জায়ফল

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: শনি, ১৫/০৭/২০১৭ - ৪:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মনে করেন বহুদিন আগের কথা। বিকাল। কালিকট বন্দরে এক কেজি রোমান্টিক মন নিয়ে বসে আছেন আপনি। সাথে আপনার ভালোবাসা। মিছে আশা। মৃদুমন্দ বাতাস। সাগরের কুলুকুলু সঙ্গীত। ঝাল লবণ সহকারে বাদাম। কতনা সুন্দর দিনটি।

এমন সময় জনৈক পর্তুগীজ ভাস্কো দা গামা হুমহাম আওয়াজ করে নানাবিধ জাহাজ নিয়ে কোথা থেকে বন্দরে উপস্থিত। আপনি তো হতবাক। সাথে হতবাক আপনার পাশে বসে বসে ঝাল বাদাম খাওয়া কতিপয় তিউনিসীয় সওদাগর। ভারতে তাদের আনাগোনা বহুদিন। তারা গামা মামার ভাষাও কিঞ্চিৎ জানে। তারা শুকনা মুখে কইবে, ওহে গামা। কী চাই হে, এই দূর ভারতীয় বন্দরে তোমাদের চাওয়া পাওয়া কী?

তার উত্তরে গামা অ্যান্ড কোম্পানি বললঃ “আমাদের চাওয়া পাওয়া সহজ। আমরা এসেছি খ্রিস্টান আর মশলার খোঁজে।”

খ্রিস্টান আর মশলা? ভয়ানক রেসিপি!

করলাম তো হাসাহাসি। তবু চিন্তা করেন। ধরেন আজকে আপনার বাসায় রাতে মোটা চোর আসল। হাতে গাদা বন্দুক। মুখে চাপা হাসি। আপনি চিকন কণ্ঠে কইলেন, এই। চোর। কী চাস র‍্যা? চোর বলল, জায়ফল জয়ত্রী কী কী মশলা আছে নিয়ে আয়। এসেছি লবঙ্গের খোঁজে। আপনি অবশ্যই থতমত খেয়ে যাবেন। ঘরের সোনা দানা নাকের নোলক বউয়ের জামদানি পায়ের হাশপাপি চোখের রে ব্যান হাতের আইপ্যাড ফেলে রান্নাঘরের মশলা চায় চোর এ কেমন কথা।

আসেন তবে কিছু ঝাঁঝালো মশলালোচনা করি।

গামা পালোয়ানের ভারত আগমণের বহুশত বছর পূর্বেই মশলার রমরমা ব্যবসা আরম্ভ হয়ে গেছে। ইন্দোনেশিয়ার মশলার কদর চীনের তাঙ সম্রাটের দরবারে ছিল (৬১৮ - ৯০৭ সাল)। ৩০০০ বছর আগে পটল তোলা এক মিশরীয় ফারাওয়ের নাকের মধ্যে পাওয়া গেছে শুকনা গোলমরিচ (...সে ব্যাটা গোলমরিচ শুঁকেই হেঁচে হেঁচে মরে গেল কিনা তা বলা অবশ্য কঠিন)। সিরিয়ার একস্থলে মাটি খুঁড়ে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা পেয়েছেন লবঙ্গ, সেও প্রায় সাড়ে তিনহাজার বছর আগের কথা।

মশলার সওদাগরি ব্যবসায় দুই পার্টি কুঠি কুঠি টাকা লাভ করে গামা পালোয়ান মাঠে (সাগরে) নামার পূর্বে। সেই দুই পার্টি আরব আর ভেনিসীয়। আরবের কথা আগে বলতে হয়। এরা পূবদিকে ব্যাপক লোক পাঠায়ে গ্রামীণফোনের মত কড়া নেটওয়ার্ক খাড়া করিয়ে দেয়। চীন, ভারত ইন্দোনেশিয়ায় মাকু মেরে ফিরত আরব বণিক। মশলা নেটওয়ার্কের বাই প্রডাক্ট হিসাবে ইন্দোনেশিয়া আর মালয়েশিয়ায় ইসলাম চালু হয়ে যায়, তবে সে ভিন্ন প্রসঙ্গ।

