জামার খুঁট দিয়ে কপালটা মুছে সোজা হয়ে দাঁড়াল মতিলাল।ধু ধু রতনপুর মাঠে মধ্যদুপুরের চাঁদিফাটা গরম তাকে কাবু করতে পারেনি ঠিকই তবে একটু কাহিল লাগছে। সকালে রুটি খেয়ে বেরুনো উচিৎ ছিল। কোঁচড়ের ভেতর হাত ঢুকিয়ে একগাল মুড়ি চালান করে দিতে দিতে তীক্ষ্ণ চোখে মতিলাল খেয়াল করল কেউ আসছে।
বেশ বেশ।
জামাটা একটু ঝেড়েপুঁছে পাশে গাছের ছায়ায় আরাম করে বসল মতিলাল, আর ঝোলা থেকে বাঁশি বের করে বাজাতে শুরু করল অল্প। দূরে পথিক একটু থেমে তারপর সেদিকেই আসতে থাকল ধীরে। কাছে এসে মতিলালকে জিজ্ঞেস করল, এইটা কোন জায়গা গো?
রতনপুর, মিষ্টি হেসে মতিলাল উত্তর দিল, দাদা বসেন না, বসেন। বড় হাঁপাই গেছেন যে!
পথিক একটু দূরত্ব বজায় রেখে ছায়ায় বসে বলল, সেই সকাল থেকে হাঁটছি, এদিক এত গরম আগে জানতাম না। মাথার সাদা চুল কয়টা পুড়ে কালা হয়ে গেল!
দাদা বুঝি অনেক দূর থেকে আসতিছেন?
হুঁ ওই আরকি, পথিক সতর্ক গলায় এড়িয়ে গেল উত্তর, দূরই। আচ্ছা কাছাকাছি গঞ্জ কোথায় আছে?
এই আরেকটু এগোলেই ছোট গঞ্জ। আমার ভাইয়ের দোকান আছে হেথা, আমি যাব সেদিকেই। মুড়ি খাবেন?
নাহ গঞ্জে গিয়ে একবারে খেয়ে নিব। চলি তবে।
চলেন আমিও যাই।
হাঁটতে হাঁটতে মতিলাল আগড়ম বাগড়ম বলার ফাঁকে জরিপ করে নিতে থাকল পথিকের জামাজুতা। পরনে সিল্কের জামা, মালদার আদমি বলেই মালুম হচ্ছে। নতুন চটি, বেশী ময়লা নয়। লোকটা না বলল সকাল থেকে হাঁটছে? উড়ে উড়ে হাঁটছিল নাকি, এতো পরিষ্কার চটি তো হবার কথা নয়।
হঠাৎ পেছনে একটু আওয়াজ শুনে অল্প চমকে মতিলাল পিছনে তাকাল। কেউ পিছু নিল নাকি? ঘাড় ঘুরিয়ে তাকে পেছনে তাকিয়ে দেখতে দেখে পথিক বলল, কি হল?
কেউ আসতিছে মনে হল। শব্দ পেলাম।
কই?
চিন্তিত মুখে মতিলাল বলল, দেখি না কিছু। আমারই ভুল বুঝি।
আবার হাঁটা ধরল দুইজনে। একটু ধীরলয়ে। মতিলালের মন খুঁতখুঁত করতে লাগল, ঝিল বেশী দূরে নয়। কে ছিল পিছনে?
আরেকটু এগিয়ে দেখা গেল মাঠ শেষ, বড় বড় গাছের জঙ্গল। সেইদিক আঙুল উঁচিয়ে মতিলাল বলল, এইদিকে একটা ঝিরি আছে কত্তা। পিয়াস লাগছে, একটু জিরিয়ে এগোই বরং।
দুর্দান্ত গরমে অস্থির পথিক সায় দিয়ে তার সাথে এগিয়ে গেল ঝিলের দিকে। চমৎকার টলটলে পানি, বড় গাছের পাতা ভেদ করে সূর্যের আলো ঘেঁষতে পারেনি বেশী। ভারি ঠান্ডা। আঁজলা করে পানি খেয়ে তৃপ্ত পথিক গাছে হেলান দিয়ে বসতেই মতিলাল মধুর কন্ঠে বলল, তামুক খাবেন কত্তা?
