ডিসেম্বর ১, ১৬২৭
দাক্ষিণাত্যের নিজামশাহী এলাকা
আমার পিতার চার স্ত্রী, কিন্তু যাকে তিনি সবচাইতে ভালোবাসেন আমি সেই আরজুমান্দ বানু বেগমের কন্যা। আমি নিজেও বেগম, রাজকন্যা। আমার নাম জাহানারা, খুররমের কন্যা, সম্রাট জাহাঙ্গীরের পৌত্রী, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মোগল শাসক আকবরের প্রপৌত্রী, বাবুরের প্র-প্র-প্রপৌত্রী।
আমার রয়েছে পায়ের আঙুলের মত বড় হীরে আর গুবরে পোকার আকারের চুনিপাথর। রয়েছে সাঁইত্রিশ চাকরনফর আর আটটি বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত হাতি শুধুমাত্র আমারই সেবা করার জন্য। আমার যা নেই তা হল স্বাধীনতা। আমরা সকলেই আটকঃ আমার মাতা, পিতা, ছোট ভাইয়েরা আর ছোট বোনটি। সোনার ঝালর দেয়া তাঁবুতে পান্নাখচিত পাত্রে আমরা পান করি অথচ আমরা নিছকই বন্দী।
এক রাজপুত হিন্দু কুমারশাসিত ছোট রাজ্যে আমাদের বন্দী হবার কথা ছিল না। আমাদের কথা ছিল সাম্রাজ্য শাসন করার। আমার পিতার সম্রাট হবার কথা, শাহ জাহান, সমগ্র পৃথিবীর সম্রাট! আমার মাতা মুমতাজ মহল, প্রাসাদের মণি। আর আমার হবার কথা বেগম সাহিব, রাজকন্যাদের রাজকন্যা।
কিন্তু আমরা কেউই এসব হতে পারিনি সেই সাপটির জন্য। হ্যাঁ, আমি তাকে সাপই ডাকি। সে হয়তো এখন সম্রাজ্ঞী কিন্তু আমার কাছে সাপ। সে আমার পিতামহী, কিন্তু আসল না। সে আমার পিতার সৎমা। আমি তাকে ঘেন্না করি। তাবৎ দুনিয়া তাকে ঘেন্না করে, কিন্তু ভয়ও পায় আর মুখে ডাকে নূর মহল – প্রাসাদের আলো। সাপটা প্রায়ই ঘুমের মধ্যে আমাকে তাড়া করে, হিসসস আওয়াজ করে, ছোবল দেয়। সে আশপাশের সবখানেই বিষ ছড়িয়ে রেখেছে, আর সবচেয়ে খারাপ কথা সে আমার দুটো ভাইকে জিম্মি করে রেখেছে। আমার আরো দুটো ভাই আছে, বারো বছর বয়েসি রাজকুমার সুজা আর বছর তিনেকের মুরাদ। এছাড়া আছে এগারো বছর বয়েসি রাজকন্যা রওশনআরা।
নূর মহল দারা আর আওরঙ্গজেবকে জিম্মি করে নেয় তিন বছর আগে। আমার পিতাকে তখন বিদ্রোহ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, কিন্তু আসলে সেরকম কিছু হয়নি। নূর মহল এইসব গুজব রটিয়ে বেড়ায়। সে আমার পিতাকে দেখতে পারেনা আর চায় আমার পিতার আরেক ভাই শাহরিয়ার সম্রাট হোক। আমার পিতামহের মাথা সুরা আর আফিমে আচ্ছন্ন থাকে, কানকথা শোনা যায় যে নূর মহলই গোপনে সম্রাটের খাবারে আফিং মিশিয়ে দেয় আর কড়া মদ পরিবেশন করে, যদিও হেকিমের কড়া বারণ রয়েছে এ ব্যাপারে। যাই হোক, আব্বার বিরুদ্ধে পিতামহের মন বিষিয়ে দেয় নূর মহল। গোলমাল পাকিয়ে ওঠে আর আব্বাকে গ্রেপ্তার করতে সিপাহী পাঠানো হয়। আব্বা সমঝোতা করতে বাধ্য হন। শর্ত হয়, তার এলাকার অধীন দুইটি শক্ত ঘাঁটি সম্রাটের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দ্বিতীয় শর্ত ছিল দশ বছরের দারা আর আট বছরের আওরঙ্গজেবকে সম্রাটের দরবারে জিম্মি হিসেবে রাখা হবে।
সাপটির জন্যই আজ আমার রাতে ঘুম হয়না ঠিক। কিন্তু আমি আম্মাকে এই স্বপ্নের কথা বলিনা, তার মাথায় এমনিতেই হাজারটা চিন্তা। কিন্তু আমি অসুস্থ বলে তিনি প্রায়ই জোর করেন হেকিম ডাকার জন্য।
ডিসেম্বর ২, ১৬২৭
আজ আম্মার দেওয়া এই ডাইরিতে আমি আমার স্বপ্নের কথা লিখব, তাহলে হয়তো এটা চলে যাবে আমার মাথা থেকে। কিন্তু স্বপ্ন লেখার আগে আমাকে লিখতে হবে স্বপ্নের পেছনের সত্য কথাগুলো।
পারস্যের এক শরীফ আদমীর মেয়ে নূর মহল। একসময় তারা ভারি গরীব হয়ে পড়ে আর ভাগ্য ফেরানোর জন্য ভারতে যাবার উদ্যোগ নেয়। এই যাত্রাপথেই নূর মহলের জন্ম। সে বড় কঠিন যাত্রা, খাওয়া জুটত না বললেই হয়। তারা ঠিক করল এইভাবে দুধের বাচ্চা নিয়ে যাওয়ার কোন মানে হয়না, নিজেরাই বাঁচে কিনা নেই ঠিক! তাই তারা পথে নূর মহলকে রেখে যাওয়া মনস্থ করল, হয়তো কোন দয়ালু পথিক বাচ্চাটির দেখভাল করবে। কিন্তু কিছুদূর গিয়েই তাদের মন অপরাধবোধে ভরে উঠলো, হায় এ কি করলাম! তাই রেখে যাওয়ার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই ছুটতে ছুটতে তারা ফিরে এল বাচ্চাটির কাছে, এসেই তাদের চক্ষুস্থির। নূর মহল এক বিরাট বিষধর সাপের কোলে শুয়ে খেলছে!
