ভেনিশিয়ান পর্যটক নিকোলাই মানুচ্চি আমাদের ইন্টারেস্টিং একটা গল্প বলে গেছেন। ১৬৬০ সালের কথা, আওরঙ্গজেব তখন সদ্য গদিতে। পিতা শাজাহান জেলের পুলাউ খাচ্ছেন শুকনা মুখে। পূর্বপুরুষ আকবর বাদশা একটা অলিখিত নিয়ম করে গিয়েছিলেন যে পারস্য থেকে বিপদে পড়ে কেউ দিল্লীতে আসলে তাকে তাড়িয়ে দেয়া চলবে না, আদর করে মনসবদার টাইটেল দেওয়া হবে আর কাশ্মীরে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। তার পিতা হুমায়ূন ভারত থেকে শের শা এর লাথি খেয়ে পারস্যে পালিয়ে কিছু আদর সোহাগ পেয়েছিলেন বলে সম্ভবত পুত্র আকবরের এই পাল্টি ব্যবস্থা।
আওরঙ্গজেব গদিতে আসতে আসতে কাশ্মীরে এইসব মনসবদারের বাজার বসে গিয়েছে। চতুর্দিকে রেফ্যুজি মনসবদার। নিজেদের কেউ অক্কা পেলে বাকী সকলে নাকি তার পয়সা মেরে খেত। সরকারকা মাল টাইপ ব্যাপার। এই সব দেখে আওরঙ্গজেব হাত তুলে কইলেন, ওকে অডিট টাইম। কাশ্মীরে কে কে আছ মনসবদার আমার দরবারে এসে চেহারা দেখাও, নইলে মনসবদারী খুদাপেজ।
শোনামাত্র লাইন দিয়ে কাশ্মীর থেকে সকল মনসবদার এলেন আওরঙ্গজেবের দরবারে, আর মানুচ্চি এইখানে দেখা পেলেন পাওলো মুহম্মদ জামানের।
পারস্যের রাজা শাহ আব্বাস তার যৌবনে একদল পারসিককে রোমে পাঠান শিক্ষানবিশ হিসেবে। পারস্যে তখন খ্রিস্টান মিশনারির দল স্থানীয় মোল্লা মৌলবি হেকিম এদের সাথে খালি ধর্ম নিয়ে বাজে তর্ক করছে। শাহ আব্বাস ঠিক করলেন আচ্ছা আমিও পাল্টি দল পাঠাই এদের দেশে, যা সোনার ছেলেরা আমার কিছুমিছু শিখে আয় যাতে এইসব মিশনারিদের উচিৎ জবাব দেওয়া যায়। সেই সোনার ছেলেদের একজন মুহম্মদ জামান, যে কিনা রোমে গিয়ে (মানুচ্চির মতে) সত্য ধর্ম খুঁজে পায় এবং ধর্ম পাল্টে খ্রিস্টান হয়ে যায়। নতুন নাম নেয় সে পল, বা পাওলো। নিজেকে সে ডাকা শুরু করে পাওলো জামান। তারপরে সে পারস্যে ফিরে গেলে লোকে তার কথাবার্তায় বুঝে ফেলে কোথাও ঘাপলা হ্যাজ, এই ছেলে আর মুসলমান নাই। অতএব মোল্লারা তার পিছনে লাগে আর পাওলো দেয় পুবদিকে দৌড়, ভারতের গদিতে তখন শাজাহান। বাদশা দুই হাত তুলে কইলেন আইস হে, হও মনসবদার যাও কাশ্মীর। থাকো সুখে।
এই হল মানুচ্চির গল্প। পারস্য টু রোম টু পারস্য টু দিল্লি টু কাশ্মীর। খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত এক শিয়া মুসলমানের কাহিনী। মানুচ্চি এটুকুই বলে গেছেন, ইংরেজি তর্জমায় একটা ফুটনোট আছে পড়ি আসুন। কারণটা একটু পরেই খোলাসা হবে। অনুবাদক ফুটনোটে বলছেন, “এখানে কোন শাহ আব্বাসের কথা হচ্ছে তা পরিষ্কার নয়। পয়লা শাহ আব্বাস রাজত্ব করেন ১৫৮৭ থেকে ১৬২৯, অন্যজন ১৬৪২ থেকে ১৬৬৭। এই শিক্ষানবিশ দলের রোম ভ্রমণের প্রমাণ আমি কোথাও পাইনি, পশ্চিমা বা প্রাচ্য কোন উৎস থেকেই। প্রথম শাহ আব্বাস ১৬০৬ সালের দিকে রোমে পারসিক পাঠান বটে, সেই দলের একজন ধর্মান্তরিত হয়ে ডন জন নামে বইও লিখে গেছেন। কিন্তু মানুচ্চির ঘটনা আরো পরের, ১৬০৬ এর দলের কথা তিনি বলছেন না মনে হয়। এ জি এলিজ মনে করেন মানুচ্চির মুহম্মদ জামান সম্ভবত বিখ্যাত পারসিক চিত্রকর মুহম্মদ জামান, যার আঁকা ছবিতে ইয়োরোপীয় ছাপ সুস্পষ্ট। মুহম্মদ জামান হয়তো শাহ আব্বাসের মৃত্যুর পর আবার পারস্য ফিরে গিয়েছিলেন।”
