বাজারে তুমুল উত্তেজনা। পাকিস্তানের জনৈক ব্যারিস্টার জাভেদ ইকবাল জাফ্রি মামলা ঠুকে দিয়েছেন এই বলে যে, হে লন্ডন। পবিত্র পাঞ্জাবের কোহিনূর ফিরত চাই দিতে হবে, কেননা তা জোরজবরদস্তী করে শিখ মহারাজা রঞ্জিত সিং এর নাতির অবুঝ কোল থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল।
সাব্বাস। আই লাইক দিছ। আইসেন পাঠক পাথরের মালিকানা যাচাই করি। আপনি বিজ্ঞ বিচারক আমি নিরপেক্ষ মোক্তার। আছেন সাথে পাকিস্তানি ব্যারিষ্টার। দেখা যাক কিডা পাপী কিডা জামিনদার।
… … …
(বিচারসভা। বিবিধ লোকজন। অর্ডার অর্ডার। শপথ করিয়া বলুন যাহা বলিব ইত্যাদি)
লন্ডন, এই কথা কি সত্য যে বেবুঝ শিশু দালিপ সিং এর কোল থেকে কোহিনূর ছিনিয়ে আনা হয় জোরপূর্বক?
বিজ্ঞ আদালত, ইট ইজ ট্রু দ্যাট উই গট এ হোল্ড অফ কোহিনূর ডায়মন্ড ফ্রম সিখ ডালিপ সিং। দ্যা মাইটি ব্রিটিশ দ্যাট টাইম ওয়াজ ডি ফ্যাক্টো রুলার অফ পাঞ্জাব অ্যান্ড ইন্ডিয়া অ্যাজ অ্যা হোল…
উঁহু কাট দি ক্র্যাপ অর্থাৎ কিনা হাগুটিকে কেটে ফেলুন। কে রুলার কে ইরেজার সেই কথা জিজ্ঞাসা করা হয় নাই। আমি প্রশ্নটি আরেকবার করছি। কোহিনূর পাথর জোরপূর্বক ছিনিয়ে আনা হয় কিনা?
ইট ইজ আন্ট্রু। ইয়েস কোয়াইট রাইট, উই গট দ্য জেম ফ্রম ডালিপ সিং। কিন্তু সে ব্রিটিশ রাজকে নিজে থেকে কোহিনূর তুলে দিয়েছে শ্রদ্ধা সম্মান ও কৃতজ্ঞতা বশতঃ...
অবজেকশন! মহান আদালত হাম হ্যায় দুনিয়াকি বহৎ বড়িয়া ব্যারিস্টার জাফেদ ইকবাল জাফ্রি। ইয়ে ব্রিটিশ ঝুটা হ্যায় ভুলো মাত ভুলো মাত। রঞ্জিত সিং পাঞ্জাবের অহংক...আহেম...পাঞ্জাবের ইতিহাসের একটি অংশ। পৃথিবী ভুলে যায়নি কিভাবে তাঁর শিশু নাতিটিকে ঠকিয়ে পাথর ছিনিয়ে নেয়া হয়।
ডিয়ার বড়িয়া ব্যারিস্টার, ইজন্ট ইট ট্রু দ্যাট রঞ্জিত সিং নেভার ওয়ান্টেড দ্যাট জেম টু বি পাসড অন টু নেক্সট জেনারেশন? একথা কি সত্য নয় যে তার উইলে লিখা ছিল মৃত্যুর পরে পাথর যাবে উড়িষ্যার জগন্নাথ মন্দিরে?
নেহি ইয়ে জগন্নাথ ঝুটা হ্যায় ভুলো মাত। এরকম কোন উইলের কথা পাঞ্জাবের কেউ কোনদিন শোনেনি। আপনি কালকে মরে গেলে আপনার গায়ের কম্বল কি ওয়েস্টমিন্সটার চার্চে যাবে? পিতার গায়ের কম্বলই পুত্রের গায়ের সম্বল। মারা যাবার পরে পিতার সম্পদ পুত্র পায় এ তো সারা দুনিয়াতেই চলে আসছে। উইলের কথা কেন আসছে এখানে কিঁউ? সকলই ষড়যন্ত্র।
বিজ্ঞ আদালত আমি দুইটি কথা এখানে বলতে চাই।
ডান হাত উঁচু করে ধরে শপথ করুন। বিশদ বলুন আপনি কে এবং কেন।
কোনরূপ ভূমিকা না করে বলছি, আমার নাম ভূমিকা সিং। বলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা। আমি বলতে চাই একথা সত্য যে ব্রিটেন চুরি করেছে কোহিনূর এবং তা ফিরত দেওয়া তার কর্তব্য, কিন্তু শুধুমাত্র ভারতে। পাকিস্তান এইখানে অবান্তর প্রসঙ্গ, কোহিনূরের ওপর পাকিস্তানি ব্যরিস্টার জাভেদ ইকবাল জাফ্রির দাবী বলিউডের অভিনেতা শহীদ কাপুরের গোলাপি লিপ্সটিকের মতই ফিকে ও হাস্যকর।
অর্ডার! অর্ডার! কোন ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়। ভূমিকা সিং, আপনি কি তবে ভারতের কোহিনূর দাবীদার? বিশদ বলুন আপনি বা আপনারা কারা।
বিজ্ঞ আদালত, আমি ডেভিড ডি’সুজা। আমি এবং ভূমিকা সিং স্বতন্ত্র দাবী নিয়ে এসেছি কেননা ইতিহাসবেত্তা মাত্রই সকলে জানেন, বর্তমান ভারতে ব্রিটিশ বিনা অনুমতিতে ট্রেসপাসের মাধ্যমে ঢুকে দেশটির সকল সম্পদ চুরি করে…
বিনা অনুমতিতে ট্রেসপাস?! হাউ ডেয়ার ইউ! দিস ইজ ল্যুডোক্রেস! ইয়োর অনার, মাই নেম ইজ অ্যান্ড্রু রবার্টস। অ্যাজ এ হাইলি এক্লেইমড ব্রিটিশ হিস্টোরিয়ান, আমি বলতে চাই যে ব্রিটিশ ক্রাউন জুয়েল কোহিনূর ডায়মন্ডের জন্য সর্বাপেক্ষা সঠিক স্থান। ভারতীয়দের মনে রাখা চাই, তিন শতকের উপরে ইংরেজের ভারতে কঠোর কাজের জন্যই আজ দেশটি সুজলা, সুফলা, গণতন্ত্রের সুবাতাস বয়ে যাওয়া, আধুনিক এবং সফল দেশ। এই এতকিছু দেবার পরেও ভারতের কোন কৃতজ্ঞতা তো নেইই, বরং আমাদের রাইটফুল পজেশনের দিকে হাত বাড়ানো হচ্ছে আজ। ট্রুলি ডিস্টেস্টফুল।
অ্যান্ড্রু রবার্টস, আপনার তথ্যের জন্য ধন্যবাদ।
শুধু তাই নয়, ওয়ান মাইট ওয়ান্ডার ইয়োর অনার। আজ পাকিস্তান ভারত যে ফেনা তুলে ফেলছে ইংরেজ নাকি জবরদস্তীপূর্বক জেম হাতিয়ে নিয়েছে...মে আই পয়েন্ট আউট দ্যাট অলদো দ্যাট ইজ আন আউটরাইট লাই, কিন্তু যদি তর্কের খাতিরে তা সত্য বলে ধরেও নেই, যদিও তা সম্পূর্ণ ভুল অ্যাজাম্পশন হবে, স্টিল ইফ উই অ্যাজিয়ুম, র্যাদার থিয়োরেটিক্যালি স্পিকিং, লেট’স সে…
কী বলতে চান অ্যান্ড্রু রবার্টস পষ্ট করে বলে ফেলুন।
কথা হল ইয়োর অনার, মাহারাজা রঞ্জিত সিং কোহিনূর কিভাবে পেলেন? আমরা কি ধরে নেব তিনি কাউকে না পিটিয়েই এই পাথর হস্তগত করেছেন? কোহিনূর যদি ব্রিটিশ ক্রাউন জুয়েলের অংশ না হয় তাহলে সেটা কোন বিচারে রঞ্জিত সিং এর উত্তরপুরুষের অধিকার?
