সারাদিন ধরে ঝমঝম বৃষ্টি। সকালবেলা আটটা নয়টার সময়ও ঘর অন্ধকার, মনে হয় ভোর ছয়টা বাজে বুঝি। দশটার ক্লাস ধরতে দশটা ছাব্বিশে কলাভবন গেটে পৌঁছে ক্লাসে যাবার বদলে গেটের সিঁড়িতেই বসে যাই, মামা এসে লেবু চা দিয়ে যায় ঐতে চুমুক দেই বসে বসে। তারপর মুজিব হলে গিয়ে ঘুমন্ত বন্ধুকে চাঁটি মেরে ঘুম থেকে উঠিয়ে ডিম-বন দিয়ে দুপুর বারোটায় নাস্তা সেরে আরেক বন্ধুর বাসা মালিবাগ চলে গিয়েছিলাম। এখন সন্ধ্যা ছয়টা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনে উত্তরাগামী বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। বৃষ্টি কমে এসেছে, তবে আবার হুড়মুড় করে নামবে যেকোন সময়। পাশেই বুটবাদামওলা গভীর মনোযোগের সাথে ভাজা বাদাম থেকে বালু আলাদা করছে। কাছে টং দোকানে ক্যাসেট প্লেয়ারে বেজে চলেছে, হাতে রানে কানে। আঙ্গুলের চিপায় চাপায় ঘাও। আমাদের এই বিচ্ছু মলম, আপনারা ব্যবহার করেন। এর একটা বড় গুণ কি জানেন?
ছোট টং দোকান, নিরীহ চেহারার দোকানি পা তুলে গুটিশুটি মেরে বসে আছে। সাইডে লাল পলিথিন তেরচা করে টাঙানো যেন বৃষ্টির ছাঁট না লাগে। সামনে নানান শিশিবোতল আর কৌটা। ক্যাসেট প্লেয়ার বেজে চলেছে অবিরাম। ...আমি সেই ভাইকে অনুরোধ করে বলবো, আমাদের একটা বিচ্ছু মলম ব্যবহার করেন। এই মলম এক বছরের ছোট বাচ্ছাকে লাগাবেন। জ্বলবেনা। কোন জ্বালাপোড়া নাই। এমরান কেমিকেলসের বিচ্ছু মলম, আপনারা ব্যবহার করেন। কেনার আগে পেছনে এমরান কেমিকেলস লেখা দেখে খরিদ করবেন।
রাতের বেলা আবার হ্যাজাক বাতি জ্বালিয়ে অন্যকেতার বিচ্ছুমলমওলারা রাস্তায় হাজির হয়। রাস্তায় তারা ছোট ছোট বয়াম সাজিয়ে বসে, সেগুলির ভিতর আবার সত্যি সত্যি বিচ্ছু কিলবিল করে। কি কি সব তেল তারা বেচে। মাইক একটা হাতে নিয়ে বলে চলে, “ওরে! আমি যে আর পারলামনা। বলে আপনারা যারা মাঝরাতে বউকে” ইত্যাদি ইত্যাদি। যাকগে রাত এখনো নামেনি, তবে অন্ধকার নেমে আসছে দ্রুত।
রাস্তার উল্টাদিকে কালো গেটে বড় করে লেখা কারিতাস মানে ভালোবাসা। তাই নাকি? অদ্ভুত শব্দ কারিতাস। কোনদেশি শব্দ কে জানে। তবে ভালোবাসা স্বাস্থ্যকর জিনিস।
এরই মাঝে বেগুনি রঙের বিআরটিসি বাস হাজির। হেলপার ছোকরাটি টিকেট হাল্কা ছিঁড়ে আবার আমার হাতেই ধরিয়ে দিল, লাফ দিয়ে উঠলাম। আরও কিছু যাত্রী উঠার পর বাস ছাড়ল। অল্প এগিয়ে মৌচাক মোড়ে দেখা গেল ব্যাপক ভেজাল লেগে গিয়েছে। পানি জমা রাস্তায় গর্তে পড়ে রিক্সার এক চাকা গেছে বেঁকে, আরেক রিক্সাওলা তাকে হাত লাগিয়ে সাহায্য করছে। এদিকে নানান সাংসারিক জিনিসপত্রে বোঝাই ঠেলাগাড়ি আড়াআড়ি ভাবে ঢুকিয়ে দিয়েছে এখন ডাইনে বাঁয়ে কোনদিকেই এগুতে পারছেনা। রিক্সাওলারা ক্রিং ক্রিং বেল বাজিয়ে তার তীব্র প্রতিবাদ করছে, কোন কোন রিক্সাওলা ঠেলাগাড়িওলার মাকে নিয়ে নানান ইচ্ছাও প্রকাশ করল, তাই দেখে বাকীদের দাঁত বের করে সেকি হাসি! আমি জানালা দিয়ে বাইরে উঁকি দিলাম। বৃষ্টির বেগ বাড়ছে।