এইটি সত্য ঘটনা। কেউ কেউ বলে গোখরোটি নূর মহলের মুখে ছোট্ট একফোঁটা বিষ ঢেলে দিয়েছিল, ফলে পরে তার শরীরে বিষের প্রতিষেধক গড়ে ওঠে। এই অংশটা সত্য কিনা তা অবশ্য আমি নিশ্চিত নই, তবে অনেকেই তাকে বিষ খাইয়ে মারতে চেয়ে বিফল হয়েছে এটা ঠিক।
তাই আমি স্বপ্নে দেখি দারাকে, কালো স্বপ্নীল চোখের দারা। দেখি সে ঘুমিয়ে আছে, তার পাশেই নিদ্রিত আওরঙ্গজেব। মেঝেয় অন্ধকার পিচ্ছিল কিছুর নড়াচড়া। আমার ভাইদের শ্বাসের শব্দ শুনি, আর সাবধানে কান পাতলে শোনা যায় সেই শ্বাসের শব্দের পাশাপাশি হিসহিস শব্দ। কেন যেন আমি জানি সাপটি দারার কাছেই যাবে। দারার হাত পেঁচিয়ে ফণা তোলে সাপটি, কাটা জিব বের করে হিসহিস করে আওয়াজ করে আর চোখের তারা সরু করে যেই ছোবল দিতে উদ্যত হয় ঠিক সেই মূহুর্তে আমি জেগে উঠি। আমি চিনতে পারি সেই সরু চোখ। এই চোখের আলো সাপের নয় নূর মহলের, প্রাসাদের আলোর।
ডিসেম্বর ৩, ১৬২৭
আজও সাপের স্বপ্ন দেখলাম।
ডিসেম্বর ৪, ১৬২৭
আজকেও।
ডিসেম্বর ৬, ১৬২৭
আম্মার পরিচারিকা আর আমাদের গৃহশিক্ষক সতীউন্নেসা বলে আমার পড়াশোনা নাকি একদম যাচ্ছেতাই হচ্ছে। সে খালি জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে। সতী খুব চালাক, হেরেমের সব গুজব তার কানে আসে। সে বলে আমার পিতার তৃতীয় বউ ইন্দিরা নাকি আমার নামে কানকথা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। “তো কি হল”, বলি আমি, “ইন্দিরা একটা গুজবি শুয়োরনি। আব্বা তাকে কখনোই দেখতে যাননা”। সতী আমায় বকে, কিভাবে আমি ভদ্র মুসলমান ঘরের মেয়ে হয়ে “শুয়োরনি” কথাটা উচ্চারন করি, ছি ছি। আমি কাঁধ ঝাঁকাই। “তোমার মা হেকিম ডাকবে”। আমি শব্দ করি “হুঁহ।” সে আরও বলে, “অসুস্থ হলেও তোমাকে কিন্তু তাজাই দেখাচ্ছে”, তারপরে আমার কাঁধের কাছে বাতাসে একটু চাপড়ে দেবার ভঙ্গী করল। রাজকন্যাদের গায়ে কোন অবস্থাতেই স্পর্শ করার অধিকার নেই নিচু জাতের অন্য কারো, আদর বা শাস্তি কোন কিছুর জন্যই। আমি সতীকে শ্রদ্ধা করি। আমার মায়ের পরে সতীই হেরেমের সবচাইতে বুদ্ধিমান নারী।
পরে
মনে হয় সতীই ঠিক। হেরেমে গুজবে কান পাতা দায়, শুধু ইন্দিরাই নয় কিন্তু। আব্বার প্রথম স্ত্রী, তালি নাম, পারস্যের। তালি কথা খুবই কম বলে, খুবই চাপা স্বভাব। এমনকি সেই তালিও দেখি আমার সাথে কথা বলতে চায়। শোনা যায় তার নাকি একবার বাচ্চা মারা গিয়েছিল, সেই বাচ্চা নাকি দেখতে আমার মত। সেজন্য নাকি সে আমার কাছে আস্তে আরো সঙ্কোচ বোধ করে। কিন্তু আজকাল সেও দেখি কথা বলার চেষ্টা ওরে। আর আব্বার চতুর্থ স্ত্রী সামিনা যে কিনা খুবই তেতো স্বভাবের, সেও মিঠা মিঠা হেসে কথা বলতে চায়।
খালি কথাই নয়, তাদের চাহনীও জানি কেমন। হেরেমের নারীদের চাহনী পড়ে ফেলা কঠিন নয়। আমরা হেরেমের নারীরা সারাটা জীবন পার করে দেই সিল্কী জালির বাতাবরণের আড়ালে। বাইরের কেউ আমাদের কখনো দেখবে না, কখনো শুনবে না। কিন্তু আমরা দেখি। আমরা শুনি। সবসময়। জেনানা মহলের শব্দহীন জালির খাঁচায় থাকতে থাকতে আমরা শিখে যাই নীরবতার ভাষা। আমাদের চোখ আমাদের জিহবার মতই বাঙময়। আমার পিতামহের আমলের একটা গল্প শোনা যায় যে তার দরবারে একবার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক ইংরেজ এসে তার চোখ আটকে যায় ঝালরের পেছনের কিছু একটা ঝলকানি দেখে। সেই ঝলকানি ছিল হীরের চেয়েও উজ্জ্বল, সম্রাটের এক “ছোটা বউ” অর্থাৎ উপপত্নীর চোখ। প্রতিদিন সেই ইংরেজ দরবারে আসত সেই চোখের টানে। তারা ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়ে, দেখা করে। এই কথা জানাজানি হবার পর ইংরেজকে ইংল্যান্ড ফেরত পাঠানো হয়, আর ছোটা বউয়ের “উপযুক্ত ব্যবস্থা” নেয় নূর মহল।