সুবহানাল্লাহ! চমৎকার প্রশ্ন। একথাই আমরা বলে আসছি সেই নব্বই দশকেরও আগে থেকে।
আপনারা বলে আসছেন? বটে, কারা আপনারা?
হে বিচারক, আমার নাম উসমান তারিক। তোমার এই হাস্যকর বিচারপ্রক্রিয়া ও পদ্ধতি সকলই হারাম, বিচারের অধিকার একমাত্র আল্লাহ’র এবং তাঁর নির্বাচিত শুরার।
উসমান তারিক আপনি কি আইসিস?
ছোঃ। আইসিস। সালাফিদের কথা ছাড়ো। আমি প্রকৃত মুসলমান, তালিবান। আফগানিস্তানের তালিবান। কোহিনূর আফগানিস্তানের প্রাপ্য।
কিরকম?
কিরকম মানে কী? কোহিনূর আফগানিস্তানের প্রাপ্য ব্যস। আল্লাহ’র বান্দা মুসলমান মিথ্যা কথা বলব নাকি? প্রমাণ চাইলে দিব এক আল্লাহ’র কাছে হাশরের ময়দানে, এইখানে প্রমাণ দেওয়ার আমার কোন ঠেকা পড়ে নাই।
খিক খিক।
কে আপনি হাসছেন হে মামলার মধ্যখানে, বাম থেকে তৃতীয়? উঠে দাঁড়ান। মানহানির মামলা খেতে না চাইলে হাসি মুছে সোজা হয়ে দাঁড়ান এবং হাসার কারণ বলুন।
হুজুরে আলা, আমার নাম হেকিম ইয়াহিয়া পাশা। পারস্যের বিখ্যাত ইউনানি হেকিমি পাশা বংশের সুযোগ্য সন্তান। আমাদের পরিবারের পাশা চিমটি ভুবনবিখ্যাত।
পাছা চিমটি?
উঁহু পাছা চিমটি নয় পাশা চিমটি। অবশ্য পাছার শল্যচিকিৎসায় ব্যবহৃত হবার সময় পাছা চিমটিও ডাকা যেতে পারে।
কি ছাতা মাথা বলছেন? কোহিনূর পাথর যাচাইয়ে চিমটিবাজি কেন?
হুজুর কথা হচ্ছিল আমি কোন কারণে এই এই দেওবন্দি উজবুক উসমান তারিকের কথায় হাসছি। এই বান্দা মহামূর্খ, এর কাছে কোহিনূরের আফগান দাবীর কার্যকারণ জানতে চাওয়া বুরবকি। তবে আমার জানা আছে কেন কিছু আফগান কোহিনূর দাবী করে থাকে।
বেশ। শোনান তবে কেন করে থাকে।
সে এক বিরাট ইতিহাস।
আচ্ছা?
আরে নাহ হুজুর মজা করলাম। আফগান ইতিহাস আবার বিরাট হবে কোন দিক দিয়ে, এরা কি মহান পারস্য জাতির মত হাজার লক্ষ বছরের ঐতিহ্যের ধ্বজাধারী? একদমই না, এরা কাবাব খানেওলা উজবুক। এদের কোহিনূর দাবীর কারণ সরল, নাদির শা হত্যা হবার পর নানান ফিকিরে কোহিনূর হাতে আসে আহমেদ খাঁ আবদালির। সে পরে আফগানিস্তানের আমীর সেজে বসে আর তকমা নেয় আহমেদ শা দুররানি। তারপরে তাঁর বংশ ষাট বাষট্টি বছর ধরে কাবাব খায় আর পাগড়িতে কোহিনূর বেঁধে আফগানিস্তান শাসন করে।
পাগড়িতে কোহিনূর বেঁধে বলছ? আচ্ছা আচ্ছা, বেশ কথা।
হ্যাঁ। এই যে পেশ করছি বহুল প্রচারিত দুররানি পোর্ট্রেট, যেখানে পাগড়িতে কোহিনূর হীরের ছবি।
বেশ পাগড়ি।
উঁহু একবারে ছেঁদো পাগড়ি। ইস্ফাহানের আতরওলার পাগড়ি এর চেয়ে জমকালো। সে যাক, এই দুররানির নাতি শা সুজা ভাগ্যের ফেরে পালিয়ে আসে লাহোর, আর সেইখানে মহারাজা রঞ্জিত সিং তাঁর কাছ থেকে হীরে হাতিয়ে নেয়...
