বোম্বাই, ১৬০৭। ইংরেজ সওদাগর র্যালফ অ্যান্ডারসনের বাসভবন।
অ্যান্ডারসনের হিন্দুস্তানি বাবুর্চি আদম বেগ আজ দম-পোখত বলে এক ডিশ রেঁধেছে। ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অফিসার ক্যাপ্টেন ব্রুকস সেই সকালে মর্নিং ওয়াকে যাবার সময় খেয়াল করেছিলেন পাকশালায় আদম বেগ তার দুই সহকারীকে নিয়ে মহা ব্যস্ত হয়ে কীসব কাটাকাটি করছে। এইসব নেটিভগুলো ঘুমায় দশঘন্টা আর রান্না করতে তাদের আরো দশঘন্টা। তারপরে বাকি চারঘন্টা খায় আর পান চাবায়। অলস জাত আর কাকে বলে!
ক্যাপ্টেন ব্রুকসের ঘরের জানালা একটা আছে বেশ বড়, দুপুরে খেতে বসার আগে সেইটা খুলে দিলেন তিনি। ঝুম বৃষ্টি। অল্প দূরেই নদী, বৃষ্টিতে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অ্যান্ডারসনের অতিথিশালাটি চমৎকার, আর বোম্বাই জায়গাটাও বেশ আরামের। আজ এমন বালতি বালতি বৃষ্টি হচ্ছে আর বাতাস দিচ্ছে কিন্তু মোটেই ঠাণ্ডা নয়। ওয়ার্ম ট্রপিক্যাল রেইন জিনিসটা মন্দ নয়, ভাবলেন ক্যাপ্টেন ব্রুকস। এইখানে আরো মাস তিনেক থাকতে হবে। পর্তুগীজ এলাকা বোম্বাই, বেশী আওয়াজ করা যাবেনা। অ্যান্ডারসন খুবই সম্মানিত ব্যবসায়ী এখানে, কেউ তাকে ঘাঁটায় না। এই সুযোগে ক্যাপ্টেন ব্রুকস তার কাজ সেরে নিচ্ছেন, সব হিসেব ঠিক থাকলে নিঃশব্দেই বোম্বাই ছেড়ে যাওয়া যাবে।
টেবিলে ততক্ষণে খানা দিয়ে গেছে বাবুর্চি আদম বেগ। ক্যাপ্টেন ব্রুকস ছুরি কাঁটা নিয়ে বসে গভীর মনোযোগ সহকারে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন দম-পোখত জিনিসটা। আদম বেগ সকালে বলছিল ইন্ডিয়ান বাটার ঘি দিয়ে রাঁধতে হয়, ক্যাপ্টেন ব্রুকস বিরক্ত হয়ে দেখলেন ঘটনা সত্য। বাটারে মাখামাখি মুর্গির কারি। পুরা গ্যালন বাটার দেওয়া হয়েছে মনে হয়, মারাত্মক তেলতেলে কারি। ছুরি দিয়ে কেটে দেখা গেল মুর্গির ভেতরে কিসমিস আলমন্ড আরো কী কী হাবিজাবি ফিলিং দেওয়া। অসম্ভব রিচ ফুড, এই কারি দিনে দুইবার করে বছরখানেক খেলে লন্ডন ফেরত যাবার সময় তার শরীরের ভারেই জাহাজ ডুবে যাবার কথা।
এক কামড় মুর্গি খেয়ে চামচে করে একটু সাদা ভাত মুখে দিলেন। এই ইন্ডিয়ানগুলো ভাত ভালো বানায় বটে, খুব ঝরঝরে। একটা আরেকটা লেগে থাকেনা একদম। ভালো করে চিবানোর পর এক ঢোঁক আরক খেলেন। আদম বেগ অরিজিনাল আরকের সাথে রোজ ওয়াটার লেবু চিনি কি কি সব দিয়ে একটা মজার ড্রিঙ্কস বানায়, অফিসারদের মধ্যে এইজন্য সে বেশ জনপ্রিয়। ল্যুটেনেন্ট জনসন প্রায়ই বলে আদম বেগের এই রেসিপি উত্তর লন্ডনে তার চাচার পাবে সে চালাবে দেশে ফিরে গিয়ে।
বুটে খটাশ শব্দ তুলে দরজায় এই সময় স্যালুট ঠুকল কেউ, ব্রুকস দেখলেন ল্যুটেনেন্ট আর্মস্ট্রং। ক্যাপ্টেন অল্প বিরক্ত হলেন, লাঞ্চের সময় তিনি চুপ করে খেতেই পছন্দ করেন। মুখ রুমালে মুছে তিনি দরজার দিকে তাকিয়ে বললেন, আ ইয়েস আর্মস্ট্রং। ডু কাম ইন।
ঢুকে মাথার টুপি খুলে ভেতরে এসে দাঁড়ালেন আর্মস্ট্রং। বললেন, একটা খবর এসেছে স্যার। পর্তুগীজেরা বাহার গুলিস্তান নামে একটা মোগল জাহাজ দখল করে নিয়ে যাচ্ছে গোয়া।
কৌতূহলী স্বরে ক্যাপ্টেন ব্রুকস জানতে চাইলেন, কেন? কার্তাজ দেয়নি বুঝি?
