বাদশাহী সফর

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: রবি, ২৮/১০/২০১২ - ২:৫২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মোগল বাদশাদের সবসময়ই ধারণা ছিল সফরের সময় পাত্রমিত্রসিপাইসান্ত্রী কাঁধে নিয়ে ঘুরলে বিপদেআপদে কাজে আসবে। সফরের মূলমন্ত্র ছিল গতি, থামা চলবে না। বলা হত এমনকি চমৎকার দিলখোশ নদীর পারের সূর্যাস্তের ভিউওলা স্থানেও এক রাতের বেশী দুরাত আরাম করে তাঁবু গেড়ে বসা যাবেনা অযথা। আওরঙ্গজেব বলেনঃ “সম্রাটের কখনোই আয়েসে গা ঢেলে আরামে মত্ত হওয়া যাবেনা। এভাবেই একের পর এক দুর্বল রাজ্য হার মেনেছে। সবসময় চলার উপর থাকতে হবে যথাসম্ভব। উত্তম রাজা বহমান পানির ধারার মতই, থেমে গেলে সর্বনাশ।”

আওরঙ্গজেব এই সর্বদা দৌড়ের উপর থাকার পলিসি খাটিয়ে নিজের বাপকেও কোণঠাসা করে এনেছিলেন, পিতা শাজাহান আগ্রা আর দিল্লীতেই ছিলেন গ্যাঁট হয়ে বসা।

মোগলেরাই দুনিয়ার সবার আগে দেশচালনায় সফরকে গুরুত্ব দিয়েছে তা মোটেই নয়। পুরান ভারতবর্ষে আমরা ঘোড়া বলি দেবার গল্পে দেখি তাগড়া ঘোড়াকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে আর রাজা তার পিছু পিছু চলেছেন যেন ঘোড়া সুরক্ষিত থাকে। সফর শেষ করে ঘোড়া ফিরে এলে তবেই তাকে দেবতার উদ্দেশ্যে বলি দেয়া হত। সর্বদা চলার উপর থাকতে হবে এই তত্ত্বে মধ্য এশিয়ার যোদ্ধারাও বিশ্বাস করত, বিশেষত চেঙ্গিস খাঁ আর আমির তৈমুর। সেই দীক্ষায় দীক্ষিত উজবেক শাসক বুখারার সায়বানি খাঁকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় তার রাজধানী কোথায়, তিনি উত্তর দিয়েছিলেন আমাদের রাজধানী আমাদের ঘোড়ার জিন।

আকবর বাদশার সবকিছুই হত হিসেব করে, ঝোঁকের মাথায় ছক না কষে তিনি এগুতেন অল্পই। যেকোন মুহুর্তে যুদ্ধযাত্রার জন্য তার মজুত থাকত “পাঁচশত হাতি আর মালবহনের জন্য একশত সারি ঘোড়া আর উট, প্রতি সারিতে দশটি করে।” আবুল ফযল পাতার পর পাতা বকবক করে গেছেন বর্ণনা দিয়ে যে আকবর বাদশা ছিলেন এক অক্লান্ত নেতা যার অত্যন্ত পেয়ারের বিষয় ছিল শিকার করা আর যার “হৃদয় কখনই একস্থানে বাঁধা পড়ে থাকেনি”। মোগলাই ফৌজের গতি নিয়েও তিনি বিস্ময়কর দাবী করে গেছেন, ১৫৭৩ এর অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে আকবরের গুজরাট অভিযান নিয়ে। এই ব্লিৎজক্রিগে আকবর তিন থেকে চারশো সিপাই নিয়ে বিশ হাজারের ওপর বিদ্রোহী দমন করেন শোনা যায়, ফতেপুর সিক্রি থেকে ৮০০ কিমি দূরে যেখানে কাফেলা নিয়ে যেতে দুতিন মাস লেগে যাবার কথা সেখানে এই ফৌজ পথ পাড়ি দিয়েছিল নয় দিনে। তবে সেসব যুদ্ধের সময়ের কথা, সাধারন সফরে ফৌজ মালপত্তর কাঁধে নিয়ে এগুত দিনে দশ থেকে বিশ কিমি।

চার বাদশা আকবর, জাহাঙ্গীর, শাজাহান আর আওরঙ্গজেব মোটামুটি শতকরা ৬৫ ভাগ সময় থিতু অবস্থায় ছিলেন, রাজধানীতে বা অন্য কোথায় বছরে ছয় মাসের অধিক (যুদ্ধকালীন দীর্ঘ অবস্থান ব্যতিত)। বাকি ৩৫ ভাগ সময় তারা ছিলেন সফরে। এই পরিসংখ্যান আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় মিলে যায় সাফাভিদ রাজা প্রথম শাহ আব্বাসের ওপর করা মেলভিলের পরিসংখ্যানের সাথে, আব্বাস এক তৃতীয়াংশ সময় রাজধানীতে এক তৃতীয়াংশ সময় অন্য স্থানে স্থির আর এক তৃতীয়াংশ সফরে কাটাতেন। এই সাফাভিদ আর মোগল সফরের সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই অটোমান শাসকদের থেকে অনেক উপরে, অটোমানেরা রাজধানীতেই সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। তবে এস্থলে বলে রাখা দরকার, সাফাভিদদের মতই মোগলেরা ইচ্ছেমত রাজধানী পাল্টাতো, বা সঠিক করে বলতে হয় যেখানে বাদশা সেটাকেই রাজধানী ঘোষণা করে দিত। মোগলেরা প্রায় চল্লিশ শতাংশ সময় কাটাত মধ্যভারতের রাজধানীতে (দিল্লী, আগ্রা বা ফতেপুর সিক্রি), দশভাগ সময় উত্তরের রাজধানীতে (লাহোর, কাশ্মীর, কাবুল আর হাসান আবদাল) আর পনেরোভাগ সময় কাটত দক্ষিণের রাজধানীতে (আজমীর, মান্ডু, বুরহানপুর বা দাক্ষিণাত্যে আওরঙ্গজেবের বিভিন্ন “স্থায়ী” ক্যাম্পে)।