আ-হা! আ-হা! আই টোল্ড ইউ মাই লর্ড, দিস কেইস ইজ নাথিং বাট এ শ্যাম। অকৃতজ্ঞ ইন্ডিয়ানেরা বলছে মাইটি ব্রিটিশ নাকি নেটিভ কিং রঞ্জিত সিং এর নাতির কাছ থেকে জেম ছিনিয়ে নেয়, যেখানে মাহারাজা নিজেই আরেক রুলারের নাতির কাছ থেকে মূলত ছিনিয়ে নিয়েছিল। সাচ শেইম মাই লর্ড, সাচ অ্যা টেরিবল অ্যান্ড প্যাথেটিক লাই ইন্ডিড।
আরে ক্যায়া প্যাথেটিক লাই বলতে হো। রঞ্জিত সিং বিধর্মী হলেও লোক ভালো। লাহোরের সাহসী সন্তান রঞ্জিত সিং কখনোই…
থামুন জাভেদ জাফ্রি। অ্যান্ড্রু রবার্টস, আপনাকেও সাবধান করে দেয়া হল আরেকজনের কথা মাঝে না ঢুকতে। হেকিম পাশাকে বলতে দিন। আর এইযে ভূমিকা সিং, মোবাইল ফোন বন্ধ করুন নইলে ডেভিড বার্গম্যান ট্রিটমেন্ট দেয়া হবে।
ও আচ্ছা ওকে। ঠিকাছে বিজ্ঞ আদালত, খামোকা বার্গম্যান বলে গালি দেবেননা। আমি এই মোবাইল বন্ধ করলাম।
আচ্ছা। পাশা, তারপরে বলুন কী ঘটনা। মহারাজা রঞ্জিত সিং তাহলে আফগান বালক শা সুজার কাছ থেকে কোহিনূর হাতিয়ে নেয়? তাহলে তো কোহিনূরের ওপর আফগানদের দাবী আছে। উসমান তারিক কথা ভুল বলেনি।
হেঁ হেঁ। তা হুজুর বলতে পারেন। অবশ্য শা সুজা বালক ছিলনা যখন রঞ্জিত সিং তার কাছ থেকে পাথর ছিনিয়ে নেয়। সুজা ততদিনে বুইড়া ভাম। যাক সেকথা। আজ বিজ্ঞ হাকিম ও সকলের কাছে অধম ইয়াহিয়া পাশার বিনীত প্রশ্ন। কথা হল, কোহিনূর যদি আফগান দুররানি কি ভারত পাকিস্তানের রঞ্জিত সিংয়ের প্রাপ্য হয়, তবে তার আগে একটি কথা থেকে যায় বটে। এই যে মস্ত হীরের টুকরো কোহিনূর, পর্বতের রশ্মি, এই হীরের নাম কোহিনূর কে দিল তবে? কে? আফগান? ভারতীয়? চৈনিক? মালয়? সিন্ধি? জয়পুরি? ভোজপুরি? মৈথিলি? ভাইকিং? নানকিং? কে কে কে কে কে?
ওহো মাথা ধরিয়ে দিলে বাপু।
কে?
দুত্তোর। কে তুমিই বলে দাওনা।
হাঁ!। কোহিনূর ফার্সি নাম। পুত্রের নাম পিতাই রাখে হুজুরে আলা, ঘোড়ার খানসামা নয়। পারসীক হীরে কোহিনূরের নাম কোহিনূর দিয়েছেন নাদির শা! হাঁ! কোহিনুর পারস্যের সম্পদ! হাঁ!
হোয়াট নন্স! কোহিনূর জেম তার ইতিহাসে মোটে আট বছর পারস্যে ছিল, আর সে কিনা সবাইকে ডিঙিয়ে হল দাবীদার? দিস ইস সিলি অ্যান্ড রাবিশ। দিস পাচা পার্সন ইজ অ্যা কমপ্লিট অ্যান্ড আটার ফুল!
অ্যান্ড্রু রবার্টস, আপনাকে দ্বিতীয়বার সাবধান করা হল। আরেকবার বেমক্কা কথার মাঝে ঢুকে পড়লে লন্ডনের দাবী খারিজ করে দেয়া হবে।
বিজ্ঞ আদালত।
ডি’সুজা। আপনারা তো ভারতের দাবীদার। কী বলার আছে আপনাদের, হেকিম পাশার দেয়া নতুন তথ্যের আলোকে?
সম্মানিত আদালত। হেকিম পাশার কোন তথ্যই আলোকিত করার মত নূতন নয় বরং পচা বেগুনভাজার মত আংশিক এবং পরিত্যাজ্য। নাদির শা পাথরের নামকরন করেছিলেন হয়তো, কিন্তু দিনের আলোর মত সত্য এই যে তিনি সেইটা ভারতের মোগল সাম্রাজ্য হতে লুণ্ঠন করেন মাত্র। চোর, বাটপার, খুনী এবং লুটেরা নাদির শা আর যা ই হোন কোহিনূরের মালিক নন।
চোপরাও বিয়াদব হিন্দুস্তানি। নিজে তো কনভার্টেড কেরেস্তান, তুই ভারতের প্রতিনিধি হলি কোন হিসাবে?
অর্ডার! হেকিম পাশা, কোন ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়। এইটেই আপনার সর্বশেষ ওয়ার্নিং।
বিজ্ঞ আদালত। নির্মম খুনী নাদির শা এর বংশধরের কাছ থেকে কী ই বা আমরা আশা করতে পারি।
ডি’সুজা! আপনাকেও ওয়ার্নিং দেয়া হল। তবে বলে যান, মোগল সাম্রাজ্যের হাতে কোহিনূর হীরা কিভাবে আসল?
যেভাবে পুত্রের হাতে পিতা আসে।
অ্যাঁ?!
ইয়ে যেভাবে পিতার হাতে পুত্র আসে। মায়ের হাত ধরে। ভারতমাতা।
খুলে বলুন।
কোহিনূর বড় পুরাতন ভারতীয় রত্ন। কোহিনূর আকাশ থেকে পড়ে আসেনি বা গাছের ডগায় লাউয়ের মত ঝোলেনি। কোহিনূর ঐতিহ্যবাহী ভারতের দাক্ষিণাত্যের খনি থেকে উত্তোলিত হয় কোন এক সময় যখন কিনা পৃথিবীর বেশীরভাগ সভ্যতাই হাফপ্যান্ট পরত। কোহিনূর হীরে ভদ্রকালী দেবীর চোখের মণি হয়ে ছিল এই ভারতেই বিজ্ঞ আদালত, ওয়ারাঙ্গালের মন্দিরে। গিয়াসউদ্দিন তুঘলক কাকাতিয়া রাজাকে হত্যা করে এই মণির পাথর ছিনিয়ে নেয়, এরপর কয়েকশত বছর তা দিল্লীর সুলতানদের বগলে থাকে। পয়লা মোগল বাদশা বাবুর পানিপতের যুদ্ধে ইব্রাহীম লোদীকে হারিয়ে দখল নেন এই পাথরের, তারপর সকল মোগল বাদশার চক্ষের মণি হয়ে ভারতের পাথর ভারতেই রয়ে যায়, যতদিন না খুনী নাদির শা এসে দিল্লী লুণ্ঠন করে পাথর ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
ইয়োর অনার।
হ্যাঁ অ্যান্ড্রু রবার্টস। কি বলুন?