কার্তাজ পর্তুগীজ পাস। ভারত সাগর দিয়ে জাহাজ নিয়ে চলতে গেলে কার্তাজ লাগে নন ইয়োরোপীয়দের। ধান্দাবাজি ছাড়া কিছু না, আসলে পর্তুগীজগুলো সাগরের ট্রাফিক কন্ট্রোলে রাখতে চায়। ভারতীয় আর আরব ব্যবসায়ীদের একটু দৌড়ের উপরেও রাখা গেল, ইচ্ছে হলেই তারা পাল তুলে সওদায় যেতে পারে না। মুখে পর্তুগীজেরা বলে সাগর নাকি তাদের গড গিভেন রাইট, তাই নন-খ্রিস্টান কেউ সাগরে পাল তুললে তাদের পাস নিয়ে চলতে হবে। ফাজিলের দল। পারলে সবার কাছেই পাস গছানোর আইন করত, অন্য ইয়োরোপীয় জাতের কাছে কার্তাজ চাইলে মেরে তক্তা করে দেবে সেই ভয়ে করেনা আরকি। কেবল অখ্রিস্টানদের জন্যেই তাই কার্তাজ।
ল্যুটেনেন্ট আর্মস্ট্রং বললেন, কার্তাজ ছিল স্যার। কার্তাজ সমস্যা না।
মাথা নেড়ে আরেক ঢোঁক ড্রিঙ্ক খেলেন ক্যাপ্টেন ব্রুকস। বললেন, এই আধাসভ্য পর্তুগীজগুলোকে নিয়ে আর পারা গেল না। নিজেরাই কার্তাজ ইস্যু করবে আবার জাহাজও অ্যারেস্ট করবে। নিজেদের পাস নিজেরাই মানেনা!
ল্যুটেনেন্ট আর্মস্ট্রং চুপ করে চেয়ে রইলেন, কিছু বললেন না। তার আমসি মুখ দেখে ক্যাপ্টেন ব্রুকস কি একটা বলতে গিয়ে হঠাৎ থেমে গেলেন। তার কিছু একটা মনে পড়েছে। মুখের ভাব পাল্টে গেল তার, স্থির চোখে চেয়ে ক্যাপ্টেন ব্রুকস জিজ্ঞেস করলেন, হাবিব মনসুরের জাহাজ?
ল্যুটেনেন্ট আর্মস্ট্রং নিচু স্বরে বললেন, হাবিব মনসুরের জাহাজ।
ক্যাপ্টেন ব্রুকসের মুখ কাগজের মত সাদা হয়ে গেল মুহুর্তে, মনে হল তার মাথায় বাজ পড়েছে। এক সেকেন্ড তিনি কি করবেন ভেবে পেলেন না। কী সর্বনাশের কথা, পর্তুগীজদের হাতে হাবিব মনসুরের জাহাজ! কিছু একটা করা চাই এখুনি, এই জাহাজ গোয়া পৌঁছুতে দেয়া যাবে না কোনভাবেই।
দ্রুত হাত মুছে উঠে দাঁড়ালেন ক্যাপ্টেন ব্রুকস। গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, পনেরো মিনিটের মাথায় আমার সাথে মিটিং রুমে দেখা কর। জনসন, হার্ডি, টেইলরকে ডেকে নিয়ে এসো, শীপ স্ট্যাটাস আপডেট আমার চাই। এখুনি। ও’ডেল কে বল যে ম্যাপটা সে পেয়েছে মুৎসুদ্দি নাসিরুদ্দিনের কাছ থেকে ঐটা এবং লন্ডনেরটা নিয়ে আসতে। দুবাশ আজমকে পাঠাও দেখো নাসিরুদ্দিন এখনো বোম্বাই আছে না সুরাট চলে গেছে। বোম্বাই থাকলে আজই আমি তার সাথে দেখা করতে যাবো।
স্যালুট দিয়ে ল্যুটেনেন্ট আর্মস্ট্রং বললেন, স্যার ইয়েস স্যার!
