চিম ভারতীয় উপকূল ছিল তার সাম্রাজ্য, ১৭২৯ সালে মৃত্যুর আগ অবধি প্রবল প্রতাপশালী নৌ পরাশক্তি ইংরেজ, পর্তুগীজ আর ওলন্দাজের সাথে যুদ্ধে তিনি ছিলেন আনডিফিটেড চ্যাম্পিয়ন।
কানোজীর শৈশব সম্পর্কে অল্পই জানা যায়। তার পিতা টুকাজী মারাঠা লিডার শিবাজীর বাহিনীতে যোগ দেন ১৬৫৮ সালে, নানাবিধ যুদ্ধে অ্যাকশন ট্যাকশন দেখিয়ে পদোন্নতিও হয় তার দ্রুত। তাকে গুরুত্বপূর্ণ নৌ মিলিটারি পোস্ট স্বর্ণদূর্গে পাঠানো হয়, এখানেই কানোজী চোখ মেলে বেড়ে ওঠেন। তার দিন কাটে সাগরের তীরে জাহাজ তৈয়ার দেখে, নাবিকদের খুব কাছে থেকে দেখে ছোটবেলা থেকেই তার সাগরের জীবন সম্পর্কে ধারণা পোক্ত হয়।
১৬৯৮ সালে তাকে সরখেল অর্থাৎ অ্যাডমিরাল পদে বসানো হয়, তাকে দরিয়া সারেং ও ডাকা হত। পশ্চিম উপকূলের সর্দার হবার পর প্রথম প্রথম তিনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর জাহাজ ছুঁতেন না, কিন্তু পরে আরেকটু পাকনা হয়ে ১৭০২ সালে তিনি ৬ ইংরেজসহ কোম্পানীর নৌকা পাকড়ে নিজের বন্দরে নিয়ে যান। হাঁ হাঁ করে বোম্বে থেকে কোম্পানীর লোক খবর পাঠায় যেন কালবিলম্ব না করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। কানোজী সেই অনুরোধ উপেক্ষা করেন এবং বোম্বে কুঠিতে খবর পাঠান যে তিনি তাদেরকে আংরে নামটা সারাজীবন মনে রাখার ব্যবস্থা করবেন।
১৭০৪ সালে তিনি নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করেন। বোম্বে কাউন্সিল হুমকি দেয় কোন অবস্থাতেই যেন বোম্বে উপকূল এলাকায় ইংরেজ জাহাজ তল্লাস বা আটক না করা হয়, ইংরেজ ঐ এলাকা নিজের খাসতালুক বলেই মনে করত। কানোজী পাল্টা বলে পাঠান যে এলাকা তার নিজের, সুতরাং তার দস্তক নিয়েই সকল জাহাজ চলবে। অন্যথা হলে যেখানেই জাহাজ সেখানেই কষা মাইর। তিনি তার কথা রেখেছিলেন।
১৭০৭ সালে তিনি বোম্বে ফ্রিগেট আক্রমণ করে উড়িয়ে দেন। ১৭১০ সালে বোম্বের কাছে কান্নারি দ্বীপ (বর্তমানে খান্ডেরি) দখল করেন, ব্রিটিশ জাহাজ গোডলফিনের সাথে দুইদিন তুমুল যুদ্ধ চলে। ইংরেজ বীরত্বের সাথে পলায়ন করে, যাকে বলে বাহাদুরিকে সাথ হটনা। তারা পরে দাবী করে যে তারাই হুড়ো দিয়ে কানোজীকে ভাগিয়ে দেয়। বৃহৎ ইয়োরোপীয় জাহাজের সাথে দিনের পর দিন যুদ্ধ করলেও কানোজীর ফ্লীটের পক্ষে তা দখল করা সম্ভব ছিল না, কারন তার বেশিরভাগ জাহাজ ছোট সাইজের দ্রুতগামী মিলিটারি বোট। গভীর জলের বৃহৎ জাহাজের সাথে সম্মুখ সমরের বদলে আতকা ঝটিকা ফাইট দিতেই তারা পটু। তাই গোডলফিন পার পেয়ে যায়।
১৭১২ সালের নভেম্বরে তিনি কান পাকড়ে ধরে আনেন বোম্বে গভর্নরের সশস্ত্র ইয়ট, এক মাস পরে গোয়ার উত্তরে দুই কোম্পানীর লোক আটক করা হয়। এইসব ঘটনার কিছুদিন আগে কানোজী একটি বৃহৎ পর্তুগীজ আর্মাডার কয়েকটি জাহাজ দখল করেন, বিপুল পরিমান কামান বারুদ সহ। এই ঘটনায় ত্যক্ত হয়ে পর্তুগীজ বলে হে আমার ইংরেজ ব্রাদার, আইস দুইজনে মিলে কানোজীর সানডে মানডে ক্লোজ করে দেই। উন্নাসিক ইংরেজ গভর্নর এইস্ল্যাবি সেই অফার প্রত্যাখ্যান করেন, নোংরা পর্তুগীজের সাথে আবার কিসের প্যাক্ট।
কানোজী বোম্বেতে তিরিশ হাজার রূপী দাবী করে বন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে, ইংরেজ সেই টাকা পাঠায়। মুক্তি পায় ইয়োরোপীয় বন্দীর দল। তখন চুক্তি হয় ইংরেজ কানোজীর মধ্যে। চুক্তি অনুযায়ীঃ
১. কোন ইংরেজ জাহাজ কানোজী আক্রমণ করবেনা
২. মাহিম হতে বোম্বে পর্যন্ত কেউ কারো জাহাজে হাত দেবেনা
৩. রেগুলার দস্তক পরিশোধ করে ইংরেজ সওদাগরেরা কানোজীর সকল বন্দরে বাণিজ্য করতে পারবে
৪. যেকোন মারাঠা জাহাজ ইংরেজ জাহাজ আক্রমণ করলে তার দায় নিতে কানোজী বাধ্য থাকবে
৫. ইংরেজ বন্দরে মারাঠারা পাস কিনে বাণিজ্য করতে পারবে।
কানোজী এই সকল শর্ত মেনে নেন, কিন্তু তার প্রস্তাবিত অন্যান্য শর্ত ইংরেজ মেনে নেয়নি। সেগুলো ছিলঃ
১. কোম্পানীকে মূল্য বুঝিয়ে দেবার সাথে সাথে তারা তাকে বারুদ বিক্রয় করবে
