আরব সাগর থেকে তাপ্তি নদীতে জাহাজ ঢুকল এইমাত্র। সুরাট বন্দর আসন্ন। জাহাজ আসছে সেই মছলিপটনম থেকে, মেলা লম্বা রাস্তা। মাঝে থেমেছিল কোচিন কালিকট আর গোয়ায়। জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে ফরাসী জহরত ব্যাপারি জঁ পিয়ের থিবো দেখতে লাগলেন উঁচু দেয়ালে ঘেরা সুরাট দূর্গের পাশ দিয়ে জাহাজ ধীরে ধীরে এগুচ্ছে কাস্টমস হাউসের দিকে।
নভেম্বর। ১৬৪২ সাল।
কাঁধের বোঁচকা নিয়ে জাহাজ থেকে নেমে একটা কুলি নিলেন থিবো সায়েব, তারপর ধীরেসুস্থে এগুতে থাকলেন কাস্টমস হাউসের দিকে। তার সাথে আছে কিছু পান্না, দুইটা কাজ করা কণ্ঠহার আর কিছু সস্তা হলদে হীরে। সরকার বাহাদুর তিন কি চার পার্সেন্ট কেটে রাখবে খাজনা। এ বন্দরে আগেও একবার এসেছিলেন, নিয়মকানুন তার কিছু জানা আছে।
কাস্টমস হাউস থেকে বেরিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে থাকা কুলিকে ভাঙা হিন্দুস্তানি ভাষায় কইলেন, তোর নাম কিরে ছোকরা?
হাতজোড় করে কুলি দাঁত দেখিয়ে হাসল, আব্দুল গফুর।
চমৎকার। আব্দুল গফুর, তোর জন্য আজকে একটা ভাল দিন রে ব্যাটা। আমি ভারি গাট্টিবোঁচকা নিয়ে মোটেই চলাফেরা করিনে, আমার মাল তুই কড়ে আঙ্গুল দিয়েই তুলতে পারবি। পয়সাও পাবি মন্দ নয়।
মাথা নেড়ে আব্দুল গফুর বলল, জ্বী হুজুর।
আচ্ছা শোন, টাকশাল কোন দিকে? সেইদিক আমায় নিয়ে চল। আর কাছেপিঠে ফিরিঙ্গি থাকে এরকম সরাই চিনিস?
জ্বী। এই ডাইনে দিয়ে একটু গেলেই টাকশাল। দরিয়া মহলের পাশে। চলেন নিয়া যাই আপনাকে। মুসাফিরখানা নিয়েও চিন্তা করবেন না হুজুর, পচ্চিম দিকে এক নূতন সরাইখানা তৈয়ার আছে। মুইজুদ্দিন বাহাদুর সরাই। উঁচা খিলানওলা দালান, আপনার পছন্দ হবে হুজুর।
বেশ। চল তবে টাকশালে যাই আগে।
থিবো সায়েবের কাছে কিছু রূপিয়া আছে তবে যথেষ্ট নয়। কিছু রূপিয়া কেনা জরুরি। তার কাছে কিছু সোনা আছে তাই দিয়ে রূপিয়া কিনতে হবে। ভারতে তার আরো কিছুদিন থাকার পরিকল্পনা আছে, রূপিয়া লাগবে রাস্তাঘাটে। গফুর কুলি ঠিকই বলেছিল, দরিয়া মহলের ঠিক পাশেই টাকশাল বটে। বন্দরের কেষ্টবিষ্টুদের প্রাসাদ দরিয়া মহল। বাইরে থেকে মূল ভবন দেখা যায় অল্পই, বিশাল বাগানে কাজ করছে কয়টা মালি। পা চালিয়ে দরিয়া মহল পেরিয়ে টাকশালে ঢুকলেন থিবো সায়েব। গফুর দাঁড়িয়ে রইল বাইরে গাছের ছায়ায়।
ব্যস্ত টাকশাল, গিজগিজ করছে মানুষ। রূপিয়া নিয়ে থিবো সায়েব যখন বেরিয়ে এলেন তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে। তিনি এগিয়ে গিয়ে আব্দুল গফুরকে গিয়ে ধরলেন, ওহে কুলি খাওয়ার বন্দোবস্ত কি?
ভারি ব্যস্ত হয়ে গফুর বলল, বাজারে আসুন আমার সাথে হুজুর, ভালো ধাবা আছে। পরোটা বানায় যেন মাখম!