শাসনের শেষদিকে আওরঙ্গজেব প্রতিটি যুদ্ধে থাকতে পছন্দ করতেন, এই জিনিসটি দেখা গিয়েছিল তরুণ আকবরের মধ্যে। পরে অবশ্য আকবর যুদ্ধের অংশটা তার ছেলেপেলে আর জেনারেলদের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছিলেন, আর তিনি প্রতিটা যুদ্ধে স্ট্র্যাটেজিক দূরত্ব বজায় রেখে নজর রাখতেন। এই দূরত্ব বজায় রেখে নেতৃত্বদানের ব্যাপারটা জাহাঙ্গীর আর শাজাহানও অনুসরন করতেন। যুদ্ধাভিযানের হাওয়া বুঝে রাজধানী নির্ণয় হত। দাক্ষিণাত্যের উপর নজরদারি রাখার উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আজমীর বা মান্ডুতে মাসের পর মাস কাটিয়ে দিতেন। শাজাহানের চোখ ছিল উত্তরে, তিনি লাহোর বা কাবুলে নিয়মিত সময় কাটাতেন উত্তরভারতে মোগল প্রতাপ বাড়ানোর লক্ষ্যে।

মোগল ফৌজের এইরকম উত্তর দক্ষিণে যাতায়াতের পথে চালু রুট ছিল কাবুল - লাহোর - দিল্লী - আগ্রা - আজমীর - মান্ডু - বুরহানপুর। আগ্রা থেকে পূর্বে বাংলা প্রদেশে যাবার পথ ছিল অত্যন্ত অল্প ব্যবহৃত, সম্ভবত স্থলপথের চেয়ে গঙ্গা যমুনা নদী বাহিত নৌপথে যাতায়াত সহজ ছিল বলে। পশ্চিমের তুলনায় এদিকে গ্রামেগঞ্জের লোকসংখ্যাও ছিল বেশি, ফৌজ মার্চ করে যাবার মত মাইলের পর মাইল ফাঁকা জমি ছিল পূবে কম।

মধ্যযুগে ইয়োরোপীয় ছোট বাহিনীর মতই মোগল ফৌজ খাবারের সন্ধান নিত স্থানীয় এলাকা থেকে। অল্প কিছু জায়গা (যেমন কাশ্মীর বা কাবুল) ছাড়া ভারতের যেকোন স্থানই মোগল রাজদরবার ও ফৌজকে ছয় মাসের অধিক সময় ধরে খাবার সরবরাহ করতে সক্ষম ছিল। মোগল সিপাই খেতও অল্প, ফরাসী পর্যটক তাভের্নিয়ে বলে গেছেনঃ

আমাদের একশ সৈন্য এদের হাজার সিপাইকে চোখবুঁজে হারিয়ে দিতে পারবে সত্য কথা, কিন্তু এ ও খেয়াল করা প্রয়োজন যে এই পরিবেশে আমাদের সিপাই টেকার সম্ভাবনা কম। ঘোড়সওয়ার আর পদাতিক দুইজনেই অল্প চিনিময়দা নিয়ে ঘোরে, আর ঐ দিয়ে বল বানায়। চালডাল যোগাড় হলেই এরা খিচুড়ি বসিয়ে দেয়, আর ঘিয়ের বাটিতে আঙুলের ডগা ডুবিয়ে পটাপট চালডালনুনের এরকম নিরামিষ খিচুড়ি মেরে দেয়।

সফরের আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক পয়সাকড়ি। সওদাগরেরা নিয়মিতই ঘুরঘুর করত মোগল সফরে টাকার থলি হাতে। যুদ্ধযাত্রা ও অন্যান্য সফরে টাকার নিশ্চিত যোগান ঠিক রাখতে স্ট্র্যাটেজিক স্থাপনায় বসে রাজকোষ। আগ্রার দূর্গ ছিল মূল ধনভান্ডার, এছাড়া ট্রেজারি খোলা হয় গোয়ালিওর, নানওয়াড়, আসিরগড় (বুরহানপুর), রোহতা আর লাহোরে। বাদশা নিজেও অঢেল পয়সাকড়ি নিয়ে সফরে যেতেন, মানুচ্চির মত মেনে নিলে আওরঙ্গজেব ৩০০ উটের পিঠে ছাপ্পান্নো হাজার পাউন্ড রূপা আর আঠাশ হাজার পাউন্ড সোনা নিয়েছিলেন কাশ্মীর যাবার সময়। এই ধনসম্পদ পথে খরচ হত প্রচুর, তাই মোগল সফর উপলক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসাবাণিজ্যও ফেঁপে উঠত।