২. একটি জায়গা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হবে তাকে বারুদ ফ্যাক্টরি গড়ার জন্য
৩. শত্রু আক্রমণ করলে ইংরেজ তাকে সাহায্য করবে
৪. সওদাগরি জাহাজ বোম্বে বন্দরে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে না।
সুতরাং এই চুক্তি চূড়ান্তরকম একতরফা, কানোজীকে কোনঠাসা করাই এর উদ্দেশ্য। ভেতরে ভেতরে ফুঁসে উঠতে থাকেন কানোজী, সুযোগের অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি।
জড়ো করা হয় শক্তিশালী জাহাজ, প্রতিটায় বসানো হয় ৩০ থেকে ৪০টি কামান। বাহিনীর চিফ গানার হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় এক দূর্দান্ত ওলন্দাজকে। আরো চাকরি পায় জ্যামাইকান দুর্ধর্ষ পাইরেট জন প্ল্যান্টেইন, তাকে করা হয় দ্রুতগামী মিলিটারি নৌকা ফ্লীটের প্রধান। এদের অল্প বেতনের ব্যবস্থা করা হয়, আর ডিল হয় যে লুটপাটের তিন চতুর্থাংশ তাদের।
১৭১৭ সালে বোম্বের গভর্নর চার্লস বুন ঠিক করলেন কানোজীর ঘাঁটি বিজয়দূর্গ আক্রমণ করতে হবে। ক্যাপ্টেন বার্লোর অধীনে শক্তিশালী ব্রিটিশ ফ্লীট বিজয়দূর্গ অভিযানে গেল, সেখানে মারাঠা বাহিনী তাদের দেয় বেধড়ক পিটুনি। অধিকাংশ ইংরেজ নাবিক সিপাই অক্কা পায়, বাকিরা এদিক ওদিক পালিয়ে বাঁচে। মরিয়া ক্যাপ্টেন বুন ১৭১৮ এর নভেম্বরে আবার হামলা করেন। তার জাহাজ বন্দরে যাবার সময় তেমন গুলিগোলা চলেনি, কিন্তু পার্শ্ববর্তী বীচে জাহাজ ভিড়ানো মাত্রই গর্জে ওঠে স্ট্র্যাটেজিক্যাল লোকেশনে বসানো মারাঠা কামান। টানা গুলি চালিয়ে ইংরেজের হালুয়া টাইট করা হয় এবং পুনরায় তারা দূর্গের ধারেকাছেও না গিয়ে উল্টোদিকে পালাতে বাধ্য হয়।
আতঙ্কিত বোম্বে গভর্নর মহান ইংল্যান্ডের রাজার কাছে রিইনফোর্সমেন্ট চেয়ে পাঠান, বোম্বে মেরিনে যোগ দিতে আসে কমোডর ম্যাথিয়াসের নেতৃত্বে চারটে রাজকীয় রণতরী। মরিয়া ইংরেজ দুশমনি ভুলে ডাক দেয় পর্তুগীজকে, একত্রে তারা বিজয়দূর্গের মাইল পাঁচেক দূরে কোলাবা আক্রমণ করে। অক্টোবর ১৭২২ এর কথা। সম্মিলিত ইয়োরোপীয় শক্তির পুটুতে সাফল্যের সাথে রামলাথি কষিয়ে এবারেও তাদের বিতাড়িত করে দুর্ধর্ষ মারাঠা বাহিনী। আক্রান্ত জাহাজ, গোলাবারুদ ইত্যাদি মারাঠাদের হাতেই রেখে পালাতে বাধ্য হয় ইংরেজ পর্তুগীজ।
ছবিঃ বিজয়দূর্গ আক্রমণকারী ইংরেজ পর্তুগীজ যৌথ বাহিনী
অন্য পরাক্রমশালী ইয়োরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তি ওলন্দাজকেও ক্ষেপিয়ে দিয়েছিলেন কানোজী, তাদের কিছু জাহাজ তিনি দখল করেন। ১৭২৪ সালে এবার দূর্গ আক্রমণ করে ওলন্দাজ বহর, তাদের ছিল সাতটে শক্তিশালী জাহাজের স্কোয়াড্রন। প্রত্যেক জাহাজে পেরেক মারা ছিল ৩০ থেকে ৫০টি বৃহৎ কামান। যথারীতি এদেরকেও পিটিয়ে তক্তা করা হল।
মারাঠা ফ্লীটের জাহাজের থেকে ইংরেজ, পর্তুগীজ, ওলন্দাজ এমনকি মোগল জাহাজও বড় ও শক্তিশালী ছিল, তবু কানোজীর বাহিনীর এই অপ্রতিরোধ্য গতির কারণ ছিল তার নিজস্ব ট্যাকটিকস। তার জাহাজগুলি ছিল ছোট ও দ্রুতগামী, যেকোন আক্রমনে তারা বড় জাহাজকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে করতো পাইকারি অ্যাটাক। আক্রান্ত জাহাজের গানার কোনদিকে কামান ফিরাবে সেইটা বুঝতে বুঝতেই দড়ি বেয়ে উঠে আসতো মারাঠা সিপাইরা, আর সবাইকে মেরে পিটিয়ে বারুদ সোনা লুট করে জাহাজে আগুন ধরিয়ে যেভাবে এসেছিল সেভাবেই দ্রুত পালিয়ে যেত কানোজীর লোক। খাঁটি ব্লিৎজক্রিগ।
এই ট্যাকটিকসের দুর্বল দিকটা হল, কানোজীর নৌবাহিনীকে সর্বদা উপকূল এলাকার কাছাকাছি থাকতে হত। তার জাহাজ গভীর সমুদ্রে অপারেশনের উপযোগী ছিলনা। তাই প্রায়ই দেখা যেত ইংরেজ পর্তুগীজ জাহাজ তার ধাওয়া খেয়ে গভীর সাগরে পালিয়ে গেছে। মারাঠারা মাইলের পর মাইল খোলা জলে লড়াই করার মত জাহাজ তৈরী করেনি, তাই তাদের বিচরন ছিল মোটামুটি ভারতের পশ্চিম উপকূল ঘিরে।
…..........................................................................................