এ জি এলিজ এইভাবে ১৯০৭ সালে বলেন মানুচ্চির পাওলো জামান মে বি ইক্যুয়াল টু পারসিক চিত্রকর মুহম্মদ জামান। মে বি। হয়ত। পাওলো জামানই পারসিক রাজচিত্রকর মুহম্মদ জামান তা তিনি বলেননি, কিন্তু পরে এলিজের এই কথা চাউর হয়ে যায় যে পাওলো জামানই মুহম্মদ জামান।
মুহম্মদ জামান কে? সাফাভিদ শাসক শাহ সুলায়মান (১৬৬৬-৯৪) এর রাজদরবারের উত্তম চিত্রকর ছিলেন এই মুহম্মদ জামান, যিনি নিজেকে বলতেন মুহম্মদ জামান ইবনে হাজি ইউসুফ, অর্থাৎ হাজি ইউসুফের পুত্র মুহম্মদ জামান। তার চিত্রকলায় পশ্চিমা ধাঁচ দেখা যায়। পারস্যের কবি নিজামি গজনভি দ্বাদশ শতাব্দীতে লিখে গেছেন খামসা (পঞ্চপদী), সেইটে অবলম্বনে পুঁথি হয় শাহ তামাস্পের আমলে (১৫২৪ - ৭৬)। এই শাহ তামাস্পই মোগল বাদশা হুমায়ুনকে খেতে পরতে দিয়েছিলেন ভারত থেকে বিতাড়িত হবার পর। যাই হোক, মুহম্মদ জামান ১৬৭৫/৭৬ এর দিকে এই পুঁথির রিমিক্সের কাজে হাত দেন। মূল পুঁথি কপি করার পাশাপাশি তার নিজস্ব কাজের স্বাধীনতাও ছিল।
খামসার কপি থেকে মুহম্মদ জামানের একটি ছবি :
অতএব ভারতের মনসবদার পাওলো জামান ১৬৬০ সালে মানুচ্চির সাথে দেখা করেন, আর ১৬৭৫ এ পারস্যে ছবি আঁকেন। জামান সাহেব ভারত থেকে আবার পারস্যে ব্যাক করেছিলেন তাহলে? মানুচ্চির লেখায় তা জানা যায় না। অসম্ভব নয়। যাহোক, এ জি এলিজ এর মত পরে সবখানে চালু হয়ে যায়, মুহম্মদ জামানই যে পাওলো জামান তা প্রতিষ্ঠিত সত্য হয়ে যায়। নিকোলাস মার্টিনোভিচ ১৯২৫ সালে একটি আর্টিকেল লেখেন যেখানে মানুচ্চির বর্ণনার সাথে আরো বলা হয় যে জামান শাজাহানের কাছে নিরাপত্তা চান আর পরে তার খাতির হয় শাজাহানের বড় ছেলে দারা শুকোর সাথে। দারার সাথে খ্রিস্টানদের তখন খুবই গলাগলি ও জড়াজড়ি। অতএব দারাকে নিকেশ করে আওরঙ্গজেব যখন গদিতে বসেন তখন জামান ভারত ছেড়ে আবার পারস্য পালাতে বাধ্য হন। বিধর্মীর প্রতি আওরঙ্গজেব এমনিতেই বেরহম ছিলেন। মার্টিনোভিচের মতে জামান দেশে পালিয়ে পুনরায় মুসলমান ধর্মে ফিরত যান।
পাঠক অশোক মিত্রের “ভারতের চিত্রকলা” (প্রথম খণ্ড) বইটা পড়া থাকলে ১২৯ পাতায় দেখুন চিত্রকর পাওলো ওরফে মুহম্মদ জামানের উল্লেখ আছে।