মোগলাই সফর মোসুম মেনে চলত মোটামুটি। যদিও তাদের শীতগ্রীষ্ম যেকোন সময়ই সফর সম্ভব ছিল ভারতে, তবু তারা গরমে উত্তরে আর শীতে দক্ষিণে থাকতে পছন্দ করত। যেমন হুমায়ুনের পর সব মোগল বাদশাই কাবুল বাস করতেন মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে, ঐটে উত্তরের উপজাতিদের কাছ থেকে যুদ্ধের ঘোড়া খরিদ করার উত্তম সময়। সেরকম কাশ্মীর ছিল গরমের সময়ের পয়লা পছন্দ।

সফর মানেই রাস্তা নির্মান আর পথে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা। সফরের পূর্বেই পাই পাই হিসেব হত দূরত্ব আর সময়ের ব্যাপারে। ফৌজ যেহেতু প্রায়ই ঘন জঙ্গল আর পাহাড়ি পথে যেত, সম্মুখের দলের প্রথম কাজ ছিল ঝোপঝাড় সাফ করে পাহাড় কেটে রাস্তা সমান করা। ১৫৮৫ সালে কাবুল যাত্রার সময় আকবর আগ্রা দূর্গের মূল ইঞ্জিনিয়ার কাশিম খাঁ কে হুকুম দেন সিন্ধু পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করতে হবে, নদীর ওপর ফৌজি যাতায়াতের মতন পোক্ত সেতু গড়তে হবে আর খাইবার পাসের মধ্য দিয়ে যাবার মত পথ বানাতে হবে। আবুল ফযলের মতে এই অভিযান নাকি মধ্য এশিয়ায় এতই ব্যাপক ভয়ের জন্ম দিয়েছিল যে বলখের সদরফটক বন্ধ করে রাখা হয় ভয়ে। একই লোক পরে কাশ্মীর যাবার প্রশস্ত রাস্তা তৈরি করেন মোগলাই বাদশার সফরের উপযোগী করে। এই রাস্তার বিরাট প্রশংসা করে আকবর ইরানের শাহ কে চিঠি লেখেন।

বাদশাহি সফরে এত লোকলস্কর পাইকপিয়াদা চাকর নফর হাতি ঘোড়া থাকত যে এর গতি দ্রুত হবার সম্ভাবনা ছিলনা বললেই হয়। গড়ে ১৬ কিমি এগোত কাফেলা, কিছু কিছু দিন ছিল পূর্ণ বিশ্রাম তাই ঐটা হিসাবে নিলে দল এগোত দিনে গড়ে ৮ কিমি। অবশ্যই এলাকা আর মৌসুম অনুযায়ী এর বেশকম হত। আর মূল ফৌজের গতি ছিল এর চেয়ে অনেক দ্রুত, দরবারে সমন পাওয়া মনসবদারেরা এগোত দিনে প্রায় ৩০ কিমি। চিঠিবাহকেরা কখনো কখনো দিনে ১২৫ কিমিও দৌড়াত।

তাই সফর হত সাধারণত অবিশ্বাস্য সংখ্যক মানুষের ধীরলয়ের যাত্রা। দেশের দৈনন্দিন যাত্রার এতে কোন হেরফের হতনা। দরবারের কেরানীরা সফরে বাদশার সাথেই ঘুরতেন। মানুচ্চি বলে গেছেন এদের আশিটা উট আর ত্রিশ হাতি লাগত সরকারী কাগজপত্তর বহনের জন্য।

এই সফর বিজ্ঞাপনও ছিল বটে। ধুলো উড়িয়ে ঢোলসহরত বাজিয়ে হাতি ঘোড়া জৌলুষ দেখিয়ে গ্রামকে কে গ্রাম এগিয়ে যাওয়া বাদশাহী সফর দেশের লোকের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিত দেশটা কার শাসনে। এছাড়া এই কাফেলা সারা দেশের রঙবেরঙের মানুষের মিলনমেলাও বটে, বিদেশী মনসবদার এখানে মিশত দেশী জমিদারের সাথে। এই মোগল তাঁবু এক নূতন পরিবেশ তৈরি করল যা না পারসীক না মধ্য এশিয়ান না ভারতীয় না মুসলিম না হিন্দু, সব মিলিয়ে এক অভূতপূর্ব অনন্যসাধারন ককটেল। এই পরিবেশ কেমন ছিল তার খানিক আঁচ পাওয়া যায় মোগল আমীরের বর্ণনায়ঃ “যদিও অনেক নমাজকালাম আর রোজারমজান ছিল ক্যাম্পে; জুয়া, সমকাম, মদ আর ব্যভিচারও চলত অগাধ।”

মোগল ক্যাম্পে পড়াশোনারও ব্যবস্থা ছিল, ক্যাম্পের অধিকাংশ গুনতে আর লিখতে জানতেন একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত। তাঁবুর ভাষা ছিল এক জগাখিচুড়ি, জবান-ই-উর্দু-ই-মুয়াল্লা, সহজভাবে উর্দু। এই উর্দু ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানীয় ভাষার ককটেল, সাথে মিশেছে পারস্যের ফার্সি।

