ড্যানিশ কোম্পানী

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: রবি, ০৭/১০/২০১২ - ২:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১৬১৬ সালের ডেনমার্ক এক হাজার বছরের পুরোন সামুদ্রিক পরাশক্তি, আইসল্যান্ড আর গ্রিনল্যান্ড সহ উত্তর আটলান্টিক জুড়ে তাদের প্রতাপ। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ডেনমার্ক রাজ্য জুড়ে ছিল বর্তমান নরওয়ে এবং বর্তমান সুইডেনের দক্ষিণাংশ। মূলতঃ কৃষিজীবী ছিল দেশটি, সুইডেন পোল্যান্ড আর বিবিধ জার্মান স্টেটের সাথে তাদের হরদম কাইজা লেগেই থাকত।

অন্যান্য ইয়োরোপীয় কোম্পানীর মতই ১৬১৬ সালে ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী খোলা হয় পয়সা বানানোর ধান্দায়। তবে অন্যান্য কোম্পানী যেরকম পরে এই মূল লক্ষ্য থেকে ক্রমশ সরে গিয়েছিল ড্যানিশ কোম্পানীর ক্ষেত্রে তা হয়নি, এরা আগাপাশতলা বাণিজ্যেই শতভাগ মন দিয়েছিল। নানাবিধ দেশদখল মারামারি কাটাকাটিতে এরা যায়নি বললেই চলে। কোম্পানী ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছেও অবশ্য একারনেই।

কোম্পানীর বাণিজ্য মোটেই সস্তা ব্যাপার ছিলনা, সুদূর পূবের সাথে লেনদেনের জন্য প্রয়োজনীয় রূপার মুদ্রা কিনতে হয়েছিল বাইরে থেকে। ড্যানিশ অর্থনীতিতে ভারতীয় বা চীনে মালের তেমন প্রয়োজন ছিলনা। যেসব মাল তাদের জাহাজে ভারতে যেত তার প্রায় কিছুই ডেনমার্কের উৎপন্ন ছিলনা, যা ফিরে আসত তারও খুব বেশী হলে পাঁচ ভাগের এক ভাগ ডেনমার্কে ঢুকত। মোটের উপর ওলন্দাজদের মতন কারবার, তাদের ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীও এরকমধারা ছিল। ড্যানিশ কোম্পানীতে ওলন্দাজ ছিল ভুরিভুরি, সত্যি বলতে কি কোম্পানী গঠনের মূলেও ছিল সেই ওলন্দাজ। ১৬১৫ সালে দুই ওলন্দাজ সওদাগর আমস্টার্ডামের ইয়ান দে উইলেম আর রটার্ডামের হেরমান রোজেনক্রান্তজ্ রাজা চতুর্থ ক্রিশ্চিয়ানকে কানবুদ্ধি দেন যে ওলন্দাজ কোম্পানীর মত কিছু একটা খুললে ব্যাপক পয়সাকড়ির সম্ভাবনা।

ক্রিশ্চিয়ান ছিলেন বুদ্ধিমান, তার অনুমতিক্রমে ১৬১৬ সালের ১৭ মার্চ কোম্পানী চার্টারপ্রাপ্ত হয়। চার্টার অনুযায়ী কোম্পানী ডেনমার্ক আর এশিয়ার মধ্যে বারো বছর পর্যন্ত সওদাগরী চালিয়ে যেতে পারবে। চার্টার কোম্পানী দোনোটাই ওলন্দাজের প্রায় হুবহু কপি বলা চলে। দুই উইলেম ভাই ইয়ান আর ডেভিড ছিল কোম্পানীর বৃহত্তম স্টকহোল্ডার। বিদেশীরা সবসময়ই কোম্পানীর গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল। এতে করে কোম্পানীর পয়সা বা অভিজ্ঞতার কখনোই কমতি হয়নি, কিন্তু একটা বিরাট সমস্যা তৈরি হয় যা ড্যানিশরা কখনোই মেটাতে পারেনি। রাজধানী কোপেনহেগেন মোটেই লন্ডন আমস্টার্ডামের মতন রমরমা শহর ছিলনা, সুগঠিত বাণিজ্য বাজার হিসেবে এই শহর তখন যোজন যোজন পেছনে। সুতরাং মাল শহরে এনে রাখলেই চলবেনা আবার পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে বড় শহরে, এই খরচের কারণে মালের দাম বেড়ে যেত।