দ্রুতপায়ে দুই অফিসার রুম থেকে বেরিয়ে পড়লেন।
....................................................................................
পর্তুগীজ অধিকৃত মোগল জাহাজ বাহার এ গুলিস্তাঁর ডেক। সকাল।
বৃষ্টি ধরে এসেছে। সকল যাত্রীকে গণহারে সার্চ করা চলছে, পর্তুগীজ কাপ্তেন মিগেল এক কোণায় বসে শ্যেনদৃষ্টিতে চেয়ে তদারক করছেন সার্চ। সাধারণ ভারতীয় জাহাজ, মোকা যাচ্ছে। এই ভারতীয় মুরের বাচ্চাগুলি বছরে একবার মোকার জাহাজ ধরে, মোকা থেকে স্থলপথে যায় মক্কা। তাদের ইনফিদেল নবী মুহম্মদের মাজার জিয়ারতে। কেন যে মুরগুলাকে এই আজাইরা যাত্রার অনুমতি দেওয়া হয় মাথায় ঢোকেনা মিগেলের, সে গোয়ার ভাইসরয় হলে বহু আগেই এইসব ফাইজলামি বন্ধের ব্যবস্থা করত।
কার্তাজে যেরকম লেখা আছে তার প্রায় দ্বিগুণ মাল আর মানুষ এই জাহাজে, অশিক্ষিত মুরগুলি মিথ্যা বলায় পটু। ধরে গিয়ে গোয়ায় নিয়ে এদের শক্ত টাইট দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কিছুদিন আগে হলে মিগেল নিজেই এদের টাইট দেওয়ার ব্যবস্থা করত, কিন্তু দিনকাল কঠিন। ভারতের মুর রাজা ক্ষেপে যায় হজ্জ্বের জাহাজ লুট করে খুন ধর্ষন করলে, গোয়ার সাথে এখন মুর রাজার ভালোই দোস্তি। তাই যাত্রীদের গায়ে আপাতত হাত দেয়া যাচ্ছে না। উচ্চবংশীয় মহিলা বাদে দুই চারটা সুন্দরী দাসী অবশ্য ধরে নিয়ে গিয়ে এক কোণায় ভরে দেয়া যায়, তাতে অসুবিধা নাই। কেউ কিছু বলবে না। দেখা যাক সন্ধ্যার পর হবে।
কার্লুস এসে স্যালুট দিয়ে দাঁড়াল কাছে। কাপ্তেন মিগেল বলল, খবর কী?
কার্লুস বলল, খবর ভালো কাপিতওঁ। প্রচুর মালকড়ি পাওয়া গেছে, কার্তাজের হিসাব মিলছে না। নিচে একটা গোপন কক্ষ পাওয়া গেছে, তাতে দুইটা ধনের বাক্স। প্রচুর জহরত।
বাহ বেশ। ভালো কথা।
জ্বি, মাথা নেড়ে বলল কার্লুস। তারপরে ইতস্তত করে বলল, ইয়ে একটা ব্যাপার কাপিতওঁ।
কিরকম?
নিচে একটা বড় কক্ষে এক মুরকে ধরেছি। দুই মণী আটার বস্তা, ইয়াব্বড়া শরীর। নাম হাবিব মনসুর। সে পর্দার আড়ালে লুকিয়ে ছিল, ধরার পরে জামায় বুকের কাছে ধরে ছিল।
আচ্ছা।
আমি তার জামা খুলে জায়গাটা ফেঁড়ে আনি। দেখি একটা রোল করা চিঠি। মুর ভাষায় লেখা।
বেশ। পড়ে শুনা।
মাথা চুল্কে কার্লুস বলল, ইয়ে মুর ভাষা পড়তে পারিনা যে!
ভয়ংকর চটে গিয়ে কাপ্তেন মিগেল বলল, পড়তে পারিস না মানে? হারামজাদা দুই ডবল বেতন টানিস মুর ভাষা জানিস বলে, এখন পড়তে পারিস না কিরকম?
খুবই ব্যস্ত হয়ে কার্লুস বলল, বলতে পারি তো! ফটাফট বলতে পারি। বুঝিও পরিষ্কার। কিন্তু ইয়ে পড়াটা সড়গড় হয়নাই এখনো।
চোয়াল শক্ত করে মিগেল বললেন, গোয়া গিয়ে তোর দুবাশের বেতন টানা আমি বন্ধ করছি দাঁড়া। ফাজিল কুথাকার। আচ্ছা যাহোক, যাত্রী কাউকে দিয়ে পড়ার ব্যবস্থা কর। সে পড়বে তুই শুনে লিখবি।
জ্বি কাপিতওঁ। তাই হবে।
বাচ্চা আছে এরকম দুইটা মুরকে ধর। আলাদা নিয়ে তাদের দিয়ে পড়া। যদি দেখিস দুইজনের কথা মিলছেনা তো দুইজনেরই বাচ্চা দরিয়ায় ফেলে দে। তারপর বাচ্চার বাপ আরেকটা মুরকে দিয়ে পড়া। দেখবি ঠিক ঠিক পড়ে দিবে।
ঠিক আছে, বলে মাথা নেড়ে চলে গেল কার্লুস।
........................................................................