তাই আজ হেরেমে হাঁটার পথে আমি চোখ পড়তে পারছিলাম। অপলক, ঝলমলে সেই চোখের তারা। তারা আমার ক্ষতি চায়না, কিন্তু তাদের করার কিছুই নেই। সামান্য গল্পের আভাসেই তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে, অল্প গুজব পেলেই তারা ঝাঁপিয়ে পড়ে হিংস্র নেকড়ের মতন। একমাসের উপর হয়ে গেল আমরা দাক্ষিণাত্যে, রাজস্থান যাবার পথে। যুদ্ধকালীন সময় ছাড়া রাজস্থানই আমাদের ঘর। আমাদের তাঁবু প্রাসাদের মতই ঝলমলে। আমরা যাযাবর গোত্রের, আমরা চলতে ততটাই পছন্দ করি আমার পিতামহ আফিং পছন্দ করেন যতটা।
পরে
ঘুমাতে ভয় পাচ্ছি। সেই স্বপ্ন আর দেখতে চাইনা। কেউ আসছে ঐ, আর লিখতে পারব না এখন।
ডিসেম্বর ৭, ১৬২৭
কাল রাতে পানিপত এসেছিল। সে হেরেমের খোজাসর্দার। যেকোন নারীর মহলে তাই তার অবাধ আনাগোনা। সে আমাদের সব গোপন খবর জানে। পানিপত ভারি মোটা আর তার ত্বক খুব মোলায়েম, তবে তার দাড়ি আছে। ঘন নয়, থুতনি থেকে পাকানো ধোঁয়ার মত মিহি সেই দাড়ি। সে ভারি বুড়ো, আমার প্রপিতামহ আকবরের হেরেম থেকে সে কাজ করছে। আমি তাকে খুব পছন্দ করি, সে কাল রাতে এসেছিল আমি ডাইরি লিখার সময়। সে বলল, বাবুর ও ডাইরি লিখতেন মন ঠিক রাখার জন্য। সে আমার শুধালো “তোমার কি মন ঠিক নেই বেগম সাহিব?”
আমি তার দিকে তাকালাম। সে আমায় রাজকন্যাদের রাজকন্যা ডাকছে কিন্তু আমি কার্যত বন্দী ছাড়া কিছু নই, আমার পিতা সম্রাট নন। আমার চোখে পানি চলে এল। পানিপত শান্ত কন্ঠে বলল, “তুমি তোমার আম্মাকে স্বপ্নের কথা জানাও। স্বপ্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, জ্যোতিষ ডাকা প্রয়োজন। হয়তো তোমার স্বপ্ন আমাদের পরাধীন জীবন থেকে মুক্তির পথ বাৎলে দেবে।”
এই ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারিনি, কিন্তু আমি পানিপতের কথা শুনব। পানিপতের অনেক বুদ্ধি। দুইটি সম্রাটের অধিনে দুইটি দরবারে সে কাজ করেছে।
ডিসেম্বর ৮, ১৬২৭
খুব ভালো লাগছে। আম্মা শুনে জ্যোতিষ ডেকে আনেন তৎক্ষণাৎ আর আমরা তাঁবুর সবচেয়ে গোপন এলাকা গোসলখানায় গেলাম। জালির পেছন থেকে আমি স্বপ্ন বয়ান করলাম, অন্যপাশে ছিলেন জ্যোতিষ আবুল ফযল ও আমার পিতা। আবুল নিয়ে এসেছিলেন তার খাবনামা আর কোষ্ঠীর কাগজ। তারা পরবর্তী কয়েকসপ্তাহের তারাদের গতিপথ দেখে বললেন বৃহস্পতি আর তুলা উদীয়মান। তারপর আমাকে ভেতরে পাঠিয়ে দেয়া হল, আর কিছু শুনিনি। কিন্তু আমি খুশি। পানিপত সম্ভবত সঠিক, হয়তো এ কোন এক অজানা বারতা। আম্মা আর আব্বার অনেক বুদ্ধি, তারা ঠিকই এর মানে বের করে ফেলবেন। পানিপতের জন্য একটা চমৎকার উপহারের ব্যবস্থা করতে হবে আমাকে। বিরাট একটা মুক্তা হলে বেশ হয়। কিন্তু তাতে খুঁত থাকতে হবে। এ এক অদ্ভুত ব্যাপার, পানিপত প্রকান্ড হীরেমোতি পছন্দ করে ঠিকই কিন্তু তাতে কোন না কোন ঘাপলা থাকতে হবে। নিখুঁত মণি তার পছন্দ নয়। হয়তো আসল মণি এরকমই হয় তার মত, একটি অসম্পূর্ণ মানুষ কিন্তু আমার চোখে অনন্যসাধারন পুরুষ।
সেই সন্ধ্যায়
শোবার সময় হয়ে গিয়েছিল তাই ভারি অবাক হলাম যখন আমার পরিচারিকা ঝুম্পা ঘোষনা করল পানিপত এসেছে। সে বলল আমায় গল্প পড়ে শোনাবে। পানিপত আমার পিতাকে গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়ায়, কিন্তু আজ সে বলল পিতার শরীর খারাপ। এই বলে সে চোখ টিপল। রোমাঞ্চের আশঙ্কায় আমি দুলে উঠলাম, কিছু একটা হতে যাচ্ছে। আমি জানি না কি, কিন্তু কিছু একটা। আম্মা আমাকে বলে দিয়েছেন আমি যেন ভয় না করি। সব ঠিক হয়ে যাবে।