টাকশাল আর দরিয়া মহলের দালানের পেছনেই বাজার। এক পাশে সার ধরে বেঁধে রাখা দুনিয়ার গরুর গাড়ি, উট আর ঘোড়া। দূর দূর থেকে আসা নানাবিধ কাফেলার মালসামান। কতরকম মাল ডাঁই করে রাখা, কাপড় নীল চিনি আরো কি কি যেন। মাঝখানে তাঁবুর কাপড় দিয়ে ঢাকা এক ধাবায় থিবো সায়েবকে নিয়ে গেল গফুর।
আগেরবার যখন সুরাটে এসেছিলেন তখন থিবো সায়েবের মনে আছে তিনি খেয়ে দেখেছিলেন “থালি”। খোপখোপ করা প্লেটে ঘন ডাল, সব্জির তরকারি, ভাত, রুটি আরো জানি কি কি। খুবই বিশৃঙ্খল খাদ্য, কোনটা আগে কোনটা পরে খেতে হবে সেইটেই বুঝে ওঠা শক্ত। কোনটা দিয়ে কোনটা খেতে হবে সেইটাও এক ধাঁধা, থালিতে একটা ছিল মিষ্টি আইটেম। মিষ্টি কেউ কেন ঝাল তরকারির সাথে একত্রে খাবে তা থিবো সায়েবের কাছে এক রহস্য। সে যাই হোক, সেইবারই এক আমিরের বাড়িতে তিনি খেয়েছিলেন ভাতের একটা ডিশ, নাম খিচুড়ি। চাল ডাল মিলিয়ে রাঁধে এরা, সাথে দেয় ঘি বলে এক বস্তু। ঘি মাখনের মত এক জিনিস, খাবারে ভারি সুবাস হয় দিলে। খেতেও মজা বটে। তবে থিবো সায়েবের খুবই পেটে সমস্যা, বেশী ঘিওলা জিনিস খেলে খালি ভুটভাট পাদ বেরোয়। যন্ত্রণা।
ধাবায় খিচুড়ি চাইতেই দিয়ে গেল, পাশে একটু “আচার”। আচার এক দুর্দান্ত ঝাল বস্তু, খেলে থিবো সায়েবের মনে হয় জিহবাটায় কেউ বুঝি আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ঘটি ঘটি পানি খেলেও সেই ঝাল যায় না, তবে তিনি দেখেছেন অল্প রাম খেলে ঝাল কমে আসে। গোয়ায় একবার এরকম ঝাল কি একটা খেয়ে প্রায় চোখ উল্টে মরার জোগাড়, তখন সাথের এক আধা ফিরিঙ্গি জর্জ তাকে তাড়ি ড্রিঙ্ক খাইয়েছিল। জঘন্য ড্রিঙ্ক তাড়ি, তবে খেতে থাকলে পরে সয়ে যায়।
দূরে বসে আব্দুল গফুর খেয়ে নিল হাতরুটি আর ডাল, সাথে একটু দৈ। তারপর হাত ধুয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগল সায়েবের জন্য। এই সময় তার পাশে এসে দাঁড়াল পাগড়ি পরা দালাল উসমান তারিক, জিজ্ঞাসা করল, এই তোর সায়েব কি মাল এনেছে?
মাথা চুল্কে গফুর উত্তর দিল, তা তো জানিনা! আমাকে কয়নি।
গরুর গাড়ি কোনটা?
গরুর গাড়ি নাই হুজুর, একটা থলি শুধু।
ও বুঝছি, বিজ্ঞের মত মাথা নাড়ল উসমান, জহরতের কারবারি মনে হয়। উঠেছে কই?
সতর্ক গলায় গফুর উত্তর দিল, কইতে পারলামনা হুজুর।
আচ্ছা, ঠিক আছে। এই বলে উসমান তারিকও বসে পড়ল থিবো সায়েবের অপেক্ষায়। একটু পরেই ধাবা থেকে বেরিয়ে এলেন তিনি। ঝটাক করে উঠে দাঁড়িয়ে পাছা থেকে ধুলো ঝাড়তে ঝাড়তে উসমান বলল, হুজুর সেলাম। আমার নাম উসমান তারিক, এই বাজারে মাল কিনাবেচা করি। আমার কাছে মনে করেন সব রকম মালের ব্যাপারির নাড়ির খবর আছে। তা হুজুর কি মাল বেচতে এসেছেন?