মুৎসুদ্দি (গভর্নর) নাসিরুদ্দিনের বাসভবন, সুরাট। বিকেল।
দুপুরের খানাটা বেশ জম্পেশ হয়েছে, তারপরে নাসিরুদ্দিন একটু গড়িয়েও নিয়েছেন নিজস্ব কামরায়। এখন একটু কাজ করা যাক। ফরমান এসেছে সকালে, পড়ে উত্তর লিখতে হবে আজ সম্ভব হলে।
দিওয়ান এ খাসে গিয়ে বসলেন তিনি। কোলবালিশগুলো বড় শক্ত, ভালো কিছু তাকিয়া আনাতে হবে। হেলান দিয়ে বসে নাসিরুদ্দিন ফরমান খুলে পড়তে শুরু করলেন। চাকর আবদুল এসে পাত্রে শরাব ঢেলে রেখে গেল। নাসিরুদ্দিন মদ খাওয়া কমিয়ে দিতে চেষ্টা করছেন ইদানিং, হেকিম ওয়ালিউল্লা বলছিল তিনি যেরকম আরক টানেন তাতে বছরখানেকের মধ্যে শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে, মাথা বনবন করে ঘুরবে আর জিনিস দাঁড়াবে না। নাসিরুদ্দিন নারীসঙ্গ অত্যন্ত পছন্দ করেন, এই খবরে তিনি বেশ বিচলিত হয়েছিলেন। তাই এখন থেকে আবদুলকে বলা আছে কড়া আরক আর না দিতে, সে অল্প আঙ্গুরের শরাব মিশিয়ে আরক পাতলা করে দেয়। ভালোই লাগে খেতে।
সরকারী ফরমানের ভেতর বুঁদ হয়ে ডুবে থাকা মুৎসুদ্দি নাসিরুদ্দিন হঠাৎ দেখলেন, মোহাইমেন দাঁড়িয়ে আছে। তাকাতেই সালাম দিল। নাসিরুদ্দিন বললেন, কি অবস্থা মোহাইমেন? হিসেবটা লিখে আনতে বলেছিলাম শেষ করেছো?
মোহাইমেন ঢোঁক গিলে বলল, খারাপ খবর আছে হুজুর।
আরকের পাত্রে চুমুক দিয়ে নাসিরুদ্দিন বললেন, কি খারাপ খবর?
বাহার এ গুলিস্তাঁ ফিরিঙ্গিদের হাতে পড়েছে। তারা জাহাজ পাকড়ে গোয়া নিয়ে যাচ্ছে।
তখনও আরকে চুমুক দেয়া নাসিরুদ্দিনের শেষ হয়নি, এই কথা শুনে তিনি পাত্র মুখে ধরা অবস্থাতেই ভয়ঙ্কর বিষম খেলেন। কাশতে কাশতে প্রায় উল্টে পড়লেন তিনি, হাতের পাত্র মাটিতে পড়ে ঝনঝন আওয়াজ হল। চাকর আবদুল চকিতে দৌড়ে এসে ভয়ার্ত গলায় বলল, হুজুর!
হাঁফাতে হাঁফাতে নাসিরুদ্দিন মোহাইমেনকে বললেন, কী বললে আবার বল।
মাথা নেড়ে মোহাইমেন বলল, জ্বী হুজুর। হাবিব মনসুর ধরা পড়েছে, তাকে গোয়া নিয়ে যাচ্ছে।
সুরাটের প্রতিপত্তিশালী মুৎসুদ্দি নাসিরুদ্দিন ওয়াহিদের মনে হল ভয়ে এবং উত্তেজনায় তার বুকটা এই বুঝি ফেটে যাবে!
.............................................................................................