রামপুরা ব্রিজ ক্রস করার পর একটা ছোট লালচুলের মেয়ে বাসে উঠল, আর বিনা বাক্যে সবার কোলে দুইটা করে চকলেট রেখে যাওয়া শুরু করল। ইন্টারেস্টিং সেলিং স্ট্র্যাটেজি। মানুষের চকলেট লাগবে কিনা জিজ্ঞেস করার বদলে দিয়েই হাঁটা, পরে এসে টাকা নিবে আর হাতে টাকা না থাকলে কোল থেকে চকলেট কেড়ে নিয়ে যাবে আবার। আচ্ছা কেউ যদি চকলেট মুখে নিয়ে টাকা না দেয় তখন এরা কি করে?
বিশ্বরোডে ট্রেনের সিগন্যালে যখন গাড়ি আটকে থাকে তখন মনে নানান চিন্তা হামলা করে। অদ্ভুত কিছু জায়গার নাম এই রোডে। কুড়িল, নদ্দা। কি অদ্ভুত নাম, নদ্দা। সেইখানে বাসাভাড়া কেমন কে জানে, আমি খালি নামের জন্যই সেখানে কখনো থাকতাম না। ভাই আপনি কোথায় থাকেন? আমি থাকি নদ্দা। এই উত্তর শুনেই তো হাসি আসে। থাকে নদ্দা। হে হে।
রাতের বেলা বিশ্বরোড সিগন্যালের পাশে ভ্রাম্যমান হালিমের দোকানে ভিড় দেখা যায়। উপরে সাইনবোর্ডে লেখাঃ হালিম। ছোটঃ তিন টাকা, বড়ঃ পাঁচ টাকা। বিরাট হাঁড়ির পিছনে গম্ভীর হালিমওলার মুখ দেখা যায়। এই কাদার মধ্যে সে দাঁড়িয়ে আছে কিভাবে? উঁকি মেরে দেখি তার পায়ের তলায় ইট রাখা, পা তো শুকনাই মনে হচ্ছে। ব্যাটার বুদ্ধি হ্যাজ।
এয়ারপোর্ট পার হবার পরেই বৃষ্টি আবার বেড়ে গেল, সাঁই সাঁই ঘুরছে টাটা বাসের ওয়াইপার। শালার ভিজতেই হবে মনে হচ্ছে। ধুরু। আস্তে আস্তে বাস এগোয়। রাজলক্ষ্মী। আজমপুর। হাউজ বিল্ডিং। বৃষ্টি ধরে আসবে আশা করছিলাম, কিসের কি। ভিজতে ভিজতেই নেমে গেলাম। মাস্কট প্লাজার পাশে ভাজাপোড়ার দোকানে বাতি জ্বলছে। যাক ভিজে তো গেছিই, এই পাঁচ মিনিট হাঁটার জন্য পাঁচ টাকার পিঁয়াজু কিনা যাক। ঐ ফার্মেসিতেও একটু থামা জরুরি, সেলফোনের রিচার্জ কার্ড কিনতে হবে।
বাসায় ঢুকে মাথা মুছে রুমে ঢুকে যাই। দরজাটা বন্ধ করে দিলাম, বাতাস দিচ্ছে খুব। ইনকোর্সের জন্য কি কি সব হাবিজাবি ফটোকপি করেছিলাম কয়দিন আগে, ঐটা খুলে বসি। লো ভল্যুমে গানই বা নয় কেন? সদ্যকেনা ওয়ারফেজের সিডি ছাড়া যাক।
শুধু শুধুই ভাবনা, যেতে চাইলে যাও চলে যাও। তবু কেন এ কান্না, জানি ভালো থাকতে। শুধু বলো না ভুলতে, চাইনা বাঁচার উপদেশ; দিন এমনই কাটবে খেয়ালের ফাঁদে। তোমাকে মনে পড়বে যখনই জোছনা হাসে।
তোমাকে মনে পড়বে যখনই আকাশ ভেঙে বর্ষা কাঁদে।
মন্তব্য
পুরা ঘোর লাগে গেল
..................................................................