শিকার ছিল সফরের অন্যতম অংশ। প্রায়ই রাজাগজার শিকারের ছবি বা বর্ণনা আমরা দেখতে পাই। এই শিকার হত মূল কাফেলা থেকে সরে এসে, বাদশা পাত্রমিত্র উজিরনাজির যখন শিকারে ব্যস্ত মূল কাফেলা তখন কাছেই ধীরলয়ে এগিয়ে চলেছে। বাদশার নিজস্ব শিকার দলে সাধারণত এক হাজারের মত সিপাই থাকত, বাকিরা মার্চে। কঠিন নিয়মের গন্ডিতে বাঁধা দরবার জীবনের বাইরে হাল্কা পরিবেশে মেতে উঠতেন সম্রাট। শিকারে সম্রাট নিতেনও বাছা বাছা পেয়ারের লোক।

তবে শিকার শুধুই আনন্দের জন্য মনে করলে ভুল হবে, শিকার যোদ্ধার ট্রেনিংক্যাম্পও বটে। বন্য হিংস্র জানোয়ার ধরে বেঁধে ছোট বৃত্তে ছেড়ে দেয়া হত, আর শুরু হত শিকার। চতুর্দিকে হিংস্র জন্তু সামলে এদের শিকার করার অভ্যেস মোগলদের কাজে লাগত যুদ্ধক্ষেত্রে যখন শত্রু তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ত। শান্তিকালীন সময়ে শিকার তাই ছিল তাদের প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড।

তাই মোগলদের কাছে শান্তিকালীন সফর ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে দেশের অর্থনীতি চাড় দিয়ে উঠত, রাস্তাঘাট সেতু তৈরি হত, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শাসকের সাথে দেশের শাসকের দেখা হত আর মোগলাই জাঁকজমক সারাদেশে খোলতাই করে দেখানো হত।অগাস্টিন হিরিয়ার্ট জাহাঙ্গীরের কাফেলা নিয়ে বলে গেছেনঃ

“এই রাজার পয়সা কল্পনার অতীত। তিনি যখন সফরে যান সাথে থাকে পনেরো লক্ষ মানুষ, ঘোড়সওয়ার, পেয়াদা, অফিসার, নারী, শিশু। সাথে যায় দশ হাজার হাতি আর বিপুল গোলন্দাজের দল, যদিও অধিকাংশ সময়ই পয়সার চমক দেখানো ছাড়া এই এত কান্ড কারো কোন কাজে আসে না।”

…..........................................................................................

ইয়োস গমানস রচিত Mughal Warfare বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ের কিছু অংশের ছায়ানুবাদ।

পাদটীকা

  • ১. হাসান আবদাল বর্তমান পাকিস্তানের উত্তর পাঞ্জাবের ছোট শহর। মাথাগরম মুসলমান পীর ওয়ালী কান্দাহারী এইখানে এক পাহাড়ে ডেরা বেঁধে থাকতেন, তার অপর প্রচলিত নাম হাসান আবদাল নামে শহরের নাম রাখা হয়। শোনা যায় শিখ গুরু নানকের সাথে হাসানের ব্যাপক ভেজাল লেগেছিল পানি সাপ্লাই কে কেন্দ্র করে।

মন্তব্য

নিশিতা এর ছবি

মনসবদার মানে কি?

লেখায় চলুক

সত্যপীর এর ছবি

মনসবদার একটা মোগল র‍্যাঙ্ক। মনসব মানে স্থান বা পজিশন। মনসবদারী জায়গীরদারী এগুলি মোগল ভারতে জন্মানো গুরুত্বপূর্ণ টাইটেল। মনসবদারেরা ছিল মোগল ব্যুরোক্রেসির অংশ, এরা উজির (মন্ত্রী) বখশী (জেনারেল) ফৌজদার (কমান্ডার) সুবাদার (গভর্নর) ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ পেত। তবে অনেক মনসবদার আজাইরা পয়সা ওড়াত ঠিকই। এদের নির্দিষ্ট পাইকপেয়াদা ঘোড়া মেনটেন করতে হত, বদলে বেতন দেয়া হত মনসবের সাইজ ও গুরুত্ব অনুযায়ী। পরে মনসবদারী জটিল সিস্টেমে পরিনত হয়, একটার বদলে ডুয়াল র‍্যাঙ্কিং চালু হয় মনসবদার টাইটেলে।

মোগল র‍্যাঙ্কিং নিয়ে লিখব অদূর ভবিষ্যতে নিশিতা, আপাতত ক্ষ্যান্ত দিলাম। মনসবদারী নিয়ে বলতে আরেকটু বড় কলেবর প্রয়োজন। এইখানে পৃষ্ঠা আট দেখতে পারেন।

চমৎকার প্রশ্ন চলুক

..................................................................
#Banshibir.

আলতাইর এর ছবি

অদুর ভবিষ্যৎ মানে ছয় বছর!! জানা গেলো

সত্যপীর এর ছবি

..................................................................
#Banshibir.