আরব দেশ (বিশেষতঃ বর্তমান সৌদি আরব, ইসলামের নবী মুহম্মদের বংশ কুরাইশ বংশের লোকের অন্যতম মূল পেশা ছিল মশলার ব্যবসা) এই রমরমা মশলা বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়াল। তারা হাজার বছর আগে নিজেরা সাগর দাবড়ে মশলা নিয়ে আসলেও পশ্চিমাদের কাছে বিক্রয় করার সময় নানান চাপাবাজি করে মশলার মূল উৎস গোপন রাখে। বুড়াদাদু হিরোডিটাস লিখে গেছে দুহাজার বছর আগে পশ্চিমারা যখন আরবদের জিজ্ঞাসা করত ও আরব। মশলা পাও কোনঠে? আরব বলেছিল হাঁ। মশলা বড় ধামাকাদার্। মশলা আনতে গিয়ে আমাদের সওদাগরেরা জানটা আলখাল্লায় নিয়ে ঘোরে। পানির ধারে কিছু মশলা আনতে গিয়ে এক বাদুড়ের মত দেখতে দৈত্য আসে একবারে তাদের চোখ তাক করে, কিন্তু বুদ্ধিমান সওদাগর নগদে চামড়া (নিজের না, গরুর) দিয়ে চোখ ঢেকে ফেলে! আবার দারচিনি দ্বীপ, ওহো সে কথা আর বোলো না। বিশাল বিশাল পাখি খাড়া পাহাড়ের উপর তাদের বাসা বানায়, সেই বাসায় দোল খায় দারচিনি। আমাদের সওদাগরেরা গরু মেরে মাটিতে ফেলে রাখে। সেই মাংস খেতে উপর থেকে নেমে আসে পাখি। তারপর পাখি মরা গরু নিয়ে উঠিয়ে বাসায় রাখতেই ভারে সব নিচে পড়ে যায় আর সওদাগরেরা শিয়ালের বেগে সব দারচিনি নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে আসে!

পরে আরেকটু দুনিয়া চিনে পশ্চিমারা আরব বণিকের এই ধোঁকাবাজির গল্প ধরে ফেলে আর জানতে পারে মশলা আসে ভারত চীন ইন্দোচীন থেকে। সে যাই হোক আরব মশলা বাণিজ্য সফলভাবে চালিয়ে যায় বেশ কিছুদিন।

মশলা পথের (Spice Route) আরেক মক্কা ভেনিস। শেক্সপীয়রের মার্চেন্ট অফ ভেনিসেরা দুনিয়ার বাকিদের মতই নানাবিধ ব্যবসা চালাত বটেঃ কাঠ, দাস, কাপড়, মদ, জাহাজ, শস্য, ধাতু, পাথর ইত্যাদি। কিন্তু মশলা ছিল ব্যবসার কুতুবমিনার। দক্ষিণ আর দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার জঙ্গল থেকে শতহাত ঘুরে ইয়োরোপ আসতে আসতে দাম পটাং করে বেড়ে কয়েকশোগুণ হয়ে গেছে।

পাঠক কইতে পারেন সবই বুঝলাম। এক কাপ কফি যে গ্লোরিয়া জিনসে খাইলাম ৫১৮ টাকায় সেই কফিবীজ তো চাষী তো বিক্রি করল দুই টাকায়। সেইখানেও তো কয়েকশোগুণই মুনাফা। হরেদরে ব্যাপার একই। আগেও যা এখনো তা।