পানিপত আমাকে জিজ্ঞেস ও করল না কি বই পড়ে শোনাবে, সে বই নিয়েই এসেছিল। বাবুরনামা, আমার পূর্বপুরুষের ডাইরি। আমার পাশে বসে অত্যন্ত কোমল স্বরে সে পড়ে চলল, “তখন আমার সিংহাসন ছিলনা। আমার অনুসারীর সংখ্যা কমতে কমতে তিনশ এর নিচে চলে আসে, খুজান্দ এ রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত হয়।” এই অংশটার সাথে আমার পরিচয় ছিলনা। এটা বাবুরের সেই সময় এর গল্প যখন তিনি পারস্যের বিপুল এলাকা হারিয়েছিলেন আর অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিলেন। হয়তো আমি এটি আগেও পড়েছি, কিন্তু এখন এটি এক নূতন অর্থ নিয়ে আমার কাছে ধরা দিল। পানিপত পড়ে চলে, “আমার লোকেরা আর আমি সকলেই ক্ষুধার্ত, কুকুরের মাংস আর গাছের পাতা চিবিয়ে কাটত আমাদের দিন। এই করে করে আমি পাহাড়ের পর পাহাড় পাড়ি দিতাম চালচুলোহীন। এই জীবন বাকি কারো কাছে সুপারিশ করার মত নয় একদম!”
আমি হেসে উঠি, “পানিপত, এই অবস্থা নিয়েও কিভাবে ঠাট্টা করা যায়?”
“তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত বীর। একমাত্র চরম সাহসী হলেই বিপদের সামনে দাঁড়িয়ে তা নিয়ে মজা করা যায়। তুমি কি জানো বীরত্ব কি দিয়ে গড়া?” আমার উত্তরের অপেক্ষা না করেই সে বলে, “একভাগ বুদ্ধি, একভাগ সাহস আর একভাগ ভয়! হ্যাঁ ভয়। যার ভয় নেই তার সাহসও নেই।”
ডিসেম্বর ১০, ১৬২৭
বসে আছি পিতার শোবার কক্ষে পর্দার পেছনে। লেখার চেষ্টা করছি। পানিপত বলেছে বীরত্বের একভাগ ভয়, কিন্তু কোথায় আমার সাহস? কোথায় বুদ্ধি? পিতার অবস্থা দিন কে দিন খারাপ হচ্ছে। তার চামড়া ছাইবর্ণ। আমি আর আম্মা পর্দার পেছনে, রাজপুত থেকে হেকিম ডাকা হয়েছে। তারা আসছে। হঠাত এক তীব্র চিৎকার, এক ভৃত্য পিতার কাঁধ ধরে সোজা করে বসিয়ে দিল। পিতার মুখ থেকে লাল রক্ত পড়ছে। আম্মা চিৎকার করে উঠলেন।
আব্বা মারা গেলেন।
(চলবে)
ক্যাথরিন লাস্কি রচিত “The Royal Diaries: Jahanara, Princess of Princesses” অবলম্বনে।
....................................................................................
অনুবাদকের কৈফিয়তঃ এইটি সত্যকারের জাহানারার ডাইরি নয়, ক্যাথরিন লাস্কি রচিত গল্প মাত্র। তাই ইতিহাস হিসেবে না নিয়ে ইতিহাস ভিত্তিক গল্প হিসেবে নেবার অনুরোধ জানাই। বইটি ডিটেলের দিক দিয়ে আমার মন কেড়ে নিয়েছে, তাই প্রথমবারের মত পুরো একটি বই অনুবাদের উদ্যোগ নিলাম। হিসেব ঠিক থাকলে আট থেকে দশ পর্বের সিরিজ হতে যাচ্ছে জাহানারার ডাইরি।
যেহেতু রাজকন্যার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা দুনিয়ার বয়ান তাই পরিভাষা ব্যবহারে যথাসম্ভব সতর্ক থাকতে হয়েছে আমাকে। অনুবাদের ভাষা আড়ষ্ট মনে হলে সে দায় আমারই।
মন্তব্য
যাক, কথা রাখলেন তাহলে। অনুবাদ আমার কাছে বেশ ঝরঝরে মনে হচ্ছে। এক টানে পড়ে ফেললাম। আওনার পোস্ট পড়ার পর উইকিতে কিছুক্ষণ গুঁতোগুঁতি না করলে ঠিক জমে না
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হুঁ রাখলাম। বইটি আমার দারুণ লেগেছে, ভারতের প্রেক্ষাপটে এরকম হিস্টোরিক্যাল ফিকশন তেমন চোখে পড়েনি আমার। কি চমৎকার সব গল্প হয় আমাদের ইতিহাস নিয়ে।
..................................................................
#Banshibir.