আব্দুর রহমান এর ছবি

আমাদের একশ সৈন্য এদের হাজার সিপাইকে চোখবুঁজে হারিয়ে দিতে পারবে সত্য কথা

দুনিয়া ভর্তি চাপাবাজ।

লেখা ভালো লাগলো। চলুক

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

সত্যপীর এর ছবি

হুম। এদিকে আবুল ফযল মিয়ার চাপা যে ওনারা খাইবার পাসে রাস্তা বানাইতেসে শুনে বলখের ফটক ভয়ে বন্ধ করে দিসিল দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

সজল এর ছবি

খুব একটা চাপা না মনে হয়। ক্লাইভের ৫০০ সৈন্যের কাছে সিরাজের হার কিংবা পরবর্তীতে তার হাজার কয়েক সৈন্যের কাছে মীর কাশেমের বিশ হাজারের উপরের সৈন্যের হার, তাও একবার না, কয়েক বার এই দাবীকে সমর্থনই করে। (ইউরোপিয়ান বনাম এদেশীয়/মোগল কনটেক্সটে)

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সত্যপীর এর ছবি

তুলনাটায় একটু আপত্তি জানাই। প্রথমত ক্লাইভ সম্মুখ সমরের আগেই নানান কায়দা করে রেখেছিল, ক্লাইভের ৫০০ সৈন্যের বিপক্ষে থাকা সকল সিপাই লড়েনি। দ্বিতীয়ত, সিরাজ একটি তৃতীয় শ্রেনীর লিডার। তার সিপাইদের সাথে মোগল ফৌজ তুলনা করলে ভুল হবে। মোগল সেনাবাহিনীর ট্রেনিং, ইকুইপমেন্ট ও টেকনোলজি সেই সময়কার ইয়োরোপীয় বাহিনীর চেয়ে পিছিয়ে ছিলনা। এই কথা অবশ্য নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

আমি বলছিনা যে তাভের্নিয়ের কথা মিথ্যা। শক্তি একটা আপেক্ষিক ব্যাপার, কিছু ক্ষেত্রে ইয়োরোপীয় শক্তিশালী হতেও পারে। তবে সেইটা পলাশী দিয়ে মাপা ঠিক নয় মনে করি।

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

বাদশাহ জাহাঙ্গীরের শিকারি পাখি হাতে শিকারের একটা দারুণ পোট্রের্ট পেয়েছি, আপনাকে পাঠাতে হবে, সম্ভব হলে জাহাঙ্গীরের জীবজন্তু সংগ্রহের ব্যাপারটা নিয়ে যদি লিখতেন, ডোডো থেকে শুরু করে বাকী সব।

লেখাঁ মচতকার কিন্তু শেষ প্যারাতে এসে খটকা লাগল- ১৫ লক্ষ লোক? আব্দার নাকি!

সত্যপীর এর ছবি

ওই সময়ের পর্যটক মিশনারীরা আন্দাজে বাড়ায় লিখত অনেক সময়। মানুচ্চি ভাইয়ার নাম্বারগুলাও সন্দেহজনক খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

সত্যপীর এর ছবি

পোর্ট্রেট পাঠায় দেন গুপন মেইলে। মোগল ফৌজের হাতিঘোড়া নিয়ে লেখার ইচ্ছা কিছুদিন পর, সেও এক এলাহি কারবার। স্পেসিফিক্যালি জাহাঙ্গীরের চিড়িয়াখানা নিয়ে খুঁজে দেখিনাই, দেখা যাক। আপনের কাসে মালমশলা থাকলে আপ্নেই একটা পোস্ট নামায় দেন অণু ভাই।

..................................................................
#Banshibir.

মরুদ্যান এর ছবি

পনের লক্ষ মানুষ আর দশ হাজার হাতি! বাড়ায় বুড়ায় লেখারও একটা সীমা আছে!! খাইছে

লেখায় হাততালি

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

সত্যপীর এর ছবি

দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

প্রান্তিক রহমান এর ছবি

এই ধরনের সফর আজকাল বাংলাদেশেও হয়ে থাকে। নির্বাচন সামনে আসছে তাই এর নমুনা আমরা হরহামেশাই দেখতে পাব। কেউ কেউ এক দিনেই পুরো বাংলাদেশ সফর করে রাত ১২ টার পর টক শোতে হাজিরা দিবেন। এদের কাছে আকবর, শাজাহান একেবারেই নস্যি। আকবর, শাজাহান টাকা ওড়াতেন সফরের সময়। আর বাংলাদেশের এনারা দুই হাতে টাকা কামাবেন। উত্তর
বংগ থেকে দক্ষিন বঙ্গে এক দিনে ১০০০ পাজেরো নিয়ে শোডাউন করলেই নমিনেশান বিক্রি বাবদ হাজার কোটি টাকা কামাই করে রাজধানীতে ঢোকা যাবে। এদের সাথেও থাকবে সিপাহী , পাইক পেয়েদা যাদের আসল কাজ হবে সেতু কাল্ভার্ট তৈরি না করে কিভাবে টোল ফাকি দিয়ে ওপারে যাবার ব্যাবস্থা করা যায়। জ্বালানীর কথা বাদই দিলাম।
যাই হোক, হতাশার কথা বাদ দেই। আগাগোড়া চমৎকার লেখা।

সত্যপীর এর ছবি

একবারে ঠিক কথা। দেশের মানুষকে বাঁশের উপর রেখে নেতানেত্রী ইচ্ছামত পয়সা উড়াবে সেই মোগল আমলের মতই। ওদের নিয়েও হাসাহাসি করে পোস্ট দিবে পরবর্তী জেনারেশন আমরা যেমন নির্বোধ মোগলদের নিয়ে হাসি।

..................................................................
#Banshibir.