পর্তুগীজ অধিকৃত মোগল জাহাজ বাহার এ গুলিস্তাঁ। দুপুরের খানিক পর।
একটা ফোঁড়া পেকে উঠেছে, কাপ্তেন মিগেল ছুরি দিয়ে সাবধানে ফোঁড়াটা কাটতে উদ্যত হলেন। পুঁজ বেরুচ্ছে।
ধড়াম করে কামরার দরজা খুলে ঢুকল কার্লুস। হাঁফাচ্ছে। আচমকা আওয়াজে হাত কেঁপে মিগেল ছুরি দিয়ে পা কেটে ফেলেছিলেন প্রায়! ভয়ঙ্কর বিরক্ত হয়ে তিনি বললেন, হারামজাদা বলদ। আস্তে ঢুক।
হাঁফাতে হাঁফাতে কার্লুস বলল, চিঠির অর্থ বের করেছি কাপিতওঁ। ভয়ানক চিঠি।
তাই নাকি? কার কাছে লিখা?
মোকার গভর্নরের কাছে লিখা চিঠি।
ভুরূ কুঁচকে কাপ্তেন মিগেল বললেন, পড়ে শুনা।
কার্লুস পড়ে চললঃ
“অসীম শক্তির অধিকারী, সর্বজ্ঞানী, সপ্ত আসমানের মালিক আল্লাহর নামে শুরু করিতেছি।
সম্মানিত সুলতানের তখত আরো সম্মানের সাথে উত্থিত হউক উচ্চে, অতি উচ্চে। যেথা পাখি হাসে গান গায় ফিরিশতারা যেই স্থানে সুগন্ধ মাতিয়ে তোলে। পূর্ব ও পরের সকল প্রজ্ঞাময় দেশনায়কের চাইতেও আপনার হস্ত হউক সবল এবং হৃদয় হউক কোমল। শুষ্ক মাটির বুক ভেদ করিয়া বাহির হইয়া আসা ঠাণ্ডা পানির ফোয়ারা যেমন সমগ্র বাগানকে করিয়া তোলে সম্পূর্ণ, আপনার ব্যক্তিত্ব ঠিক সেইভাবেই স্পর্শ করিয়া যাউক দেশের প্রতিটি মানুষের জীবন!
আপনার এবং আমার দেশের ইতিহাস ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য এবং ভালোবাসার ইতিহাস। একই বৃন্তে দুটি ফুল যেন আমরা। সুখের সময়ে যেমন আমাদের বন্ধন সুদৃঢ়, একে অন্যের বিপদেও আমরা হইয়া উঠি এক ও অভিন্ন।
সাম্প্রতিক খবরে জানিয়াছি, লোহিত সাগরে পর্তুগীজ ফিরিঙ্গি অবৈধভাবে দখল লইয়াছে এবং তারা সকলকে বাধাও প্রদান করিতেছে অনাবশ্যক। আদন বন্দরও শুনিয়াছি তাহাদের হাতে পড়িয়াছে। দুঃখজনক কিন্তু সত্য এই যে, আমার দেশের দরিয়া পাড়েও তারা একই খলকার্যে প্রবৃত্ত। প্রতিবছর পবিত্র হজ্জ্বের জাহাজ সুরাট বন্দর হইতে মোকার উদ্দেশ্যে যাইবার জন্য কার্তাজের অনুমতি চাওয়া হইলে তারা বিবিধ গড়িমসি করিয়া থাকে। দশটা চাইলে দুইটা কার্তাজ প্রদান, কার্তাজ থাকা স্বত্ত্বেও জাহাজ আটক ও সকলকে অযথা হয়রানী ইত্যাদি নিত্যদিনের কার্য্য ইদানিং। নবী মুহম্মদের বাণী অনুযায়ী মহান আল্লাহর এই ইচ্ছা যে, সক্ষম লোকে মক্কা গিয়া হজ্জ্ব করিবে। কাফির ফিরিঙ্গির এই কার্য্যে বাধা দেয়া আল্লাহর ইচ্ছাকে গলা চাপিয়া মারিয়া ফেলা বই কিছু নহে।
সম্মানিত সুলতান, আরেক ফিরিঙ্গি বণিক জাতি ইংরেজ সম্প্রতি জলপথে পর্তুগীজ হঠানোয় আমাদিগকে সাহায্য করিবার আশ্বাস দিয়াছে। তাহারাও জলপথের সুদক্ষ সেনা। খবর এই যে, ছয় মাসের মধ্যে লোহিত সাগরে আরেক দফা যুদ্ধজাহাজ লিসবন হইতে পাঠানো হইবে, তাহাতে আপনাদের দুর্দশা বাড়িবে বই কিছু কমিবে না। বণিক ইংরেজ লোহিত সাগরে এবং আরব সাগরে যুগপৎ আক্রমণ চালাইতে আগ্রহী, তাহাতে সাড়া দিয়া আপনি জাহাজ প্রস্তুত রাখিলে এবং ভারতের পশ্চিমে কিছু রণতরী পাঠাইলে ইনশা আল্লাহ দুষ্ট পর্তুগীজ পরাজিত হইবে।
সম্মানিত সুলতান উচ্চ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী এবং প্রজ্ঞাময়, মহানবীর আশীর্বাদ তাহার উপর বৃষ্টির মতন বর্ষিত হইতে থাকে। তিনি অল্প কথাতেই অধিক বুঝিতে সক্ষম এবং আমি নিশ্চিত এই পত্রের উদ্দেশ্য তাঁর কাছে যুহর ওয়াক্তে সূর্যের আলোর মতই পরিষ্কার। কথা বাড়ানো তাই নিষ্ফল।
আল্লাহ পাক আপনার সম্মান মেঘের সমান উঁচা করিয়া দিন।
আমিন!”