দিস সো কলড ইন্ডিয়ান হিস্টোরিয়ান ইজ মিল্কিং অ্যান ইনভিজিবল কাউ। আ ইয়েস ইনডিড। মাচ অফ হোয়াট হি ইজ সেয়িং ইজ নাথিং বাট আন আইরিশ গ্র্যান্ডমাদার্স টেইল। দ্যাটস অল। ইয়েস অল টলটেইলস ইউ সী। এই যে পাথর ডেলহির সুলতানাতে ছিল, বা তার আগে মন্দিরে আইডলের চোখে ছিল, কিম্বা বাবুর’স ডায়মন্ড...ডু ইউ হ্যাভ এনি প্রুফ দ্যাট পীস অফ জেম ওয়াজ অ্যাকচুয়ালি দ্যা কোহিনূর অ্যাজ উই রেফার নাউ? অল নাইস স্টোরিস ইউ গট দেয়ার, নো প্রুফ।
বিজ্ঞ আদালত। ইংরেজ অ্যান্ড্রু রবার্টস কি তাহলে বলতে চাচ্ছেন দিল্লীর বা মোগলের হাতে কোহিনূর কোনদিন ছিলনা? সবই গালগল্প? কী আশ্চর্য মিথ্যাভাষণ!
নো নো ডি’সুজা, আমি তা বলিনি। অল আই ওয়ান্টেড টু মেইক শিওর উই অল আন্ডারস্ট্যান্ড ইজ দ্যাট, কোহিনূরই যে সেই পাথর তার সপক্ষে কোন জোরালো প্রমাণ নেই। অল টেইলস। ইয়েস টেইলস আই সে। বেইসলেস। হোয়াট হ্যাজ বেইস হাওয়েভার, ইজ দ্যাট কোহিনূর জেম ইজ রাইটফুলি ব্রিটিশ প্রোপার্টি! ইন্ডিড।
কভি নেহি!
ক্যা ঝুট বাত বলতে হো।
বেবাকশীদ! খুদা হাফিজ! তামাম শু’দ!
শাট আপ ইউ স্টুপিড…
অর্ডার! অর্ডার! অর্ডার! লন্ডন বনাম পাকিস্তান বনাম ভারত বনাম আফগানিস্তান বনাম ইরান বনাম বিবিধের একটি কোহিনূর ঘটিত মোকদ্দমা বাতিল করতে আমি বাধ্য হব এই মূহুর্তে সকলে খামোশ না হলে। শান্ত হউন।
বিজ্ঞ আদালত।
কে?
আমার নাম স্ট্যালিও কন্টস, আমি জাতে গ্রীক। এই সব দেখিয়া শুনিয়া আমি ক্ষেপিয়া গিয়া এ ই চিৎকার করিয়া বলতে চাই, যে ইউরোপ ইরান ইরাক ভারত পাকিস্তান উজেবকিস্তান রাশিয়া আফগানিস্তান সকলই মূলত গ্রীসের অধীন। মালিক গ্রীস জিন্দাবাদ!
হাঁহ? কিসের মধ্যে কি নিয়ে এলে? গ্রীস?!
বিজ্ঞ আদালত, এ সকলই একদিন মহান গ্রীক রাজা আলেকজান্ডারের অধীনে ছিল। তাই এ সকলই রাইটফুলি গ্রীক প্রোপার্টি।
বিজ্ঞ আদালত, এ গ্রীক রামছাগলের কথায় কান দেবেননা। আলেকজান্ডার যখন আন্ডি পরে দুধ খেত তারও বহু আগেএই সকল জমির মালিক ছিলেন মহান পারস্যের আখমেনিদ সাম্রাজ্যের রাজা মহান সাইরাস ও তার বংশ। হিসাবে এ সকলই পারস্যের অংশ।
হোয়াট অ্যা পাইল অফ ইডিয়টস…
নেহি কভি নেহি। ঝুট হ্যায়। ভুলো মাত।
কখনই নয়…
অর্ডার! অর্ডার! অর্ডার! অর্ডার! অর্ডার!
… … …
(ইংল্যান্ডের রাণী এলিজাবেথের বাসভবন। সকাল)
ইয়োর ম্যাজেস্টি। আমাদের কাছে ইন্টেল আছে কোহিনূর নিয়ে বিচার বসেছে সাটিয়াপীরের দরবারে।
আই সি। আর উই লুজিং?
হার্ড টু টেল ইয়োর ম্যাজেস্টি। নানান দাবীদার এসে জুটেছে। উই আর কীপিং অ্যা ক্লোজ আই।
ইয়েস জেমস আই য়ুডন্ট য়োরি টু মাচ ইফ আই ওয়্যার ইউ। সাটিয়াপীরের জানাশোনা কম, লোকে তার কথা পুরো বিশ্বাস করবে না। ষাষ্ঠা পান্ডাভা লিখলে একটা কথা ছিল। ছেড়ে দাও কোহিনূর শ্যানানিগান, সময় নষ্ট। আওয়ার ক্রাউন জুয়েল ইজ ফাইন। প্লিজ টেল ভিক্টোরিয়া আয়্যাম রেডি ফর মাই মর্নিং দার্জিলিং টী।
ইয়েস অফ কোর্স ম্যা’ম। কামিং রাইট আপ।
(শেষ)
কৈফিয়তঃ
রাণী এলিজাবেথ, সত্যপীর, ভূমিকা সিং, জাভেদ জাফ্রি, ডেভিড ডি’সুজা, অ্যান্ড্রু রবার্টস এবং তালিবান সত্যই আছে। কল্পনা নয়। বাকী চরিত্রসমূহ কল্পনা। কথোপকথনের প্রমাণ চাহিয়া লজ্জা পাইবেন না।
তবে ইংরেজ সাহেব অ্যান্ড্রু রবার্টস এই কথা সত্যই বলছেনঃ “Those involved in this ludicrous case should recognise that the British Crown Jewels is precisely the right place for the Kohinoor diamond to reside, in grateful recognition for over three centuries of British involvement in India, which led to the modernisation, development, protection, agrarian advance, linguistic unification and ultimately the democratisation of the sub-continent.” হালার্পুত।
সূত্রঃ
Kevin Rushby, Chasing the mountain of light
Dale R. Perelman, Mountain of Light: The Story of the Koh-I-Noor Diamond
Bhai Nahar Singh, Kirpal Singh, History of Koh-i-Noor, Darya-i-Noor, and Taimur's Ruby
Iradj Amini, The Koh-i-noor Diamond
Anjana Motihar Chandra, India Condensed: 5,000 Years of History & Culture
http://www.reuters.com/article/pakistan-diamonds-idUSL3N13S43R20151203
http://timesofindia.indiatimes.com/world/uk/Indians-sue-UK-Queen-for-return-of-stolen-100m-Kohinoor-diamond/articleshow/49720905.cms
http://www.theguardian.com/world/2000/nov/05/afghanistan
https://en.wikipedia.org/wiki/Koh-i-Noor
মন্তব্য
এই প্রসঙ্গে একটা ছোট্টো কথা আছে।
তাজমহল যখন বানানো শুরু হয়, তার অনেক আগে থেকেই বাংলা মোগল সাম্রাজ্যের সুবা ছিলো। কোটি কোটি টাকা খাজনা আদায় করা হয়েছে বাংলা থেকে। কাজেই ধরে নেওয়া ভুল নয় যে বাংলা থেকে আদায় করা খাজনা তাজমহল নির্মাণেও লেগেছে।
কিন্তু তাজমহল দেখতে গেলে বাংলাদেশীদের প্রবেশমূল্য ভারতীয়দের প্রবেশমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি রাখা হয়। এটা খাড়ার উপ্রে অন্যায়। বেশি প্রবেশমূল্য রাখতে হলে রাখা উচিত মোগল শাসনবহির্ভূত দাক্ষিণাত্যের প্রদেশগুলির লোকজনের কাছ থেকে।
অবিলম্বে বাংলাদেশীদের জন্য তাজমহলের প্রবেশ ফি আম ভারতীয়দের প্রবেশ ফির সমান করা হোক।
আরে রাখেন প্রবেশ ফী সমানাধিকার। ভালো কথা তুলছেন। হান্টারসাবের বইতে আছে শাজাহানের আমলে বাংলার ভূমিরাজস্ব সোয়া কোটি রুপী আর মোট ভূমিরাজস্ব বাইশ কোটি রুপী। হরেদরে আমরা দিছি ৫.৬ শতাংশ। দশমিক ছয় শতাংশ মনে করেন ছাইড়াই দিলাম, মার্জিন অফ এরর। তাজমহলের নেট আয়ের পাঁচ শতাংশ কেন বাংলার হইবে না কারণ দর্শাইয়া নোটিশ দেওয়া যাইতে পারে।
..................................................................