#Banshibir.
অসাধারণ লেখা!!!
খুব প্রিয় গান!
সত্যপীর যুগ যুগ জিও!
অসাধারণ গান।
..................................................................
#Banshibir.
অসাধারণ!! অসাধারণ!! অসাধারণ!!
ফারাসাত
..................................................................
#Banshibir.
বিচ্ছু মলম ব্যভার করেন ভাই, চোখ জ্বলবে না, কোন জ্বালাপোড়া নাই
হ।
..................................................................
#Banshibir.
পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল, তাসনীম ভাইয়ের "স্মৃতির শহর" পড়ছি।
ভাল্লাগলো
হ।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আরে নাহ।
..................................................................
#Banshibir.
..................................................................
#Banshibir.
হুম... ঘুরে এলাম যেন।... ওয়ারফেজ এর নতুন এ্যালবামটা এলো বাজারে। শুনছি।
"কারিতাস" একটা এনজিও ছিল না? তাই তো...
হ্যাঁ এনজিও।
..................................................................
#Banshibir.
দারুণ লাগ্লো পীরসাহেব, অফিসে বসে বাইরের বৃষ্টি দেখছি , কেমন উথালপাথাল করা বৃষ্টি। অনেক ভালো লাগার এই বৃষ্টি, অনেক কষ্ট লাগা এই বৃষ্টির সাথেই যে।
এই দেশে বৃষ্টি দেখলে ভয় লাগে, ঠান্ডায় মাথা চক্কর দেয়
..................................................................
#Banshibir.
ঐ মিয়া, নদ্দাবাজার বারিধারার আর বসুন্ধরার মাঝে ! আই ইউ বি-র পোলাপান ঐ এলাকায় বাসা খুঁজে সারাদিন, আর আপনি মস্করা করলেন!
লেখা , ইয়ে ভালোবাসা কি খুব বেশী স্বাস্থ্যকর?
facebook
কিকন্নাকন, ভালুবাসা অস্বাস্থ্যকর হইলে ইএল জেমস কি এইবছরের সব থাইকা বড়লুক লেখক হইত??
--বেচারাথেরিয়াম
অণু ভাই ভালোবাসা খুবই স্বাস্থ্যকর। খেয়েই দেখুন।
..................................................................
#Banshibir.
উদাস হইগেলাম পীরসাব, গান শুইনা না লেখা পইড়া বুঝতারছি না।
--বেচারাথেরিয়াম
গান শুইনা। আমিও উদাস হৈছিলাম।
..................................................................
#Banshibir.
ভাষা নেই,কী বিশেষণ দেব এ লেখার,শুধু মনের মধ্যে কিছু ঋেলে আসা -হারিয়ে ফেলারা থাবা গেড়ে বসল যেন।
বলেন কি!
..................................................................
#Banshibir.
অসাধারণ শব্দ চয়ন।
হে হে হে।
..................................................................
#Banshibir.
বৃষ্টি ভেজা ঢাকার এক সন্ধ্যা থেকে রাত দেখিয়ে আনলেন, দারুন দারুন!
ঠিক্কথা।
..................................................................
#Banshibir.