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক চলুক পীরসাহেবের ইতিহাস

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সত্যপীর এর ছবি

কৈলেন যখন চাল্লু

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

চলুক চলুক চলুক
আপনি তো দেখি একের পর এক দুর্ধর্ষ ইতিহাসবোমা ছেড়ে ছেড়ে একেবারে ফাডায়ালাইতেছেন পীরছাহেব! দারুন হইতেছে, ঈমানে কইতেছি!!

একটা ভিড্যু দেখেন এইবার। মরুযাত্রা সিরিজের জন্য রিসার্চ করতে গিয়ে ঘটনাচক্রে মুঘলদের উপর এই ভিড্যুটা পাইছিলাম। তাছাড়া আপনার সিরিজের মুঘলাই বিষয়বস্তুর অনেক কিছুর দৃশ্যরূপ হিস্টরি চ্যানেলের এই দারুন ডকু ভিড্যুটাতে পেয়ে যাবেন।

****************************************

সত্যপীর এর ছবি

দুনিয়ার বালের টকশো না কৈরা এরম ডকুমেন্টারি বানাই না ক্যান আমরা? অরা কি আমাগোত্তে বেশী বুজে? খাইছে

আসলেও এরকম ভিডিও করা কঠিন নয়, আমাদের মিডিয়াতে এইটা করার মত কলাকুশলী ইতিহাসবিদ পরিচালক সবই আছে, খালি উদ্যোগ দরকার। হয়তো আসবে ভবিষ্যতে। আপাতত আমি পানিপতের যুদ্ধের উপর ভিড্যু ব্লগ বানানির আইডিয়া পাইলাম দেঁতো হাসি

আছেন ক্যামন?

..................................................................
#Banshibir.

কড়িকাঠুরে এর ছবি

মোগলাই খানাদানার পর মোগলাই দৌড়...

ইয়ে- আগে জানতাম যেইখানে রাইত সেইখানেই কাইত আর এগোর দেহি যেইখানে কাইত সেইখানেই রাজধানী... ইয়ে, মানে... বিচিত্র দুইন্যা...

সত্যপীর এর ছবি

খানাদানা নিয়া পুস্ট শেষ হয়নাই। আরো আইব চাল্লু

"যেইখানে কাইত সেইখানে রাজধানী" হো হো হো

..................................................................
#Banshibir.

অরফিয়াস এর ছবি

এক্কেবারে "মোঘলাই কান্ড" দেহি পীরসাব !!

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সত্যপীর এর ছবি

হুঁ, মোগলাই পরাটার মতই সুস্বাদু ও অস্বাস্থ্যকর।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. মধ্য এশিয়ার যাযাবরদের ধারণা ছিল প্রথম দিনের মলমুত্রে উপর দ্বিতীয় দিনের মলমুত্র পড়লে অমঙ্গল হয়। তাই তারা ক্রমাগত চলত। আসলে মধ্য এশিয়ায় যাযাবরদের জন্য সহজে জোটে এমন খাবার আর পানির অভাব থাকায় ক্রমাগত চলা ছাড়া উপায় ছিল না। তুর্কীস্তানী মুঘলদের রক্তে চলমান থাকার ব্যাপারটা থাকা স্বাভাবিক। জটিল ধর্মীয়-নৃতাত্ত্বিক-ভাষিক চক্রে পড়ে মুঘলদের জীবন সদাসবদা নানা চক্রান্তে আচ্ছন্ন ছিল। দ্রুত স্থান পরিবর্তনের এটাও একটা কারণ। উত্তর ভারতের চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ায় টেকার জন্য ইংরেজদের পর্যন্ত শীত-গ্রীষ্মে এখান ওখান করতে হয়েছে। সেটাও একটা কারণ। বহু জাতির দেশ, ছোট ছোট অসংখ্য দেশীয় রাজ্য – এগুলো ঠিক রাখতে, বিদ্রোহ দমন করতেও ক্রমাগত ছুটতে হয়েছে।

উসমানীয়দের হিসাবটা সাফাভিদ আর মুঘলদের সাথে তুলনীয় নয়। উসমানীয়রা তাদের বিশাল সাম্রাজ্য কীভাবে বিস্তার করেছিল আর কীভাবে টিকিয়ে রেখেছিল অতগুলো বছর ধরে সেটা আরেক ইতিহাস।

২. আকবরের একটা বিষয় আমাকে অবাক করে সেটা হচ্ছে শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলা ও নৌযুদ্ধে সাফল্য। চাঘতাই তুর্কীদের কাছ থেকে এটা একেবারেই আশা করা যায় না।

৩. বাবুর থেকে শুরু করে ইয়াং আওরঙ্গযেব পযন্ত সবাই চেষ্টা করেছিল ফরগানা ফিরে যাবার রাস্তা খোলা রাখতে বা ফরগানাকে ভারতের সাথে জুড়ে দিতে। তাই কাশ্মীর, পাখতুনখোয়া, আফগান, কাফিরিস্তান এভাবে আরো উত্তরে সবাই নযরদারী-খবরদারী চালাতে চেষ্টা করেছে।