খুব আশা করে জাহানারার ডায়ারি পড়ছিলাম। শেষে দিলেন ফুস করে! এটার কী কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে?
আড়ষ্টতাটুকু প্রয়োজন। না হলে জনপ্রিয় লেখকের লেখা উপন্যাস মনে হবে।
চমৎকার। চলুক।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
শাজাহানের ভুয়া মৃত্যুর ব্যাপারটা? ঐতিহাসিক ভিত্তি বলতে মুখে মুখে এরকম গল্প চালু আছে, সঠিক করে জানা যায়না। তবে নূর মহল তথা নূর জাহানের শাজাহানের প্রতি বিতৃষ্ণা, ক্ষমতার প্রতি লোভ, শাহরিয়ারকে সম্রাট বানানোর ইচ্ছা আর জাহাঙ্গীরের মদ খেয়ে সর্বক্ষণ টং হয়ে থাকার ব্যাপারগুলো সত্য। তাদের আটক রাখা হয় আর দুই ভাইকে জিম্মি করা হয় এটিও ঠিক আছে।
..................................................................
#Banshibir.
এমনভাবে জিজ্ঞেস করলেন যেন আমি খুব জানি ব্যাটা কখন ভুয়া মরেছে আর কখন আসল মরেছে!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চমৎকার অনুবাদ। মোটেই আড়ষ্ট মনে হয় নাই। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
ধইন্যবাদ।
..................................................................
#Banshibir.
চলুক।চলুক।
..................................................................
#Banshibir.
ও:, এসে গেছে।
খুব ভালো লাগছে, ক্যাথেরিনের স্টাইলের মধ্যে টান আছে, টান দিয়ে সোজা নিয়ে যায় সেই সময়ে। আরে আমি তো দেখতে পেলাম ছোট্টো মেহের পথের ধারে পড়ে আছে, এক বিরাট মা গোখরো তাকে জড়িয়ে ধরে কুন্ডলী পাকিয়েছে, মেহেরের বাবামা যখন মেয়ে ফেরত নিতে এলো তখন সাপটা কী বকাই না দিলো ওদের! "কোন আক্কলে বাচ্চা ফেলে গেছিস তোরা! এই মেয়ের আমি গডমাদার, মেয়ের যদি কিছু হয়, আমি সোজা গিয়ে তোদের ছুবলে দেবো। মনে রাখিস। এই শর্তে মেয়ে ফেরত দিলাম, খুব যত্ন করবি, না হলে---বুঝতেই পারছিস---"
লেখা খুব ভালো হচ্ছে, এইটা গড়গড় করে পড়ে ফেলে উদগ্র আগ্রহে বসে রইলাম পরেরটার জন্য।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
হুঁ ভদ্রমহিলা খুব নাটুকে পরিবেশ করে রাখেন। মনে হয় সিনেমার প্লট।
..................................................................
#Banshibir.
খুব ভালো লাগলো। আড়ষ্টতা যদি বলেন সেটাও ভালো লাগলো, রাজকন্যার ডায়েরি যে !
ধন্যবাদ কালো কাক.
..................................................................
#Banshibir.
এই তাহলে ঘটনা! চলতে থাকুক।
..................................................................
#Banshibir.
হারেমের খোজাদের ব্যাপারে মাথায় কয়েকটা বদ চিন্তা ঘুরছে বস। আচ্ছা এই খোজাদের কী উপায়ে খোজা করা হত? শিশ্ন কর্তনের মধ্য দিয়ে নাকি অণ্ডকোষ গুড়ো করে দিয়ে? খোজাকরণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করত কি খোজারাই? আর দিনরাত হারেমে নারী পরিবেষ্টিত হয়ে থাকা খোজাকূল কী আত্মহত্যা করত না? কারণ খোজা হলেও তাদের যৌনানুভূতি তো মরে যাবার কথা নয়।
লেখার জন্য বরাবরের মতই পঞ্চতারা।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
মোগল খোজাদের সাপ্লাই যেসব জায়গা থেকে আসত তার মধ্যে অন্যতম প্রধান ছিল আমাদের বাংলা। অনেকদিন আগে একখান পোস্ট দিসিলাম যেখানে চারশ বছর আগে এক ফরাসী বাংলার দাসব্যবসা নিয়ে লিখে গেছেনঃ
"দাসব্যবসায়ীরা সাধারনত এদের অল্পবয়সে খোজা বানিয়ে ফেলে, পুরো প্রত্যঙ্গটাই কেটে ফেলে দেওয়া হয়। আমি এরকম অনেক দেখেছি, প্রস্রাব করবার একটা ছোট ফুটো আছে শুধু।"
আরে না সুমাদ্রী ভাই কি যে কন। হেরেমভর্তি নারী বছরের পর বছর একলা থাকতে থাকতে এরশাদের মতই হর্নি হয়া যাইত, খোজাদের সাথে তাদের ফষ্টিনষ্টির কাহিনী সুবিখ্যাত। হেরেমের খোজাদের নিয়ে কোন এক সময় পোস্ট দেওয়ার আশা রাখি, বড়ই ইন্টারেস্টিং কাহিনী।
..................................................................
#Banshibir.
ঝরঝরে লিখা পীরসাহেব, তরতর করে পড়ে গেলাম। আপ্নার অনুবাদ খুব ভালু পাই।
ঝরঝর তরতর কলকল ছলছল নদী করে টলমল।
(একটা কবিতা দিমু ভাবতেসি। উপরেরটা পয়লা লাইন)
..................................................................
#Banshibir.
