নবনির্মিত ফতে জং কিল্লার সামনের বাগান। মধ্য দুপুর।
শান্ত পানির নহরের সামনে দাঁড়িয়ে কিল্লার মূল কারিগর ওস্তাদ আলি খাঁ ধীরে ধীরে ডান হাত তুলে সঙ্কেত দিলেন। আশপাশের সকলের চোখ কপালে তুলে দিয়ে সেই শান্ত নহর থেকে ছ্যাঁৎ ছ্যাঁৎ ভুসস শব্দ করে ঠান্ডা পানির ফোয়ারা ছিটিয়ে উঠল। খুব কাছে যারা দাঁড়িয়ে ছিল তাদের কামিজে পানির ছিটা লেগে গেল অল্প, তাই দেখে দাঁত বের করে তাদের সে কী হাসি! পুরো এলাকা যেন হঠাৎ বেহেশতের মত ঠাণ্ডা হয়ে উঠল। ছোট একটি ছেলে পানির খুব কাছে গিয়ে আনন্দে লাফ দিল দুইবার।
কিল্লার মালিক সুলতান বুরহানউদ্দিন তৃপ্ত চোখে পানির খেলা দেখতে দেখতে গাঢ় কণ্ঠে বললেন, মাশ্-আল্-লাহ্! মাশ্-আল্-লাহ্!
ওস্তাদ আলি খাঁ হাসলেন অল্প। বড় কষ্টের এই ফোয়ারা, এই সেদিন পর্যন্ত ঠিকমত কাজ করছিল না। কিল্লার বাকি কাজ শেষ হয়ে গেলেও পানির চাপের সমস্যার জন্য বাগানটা ঠিকমত দাঁড়াচ্ছিল না। মুস্কিল। শেষতক নকশায় খানিক অদলবদল করে বাগান একটু অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া হয়, ঐ দিকটা একটু নিচু আর নদীর কাছে বলে সুবিধে। তাতে অবশ্য হাম্মাম একটু দূরে পড়ে গেছে, তবে সেটা বড় সমস্যা নয়। হাম্মামের পথ বাঁধাই করে ছায়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে, তাতে সৌন্দর্য্য বেড়েছে বই কমেনি।
সুলতান বুরহানউদ্দিন বললেন, না হে আলি খাঁ, তুমি জাদুকর বটে। এই ফোয়ারা যে কারো দিল খুশ করে দেবেই। সাবাস। সাবাস ওস্তাদ।
ওস্তাদ আলি খাঁ মাথা নিচু করে নিচু স্বরে বললেন, সবই উপরওয়ালার মেহেরবানি। আল্লা মালিক।
নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই, সুলতান মাথা নাড়লেন, আল্লা মালিক। চল তবে ঐ দিকটা ঘুরে আসি।
দলবল নিয়ে সুলতান এগোলেন মূল ফটকের পাশে রাস্তার দিকে। ফটকের পাশে বাজার, নানান হৈচৈ। বাজারের পিছনে কারখানা। আজমল নামে তুর্কি এক তলোয়ার তৈয়ারের কারিগর সেখানে আস্তানা গেড়েছে, সুলতানের বহর দেখে সে ও তার কামারের দল মাথা নুইয়ে সালাম দিল। সুলতান হেসে হাত নাড়লেন।
ডান পাশে মসজিদ। তার পিছনে বড় হাতি যাওয়ার রাস্তা হাতিরপুল। সুলতান বাংলা থেকে সদ্য ধরে এনেছেন সতেরোটি তাগড়া হাতি, সাংঘাতিক তাদের তাগত। দিল্লী থেকে এক ওস্তাদ মাহুত এসেছে সেই হাতিদের প্রশিক্ষণ দিতে। সামনের বছর সেই সকল হাতি সুলতানের হয়ে যুদ্ধে যাবে ঠিক হয়ে আছে।