প্রথম যাত্রার উদ্যোগ হয় যখন বশখাওয়ার নামে আরেক ওলন্দাজ ১৬১৭ সালে ড্যানিশ দরবারে এসে দাবী করে সে হল সিংহল সম্রাটের দূত, রাজার সাথে বাণিজ্যে ইচ্ছুক। ছোট এক জাহাজ পাঠানো হল, সেই জাহাজ সিংহলে গিয়ে ভেড়ে ১৬২০ সালে। যাত্রার মাঝপথেই বশখাওয়ার অক্কা পেয়েছিল, তাই তাকে দেখে যেতে হয়নি যে ড্যানিশরা আবিষ্কার করে এই সম্রাট আসলে কান্ডির রাজা সেনরথ, যে কিনা কোনদিন ডেনমার্কের নামই শোনেনি। পর্তুগীজের সাথে তখন সেই রাজার দোস্তি, তারা এই উটকো ড্যানিশ জাহাজ দেখে ব্যাপক ঝামেলা লাগিয়ে দিল। ড্যানিশরা চেয়েছিল ত্রিঙ্কোমালিতে দূর্গ বানাবে, সেই আশা ছাড়তে হল। সিংহলে থামার বদলে জাহাজ করোম্যান্ডেল উপকূলের দিকে চলতে থাকল ক্যাপ্টেন অভে গিয়েডের নির্দেশ অনুযায়ী।

১৬২০ এর অক্টোবরে সে পৌঁছাল তাঞ্জোরের নায়েক রঘুনাথের দরবারে। তারা মিলে চুক্তি করে থারাঙ্গাম্বাদিতে (ট্রাঙ্কেবার) কুঠি গড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। দুই বছর পরে গিয়েডে ডেনমার্ক ফিরে যান, ট্রাঙ্কেবারের নেতৃত্বে থাকেন ওল্যান্ড ক্রাপ যিনি ড্যানসবোর্গ দূর্গ খাড়া করিয়ে দেন যা আজও টিকে আছে জাদুঘর হিসেবে।

Settlements

ডাইনেবাঁয়ে ব্যবসা বাড়ানোর ফিকির শুরু হয়। মসুলিপটনমে কুঠি ওঠে, পিপলি আর বালাসোরে অন্যান্যদের সাথে কুঠি স্থাপনা করা হয়। কিন্তু পয়সা ইনকাম বড় কঠিন কর্ম হয়ে ওঠে ড্যানিশদের জন্য। ইয়োরোপে তখন যুদ্ধ আর মন্দা। ১৬২৭ সালে ক্রাপ নায়েককে বার্ষিক নজরানা দিতে অসমর্থ হয়ে পড়েন, ট্রাঙ্কেবার ওলন্দাজদের কাছে বেচে দেবার কথা ওঠে। কিন্তু কোন চুক্তি হয়না শেষ পর্যন্ত। পরে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় পর্তুগীজদের মাল লেনদেন করে বেশ কিছু টাকা আসে তাদের হাতে, কিন্তু তাও ক্রমে কমে আসে। এইরকম অবস্থায় ১৬৩৬ সালে ক্রাপ ডেনমার্ক ফিরে যান, পেছনে নেতৃত্বে থাকলেন বারেন্ট পেসার্ট বলে আরেক ওলন্দাজ। পেসার্টও দেনায় তলিয়ে যেতে থাকলেন, এমন অবস্থা হল যে তার পরিবারের সদস্যকে জিম্মি রাখা হয়। একটা গোলকোন্ডার জাহাজ দখল করে পরে পয়সা মিটিয়ে দেয়া হয়।

ড্যানিশ কোম্পানী এরকম প্রায় দেউলে অবস্থায় বাণিজ্য করে ১৬৩৯ সালে দুটো জাহাজ ট্রাঙ্কেবারে পাঠায়, তারপরে তিরিশ বছর আর কোন জাহাজ পাঠানো হয়নি। ১৬১৬ সালের সেই উদ্যম ততদিনে হাওয়া, শেয়ারহোল্ডাররা বিরক্ত। ১৬৪০ সাল পর্যন্ত বাইশ বছরে মাত্র সাতটি জাহাজ কোপেনহেগেনে পৌঁছে ভারত থেকে। রাজা প্রথম থেকেই এই কোম্পানীর বড় সমর্থক, কিন্তু দেশের ও আন্তর্জাতিক সমস্যায় তিনি তখন খুবই ব্যস্ত। তিরিশ বছর ব্যাপী যুদ্ধে ডেনমার্ক ছিল ব্যর্থ। শেয়ারহোল্ডারদের চাপে কোম্পানী নিলামে ওঠে।