সূত্রঃ
১. রাজারাম নারায়ন সালেতোর, Indian Pirates: From the Earliest Times to the Present Day
২. সত্যেন্দ্র সিং, Blueprint to Bluewater, the Indian Navy, 1951-65
৩. কে শ্রীধরণ, Sea: Our Saviour
৪. কে কে এন কুরুপ, India's Naval Traditions: The Role of Kunhali Marakkars
৫. যোগেশ শর্মা, Coastal Histories: Society and Ecology in Pre-modern India
ছবিসূত্রঃ উইকিমিডিয়া
মন্তব্য
আপনাকে যদি স্কুলের ইতিহাস বই লিখতে দেয়া হত,ইতিহাসকে মনে হয় আমি এত অপছন্দ করতামনা। আপনার লিখা রীতিমত গিলে খাই।
যেমনে আছে তেমনেই থাকুক। ইস্কুলের ইতিহাস লিখতে দিলে আবার বীরের বর্ণনা দিতে গিয়ে 'দুই হাতে দুই বন্দুক ডান হাতে পিস্তল' লিখতে হবে
ব্যাপক লজ্জা দিলেন বন্দনাপু!
..................................................................
#Banshibir.
বস আপনে আসলেই সৃজনশীল ইতিহাসে একটা বই লিখতে পারবো। আপনার লেখা পড়ার আগে আমি ইতিহাসরে হাসের মত খাইয়া নির্বংশ করার মতলবে আছিলাম। পুরা স্কুল লাইফটা ইতিহাস যে পেইন দিছে!!
লেখা অইত্যন্ত্য ভালো হইছে। স্ট্র্যাটেজিক গেম প্লেটা আমার জোস লাগছে। আগে এইজ অব এম্পায়ারে এমন চিকনা বুদ্ধির কিছু খেলা দিতে হইতো। একবার কিলোপ্ট্রারে লগে বিশাল ফাইট দিছিলাম-মনে আছে। বেটি খালি আমার বন্দর (গেমে কয় ডক) জ্বালাইয়া দেয় আর বেটির লগে জোট বান্ধছিলো এক রাজা, হ্যায় আমার টাউনহল এট্যাক দেয়। পরে এক কাহিনী কইরা দুইটারে পুরা জ্বালা্ইয়া পুড়াইয়া মারছিলাম। (মনে করতেই কী আনন্দ লাগতেছে)
খালি টাইমিং টা ভুল হইয়া গেছে আগে জন্মাইলে আজকে সত্যপীর আইলসা কাংরের কাহিনী লিখতো।
বস, "পুটুতে রামলাথি" টা জটিল হইছে।
বি.দ্র: যদি সত্যই ইতিহাস বই লেখেন আমার নামটা কোনা দিয়া একটু ঢুকাইয়া দিয়েন, আমি তো ধরেন জুলিয়াস, নেপোর মতই মেধাবী খালি প্রস্ফুটিত হ্ইতে পারে নাই। লাগলে একবেলা খাইয়্য দিমু নে। প্রস্তাবটা বিবেচনা কইরেন ভাইডি।
_____
আইলসা
ইতিহাস বই লিখার সম্ভাবনা শুন্য, সুতরাং কল্পনার বিরানিতে ঘি যোগ করতে দোষ কি? দিমুনে আপনের নাম ঢুকায়া.
..................................................................
#Banshibir.