#Banshibir.
আরে, তাই তো?
কিন্তু খালি শাজাহানের আমলের ভূমিরাজস্ব হিসাব করা কি ঠিক হবে? ১৫৭৬ থেকে তাজমহলের উদ্বোধনের আগ পর্যন্ত টেকাটুকা যা দিলাম আমরা, সবই তো হিসাবে আনা উচিত। পাঁচ বেড়ে দশও হতে পারে।
অবশ্যই। পাঁচ বেড়ে দশ হৌক আর কমে তিন হৌক, কানুনকে হাত বড়ে লম্বে হ্যায়। সব পাইপয়সার বিচার করতেছি খাড়ান।
..................................................................
#Banshibir.
বাহ এইটে বেশ ভাল হিসাব। দাঁড়ান 'দিদি'ভাইকে এইটে জানিয়ে দিতে হবে, উনি যাতে মোদীভাইয়ের সাথে মিটিনের সময় বেপারটা নিয়ে একটা হেস্তনেস্ত করতে পারেন।
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
তার আগে বাংলার কুন ভাগ কত পাইব সেই অঙ্ক কইরা নেই। তিষ্ঠান।
..................................................................
#Banshibir.
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
কারণ দর্শানোর নোটিশ রেডি করতাসি। খাড়ান। কিন্তুক আপনি যে ষষ্ঠ পাণ্ডবরে কাল্পনিক চরিত্র বানাই দিলেন সেটার কি হইবেক?
ষষ্ঠ পাণ্ডব চরিত্র না তো এইখানে, পার্শ্ব-চরিত্র রাণী এলিজাবেথ উনার কথা স্মরণ করছেন খালি এই তো। বুঝতে হবে।
..................................................................
#Banshibir.
দারুন!
কইলেই হইল?
..................................................................
#Banshibir.
ইয়োর অনার হে মহামান্য সাটিয়াপীর, হে মহাবিজ্ঞ আদালত, আপনাদের রাণীর মুকুটে কোহিনূর নামের যে দুই পয়সার ত্যাঁড়াব্যাঁকা ভাঙাচোরা কাঁচের টুকরাটা আছে সেটা নিয়ে এত কাজিয়া দেখে সত্যি হাসি পাচ্ছে। আসল কোহিনূর ফেলে সবাই দেখি নকল কোহিনূরের পিছে ছুটছে! হ্যাঁ, এই উপমহাদেশ আর ঐ রঞ্জিত সিং-ই সেই কোটিগুণ বেশি মূল্যবান আসল কোহিনূরটাও যে বৃটেন আর পৃথিবীকে উপহার দিয়ে গেছেন, সে খবর কি ঐ জাফ্রি-কাফ্রি-সুজান্ড্রুস্মানরা জানে? জানলে কি তারা সেই আসল কোহিনূর বা তার জ্যোতিকে নিজেদের দেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য একইভাবে কাজিয়া করবে? কিম্বা আপনারা ঐ ঝুটা কোহিনূরটা ফেলে দিয়ে আসল কোহিনূরটা মাথায় তুলে নেবেন? রঞ্জিত সিং-এর উপহার সেই আসল কোহিনূরটার সন্ধান পাওয়ার যদি কোন আগ্রহ থাকে, তাহলে নীচের ভিডিওটা দেখেন দয়া করে --
****************************************
আপনে কি কইতে চান খোলাসা করেন। পাথরের টুকরা কোহিনূরের বদলে আসল কোহিনূর হিসাব কইরা সোফিয়া সিং রে দাবী করতে কইতেছেন নাকি তালিবান উসমান তারিকরে?
..................................................................
#Banshibir.
..................................................................
#Banshibir.