ডেনমার্কের কাছ থেকে দিনের পর দিন কোন জাহাজ না আসায় এবং বাণিজ্যের জন্য কোনরকম পুঁজি না থাকায় ট্রাঙ্কেবার কোম্পানীর লোক পয়সা কামানোর অন্য ফিকির খুঁজতে থাকে। সবচাইতে সহজ উপায় ছিল পাইরেসি। ১৬৪০ সাল থেকে বঙ্গোপসাগরে লুটপাট শুরু হয়, মোটামুটি ১৬৪০-৭০ এই তিরিশ বছর স্থানীয় সওদাগরদের লুট করতে এরা মন দেয়। এই লুটপাটকে অবশ্য ড্যানিশ আর বাংলার শাসকগোষ্ঠির মধ্যে “যুদ্ধ” তকমা দেয়া হয়। দুইটে ঘটনা থেকে এর সূত্রপাত। পিপলিতে স্থানীয়রা যখন দুটি ড্যানিশ জাহাজ আটকে দেয়, আর বালাসোরে ড্যানিশরা তাদের কুঠিতে লুটতরাজের জন্য বাঙালিদের দায়ী করে। দুই পক্ষে লেগে যায় গ্যাঞ্জাম, চলে পরবর্তী বত্রিশ বছর।

১৬৪৩ সালে উইলেম লেয়েল আসেন পেসার্টের জায়গায়, কিন্তু গভর্নর হতে গিয়ে দূর্গ তাকে রীতিমত লড়াই করে নিতে হয়। পেসার্ট যেতে চাননি, কিন্তু বিপদ বুঝে তাকে পালাতে হয়। পালাবার সময় তিনি নিয়ে যান দূর্গের যাবতীয় লাঠিবন্দুক আর পয়সাকড়ি। লেয়েল গভর্নর হয়েই নিজেকে আবিষ্কার করেন গোলকোন্ডার সাথে ড্যানিশ ক্যাচালের মাঝখানে, এছাড়া দূর্গে বিদ্রোহও দমন করতে হয় তার। বিদ্রোহীদের নেতা পল হ্যানসেন করসুয়ো ১৬৫৫ সালে মারা যায় আর তার জায়গায় আসে এস্ক্লিড অ্যান্ডারসেন কংসবাক, যে কিনা ঐখানকার সর্বশেষ ড্যানিশ ছিল। সে অতি উত্তম পাইরেট ও ছিল।

১৬৫৫ সাল, তাঞ্জোরের নায়েক ঘ্যানঘ্যান করে যাচ্ছিলেন বকেয়া পাওনা বুঝিয়ে দিতে। কাজ হচ্ছেনা দেখে সশস্ত্র সৈন্য পাঠানো হয় ট্রাঙ্কেবারে। কংসবাক তাদের পিটিয়ে তাড়িয়ে দেন আর ড্যানসবোর্গ দূর্গ মেরামতও করেন। ১৬৬৮ সালে কংসবাক দূত পাঠান ডেনমার্কে সাহায্য চেয়ে, সেই দূতের আগমনে ভারত বাণিজ্য নিয়ে ডেনমার্কের লোকে আবার নড়েচড়ে বসে। ১৬৬৯ সালে এক জাহাজ পাঠানো হয়, ভারত থেকে সেই জাহাজ মাল নিয়ে ফিরে এলে তাতে ব্যাপক লাভ হয়। রাজা তৃতীয় ফ্রেডরিক ইন্ডিয়া কোম্পানী আবার মোটাতাজা করা যায় কিনা তা ভাবতে বসেন।

এই রাজা ফ্রেডরিক গদিতে আসেন ১৬৪৮ সালে, তিরিশ বছরের যুদ্ধে চড় খেয়ে ডেনমার্কের অবস্থা তখন শোচনীয়। সুইডিশদের জন্য তখন ডেনমার্কের আধিপত্য কমে গিয়েছিল, কিন্তু আস্তে আস্তে রাজা ফ্রেডরিক তার আসন শক্ত করেন এবং সমসাময়িক ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই এর মত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী পুনর্গঠনে মন দেন।