তামুক? নিচ্চয় নিচ্চয়, কেন নয়?
মিষ্টি হেসে জামার ভেতর হাত ঢুকাল মতিলাল, আর চোখের পলকে বের করে আনল একটা হলদে রুমাল। রুমালের দুই কোনে বাঁধা তামার চাকতি। নিমিষেই সেই দুই চাকতিওলা রুমাল পথিকের গলায় আটকে সর্বশক্তি দিয়ে মতিলাল দিল টান। গোঁ গোঁ করতে করতে তীব্র বাধা দিতে থাকল পথিক, মতিলালের রীতিমত কষ্ট হচ্ছিল ফাঁস ধরে রাখতে। এই ব্যাটার গায়ে এইরকম কড়া জোর কে জানত।
শক্ত বাঁধন আরো শক্ত করে ধরতে ব্যস্ত মতিলাল হঠাৎ টের পেল নিঃশব্দে তার পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে কেউ। ঝট করে পেছন ফেরার আগেই পেছনের পালোয়ান ভারি মুগুর দিয়ে দিল মতিলালের মাথায় শক্ত বাড়ি। এরপর আরেকটা। তারপর আরেকটা।
অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেল ফাঁসুড়ে মতিলাল।
.......................................................................................
জ্ঞান ফিরে সে নিজেকে আবিষ্কার করল একটা কুঠুরির মধ্যে। শক্ত পাথরের দেয়াল, উপরে অল্প একটা ফুটো, হাতও গলবেনা এতই ছোট। ইঁদুর একটা কিচিকিচ করতে করতে দৌড়ে গেল গা ঘেঁষে।ভারি পিশাব লেগেছে মতিলালের, একটা কোনায় গিয়ে ছ্যাড়ছ্যাড় করে মুতে দিয়ে আসল। তারপর ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে বসল। তিরিশ বছরের জীবনে এরকম বিপদে সে পড়েনি। ফাঁসুড়েরা সাধারণত দল বেঁধে চলে, কিন্তু মতিলাল ছোটবেলা থেকেই ত্যাড়াগোছের। পিতাকে সে পরিষ্কারই বলে দিয়েছিল যে সবার সাথে মিলে কাজ করতে তার ভাল লাগে না, একা কাজ করলে সে স্বাচ্ছন্দ্যও বোধ করে আর পয়সাকড়িও জোটে বেশী। শুনে বাপ তাকে যে চড় কষিয়েছিল তার ব্যথা এখনো একটু একটু আছে।
দড়াম করে দরজা খুলে গেল এমন সময়, বল্লম হাতে এক প্রহরী ঢুকে খাবারের বাটি নামিয়ে রেখে আবার বিনা বাক্যব্যয়ে বাইরে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল। মতিলাল লাফ দিয়ে চিৎকার করে উঠল, এই! এই! দরজা খোলেন! দরজা খোলেন গো। দরজা খোলেন। ভুল হয়ে গেছে কত্তা। ভুল হয়ে গেছে। দরজা খোলেন। দরজা খোলেন।
কোন সাড়াশব্দ নেই। আরো জোরে চিৎকার করতে গিয়ে মতিলাল টের পেল গলায় আর জোর নেই। খাবারের বাটি থেকে অসম্ভব সুগন্ধ বেরুচ্ছে, কাছে গিয়ে দেখে পুলাউ আর মাংসের ঝোল। কোর্মার মত। শেষ কবে কোর্মা খেয়েছে মনেও করতে পারল না মতিলাল, কাপড়ে হাত মুছে সোজা খাবারে মন দিল সে। উপরে ফুটা দিয়ে আসা আলো ক্রমে ফুরিয়ে আসছে, সন্ধ্যা হয় হয়।