অন্ধ্র প্রদেশের গুন্টুক জেলার কোল্লুর অথবা ভিনুকোণ্ডা খনি থেকে প্রাপ্ত হীরকখণ্ডটির নাম প্রথমে ছিল 'সীমন্তক'। উত্তোলনকাল আনুমানিক খ্রীষ্টপূর্ব তৃতীয় সহস্রাব্দের শুরুর দিকে। এই টাইমলাইনটা আমার কাছে ভুয়া বলে মনে হয়। কারণ,ঐ সময়কালে অন্ধ্র কয়লা-হীরা উত্তোলনে এতোটা দড় থাকলে অন্ধ্রতে আরেকটা মহেঞ্জোদারো-হরপ্পা পাওয়া যেতো। তাছাড়া সীমন্তকই কোহ্-ই-নূর এই ব্যাপারে যে সিলিসিলাটা টানা হয় সেটাতে বলদিয়া বংশের সিলসিলার মতো শ'য়ে শ'য়ে বছরের মিসিং লিঙ্ক আছে। তবু সম্ভাব্য উত্তোলক হিসেবে এই মামলায় কোল্লুর এবং ভিনুকোণ্ডা খনির মেহনতী শ্রমিকদের একটা পার্টি হিসেবে যোগ করা হোক। এইখানে আরেকটা খিঁচ আছে। অন্ধ্র থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া তেলেঙ্গানার গোলকুণ্ডার খনি থেকে দি হোপ, নাসাক-এর মতো জগদ্বিখ্যাত হীরকখণ্ড উত্তোলিত হওয়ায় গোলকুণ্ডাও কোহ্-ই-নূর-এর উৎস হিসেবে নিজেকে দাবি করে। সুতরাং গোলকুণ্ডা খনির মেহনতী শ্রমিকদের উপেক্ষা করলে ‘পিপলস ওয়ার’ কিন্তু ছেড়ে কথা কইবে না।
১৩০৪ সালে নাকি এই হীরকখণ্ড ছিল মালওয়ার ভোজ রাজার বংশধরদের কাছে। ভোজ রাজা আর তার বংশধররা ছিল আসলে রাষ্ট্রকূটদের সামন্ত রাজা। প্রশ্ন হচ্ছে দাক্ষিণাত্য থেকে মধ্য-পশ্চিম ভারতের ভোজ রাজা বা রাষ্ট্রকূটদের কাছে এই হীরা কী করে গেল? সম্ভবত চোলাদের সাম্রাজ্যের শেষ পর্যায়ে কোন দুর্বল চোলা সম্রাট অথবা রেড্ডিদের সাম্রাজ্য শুরু হবার আগে চোলা-রেড্ডি সাম্রাজ্যের মধ্যবর্তী মাৎস্যন্যায়কালে এই হীরা দাক্ষিণাত্যের হাতছাড়া হয়। আরেকটা হাইপোথিসিস হচ্ছে চোলা নয়, কাকাত্যিয়দের কাছ থেকে এই মাল মালওয়াদের কাছে যায়। এর ঠিক উলটা হাইপোথিসিসও আছে যে, ১৩০৬ সালে এটা কাকাত্যিয়দের কাছেই ছিল। ১৩১০ সালে আলাউদ্দীন খিলজীর সেনাপতি মালিক কাফুর কাকাত্যিয়দের কাছ থেকে ওয়ারাঙ্গাল দখল করলে এটা তার হস্তগত হয়। মালিক কাফুরের কাছ থেকে এটা আলাউদ্দীন খিলজীর তথা দিল্লীর সুলতানদের হাতে আসে। সুতরাং এই মামলায় চোলা, কাকাত্যিয়, রাষ্ট্রকূট আর ভোজ রাজাদের, দিল্লীর সুলতানদের আর মালিক কাফুরের গিধ্ধর বংশধরদেরও অন্তর্ভূক্ত করা হোক।
এর পরের ২০০ বছরের বেশি সময়ের ইতিহাস ফক্ফকা। একটা হাইপোথিসিস হচ্ছে দিল্লীর সুলতানদের কাছ থেকে এই মাল সমরখন্দে চলে গিয়েছিল। পরে বাবুর নাকি এটা ভারতে নিয়ে এসেছিল। এই হাইপোথিসিসটা যে ভুয়া সেটা বুঝতে বিশেষ জ্ঞান লাগে না। সুতরাং কোন উযবেক্ বা তুর্কিস্তানী এই মামলায় কোন পক্ষ হবার দাবি করলে সেই পিটিশন তদ্দণ্ডে খারিজ করা হোক।
বাবুর আর হুমায়ুন তাদের লেখা গল্পকথায় (বাবুরনামা, হুমায়ূননামা) ‘বাবুরের হীরা’ নামে একটা হীরার কথা উল্লেখ করেছে। এটাই কোহ্-ই-নূর বলে অনেকে দাবি করেন। কিন্তু এখানে একটু দ্বিমত আছে। বাবুর সম্ভবত ফরগানা থেকে কোন হীরা নিয়ে এসেছিল যেটাকে বাবুরের হীরা বলা হচ্ছিল। এই হীরাটাকে কোহ্-ই-নূর বলে চালানোর জন্য কোহ্-ই-নূরের সমরখন্দ যাত্রার গল্পটা বানানো হয়েছিল। দ্বিতীয় মতটা হচ্ছে, কোহ্-ই-নূর বাবুরের পকেটে বা পাগড়ীতে কখনো ছিল না। হুমায়ুনের আমলে যখন গুজরাতের সুলতান কুতুবউদ্দীন বাহাদুর শাহ্ অন্ধ্রের চিতোর আক্রমণ করেছিল, তখন চিতোরের রাণী কঙ্কাবতী এই হীরাটা হুমায়ূনকে নজরানা পাঠিয়ে তার সাহায্য কামনা করেন। এই ভেট পেয়ে হুমায়ূন সদলবলে চিতোর রক্ষার্থে রওয়ানা দেয়। এই হাইপোথিসিসটা সত্য হলে বুঝতে হবে কোহ্-ই-নূর আসলে ষোড়শ শতক পর্যন্ত দাক্ষিণাত্যেই ছিল। যাই হোক, এই মামলায় কঙ্কাবতীর বংশধরদেরও একটা পক্ষ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হোক।
সরকার খাল্সা মহারাজা রণজিৎ সিং-এর তো পুরীর জগন্নাথের ওপর কোন আস্থা বা ভক্তি ছিল না। তাহলে তিনি জগন্নাথের নামে হিবানামা করতে যাবেন কেন? এইসব কথা বলে মামলার জল ঘোলা করে লাভ হবে না। মামলার জল অলরেডি অনেক ঘোলা হয়ে গেছে। কোশল বা উৎকলবাসীদের ললাটে কোহ্-ই-নূরের কোন ছিটেফোঁটাও থাকতে পারে না।
আরেকটা কথা, অরিজিনালি প্রায় ১৫৯ গ্রাম ওজনের এই হীরাকে ‘জিরো ফিগার’ দেবার জন্য বহু চোরচোট্টা একটু একটু কাটাকুটি করে এর ভাগ নিতে নিতে এখন মোটে ২১ গ্রাম বানিয়ে ফেলেছে। এই কাটাকুটিকারীদের মধ্যে প্রিন্স অ্যালবার্ট থেকে শুরু করে ভেনেশিয়ান ল্যাপিডারি হর্টেনসো বর্জিয়া পর্যন্ত আছে। এই মামলায় কাটাকুটিকারী ল্যাপিডারির দল আর তাদের নির্দেশদাতা চোরচোট্টাদের দলের বংশধরদেরকে আসামী হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হোক। কিছু লোক যদি লতায়পাতায় সম্পর্কে মহিমায় থাকতে চায় তাহলে কিছু লোককে লতায়পাতায় সম্পর্কে গ্লানিতে থাকতে হবে।
সবাই খালি ইংরেজ সায়েব অ্যান্ড্রু রবার্টসের দোষ ধইরা গেল। দেখেন চাই সে তো এই কথাই কইতে চাইছে যে কোহিনূর যে বাবুর'স ডায়মন্ড কিম্বা দেবীর চউখের মণি এডি ভুয়া কথা। সে তার লাইনেই আছে, লন্ডন তারে না বুইঝা পাঠায় নাই। এটাসেটা গিয়াঞ্জাম পাকায়া সে ক্রাউন জুয়েলেই কোহিনূর রাইখা দেওয়ার আঞ্জাম করতেছে প্ল্যানমাফিক।
এইখানে দুইটা কথা আছে হুজুরে আলা। গুরু নানক জগন্নাথের মন্দিরে গেছিলেন, চৈতন্যের সাথে সেইখানে তার দেখা হয়। তারপর লোকাল পুরোহিতের সাথে আরতিতে যোগদান বিষয়ক ঝামিলা লাগে এবং তিনি গীত গেয়ে শুনান ইত্যাদি। যাই হোক, নানক জগন্নাথ একটা কানেকশন ছিল। তারপরে তিনশ বছর পাঞ্জাবের পঞ্চনদী দিয়া বহুত পানি গড়াইছে, চ্যাম্পিয়ন শিখ রাজা রঞ্জিত সিং বুইড়া বয়সে মরার বিছানায় তখন। এক বাজুতে কোহিনূর আরেক বাজুতে দরিয়া এ নূর। হাত গুইনা তখন জ্যোতিষ কইল আপনি শেষ। ইউ ডেড। তবে মরার আগে বাজুর কোহিনূর নানকের ভিজিটেড জগন্নাথ মন্দিরে দিয়া যান, বহুত শিখ সোয়াব কামাইবেন। শুইনা রঞ্জিত সিং কইলেন যা তবে তাই হোক।
এরপরে ট্র্যাজিক এন্ডিং। খাজাঞ্চি বেলীরাম আজাইরা হিন্দু মন্দিরে হীরা দিতে অস্বীকার করেন, আর তার ফলেই নাকি তার ফ্যামিলিসুদ্ধা খতম হই যায় আর পাথর তস্কর বিটিশের হাতে পড়ে আর এদিকে সোনার শিখ সাম্রাজ্য পুড়ি হয় ছারখার।
বুঝলেন নি কাহিনী? কোশল উৎকলবাসীরে এত সহজে কোর্ট থিকা বাইর কইরে দিয়েন না
..................................................................