শান্ত কন্ঠে উত্তর দিলেন থিবো, আমি সুরাট ছেড়ে আরেক শহরে যাচ্ছি। সুরাটে আমার আপাতত কোন বেচাকিনা নাই।
বলেন কি, চোখ কপালে তুলে উত্তর দিল উসমান, সুরাট বন্দরের থেকে পয়লা নম্বরি বাজার আপনি পাবেনটা কোথায়? এইখেনে যে দাম পাবেন আর যে খরিদ্দার পাবেন তা আস্ত দুনিয়াতেই কি আর আছে? নাই। সুরাটে মাল বেচে ঠকা নাই এ আমি পষ্ট বলে দিলাম!
উত্তর না দিয়ে থিবো সায়েব গফুরের দিকে তাকিয়ে বললেন, চল হে। মুসাফিরখানায় এগোই।
সেইদিক তারা রওনা দিল, আর পিছনে পিছনে আসতে থাকল উসমান তারিক। সে বলতে লাগল, আহা হুজুর মুসাফিরখানায় কেন, সেথায় যে গোবরের ভারি গন্ধ! মাঝে মাঝে বদ মুসাফিরগুলি নিজেরাও পাইখানা করে আসে মাঠে, সে এক গান্ধা জায়গা বটে। তারচেয়ে চলুন এই গরিবখানায়, যত্নআত্তির কোন কমতি হবে না। আমার বিবিজান উত্তম মিঠাই তৈরি করেন, দাওয়ায় বসে হাওয়া খাবেন আর টপাটপ মিঠাই গিলবেন।
থিবো সায়েব হাঁটার গতি একটুও না কমিয়ে বললেন, নাহ আমি ঠিক আছি। ধন্যবাদ।
উসমান তারিক বলল, আচ্ছা মিঠাই না হয় বাদই দিলাম। সুরাটের বাইরে যে যাবেন বলছেন, খাজনার কথা খেয়াল আছে তো? শহর পেরিয়ে বাইরে গেলেই কিন্তু তেড়ে আসবে সরকার বাহাদুরের লোক। তাকে পয়সা দিতে হবে শহরের বাইরে যাবার জন্যে, তারপর মনে করেন খাজনা কেটে রাখবে রাস্তা দিয়ে হাঁটার জন্যে, নদীর উপর বাদশা নামদারের সেতু পার হবার জন্যে, এমনকি উট কি গরু যে ঘাস খাবে রাস্তায় সেই বাবদ পয়সা অব্দি কেটে রাখবে। কেন খামোকা এই যন্ত্রণায় যাবেন হ্যাঁ? সুরাটেই মাল বেচে সুখে থাকেন। পয়সাও হল তকলিফও হলনা।
কিছু না বলে হাঁটতে থাকলেন থিবো সায়েব। আরো কিছুক্ষণ ঘ্যানঘ্যান করে হতাশ হয়ে উল্টোদিকে ফিরে গেল দালাল উসমান তারিক। গফুর একটা বড় লাল দালানের সামনে নিয়ে বলল, এই যে হুজুর। মুইজুদ্দিন বাহাদুর সরাই। ওই বুদ্ধু দালাল উসমান তারিকের কথা শুনবেন না কত্তা, এ মুসাফিরখানা খুব পরিষ্কার আছে।
বাহ বেশ। চল তবে।
এই বলে দালানের ভেতর প্রবেশ করলেন দীর্ঘ সফরে ক্লান্ত ফরাসী জহরতওয়ালা জঁ পিয়ের থিবো।
…………………………………………………………………………
সেইদিন রাত্রি। সূর্য ডুবে গেছে কিছুক্ষণ হয়, খাওয়াদাওয়া সেরে নিয়েছেন থিবো সায়েব। পিদিমের আলো জ্বালিয়ে বাইরে এসে বসলেন তিনি, সামনেই একটা কুয়া। সুন্দর বাতাস দিচ্ছে, জুইত করে বসলেন তিনি। বসেই টের পেলেন পিছনে কেউ এসে দাঁড়িয়েছে। ঘাড় ঘুরিয়ে তিনি বললেন, কে?