কথা সত্য। তবে মধ্যযুগে বা তার আগে মালামাল ইধার টু উধার করা আরও অনেক কষ্টসাধ্য, সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। আর আজকের মত বেচার মত এত মালও ছিলনা। তাই মশলা ব্যবসা আকর্ষনীয় ছিল। এছাড়া ভাবেন মশলা অনেক হাল্কা। সোনারূপা লুট করে জাহাজে করে নিয়ে আসা ব্যাপক গ্যাঞ্জাম। জাহাজের অর্ধেক সোনারূপা আর অর্ধেক দা গামার মত পালোয়ান নিয়ে রওনা দিলে সেই ভারেই জাহাজ ডুবে যাওয়ার কথা। জাহাজ ভাসিয়ে রাখা চাই। এছাড়া সোনার বার নিয়ে নাবিকদের বেতন দিবেন কিভাবে, ছুরি দিয়ে কেটে? মোহর/কয়েনের অভাবে মাঝে মাঝে নাবিকদের বেতন দেয়া হত মশলার পুঁটলি ধরায় দিয়ে। এই পুঁটলি বেতন কাহিনী অবশ্য পুরাতন, লবণের পুঁটলি ধরায় দিয়ে মাঝে মাঝে রোমান সিপাইদের বেতন দেওয়া হত (সল্ট > স্যালারি)।

বক বক করতে করতে ডাইনে চেপে গেছি। লাইনে ফিরি। ভেনিস। ১১৭০ এর দিকে লন্ডনে এক পাউন্ড গোলমরিচের দামে এক সপ্তার জন্য মালি কি মাটিকাটার লোক ভাড়া করা যেত। ইয়োরোপে ভেনিসের মশলা বাণিজ্য রমরমার দিনে (দা গামা মামার ভারত আগমণের পূর্ব পর্যন্ত) যত ড্যুক ব্যারন রাজা রাণী ছিল তাদের প্রসাধনের চন্দন আর ওষুধের আদাকুচি কিম্বা রাজার থালার রোস্টের গোলমরিচ সকলই কোন এক সময় ভেনিসের সওদাগরের হাত ধরে আসে।

কিন্তু কথা সেইটা না। কথা হইল, ভাস্কো দা গামা কেন কালিকট বন্দরে? একটি খ্রিস্টান এবং মশলা রহস্য।

ভাস্কো দা গামা জন্মাইতে জন্মাইতে লোহিত সাগরে মেলা পানি বয়ে গেছে। ভারত/ইন্দোনেশিয়া থেকে আরব আর ভেনিস ঘুরে ইয়োরোপে আসতে আসতে মশলার দাম তালগাছ ছোঁয়া। এর মধ্যে মশলাপথের আরেক হর্তাকর্তা ওসমানি (অটোমান) সাম্রাজ্যের মামুর ব্যাটারা কেবল করের পর কর বসিয়ে যাচ্ছিল মশলার উপর। এই চড়া করের উপর খাপ্পা হয়ে একদিন পর্তুগাল কইল ধুরো বালের অটোমান। গুষ্টি মারি মশলা পথের। নয়া পথ বানানো চাই সমুদ্র পথে। এই ভাস্কো, যা নিয়ে আয় টাবাস্কো।

ভাস্কো কইল কোন সমস্যা নাই। পোক্ত জাহাজ নিয়ে যাই তবে ভারতীয় মশলা খুঁজতে। ফাজিল হিদেনগুলাকে বাইবেলও ধরিয়ে দিয়ে আসা চাই। চলি তবে খ্রিস্টান আর মশলার খোঁজে।

এই হল খ্রিস্টান আর মশলার গল্প। ব্যাপক কাণ্ড।

মশলা নিয়ে আরেক ইয়োরোপীয় জাত ওলন্দাজের কথাও বলা চাই। ইংরেজ প্যান্ট পরে বড় হওয়ার আগে পর্তুগীজ সাথে ওলন্দাজেরই রমরমা ছিল। চোর এসে আপনার বাসায় জায়ফল জয়ত্রী চেয়েছিল স্মরণ আছে? সেই জায়ফলের জন্য ওলন্দাজ এক আস্ত এলাকা নির্বংশ করে ছেড়েছিল। জায়ফল বলিয়া করিয়েন না হেলা। জায়ফলের গপ শুনতে হলে যাওয়া চাই ইন্দোনেশিয়ার বান্দা দ্বীপপূঞ্জে।