গানটা শুনেই মনটা আনচান করে উঠল। তোমাকে মনে পড়বেই।।।।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
আপনি পৌঁছে গেছেন আফ্রিকা?
..................................................................
#Banshibir.
বেশ কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিতে আচ্ছন্ন ছিলাম। ভাল লাগল খুব।
ধন্যবাদ
..................................................................
#Banshibir.
এই অসাধারণ গানটা পিয়ানো সেকশনটা আমার সবচেয়ে প্রিয়। গান শুনছি এখন। লেখা একটু রয়েসয়ে পড়ি। জানি অসাধারণ কিছুই লিখেছেন ভাইয়া।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
গান শুনে লেখা পড়লে ভাল লাগবে না, লেখার খামতি পুষায় দেবার জন্যই গান দিসি
..................................................................
#Banshibir.
নানান কাজে সচলে আসা হয় নি এই কদিন। আজকে পড়লাম। গান শুনলাম আবার। মন খারাপ করা লেখা। পড়লে মনে হয় এলোমেলো ময়লা নোংরা কিন্তু প্রাণের এই শহরের জন্য মন কাঁদে!
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
ইস!ক্যামনে লেখেন এইভাবে!!
লিখতে থাকুন একসময় চলে আসে।
..................................................................
#Banshibir.
..................................................................
#Banshibir.
অক্ষর দিয়ে এত চমৎকার ছবি আঁকা, খুব সুন্দর একটি লেখা পড়লাম!
আসমা খান
ছবি আঁকতে না পারার দুঃখ আমার বহুদিনের
..................................................................
#Banshibir.
ভালৌছে। লেখা ছুডো ক্যা?
গান বাদ্দিলে আরো ছুডো হৈত
..................................................................
#Banshibir.
এতদিনের দেখা বৃষ্টিভেজা ঢাকা এক মুহূর্তে দেখিয়ে দিলেন??
- বিক্ষিপ্ত মাত্রা
এই আর কি।
..................................................................
#Banshibir.
ভাল্লাগ্ছে
..................................................................
#Banshibir.
আঙ্গুলওলার নামই জানা হৈল না
..................................................................
#Banshibir.
আপনার গান শুনে খুব মনে পড়ে গেলো আমার ভাইয়ার কথা, আমরা ভাই-বোন মিলে বসে শুনতাম খুব এই গান টা। গান টা শুনতে শুনতে চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পড়ে গেলো। আমরা দুই ভাই-বোন এখন পৄথিবীর দুই শহরে থাকি, আর চা খেতে খেতে গান শোনা হয় না।
আর লেখা খুব সুন্দর হয়েছে। একদম ছবির মতন।
ইয়ে, কার ইনকোর্স? ডেভেলপমেন্ট টেভেলোপমেন্ট হলে পড়া লাগবে না। কিন্তু মাইক্রো, ম্যাক্রো হলে পড়া লাগবে একটু, আর আশিক স্যার এর ইনকোর্স হলে ও পড়া নাই, কিচ্ছু কমন পড়বে না
হঠাৎ দেখা হয়ে যাবে ভাইবোনের দেখবেন। কুনু ভয় নায়।
আশিক স্যার এর ইনকোর্স এ পৈড়া আর কি হৈব (দীর্ঘশ্বাস)। মনে হয় স্যাক্স অ্যান্ড ল্যারেইন এর ফটোকপি পড়তেছিলাম।
..................................................................
#Banshibir.
কি দিন পড়লো পীর ফকিরও ব্লগ লিখেন তবে লেখাটা সুন্দর!
হ দিনকাল খারাপ সাবধানে থাইকেন।
..................................................................
#Banshibir.
লেখা পড়ে আর গান শুনে এখন সত্যি সত্যি বৃষ্টির কান্না শুনতে মুঞ্চায়...
সার্চ দিয়া এইটা পাইলামঃ
..................................................................
#Banshibir.
অসাধারণ গান
রিক্তের
খাঁটি কথা।
..................................................................
#Banshibir.