এই দিকে দরবার হুজুর, ওস্তাদ আলি খাঁ বড় খিলানওলা এক বিশাল কক্ষে প্রবেশ করতে করতে বললেন, এই দরবারের পশ্চিম দিকে ঐ উপরে আপনি বসবেন। এমনভাবে দরবার সাজানো যেন আপনি সকলকে দেখতে পান, আর সকলেই যেন আপনার গলা শুনতে পায়। আমি শুনেছি আপনি যুহর অক্ত পর্যন্ত দরবারে থাকেন। সূর্যের আলো এইদিক দিয়ে আসবে আর যখন দেখবেন আলোটা মাঝের খিলানের পরে গিয়ে পড়েছে, তখনই বুঝবেন যুহর নমাজের সময়।
ভারি খুশি হয়ে সুলতান মাথা নেড়ে বললেন, চমৎকার। চমৎকার।
তারপরে এইদিকে গেলে হেরেমখানা, আরেকটু এগোলে ওদিক দিয়ে হাম্মামখানাতেও যাওয়া যায়। বড় হাম্মামখানার পানি যেখান থেকে আসে এখানেও তাই, তবে এইটে আপনার আর হেরেমবাসীদের জন্য। বাইরে বড় হাম্মামখানা দিয়ে এইদিকে আসা সম্ভব নয়।
মূল প্রাসাদের ভিতরে ঢুকে সুলতান বললেন, তসবিঘর কোন দিকে আলি খাঁ?
সামনে হুজুর, এইদিকে। আসুন।
ওস্তাদ আলি খাঁ সুলতানকে নিয়ে ভেতর দিকে প্রবেশ করলেন। মাঝামাঝি একটা বড় খোলা জায়গা, আলোয় ঝিকমিক করছে কিন্তু সরাসরি সূর্যালোক প্রবেশ করেনি। বাতাসও বইছে যেন একটু একটু। চমৎকার পরিবেশ। সেই খোলা দরবার পার করে ডাইনে গেলে সুলতানের প্রশস্ত শয়নকক্ষ। তার বাইরে দিকে একটু চাপা জায়গা, সেখানেই তসবিঘর। প্রবেশ করে সুলতান দেখলেন সাদার উপর কালো ছিটের মর্মরে মোড়ানো মেঝে। এক পাশে সূক্ষ্ম কাজ করা লাল জায়নামাজ। কোন জানালা নেই তবু বাতাস আসছে কোথা থেকে যেন।
চামড়ার জুতো খুলে জায়নামাজে পা মুড়ে বসলেন সুলতান। হাত দিয়ে বাকিদের চলে যেতে বললেন, আর ওস্তাদ আলি খাঁকে বসতে বললেন। সকলেই চলে গেল, কক্ষে রইলেন কেবল সুলতানের বক্সী নজফ খাঁ। পাগড়ি খুলে পাশে রেখে সুলতান বললেন, ওস্তাদ তুমি সত্যই আজ কামাল করে দিয়েছ। ফতে জং কিল্লা দেখে আজ আমার জীবন সার্থক। খুবই শান্তি লাগছে হে আলি খাঁ।
মাথা ঝুঁকিয়ে আলি খাঁ বললেন, মেহেরবানী। হুজুরের বড় মেহেরবানী।
মাথা ঝোঁকানো অবস্থাতেই আচমকা ওস্তাদ আলি খাঁ টের পেলেন পিছনে নিঃশব্দে এসে দাঁড়িয়েছে বক্সী নজফ খাঁ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক হাতে ওস্তাদের দুই হাত বেঁধে আরেক হাতে বাঁকানো চাকু ওস্তাদের গলায় ধরল সে। ধীরে ধীরে জায়নামাজ থেকে উঠে দাঁড়ালেন সুলতান বুরহানউদ্দিন। বললেন, এত সুন্দর কিল্লা কবে আবার কার জন্যে বানিয়ে দাও তার কি ঠিক আছে ওস্তাদ? দরকার নাই। ফতে জংই হোক তোমার শেষ কীর্তি, কেমন?