ক্যাথেরিন লাস্কি'র জন্য প্রযোজ্য, সত্যপীরের জন্য নহেঃ
জাহানারার ডায়েরি - এই ধারণাটাই ভুল, এমনকি গল্প হিসেবেও। বাবুরনামা বা তুযক্-ই-বাবরি হচ্ছে স্মৃতিকথা বা আত্মজীবনী, ডায়েরী নয়। কারণ, দিন-তারিখ ধরে জার্নাল বা ক্রনিকল লেখার ধারণা তখনো এই অঞ্চলে আসেনি। তাই জাহানারার পক্ষেও ডায়েরী লেখা সম্ভব নয়।
জাহানারা তারিখ লিখছে, ডিসেম্বর ১, ১৬২৭ - চরম হাস্যকর। ১৮৫৮ সালের আগে এদেশে খ্রীষ্টাব্দের ব্যবহার খুব সীমিত ছিল। আকবর ফসলী সন প্রবর্তন করেন সত্য, তবে তা দাফতরিক কাজে খুব কম ব্যবহৃত হত। মুঘলদের ব্যবহারিক ক্যালেন্ডার ছিল হিজরী সনের।
রাজস্থান দাক্ষিণাত্য হল কীভাবে? আরাবল্লী পর্বতমালা কি দাক্ষিণাত্যের মালভূমির অংশ?!?
মেহের-উন-নিসা'র একটা উপাধী হচ্ছে বেগম নূর জাহান - অর্থাৎ জগতের আলো। সেই জগতের আলো ডিগ্রেড হয়ে প্রাসাদের আলো বা নূর মহল হলো কী করে?
শাহ্ জাহানের সন্তান সংখ্যা কুড়ির ওপরে। এক আরজুমান্দ বানু বেগম ওরফে মমতাজ মহলের গর্ভে তার সন্তান সংখ্যা চৌদ্দ। চৌদ্দ নাম্বার জনকে জন্ম দিতে গিয়ে মমতাজ মহল আটত্রিশ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। এই চৌদ্দ জনকে তিনি জন্ম দিয়েছিলেন ঊনিশ বছরের বৈবাহিক জীবনে। শাহ্ জাহানের অপর লিগাল বিবিরা যথাক্রমে আজিজ-উন-নিসা ওরফে আকবরাবাদী মহল, ফতেহ্পুরী মহল সাহিবা, কান্দাহারী মহল, সরহিন্দী মহল সাহিবা, হাসিনা বেগম সাহিবা, মোতি বেগম সাহিবা, কুদ্সিয়া বেগম সাহিবা, শ্রীমতি মানভাবতী বৈজিলাল সাহিবা, লীলাবতি বৈজিলাল সাহিবা কতোজন সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন সেটা নিয়ে নানা মত আছে। তবে যা-ই হোক, জাহানারারা চার ভাই-বোন নয়, এক মায়ের ঘরেই চৌদ্দ জন।
শাহ্ জাহানের প্রথম স্ত্রীর নাম তালি নয়, সে পারসীকও নয়। তার নাম আজিজ-উন-নিসা, সে আগ্রার বাসিন্দা ছিল। শাহ্ জাহানের তৃতীয় স্ত্রীর নাম আরজুমান্দ বানু, ইন্দিরা নয়। শাহ্ জাহানের চতুর্থ স্ত্রী কান্দাহারী মহলের আসল নাম সামিনা হলেও হতে পারে, তবে তালি ও ইন্দিরা নামে তার কোন স্ত্রী ছিল না।
যতদূর জানি, জাহাঙ্গীর ইন্তেকাল ফরমান ৮ই নভেম্বর, ১৬২৭ সালে সেখানে ১লা ডিসেম্বর, ১৬২৭-এ জাহানারা ও তার পরিবার দাক্ষিণাত্যে নির্বাসিত থাকে কী করে? তাও আবার নিজামশাহী এলাকায়! যেখানে নিজামশাহী শুরুই হয়েছে আরও একশ’ বছর পর ১৭২৪ সালে!! শাহ্ জাহান ১৬২৬-২৭ সালে দাক্ষিণাত্যে অঘোষিত নির্বাসনে ছিলেন, কিন্তু দাক্ষিণাত্যে রাজপুত হিন্দু কুমার শাসিত ছোট রাজ্য আসল কোথা থেকে! ক্যাথরিন খালা কি ভাঙের শরবত খেয়ে এসব লিখেছেন কিনা বুঝতে পারছি না।
শাহ্ জাহান তার পিতার বিরুদ্ধে যে অসফল বিদ্রোহ করেছিলেন সেটা ১৬২৬ সালে। ঐ সময়ই দারা শুকোহ্ আর আওরঙ্গযেবকে জিম্মি হিসেবে দিল্লী নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাটা ১৬২৭ সালেরও তিন বছর আগের ঘটনা নয়।
নূর জাহানকে জাহাঙ্গীরের খাবারে আফিম মেশানো আর কড়া মদ পরিবেশনের জন্য দায়ী করা ঠিক না। জাহাঙ্গীরের বাবা এক কালে শুক্নার ভক্ত ছিল। জাহাঙ্গীর শুক্নায় নৌকা চালায়নি, সে সব সময়ই বর্ষার নদীর মতো টইটুম্বর থাকতো।
আপাতত এই, মনে পড়লে আরো বলবো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ডায়েরির ব্যাপারটা হল, রয়্যাল ডাইরিস একটা সিরিজ। বিভিন্ন লেখকেরা এই সিরিজে ইতিহাসের নামকরা নারী চরিত্রের ডাইরি লেখেন। এদের মধ্যে অনেকেরই (যেমন জাহানারা) ডাইরি লেখার প্রশ্নই আসেনা, তবু এইটাই এই সিরিজের থিম যে "যদি তারা লিখত তাহলে কিরকম হত" টাইপ ব্যাপার। সিরিজে লেখার শর্তই হল তারিখ অনুসরন করতে হবে, তাই লাস্কিম্যাডাম এটা করেছেন।
গল্প অনুযায়ী, জাহানারা লিখছে রাজস্থান যাবার পথে দাক্ষিণাত্যে তাঁবু ফেলে (কেন আমি জানি না)। শিঘ্রই তারা ফতেপুর সিক্রি পৌঁছুবে।