খেয়ে নির্জীবের মত নেতিয়ে পড়ল ক্লান্ত মতিলাল।
পরদিন সকালে যার লাথি খেয়ে ঘুম ভাঙল চোখ কচলে তাকে ভাল করে দেখে মতিলাল চিনল এই সেই পথিক, যার ফাঁস নেবার চেষ্টা করেছিল সে। পথিকের পা জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে চিৎকার করে উঠল মতিলাল, কত্তা মাপ কইরে দেন গো মাপ কইরে দেন। ভুল হইয়ে গেছে। মাপ কইরে দেন।
লাথি কষিয়ে মতিলালকে দূরে সরিয়ে পথিক বলল, ধুর হারামজাদা সর। গা লাগাস কেন। গোসল করে আসছি দিল সব মাটি করে। সর।
তারপরে একসেট নতুন জামা মাটিতে ফেলে বলল, এইটা পরে নে। পরে আমার সাথে চল।
বিনা বাক্যব্যয়ে জামা পরে প্রহরীবেষ্টিত অবস্থায় মতিলাল হাঁটতে থাকল পথিকের পিছু পিছু। বিশাল দালান, পাশে বাগান। একধারে কেঁচি দিয়ে বাগানের ঘাস ছাঁটছে পাঁচ/ছয়টা মালি, গরুর গাড়িতে খাবারের স্তুপ নিয়ে পাকশালার দিকে যাচ্ছে দুইজন। এলাহী কারবার।এ কোথায় এসে পড়ল সে? সে এখানে কেন?
কিছুক্ষণ পর বড় দালানের ভেতর একটা বিরাট কামরায় এসে তার যেন চোখ ঝলসে গেল। এক পাশে বাঘের চামড়া সাঁটানো, মণিমুক্তা লাগানো কাপ পিরিচ টেবিলের উপর। দূরে দেয়ালে ঝুলানো দুইটা আলিশান তলোয়ার আর নিচে একটা ঢাল।
ঠিক মাঝখানে মাদুর পাতা, তাতে আধাশোয়া হয়ে তামুকে টান দিতে দিতে এক পাগড়িওলা লোক ভারি কৌতুকের স্বরে বললেন, কি ঘুম হল?
হাউমাউ করে কেঁদে উঠল মতিলাল ভয়ে, কত্তা আমি কিছু করি নাই আমি কাউরে মারবনা ছেড়ে দেন কত্তা ছেড়ে দেন।
বিরক্ত হয়ে পাগড়িওলা মতিলালের পাশে দাঁড়ানো পথিককে বললেন, এ কি মুস্কিল এ ছাগলে কান্দে কেন? এই তোর সেই রুমালওয়ালা? ঠিক জানিস?
মৃদু স্বরে পথিক উত্তর দিল, এ ই ঠিক লোক হুজুর। পাকা খবর আছে।
দেখে তো মনে হচ্ছে ভয়ে পিশাব করে দিছে, ভুরু কুঁচকে পাগড়িওলা বললেন, যাকগে কাজ হলেই হল। শুন মতিলাল, তোর কোন ভয় নাই। তোকে আমার বিশেষ প্রয়োজন, তা সে সময় আসলে হবে। আপাতত খেয়েদেয়ে নে একটু। রাত্রে কি খেয়েছিলি কাল?
কুর্মা হুজুর।
দাঁত বের করে হেসে পাগড়িওলা বললেন, বেশ। আরো কয়দিন কোর্মা খা। আমি একটু ব্যস্ত আছি। তারপরে কথা হবে। এখন যা।
আপনি কে হুজুর?