৪. কম রসদে চলতে সব তুর্কীস্তানীই দক্ষ। সেই সাথে দ্রুতগামীতাও তাদের বৈশিষ্ট্য।

৫. মুঘল ক্রাউন প্রিন্স বা যে ক্রাউন প্রিন্স হতে পারলো না এনবিআর-এর প্রধান তাকেই করা হতো। পদটার নাম সম্ভবত সালার-ই-হিসার। এনার ডিপার্টমেন্টের এক্সটেনশন কিছু জায়গায় ছিল বটে। তবে স্থানীয় শাসকের ট্যাঁকই মূলত আঞ্চলিক রাজকোষ হিসাবে কাজ করতো। আজকের দুনিয়ায় ‘যুদ্ধ’ যেমন সবচে’ বড় ব্যবসা ঐ আমলেও ‘যুদ্ধ’ ভারতের সবচে’ বড় ব্যবসা ছিল। অবস্থাটার পরিবতন হয় ইংরেজ আমলে। স্থানীয় শাসকরা ঐ যুদ্ধব্যবসার শেয়ারহোল্ডার হতো।

৬. মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঘোড়া কিনতে কাবুলে থাকলে গরমের সময় কাশ্মীর কীভাবে থাকলো? গোটা গ্রীষ্মকালটা তো কাবুলেই কাটিয়ে দিলো!

৭. ফা শিয়েনের আমল থেকে ইংরেজ আমল পর্যন্ত যারাই ভারত সফর করে বই লিখেছেন তাদের সবাই ঠাকুরমা’র ঝুলি দিয়ে ব্যাপক প্রভাবিত। প্রায় সময়ই বাঘের চেয়ে বাঘের লেজ বড় হয়ে গেছে। আবুল ফজলের মতো কালপ্রিট আর গপ্পোবাজ মুঘল ইতিহাসে খুব বেশি ছিলো না।

৮. উর্দু তাঁবুর বাইরের ভাষা ছিলো। তাঁবুর ভেতরের ভাষা – অন্তত দফতরের ভাষা ছিলো ফারসী।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

৬। গুড পয়েন্ট। কাবুলে "মে থেকে সেপ্টেম্বর অব্দি" না হয়ে হবে "মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে"। পুরা চার/পাঁচ মাস নয়। আমারই ভুল, ঠিক করে দিলাম।

৮। ঠিক কথা, দাপ্তরিক ভাষা ফার্সি। সিপাইদের ভাষা উর্দু। আর মনসবদারদের সাথে দেশী রাজাও কি উর্দুতে বাতচিত করত না?

অটোমানদের নিয়া একটা অণুপোস্টগুচ্ছ দেন পাণ্ডবদা দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অণুপোস্টগুচ্ছ মূলত বাংলা, বড় জোর বাংলা সংলগ্ন অঞ্চলের ইতিহাস লেখার জন্য সিরিজ। সুতরাং উসমানীয়রা এই সিরিজে যুক্ত হতে পারে না। কালা উসমান থেকে শুরু করে আবদুল হামিদ বা তাদের অপসারণ পরবর্তী সময়ে মুস্তাফা কামাল হতে শুরু করে ইসমত পাশা পর্যন্ত কারো ব্যাপারে আমার কোন আগ্রহ নাই। এদের সম্পর্কে যেটুকু পড়েছি সেটা খুব একটা আগ্রহ নিয়ে পড়িনি। আপনার আগ্রহ থাকলে আপনি চেষ্টা করতে পারেন। তবে আমার পরামর্শ হচ্ছে, ঐ ব্যাটাদের নিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। এরচেয়ে ভারতে ইতিহাস নিয়ে যা করার চেষ্টা করছেন সেটাই ঠিক আছে। নিজেদের ইতিহাস ভালো করে জানাটা বেশি জরুরী।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

তিনি যখন সফরে যান সাথে থাকে পনেরো লক্ষ মানুষ, ঘোড়সওয়ার, পেয়াদা, অফিসার, নারী, শিশু। সাথে যায় দশ হাজার হাতি আর বিপুল গোলন্দাজের দল, যদিও অধিকাংশ সময়ই পয়সার চমক দেখানো ছাড়া এই এত কান্ড কারো কোন কাজে আসে না।”

এইটা মনে হয় অতিশয়োক্তি!
লেখা চলুক, পড়ছি।

সত্যপীর এর ছবি

দুইটা লাইনই অতিশয়োক্তি। পনেরো লক্ষ মানুষ একটু বেশিই, আর কারণ ছাড়া মোগল সফরে বেরুত না বললেই চলে।

..................................................................
#Banshibir.

মুস্তাফিজ এর ছবি

এই রকম একটা সফরে থাকতে পারলে হইতো। হাসি

...........................
Every Picture Tells a Story

সত্যপীর এর ছবি

হ। এইগুলা নিয়া কি দারুণ মুভি গেম বানানো যায় ভাইবা দেখেন!

..................................................................
#Banshibir.

ওডিন এর ছবি

আমাদের দেশনেত্রীর রোডমার্চের কথা মনে পইড়া গেলো। হাসি

সত্যপীর এর ছবি

পাজেরোতে চৈড়া?

..................................................................
#Banshibir.

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পরেরবার আকবর ব্যাটায় সফরে গেলে আমি একটা বাইক নিয়ে দেখতে যাবো শয়তানী হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সত্যপীর এর ছবি

তীর ছুর্তারেন?