ভারতবর্ষের নৌশক্তি বরাবরই দুর্বল। ভারতের কয়েক হাজার বছরের জ্ঞাত ইতিহাসের মধ্যে সমূদ্রবাণিজ্যের কথা যথেষ্ট জানা গেলেও নৌবাহিনীর অস্তিত্ত্ব আতশী কাচ দিয়ে খোঁজার মতো ব্যাপার। উল্লেখ করার মতো প্রথম ভারতীয় নৌশক্তি ছিল কালিকটের সামোথিরিদের। ১৫২০ সাল থেকে ১৬০০ সাল পর্যন্ত সামোথিরিদের চার জন অ্যাডমিরাল বা “কুন্হালী মারাক্কার)-এর নাম জানা যায়। এরা হচ্ছেন কালানুক্রমে কুট্টি আহ্মাদ আলী, কুট্টি বাক্কার আলী, পাত্তু, মুহাম্মাদ আলী। ইনারা ইতিহাসে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ কুন্হালী মারাক্কার হিসেবে পরিচিত। মারাক্কারগণের পূর্ব পুরুষ উত্তর আফ্রিকা থেকে আগত এবং তাঁরা ধর্ম বিশ্বাসে ছিলেন মুসলিম, যদিও সামোথিরি ছিল মালয়লী হিন্দু রাজাশাসিত রাজ্য। ভারতে পর্তুগীজদের বেড়ে ওঠার সময়ে মারাক্কারগণ তাদেরকে যথেষ্ট দৌড়ের উপর রেখেছিলেন। গোলমালটা বাঁধে চতুর্থ মারাক্কার মুহাম্মাদ আলী, তাঁর উগ্র মোল্লাগণ ও তাঁর গে-পার্টনার চীনালি (এটি নাম নয়, জাতিতে চীনা তাই চীনালি নামে পরিচিত) যখন দায়িত্বে আসেন। মুহাম্মাদ আলী নিজেই তখন সামোথিরির মসনদে বসতে আগ্রহী হয়ে যায়। মারাক্কারদের কথা আমি আর কিছু না বলি, সত্যপীরের জন্য এটা হোমটাস্ক হিসেবে থাকলো।
কাহ্নজী আঙরে হচ্ছেন একমাত্র ভারতীয় অ্যাডমিরাল যিনি ভারতের মূল ভূখণ্ডের বাইরে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে ঘাঁটি গেড়ে হানাদার ইউরোপীয়দের ঢিঁট করেছেন। ব্রিটিশরা আন্দামানে উপনিবেশ স্থাপন করতে পারে তাঁর মৃত্যুর ৬০ বছর পরে।
কাহ্নজীর জন্ম ১৬৬৯ সালে মারাঠা রাজ্য কঙ্কনের হর্নাই গ্রামে। কাহ্নজীর বাবার নাম তুকোজী শঙ্কপাল, মায়ের নাম অম্বা বাঈ। এই দম্পতি দীর্ঘদিন নিঃসন্তান থাকলে অম্বা বাঈ শ্রী কানিপনাথের মন্দিরে প্রার্থনা করে এই প্রতিজ্ঞা করেন হোমের অগ্নির (অঙ্গারের) কল্যাণে তিনি সন্তান লাভ করলে সেই সন্তানের পদবী দেবেন ‘অঙ্গার’। পরবর্তীতে কাহ্ন জন্ম নিলে তাঁর পদবী রাখা হয় অঙ্গার। সেই অঙ্গার থেকে অঙ্গারে, এবং তার থেকে আঙরে। সমূদ্রের প্রতি কাহ্নজীর আগ্রহটা তাঁর পিতা তুকোজীর কাছ থেকে পাওয়া। ছত্রপতি শিবাজীর সুবর্ণ সময়ে তুকোজী তাঁর নৌবাহিনীতে ছিলেন। কাহ্নজী মারাঠা নৌবাহিনীকে তার গৌরবের শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিলেন। কাহ্নজী পরবর্তীকালে মারাঠাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে উঠলে সমূদ্রের দিকে নজর দেবার মতো কোন মারাঠারাজ ছিলেন না। ফলে ভারতের সমূদ্র খুব দ্রুতগতিতে ইউরোপীয়দের করতলগত হয়ে পড়ে।
সমূদ্রে আধিপত্য বিস্তারের জন্য দরকারী গভীর সমূদ্রে চলার উপযুক্ত যুদ্ধজাহাজ, দ্রুত আক্রমণ করার উপযুক্ত ছোট ও হালকা নৌযান, সমূদ্রে যুদ্ধ করার উপযুক্ত অস্ত্র-শস্ত্র এগুলো কোনটার জন্যই ভারতে কোন গবেষণা ছিল না। ফলে ইউরোপীয়রা যখন সারা দুনিয়ার সমূদ্র দখল করছে ভারত তখন নিজের উপকূল সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছে। আজ পর্যন্ত ভারতবর্ষের কোন দেশের নৌশক্তি খুব গর্ব করে বলার মতো কিছু না। ভারতীয় নৌবাহিনী শক্তিশালী হলে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শক্তিকে হয়তো আরো অনেকদিন ঠেকিয়ে রাখা যেতো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
হোমটাস্ক নিলাম পান্ডব দাদা, দেখি পাইরেটস অফ ইন্ডিয়া টু নামানো যায় কিনা.
শক্তিশালী নৌবাহিনী গঠনের চিন্তা ভাবনা নাকি টিপু সুলতান করেছিলেন, কিন্তু নানাবিধ গিয়ানজামের জন্য তা বাস্তবে রুপান্তরিত হয়নি.
..................................................................
#Banshibir.
পাণ্ডবদার মন্তব্যে
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
"কাহ্নজী আঙরে হচ্ছেন একমাত্র ভারতীয় অ্যাডমিরাল যিনি ভারতের মূল ভূখণ্ডের বাইরে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে ঘাঁটি গেড়ে হানাদার ইউরোপীয়দের ঢিঁট করেছেন।"
প্রশ্ন হল মারাঠা ফ্লিটে আন্দামানে যাবার মত জাহাজ ছিল কিনা।
নৌশক্তিতে ভারতবর্ষ দুর্বল কেন সেটা ভাবতে গিয়ে একটা জেনারালাইজড ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছি। আদিকাল থেকে ভারতবর্ষ সম্পদের দেশ বলে পরিচিত। এই সম্পদের দেশ আবিষ্কার করতে ইউরোপীয়ানরা গোটা দুনিয়া চষে ফেলেছে মহাসাগর পাড়ি দিয়ে। শত শত জনপদ মহাদেশ আবিষ্কার করে ফেলেছে। সেটা করতে গিয়ে তাদের নৌপথে শক্তিবৃদ্ধি করতে হয়েছিল। ফলে পরবর্তীকালে তারাই দুনিয়ার শক্তিমানে পরিণত হয়েছে। আমরা তো নিজেরা নিজেদের ডেকচিতে নিজেদের চুবানোতে ব্যস্ত ছিলাম। ফলে আবিষ্কারের দিকে আমাদের মন যায়নি। প্রযুক্তি কিংবা শক্তি কোনটার প্রবৃদ্ধি ঘটেনি।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
দারুণ। এরপর ??
স্টে টিউনড, সুরের মধ্যে থাকেন. দেখি এরপর কি নামানো যায়.
..................................................................
#Banshibir.
হুম...