১৬৭০ সালে নতুন চার্টার ইস্যু করা হয়।

(পরের পর্বে সমাপ্য)
…...............................................................................................................
রডরিক ম্যাথিউজ রচিত Traders, Pirates and Money Launderers: The Danes and India: 1616-1845 এর ছায়ানুবাদ।


মন্তব্য

মেঘা এর ছবি

আমি ভেবেছিলাম ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী শুধু ইংরেজদের ছিল ইয়ে, মানে... যা হোক পড়তে বেশ লাগছিল। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি কালকেই দিয়ে দিয়েন পীর ভাইয়া দেঁতো হাসি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সত্যপীর এর ছবি

সব শয়তান কোম্পানী খুলে জাহাজ চেপে আসছিল পয়সার গন্ধে গন্ধে, সব কোম্পানী টিকে নাই এই আর কি।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

করোম্যান্ডেল = করমণ্ডল (চোলামণ্ডলম = চোলা সাম্রাজ্য। পরে পর্তুগীজদের উচ্চারণে করমণ্ডল হয়ে গেছে)

থারাঙ্গাম্বাদি = থারাঙ্গামওয়াড়ি < তরঙ্গমবরি < তরঙ্গবরি (গান গাওয়া তরঙ্গের ভূমি)

মসুলিপটনম = মসলিপত্তম (মসলিন ব্যবসার জন্য বিখ্যাত। নামটা সেখান থেকেই এসেছে)

গোলকোন্ডা = গোলকুণ্ডা (মধ্য-দক্ষিণ ভারতের স্বাধীন রাজ্য, বিখ্যাত হীরক কোহ্‌-ই-নূর এদের কাছ থেকে মুঘলরা হস্তগত করেছিল। কোহ্‌-ই-নূর ছাড়া দরিয়া-ই-নূর, দ্যা হোপ, দ্য রিজেন্টের মতো বিখ্যাত হীরকও এদের ছিল।)

প্রথম ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ১৬১৭ সালের প্রথম ভয়েজের নেতৃত্বে ছিল অ্যাডমিরাল Ove Gjedde। ১৬১৯-এ এরা পর্তুগীজদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে শ্রীলঙ্কার ত্রিঙ্কোমালীতে উপনিবেশ স্থাপনে ফেল করে ভারতের মূল ভূখণ্ডের থারাঙ্গামওয়াড়িতে চলে আসে। ১৬২০ সালের মে মাসে ‘থিরু কোনামামালাই কোনেসার কোভিল’ বা হাজার স্তম্ভের মন্দিরের একাংশ দখল করে দুর্গ বানিয়ে উপনিবেশ স্থাপন করে যার প্রথম গভর্নর ছিলো ক্যপ্টেন ক্রাপ্পে। থাঞ্জাভুরের শাসক রঘুনাথ নায়েক সাহিত্য আর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে ডুবে থাকা মানুষ হলেও ভালো যোদ্ধা ছিলেন। ভারতে পর্তুগীজদের পিটুনী দেয়া ছাড়াও ভারতের মূল ভূখণ্ডের বাইরে শ্রীলঙ্কার জাফনা উপকুলেও পর্তুগীজদের পিটিয়ে উচ্ছেদ করেন। সম্ভবত মন্দির ভাঙায় তিনি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। ফলে ১৬ই নভেম্বর ১৬২০ সালে ডেনিশদের সাথে ট্রিটি সাক্ষর করেন। রঘুনাথ ঐসময় ডেনিশদের ঠিকমতো পিট্টি দিলে ভারতে তাদের আর ব্যবসা করতে হতো না।

প্রথম ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ভারত থেকে চা এনে ব্রিটেনে চোরাচালান করার জন্য কুখ্যাত ছিল। থারাঙ্গামওয়াড়ি ডেনিশদের জন্য ছিল মূলত ট্রানজিট পোর্ট। চীনের কুয়াঙচৌ, ইন্দোনেশিয়ার জাভা ও সুলাওয়েসি আর ভারতের বাঙলা থেকে পণ্য (মসলিন, সুতী কাপড়, গোলমরিচ, গরম মশলা) এনে কোপেনহেগেনে চালানের জন্য এই বন্দর ব্যবহৃত হতো। এর সুরক্ষার জন্যই ফোর্ট ডেনস্‌বার্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রথম ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ১৬৫০ সালে লিকুইডেট হয়ে যায়।