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

বাদশাহী সফর, আসলেই জব্বর সফর। আর ইতিহাস নিয়ে আপনার সফরও কইলাম ছেইরকম। ল্যাখতে থাকেন আর আমাগো দিয়া পড়াইতে থাকেন। অনেক চিপা চাপায় পইরা থাকা ইতিহাস জানবার পারতাছি আপনার অনুবাদ থেইক্কা। সফর চালাইয়া যান, থাইমেন না কইতাছি হাততালি

অমি_বন্যা

সত্যপীর এর ছবি

লিচ্চয় লিচ্চয়।

..................................................................
#Banshibir.

সজল এর ছবি

চলুক
বঙ্কিমের রাজসিংহতে (যদি ভুলে না গিয়ে থাকি) আওরেঙজেবের এই রকম বিশাল বাহিনী নিয়ে পাহাড়ের ফাঁকের সরূ পথে আটকা পড়ার কাহিনী ছিল।
তাই বলে পনেরো লাখ!
বাবর যে পরিমাণ "সফর" করেছে, সেই তুলনায় বাকিরা মর্নিং ওয়াক করেছে বলতে হবে দেঁতো হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সত্যপীর এর ছবি

বাবুর মিয়া ছিলেন ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট, একটু খাটাখাটনি তো যাইবই চোখ টিপি

..................................................................
#Banshibir.

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

উত্তম জাঝা!

চলুক, চলুক!

সত্যপীর এর ছবি

দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

ফকির লালন এর ছবি

লেখাতে কথ‌্য ভাষা মেশালে পড়তে ারাম হ‌য় ঠিক, মনে হয় গলপো।

কিনতু সঠিক ভাবে লিখলে কি সুন্দর একটা কাজের অনুবাদের সংকলন ছাপানো যেতো ভাবুন দেখি, বইটা বাচ্চাদের হাতে গেলে তাদের কেউ কেউ হয়তো াগ্রহী হয়ে উঠতো ইতিহাসে। ভেবে দেখবার অনুরোধ করছি, বাকী াপনার ইচ্ছে।

ভালো থাকুন, লিখতে থাকুন।

সত্যপীর এর ছবি

যদিও সঠিক ভাবে লেখা টার্মটা নিয়ে আপত্তি আছে, তবে আমি আপনার বক্তব্য ধরতে পেরেছি। আমার লেখার ভাষা কিশোরদের ঠিক উপযোগী নয়। রাগিব ভাইয়ের শিক্ষক ডট কমে একটা কোর্স দেব বলেছিলাম, সেইটার জন্য কাজ করতে গিয়ে হাড়ে হাড়ে বুঝেছি এই কথা।

লেখালেখিতে আমি নতুন, আমার ভাষা পোক্ত নয়। যদি কোনদিন বই লেখার কনফিডেন্স সঞ্চয় করতে পারি তখন লিখব। আপাতত আপনার অনুরোধে সম্মানিত বোধ করছি হাসি

..................................................................
#Banshibir.

অন্যকেউ এর ছবি

আপনার লেখা প্রথম বাক্যটা থেকেই মোটামুটি একটা নেশার মতো। এক টানে শেষ হয়ে যায়, আর তারপরও মনে হয়, আর কই!!
কুর্নিশ, পীরসাব!

আগের মন্তব্যের সূত্রে বলি, কিশোরদের ভাষা হতেই হবে কেন? শৈশব কৈশোরে শিশু-কিশোর ট্যাগড বইপত্র সযত্নে এড়িয়ে গিয়েছিলাম, নজর ছিলো এগুলো বাদ দিয়ে বাকি সবকিছুর ওপর!

বইয়ের জন্য হাঁ বলুন। দেঁতো হাসি

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

সত্যপীর এর ছবি

ব্যাপক শরমিন্দা কর্লেন রে ভাই লইজ্জা লাগে

বই লেখা কঠিন ব্যাপার। একদিন নিচ্চয় ট্রাই দিমু...

..................................................................
#Banshibir.

Emran  এর ছবি

শাহ আব্বাসের সফরের বিবরণ পড়ে ডঃ কামাল হোসেন-সংক্রান্ত একটা কৌতুক মনে পড়ল! ৮০-র দশকে কোন এক পত্রিকায় লিখেছিল ডঃ কামাল বছরের ৪ মাস থাকেন দেশে, ৪ মাস বিদেশে, আর ৪ মাস আকাশে!

ওসমানীয়াদের সঙ্গে মুঘলদের একটা পার্থক্য হল যে মুঘল প্রধানমন্ত্রীর তুলনায় ওসমানীয়া প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব এবং ক্ষমতা (বিশেষতঃ সোলায়মানের পর থেকে) ছিল বেশী। সোলায়মান-পরবর্তী ওসমানীয়া সুলতানেরা যুদ্ধের দায়িত্ব মূলতঃ প্রধানমন্ত্রীর হাতেই ছেড়ে দিতেন। ১৬৮৩-র ভিয়েনা অবরোধের সময়ও কোন ওসমানীয়া সুলতান সেখানে নেতৃত্ব দেননি।

সত্যপীর এর ছবি

ওসমানীয়াদের সঙ্গে মুঘলদের একটা পার্থক্য হল যে মুঘল প্রধানমন্ত্রীর তুলনায় ওসমানীয়া প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব এবং ক্ষমতা (বিশেষতঃ সোলায়মানের পর থেকে) ছিল বেশী।

বিস্তারিত পুস্টান, সবই জানতে ছাই।

..................................................................
#Banshibir.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।