আচ্ছা ওনাদেরও কী চোখে ঠুলি- নিষিদ্ধ পতাকা এইসব ব্যাপার-ট্যাপার ছিল...
কড়িকাঠুরে
আরে ধুর না, এরা ঠুলি পরা পাইরেট হবে কুন দুঃখে. এনারা খাঁটি সোলজার. কইলাম না মারাঠা নৌবাহিনী. ইংরেজ মারামারিতে পারত না তাই রাগ করে পাইরেট ডাকত.
..................................................................
#Banshibir.
ঠুলি-টুলি দিয়া কইলাম এই কালের নায়কের কথা বুঝাইছি । যেমুন মুনে করেন জ্যাক স্প্যারো, এডা পিস- তাপস দা'ও দেখলাম কইছে । বাড়তি এডভেঞ্চার- এডভেঞ্চার গন্ধ আরকি ।
কড়িকাঠুরে
চলুক ইতিহাস
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কইলেন যখন
..................................................................
#Banshibir.
আপনাকে প্রায়শই দেখি ইতিহাস বিষয়ক লেখা লিখতে। আপনি কি ইতিহাসের ছাত্র?
ভালো লাগলো লেখাটা্। কিছু জানতে পারতেছি পড়ে.. আরো পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
না ভাই আমি ইতিহাসের ছাত্র না.
..................................................................
#Banshibir.
আপনার প্রতিটি লেখাই আগ্রহ নিয়ে পড়ি এবং বোনাস হিসেবে প্রায়শঃই ষষ্ঠ পান্ডবের কিছু লেখা মন্তব্য আকারে পাই।
একটু জিজ্ঞাস্যঃ এই সমস্ত বই কই পাওয়া যায়?
ভাল থাকবেন।
গুগল বুকসে পাবেন.
..................................................................
#Banshibir.
আপনি তো ফাটাফাটি লিখেন!
খুবই ভালো!!
পরের লেখা কবে আসিবে??
লিখেন লিখেন লিখেন!!!
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
বিয়াপক লজ্জা দিলেন সুরঞ্জনাপু.
..................................................................
#Banshibir.
খাড়ান, এইমাত্র সম্রাট বাবরের কবর জিয়ারত করে মোঘলাই জোশ গায়ে মেখে আসলাম। আপনারে দেখতাছি।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
বাবুর বাদশা ব্যাপক নাক উঁচা পাবলিক ছিল,আমাগো দেশটারে সে খুবই গালমন্দ করে গেসে. ব্যাটা বদ.
অফ টপিক, বাবুর বাদশার কবর নিয়া ছবি ব্লগ ছাড়েন না.
..................................................................
#Banshibir.
জীবানু রত্নার লেখা পড়ে মনে হয় বিজ্ঞান কতো না রসে টুইটুম্বুর। আর আপনার লেখা ইতিহাস পড়ে মনে হয় এরাম লেখা আগে পেলে ইতিহাস নিয়েই মনেহয় পড়ে থাকতাম। এইখানেই লেখকের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব - পাঠকের পরিতৃপ্তি।
চালিয়ে যান। এভাবে এক নিঃশ্বাসে পড়ার মতো করে ইতিহাস গুলোকে রেখে দিন সচলে। ভবিষ্যত প্রজন্মকে আমি পড়তে দেবো - বিজ্ঞান নিয়ে রত্না'র, ইতিহাস নিয়ে আপনার আর ভ্রমন নিয়ে তারেকানু'র লেখা। আপনারা একেকটা মাল রে ভাই পুরাই মাল ... ... ...
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
আপ্নে HDR নিয়া দুর্দান্ত এক্সপেরিমেন্ট কইরা ছবি পোস্ট দিয়া আবার সেগুলার কারিকুরিও শিখাইতেসেন, আমি তো খালি দুইটা ইংরেজী বই তর্জমা করলাম। আমি মাল হৈলে আপ্নে তো আস্তা মালগাড়ি!
তবে তারেকাণু অন্যায্যদা মাল ঠিকই।
..................................................................
#Banshibir.
সচল মালে মালে সয়লাব দেখি
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
কিসু মাল আবার থ্রি-ডি
..................................................................
#Banshibir.
ইন্টারেস্টিং
-------------------------------------------------
ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
খুবই।
..................................................................
#Banshibir.
সমুদ্রের গুন্ডাগো ভালু পাই।
তয় এতদিন আমার চোখে একমাত্র হিরো আছিল ক্যাপ্টেন জ্যাক স্পেরো। এখন দেখি নূতন যুক্ত হৈল পীর বাবার কল্যাণে। পীরিতিহাস অব্যাহত থাকুক।
ডাক্কুগো নিয়া আরো কাহিনী শুনতে মঞ্চায়।
ডাকঘর | ছবিঘর
আপনেও দেখি ইংরেজদের লাহান ডাকু গুন্ডা ডাক পারতে আসেন. ভাইসাহেব কিন্তু বড় এডমিরাল আসিলেন
..................................................................
#Banshibir.
আরে নাহ, মিয়া। আমি এমনিতেই অগো গুন্ডা কৈতে ভালু পাই। তয় আমি বরাবরই গুণ্ডাদের দলে থাকি।
ডাকঘর | ছবিঘর
খেক খেক. গুন্ডামি ভালু না.
..................................................................
#Banshibir.
সৌরভ কবীর
..................................................................
#Banshibir.
আপনে একটা বস লুক!
বাংলাদেশের নৌ বাহিনির সদর দফতর ঢাকায় তৈরি করার পিছে যে ট্যাকটিক্যাল অ্যাডভানটেজ আছে ওইটা নিয়া একটা লেখা নামায়েন সময় পাইলে।
ঢাকায় নেভির হেডকোয়ার্টার করার পিছে আমি তো একখান ট্যাকটিকাল এডভানটেজই দেখি যে অফিসারের পুলাপান নামী ইস্কুলে পড়তে পারে আর ভাবিরা ভালো ভালো শপিং সেন্টার এ কিনাকাটি করতে পারে. আর কোন ফায়দা তো দেখিনা.