হো হো করে হেসে দিলেন পাগড়িওলা মতিলালের প্রশ্নে, আমি কে সেইটাও একটা কথা। লোকে আমার নামে নানা কথা বলে বেড়ায় বটে, তবে আমি লোক তত খারাপ নই।
এই বলে তিনি পাশে রাখা পেস্তার শরবত ঢকঢক করে এক চুমুকে খেয়ে বিরাট ঢেকুর তুললেন একটা। তারপর মতিলালের চোখে চোখ রেখে মধুর স্বরে বললেন, আমার নাম আসাফউদ্দৌলা। মীর্জা মুহম্মদ আসাফউদ্দৌলা। আমি আলিগড়ের নবাব।
(চলবে)
মন্তব্য
দারুন লিখেসেন কত্তা।
খি খি খি।
..................................................................
#Banshibir.
দারুন হঁচ্চে কত্তা, চালিয়ে যান।
আব্দুল্লাহ এ এম
হইছে এলা তালি থামান, হাত ব্যথা হয়া যাইব
..................................................................
#Banshibir.
সিরিজ বিষয়ে দয়া করে ত্রাকানুকে ফলো করবেন। অপেক্ষা করাটা বেশ কষ্টের হয়ে যাবে। আসাফউদ্দৌলার নাম দেখার পরই আগ্রহ দ্বিগুন হয়ে গেলো। ইতিহাস আমার প্রিয় বিষয়।
ফাঁসুড়ে না ঠগি?
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
তারেকাণু একটি মাল্টিনিক, আমি একাই লিখি আমার পক্ষে কি সেরকম দ্রুত লেখা সম্ভব?
এই আসাফউদ্দৌলা লখনৌ এর নবাব না কিন্তু। কাল্পনিক আলিগড়ের কাল্পনিক নবাব। তয় একই রকম দুষ্ট
এই বজ্জাত মতিলাল ঠগিদের দল ছেড়ে নিজে সোল প্রোপ্রাইটরশিপ খুলছে, তাই তারে ফাঁসুড়ে ডাকা হইতেছে। ঠগিদল নিয়েও পাতার পর পাতা গল্প লেখা যায়।
..................................................................
#Banshibir.
এহ ! শেষ করলেন না কেনো !! মাঝপথে থেমে গেলে রাগ রাগ লাগে। খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম ।
রাগ কইরেন না বস। সবুর করেন। আমরা আমরাই তো!
..................................................................
#Banshibir.
..................................................................
#Banshibir.
ধুর্মিয়া, 'চলবে' জিনিসটা খুব খ্রাপ, তড়াতড়ি দেন কইলাম।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
পরের পর্ব লিখা নিচে দিয়ে দিব "থামবে"
..................................................................
#Banshibir.
এইটা একটা হইলো কিছু? জলদি পরের পর্ব ছাড়েন। জমছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হইব হইব। কুর্মা খান কয়দিন
..................................................................
#Banshibir.
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
আর কত পপ্পন? পেট খারাপ করব।
..................................................................
#Banshibir.
দারুণ! চলুক! ফাঁসুরেই তো ঠগী, নাকি?
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
হ। সিরিয়াল কিলার গ্যাং একটা, সাথে ধর্মের ককটেল। একবারে মারমার কাটকাট পরিস্থিতি।
..................................................................
#Banshibir.
আম্নে মিয়া খ্রাপ লুক, এট্টু লেইখাই পরের পর্বের লাইগা ঝুলায়া রাখসেন।
--------------------
মিলন
লিখতে গেলে ঘুম আসে
..................................................................
#Banshibir.
পরের পর্ব কো?
মহামতি ইংরেজ আসতেছে পরের পর্বে। আপাতত কোর্মা খান
..................................................................
#Banshibir.