কাঁচুমাচু করে এক অল্পবয়েসি ল্যাঙ্গট পরা কিশোর ছেলে এসে কাছে দাঁড়াল, বলল হুজুর আমার নাম লালচান। আমি আসছি সেই গোলকুণ্ডা থেকে।
কিছু না বলে থিবো সায়েব তাকিয়ে রইলেন ছেলেটির দিকে। গোলকুণ্ডা চেনেন তিনি, দক্ষিণ দিকে। পাথরের বড় আড়ৎ। এখান থেকে অনেক দূর। ছেলেটি এখানে কেন?
আপনি কি জহরতের কারবার করেন হুজুর? আব্দুল গফুর বলছিল।
মনে মনে একটু চমকে উঠলেন থিবো সায়েব। গোলকুণ্ডার বালক জহরতওয়ালা খুঁজছে কেন? তার কাছে কি পাথর আছে? গলা খাঁকারি দিয়ে থিবো সায়েব বললেন, কি চাই তোর?
একটু কুঁকড়ে গিয়ে লালচান বলল, আমি একটা হীরা বেচব কত্তা।
আচ্ছা। হীরা বেচবি। দেখি তোর হীরে?
এই কথা শুনে লালচান একটু ইতস্তত করে ল্যাঙ্গটের তলায় হাত ঢুকাল। থিবো সায়েব দেখলেন উরুর উপর দিকে ছেলেটির বিচির কাছে লম্বা কাটা দাগ, ছেলেটি সেই কাটার ভেতর আঙুল ঢুকিয়ে বের করে নিয়ে এল এক টুকরো হীরে।
সেই হীরে হাতে নিয়ে পিদিমের আলোর সামনে ধরে থিবো সায়েবের মনে হল উত্তেজনায় তিনি দম আটকে মারা যাবেন। নীল হীরে! নিখুঁত এক টুকরো নীল হীরে। এ যে সাত রাজার ধন।
পাশে দাঁড়ানো লালচান ফিসফিস করে বলল, হুজুর এর দাম শ রূপিয়া দেবেন?
থিবো সায়েব মনে মনে বললেন একশো রূপিয়া তো দেওয়াই যায়, কিন্তু এই হীরের খবর এখন পাঁচকান হলে তো বিপদ। একটা ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। তিনি লালচানকে বললেন, হ্যাঁ শ রূপিয়া ন্যায্য দাম। এসো আমার সাথে ভেতরে, দিচ্ছি।
এই বলে তিনি ভেতরে ঢুকে দরজার পাশে দাঁড়ালেন, আর নিঃশব্দে হাতে নিলেন পাশে রাখা বড় মাটির পাত্র। লালচান ভেতরে ঢুকতেই দুই হাত দিয়ে সেই মাটির পাত্র ছেলেটির মাথায় ফাটালেন তিনি, আঁক শব্দ করে মাথা ঘুরে পড়ে গেল ছেলেটি। তারপর থিবো সায়েব ঝুঁকে দুই হাতে গলা টিপে ধরে রইলেন কিছুক্ষণ।
যাক, আপদ বিদেয় হল। এবার মৃত লালচানের দেহ আবার নিঃশব্দে অদূরে কুয়ায় ফেলে দিতে গেলেন তিনি, ঝপাস করে শব্দ হল অল্প। কেউ শুনল কি?
পা টিপে টিপে ঘরে ফিরে এলেন থিবো সায়েব, তারপর দরজা ভাল করে বন্ধ করে পিদিম আবার জ্বালিয়ে তার সামনে ধরলেন সেই নীল হীরে। মনে হল আলোর ছটায় আর জৌলুসে তার চোখ যেন ঝলসে গেল! নীল হীরে! নীল হীরে!
আস্তে আস্তে একটা হাসিতে ভরে গেল বৃদ্ধ জহরতওয়ালা জঁ পিয়ের থিবোর মুখ।
(চলবে)
লেখকের কৈফিয়তঃ পাঠকের স্মরণ থাকতে পারে বাদার বিক্রম গল্পে সুবাদার শাহবাজ খাঁ শুনিয়েছিলেন কিভাবে অল্পের জন্য পাটনা শহরে তার হাত থেকে ফস্কে যায় নিজের জন্য পছন্দ করা এক নীল হীরে। “থিবো সায়েবের দৌলত” সেই ফস্কে যাওয়া নীল হীরের গল্প।
মন্তব্য
পপ্পন লইয়া বইসা থাকলাম কিন্তু।
আমার পপ্পন কো?