তয় হেড অফিসের সামনে বড় নোঙ্গর ভালু পাই.
..................................................................
#Banshibir.
জানতাম (ইংরেজদের) আচ্ছা করে প্যাদালেই সব ঠিক| বাহ কি সরস সুখপাঠ্য ইতিহাস।
[টিপু সুলতান কিন্তু যুদ্ধ কৌশলকে আধুনিক করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন| কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, যখন উনার দুর্গ দেখতে গেলাম, তখন একমাত্র ধ্বংসস্তুপ ছাড়া কিছুই দেখলামনা| ইংরেজরা পুরো মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে| আর বাকিটুকু সময়ের সাথে সাথে মিশে গেছে| এখনও কিছু ভাঙ্গা দুর্গ দেয়াল বোঝা যায়| আর আছে সেই "ওয়াটার গেট"। কথিত যে এই গেট দিয়েই ইংরেজরা দুর্গে পঙ্গপালের মতো ঢুকে পড়েছিল। টিপুকে যেখানে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় সেখানে শুধু একটা স্মারক সৌধ আছে|]
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
মারাঠা ইংরেজ মোগল দুটোকেই পিটিয়েছে আচ্ছা মতন.
টিপু সুলতানকে নিয়ে সবুজ পাহাড়ের রাজার খুব ভালো পোস্ট আছে, আমার লিখার দরকার দেখছিনা. ভদ্রলোকের মাথায় বুদ্ধি ছিল আর ছিল সেটা খাটানোর ক্ষমতা.
..................................................................
#Banshibir.
সবুজ পাহাড়ের রাজা অনেকদিন ধরেই অনুপস্থিত| খোমাখাতাতেও দেখা নেই| আজকেই খোঁজ করছিলাম| জানেন নাকি কোনো খবর?
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
নাহ রাজামশাই এর আসলেই কোনো খবর জানিনা অনেকদিন.
..................................................................
#Banshibir.
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
..................................................................
#Banshibir.
দারুণ।
একদিন ভাঁটিতে, আমার গ্রামে ফিরে যাব। তারপর একটা ডিঙ্গি নৌকায় পাল টানিয়ে, পালের খুটিতে একটা গরুর খুলি আর নিজের চোখে একটা সানগ্লাস লাগিয়ে "পাইরেট অফ হাওর" হয়ে যাব। আমার ইতিহাস লিখার জন্য আপনারে বুকিং দিয়া রাখলাম।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
গরুর খুলি!!!
ঠিকাসে সজল ভাই, করি লান। এরপরে আমি লিখা দিমু "গরুমারা সজলু পাইরেটের কিচ্ছা"
..................................................................
#Banshibir.
কিংবা "সজলু, দ্যা গরুমারা পাইরেট" !! খেক খেক !!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আপনাদের কমেন্ট পড়ে সানগ্লাস পড়ে আয়নার সামনে থেকে ঘুরে আসলাম।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
ভাই আমার "কাঠুরিয়া কাহিনি"র কথা ভুলুইন্না জানি...
কড়িকাঠুরে
ইতিহাসকে সহজ সরল ভাষায় আমাদের পাচনযোগ্য করে পরিবেশন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পড়তে স্বচ্ছন্দ্যবোধ করি। অনেক অনেক লিখুন।
ভাল থাকুন, আনন্দে থাকুন।
অনেক ধন্যবাদ
..................................................................
#Banshibir.
আবারো কই-
বই হিসেবে পড়তে চাই
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
আপনে সপ্তায় একটা কইরা ইতিহাসপাতাল দেন আমি বইয়ের কথা ভাইবা দেখুম
..................................................................
#Banshibir.
তরতরিয়ে পড়া যায় আপনার লেখা, বড় মুচমুচে।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
মুচমুচা লিখা কচকচ কৈরা খায়ালান
..................................................................
#Banshibir.
বরাবরের মতই, ভাল লাগলো
ধন্যবাদ তানিম ভাই, আছেন ভালো?
..................................................................
#Banshibir.
আপনার হোমটাস্কের কথা আপনাকে মনে করিয়ে দেবার মহান দায়িত্ব নিজ স্কন্ধে নিলাম ।
মন্তব্য করাও যে একটা শিল্প, সেটা আপনি আর উদাস দাদা আমাকে অনুভব করিয়েছেন। সচলের আরো অনেকের মন্তব্যই খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি, ভালো লাগে তবে আপনারাই শীর্ষস্থানীয়। আপনার লেখা যেমন ঝকঝকে রোদের মত, মন্তব্য আর প্রতিমন্তব্যগুলোও তেমন চকচকে।
সবকিছু মিলে একদম ভো-কাট্টা।
বাপরে প্রশংসার বন্যায় ভাসায় দিলেন দেখি, আপ্নেরে ধইন্যা দিলে চইলত না এই দিলাম আস্তা ধইন্যা ক্ষেতঃ
আর আমার কাছে ব্লগের আসল মজাই মন্তব্যের মাঠ, কতরকম মজার মানুষ কতরকম কথাবার্তা...এই মজা আর কই আসে বলেন দেখি?
..................................................................
#Banshibir.