নূর জাহানকে নূর মহল বলা আছে বইতে, আমি সেরকমই রেখে দিয়েছি। নূর মহল নামে নূর জাহানের নামে তৈরি টাউন আছে কিন্তু হা হা। যাই হোক, এই ডিমোশনের কারণ কৈতার্লামনা।
তারিখের ব্যাপারটা আমার কাছেও ঘোলাটে লেগেছে, জাহাঙ্গীর মৃত তাইলে এরা বন্দী কেন। পরেরদিকে বোঝা যায় লাস্কিম্যাডাম বলতেসেন যে শাজাহানকে বন্দী করে রাখা হয়েছে নূর মহলের নির্দেশে, সেই রাজপুত প্রিন্স (কে আমি জানি না) নূর মহলের লোক। তাই শাজাহান পালানোর ভাও করতেসেন কারণ কোনমতে লালকেল্লা পৌঁছাতে পারলেই সম্রাট হওয়া যাবে। দিন তারিখ নিয়ে লাস্কিম্যাডাম একটু কনফিউজিং।
তবে লাস্কিম্যাডামের সাফল্য হইল নাটকীয়তা। গল্প হিসেবে পড়তে আমার চমৎকার লেগেছে, উনি ডিটেলে যা বলেছেন ঘটনা এরকম না হলেও কাছাকাছি। তবে খুব কাছাকাছি নয় ঠিকই। তাই দিনের শেষে এটা গল্পই, ডিস্ক্লেইমারেও তাই লিখে দিয়েছি। ইতিহাস নয় ইতিহাস ভিত্তিক গল্প। হিস্টরি নয় ইস্টরি।
..................................................................
#Banshibir.
আমি যতদূর জানি মেহেরুননিসার উপাধি শুরুতে নূর মহল দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর, পরে নূর জাহান দেন। তবে জাহানারা ডাইরি লেখার বয়সী হলে তখন তার উপাধি নূর জাহান হওয়ার কথা। তখনও নূর মহল ব্যবহার করা কী অশ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য?
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
হুঁ এইটা ১৬২৭ সালের কথা। তার অনেক আগেই তিনি নূর জাহান টাইটেল পাইসেন। তবে অশ্রদ্ধা করে ডাকার পয়েন্টা গুরুত্বপুর্ণ।
লেখিকা বলছেন, " তাবৎ দুনিয়া তাকে ঘেন্না করে, কিন্তু ভয়ও পায় আর মুখে ডাকে নূর মহল – প্রাসাদের আলো।"
তাবৎ দুনিয়া ১৬২৭ সালে নূরজাহান ডাকার কথা
..................................................................
#Banshibir.
অনুবাদ আগের মতই ঝরঝরা হচ্ছে। পপ্পন নিয়া বইসা থাকলাম পরেরটার জন্য।
সেইরকম একটা প্যারা।।।শুরু করতেই মনে হইল, এ একজন নিছক রাজকন্যাঃ হীরা-মোতিই যার কাছে সব, বাকিসব নগন্য। প্যারার মাঝখানে এসে পুরাই ১৮০ডিগ্রী উল্টাইয়া গেল।
--বেচারাথেরিয়াম
ধৈন্যবাদ!
..................................................................
#Banshibir.
পড়ছি। আপাতত কোন মন্তব্য নাই। পর্ব চলুক। ভাল থাকুন।
ঠিক আছে.
..................................................................
#Banshibir.
য়াপ্নার লেখা আমার ভাল লাগে তবে বধ হয় কখন মন্তব্ব করা হয় নাই।
ঝরঝরে লেখা। খুব ভাল লাগ্ল। পরবরতি পরবের অপেক্খআয় রইলাম।
(আমি বানান ঠিক করতে পারচিনা)
ধন্যবাদ বাবুনি. মাঝেমধ্যে লিখবেন.
..................................................................
#Banshibir.
০১। তোমার অনুবাদের প্রশংসা আর নাই বা করলাম।
ক্যাথিরিনের লিখা জাহানারাকে নিয়ে এই 'কাল্পনিক রোজনামচার' বঙ্গানুবাদ পড়তে ভাল লাগছে।
ধন্যবাদ তোমাকে।
০২। ক্যাথিরিন ল্যাস্কির এই বইটি পড়ি ২০০৫ সালে। স্কলাস্টিকা প্রেসের এই বইটি উপহার হিসেবে পাই ২০০৪ সালে। বইটি সম্ভবত: ২০০২/২০০৩ এ লিখা।
ক্যাথিরিনের এই বইটি আসলে 'ঐতিহাসিক চরিত্রের উপর লিখা কাল্পনিক রচনা' ছাড়া আর কিছু নয়। যদিও আমাকে উপহারদাতা 'খুব ভাল ইতিহাসের বই' কথাটি বলেছিল। পরবর্তীতে পড়তে গিয়ে টাসকি খায়।
ক্যাথিরিনের লিখা জাহানারাকে নিয়ে এই ঐতিহাসিক-ভৌগলিক ভুলে ভরা কাল্পনিক রোজনামচা পড়তে বেশ আমোদেরই, যদিও এই বই হতে কিছু জানার ইচ্ছা পোষণ শুধুই আশায় গুঁড়েবালি।
ক্যাথিরিনের এরকম আরো কয়েকটি ঐতিহাসিক চরিত্রকে নিয়ে লেখা কাল্পনিক আমোদী রচনা আছে।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
খুব ভালো ইতিহাসের বই নয় মোটেই কিন্তু বেশ ভালো গল্পের বই
..................................................................