কখন হাতীর পায়ের নীচে ফালান, কখন গলায় ফাঁস লাগান - আপনার ধাত-ই আলাদা।
এইবার ত চমৎকার একটা গল্পের ভুলানি দিয়া আমাগ গলাতেই (চলবে)-র ফাঁস লাগায় দিসেন। যত ছটফট - তত বিপদ! খোলেন, খোলেন ত্রাতাড়ি খোলেন, পারা যায়না আর!
- একলহমা
হ পরের পর্বে আর "চলবে" দিমুনা ঠিক করসি। দিমু "থামবে"
..................................................................
#Banshibir.
আর কই? আপ্নে প্রায় আর আর মার্টিন পর্যায়ে যাইতেছেন!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আর আর মার্টিনের মত বছর পাঁচেক পরপর এক এক কিস্তি ছাড়ুম ভাবতেছি
..................................................................
#Banshibir.
'থামবে'! তার চেয়ে বলেন, চাক্কা জাম, লেডিস নামবো।
..................................................................
#Banshibir.
দারুণ গল্প।
পরের পর্বের জন্য অধীর অপেক্ষায় রইলাম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
ধইন্যবাদ
..................................................................
#Banshibir.
শুরুটা দারুন, এখন শেষটা ক্যামনে করেন সেটাই দেখার বিষয়!
আপনার 'বিশী' পড়ার কি হইল? বই পাইসেন? ভাল লাগসে?
****************************************
নবাবের বেটির সাথে মতিলালের শুভ বিবাহ দিয়া মধুরেণ সমাপয়েৎ করব ভাবতেছি
(একটা বিশী পিডিএফ পাইছিলাম কিন্তু মোটে আদ্ধেক বই, তাই পড়ার রিস্ক নেইনাই। ভাল বইয়ের মাঝপথে থামতে হইলে গলায় ফাঁস নেওন লাগব। অন্য পন্থা দেখতেছি আপাতত।)
..................................................................
#Banshibir.
আসাফদ্দৌলা নামটা পড়ে সিরাজদ্দৌলার কথা মনে পড়ল। আর সেই সূত্রে ফট করে মনে পড়ে গেল - মাত্র কয়েকদিন আগে দেশি কোন এক টিভি চ্যানেলের টক-শোতে নবাব সিরাজদ্দৌলার এক বংশধর দাবীদারের হাজির হওয়ার কথা। ঠাট্টা না! ফেজ-টাইপের অদ্ভূত এক টুপি পরা প্রায় ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে আসা চেহারা-মার্কা এই একবিংশ শতাব্দীর এক তরুনের মুখে সিরাজদ্দৌলার বংশধর হিসেবে তার পক্ষে এপোলজি/ডিফেন্স শুনতে শুনতে হাসি সামলানো খুবই কষ্টকর হচ্ছিল!
****************************************
কোনদিন দেখবেন হাঁটু পর্যন্ত লম্বা হাতওলা কেউ আইসা দাবী করতেছে সে বখতিয়ারের বংশধর। সিরাজ বা বখতিয়ার মার্কা বলদগুলিরে মুসলমানের ঝান্ডাবাহক হিসাবে দাঁড় করাইতে বাঁশের কেল্লার দুইদিনও লাগব না... বহুত সাপুটারও পাইব এরা সন্দেহ নাই।
..................................................................
#Banshibir.