গেরস্থ হইবার পর সাধু হয়ে গেছি
বিষ্টিবুষ্টি নিয়া কিছু লিখিও না পড়িও না
আহারে এমন লেখা আর জীবনেও প্রকাশের সাহস হবে না কোনোদিন...
কবিতাটা পছন্দ হইসে বস। অনুমতি দিলে জায়গামত ট্রাই দেয়া যায়।
ফারাসাত
মারাত্মক কবিতা
বিষ্টিবুষ্টি নিয়া লেখা দেওয়ার জোর দাবী জানাইলাম।
..................................................................
#Banshibir.
শিরোনামহীনের জাহাজীর কথা মনে পরল। আমার খুব প্রিয় গান।
রিক্তা
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
শিরোনামহীন নিয়া নানান কথা শোনা যায় হে রিক্তা। আজিব দুনিয়া।
..................................................................
#Banshibir.
অই কথা শুনার পর থেকে ওদের গান শোনাও বন্ধ করছি বহুদিন হল। জামাত শিবিরের/ তাদের প্রতি নমনীয়দের ব্যপারে নো কম্প্রোমাইজ।
রিক্তা
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
কই পান এগিলি কন্দেহি?
..................................................................
#Banshibir.
সরল সুন্দর বহিঃপ্রকাশ নিত্যদিনের। ভালোবাসা টা-ও বিচ্ছু মলমের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় কখন ও -কখন-ও।
ঠিক কথা।
..................................................................
#Banshibir.
ভালো লাগলো।
নামটা?
..................................................................
#Banshibir.
হাহাহা.....পড়তে পড়তে মাথার উপর বৃষ্টির ছাট আর হাতের ঠোঙায় পিঁয়াজুর ঘ্রান পেতে থাকলাম। আপনি মিয়া লোক খারাপ এই হেমন্তে পুরা বর্ষার আমেজ নিয়ে আসছেন। এখন বৃষ্টি পাই কই?
লেখায়
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পিঁয়াজু খাইতে মঞ্চায় ধুর।
..................................................................
#Banshibir.
সোন্দর
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আছেন ক্যামুন?
..................................................................
#Banshibir.
দৌড়ের উপ্রে আছি রে ভাই, চাঙ্কু বস, চাঙ্কু গ্রুপমেট, চাঙ্কু রুমমেট। এইবার বুঝেন।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
চৈনিক বন্ধু পাইলেই আমি মুখ শুকনা করে বলি ওপুহাও, আর সবাই হাসতে হাসতে মারা যায়। আপ্নেও বইলা দেখতে পারেন।
..................................................................
#Banshibir.
অনুচ্ছেদ-১: বাসা বা হল থেকে তাড়াহুড়া করে ক্যাম্পাসে আসতে হবে, আসতেই হবে। তারপর সেন্ট্রাল ক্যাফে পর্যন্ত পৌঁছালে গতি-সময় সব স্থবির হয়ে যায়। ক্যাফের চত্বরে একবার পবনপুত্রকে দেখতে পেয়ে হিট ট্রানসফারের কোর্স নেয়া শিক্ষক তার হাতে অ্যাটেনডেন্সের খাতা, মার্কার, ওয়াইপার ধরিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, “তুমি এসব নিয়ে ক্লাসে যাও, আমি আসছি”। শিক্ষক জানতেন, এটা না করলে পবনপুত্র আর বাকী পাণ্ডবেরা ক্লাসে পৌঁছুতে পারবে না - ক্যাফেতেই থেকে যাবে।
অনুচ্ছেদ-২: “এমরান কেমিকেলস লেখা দেখে খরিদ করবেন। প্লাস টঙ্গী, গাজীপুর লেখা দেখে খরিদ করবেন”। এই বিচ্ছু মানে কিন্তু বিচ্ছু নয় - ড্রাগন। হঙকঙের ড্রাগন মলম নকল করে বানানো এই মলম। বাংলাদেশে ড্রাগন অপরিচিত প্রাণী বলে তাকে বিচ্ছু বলে চালানো হয়। তেজোসৃপ নিজের এই ডিগ্রেডেশনের কথা শুনলে জিনশান লেকে ডুবে আত্মহত্যা করতো।
অনুচ্ছেদ-৩: “তুমি মিয়া ঠাশ্ কইরা ম্যাচ দিয়া আগুন জ্বালাইতে পারো। নিভাইতে পারো না। তোমার কপালে লাথি, তোমার কপালে ছাই, আমি বাপের বাড়ি যাই”। কুওতে যৌবন শক্তি বটিকার বিক্রেতাদের কাছে বয়ামে থাকে মোটা মোটা জোঁক - বিচ্ছু নয়। তারা জোঁকের তেল বেচে। আমার বোধগম্য নয় - জোঁকের মতো চির নমনীয় জিনিসের তেল দিয়ে কোন জিনিস “লৌহদণ্ডের মতো” শক্ত হবে কী করে!!