চিঠি পড়া শেষে থামল কার্লুস, পড়তে পড়তে তার গলা কাঁপছিল একটু। শেষ করে কার্লুস তাকিয়ে দেখে কাপ্তেন মিগেলের মুখ টকটকে লাল, চোয়াল ঝুলে পড়েছে। পাশে রাখা পাত্র থেকে দুই ঢোঁক মদ খেলেন মিগেল, বুক ধড়ফড় করছে। এই চিঠি নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব গোয়া যেতে হবে, দরকার হলে উড়ে। গোয়ায় যাওয়া চাই। এই ভয়ানক চিঠির খবর গোয়ায় পৌঁছে দেয়া চাই।
ধড়াম করে দরজা খুলে জাহাজ চালনরত মাল্লাদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে মিগেল বললেন, এই শুয়োরের বাচ্ছারা। বালের জাহাজ পুতায় পুতায় আগায় ক্যান? জোরসে টান জোরসে। জো-ও-ও-ও-র-সে-এ-এ-এ!
হই হই শব্দ তুলে মাল্লার দল জাহাজের গতি বাড়ানোয় মন দিল। উতাল দরিয়ার ঢেউ কেটে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যেতে থাকল পর্তুগীজ অধিকৃত মোগল জাহাজ বাহার এ গুলিস্তাঁ। কাপ্তেন মিগেল আকাশের দিকে চেয়ে ভাও বোঝার চেষ্টা করলেন। ঘন মেঘ জমেছে, কালচে ধূসর আকাশ।
ঝড় আসছে।
(...পরের পর্বে সমাপ্য)
কৈফিয়তঃ সত্য কাহিনী অবলম্বনে নয়।
মন্তব্য
গল্প চমৎকার!
আর, হাবিব মনসুর এত মোটা হল কি করে?
সে আমলে উঁচুতলার লোকদের খাবার দাবারের বাহার শুনলে
মোটা লোকে লোক ভালো হয় গো মেঘলা মানুষ। মোটা বইলা তারে কইরেননা হেলা।
..................................................................
#Banshibir.
নাহ, পেটে ক্ষুধা নিয়ে আপনার পোস্ট পড়া ঠিক না! পরের পর্ব কবে দেবেন জানিয়ে রাখুন, রান্না-বান্না করে, ভরপেট খেয়ে তারপর পড়তে বসব
কই ভাবলাম কইবেন "পরের পর্ব কবে দিবেন বলেন, এই হইল আমার ঠিকানা...রান্নাবান্না করা থাকবে আইসা ভরপেট খায়া ব্যাপক ঢেকুর তুইলা যান..." ধুরো। ভুল সুমায়ে জন্ম নিছি, সব কিপ্টার দল মোগল আমলে দরবারে গপ বলিয়ে হিসাবে চাকরি নিলে একটা দুইটা গপ কইলেই বিরাট জায়গির দিয়া দিত। পায়ের উপর পা তুইলে বসে স্ট্যুয়ির মতন কইতাম মমম...ইট'স গুড টু হ্যাভ ল্যান্ড!
..................................................................
#Banshibir.
চলুক
উতাল দরিয়ার ঢেউ কাইটা চলতেছে। ভয় নায়।
..................................................................
#Banshibir.
জমসে!
****************************************
জমতেই হবে, চাইর দিন ফ্রিজে রাখছিলাম।
..................................................................
#Banshibir.
বলেন কি? আমি তো মনে করেছিলাম সত্য ঘটনা!
এইটা কিন্তু সত্য ঘটনা।
অগো দাদি নানির বানানো ইংলিশ পট পাই আর ম্যাশড পটেটো খায়া তো চক্ষে পানি আসে। ফাজিল বদমাইশ দমপোখত নিয়া কমপ্লেন করে কত্ত বড় বেকুব।
..................................................................
#Banshibir.