বলে ইশারা করলেন সুলতান। সেই ইশারায় ওস্তাদের গলায় গভীর পোঁচ দিল বক্সী নজফ। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটল ওস্তাদের, কাঁপতে কাঁপতে ঢলে পড়লেন তিনি।
সুলতান আর তার বক্সী দুইজনেই খেয়াল করলেন মাটিতে পড়ে থাকা ওস্তাদ দুর্বলভাবে তার রক্তাক্ত জামার বুকের দিকে তাক করে কিছু একটা দেখানোর চেষ্টা করছে। তারা দুইজনে একবার মুখ চাওয়াচাওয়ি করলেন, তারপর বক্সী ঝুঁকে ওস্তাদের জামার ভেতরে হাত দিল। একটা চামড়ার বাঁধানো পাতলা খাতা। সুলতান সেটা হাতে নিয়ে দেখলেন তার উপর বড় করে লেখা, “ফতে জং কিল্লার গোপন সুড়ঙ্গ ও তৎসংলগ্ন কামরাদ্বয়”।
সুলতান বুরহানউদ্দিনের ঘন ভুরু মারাত্মক কুঁচকে গেল। গোপন সুড়ঙ্গের কোন নির্দেশ তিনি দেননি। কারিগর হারামজাদা গোপন সুড়ঙ্গ করেছে কোন মতলবে? ঠাণ্ডা মাথায় তিনি আবার জায়নামাজে বসলেন, আর খাতাটা খুলে পড়তে পড়তে বক্সীর দিকে না তাকিয়েই ইশারা করলেন।
বিনা বাক্যব্যয়ে কামরা থেকে সরে পড়ল বক্সী নজফ খাঁ।
“যদি এই খাতা আপনার চোখে পড়ে থাকে, তবে আমি এই মূহুর্তে আর জীবিত নই”, সুলতান পড়া শুরু করলেন খাতা, “এই কিল্লা গড়তে আমি যে সাত বছর ব্যয় করেছি তার প্রতি মুহুর্তে আমার মনে হত এই যে এত কাজ করছি, কেন করছি। কার জন্যে করছি। আরেকজনের কিল্লা গড়ে আমার সুখ কেন হয়?”
ওস্তাদের প্যানপ্যানানি দেখে একটু বিরক্ত হলেন সুলতান। পড়ে চললেন, “এই কিল্লাই হবে আমার শেষ কিল্লা, আমার মন বলছে। সেইজন্যই কি কাজ দীর্ঘায়িত হওয়ায় আমি তেমন দুঃখ পাইনি? হতে পারে। তবে সুলতান যদি আমায় খুন করে তবে আমারও সুলতানকে ধ্বংস করে যাবার ব্যবস্থা করা উচিৎ। সেজন্যই দুইটি গোপন কামরা সরাসরি যুক্ত করেছি আমি এক বিশেষ স্থানে, সেইখান থেকে সুড়ঙ্গ চলে গেছে নদীর পশ্চিম তীর বরাবর। শত্রুপক্ষ সরাসরি কিল্লার ভিতরে প্রবেশ করতে পারবে দলবল নিয়ে এতই প্রশস্ত সেই সুড়ঙ্গ”।
পরের পাতা ওল্টালেন সুলতান। অল্প অল্প ঘামছেন তিনি।
“সুড়ঙ্গের কথায় আসছি। আগে গল্প শোনাই। গল্প মনে পড়ছে আজ এই ক্ষণে। সুদূর ইস্ফাহানের গল্প। আমার পিতা সেইখানের বড় জহরতওয়ালা ছিলেন। আমি তখন ছোট। পিতার সাথে এক সফরে যাওয়ার সময় পিতা আমার হাতে এক সবুজ পান্না দেন। কি তার জ্যোতি, চোখ ঝিকিয়ে গিয়েছিল আমার। হঠাৎ আমার হাত থেকে পান্না ফস্কে পড়ে যায়, আর কোথা থেকে এক কুকুর এসে তা মুখে নিয়ে দেয় ছুট। আমি সেই কুকুরের পিছনে কতনা দৌড়ালাম, অযথাই। কুকুর আর পেলাম না। আমার সে কি কান্না, তখন পিতা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, কুকুর জহরত চেনেনা বাবা আমার। কুকুর কুকুরই।”
পাতা ওল্টালেন সুলতান। হাত অল্প কাঁপছে তার। এই সব কুকুর পান্নার কাহিনীর অর্থ কি? সুড়ঙ্গের হদিস কোথায়?