অনুচ্ছেদ-৪: কারিতাস মানে মাইক্রোক্রেডিট ভালোবাসা, কারিতাস মানে রোমাই কার্তিক ভালোবাসা। অথচ ভালোবাসা হলো নিঃশ্বাস এ’দেহের। নিঃশ্বাস বিনা মানুষ কখনো বাঁচে কি?
অনুচ্ছেদ-৫: মালিবাগ বাসস্ট্যান্ড থেকে মৌচাক পর্যন্ত (সোজা মগবাজার যাবার রাস্তা, বাঁয়ে আনারকলি যাবার রাস্তা, ডানে রামপুরা যাবার মোড়, আরো ডানে গুলবাগ ঢোকার রাস্তা, আরেকটু পেছনে শান্তিবাগ যাবার রাস্তাসহ) একটা অক্ষয় ট্রাফিক জ্যামের জায়গা। এই জায়গার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে পিএইচডি পর্যায়ের গবেষণা করা সম্ভব।
অনুচ্ছেদ-৬: মাঝে মাঝে বাসের কন্ডাকটর-হেলপারেরা লজেন্স নিয়ে মুখে পুরে ফেলে। তখন বাচ্চাটা কোন অনুযোগ না করেই বাস থেকে নেমে যায়। এগুলো এই ব্যবসার অবধারিত হ্যাজার্ড। আরেকটা হ্যাজার্ড হচ্ছে এই ভিড়ে কোন কোন সচ্চরিত্রবান সুযোগ পেলে মেয়েটার গায়ে হাত দেয়।
অনুচ্ছেদ-৭: ঢাকা শহরের অনেক জায়গার নামই অদ্ভুত। বাসাবো, মাদারটেক, মান্ডা, মেরাদিয়া, মেরুল, বাড্ডা, নদ্দা, কুড়িল, আগুন্দা, গোরান, ভাতাড়া, সোলমাইদ, বাউড়া, হেলান, কাওলা, আশকোনা, দোবাদিয়া, বাউথার, কাস্কারা, কালশী, আলুবদি, আদাবর, কাটাসুর, বসিলা, নারিন্দা, জুরাইন, কাজলা, পর্বতা। এই নামগুলো কোন ভাষার? এগুলোর অর্থ কী? আমি নিজেই থাকি ‘ইস্কাটন’ নামের একটা জায়গায়। এটা কোন ভাষার শব্দ বা এর মানে কী তা জানি না।
অনুচ্ছেদ-৮: প্লেনে কীভাবে ইকনমী ক্লাসের ঐ চিপা সিটে অতকিছুর ব্যবস্থা রাখে সেটা দেখে এক কালে অবাক হতাম। পরে জানলাম এই বিষয়ে অ্যাকাডেমিক গবেষণা হয়, অনেক লোকে মাথা খাটিয়ে কায়দাগুলো বের করে। রাসেল স্কয়ারের কাছে গ্রীন লাইনের কাউন্টারের কাছে একটা ছেলে পানি-চা-কফি-চিপস-টিস্যু-টয়লেট পেপার-বিস্কুট ইত্যাদি বিক্রি করে। মালসামানের পরিমাণ বিপুল, কিন্ত বিক্রি করতে হয় খোলা আকাশের নিচে। রোজ সকালে ধানমন্ডি যেতে তাকে দেখি। বৃষ্টি বা রোদে সে কী করে নিজেকে আর পসরাকে বাঁচায় সেটা একটা দেখার মতো বিষয়। আমাদের হকাররা এমন অনেক কিছু নিজেরাই উদ্ভাবন করে নেয়। বাঁচতে হলে গবেষণা করতে হবে।