আরে আপ্নে আছেন কৈ, এর বাকি আছে নাকি! বলদিয়ার মহাবলদ জমিদারের কথা মনে নাই যিনি মাঝেমধ্যেই সচলে কমেন্ট করে আমাদের প্রচুর বিমলানন্দ দিতেন? উনি তো খোদ আদম (আঃ) থেকে নিজের বংশলতিকা নেটে পাব্লিশ করছিলেন (আল্লাহ থেকে কেন শুরু করেন নাই তা আল্লাহই জানেন!)। যার মধ্যে বিভিন্ন নবী/পয়গম্বর থেকে শুরু করে ইরান-তুরান-তুরষ্ক-পারস্য-ভারতবর্ষর বিভিন্ন রাজা-বাদশারা প্রায় কেউই বাদ ছিল না। আমার সৌভাগ্য কি দূর্ভাগ্য জানি না, এই বলদের এক আত্নীয়ের সাথে বাস্তবে আলাপ হয়েছিল এক আড্ডায়। আমি কি এক কথা প্রসঙ্গে বলদিয়ার বলদের বলদামির কথা তুলেছিলাম, হঠাৎ দেখি এই লোক আর তার বউয়ের হেঁচকি উঠতেসে। তখনই জানলাম ইনারাও ঐ একই গোয়ালের বলদ। এই লোকও কম না, তার দাবি অতীতে ১০০০ বছর পর্যন্ত রাজকীয় উত্তরাধিকারের রীতিমত ডকুমেন্টেশন আছে নাকি তার কাছে। বাঙালীরা নাকি অসভ্য - খাইতে জানে না, পরতে জানে না। এইরাম আরও দুয়েকটারে চিনি। এইগুলার মধ্যে একটা জিনিষ কমন পাবেন - ১। বাঙালী-বিদ্বেষী বা এবিষয়ে উচ্চমন্যতায় আক্রান্ত, ২। পাকিপন্থী। দেশটা ছাগলে ভরে যাইতেসে!!!
****************************************
একটা অশ্লীল প্যারোডি মাথায় আসে এসব শুনলে ... "ধোন ছোটো ক্ষতি নেই, বংশ তো বড়োওওও"
হাহাহহহাহাহা-
কোর্মা হজম হয়ে আবার খিদে লেগে গেছে, বই অর্ধেক পড়ার পর থামতে হলে ফাঁস নিতে চাওয়া লেখক ও আমাদের দুঃখ বুঝলোনা ...
শুরুটা এত দারুন হয়েছে, পরের পর্বের দেরী দেখে সমানে গালমন্দ করতে ইচ্ছে হচ্ছেগো কর্ত্তা!! সচলায়তনের জন্মদিন দেখে হজম করে গেলুম।
একখিলি মিষ্টি পান খায়া পরের পর্ব লিখতে বসব ভাবতেছি। এত রাইতে পান কই পাই
..................................................................
#Banshibir.
হ মাঝি ভাই এই লোক দেখলাম দাবী করতেছে সে আকবর না জাহাঙ্গীর কুন বাদশার জানি এক দত্তক পুলার বংশধর। তারও আগে নাকি বংশ গিয়া ঠেকসে একবারে আবু বকর সিদ্দিক খলিফা পজ্জন্ত। হালা আবাল। এরজন্যই লালন লিখে গেছেন, "তুই পাগল তোর মনও পাগল, পাগল পাগল করিস না...পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না"
..................................................................
#Banshibir.
তারাশঙ্করের কবির প্রথম দিকে একটা জামাইমারীর মাঠ ছিল না? সেই ঘটনার কথা মনে হলো পড়ে। আহা চলুক চলুক।
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
খেয়াল নাই অনেকদিন আগের পড়া। জামাইমারির মাঠে কি হইত?
..................................................................
#Banshibir.
যতদূর মনে আছে নায়কের পুর্বপুরুষের একজন মেয়েজামাইকে ভুলে মেরে ফেলছিলো ছিনতাই করতে গিয়ে
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
জমে গেছে; পরের পর্ব চাই জলদি
নিচ্চয়
..................................................................
#Banshibir.