“সেই কথা আমার মনে গেঁথে গিয়েছিল। কুকুর জহরত চেনেনা। সে সবই কামড়ে ছিবড়ে নিতে চায়। জহরতের সমঝদার কুকুর নয়। গত আট বছরে আমি সুলতান বুরহানউদ্দিনকে খুব কাছে থেকে দেখেছি। চিনেছি। আমি বুঝেছি তিনি নিম্নশ্রেণীর কুকুর ভিন্ন কিছু নন। তিনি অযথাই দাসের আঙুল কেটে নেওয়ার হুকুম দেন পানির উষ্ণতা পছন্দ না হলে, নওরোজ এ আমীর ওমরাহদের স্ত্রী কন্যা তুলে নিয়ে হেরেমে ভরেন ইচ্ছেমত। এই কুকুর সুলতান জহরত চিনবেনা।"
রাগে দাঁত কড়মড় করলেন সুলতান। কতবড় সাহস, তাকে বলে কুকুর! তবে রাগের মধ্যেও একটু একটু অস্বস্তিতে মাথা ঝিমঝিম করছে সুলতানের। চিঠিটা খুবই অদ্ভুত। মনে হচ্ছে মরা মানুষ কথা কইছে তার সাথে। তিনি পরের পাতায় গেলেন।
“আমি জানি এই লেখা পড়তে পড়তে এখন সুলতানের মন অধীর হয়ে উঠছে জানার জন্য গোপন কামরা ঠিক কোথায়। গোপন কামরা সুড়ঙ্গ কিছু নেই। সেসব করার মত কাঁচা কারিগর আলি খাঁ নয়। তবে ভাববেন না, সুলতানকে ধ্বংস করার কথাটাও মিছে বলছিলাম।
সুলতানের একটা অভ্যাস আমি লক্ষ্য করেছি, বই পড়ার সময় তিনি পাতা ওল্টাতে গিয়ে জিভে আঙুল ঠেকিয়ে পাতা ওল্টান। তাই আমি এই খাতার পাতায় পাতায় কোণে ভয়ংকর জহর মাখিয়ে রেখেছি, সুলতান এতদূর যখন এসেছেন তখন সেই জহর তার পেটে অবশ্যই গিয়েছে। তার সময় ফুরিয়ে এল বলে”।
এতক্ষণে সুলতান বুঝলেন মাথা ঝিমঝিম, হাত অল্প কাঁপাকাঁপি, ঘাম হওয়া এগুলো উত্তেজনায় হচ্ছে না, বিষের আলামত। হঠাৎ করে দুনিয়া অন্ধকার হয়ে আসতে থাকল সুলতানের, ঠাস করে সামনে ঝুঁকে তিনি পড়ে গেলেন মাটিতে। তার হাত থেকে খাতা পড়ে গেল পাশে।
কোথা থেকে এক ঝলক হাওয়া এসে খাতার পাতা উলটে দিয়ে গেল। মারা যাবার পূর্ব মুহুর্তে সুলতান বুরহানউদ্দিন মুলক দেখতে পেলেন খাতার শেষ পাতায় বড় বড় অক্ষরে লাল কালিতে লেখা রয়েছে, “কিল্লা মুবারক!”
মন্তব্য
বাহ। বেশ ভালো লাগল পড়তে।
ধৈন্যবাদ বস.
..................................................................
#Banshibir.
পড়তে পড়তে আমিও ভাবছিলাম এইসব সুলতানদের কি আসলেই হাত কাঁপত ? উত্তর পেয়ে ভালো লাগলো। লেখা উমদা হয়েছে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হ এরা লোক সুবিধার না.
..................................................................
#Banshibir.
ভাল লাগলো
Adnan Abed
..................................................................
#Banshibir.
বরাবরের মতোই দুর্ধর্ষ ইতিহাস কথন। কিন্তু মনে হচ্ছে এরকম কাহিনী আরব্য রজনীর কোথা্ও হয়তো পড়েছি
বইয়ের পাতায় বিষ মাখায় মারা পুরানো ট্রিকস. আরব্য রজনীতেই আছে সম্ভবত, বা পারস্যের গল্পে. আমি মুজতবা আলীর লেখায় প্রথম পাইছিলাম.
..................................................................
#Banshibir.
মনে পড়ছে, মুজতবা আলীর ঐ লেখাটি আমিও পড়েছিলাম। নামটা মনে করতে পারছিনা।
শুধু আর্কিটেক্ট না পুরাই বস!
লেখায়
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
..................................................................
#Banshibir.
দুর্ধর্ষ লেখা।
খুব ভালো লাগল।
আপনার লেখার জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
আমিও আপনাদের মন্তব্যের জন্য আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি.
..................................................................
#Banshibir.
এইবার দেখি আলি সাহেবের পুরান গল্প মেরে দিলেন >> তবে আপ্নার বরননা ভাল আচে
ক্ষেপলেন ভাই?
..................................................................
#Banshibir.
গল্প ভাল লেগেছে। যাকে বলে উপাদেয়, মানে সুখপাঠ্য। কিন্তু ঘটনা অন্য যায়গায়, এই রকম এক কাহিনী ছিল আরব্য রজনীতে। তয় সেইখানে কারিগর ছিল না, ছিল হেকিম। ঘটমা কি কন্ত ?
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
ঘটমা সিম্পুল. ইস্ফাহানের কারিগর মনে হয় আরব্য রজনী থিকাই আইডিয়া পাইছিলেন.
..................................................................
#Banshibir.
আইডিয়া যেখান থিকাই আসুক, বহুদিন পর একটা গল্পটা পড়ার সময় অন্য কোন দিকে তাকানোর ইচ্ছা হয় নাই। এক নিশ্বাসে শেষ করছি এই গল্প। তয় চিন্তায় আছি, আমার ভাল লাগলে সেই মালের কোয়ালিটি নিয়া প্রশ্ন উঠতে পারে
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
আবার ঘি বিজিনেস?!
..................................................................
#Banshibir.
দারুণ!
শোনা কথা, সুতরাং কান দেয়া উচিৎ কিনা জানি না। যেসব কারিগর তাজমহল নির্মাণ করেছিল, সম্রাট শাহজাহানও নাকি তাদের হাত কেটে দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন।
থিবো সাহেবের রহস্যের সমাধান খুঁজে পেয়েছেন?
হুমম বাইশ হাজার কারিগরের চুয়াল্লিশ হাজার হাত কেটে দেওয়া হইছিল শোনা যায়. অতিশয়োক্তি সম্ভবত, তবে পুরা মিথ্যা হয়ত না. ঠিকঠাক জানার উপায় নাই কি হইছিল.
..................................................................
#Banshibir.
পীরসাব লোক্টা সুবিধার না! খালি এরা মারে তারে মারে!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
অরা অরাই মারামারি করে। ভায়োলেন্ট লুক সব।
..................................................................
#Banshibir.
পুরানো চাল ভাতে বাড়ে, আর সত্যপীরের রাঁধা ভাত হলে আরো বাড়ে!!
যতগুলো লেখা আর বর্ণনা পড়েছি এই কাহিনি নিয়ে (বইয়ের পাতায় বিষ মাখানো - সব মিলিয়ে বোধহয় ৫/৬টা গল্প হবে), তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে জোশ লাগলো। তবে আরেক সত্যপীরের লেখাটা পড়ি নি।
____________________________
ভাত রান্ধি রাইস কুকারে
গল্পটা লিখে আমি খুব মজা পাইছি, এরম মজা পাইছিলাম ফাঁসুড়ে লেখার পরে। নিজেরে নিজে দশে দশ দিছি
আরেক সত্যপীর নয় আসল সত্যপীর।
..................................................................