১৬৫০ থেকে ১৬৭০ পর্যন্ত সময়কালের ঘটনার জন্য ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী দায়ী হবার কথা না।

১৬৭০ সালে দ্বিতীয় বারের মতো এটি গঠিত হয় যা ১৭২৯ সাল পর্যন্ত চলে।

১৭৩০ সালে ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ‘এশিয়াটিক কোম্পানী’ নামে গঠিত হয়ে চীনের কুয়াঙচৌতে ব্যবসা শুরু করে।

১৬ই অক্টোবর, ১৮৬৮ তে কী ঘটেছিল সেটা নিশ্চয়ই পরের পর্বে পাওয়া যাবে। এই প্রশ্নটার উত্তর দিয়ে ‘কৌন বনেগা ক্রোরপতি’তে একজন এক কোটি রূপী জিতেছিল।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

খেকশিয়াল এর ছবি

চলুক চলুক
আমাদের সিধু জেঠু হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

খেকু ভাইয়ের মত আমিও বলি, আপনি আসলেই সচলের সিধু জেঠু।

মেঘা এর ছবি

চলুক ছোট আরেকটা পোষ্ট হয়ে গেলো

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সত্যপীর এর ছবি

এই পিপলি কুঠি টা কোন জায়গায় পাণ্ডবদা কইতে পারেন? বালাসোরের কাছে নদীর পারে এইটুক বর্ণনা পাইসি কয়েকটা বইয়ে, কিন্তু নিশ্চিত করে ম্যাপে জায়গাটা পিনপয়েন্ট করতে পারতেসিনা। এইটা কি উত্তর ২৪ পরগণার পিপলি গ্রাম?

এশিয়াটিক কোম্পানী ১৮৬৮ এর ঘটনা ইত্যাদি সবই শেষ পর্বে আসবে।

অফ টপিক, উইলেম লেয়েলের উপর একখান বই ডাকে আসতিছে পাণ্ডবদা। ট্রাঙ্কেবারের নানাবিধ ফাইটিং নিয়া পরে সময়মত পোস্ট দিমু দোয়া রাইখেন দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

দিগন্ত এর ছবি

বালাসোর = বালেশ্বর।
অফটপিক - প্রতাপাদিত্য ও খিলজী বিষয়ে আমার ইন্টারেস্ট আছে। ওই পর্বগুলোর জন্য বিশেষভাবে আগ্রহী।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সত্যপীর এর ছবি

হুঁ বালাসোর কুঠি ম্যাপে পাইসি, পিপলি কুঠি বালাসোরের ৫ লীগ দূরে সেইটাও দেখলাম। কিন্তু ঠিক কুন জায়গায় পিপলি কুঠি বুঝতেসিনা।

প্রতাপাদিত্য বা খিলজী নিয়া ভবিষ্যতে পোস্টানোর ইচ্ছা আসে দিগন্তদা।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এক খিলজীর কথা এই লিঙ্কের ১২নং পয়েন্টে পাবেন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দিগন্ত এর ছবি

আপনার সাথে নালন্দা নিয়ে কথোপকথন পড়লাম। মিনহাজের লেখা অনুসারে খিলজী বৌদ্ধদের হিন্দুদের থেকে আলাদা করতে পারেননি। উনি তাদের হিন্দু ভেবেই আক্রমণ চালিয়েছিলেন। আমি বইটার ইংরেজী অনুবাদ পড়েছি - আপনার সাথে শেয়ার করতে পারি। এখানে পৃষ্ঠা ৫৪২ থেকে পড়তে পারেন।

"The greater number of the inhabitants of that place (Bihar/Nalanda) were Brahmans, and the whole of those Brahmans had their heads shaven; and they were all slain. There were a great number of books there; and, when all these books came under the observation of the Musalmans, they summoned a number of hindus that they might give them information respecting the import of those books; but the whole of the Hindus had been killed. On becoming acquainted, it was found that the whole of that fortress and the city was a college and in the Hindui tongue, they call a college Bihar. "


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পিপলী কুঠি নিশ্চিতভাবে চব্বিশ পরগণার পিপলী গ্রাম নয়। এটা বালাঙ্গা নদীর তীরে বালাসোর/বালেশ্বর জেলায়। সম্ভবত বর্তমান ট্যুরিস্ট পয়েন্ট চাঁদিপুর বা তার কাছের কোন জায়গা।

উইলেম লেয়েলের বই নিয়ে পোস্টের জন্য দোয়া জারী থাকলো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

পিপলি সে সময়ে উড়িষ্যার একটি বিখ্যাত বন্দর, বঙ্গোপসাগরের তীরে।

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ, তাই দেখলাম এখানে। সুবর্ণরেখা নদীর তীরে বেশ বড় বন্দর, রমরমিয়ে দাস ব্যবসা চলতো বলতেসে চিন্তিত

..................................................................
#Banshibir.