..................................................................
#Banshibir.
আপনের জইন্য পপ্পন নাই, আগে পরের পর্ব নামান দেন পপ্পন চাইয়েন। হুহাহহাহাহা
শিক্ষা হয়ে গেছে ! সব পর্ব দিবেন, তারপর একসাথে পড়ব, মুয়াহাহহা, জমিয়ে রাখলাম
facebook
সহমত , অতি সহমত
..................................................................
#Banshibir.
শেষ পর্ব আইতে আইতে বুড়া হয়া যাইবেন
..................................................................
#Banshibir.
আবার কিছুদিন বাধ্যগত অপেক্ষা।
-ছায়াবৃত্ত
আছেন ক্যামন?
..................................................................
#Banshibir.
আপনি লুকটা সুবিধার না, খালি ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর খুনের বর্ণনা দেন । তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দেন
ইসরাত
পরের পর্বেও মারামারির প্ল্যান আছে
..................................................................
#Banshibir.
বাদার বিক্রমের কথাটাই আবার বলে যাই - বুকমার্ক করে রেখে দিলাম, সব পর্ব দেবার পরে একবারে পড়ব। খালি ভয় হিমুর চন্ডীশিরার মত না হয়ে যায়!!
হইতেই পারে। কিছুই কওয়া যায় না।
..................................................................
#Banshibir.
আহা রে! থিবোর জন্য খুব করুনা হচ্ছে।
বলেন কি?
..................................................................
#Banshibir.
আমি আবার লেখা ফালায়ে রাখতে পারিনা, মনটা কেমুন জানি খচখচ করে, তাই পড়ে ফেললাম। এখন যথারীতি সেই অপেক্ষার পালা।
-নিহাদ-
আমারও না লেখলে খচখচ করে
..................................................................
#Banshibir.
থালি আর খিচুড়ির ব্যাপারের authenticity ঠিক আছে তো?
লেখা দুরন্ত। কিন্তু হিংস্রতায় আমার দমবন্ধ লাগে, এইটাই মুস্কিল। তবে আপনার হিসাবে কোন ভুল নেই; বেশীর ভাগ ধনে-মানে সফলতার ইতিহাস-ই নির্মম, নিকৃষ্ট, চরম স্বার্থপর লোভ আর হিংস্রতার ইতিহাস।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ঠিক থাকার কথা। ভেজিটেরিয়ান গুজরাট বইলা ধাবায় ঢুকাইলাম আগ্রা দিল্লি হইলে কাবাব নান খিলানোর প্ল্যান ছিল।
..................................................................
#Banshibir.
উত্তম হিসাব!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
না পড়েও থাকা যায় না- কী মুশকিল! কী মুশকিল!
কে জানে থিবোর কপালে কী আছে
আর একটু আস্তে যাওয়া যায় না? ঘটনা কেমন যেন লাফিয়ে লাফিয়ে চলছে।
হ্যাঁ লাফাচ্ছে একটু ঠিকই। ক্যানভাসটা বেশি বড় হয়ে গেছে।
..................................................................
#Banshibir.
বর্ণনাগুলো ভালো হয়েছে, তবে আপনার কিছু কিছু লেখায় আরও আরো ভালো হয়। পুরোই অন্য জামানায় নিয়ে যেত সেগুলো।
আপনাকে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়া গেলাম পরের পর্বের জন্য, ৭২ ঘন্টা পর এসে পরের পর্ব না পেলে কিন্তু "নিঃশব্দে হাতে নিলাম মাটির পাত্র"
ভালো থাকুন, শুভেচ্ছা
হ্যাঁ অবশ্যই ৭২ দিনের মধ্যেই পাবেন।
..................................................................
#Banshibir.
সব্বোনাশ! এখন ৭২ দিন না আবার ৭২ মাসে গড়ায়
দারুণ! আপনার গল্প পড়তে খুবই ভালো লাগে। এক ফোটাও প্রিডিক্ট করা যায় না।
ধন্যবাদ অনেক।
..................................................................
#Banshibir.
তাত্তারি পরের পর্ব ছাড়েন।
হইব হইব।
..................................................................
#Banshibir.
এইবার এণ্ডিং-এ ভালরকম টুইস্ট আর ড্রামা না থাকলে কিন্তু আপনার পীরত্বের সব জারিজুরি ফাঁস কইরা দিমু কিন্তু কয়া দিলাম!