অনুচ্ছেদ-৯: একবার বৃষ্টির দিনে পল্টন থেকে রামপুরা ফেরার পথে দেখি কোন বাস নেই, দু’তিনটা রিক্শা আর কয়েকশ’ মানুষ। সবার প্রতি উদারতা দেখিয়ে আমি রিক্শা দরাদরি না করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে রামপুরা পৌঁছলাম। বেঁচে যাওয়া রিক্শা ভাড়া দিয়ে নিজেকে ট্রিট দেয়া সাব্যস্ত করলাম। একটা দোকানে ছোট ছোট আলুপুরী ভাজছিল - এক টাকা দাম। কাঁচামরিচ সহযোগে কতগুলো আলুপুরী আর কয় কাপ চা খেয়েছিলাম সেটা আজ আর মনে নেই। একটা অষুধের দোকান ছিল, সেখান থেকে পঁচিশ টাকা প্রতি মিনিট হিসাবে বন্দরনগরীতে ফোন করা যেতো। প্রথমে একবার ফোন করে তিনতলা থেকে দোতলাতে আসতে বলতে হতো। তার দশ মিনিট পর দোতলার নাম্বারে ফোন করতে হতো। অথচ আজকাল পোলাপান প্রতি মিনিট পয়সা হিসেবে সারা রাত বিছানায় শুয়ে মোবাইলে কথা বলতে পারে। দেশে ইঞ্ছাপ নাই।
অনুচ্ছেদ-১০: নিজের ঠেকে ফিরেই পড়তে বসা! একমাত্র পরদিন কোন সেসনাল রিপোর্ট বা অ্যাসাইনমেন্ট জমা না থাকলে কোন দিনই সেটা করা হয়নি।
অনুচ্ছেদ-১১+১২: ভাবনাগুলো এক তরফা হয় কেন? ইট’স নট ফেয়ার। আর কতদিন অপেক্ষা করলে টেলিপ্যাথি’র আবিষ্কার দেখে যেতে পারবো!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আরে দারুণ
অনুচ্ছেদ-১:
অনুচ্ছেদ-২: ও এই বিচ্ছু ড্রাগন নাকি? আসলেই ড্রাগনের জাত মার্সে।
অনুচ্ছেদ-৩: আমার আবছা মনে আছে কিছু বয়ামে দাঁড়াওলা বিছা বা কাঁকড়ার মতন কিছু কিলবিল করতে দেখসি। জোঁকও হৈতারে। এইবার দেশে গিয়া টঙ্গীবাজারে গিয়া ভালোমত খেয়াল করতে হবে (পকেট সাপধানে)।
অনুচ্ছেদ-৬: হ এইসব সচ্চরিত্রবান ঢাকার রাস্তা ভরা। ছোট মেয়েগুলা এগুলির মধ্য দিয়াই বড় হয়, বড় খারাপ লাগে ভাবলে।
অনুচ্ছেদ-৭: ঢাকায় কাজলা আসে নাকি? রাজশাহী ভার্সিটির জায়গায় একটা কাজলা আসে মনে হয়। আর কাওলা নামটা টংটং করে উঠল মাথার মধ্যে, কতদিন শুনিনা কাওলা। এয়ারপোর্ট রোডে অদ্ভুত অন্ধকার একটা বাসস্টপ কাওলা।
অনুচ্ছেদ-৯:
..................................................................
#Banshibir.
আমি কাজলা থেকে আওয়াজ দিলাম, ঢাকার কাজলা
ঢাকায় কাজলা ঠিক কোথায় কাকদাদা?
..................................................................
#Banshibir.