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

রমরমিয়ে দাস ব্যবসা চলতো

জ্বী, পর্তুগীজরা বাংলা থেকে যে সকল মানুষ শিকার করতো, তাদের মধ্যে মেয়েদের বিক্রী করতো পিপলী বন্দরে। দেশীয় রাজ রাজরারা ভাল দামে সে সকল হতভাগীদের কিনে নিত।

সত্যপীর এর ছবি

পিপলিতে খালি মেয়ে বিক্রি হইত? ইন্টারেস্টিং। পিপলির উপরে কিসু বইপত্র আর্টিকেল জানা থাকলে লিঙ্ক টিংক দেন্না।

..................................................................
#Banshibir.

আব্দুল্লাহ এ.এম এর ছবি

পর্তুগীজরা যে সব পুরুষদের ধরতো, তাদের অধিকাংশই কিনে নিতো ডাচরা। তাছাড়া লুটের আধাআধি বখরা হিসেবে মগ রাজাকে সাধারনত: পুরুষগুলো দিয়ে দিত।

যুমার এর ছবি

হোয়াইট মুঘলসে পড়েছিলাম মসলিপত্তম জায়গাটা মছলি বা মাছের জন্য বিখ্যাত।

দুর্দান্ত এর ছবি

ডালরিম্পলের মত ওরিয়েন্টালিস্টেরা বুঝতে পারেনা যে উপমহাদেশে আরবি/ফারসির আগমনের আগেও সভ্য়তা ছিল।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

অনুবাদ ভাল হইছে।

সত্যপীর এর ছবি

দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

প্রান্তিক রহমান এর ছবি

ইতিহাস নিয়ে আমার আগ্রহ আছে। কিন্তু আমার স্মরন শক্তি খুবই ভয়াবহ। আর আপনার পোস্ট গুলো বেশ সময় করে করে আসে বলে আমার নিজের মাথার ভেতর আরেক ধরনের নতুন ইতিহাস রচিত হয়ে যায়। সেই ইতিহাসের সাথে আপনার নতুন পোস্ট এর ইতিহাস যুক্ত হয়। এভাবেই একেবারে অন্য ধরনের ইতিহাস মাথার ভেতর তৈরি হচ্ছে।

সত্যপীর এর ছবি

কন কি? জটিল সিস্টেম!

..................................................................
#Banshibir.

যুমার এর ছবি

চলুক

সত্যপীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

..................................................................
#Banshibir.

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

চলুক

সত্যপীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

..................................................................
#Banshibir.

ক্লোন৯৯ এর ছবি

চলুক ইতিহাস পড়তে ভালই লাগে খালি পরীক্ষার খাতায় লিখতে গেলেই উল্টা পাল্টা হয়া যাইতো মন খারাপ
বড়োই দু:সময় গেসে ক্লাস ৭/৮। এক ইখতিয়ার উদ্দিন মো: বিন বখতিয়ার খিলজির নাম মুখস্ত করতেই আমার মাস খানিক লাগছিল ওঁয়া ওঁয়া

সত্যপীর এর ছবি

পরীক্ষা নিমু সামনে খাড়ান।বক্তিয়ার খিলজি জন্মের সময় যে কাঁচি দিয়া নাড়ি কাটা হয় তার সাইজ কি ছিল টাইপ কুশ্চেন দিমু (মুজতবা আলী দ্রষ্টব্য)।

..................................................................
#Banshibir.

কড়িকাঠুরে এর ছবি

চলুক
ড্যানিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিই কী উপমহাদেশ আগে থেকে ভ্যানিশ হয়?

সত্যপীর এর ছবি

অন্যান্য কোম্পানীর আগে ভ্যানিশ হয় কিনা? নাহ তার আগেও কিছু কোম্পানী হারায়ে গেসিল যেমন অস্টেন্ড কোম্পানী

..................................................................
#Banshibir.

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক

সত্যপীর এর ছবি

চাল্লু

..................................................................
#Banshibir.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।