#Banshibir.
শুনছি হর্তেনসো বর্জিয়ারে কুনো পয়সা তো ছোঁয়ানো হয়ই নাই বরং উল্টাপুল্টা হীরা কাটার জন্য দশ হাজার রুপী ফাইন করা হইছিল। ছাড়ান দেন বর্জিয়ারে, সে তার মত কইরা পাওনা মিটায় দিছে।
..................................................................
#Banshibir.
যাই হোক সত্যপীরে'র অসাধারণ উপস্থাপনায় চমকিত হয়েছি। এত ভাল লেগেছে যে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। সত্যি, অসাধারণ ! ! ! !
ভাবছিলাম কোহিনূর হেস্তনেস্ত কইরাই ছাড়ব অর মায়রে বাপ। কিন্তু আরো গিট্টা লাইগা গেল আর সকলের সমবেত হাউকাউয়ে কোন ফৈসালাই করতে পারলাম না
..................................................................
#Banshibir.
ব্যাপক লেখা মহামান্য সাটিয়াপীর...
স্বয়ম
মহামান্য আদালত বইলা কথা।
..................................................................
#Banshibir.
আরেকটু খোঁজখবর করতে দেখা গেল আগের মন্তব্যে একটা বড় ভুল আছে। রাণীর নাম কর্ণাবতী, কঙ্কাবতী নয়। আর তার রাজ্যের নাম চিতোরগড়, চিতোর নয়। চিতোর অন্ধ্রে হলেও চিতোরগড় রাজস্থানের মেওয়ারে। সুতরাং কোহ্-ই-নূর চতুর্দশ শতকে উত্তর ভারতে পৌঁছে যাওয়ার হাইপোথিসিস সঠিক। ষোড়শ শতকে কর্ণাবতীর কাছ থেকে হুমায়ূনের পাওয়াটাও যৌক্তিক হয়। কিন্তু চিতোরগড়ের মতো অতি ক্ষুদ্র বা মেওয়ারের মতো ছোট রাজ্যের যেবে কোহ্-ই-নূরের মতো জিনিস কী করে আসলো?
প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় একটা কথা বলে রাখি। কর্ণাবতীর সাথে হুমায়ূনের ‘রাখী বন্ধন’ নিয়ে গল্প করতে যারা ভালোবাসেন তারা কোহ্-ই-নূর ভেট দেবার কথাটা যেমন বলেন না তেমন হুমায়ূনের প্রকৃত ভূমিকাটাও বলেন না। বস্তুত বাহাদুর শাহ্ যখন চিতোরগড় আক্রমণ করে তখন হুমায়ূন তাকে কোন বাধা দেবার চেষ্টা করেনি। কারণ, একজন মুসলিম যখন কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তখন আরেকজন মুসলিম কাফেরদের পক্ষ নিয়ে তার বিরুদ্ধে লড়তে পারে না। তখনকার এই মুঘল পলিসি অনুযায়ী হুমায়ূন বাহাদুর শাহ্কে চিতোরগড় দখল ও লুট করতে ছেড়ে দিয়েছিল। কর্ণাবতীর পক্ষের পরাজয় নিশ্চিত হবার পর হুমায়ূন বাহাদুর শাহ্কে পিট্টি দিয়ে চিতোরগড় দখল করে কর্ণাবতীর নাবালিগ পুত্র বিক্রমাদিত্য সিংকে ক্ষমতায় বসায়। কর্ণাবতীর কী হয়েছিল সেটা সবাই জানেন।
দ্বিতীয় প্যারাগ্রাফ পুরাই গেম অফ থ্রোন্স।
..................................................................
#Banshibir.
সাটিয়াপীর জিন্দাবাদ !!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”
অলীক জানালা _________
..................................................................
#Banshibir.
এইগুলা সব ভূয়া দাবীদার, কোহিনূর আসলে আমার। বিশ্বাস করেন না? তাইলে একটা গপ শোনেন...