#Banshibir.
আপনার ঠাণ্ডা মাথার পোঁচগুলো অসাধারণ!
কড়িকাঠুরে
এক্কেরে কোল্ড ব্লাডেড। ভাসাভাসি কাণ্ড।
..................................................................
#Banshibir.
আপনার লেখা বরাবর-ই ভালো লাগে। একটা উপন্যাসে হাত দেবার দাবি জানালাম ।
-ভাবুক পাঠক
আপনেরা সত্যই মেহেরবান। গত কয় লেখাতেও বলছিলেন। আমি ছাপোষা চাকুরে সপ্তায় সাড়ে পাঁচ দিন দশ ঘন্টা কাজ করে ঘুম বাদ দিয়ে বসে বসে তাড়াহুড়ায় লিখি, এভাবে সিরিয়াস উপন্যাস হয় নাকি? একদিন লম্বা সময় নিয়ে ব্যাপক গবেষনা করে লিখতে পারলে তখন বড় গল্প বা উপন্যাস করার কথা ভাবা যাবে।
আপাতত অনেকগুলি গল্পের প্লট আছে, অনেকগুলি। দেখেন ভালো লাগে কিনা...
..................................................................
#Banshibir.
এক কাজ করেন। আপাতত কয়েকটা গল্প জোড়া লাগায়ে একটা 'উপন্যাসিকা' (novella) লিখে ফেলেন। এইটা গল্পের চেয়ে বড়, কিন্তু উপন্যাসের চেয়ে অনেক ছোট। বেশি গবেষণা লাগবে না, আর ঘুমেও বেশি ব্যাঘাত ঘটবে না বলেই আশা করি। আপনার কাছে থাকা 'অনেকগুলি গল্পের প্লটের' মধ্যে কয়েকটারে জাস্ট টেপ দিয়া জোড়া লাগায়ে দ্যান, তাহলেই হবে। আপ্নেও খুশি, পাঠকও খুশি। এক কথায় - সাপও মরল লাঠিও ভাঙলো না!
ভাল বুদ্ধি না? ম্যায় মেহেরবান হুঁ, ম্যায় মেহেরবান... ♪♫
****************************************
টেপ ক্যামনে দিমু ভাবতেছি। পাত্রপাত্রীর নাম এক দিয়া গল্পগুলা লিখলে সাদা চোখে সবগুলা একই গল্প মনে হইতে পারে অবশ্য
..................................................................
#Banshibir.
পীরবাবা, পড়তে পড়তে খালি লালবাগ কেল্লার কথা খেয়াল হইতেসিলো। ম্যালা উপাদান কমন পড়সে তাই কী না বুঝলাম না। সুড়ঙ্গ আর জহরত আসাতে মনে করসিলাম সুলতানরে সুড়ঙ্গে গোলকধাঁধায় ফেলে মারবেন। কিসের কী, চা খাবার সময় হওয়াতে মনে হয় অল্পতে (বিষ দিয়ে) শেষ করে দিলেন।
সুলতান না মরলে মেজাজ বিলা হয়ে থাকত। মাইরা দিলেন দেইখ্যা
আরেকটা কথা, ভালো না লাগলে বা সময় না করে উঠতে পারলে উপন্যাস লেখায় হাত দিয়েন না। ইতিহাসের ফ্যান্টাসি নিয়া ছোটগল্প লেখার মানুষ-জন এমনেই নাই। আপনে এই কাজটা অনেক ভালো করেন। তাই এই উমদা কার্য চালিয়ে যাবার পক্ষে আমি ভেটো দিলাম।
---- মনজুর এলাহী ----
আপনে পাষাণ।
ছোটগল্প চলব ছিন্তা নাই। ধন্যবাদ বস।
..................................................................
#Banshibir.
এবারের গল্পটা দুর্ধর্ষ হয়েছে, এক বৈঠকে রুদ্ধশ্বাস পাঠ! তবে এখন মনে হচ্ছে সুলতান বুরহানুদ্দিনকে সাইজ করার জন্য অন্য কোন বন্দোবস্ত করা দরকার ছিল, কারন টেকনিকটা দেখা যাচ্ছে আমি সহ পাঠকদের অনেকেই আগে থেকে জানতেন। পুরান টেকনিক ব্যবহার করায় কেউ কেউ হতাশ, নতুন কোন টেকনিক হইলে হয়তো উত্তেজনা চরম হইত।
আচ্ছা, নির্মাণ কারিগরকে ফিনিশ করে দেয়ার তথ্য আসলে কতটা নির্ভরযোগ্য? আসলেই কি তেমন কিছু ঘটতো? আমার তো মনে হয় পুরাই গালগপ্পো। তেমনটা হলে কেউ কি এ পেশায় আসতে চাইতো?
আমি পড়া জিনিসই লিখি, মাথা থেকে জব্বর আইডিয়া আমার তেমন বাইর হয় না। পুরান ট্রিক্স আমি আগেও ইউজ করসি, যেমন ফাঁসুড়ে গল্পে নবাব পাউরুটির মতন নান আর জেলির মতন তরকারি দিয়ে যে ধোঁকা দিছিল সেইটা সত্যই লখনৌ এর নবাব করছিল। আমি বানায় বানায় লিখিনাই। ঐ আরকি।
কারিগর ফিনিশ করার তথ্য নাই, সবই গল্প। তথ্য কেউ রাইখা যায় নাই। তবে ঘটনা সবই মিছা না, এরকম হইত। মানুষের মুখে মুখে একটু বাড়ায় বলা হইত এই আর কি।
কিল্লা গড়ার আর্কিটেক্ট বিরাট সম্মানের পেশা আছিল, অবশ্যই মানুষ এই পেশায় আসতে চাইত। আজকের মতন দুনিয়ার হাইরাইজ তো নাই, কিল্লা ইমারৎ হইত আর কয়টা। জ্ঞানীগুণী মানুষ এই কাজের জন্য লাইন দিত। আপনের আমার মতই তারা হয়তো গল্প শুনত, কিন্তু নিশ্চিত কইরা তো আর কেউ বলত না যে এইটা করলে কল্লা যাইব। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে কল্লা যাইতও না।
এই দেখেন এক মোগল কারিগরের ছবিঃ
..................................................................
#Banshibir.
যাচ্চলে। শেষে এসে পুরান প্লট দেখে মনে হল পীরবাবা ফাঁকি দিছে।
একবারে ঝাঁ চকচকে প্লট দিতেছি খাড়ান। স্ট্যান্ডাপ।
..................................................................
#Banshibir.
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
..................................................................
#Banshibir.
পুরান প্লটের কারণে এট্টুস অপ্রাপ্তির বোধ রয়ে গেল। কিন্তু, গল্প এগিয়েছে একেবারে ঝকাস! আর প্রতিশোধ নিতে পারানোটা বেজায় পছন্দ হৈচ্চে!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
এনাইফরেনাই!
..................................................................
#Banshibir.
অসহ্য রকমের ভালু লাগলো! ফাঁসুড়ের পর আরেকটা মারাত্মক গল্পের জন্য
ঠগী বইটা শেষ করেছি। আপনি ওটা ১৯৪৫ এ পড়েছেন জানি তাদের নিয়ে লিখেছেন নাকি?
মানে স্লীম্যান আর ফিরিঙ্গীয় চরিত্র নিয়ে? লিখে না থাকলে লিখবার আবদার জানিয়ে রাখলাম।
এবারে আপনার উপন্যাস লেখাটা ফরজ কিন্তু। ভয় পাওয়ার কিছু নেই, উপন্যাস পাঠ শেষে দুষ্টু নবাবের মত কতল করা হবে না
ইয়ে, ভীষন নয় ভীষণ
স্লীম্যান ফিরিঙ্গি নিয়া লেখার প্ল্যান আপাতত নাই। তবে ঠগী আবার আসবে আমার গল্পে। ঠগীদল বড় জব্বর জিনিস।
গল্পটা লিখে আমিও খুব আরাম পাইছি
ভীষন পাইলেন কই?
..................................................................
#Banshibir.
আরে একি রে! ভীষন দেখছিলাম তো!!!
আপ্নে তো লুক সুবিধার না গল্পের চরিত্রের মত শব্দটারে হাপিশ করলেন কিনা কন
বেপার না, 'ভীষন' নাই তো কী হলু, 'গবেষনা' তো আছে ঠিক্করেন ঠিক্করেন
কন্ট্রোলেফ দিয়া ভীষন খুইজাই পাইলাম্না
নিম্নমানের গবেষণাকে গবেষনা বলা হয়। হ।
..................................................................
#Banshibir.
যথারীতি ঘটনার মূল পাত্ররা এবারও পরোলোকগমন করল।
ভাবছি, যেসব আর্কটেক্ট বন্ধু-বান্ধব আছে তাদেরকে এই লেখাটা ফরোয়ার্ড করে একটু ভয় দেখিয়ে দিই।
অবশ্য, আজকাল আর এরকম সুলতানই বা কই?
শুভেচ্ছা
জম্মমিত্যু আল্লার হাতে ভাই। আমি যা দেখি তাই লিখি
..................................................................
#Banshibir.
একটা পুরোনো প্লট কে আরেকটা পুরোনো বোতলে ভরে দারুন পরিবেশন করেছে। দু তিনটে পুরোনো মিথ একসাথে চমত্কার গল্পের রূপ পেয়েছে। কেল্লার বররননা ফাটাফাটি।
ঈপ্সিত আর চম্পাকলি
---------------------------------
বোলতা কহিল, এ যে ক্ষুদ্র মউচাক,
এরি তরে মধুকর এত করে জাঁক!
মধুকর কহে তারে, তুমি এসো ভাই,
আরো ক্ষুদ্র মউচাক রচো দেখে যাই।
--------------------------------------------
বাহ! এতদিন পর আপনারা! অনেকদিন হল আপনাদের লেখা পাচ্ছি না।
(আপনাদের কোথাও না পেয়ে এখানে বলে গেলাম)
শুভেচ্ছা
ধইন্যবাদ ধইন্যবাদ। আছেন ভালো?
..................................................................
#Banshibir.
আলিফ লায়লাতে দেখেছিলুম হে পীর সাব। তবে ওইখানে ছিল হেকিম। বর্ণনা সত্যপীরিয়...
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
আপনেও উদাসীয় বান্দর প্রোপিক নিছেন?
..................................................................
#Banshibir.
বান্দর ভালু পাই।
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
আপনার লেখা দারুন লাগে। আপনি প্লিজ বই বের করেন। বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে এইসব বই পড়ার মজাই আলাদা।
ইসরাত
কাগজের বই? গোটা পঞ্চাশ গল্প হইলে ইবুক করব একটা ঠিক করসি ভাই। দোয়া খায়ের কইরেন। কাগজের বইয়ের কোন প্ল্যান নাই।
..................................................................
#Banshibir.
এই গল্প একবার দেখে পড়ি নাই, তারপর আর খুঁজে পাই না ! আজকে সফল হলাম
মারাত্মক - সব অর্থে!
অতএব পরেরবার দেখলেই ঝাঁপ দিয়া পড়বেন। কখন কি হারায় যায় কুনু ঠিকনাই।
..................................................................
#Banshibir.
থিবো মুবারক
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
খুব ভালো গল্প পীরবাবা।
চেনা ঘটনা, তবুও পড়তে ভালো লাগলো অনেক।
ভালো থাকবেন।
শুভেচ্ছা নিরন্তর।
-------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
নতুন মন্তব্য করুন