এইটা তাইলে মিথ্যা কাহিনী? যাউগ্গা, কাহিনী ভালো হইছে। পরের পর্বের অপেক্ষায়
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
প্রেক্ষাপট ঠিক আছে, কাহিনী সত্য না। পর্তুগীজে কি কার্তাজ নিয়া গেঞ্জাম করত না? করত। স্বয়ং বাদশা জাহাঙ্গীরের মায়ের জাহাজ তারা লোপাট কইরা দিছিল কার্তাজ থাকা স্বত্ত্বেও। লোহিত সাগরে তুর্কি সুলতানরে কি পর্তুগীজ হুড়া দেয়নাই? দিছিল। এডেন বা মাস্কট কোন এক বন্দর তারা দখলে নিছিল। ভারত সাগর লোহিত সাগর আরব সাগরে পর্তুগীজের মনোপলি বন্ধে ইংরেজ ওলন্দাজ কি একের পর এক চেষ্টা চালায়নাই? চালাইছিল।
তাইলে আমি কৈফিয়ত দিলাম ক্যান? কারণ গল্পটা লিখে শেষ করার পরে আমার মনে হইছে কেউ যদি ভাবে মোগল এরকম ইংরেজ অটোমানদের সাথে মিলে পর্তুগীজদের বাম্বু দিতে চাইছিল, এই ব্যাপারটা ঠিক হয়না। ঘটনা এত সরল না। এইটা হইতে পারত, কিন্তু হয়নাই। হইলে ইংরেজ বগল বাজাইতে বাজাইতে যুদ্ধে নামত নিশ্চয়ই, সুরাট তখনো ইংরেজের হাতে আসেনাই। বোম্বে তো আরো দূর। মোগলেরা এই বিষয়ে সাবধান ছিল। আকবর জাহাঙ্গীর ইন্টার্ন্যাশনাল মেরিটাইম ওয়ারফেয়ার আরম্ভ করার বদলে বরং ফিরিঙ্গির সাথে গলা মিলানোর পন্থাই বাইছা নিছিলেন। কেন সেইটা ভিন্ন প্রসঙ্গ। তবে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মোগল বাদশাহী জাহাজও কার্তাজ ছাড়া সাগর পেরোতে পারবেনা এইরকম আপাতঃ-অপমানজনক শর্ত মোগল মাইনা নিছিল। যা কিছু ভালো তার সাথে মোগল বাদশাহী আলো।
সুতরাং এইটা গল্প। হলিউডি ঢিশটিং স্টাইল এন্টারটেইনমেন্ট
..................................................................
#Banshibir.
বন্দরটা বোধ হয় হরমুজ ছিল।
হরমুজ কি তারা অটোমানের সাথে ফাইট কইরা নিছিল? হরমুজ ছিল সম্ভবত সাফাভিদের আন্ডারে। এডেন মাস্কট বাহরাইন এইসব জায়গা নিয়া পর্তুগীজ অটোমানে কাড়াকাড়ি হইছে কয়েকবার, সেইটার কথা বলতেছিলাম।
সাফাভিদের সাথে মোগলের দোস্তি কম, কান্দাহার নিয়া পুরান গ্যাঞ্জাম। তার উপর শিয়া :/
..................................................................
#Banshibir.
হরমুজ এখন ইরানের মধ্যে, কিন্তু তখন ইরান বা অটোমান প্রভাবের বাইরে হরমুজের স্বতন্ত্র শক্তিশালী শাসক ছিল(সাফাভিদ হইতে পারে), পার্সিয়ান গালফের অন্যান্য বড় বড় বন্দর তার অধিনেই ছিল। ১৫০৭ সালে আলবুকারক দ্বারা হরমুজ দখল করার মধ্য দিয়া সে অঞ্চলের অন্যান্য বন্দরগুলাও পর্তুগীজদের অধীনে চলে আসে।
আপনি সঠিক, হরমুজে স্বতন্ত্র সুলতান ছিল দেখলাম আলবুকার্কি আক্রমণ করার সময়। সাফাভিদ নামেই হরমুজের রুলার ছিল, এতো দূরে তাদের কন্ট্রোল ছিলনা। হরমুজের বারো বছর বয়েসি সুলতান পর্তুগীজের কড়া থাপ্পড় খায়া আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। নিষ্টুর পিতিবি।
..................................................................
#Banshibir.
ইতিহাস আমার খুব একটা পছন্দের বিষয় না। অবাক হলাম আপনার লেখা পড়ে, এত নিরস বিষয় এত আকর্ষণীয় করে লেখা যায়!