আমার বাপের দাদার দাদার দাদার দাদার দাদার দাদার দাদার দাদার দাদার দাদার নানার চাচাতো ভাইয়ের ফুপার বাপের দাদার দাদার দাদার দাদার কাকা একদিন লিলিয়ান নদীর পাড়ে বট গাছের নিচে বইসা সদ্য শিকার করা ডাইনোসরের মাংস কাইট্যা আগুনে পুড়ায়া কাবাব বানায়া খাইতেছিলো, তখন সেই কাবাবের মধ্যে একখান হাড্ডি আছিলো, সেইটা খট্টাশ কইরা তেনার দাঁতে আঘাতাইলো। তাতে তিনি খেইপা গিয়া আস্ত ডাইনোসরটা মাথার উপরে তুইলা বনবন কইরা কতোক্ষণ ঘুরায়া ছুঁইড়া মারলো দক্ষিণ দিকে। ডাইনোসরটা তখন উইড়া গিয়া পড়লো পাঁচশো হাত দূরের এক জায়গায়। আশেপাশের জঙ্গল ধ্বংশ হয়া গেলো, বনের ছুডু ছুডু পশু পক্ষীগন উড়াল দিয়া আর লৌড়ায়া পলাইলো। আর যেইখানে সেই ডাইনোসরটা গিয়া পরছিলো সেইখানে একটা গর্ত পয়দা হইলো। কিন্তু তেনার রাগ তখনো কমে নাই। তিনি লৌড়ায়া গিয়া সেই গর্তের মইধ্যে থাকা ডাইনোসররেই পিডাইতে থাকলেন ইউক্যালিপটাস গাছ ভাইঙ্গা। পিডায়া পুডায়া যখন ক্ষান্ত হইলেন তখন দেখেন গর্তের ভিতর থিকা কি জানি একটা জিনিস ঝিলিক দিতেছে। তিনি তখন সেইটা তুইলা দেখলেন একটা চকমকা পাত্থর। আর তখন তিনি টের পাইলেন ডাইনোসরের এক টুকরা মাংস তাঁর দাঁতের ফাঁকে আটকায়া রইছে। তখন তিনি সেই চকমকা পাত্থর দিয়া দাঁত খুঁচায়া দেখলেন এইটা একটা উন্নতমানের দাঁত খোঁচানি। তারপর থিকা তিনি এইডারে দাঁত খুঁচানি হিসাবে ব্যবহার করতে লাগতেছিলেন। এইভাবে আমার পূর্বপ্রুষদের দাঁত খোঁচানি হিসাবে এইটা ব্যবহার হইতে হইতে এক পর্যায়ে এইটা চুরি কইরা নেয় কোনো এক চুরায়... তারপর সেইটা মোঘল গোঘল হয়া একসময় যায় ইংলন্ডে...
যাউগ্গা, মোটকথা হইলো এখন এইটার একমাত্র দাবীদার আমি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
তইলে খামাকা আমরা ভেনিসের জহরত কারিগর হর্তেনসো বর্জিয়ারে গালি দিতেছি কেন উল্টাপুল্টা হীরা কাটার অভিযোগে, শুইনা তো আমার মনে হইতেছে হীরা উটের ডিম থিকা কবুতরের ডিম সাইজে নাইমা আসছে আপনাদের বংশের সাতান্নো হাজার পুরুষের দাঁত খিলানোর কারণে। ধীর ক্ষয়।
..................................................................
#Banshibir.
আর ডাইনোসরট়া যে আমার (দাদা)^১০০০০ ছিল, সেইটার কি হবে ? ভাগ চাই।
বার্গম্যান বলিয়া গালি দিবেন না-
facebook
খামোকা এরূপ ভয়ানক অপমানের অর্থ কি?
..................................................................
#Banshibir.
সেইরকম, মাথা পুরাই আউলে গেল।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
লেবু চা খান। মাথা ঠিক রাখা জরুরি।
..................................................................
#Banshibir.
নানী এলিজাবেথের সাথে খানিক আগে মোবাইল আলাপে জানা গেল তিনি নাকি উকুনের যন্ত্রণায় মুকুট পরেন না, আর বাস্তবে কোহিনূর বলতে কিছু নাই, কোহিনূর আসলে মিডিয়ার সৃষ্ট কল্পপাথর!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
জরুরি কাজে একবার লাল টেলিফোনে রাণী এলিজাবেথরে ফোন দিছিলাম মামলাসংক্রান্ত কাজে। সে মহিলা ফোন তুইলা বলে "দিস ইজ এলিজাবেথ দি সেকেন্ড, বাই দি গ্রেস অফ গড, অফ দি ইউনাইটেড কিংডম অ্যান্ড নর্দার্ন আয়ার্ল্যান্ড, অ্যান্ড অফ মাই আদার রেলমস অ্যান্ড টেরিটোরিজ, হেড অফ কমনওয়েলথ, ডিফেন্ডার অফ ফেইথ স্পিকিং"। আমি এই বিরাট ভ্যানভ্যান শুইনা মহাত্যক্ত হইয়া ফোন রাইখা দিছি। আমাদের ওরশ মোবারকের হুজুরের টাইটেলও এর থিকা ছোট হয়।
..................................................................
#Banshibir.
নানীর অরিজিনাল গলা ছিল নাকি ক্যাসেট প্লেয়ার?
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
নানী এলিজাবেথ! হা হা হা হা হা আহা
লেখা আর বিভিন্ন কমেন্ট...কোনটা ছাইড়া কোনটার কথা কই।
দোনোটাই ছাড়ান দ্যান, বরং আপনের কথা কন। নামটাও তো দিলেন না...
..................................................................
#Banshibir.
বজ্জাৎ, রক্তচোষা, ম্লেচ্ছ, পরধনলোভী ইংরেজরা সোনার বাংলা শ্মশান বানাইয়াছে। বাংলা থাইকা এযাবৎ তারা যত সম্পদ বিলাতে পাচার করছে, তার পাই পাই হিসাব চাই। হিসাব দিতে না পারলে আপাতত অবিলম্বে নজরানা বাবদ কোহিনূর চাই। হিসাব পত্তর ঠিকঠাক হওনের পর বাকি দাবিদাওয়া পেশ করা হইবেক।
মামলার গন্ধে নানাবিধ পার্টি হাজির হইছে, আপনে কোন দলে আছেন খুলাসা কইরা বলেন। নজরানা বাবদ কোহিনূর ঠিক কোনজায়গায় যাওয়ার পক্ষে আপনে, এগজ্যাক্ট লোকেশন বলেন কারণ ব্যাখ্যাসমেত। তারপরে আমি দেখতেছি।
..................................................................
#Banshibir.
মহামান্য আদালত।।
যদি কোহিনুর ন্যায্য ভাবে আর কোন দেশে যায়, তাইলে মনে কয় সেদিন আমি নিজের কনুই তে নিজে কামড় বসাইতে পারব।।ছোট বেলার শখ, মরার আগে অন্তত একবার নিজের কনুই নিজে কামড়ামু।।মনে লয় মাননীয় সাটিয়াপীড় এর উসিলায় এইবার একটা সিস্টেম হইব।।
বুদ্ধিটা ভালোই, চান্সে আমাগো সবাইরে দিয়া নিজ নিজ কনুইতে কামড় দিয়া পরীক্ষা করায় লইলেন
..................................................................
#Banshibir.
খাসা পীরসাব - ঈমানে!
ধইন্যবাদ ঈমানদার স্যাম।
..................................................................
#Banshibir.
আহা খাসা! কী ভাষা!
চমৎকার লেখা! তার আগে বলেন কোহিনূররে "বিটিশরা" কোরিনূর বলে কেনু কেনু কেনু?
কিডা কইছে কোরিনূর ভাইঙ্গা কন।
..................................................................
#Banshibir.
আচ্ছা, রাজ-এ-পেনহান-এ-আলমাস শেষমেশ কোথায় আছে, পীরসা'ব?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
খামাকা ফার্সি বলতেছেন কিজন্য, আপনি কি ইউনানি হেকিম পাশার দুলাভাই?
..................................................................
#Banshibir.
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন