সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি স্মার্টফোন লাল রঙে ভয় দেখাচ্ছে, “ফগ অ্যালার্ট”, “চান্স অফ রেইন/ড্রিজল”, “স্টে অ্যালার্ট অন দ্যা রোড” আরো কি কি হাবিজাবি। বারান্দায় গিয়ে দেখি চমৎকার সকাল, অল্প কুয়াশা। রেলিং ভেজা। অন্ধকার পুরো কাটেনি। একেবারে আমার মতই শহর মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে, দেখতে ভালোই লাগে। কোন রামছাগলে অ্যাপ বানিয়েছে আল্লায় জানে। কোথায় সে একটা স্লো মিউজিক ছেড়ে কইবে “ওগো শুনছ, বাইরে গিয়ে দেখো সে কী সুন্দর কুয়াশা আর হাল্কা হিম...জ্যাকেটটা পরে বাইরে পিচ্চিকে নিয়ে হেঁটে এসো।” তা নয়, অ্যালার্ট অ্যালার্ট। ফগ অ্যালার্ট। রেইন ওয়ার্নিং। রেড অ্যালার্ট। দ্য জার্মান ইজ কামিং। অ্যালার্ট।
যন্ত্রণা।
একবারে গুঁড়া বাচ্চা যখন ছিলাম তখন হাতিরপুল ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে থাকতাম। চার তলায় বাসা, লম্বা টানা বারান্দা। এরকম বৃষ্টির দিন সকালবেলা নীল রঙের জামা প্যান্ট পরতে পরতে জানলা লাগিয়ে দিতাম। ঠাণ্ডা বাতাস। রাস্তায় অল্প পানি, রিক্সা পাওয়া যাবে কি? ঐসময় স্মার্টফোন থাকলে নিশ্চয়ই আব্বাকে মেসেজ দিত, রিক্সা অ্যালার্ট। ওনলি টু রিক্সাস ইন হাতিরপুল বাজার ইন্টার্সেকশান। স্টে অ্যালার্ট, লিভ আর্লি। কার-রিক্সা কলিশন অ্যাট নীলক্ষেত মোড়, টেক অল্টার্নেট রাউট। ড্রিজলিং। ফগ। অ্যালার্ট। দ্য জার্মান...
আমাদের বাসার সবচাইতে খারাপ বস্তু ছিল সকালবেলার নাস্তা। শুকনা হাতে বেলা রুটি আর ডিমভাজি। সবই শুকনা। আমাদের মুখের মতই। এরপরে আম্মা টিফিনবক্স ধরিয়ে দিত, আমি নিয়ে ব্যাগের সামনের পকেটে ঢুকাতাম। স্টিলের টিফিনবক্স, শক্ত। ভারি। আমার বন্ধুবান্ধবেরা নানান রঙের প্লাস্টিক টিফিনবক্স নিয়ে যেত, আর আমি নিতাম বেঢপ এক স্টিলের টিফিনবক্স। আমাদের তিন ভাইয়ের জন্য আব্বা এই টিফিনবক্স এনেছিলেন মাদ্রাজ থেকে। মাদ্রাজ কোথায় আমি জানতাম না, কেউ আমাকে বলেও দেয়নি। আমি কেবল দেখলাম একবার আব্বা হাওয়া হয়ে গেলেন সপ্তাখানেকের জন্য, সবাই বলল মাদ্রাজ গেছে। তারপরে একদিন আবার আব্বা হাজির, সাথে কিছু জিনিসপত্র। মাদ্রাজ থেকে চলে এসেছেন। স্কুলে যাবার পথে হাতিরপুল বাজারের উল্টোদিকে একটা জুতার দোকান ছিল, তার নাম মাদ্রাজ ট্যানারি। ট্যানারি মানে কি আমি জানি না, কিন্তু মাদ্রাজ আমি চিনি। সেইখানে আব্বার কনফারেন্স হয়। আমি রিক্সায় করে মাদ্রাজ ট্যানারি পার হবার সময় ভালো করে দোকানটা লক্ষ্য করি। চিপা দোকান, প্রচুর জুতা ঝুলছে। পিছনে একটা দরজা, মাঝে মাঝে তা খোলা থাকে। আমি বুঝলাম সেই দরজা দিয়েই আব্বা মাদ্রাজে গেছিলেন।
বৃষ্টির দিন কোন কোন রিক্সাওলার মন থাকে উদাস। তারা হুড তুলে নীল রঙের পলিথিন গায়ে দিয়ে বিড়িতে সুখটান দেয়। তাদেরকে তখন “যাইবেন...” বলামাত্র কোথায় যাবে না শুনেই মাথা নেড়ে বলে “যামুনা”। তারা যাবেনা। আব্বা শক্ত মুখে অন্য রিক্সা দেখেন। আমিও মনে মনে মেজাজ খারাপ করি, ব্যাটা রিক্সাওলা যাবেনা বললেই হল? ফাজিল রিক্সাওলা। কাজে ফাঁকি দেয় খালি।
তার বহু বছর পরে আমি টরন্টোতে একটা কফিশপে রাতের শিফটে তখন কাজ করি। দোকান চালাবার পাশাপাশি মাফিন ক্রোঁয়াসা হাবিজাবি বেকও করতে হয় একাই। রাত দুইটায় কাজের ফাঁকে আমি টুলে বসে একটা ডোনাটে কামড় বসিয়েছি মাত্র, এক খদ্দের এসে আবদার করল স্যান্ডুইচ বানিয়ে দিতে হবে তখনই। আমি সেই হাতিরপুল মোড়ের রিক্সাওলাটার মত উদাস গলায় বলি, “অন ব্রেক। গ্র্যাব এ সিট, আ’ল মেইক ইউ ওয়ান আফটার”। আমি টের পাই খদ্দের আমার কথা শুনে গজগজ করতে করতে টেবিলে বসে। নিশ্চয়ই ভাবছে ব্যাটা ফাঁকিবাজ কাজ বাদ দিয়ে ডোনাট খাচ্ছে। ফাজিলের ফাজিল। আমি নির্বিকার বসে থাকি। সেই রিক্সাওলাটার মত। যামুনা।
কয়দিন আগে বুড়া বয়সে ড্রাইভিং শুরু করেছি। বউ বাচ্চা পিছনের সিটে রেখে গাড়ি নিয়ে রওনা দিলাম। স্মার্টফোন ক্যাটক্যাট করে বটে তবে তার কথা মিছা না। কুয়াশা আছে ঠিকই। গাড়ির ভিতরে স্টিয়ারিং গ্যাস পেডেল আর ব্রেক ছাড়া অন্যান্য তেলেসমাতি আমি বুঝি অল্পই, এক বন্ধু দেখিয়ে দিয়েছে এক জাদুই বোতাম যেইটা টিপলে উইন্ডশিল্ড সাদা হয়ে যায়না। সেই বোতাম টিপলাম। ওয়াইপার ছাড়লাম। টিউনইন অ্যাপ দিয়ে রেডিও ফুর্তি ছেড়ে গাড়ির স্পিকারে লাগিয়ে দিলাম। আর জে নাওয়াফ। হ্যালো লিসেনার্স, শুনছেন ঢাকা কলিং। ভয়ঙ্কর উচ্চারণ, দুইটা বাংলা কথার সাথে তিনটা অনর্থক ইংরেজি শব্দ। সাথে উদ্ভট সব ফোনের বিজ্ঞাপন। দুই টাকা রিচার্জ করলে তিনটি নম্বরে রাত সাড়ে আটটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত দশ পয়সা প্রতি মিনিট। আমি মনে মনে হিসাব করতে থাকি ঘন্টায় কত টাকা হয় তাহলে। রেডিও বেজে চলে। নো টক ট্রিপল প্লে, পরপর তিনটি দারুণ গান। এই হল প্রথম গান। আসলেই একটা দারুণ গান শুরু হয়। চন্দন। হৃদয় জুড়ে যত ভালোবাসা। শুধু তোমাকেই দেব বলে। মনে জাগে এক রঙিন আশা। শুধু তোমাকেই ভালোবাসব ভেবে। এই গানটার বহু কভার ইউটিউবে পাওয়া যায়, হাবিজাবি আনকোরা গায়ক থেকে শুরু করে তাবড় তাবড় ব্যান্ড গায়কের গলায়। কিন্তু কেউই চন্দনের মতন করে গাইতে পারেনা। এমনকি চন্দন নিজেও কনসার্টে যখন গায় তখন এইরকম লাগেনা। অথবা আমার কান এই গান অন্য কোন কন্ঠে শুনতে রাজি নয়। কে জানে। ফ্যাসিবাদি কান।
গাড়ি ষাট কিলোমিটার বেগে বার্নহামথর্প ধরে এগিয়ে চলে। জিপিএস চোখ রাঙিয়ে বলে এই আস্তে চল, পঞ্চাশ লিমিট। আমি কান দেইনা। চলে চলুক ষাট বাষট্টি, গুষ্টি মারি পঞ্চাশের। স্কুলে যাবার পথে রাস্তা ফাঁকা পেলে রিক্সাওলাও দিত টান, আর আব্বা আমাকে শক্ত করে ধরে রিক্সাওলাকে বলতেন এই আস্তে। আস্তে। রিক্সাওলা গতি হাল্কা কমিয়ে আবার দিত টান। আমি দাঁত বের করে হাওয়া খেতাম। চলে চলুক।
এরকম বৃষ্টির দিন আমাদের স্কুলগেটের ঠিক বাইরে ব্যাপক ভেজাল লেগে যেত। যেহেতু বৃষ্টি এবং কাদাপানি, সকলেই চায় রিক্সা একবারে গেটের কাছে নিয়ে যেতে। আমি লাফ দিয়ে রিক্সা থেকে নেমে দ্রুত গেট দিয়ে ঢুকে যাই, পিছনে ফিরে তাকাই না। বন্ধুরা সকলে কি এসেছে আজ? পানিতে রায়হান হয়তো আসতে পারেনি, ওদের গলিতে প্রায়ই পানি জমে যায় আর গাড়ি বেরোয় না। দেখা যাক। হনহন করে আমি ক্লাসের দিকে যাই। ক্লাস থ্রি সেকশন বি। অনেকেই এসে গেছে দেখছি। পানির বোতল পাশে রেখে আমি সিটে বসে পড়লাম। ওয়ার্নিং বেল বাজছে ঢং ঢং ঢং।
আজ মনে হয় আমি পেছন ফিরে তাকালে নিশ্চয়ই দেখতাম আব্বা অথবা আম্মা যেই নামিয়ে দিয়ে গেছে, তাকিয়ে আছে ছেলে তিনটা ঠিকমত গেল কিনা। পানির বোতলটা কি ফেলে গেল পথে? ব্যাগের চেইন কি লাগানো ছিল? এইসব ভাবতে ভাবতে নিশ্চয়ই তারা একটু দাঁড়াতেন, আমার মত রিক্সা থেকে নেমেই দৌড় দিতেন না। আমি যেরকম এখন ডে কেয়ারে আমার বাচ্চাটাকে রেখে এলিভেটর দিয়ে নামি আর কেবল ভাবি আমার পিচ্চিটা কাঁদছে। নাকি হাসছে? খেলনা দিয়ে খেলছে? কে জানে। আমি একবার সেই স্কুল জীবনে ফিরে যেতে পারলে আমি অবশ্যই ক্লাসে যাবার পথে পিছনে ফিরে একটু হাসতাম, আব্বা আম্মা কত খুশি হত সেই হাসি দেখলে। হয়তো চিরগম্ভীর আব্বার মুখেও একটা হাসির আভাস দেখা যেত। কিন্তু সে জীবন আর নাই। এ পৃথিবী একবারই পায় তারে পায় নাকো আর।
বৃষ্টির দিন ক্লাসে বেশিরভাগ টিচার ঢিলা মুডে থাকতেন। রোল কল হত আস্তে ধীরে। তারপরে ব্যাগ থেকে বই বের করে পড়া শুরু। ক্লাস ক্যাপ্টেন কিম্বা তুখোড় ভালো ছাত্র কেউ একজন গিয়ে বোর্ডে লিখত, শিক্ষক মহা সন্তুষ্ট হয়ে তার পিঠ চাপড়ে দিতেন। আমি মাঝামাঝি বসে আড়চোখে দেখতাম পিছনে নুরুন্নবী বইয়ের ভিতর লুকিয়ে চাচা চৌধুরী পড়ছে। তার সাহস দেখে আমি অবাক হই, স্যার জানলে থাপড়ে কান লাল করে দেবেন। টিসিও হয়ে যাবে হয়তো। টিসি জিনিসটা কি আমি জানতাম না, কিন্তু টিসি খাওয়া মহা সর্বনাশ তা আমি ততদিনে জেনে গিয়েছি। টিসি খাওয়া যাবে না। আমি টিসি খাবার ভয়ে কমিক্স পড়া থেকে বিরত থাকি। আবার তুখোড় ভালো ছাত্রটির মত পড়াশুনাও করতে পারিনা। সুযোগের অভাবে ভালো ছেলে রয়ে যাই। এইটি আমার সারা জীবনের গল্প। সিগারেট খাইনি কখনো আব্বা থাপড়ে কান লাল করে দেবেন বলে, তাই এখন যখন কেউ বলে ও ইউ ডোন্ট স্মোক অর ড্রিঙ্ক...এক্সেলেন্ট। আমি বোকার মত হাসি। সুযোগ ছিলনা তাই খাইনি, আর এখন বুড়া বয়সে আর কি স্মোক ড্রিঙ্ক করব। ভালো ছেলেটিই রয়ে যাই বরং।
বৃষ্টির দিন বিকেলবেলা ফুটবল খেলা মজা হত বটে। দুবার বল নিয়ে দৌড়াতে গিয়ে চারবার ধড়াম করে আছাড় খেতাম, আবার উঠে দৌড়। মাঠে কাদা, থাক থাক পানি। দৌড়াতে গিয়ে সামনে কেউ পড়লে সাবধানে থাকতে হয়, যেহেতু পিছল মাঠ তাই দূরত্ব বজায় রেখে খেলা জরুরী। নইলে ধড়াম করে বাড়ি খাব ওর গায়ে। কোন বড় ভাই হলে একটা থাপ্পড়ও পাওয়া যেতে পারে ফ্রি। আমি দূরত্ব বজায় রেখে খেলি। ব্যাপক তুষারপাতের মধ্যে গাড়ি চালানো শেখানোর সময় আমার আরব ইন্সট্রাক্টর সেই পুরানো বিদ্যা মনে করিয়ে দিত। ড্রাইভ স্লো, মেইন্টেইন মোর ডিসট্যান্স। ইফ কার ইন ফ্রন্ট অফ ইউ কামস টু এ সাডেন স্টপ ইউ নিড রুম টু স্লো ডাউন।
কথা সত্য। এই বিদ্যা আমি পিছল মাঠে ফুটবল খেলার সময় থেকেই জানি।
পলাশীর মোড়ে এক বুড়া চাচার কাছে আমি সাইকেল পাম্প করতে নিয়ে যেতাম। বৃষ্টির দিনে সে ফুটপাথের এক কোণে নীল পলিথিন টানিয়ে বিড়ি টানত, আমি গেলে পরে লুঙ্গি মালকোঁচা মেরে এসে পাম্প করে দিত। চিকন হাত এবং পা, কিন্তু দেখলে বোঝা যায় প্রচণ্ড শক্তিধর। শিরাউপশিরা বেরিয়ে আছে বডিবিল্ডারদের মত। বুড়ো আঙুলে লম্বা নখ, তার নিচে নীলচে ময়লা। সে টিপে টিপে সেই বুড়ো আঙুল দিয়ে দেখে ঠিকমত পাম্প হল কিনা। বৃষ্টির ছাঁট বাড়ছে, আমি দুই টাকা তার হাতে গুঁজে দিয়ে সাইকেল নিয়ে টান মারি। একটা গাড়ি প্যাঁ প্যাঁ করে হর্ণ মারে আমি সাইকেল ঘুরানোর সময়, আমি উপেক্ষা করে ডাইনে ঘুরি নীলক্ষেতে। আবার একটা হর্ন শুনলাম। ভাবলাম গাড়িগুলান মরে না ক্যান?
পরশুদিন ডাউনটাউনে গাড়ি চালানোর সময় রেড লাইটে স্টপ থেকে সামান্য এগিয়েছি এমন সময় কোথা থেকে এক চামবাজ সাইকেলওলা আমার গাড়ির বিপজ্জনক ঘনত্বে এসে কোণাকুণি কাট দিল। আমি হার্ডব্রেক চেপে মনে মনে গালি দিয়ে বললাম, হালার্পুত। রাস্তার নিয়মকানুন খালি গাড়িচালকের মানতে হবে এর কি মানে আছে। এই বজ্জাতের সাইকেল এখন ট্যাপ খাইলে আমার দোষ? শালার। সাইকেলগুলান মরেনা ক্যান?
অফিসে বসে আবজাব এইসব মনে পড়ছে আর লিখছি। অনেকদিন সচলে লেখা হয়না। ক্রিসমাস ইভ, আদ্ধেক অফিস খালি। কেউ কাজের মুডে নাই, আমিও না। আসতে হয় তাই আসলাম আজকে। কিছু করার নাই তাই লিখলাম একটা ব্লগরব্লগর। জানালা দিয়ে বৃষ্টি দেখতে দেখতে লিখলাম। লেখাটা ঠিকমত দাঁড়ায় নাই মনে হয়। যাক এতো ঘষামাজা করে ব্লগরব্লগর হয় নাকি? মোগলাই গপ্পো হইলে অন্য কথা ছিল।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ। গান শুনেন চন্দনের, আমি গিয়ে আরেক মগ কফি খাই।
মন্তব্য
কী চমৎকার লেখা!
ইউনিতে ক্রিসমাসের অফিসিয়াল ছুটি শুরু আজ থেকে। কাম নাই, কাজ নাই, কোথাও ঘুরতে যাওয়ার পয়সা নাই। ইচ্ছা করছে দুনিয়াদারির খেতা পুড়িয়ে দ্যাশের টিকেট কেটে ফেলি। কতদিন বাপ-মারে দেখি না!
এটা পড়ে বেদম হাসলাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
দুনিয়াদারীর খেতা পুড়ানো সহজ কাজ নয় গো বৈনডি, দুনিয়াদারীর খেতা ফায়ার রেজিস্টেন্ট। পুড়ানো বড় কঠিন।
..................................................................
#Banshibir.
প্রবাসে থাকার বেশিরভাগ সময়ই মনের ওপর জোর করে একটা কথা ভুলে থাকতে হয়, "আমি চাইলেও একটু দেশে গিয়ে ঘুরে আসতে পারব না"। এটা মনে হলেই মনের ভেতরেটায় একটা ভাংচুর হয়, মনে হয় সবকিছুকে একদফা মন মিটিয়ে শিষ্ট-অশিষ্ট গালি দিয়ে দেশে চলে যেতে পারলে ভালো হত।
ধুর
হাহাহা - আমারো একই অবস্থা তিথীডোর
লেখা পইড়া আরাম্পাইলাম পীর্সাব।
চন্দনের গানটার মিউজিক কপি মাইরা একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইছে এক ভারতীয় সিনেমায়। শুনতে অবশ্য খারাপ লাগেনাই। মনে পড়ল তাই কইলাম।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কনকি?! এই খবর তো জানতাম না। লিঙ্ক আছে?
..................................................................
#Banshibir.
বাহ, সহজ-স্বচ্ছন্দ কথনের কারণে আপনার লেখাটি বেশ মনে ধরে গেল। আমি এমন স্বছন্দ গদ্য লিখতে পারি না। গদ্য গতরে চর্বি জমে জলহস্তীর মতো দুর্ভার হয়ে যায়!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
প্রায়ই এরকম আবজাব ব্লগরব্লগর লিখে কেটে ফেলে দেই, ভালো হয়না। একটা দুইটা হঠাৎ নিজের মনে ধরলে এইখানে পোস্ট করি। আমার সব গদ্য সুবিধার না বস, যেগুলি পাসমার্ক পায় সেগুলিই আপ করি।
..................................................................
#Banshibir.
প্রায় প্রতিট গল্পের শেষটা অসাধারণ লেগেছে। স্থান আর পাত্রের সাথে যে মানসিকতা বদলে যায় সেটি বোধহয় সবার ক্ষেত্রে সত্য। যেমন বড় রাস্তায় সিএনজিতে চড়লে মনে হয় বাস-ট্রাক ড্রাইভার গুলারে থাপড়ান দরকার তাদের স্বৈরাচারী ড্রাইভিং এর জন্যে আবার বাস-ট্রাকে চড়লে মনে হয় দূর এ ছোট গাড়িগুলো রাস্তার কোন নিয়ম মানে না, এদের গালের নিচে আঙ্গুলের চিন্থ বসিয়ে দেওয়া দরকার। এরচেয়ে ভালো ব্লগরব্লগর ক্যামনে লেখে ?
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
হ। নদীর এপার কহে করিয়া কটমট, ওপারেতে দুনিয়ার আবাল মর্কট।
..................................................................
#Banshibir.
আপনেও দেহি একখান জ্বলন্ত অভিশাপ
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
লেখা পড়লাম। গান শুনলাম। বিছানা থেকে উঠে কফি বানাইতে ইচ্ছা করতেছে না। আমি মাস্টার মানুষ, লেপের তলে ঢুইকা পোলাপানের পরীক্ষার খাতা চেক করি। কাইলকা বড়দিনের ছুটি। এমনিতেই রাত জাগি, আজকে আরেকটু জাগবো, সকাল বেলা ঘর আলো আলো হয়ে গেলে ঘুমাইতে যাব। কিন্তু আপনে যে আমারে কফির কথা মনে করায় দিলেন, এইটা একটা সমস্যা না?
আপনার কুয়াশাভেজা দিনে রোদ্দুর রায়ের অভিশাপ
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
খাইছে আপনে মাস্টার নাকি? শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড, অর্থাৎ আপনে জাতির মেরুদণ্ড তৈয়ারকারী। সাব্বাস
ছাত্র একটারে দিয়া চা কফি বানায় নেন। ঝামেলা খতম।
..................................................................
#Banshibir.
নস্টালজিক ব্লগর ব্লগর পড়ে অনেক আরাম পেলাম। সারাদুনিয়ার মানুষ ছুটি কাটাচ্ছে ( আমি বাংলাদেশকেই মিন করলাম) তাও একদিন না পরপর তিন দিন, আর আজকে আমাকে অফিসে ডিউটি করতে হচ্ছে। হাউ রুড বসেস আর !
আপনার মাদ্রাজ বিষয়ক তথ্য আবিষ্কার টা খুব মজা লেগেছে। মাদ্রাজ ট্যানারি। হাহাহহা। যখন যে যানবাহনে চড়ি, বিপরীতে যারা থাকে সবসময়ই আমার তাদের মাইর দিতে ইচ্ছে করে। মাঝে মাঝে সবচেয়ে রিস্কি লাগে ছোট ছোট পোলাপাইন যারা চিপা গলি থেকে বের হয়েই মনে হয় চোখ কান বন্ধ করে রাস্তার মাঝখান দিয়ে দৌড় দেয়।
অফিসে বসে কাল্পনিক ছুটি ছুটি মুডে আপনার লেখাটা পড়তে ভালো লাগলো। শুভকামনা, তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে এসে বেড়িয়ে যান।
====
অপর্ণা মিতু
হ ছোট পুলাপানের আঁৎকা দৌড় দেখলে মাঝে মধ্যে মনে হয় গাড়ি থামায়া গিয়া একটা চড় দিয়া আসি
..................................................................
#Banshibir.
ঐদিকে কবুতর ফারুক মহাজন ফকির শা'র আঁকা ছবি উদ্ধার করতে গিয়ে মাসখানেক হয় নিখোঁজ।
কোন খবর জানেন নাকি তার?
সামনের বছর আসতেছে কাহিনী। ভয় নাই।
..................................................................
#Banshibir.
এইটা বোধ হয় হয় আপনার 'অন্যরকমতম' লেখা। পড়ে সাংঘাতিক ভাল লাগছিল। ছাড়াছাড়া কথাবার্তা, আন্তরিক। গোয়েন্দাপ্রবর আসুন আপত্তি নাই, এখন থেকে পীরপ্রবর মাঝে মাঝে এলেও ভাল লাগবে।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
হা হা হা। গোয়েন্দাপ্রবর বনাম পীরপ্রবর।
কইলেন যখন...
..................................................................
#Banshibir.
খুব ভাল লাগছে পীরসায়েব
কয় কেজি ভালো লাগছে?
..................................................................
#Banshibir.
বাঃ! ৫ এ ৫
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
সাব্বাস, ৫ এ ৫। তাইলে তো গোল্ডেন জিপিয়েফাইভ!
..................................................................
#Banshibir.
অসাধারন! বিদেশ জীবন এতো স্বার্থপর এর মত জীবন, তারপরেও পরে আছি, খিচুরি ইলিশ খাওয়ার আবদারটা আর করতে পারিনা, তারপরেও পরে আছি। অবশ্য বিদেশ একটা জিনিস হাড়ে হাড়ে শিখিয়ে দিয়েছে - survival - may be this is what the biggest trade I made in life । অনেক ভালো লাগলো
জীবনটাই ট্রেড-অফ বস। হিসাব কইরা লাভ নাই। তবে খিচুড়ি ইলিশ সত্যই খাইতে মন চাইলে যোগাড় কইরা খায়া ফেলেন, এইসব মনের আবদার ফালায় রাখা ঠিক না। আমি মাঝে মাঝে তেহারি খাওয়ার শখ উঠলে দেড় ঘন্টা দূরে গিয়া খায়া আসি
..................................................................
#Banshibir.
বহুতদিন পর একটা সেইরকম ব্লগরব্লগর পড়লাম। খুবই আরাম লাগলো।
আমার বৃষ্টি নিয়া এক ধরনের অবসেশন মতো আছে। যেকোনো লেখা, ছবি, সিনেমা যখন বৃষ্টি, ঝড়, মেঘলাদিন ইত্যাদির কথা বলে, আমি সেইগুলা আগ্রহ নিয়ে পড়ি, দেখি, শুনি। আপনার স্মৃতিচারণের ডিটেইলগুলা অসাধারণ। বৃষ্টির দিনে স্কুলের বর্ণনাগুলি একদম মিলে গেল। আমার স্কুল জীবনে সবচে দুর্ধর্ষ বৃষ্টি দেখসিলাম ক্লাস টেনের টেস্ট পরীক্ষার সময়। বৃষ্টির কারণে টেস্টের অংক পরীক্ষা পিছাইতে বাধ্য হইসিলো স্কুল কর্তৃপক্ষ- যদিও অনেকেই ভিজে একাকার হয়ে স্কুলে গেছিলাম। আমি স্কুল থেকে আসার সময়ে যদি বৃষ্টি পড়ি পড়ি অবস্থা থাকতো, রিকশাতে উঠার আগে জিজ্ঞেস করতাম, "কাপড়" (মানে প্লাস্টিকের ওই র্যাপার আর কী) আছে নাকি। থাকলে ওই রিকশাতে চড়তাম না। যেই রিকশাতে থাকতো না, সেইটায় চড়ে ভিজতে ভিজতে বাসায় আসতাম। বাসার সামনে কেউ জিজ্ঞেস করলে কাচুমাচু মুখে বলতাম যে, আমি কী করতে পারি... হঠাৎ রাস্তায় বৃষ্টি নামলো।
আমিও আপনার মতো নতুন ড্রাইভার। গাড়িবিহীন অসম্ভব এই জায়গাতেও প্রায় আড়াই বছর আলসেমি কইরা পার কইরা দিছিলাম। আর পারলাম না। যাউকগা, আপনার গাড়ি চালানো আনন্দময় হউক। এমন আরো লেখার প্রত্যাশায় থাকলাম।
অলমিতি বিস্তারেণ
হ একদম ঠিক, রিক্সার পলিথিন ছিল কাপড়। সেইটা চোদ্দ ভাঁজ করে সিটের নিচে রাখা থাকত।
গাড়ি চালানো আনন্দময় হইতেছে। আপনাদের দু'আ ও ভালুবাসা।
..................................................................
#Banshibir.
কেমন খাপছাড়া, অলস, স্বকথন-ভঙ্গিমা - খুব ভাল লেগেছে পড়ে। সুন্দর!
আমি সাধারনত আঁটঘাঁট বেঁধে লিখি, আগে থেকে বিগিনিং এন্ডিং থিম এইসব ভেবে রেখে। পড়ার পরে কয়টা রিভিশন দেই। এই লেখাটায় এতো হুজ্জত করতে ইচ্ছা করল না
..................................................................
#Banshibir.
বাঃ আপনার বেশ অন্যরকম একটা লেখা।
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
হ আমার হইল সত্যপীর ভ্যারাইটি এন্ড কোং। নানাবিধ লেখা প্রদান করিয়া থাকি
..................................................................
#Banshibir.
ছোটবেলায় আমাদের সকালের নাস্তা ছিল রেশনের আটায় তৈরি রুটি, রেশনের চিনি সহযোগে। দিনের পর দিন একঘেয়ে সেই আটার রুটি, সেটার চেয়ে আরও অসহ্য চিনির যুগলবন্দী। তখন মনে হত সকালের নাস্তা খাওয়াটাই বুঝি এ দুনিয়ার সবচেয়ে কষ্টের কাজ। আমাদের ছোটবেলার গডফাদার শিবুদা এ থেকে উদ্ধারকল্পে এক নিদান দিলেন। বললেন- কালকে থেকে শুধা রুটি খাবি, আর চিনিগুলা আমাকে দিয়া যাবি। মা'র শ্যেনদৃষ্টি এড়িয়ে কাজটা করা সহজ নয়, অনেক কষ্টে শিবুদার কাছে চিনি সহ হাযির হই। শিবুদা চিনিগুলো পিপড়া এবং অন্যান্য পোকামাকড়ের গর্তের মুখে রেখে দেন, আর আমরা গভীর আগ্রহ নিয়ে পরবর্তী ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করতে থাকি। এভাবে কয়েকদিন চলার পর বৈজ্ঞানিক গবেষণায় আমার আগ্রহ থিতিয়ে আসে, শিবুদার দরবারে চিনিসহ হাযিরা দান থেকে বিরত থাকি। কয়েকদিনের বিরতির পর আবার চিনিসহ রুটি খেতে গিয়ে আবিস্কার করি, শুধা রুটির চেয়ে চিনিসহ রুটি অধিক সুস্বাদু।
দাঁত থাকিতে দাঁতের মর্যাদার মতন, চিনি থাকিতে আপনে চিনির মর্যাদা বুঝেন নাই দেখা যাইতেছে।
মাঝখান দিয়া পিঁপড়াগুলার চিনি না পায়া মন খারাপ হইছিল নিশ্চ্য়ই
..................................................................
#Banshibir.
আপনার নিয়মিত ধাচের বাইরে একটু অন্য রকম লেখা পড়ে বেশ ভাল্লাগল। বাসায় কাজের ফাঁকেফাঁকে মাঝে মধ্যেই আমি বাংলা রেডিও শোনার চেষ্টা করি। কিছুদিন আগে কয়েকজন আর জে'র আড্ডা শুনেতো আমি হতবাক। রেডিও'র মত একটি মিডিয়ামে এরা রীতিমত ইতরামি করছিল। এরা কি বলে, কিভাবে বলে, কথা বলার টপিক এসব দেখার জন্য কি কোন ডিরেক্টর/প্রোডিউসার থাকে না? নাকি তারাও ওই একি লেভেলের পাব্লিক?
সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল
থাকুক যে যার মত। আমার কি। গান শুনা দিয়া কথা। আমার টাইম বিকালের দিকে, ঢাকায় যখন গভীর রাত, তখন একের পর এক গান বাজে। সকাল পর্যন্ত, কোন আর জে ফার জে নাই। বিনা বিরতিতে গানের পরে গান। এফেম রেডিও শুনার ঐটা একবারে বেস্ট সময়
..................................................................
#Banshibir.
লেখা হুলুস্থুলুস হইয়াছে। মন্তব্য করিবার নিমিত্তেই লগাইলাম। পরবর্তী আহারের কালে আমার তরফ হইতে গুড় যোগ করিয়া লইবেন।
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
পরবর্তী আহারের কালে মেন্যু ইজিকোল্টু ভাত + ডাইল্ + লাউ + কাবাব। সাথে আচার যোগ করা চৈলতে পারে, কিন্তু গুড়?!
..................................................................
#Banshibir.
ভালু ভালু অনেক ভালু।
-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে
তিথিডোরকে ধন্যবাদ এই চমৎকার লেখার লিঙ্ক পোস্টে দেয়ার জন্য।
আপনাকে ধন্যবাদ চমৎকার একটা গান মনে করিয়ে দেয়ার জন্য।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
নতুন মন্তব্য করুন