****************************************
লিচ্চয়, কমসেকম দুই কেজি সাসপেন্স আর ড্রামা দিমু ঠিক করলাম.
..................................................................
#Banshibir.
জমাটি গল্প মনে হইতেছে!
অঃটঃ জমায় রাখতে গিয়া আগের দুইটা গল্প পড়া হয়নাই। বুঝাই যাইতেছে, ব্যাপক মিস। এই সপ্তাহে কাবার দিব।
ডিল!
..................................................................
#Banshibir.
১৬৪২ সালের প্রায় সচিত্র বর্ননা ভেসে উঠলো চোখের সামনে। কিন্তু এরকম টেনশানে রাখাটা অন্যায্য মনে হয়। জলদি আসুক পরের কাহিনী
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
একদিন ধাম করে চলে আসবে!
..................................................................
#Banshibir.
আমি তো ভেবেছি এইটা সত্যি কাহিনি,তাই নয় কি?
নাহ সত্যি না।
..................................................................
#Banshibir.
এভাবে অপেক্ষায় রেখে আপনার কি লাভ? তাড়াতাড়ি ছাড়ুন পরের পর্ব।
-নিয়াজ
প্রতি একজনকে গড়ে এক ঘন্টা করে অপেক্ষায় রাখলে সচলের মডুরা দুই টাকা কৈরা দেয়। মানুষ কি এমনি এমনি সচল হইতে চায় বলেন?
..................................................................
#Banshibir.
এটা কি অভিশপ্ত নীল হীরা দ্য হোপের কাহিনী? দারুন হয়েছে লেখা!
--মদন--
না এইটা হোপ ডায়মন্ডের কাহিনী নয়, থিবো সায়েবও তাভের্নিয়ে নয়। শোনা যায় গোলকোন্ডার এক শ্রমিক উরুর ক্ষতস্থানের ভেতর এক নীল হীরা চুরি করে আনে, তবে সেইটা হোপ নয় আরেক দামী নীল হীরে রিজেন্ট।
তবে এই গল্প রিজেন্টেরও নয়।
..................................................................
#Banshibir.
আবারো একটা দুর্দান্ত ওপেনিং!
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যাচ বাঁচে কি না দেখা যাক...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ব্যাটসম্যান সপাটে হাঁকালেন এবং কোন রান নয়!
..................................................................
#Banshibir.
অনবদ্য
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
দুই প্যাকেট পপ্পন?
..................................................................
#Banshibir.
আপনার একদম প্রথম দিকের কিছু লেখা পড়েছিলাম । আজ অনেকদিন পর এই গল্পটি পড়লাম। বেশিদিন কিন্তু অপেক্ষা করাবেন না । এরপর কি হল জানার জন্য খুব আগ্রহ নিয়ে বারবার ব্লগে চোখ রাখবো ।
জেসমিন পলাশ ।
ফট করে চলে আসবে।
..................................................................
#Banshibir.
আবার খুন, জখম আর জহরত-মহরত সহ গপ্প, জটিল!
অপকুর্স!
..................................................................
#Banshibir.
আগের অভিজ্ঞতা ভুলে গিয়ে পড়ে ফেলেছি।
জলদি দিয়েন পরের পর্ব পীরসাহেব।
অপেক্ষায় রইলাম।
-----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
লিচ্চয় বস।
..................................................................
#Banshibir.
হ্যাঁ, আমিও অপেক্ষায় থাকলাম।
আমিও অপেক্ষায় আছি। দেখি কবে আসে।
..................................................................
#Banshibir.
থালি আর ধাবা নিয়ে আপত্তি আছে, কেননা ঐ খোপ ওলা থালা স্টেনলেশ স্টীল বাজারে আসার আগে ছিলোনা, আজ থেকে পঁয়ত্রিশ চল্লিশ বছর আগেও দেখিনি আর ধাবা এসেছে ( সারা ভারতে ) পন্জাবি ট্রাক ড্রাইভার রা আসার পর, তার আগে গুজরাটে ধাবা বলে কিছু থাকার কথা নয়, সত্যপীরের অসাধারন লেখায় এই জিনিসটা একটু দেখার অনুরোধ করলাম
স্টেনলেস স্টিল বলিনাই কিন্তু। তবে ধাবা টার্মটা মনে হয় দেওয়া ঠিক হয়নাই। দুঃখিত।
..................................................................
#Banshibir.
ওরে চাল্লু !! ...ইতিহাস নিয়ে আপনার ছোটগল্পগুলো খুব মজার লাগে আমার কাছে। সুনীলের বিশু ঠাকুর সিরিজের কথা মনে পড়ে যায়
ইয়াল্লা কন কি
..................................................................
#Banshibir.
গল্পের সময় বলতেছেন ১৬৪২ (তেভারনিয়ে'র ভারত আগমনকাল)। গল্পের বিষয় হল বিশাল নীল হীরা। গল্পের রত্নকার ফরাসি, বিক্রেতা গোলচন্দার। তারপরেও এটা 'বিজুদরোয়া' র গল্প না?
আচানক কথা।
***
ফরাসি তে 'থ' আছে?
***
পান্জাবী ট্রাক ড্রাইভার উতপন্ন হবার আগে 'ধাবা' শব্দ বা কন্সেপ্ট কি থাকার কথা?
আরে না তাভের্নিয়ে কি ১৬৪২ সালে বুড়া আছিল? এইটা এক বুইড়া জহরত ব্যাপারির গল্প। ১৬৪২ আসছে ঘটনাক্রমে। বাদার বিক্রমের প্যারালাল গল্প এইটা তাই। অল্পকিছুদিনের মধ্যেই থিবো সায়েবের সাথে সুবাদার শাহবাজ খাঁর দেখা হইব। সে এক বিরাট কিচ্ছা।
থ থাকার কথা। Thibault।
"ধাবা" নাম দিয়া মিশটেক কইরা লাইছি।
উচ্চারন গোলচন্দা নাকি?
..................................................................
#Banshibir.
Thibault =তিবো হওয়ার কথা। ভিড্যু দেখেন। (৩মি৪০সে)।
কয়েকবার শুনলাম, কনফ্যুজড। সে t লেখসে বটে কিন্তু উচ্চারন বাংলা "ত" এর মত করতেছেনা, উচ্চারন আমার কাসে "এন্থুজিয়াস্তে" মনে হইতেছে। আমার বস ক্যুইবেকের, তারে দিয়া কয়েকবার বলাইলাম থিবো। থিবোই কইতেছে তিবো না, তবে "থ" উচ্চারন করার সময় বাতাস বাইরায় অল্প।
অবশ্য ক্যুইবেকের উচ্চারন ফ্রান্সের লোকের মতন না শুঞ্ছি।
..................................................................
#Banshibir.
জঁ পিয়ের থিবোরে আমার কাছে পাঠায়া দ্যান। ব্যাটা কত হীরে চায়? সব আমি দিব! বাচ্চা-বুচ্চা মারতে মানা করেন। এই দেখেন - এই হীরেটা ওর জন্য রাখছি আমি। ভাল করে দেখে নেন এটা। সারা জীবন ধরে নিয়েও কুলাইতে পারবে না। এই হীরের দাম হচ্ছে কম্সেকম $ ২৬.৯ নোনিলিয়ন (২৬.৯-এর পিছে ৩০টা শুন্য!) মার্কিন ডলার। ৮৯ লক্ষ ৬০৪ কোটি-কোটি কোটি ক্যারাটের হীরে এটা (এর আগে পর্যন্ত আবিষ্কৃত বৃহত্তম আনকাট হীরে হচ্ছে মাত্র ৩১শ ক্যারাটের! )। আমার এই হীরের দামের একটা হিসাব এই এখানে পাবেন।
****************************************
এই হীরার ট্রান্সপোর্ট কস্ট কিরাম পড়ব? মোগল বাদশাও ফতুর হয়া যাইব
..................................................................
#Banshibir.
হা হা হা! টেরান্সপোর্ট কষ্ট পরের কথা। পুরো পৃথিবীর মোট জিডিপি যদি ৭০ ট্রিলিয়ন ডলার হয় (২০১১তে), তবে এই হীরের দাম তার ৩৮৪ কোয়াড্রিলিয়ন গুন বেশি! অর্থাৎ এই একটা মাত্র হীরা কিনতে হলে আপনার পিত্থিবিটা ৩৮৪ কোয়াড্রিলিয়ন বার, অর্থাৎ ৩৮৪০ কোটি X কোটি বার বেচতে হবে। কিম্বা মিনিমাম ৩৮৪০ কোটি X কোটি বছর লাগবে কিনতে, যেখানে মহাবিশ্বের বয়সই মাত্র ১৪০০ কোটি বছর। এর মধ্যে মুগুল বাদশার সম্পদ STEHM মাইক্রোস্কোপ দিয়াও খুইজ্জা পাওয়া যাইবো না!!
যাউজ্ঞা, আজাইরা আলাপ বাদ দ্যান। থিবোর সায়েবের যা দৌলত আছে সেইটুকুই যদি এই ঈদের আগে দিতে পারেন, তাইলে আমার নুনালিয়ন-কুয়াড্রিলিয়ন হীরা আপনারেই দিয়া দিমুনে যান!
****************************************
ভেবেছিলাম থিবো সায়েবের দৌলত - শেষ পর্ব লেখা দেখে পড়তে শুরু করব। কিন্তু পারলাম না।
আপনি খারাপ লুক। সবার সামনে দিলেন একটা মস্ত মূলা ঝুলিয়ে!
এবার থিবো সায়েবের দৌলতের চিন্তা করতে করতে পূজা/ ঈদ এর ছুটি মাটি ……………………….
এই ঈদ না হইলে পরের ঈদের আগে অবশ্যই পাবেন।
..................................................................
#Banshibir.
শুক্রবার বিকালে অফিসে আমার মোটামুটি কোমায় থাকার মত দশা থাকে। গতকাল সেই অবস্থায় পড়লাম। অন্যলেখকদের আপনার সবচেয়ে বড় পার্থক্য মানে আপনার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হলঃ আপনি কোন চরিত্রের পক্ষ নিয়ে লেখেন না।
অন্য যেকেউ হলে থিবোসাহবের নিষ্ঠুরতা নিয়ে একছত্র হলেও লিখতো। আপনি যে সেই লোভ সাড়া দেন না সেইজন্য স্যালুট। থিবো সাহেবের কাছে মাথা ফাটানো আর মশা মারা কাছাকাছি জিনিস এইটা সবচেয়ে ইকোনোমিকালি প্রকাশ করেছেন।
আমার মতে এখন পর্যন্ত আপনার সবচেয়ে ভালো লেখা। আশা করি ভবিষ্যতে সব লেখায় এই লাইন কপি করে মন্তব্য শেষ করতে পারব। লেখায় নতুন অনুপ্রেরণার প্রভাব বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
কোমায় ছিলা বলে লেখা এত ভালো লাগসে মনে হয়
এই গল্পটার ক্যানভাস অনেক বড় হয়ে গেসে এখন তিন/চার পর্বে আঁটে না দেখতেসি. টাইম ও শট. যন্ত্রণা.
..................................................................
#Banshibir.
উপন্যাস বানায়ে ফেলেন। কি আছে জীবনে।
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
বেশী লিখলে ঘুম আসে।
..................................................................
#Banshibir.
পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা না করাইতে পারলে আর লেখক কিসের?! - তীর্থের কাক হয়ে বসে রইলুম - দেখি কোনটা আগে জোটে, কোরবানীর মাংস না ২য় পর্ব
কুরবানির গরুর কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে আসবে কিন্তু থিবো সায়েবের দৌলতখানি ঝিকিমিকি যৌবনা.
..................................................................
#Banshibir.
পরে পড়ুমনি... আপাতত
অটঃ পীরজাদীর খবর কি ?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সে আছে মহাসুখে অট্টালিকা পরে। (তেইশ তলায় থাকি )
..................................................................
#Banshibir.
ও পীর ছাহেব, ২য় পর্বের কি হইল?
****************************************
দুই তৃতীয়াংশ লেখা হইছে। লেখার মাঝে পিচকি ঘুম থিকা উঠে আর হাসি দিয়া ডিস্ট্র্যাক্টেড কইরা দেয়।
..................................................................
#Banshibir.
আপনের মাথা কুটা দেইখা অফিসে বইসা শেষ কইরা দিলাম দ্বিতীয় পর্ব. লন এইবার মাথাকুটা থামান।
..................................................................
#Banshibir.
বেশ ভাল্লাগছে
কাহিনি হইল, কাটা স্থানে হীরা কেমনে লুকায়?
ইন্টারেস্টিং !
খুবৈ ইন্টারেস্টিং।
..................................................................
#Banshibir.
নতুন মন্তব্য করুন