ইতিহাস অত্যন্ত আকর্ষণীয় বিষয়, নীরস করে লেখা হয় বেশিরভাগ সময়। সনতারিখ নামধামের বদলে ঘটনা মোটিভ এবং কার্যকারণ হিসাব করলে দেখবেন পুরা সিনেমার মতন বিষয়!
..................................................................
#Banshibir.
ইটা রাখতে রাখতে টায়ার্ড হইয়া গেছি, এইবার পুঁইতা থুইয়া গেলাম
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
যে হারে ইটা পাই তা দিয়া ইটেরকেল্লা বানামু ভাবতেছি। ব্রেকিং ব্রেকিং নিউজ দিমু ফেসবুক পেইজে, বাঁশেরকেল্লা চান্দে সাঈদির পুটু পিকচার দিলে আমি শুক্রগ্রহে সাইদির পুটু পিকচার দিমু। লাল ফন্টে শিরোনাম : "শুকতারা পুটুমারা!"
..................................................................
#Banshibir.
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
গিরামিন ফোনের মতো কল্লেন বিষয়টা। সবকিছু দিয়া দেয় তারা ১/২ পয়সায়। কিন্তু সবতার ফরে নিচেদি কুনি কুনি করি লেখে শর্ত প্রযোজ্য।
বদের ঘরের বদ, নিজেরা জীবন কাটাইলো আলুপুড়া খাইয়া, ভালো মন্দ খানাপিনা শিখলো উপমহাদেশে গিয়া, আর সেই খাবারেরই নিন্দা করে। এই না হইলে ফিরিঙ্গি
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
অয় নজমুল বাই ইগু ফিরিঙ্গির বাফর ঠিখনাই
..................................................................
#Banshibir.
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
দারুণ লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
পরের পর্বে ঢিশটিং ঢিশটিং জাহাজের লড়াই হবে তাসনীম ভাই, বাহার এ গুলিস্তাঁ ইন ডেঞ্জার। সী-ব্যাটল অ্যাসাসিনস ক্রিড স্টাইল
..................................................................
#Banshibir.
আমি সারা জীবন রোগা-পটকাই থেকে গেলাম। খাবারটা বছর খানেক খাইতে পারলে...
পরে জাহাজে উঠতে সমিস্যা হইব। বাদ দেন।
..................................................................
#Banshibir.
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আর কত পপ্পন?
..................................................................
#Banshibir.
আপনার লেখা মোটামুটি সব পরি। আপনার সচল প্রোফাইল আমার বুকমার্ক করা।
মোগল বাদশাহরা কেমন আকাম্যা ছিল তা মোগলদের নৌবাহিনির দূর্বাস্থা দেখেই বোঝা যায়।
দম-পোখত জিনিসটা কি ?? খাইতে কেমন? রন্ধন প্রণালি শেয়ার করেন, খাইতে মন চায়।
সচল প্রোফাইল বুকমার্ক করা যায় নাকি?! আজব কাণ্ড। খিয়াল করি নাই আগে।
মোগল গভীর সমুদ্রের নৌবহরে তেমন মনোযোগ দেয়নাই। যাহা নাই ভারতে তাহা নাই জগতে, বাকি দুনিয়ায় পাল তুইলা যাওয়ার কী প্রয়োজন? দেশ শাসনের জন্য যেটুক দরকার সেইমত নায়ের বাদাম তুইলাই তারা খুশি ছিল। মূলতঃ শর্ট রেঞ্জ রণ ও বাণিজ্য তরী। মোগল সিদ্দি মারাঠা আরাকানের বিবিধ নৌকাবাজি নিয়া ভবিষ্যতে কোন এক সময় গপ আসবে, দোয়া খায়ের কাম্য। আপাতত পরের পর্বে ইংরেজ পর্তুগীজের দরিয়া ফাটানি লড়াই আসতেছে, পড়ার আগাম আমন্ত্রণ।
..................................................................
#Banshibir.
দারুণ।
সেই টিশটিং পরের পর্ব কো?
কফা ভাইরে মিস্করি।
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
..................................................................
#Banshibir.
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দম পোখতের রেসিপিটা ভালুয় ভালুয় দেন
অনেক ভালো।
জাহাজতো বহুদুর চলে গেলো। এখন ধরবো কেমনে? সবাই কত চিন্তিত্।
কিন্তু চিন্তা নাই শুধু আমার। ক্লিক করমু আর পড়মু।
দেরীতে পড়ার ইডাই মজা হে মজা হে মজা।
ভা্লা থাইকেন সত্যপীর।
আপনার সাথে কতা কইতে মুঞ্চায়?
দ্যাশে আইবেন কবে?
**********************
কামরুজ্জামান পলাশ
নতুন মন্তব্য করুন