কথা হল, যে মানুচ্চির বই থেকে এই কাহিনীর উদ্ভব সেই মানুচ্চি কিন্তু আদৌ বলেননি পাওলো জামান চিত্রকর ছিলেন। মানুচ্চি মোগল ছবি নিয়ে বিস্তর কথা বলে গেছেন এবং ছবির সমঝদারও ছিলেন, তিনি পাওলোকে আমাদের সাথে চিত্রকর হিসাবে কেন পরিচয় করিয়ে দিলেননা সেইটা একটা ধোঁকা বটে। মানুচ্চির তথ্যমতে পাওলো ছিলেন মনসবদার, শাজাহানের আমলে। এম আতহার আলির “অ্যাপারেটাস অফ দি এম্পায়ার” বইয়ে আকবর থেকে শাজাহান পর্যন্ত প্রায় সকল মনসবদারের নাম এবং ধাম আছে। শাজাহানের আমলে মোট ছয়জন মুহম্মদ জামান পাওয়া যায়। তার মধ্যে দুইজন তুরানী আর একজন আফগান। আরেক মুহম্মদ জামানের বাড়ি জানা যায়না তবে সে ব্যাটা ১৬৪৮ সালেই অক্কা পেয়েছিল, অতএব একেও হিসাবের বাইরে রাখা যায়। বাকি দুইজন ইরানের, মুহম্মদ জামান তেহরানি আর মুহম্মদ জামান তুরবাতি। তেহরানি মরেছে ১৬৫১ এ আর তুরবাতির ইন্নালিল্লা ১৬৫৬ সালে।
তাহলে মনসবদার মুহম্মদ জামান গেল কই? মানুচ্চি কি চাপা মেরেছিলেন? ভাইসাহেব চাপাবাজ ছিলেন বলে অনেকে সন্দেহ করে বটে, তবে পাওলো জামানের গল্প পুরা মিথ্যা না ও হতে পারে। হয়তো পাওলো মনসবদার ছিলেন না, হয়তো তিনি সরকারি ভাতা পেতেন। সেইক্ষেত্রে আতহার আলির বইয়ে তার নাম থাকবে না।
এই জামানঘটিত গিয়াঞ্জাম প্রথম খেয়াল করেন ১৯৬২ সালে এ এ ইভানভ। তিনি সপ্তদশ আর অষ্টাদশ শতাব্দীতে জীবিত মোট উনিশজন পারসিক মুহম্মদ জামানকে বের করেন, এদের কারোরই কোনদিন ভারতে আসার আলামত পাওয়া যায় নি। এইটা ইভানভের একটা তরিকা এই জামান সেই জামান কিনা বের করার। তিনি আরেকটা তরিকা অনুসরণ করেন, মুহম্মদ জামানের ছবিতে রোমান আঁকার স্টাইলের ছাপ পাওয়া যায় কিনা তা পরীক্ষা করেন। মানুচ্চির তথ্যমতে শাহ আব্বাস জামানকে রোম পাঠিয়েছিলেন। আগেই বলেছি মুহম্মদ জামানের ছবিতে ইয়োরোপীয় ছাপ সুস্পষ্ট, কিন্তু ইভানভ বলছেন সেই ধাঁচ ঠিক রোমের নয় বরং ফ্লেমিশ ধাঁচের। মুহম্মদ জামান রোমে ছবি আঁকা শিখে থাকলে দুই চারটা ইটালিয়ান ছবির কপিও থাকার কথা।
তিনি যে পুর্বে খ্রিস্টান ছিলেন এই কথাও কোথাও পাওয়া যায় না। বরং এক জায়গায় জামান তার নিজের নাম সই করেছেন এই নামে “হাজি মুহম্মদ বিন হাজি ইউসুফ”। হাজির ছেলে হাজি। সুতরাং এই দাঁড়াল যে তিনি ভারত থেকে পালিয়ে পারস্যে ফিরে গেছেন, খ্রিস্টধর্ম ছেড়ে আবার মুসলমান হয়েছেন এবং এর মধ্যে হজ্জ্বও করেছেন। ব্যস্ত জীবন। তবে আরেক বিশেষজ্ঞ (যিনি মনে করেন পাওলো জামানই মুহম্মদ জামান) দেখিয়েছেন এই হাজি মুহম্মদ সেই হাজি মুহম্মদ না, এই সই যার সেই চিত্রকরের নাম মুহম্মদ ইব্রাহীম, যিনি হাজি ছিলেন সত্যই। খামসা পুঁথিতে তার কাজও আছে। তবে সমস্যা হল হাজি ইব্রাহীম নাম সই করার সময় হাজি লিখতেন না।
নাম সই করার ব্যাপারে মুহম্মদ জামান ছিলেন মহা খেয়ালী, কিছু কিছু চিত্রে তিনি মুহম্মদ বাদে শুধু জামান লিখতেন। সই দেখে জামান চেনা কঠিন।
অতএব প্রিয় পাঠক প্রতারিত হইবেন না, আদি ও আসল পাওলো জামান যাচাই করে নিন।
তথ্যসূত্রঃ
১. আহসান জান কায়সার, “Muhammad Zaman: A 17th Century Controversial Artist”, Art and Culture: Endeavours in Interpretation, Volume 2, 1996.