হুমম, ঠিক বলেছেন, মন্তব্য পড়তে মজা লাগে।
এত ধনেপাতা ! আপনারে ধনেপাতার চাটনীর দাওয়াত দিলাম। আমি অনেক চাটনী বানাবো, ধীরে ধীরে তারিয়ে তারিয়ে তার স্বাদ উপভোগ করব আর ব্লগ পড়ব।
ঔপনিবেশিক ইংরেজের জাহাজে কেউ ঢিল মারলেই তাকে পাইরেট ডাকা হত, যার ঢিল যত বড় সে তত বড় নটোরিয়াস পাইরেট।
facebook
হ ওনাদের খুব গোস্বা আসিল পাইরেটদের উপ্রে। অনেকটা আজকের আম্রিকানদের মত ব্যাপার, নিজেরা নিউক্লিয়ার বোম বানায় ফাডায়ালাইব কিন্তু অন্য কেউ একখান বাজি ফুটাইলেই ওরে ক্যাঁক কইরা ধরব ওয়েপন অফ ম্যাস ডেস্ট্রাকশনের উছিলায়।
..................................................................
#Banshibir.
চমতার একটা বিষয় নিয়ে লিখেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ।
উপরে পান্ডবদা কিছু যোগ করেছেন দেখলাম। তাই উনাকেও ধন্যবাদ।
আংরেজের ইতিহাস বইএ এ নিয়ে কিভাবে লেখা আছে তা ভাবছি
ইংরেজ কানোজী আংরে কে লিখত Conajee Angria নামে। গুগল কইরা দেখেন
..................................................................
#Banshibir.
আপনার লেখার হাত তো ভাই সেইরকম চমৎকার! এখন পর্যন্ত আমি আপনার কোন লেখা মিস করি নাই।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
বলেন কিতা? আমি তো আপ্নের দীর্ঘ অনুপস্থিতি (শুধু আমার পোস্টেই না ওভারঅল) দেখে ভাবলাম মনে হয় একটু গ্যাপ দিচ্ছেন।
যাই হোক আছেন ভালো?
..................................................................
#Banshibir.
লেখাটা পড়ে কিন্তু আমার আশার মাত্রাটা আরো বেড়ে গেল, আশাকরি কিছুদিনের মধ্যে জলদস্যু দ্বারা গঞ্জ-এ- সওয়াই আক্রমণ নিয়ে লেখা পাব। ভারতে জলদস্যুতার ইতিহাসে ওটাই সবথেকে হাই-প্রোফাইল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আপনেও হোমটাস্ক দিলেন? পাইরেটস অফ ইন্ডিয়া থ্রি?
ঠিকাছে দিগন্তদা স্টে টিউনড, সুরের মধ্যে থাকেন. মাল মশলা কি পাওয়া যায় দেখি.
..................................................................
#Banshibir.
ইউরোপিয়দের আগমনের আগে পশ্চিম ভারতীয় ও আর্মেনিয়দের বানিজ্য নেটওয়ার্ক ভেনিস থেকে হংকং পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। ইউরোপিয়রা শুরুতে এদের বিজনেস পার্টনার হয়ে পয়সা জমিয়ে ক্রমে এদের জায়গাটাই দখল করে নিয়েছে। আগের বিজনেস পার্টনার হয়ে গেল শত্রু। আগের বডিগার্ড হয়ে গেল পাইরেট।
আর্মেনিয়রা ওসমানি ছত্রছায়ায় ও ভারতীয়রা মারাঠা ছত্রছায়ায় অনেকটা সময়ে আরব সাগরে তাদের আধিপত্য ধরে রেখেছিল। কেপ ঘুরে আসলেও ভারতে আসতে ভাস্কো দা গামাকে আজকের আরব আমিরাতের রাস আল খাইমা থেকে আহমাদ ইবনে মাজিদ নামক ন্যাভিগেটরকে সাথে নিয়েই ভারতে আসতে হয়েছে।
যাই হোক, "বম্বে থেকে সাভান্তওয়াড়ি পর্যন্ত আস্ত পশ্চিম ভারতীয় উপকূল" বলাটা ঠিক হলনা। আরব সাগর ঘেষে মুম্বাই মহারাষ্ট্রের উত্তরে আর সাভান্তওয়াড়ী একই রাজ্যের দক্ষিনে। মানে মারাঠিদের পরাক্রম উত্তরে দিউ থেকে দক্ষিনে কোচি পর্যন্ত হলেও, আংরে তার একটি বানিজ্যলঘু ভগ্নাংশে ব্যাস্ত থেকেছে। আরেকটু পরিস্কার হয় যদি বলি মুম্বাই এর উত্তরে ছিল জিঞ্জিরা (আরব/কাফ্রীদের ট্রেডপোস্ট) ও দমন এবং সাভান্তওয়াড়ীর দক্ষিনেই গোয়া বা পর্তুগীজদের ট্রেডপোস্ট। আরো উত্তরে ওলন্দাজ ও ফরাসি সুরাট। এই জায়গাগুলোতে আংরেকে সক্রিয় হতে দেখা গেছে কি? আদতে আংরের তার রেমিটার বাইরেই যায়নি। তদুপরি তার কর্মকান্ডে সে মারাঠা-পর্তুগীজ-ফরাসী-আর্মেনি-পশ্চিম ভারতীয়ে প্যাক্টের পক্ষে ইংরেজ হঠাও কর্মসূচিতে বেশ ভালভাবে সক্রিয় থেকেছে - এমনটাই মনে হতে পারে। তার অনেক চেষ্টার পরেও যখন ইংরেজররা বম্বে ক্রিকে ঢুক পড়ছিল, ঠিক সসময়ে বাকী ইউরোপিয় ও তাদের স্থানিয় এজেন্টরা 'আইন নিজের হাতে তুলে নেয়' এবং ঠিক সেসময়ে আংরে বেকে বসে ও বেঘরে প্রাণ হারায়।
পশ্চিম ভারতীয় আর আর্মানীদের ভেনিস টু হংকং বাণিজ্য নেটওয়ার্ক কি নৌপথে ছিল না স্থলপথে? নৌপথে কি আর্মানীদের ইংরেজ পর্তুগীজ ওলন্দাজের মত শক্তিশালী বহর ছিল? আমি স্থলপথের কথাই পড়েছি বেশি।
আংরে বেছে বেছে ইংরেজদেরই থাপড়েছে এই কথাটা একদম ঠিক, কিন্তু আপনি যেমন অ্যান্টিইংরেজ মারাঠা-ফরাসী-আর্মানী-ভারতীয় অ্যালাই এর কথা বলছেন এই ব্যাপারটা আগে দেখিনি। একটু বিস্তারিত বলবেন বা লিঙ্কু টিঙ্কু দিবেন? এছাড়া আংরের বেঘোরে প্রাণ খোয়ানোর ব্যাপারটা কি? আমি তো দেখলাম তার স্বাভাবিক মৃত্যুই হয়েছে।
..................................................................
#Banshibir.
এখানে পৃ ৯৪ তে দেখেন।
মারাঠা-ফরাসী-আর্মানী-ভারতীয় এলায়েন্স এর ব্যাপারটা সবুজ পাহাড়ের রাজার লেখায় এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আপনি যখন নবাবদের নিয়ে কথা বলছিলেন, তখনো এই বিষয়টা নিয়ে টুকরো টুকরো
কথা হচ্ছিল। আঠারো শতকের উপমহাদেশের ঘটনাগুলোকে আলাদা আলাদা করে বিবেচনা না করে যদি সবগুলো উপনিবেশ, সবগুলো অংশিদার (স্টেকহোল্ডার) আর সবগুলো স্বার্থকে একসাথে বিবেচনা করেন, তাহলে এই এলায়েন্সটা পরিস্কার হয়। এখানে মোঘলরা আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ অংশিদার।
আগে যেরকম বলেছি শুরুতে ইউরোপিয়রা ছিল সার্ভিস প্রোভাইডার, আর ভারতীয় আর্মেনিয়রা ছিল কনসাইনর, ট্রেডার। আঠারো শতকে সার্ভিস প্রোভাইডারেরা প্রাক্তন ট্রেডারদের ক্রয় ও বিক্রয় বাজার দখল করতে শুরু করে এবং সেই নিরিখে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে।
আমার ভুল হয়েছে, বেঘোরে প্রাণ বলতে আংরে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারিয়েছে সেটা বলতে চাইনি। ১৭২৪ থেকে ১৭২৯ সালে তার মৃত্যু পর্যন্ত আংরেকে (সাগরে মারাঠাদের) বেশ চাপের মুখে রাখতে পেরেছিল ইউরোপিয়রা।
আপনার পয়েন্ট টা বুঝছি দুর্দান্তদা. লিঙ্ক পড়ে দেখি.
জটিল রাজনৈতিক প্যাঁচঘোচ. দ্য টিউডর্স বা বর্জিয়াস এর মত কি অসাধারণ সব টিভি সিরিজ বা মুভি হয় এগুলি দিয়ে.
..................................................................
#Banshibir.
সচলে আপনার বেশির ভাগ লিখা এখন পড়ছি - খুবই ইন্টেরেসটিং
ইতিহাস নিয়ে লিখা অনেক হ্যাপার কাজ যেটা আপনি করে যাচ্ছেন
যাই হোক, প্রশংসা যখন করলাম, এখন অনুরোধ করা পালা - ঢেঁকি আপনাকে গিলতেই হবে
বাংলাতে প্রথম এবং দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ নিয়ে তেমন কোন লিখা পাচ্ছিনা (আমার আগ্রহ অবশ্য দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ নিয়ে)
আমার দ্বারা মনে হয় কখনোই হবেনা - তাই আপনার যদি ইচ্ছা হয় কখনো, একটু ভেবে দেখবেন প্লিজ।
আমার আগ্রহ মূলত মোগল ও ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষ, বিবিধ মহাযুদ্ধ নিয়ে আমার জানাশোনা কম. তবে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে চিটাগং অনেক বিজি ছিল শুনি, জাপানি বাহিনী বার্মা পর্যন্ত চলেই এসেছিল প্রায়, কবে ব্রিটিশ ভারত ও তাদের কব্জায় চলে যায় সেই ভয়ে ইংরেজ ছিল দিশেহারা.
বাপ্পী ভাই লিখা শুরু করে দেন, আপনার আগ্রহ আছে এই যথেষ্ট. ব্লগ এ সবাই গাইতে গাইতে গায়েন.
..................................................................
#Banshibir.
ইংরেজরা গুন্ডা বলুক আর যাই বলুক পাইরেটদের আমার অনেক পছন্দ।
আর আপনার লেখা ইতিহাস ছাড়া জীবনে আর কোনও ইতিহাস পড়ে আনন্দ পাইনি আমি, পড়িওনি তেমন একটা, তবে ইতিহাসের প্রতি আগ্রহটা আপনার লেখা পড়েই তৈরি হচ্ছে। আর শুধু পোস্ট না মন্তব্য গুলোও সেক্ষেত্রে ভুমিকা অনেক ।
মন্তব্যের ক্রেডিটও আমিই নিলাম , ভাইবা দ্যাখেন আমার পোস্ট ছাড়া পান্ডবদা দুর্দান্তদার মনের কথা গুঁতিয়ে বের করতে আপনাদের জান বের হয়ে যেত
..................................................................
#Banshibir.
তাতে কোন সন্দেহ নাই।
এই ইতিহাস জানতাম না। আচ্ছা কানোজি কিভাবে মারা গেছেন? যুদ্ধেই?
ভাল লাগল, যেমন লাগার কথা।
ছোটবেলায় ছবিতে গল্প পড়েছিলাম কানোজী আংরেকে নিয়ে। সেই বই পড়ার দিনগুলো মনে পড়ে গেল।
কিন্তু, মন্তব্যগুলো পড়তে গিয়ে পড়লাম আপ্নে নাকি মন্তব্য-বিশারদ ছিলেন। গুজব, তাই না?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এখনো মন্তব্য বিশারদ আছি তো
..................................................................
#Banshibir.
নতুন মন্তব্য করুন