৭ দিনের সময় দিলাম, ২য় কিস্তি লেখার।
অ ট্ঃ অনুরোধের আসর গীতমালা টাইপের অনুরোধ >একটা গলপ লিখুন না যেখানে শেষে সবাই সুখে বাস করবে।
ডরাইলাম।
এ ই সেই গল্প যার শেষে সকলে সুখে বসবাস করবে। মনে করেন মতিলালকে খৎনা করে মোতাহার বানায় দেওয়া হবে, আর তার সাথে বিয়ে বসবে নবাবের বেটি সুফিয়া। ব্যাপক ধুমধাম ঢোলসহরতের বিবাহে এসে বাদশা আওরঙ্গজেব আশীর্বাদ করে বলবেন, "দেশের মতিলালেরা যতই দ্রুত মোতাহার হবে ততই সুফিয়ারা তাদের কোলে এসে ধরা দেবে" হাহাহাহাহাহাহাহাহা!
..................................................................
#Banshibir.
..................................................................
#Banshibir.
ঠিক যখন গল্পটায় মজে গেছি, তখনই দিলেন কষে চপেটাঘাত - চলবে!!! (কান্নার ইমো)
তাড়াতাড়ি চালান।
পরেরবার মজার দরকার নাই। অমজা অবস্থায় পইড়েন...
..................................................................
#Banshibir.
পরের পর্ব দেন, কৈলেই হাতে কুর্মার বাটি ধরায়ে দিতেছেন পীর বাহাদুর। পাছে আমারে মুড়ির গামলা ধরায়ে দেন, এই ডরে আর পরের পর্ব চাইলাম না। আপনে দিয়েন না, পরের পর্ব দিয়েন না কৈলাম। কুর্মা খাইতে মঞ্চায়।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
..................................................................
#Banshibir.
প্রথমে ভাবছিলাম আপনি ২য় পর্ব না দেওয়ার আগে ১ম পর্ব পড়বোনা, পরে দুই পর্ব একসাথে...
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরতে পারলামনা।
ভালো লাগলো।
কোর্মা খামুনা - তাড়াতাড়ি ২য় পর্ব দেন
হিসাবে পর্ব দুইয়ের অধিক আসার কথা, যখন যেইটা পান খায়া নেন জমায় রাইখেননা
..................................................................
#Banshibir.
দ্বিতীয় পর্বের লিংক থেকে প্রথম পর্বে এলাম। দারুণ লাগলো। এবার দ্বিতীয় পর্বে যাই
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
আমিও তাই কইচ্চি
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
তিন তিনটা কাটা হাত? আপ্নে কি ঠগি?
..................................................................
#Banshibir.
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
প্রথম পর্ব শেষ। এবার দ্বিতীয় পর্ব পড়বো। কি মজা।
দেরি করে প্রথম পর্ব পড়ার অপরাধে আপনের দশ টেকা ফাইন করলাম।
..................................................................
#Banshibir.
ভালোই লাগছে...
- সিফাত উল কবির
সন্দেহ তো তাইলে ঠিকই আছে! আপনি লালনের বংশধর সন্দেহ করছিলাম। তিনি গান লেখতেন আপনি লিখেন গল্প এই যা পার্থক্য। হেহেহে সবাই হন্যে হইছে কেমন। পরের পর্ব কয়া কয়া। আমি এক্কেবারে সবগুলান এক সাথেই পড়তে পারবো
একটা অতি কৌতুহলি প্রশ্ন:
ফাঁসুড়ের নাম যে মতিলাল
সেটা কল্পিত নবার জানলেন কিভাবে? কোথাও তো উল্লেখ নেই ওর নাম জিজ্ঞেস করা হইছে
নবাবের হোমওয়ার্ক করা আছে গো আয়নামতি, রাস্তা থিকা যারে তারে ধৈরা আনা হয় নাই. মতিলাল দলছাড়া ঠগী, এইটা রেয়ার কমোডিটি. এরা সাধারনত দল বেঁধে ঘুরে. নবাবের একজন ঠগী দরকার ছিল, আস্ত দল না. তাই মতিলালকে তলব করা হইছে.
..................................................................
#Banshibir.
উত্তর পছন্দ হইছে ১০ এ ১০
দেখি পরের পর্বে কি হয়...
র.নাহিয়েন
নতুন মন্তব্য করুন