২. টমাস আর্নল্ড, “Painting in Islam: A Study of the Place of Pictorial Art in Muslim Culture”, 2004.
৩. সঞ্জীব প্রসাদ শ্রীবাস্তব, “Jahangir: A Connoisseur of Mughal Art”, 2001.
৪. এমি ল্যান্ডো, “FROM POET TO PAINTER: ALLEGORY AND METAPHOR INA SEVENTEENTH
CENTURY PERSIAN PAINTING BYMUHAMMAD ZAMAN, MASTER OF FARANGI SĀZĪ”, 2011.
৫. নিকোলাস এন মার্টিনোভিচ, “The Life of Mohammad Paolo Zaman, the Persian Painter of the XVIIth Century”, 1925
৬. এ এ ইভানভ, “The Life of Muḥammed Zamān: A Reconsideration”, 1979.
মন্তব্য
বাহ , বেশ গোলমেলে তো !
facebook
দুনিয়াটাই গোলমেলে।
..................................................................
#Banshibir.
সেই সময় ও রিমিক্স হইতো নাকি!!! তাও আবার পুঁথির !!
পুরান জিনিস কপি করতেছে আবার নিজের স্টাইল যোগ করতেছে, রিমিক্সই তো হইল
..................................................................
#Banshibir.
জামানীয় ক্যাঁচাল পড়ে তো মাথা ঘুরাইতেসে
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
হ, জিলাপির প্যাঁচ বাগধারা পাল্টায় জামানের প্যাঁচ নাম দেওয়া উচিত।
..................................................................
#Banshibir.
কি প্যাচাল!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
আসল নকল যেকোন জামানরে হাতের কাছে পাইলে দিতাম প্যাঁদানি।
..................................................................
#Banshibir.
প্যাচে ফালায় দিলেন
ক্যাটেগরি দেওয়া উচিত ছিল "জিলাপি পোস্ট".
..................................................................
#Banshibir.
****************************************
মোগলাই মেজাজে আছি, আপনে আমারে ফোক গান শুনাইলেন আমিও আপনেরে পার্সিয়ান ফোক মিউজিক শুনাইঃ
..................................................................
#Banshibir.
আপনের পার্সিয়ান ফোকটা জোস্ হইছে! এইরকম দারুন জিনিস আমি আগে খুব একটা শুনি নাই কেন ভাবতেই অবাক লাগতেছে।
আমি অবশ্য আপনারে বাংলাটা অত বিশুদ্ধচিত্তে শুনাই নাই। আপনেরে এশিয়া-ইউরুপ দাপায়ে দেশ-বিদেশ ঘুরে এক পাওলো মিয়াঁরে হারিকেন নিয়া এত্ত খুঁজাখুজি করতে দেইখ্যা এই গানটার কথা মনে অইসিল আরকি।
****************************************
মোগল ফৌজের উপরে একটা ভিড্যু ব্লগ হাফ ফিনিশ পইড়া আছে, ঐটার জন্য একটা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক খুঁজতে গিয়া এইটা পাইছিলাম। বেশ ভালো জিনিস।
..................................................................
#Banshibir.
জামানের তত্তানুসন্ধানে গিয়া তালাশ টিমের তো মাথা ঘুরায়, বাদ দেন! খামসা থেকে মুহম্মদ জামানের কপি করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে "তাহারা ছাদনি রাতে ছাদে বসিয়া ছঙ্গিত ছোনে", আহা কি সুখের জীবন!
ছবিতে নিচে বাঁয়ে মুখ লুকানো বালিকা (বালক?) এর দিকে খেয়াল করেন। এইখানে ক্লোজ আপ দিলামঃ
ফার্সিতে এই কথা লেখাঃ "মনোরম আশরাফ নগরে নগণ্যতম সেবক মুহম্মদ জামানের হাতে [স্বাক্ষরিত] ১০৮৬ সালে"। ১০৮৬ হিজরি সাল, আমাদের ক্যালেন্ডারে ১৬৭৫/৭৬ হবে। কি চমৎকার ছবি স্বাক্ষরের কায়দা, কে এঁকেছে কবে এঁকেছে এবং কোন শহরে আঁকা সবই বোঝা গেল।
..................................................................
#Banshibir.
বাবারে আপনি ফার্সি-টারসিও পারেন!
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
নাহ ফার্সি পারিনা, ইংরেজি বইয়ে পাইছি। ফার্সি শিখা লাভ নাই বেশিরভাগই ইংরেজিতে পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে ওলন্দাজ বা ডেনিশ সুইডিশ ভাষা শিখি, এই ভাষায় তাদের ইস্ট ইন্ডিয়া ট্রেডের অনেক পুঁথির আর চিঠিপত্রের ইংরেজি তর্জমা নাই
..................................................................
#Banshibir.
হ, পীর মানুষ এট্টূ উর্দ্দু-ফার্সী পারতেই পারে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মজা লাগলো। দারুণ সব গল্পের প্লট হতে পারে এগুলো নিয়ে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
মাথার মধ্যে প্যাঁচ লেগে গেলো যে পীরসাব!!
____________________________
বাদ দেন।
..................................................................
#Banshibir.
মানুচ্চি স্যারের অল্পস্বল্প মিছা কথা কওয়ার অভ্যেস আছে। 'পাওলো' নামটা তাঁর উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা হতে পারে।
'মুহম্মদ জামান' নামটাই সন্দেহজনক। প্রথমত, পারিসিক মুসলিমরা সাধারণত ফারসী-আরবী মিক্সড ধরনের অথবা পুরো ফারসী নাম রাখে। একই কাজ তুর্কীরাও করে। দ্বিতীয়ত, 'মুহম্মদ জামান' নামটা আরবীতে অসংলগ্ন অর্থ বহন করে। খেয়াল করলে দেখবেন 'জামান' শব্দটা অন্য কোন বিশেষ্য/বিশেষণের সাথে যুক্ত হয়ে একটা একক অর্থ প্রকাশ করে। শুধু মুহম্মদ জামান নামের কাউকে সম্ভবত আমরা চিনি না। তৃতীয়ত, ইউরোপ প্রভাবিত শিল্পকর্ম সৃষ্টিকৌশল শেখার জন্য কারো ইউরোপে যাওয়াটা আবশ্যক নয়। ঐ আমলে যত পারসিক ইউরোপে গেছে তার চেয়ে ঢেড় বেশি ইউরোপীয় পারস্যে এসেছে। তাদের দলে দুই/চারটা শিল্পী থাকাটা অসম্ভব কিছু না।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
খাঁটি কথা, পারস্য তখন গিজগিজ করছে ইয়োরোপীয় ছবি ও আঁকিয়ে দিয়ে। ইয়োরোপীয় স্টাইল শেখার জন্যে পারসিকদের মোটেই রোম যাওয়ার প্রয়োজন ছিলনা। এছাড়া ইভানভ এবং আরেক পণ্ডিত এমি ল্যান্ডো দেখিয়েছেন জামান সায়েবের স্টাইল রোমান নয় ফ্লেমিশ ধাঁচের। তাদের অনুমান জামান ইয়োরোপীয় কোন ফ্লেমিশ ঘরানার চিত্রকরের কাছে অধ্যয়ন করেছেন অথবা এমন গুরুর কাছে নাড়া বেঁধেছিলেন যিনি ফ্লেমিশ ছবির স্টাইল ফলো করতেন। এতোদিন পরে আমাদের আর এই ব্যাপারে জানার উপায় নাই।
..................................................................
#Banshibir.
বিয়াপক গিয়ানজাম দেখা যায়।
হ মিয়াভাই। ভুল সবই ভুল। জীবনের পাতায় পাতায় ইত্যাদি।
..................................................................
#Banshibir.
আহাহা, কি ঝামেলা!
জটিল দুনিয়া।
..................................................................
#Banshibir.
বাপ্রে
[ ইটা থোয়া লাগে নাই এই খুশিতে বগল বাজায়া ফুটি... ]
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনেদের ইটা দিয়া ঘর তুলুম একদিন।
..................................................................
#Banshibir.
পুরাই ভুলভুলাইয়া!
এরে নিয়ে জানার আগ্রহ কেন হইল আপনার সেটা জান্তে মঞ্চায়
ছবি নিয়ে গুঁতাইতেছি, রাজা চোগান সিং এর ছবি চুরি গেছে। সেইটার খোঁজে বের হইতেছে দুঁদে স্পাই কবুতর ফারুক। চিনেন নাকি এদের?
..................................................................
#Banshibir.
চোগান সিংয়ের নিরাপত্তা বেবস্হার এরাম বেহাল অবস্হা ক্যান!
আবার জিগায় আরেকখান চ্রম গপ লিখতেছেন নাকি আম্রার হিরুকে নিয়ে?
অপেক্ষায় থাকলাম তাইলে
আমার মাথা চক্কর দিয়া উঠলো। বাপরে!
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
একটু লেবুর শরবৎ খান দিকি। মাথা ঠিক রাখা জরুরি।
..................................................................
#Banshibir.
শরবতি লেবুর শরবৎ লইয়া বইলাম। খাইতে খাইতে তরিবৎ কইরা আবার পড়ি।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমিও কয়েকবার পড়ছি কিন্তু আদি ও আসল পাওলো জামান খুঁইজা পাইলাম না। আপনে পাইলে জানায়েন।
..................................................................
#Banshibir.
"তার মধ্যে দুইজন তুরানী আর একজন আফগান" - বস ঐ টাইমে তুরানী আসবো কইত্থেইকা? দরিয়ার ঐপারেও তো ইরান। নাকি ফারঘানা বুঝাইলেন? যাউগ্গা, এদেরকে গোনায় ধরলেন না কেন?
মধ্য এশিয়াই ধরা হইছে সম্ভবত। এই হিসাব আমি পাইছি আহসান জান কায়সারের বইয়ে (সূত্রে আছে), তিনি মুহম্মদ জামান ফ্রম তুরান বা আফগানিস্তান বাদ দিছেন কারণ মানুচ্চির মতে পাওলো জামান পারস্যের। শাহ আব্বাসের আমলে দরিয়া পাড়ের তুরান কি পারস্যই ধরা হইত?
..................................................................
#Banshibir.
পোষ্টার হেডিং পইর্যা চিন্তা করলাম পাওলো জামান কেম্ন্যে হয়, থাউক পইর্যার দেহি মাগার পইর্যাড পুরাই আউলা হইয়্যা গেলাম।
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
জটিল দুনিয়া মিয়াভাই।
..................................................................
#Banshibir.
জামানের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের বুঝতে হবে- এই কাদের মোল্লা সেই কাদের মোল্লা নয়, এই সাঈদী সেই সাঈদী নয় ...
আমি আগেই বুচ্ছিলাম। তাই পাওলো জামানের পরের পর্ব লিখতেছি "সোনা পাখি সাঈদী", পড়লে পরে সাঈদী তো সাঈদী সোনা পাখিই কোনদিন ছিল কিনা তা নিয়ে ধন্দে পইড়া যাবেন।
..................................................................
#Banshibir.
সাধ কইরা ছেলাম যে, 'এই জামান সেই জামান না' কইয়া কমেন্টামু, আইয়া দেহি ও মনু, হে হান্দাইয়া দেছে।
কড়িকাঠুরে
জামান নিয়ে মানুচ্চি যে বড়ই গোল পাকিয়ে রেখেছেন সেইটা পুরাই মানুচি।
আপনার লেখা পড়বার যে মজাটা আছে সেটা আপনার লেখাকে বার বার পড়িয়ে নেয়। এই লেখাও তার ব্যতিক্রম নয়।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আমিও কয়েকবার পড়লাম কিন্তু আদি ও আসল পাওলো জামান পাইলাম না
..................................................................
#Banshibir.
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
যা বুঝলাম তা হইল মিস্টার জামান লাইফটা দৌড়ের উপরেই শেষ করছেন, আর উনি ছবি ভালোই আঁকতেন।
কোন জামান?
..................................................................
#Banshibir.
শুধু ছবিটাই দেখে বুজলাম ভাল ছবি আঁকতেন। বাকিসব মাথার উপর দিয়ে গেল।
জট পাকানো ঘটনা বটে।
..................................................................
#Banshibir.
বাপ্রে!!
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন মন্তব্য করুন