যাত্রাবাড়ী
লেখা পড়তে পড়তে বৃষ্টি আসলো আর গান শুনে মন ভিজে গেল। অসাধারণ লেখা পীর ভাই।
অমি_বন্যা
ধন্যবাদ অমি_বন্যা
..................................................................
#Banshibir.
আজ অনেকদিন পর সময় পেয়ে সচলে চোখ বুলাচ্ছি । আপনার লেখা পড়ছিলাম আর এই গানটা শুনছিলাম যাও পাখি । যে যেতে চায়, তাকে তো যেতে দেয়াই ভাল । মনে যদি পড়েও, সে তো যার মনে পড়ে তার দায় । যে যায় তার কি?
যাক গে, আপনার লেখা খুব ভাল হয়েছে । বর্ণমালা দিয়ে যে ছবি আঁকতে পারে, তার রং তুলিতে ছবি আঁকতে না পারার দূঃখ থাকা মানায় না ।
আশিক স্যার কী পড়াচ্ছেন এখন? এখনো কি ক্লাসে পড়াতে পড়াতে শেক্সপিয়ার, শেলি কোট করেন?
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
দারুণ গান
আশিক স্যার কি পড়াচ্ছেন কৈতে পারলামনা জোহরাপা, ক্যাম্পাস ছাড়সি ছয় সাত বছর হইল। তবে তিনি যে আগের মতই পড়াতে পড়াতে শেক্সপিয়ার শেলি রবীন্দ্রনাথ কোট করেন তাতে আমার কোন সন্দেহ নাই।
..................................................................
#Banshibir.
আশিক স্যার তাহলে আগের মতই আছেন । শুনে ভাল লাগল । পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ থাকুক না একই রকম ।
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
থাকুক না।
..................................................................
#Banshibir.
এই শীতের গোড়ায় একেবারে বৃষ্টি নামায় দিলেন দেখি !
লেখা তো সেইরাম হয়েছে।
এই ক্রিস্টপি বিধান কি ওয়ারফেজের গায়ক?
সারছে ! ইনি তো আমার গুগল বন্ধু হওয়ার জন্য কতদিন ঝুলে আছে।
আমি ভাবছি কি জানি কে !!!
ক্রিস্টপি বিধান ওয়ারফেজের কেউনা। এই গান গাইসে সম্ভবত মিজান। সাউন্ডক্লাউডে সার্চ দিয়া প্রথম যে ফাইলটা পাইসি সেইটা শেয়ার দিসি।
আপনের অণুগল্প এখনো পড়িনাই বাইত গিয়া পড়তেসি...
..................................................................
#Banshibir.
"ভাই আপনি কোথায় থাকেন? আমি থাকি নদ্দা। এই উত্তর শুনেই তো হাসি আসে। থাকে নদ্দা। হে হে।"
এইরাম ব্যাপার আমারো আছে।
গানটা নস্টালজিক।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
দারুণ গান আসলেও!
..................................................................
#Banshibir.
আপনার লেখা পড়ার জন্যই সচলে ঢুঁ মারি। সব লেখাই ভাল লাগে বলে বার বার প্রশংসাসূচক বাক্যগুলো লিখতে ইচ্ছা করেনা, ডিমিনিশিং মার্জিনাল ইউটিলিটির তত্ব মনে পড়ে। আজকে মন্তব্য না করে পারলামনা। 'অসাধারণ' শব্দটার ইউটিলিটি আপনার কাছে কমলে কমুক, আমার সেটা বলতেই হবে। না হলে নিজেকে ঋণী মনে হবে।
বাপরে প্রশংসার বন্যায় ভাসায় দিলেন দেখি...ব্যাপক শরমিন্দা হৈলাম! ধন্যবাদ দিয়া ছোট করলাম না তৌফিক ভাই, বড়ই থাকেন
..................................................................
#Banshibir.
সময়ের সাথে সাথে সব স্মৃতি হয়ে যায়। ভালো লাগল লেখাটা।
..................................................................
#Banshibir.
নতুন মন্তব্য করুন