#Banshibir.
পড়ছি,বেশ লাগছে,তবে ইতিহাসের সাথে মিলাতে গেলে ঘাপলা লাগছে।অনুবাদ ঝরঝরে,পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি।
ধন্যবাদ যুমার.
..................................................................
#Banshibir.
চলুক। শাহজাহান যেভাবে ক্ষমতা দখল করছে, তাতে নুরজাহান তার প্রতি শত্রুতা দেখালে তাকে দোষও দেয়া যায় না।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
সব শয়তানে শয়তানে কামড়াকামড়ি, কারে দুষ দিবেন কন
..................................................................
#Banshibir.
ইতিহাসপাতিহাঁস ভালু পাই।
Jokes apart, অনুবাদ চলুক।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
কৈলেন যখন
..................................................................
#Banshibir.
আমার আগের মন্তব্য কই? দেখিনা যে তারে...
যাউজ্ঞা... বড়ই মজাদার- ম্যাডামের রঙে সাহিবের ছবি... চলুক...
..................................................................
#Banshibir.
লাস্কির বইটার প্রচ্ছদে ঐটা কার ছবি? জাহানারা নাকি বলিউডি সিরিয়ালের কোন নাইকা?
নাইকার ছবি ভালু পাইসি
..................................................................
#Banshibir.
ভাল লিখেছেন
সুজার বয়স ১২ আর দারার বয়স ১০ কেন?
facebook
জিম্মি করার সময় দারার বয়েস দশ, আর সুজার বয়েস এখন বারো।
..................................................................
#Banshibir.
এটি আমি বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম, কিন্তু শেষে এসে সত্যি মনটা খুব খারাপ হল। সত্যি হলে তো মজা অন্যরকম।
তবে আপনার অনুবাদের হাত খুব ভাল। ভাল লাগছে পড়তে।
পরের পর্ব আসুক
--- ঠুটা বাইগা
সত্যি হলে মজা ঠিকই কিন্তু পুরো সত্যি হলে তো আর গল্প রইল না প্রবন্ধ হয়ে গেল। গল্প হিসেবে পড়ুন ইতিহাস কিছুক্ষণের জন্য মাথা থেকে সরিয়ে দিয়ে, পড়া শেষ হলে না হয় হিসেব মেলানো যাবে। চমৎকার একটা গল্পের বই কিনা বলেন?
..................................................................
#Banshibir.
ভাল লাগলো অনেক। ইতিহাস যখন গল্পের মত করে বলা হয় তখন পড়তে আরও ভাল লাগে।
পরের পর্বের রইলাম।
অনেকদিন পর, কি খবর?
..................................................................
#Banshibir.
ইতিহাস ঠিক থাকুক বা না থাকুক, আপনার লেখা পড়ে গল্প পড়ার মতই মজা পেয়েছি।
হুঁ চমৎকার গল্প না?
..................................................................
#Banshibir.
চমৎকার লাগছে পড়তে । আপনার লেখা ও অনুবাদ বেশ ভালো লাগে। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। ভালো থাকবেন , পীর ভাই ।
ধইন্যবাদ!
..................................................................
#Banshibir.
ইটা ক্যান?
..................................................................
#Banshibir.
আপনার উস্কানির জন্য ব্লগ লেখতে হইতেছে তাই পড়ার সময় পাইতেছি না আর তাই আপনেরে ভর্তা বানাইতে ইচ্ছা করতাছে। আহা আগে কি সুন্দর খালি ব্লগ পড়তাম। ইটা রাখলাম পরে পড়ুম এখন পড়নের টাইম নাই।
বরাবরের মতোই ভাল লাগলো
আমারো অনেক সখ ছিলো জাহানারার মতো ডাইরি লিখুম। শুরুও করেছিলাম। কিন্তু কয়দিন পরেই দেখলাম কি খাইছি কি আর কি খামু আর কি খাইতে ভাল লাগবে- এর থেকে বেশি কিছু লেখা হচ্ছে না। মাঝে মাঝে কাকে পেটাবো- এইটা অবশ্য লিখে রাখতাম। পরে এইটাও বন্ধ হলো।
তারপরে না লিখলেও অবশ্য ডায়রির সাথে আমার সম্পর্ক একটা ছিলোই। কয়দিন পরেই আবিষ্কার করলাম যে লুকিয়ে অন্যের ডায়রি পড়ার থেকে মজার কাজ আর দুনিয়াতে নাই।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
কি খাইছেন কি খাইলেন আর কি খাইতে মঞ্চায় সেই ডাইরি পড়তে চাই। পিটানির লিস্টে আমার নাম থাকলে ঐ পাতা বাদ্দিয়া দিয়েন।
..................................................................
#Banshibir.
অনুবাদ ভাল হয়েছে। চলুক
কৈতেছেন।
..................................................................
#Banshibir.
অনুবাদ সেরাম হইছে।
পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায়তেছি।
অপেক্ষান আরেট্টু।
..................................................................
#Banshibir.
অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক লেখা। পরের পর্ব পড়ার জন্য লালায়িত হয়ে আছি
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
লালায়িত
..................................................................
#Banshibir.
নতুন মন্তব্য করুন