এই কয়েকশো বছর আগে পর্যন্ত দুনিয়ার লোকের জায়ফল পেতে হলে যেতে হত ইন্দোনেশিয়ার বান্দা দ্বীপপুঞ্জে। ওলন্দাজ গিয়ে থানা গাড়ার বহু আগে থেকে লোকাল রাজারা ব্যবসা করে খাচ্ছিল। তাদের জায়ফল চীন ভারত আরব ইয়োরোপ সবখানেই যেত। ওলন্দাজ এসে হলদে গোঁফ চুমরে বলল সবই বুঝি। এসব ছাড়ো, আমাদের এখন একার হাতে সব বাণিজ্য। এই বান্দার বান্দরেরা, ওলন্দাজ ছাড়া কারু কাছে জায়ফল বেচা চলবে না।

বান্দাবাসী হর্তাকর্তারা (“ওরাং কায়া” অর্থাৎ পয়সাওলা ব্যাক্তি) কইল হেহে কি কয়। মাথাটা গেছে। খামোকা কেবল একজনের হাতে বেচব কেন। ওলন্দাজ আবার গোঁফ চুমরে কইল অশিক্ষিত বিয়াদব। সালাম দিয়া কথা বল। এই নে কাগজ। সই কর। কাগজে লিখা আছে কেবল ওলন্দাজ জায়ফল কিনবে বান্দা থেকে।

ওরাং কায়ারা বান্দা দ্বীপপুঞ্জের বিবিধ স্থানে থাকত। তাদের সকলে সকলের সাথে কথাও কয়নি। কয়েকজন ওরাং কায়াকে ভয় দেখিয়েই হোক আর পয়সা খাইয়েই হোক ওলন্দাজ সই বাগিয়ে নিল। এরপর সেই কাগজ নেড়ে নেড়ে বলতে লাগল পাইলাম আমি ইহাকে পাইলাম।

বান্দাবাসীরা সম্ভবত একচেটিয়া ব্যবসার ব্যাপারে ওলন্দাজের কথাটা গুরুত্ব দেয়নি বা পুরো ধরতে পারেনি। ওলন্দাজ বাজারদরের চেয়ে অনেক অল্পমূল্যে জায়ফল কিনা আরম্ভ করল। বান্দাবাসী মহা বিরক্ত হয়ে তখন চামেচিকনে ইংরেজ বা ভারতীয় ইত্যাদি অ-ওলন্দাজ ব্যাপারীর কাছে জায়ফল বিক্রি করার ভাও করছিল।

১৬০৯ সালের কথা। বান্দার এক দ্বীপে ওলন্দাজ ব্যাপক দূর্গে গেড়ে বসল, ফোর্ট নাসাও। পরিত্যক্ত পর্তুগীজ দূর্গ। ওরাং কায়া সব দেখে টেখে ভাবল আচ্ছা এই ওলন্দাজের তো বড় বাড় বেড়ে গেছে। দূর্গ টুর্গ বসিয়ে কতনা মজা। মজা টের পাওয়াচ্ছি। ওলন্দাজ কাপ্তানকে ডাকা যাক তবে।

শুভ সকালে ওলন্দাজ কাপ্তান ভারহ্যোভানকে কতিপয় ওরাং কায়া আইয়ুব বাচ্চুর মত কইল, বারোমাস তোমার আশায় আছি। অবসর পাইলে আসিও। ভারহ্যোভান ভাবল যাই কথা কয়ে আসি। অবসর তো আছেই। সমস্যা কি। সাথে গেল জনা চল্লিশেক গোরা সিপাই।

সেইখানে সকল ওলন্দাজকে কচুকাটা করে কল্লা নামিয়ে দিল বান্দাবাসী ওরাং কায়া। খতম।

খবর শুনে ওলন্দাজ হলদে ভুরু কুঁচকে আর হলদে দাঁত কটমট করে চিৎকার করে কইল, হোয়াট? সব মাইরালামু!

কিন্তু সব মাইরা লাওয়া এত সহজ ছিলনা। ইংরেজ বান্দাবাসীর হাল্কা পিছে ছিল। ইংরেজ দ্বীপ থেকে সরাতে ওলন্দাজের আরও বছর চারেক লেগে যায়। তারপর দূর্বল ইংরেজ দ্বীপ ছেড়ে ভেগে গেলে প্রতিশোধে নামে ওলন্দাজ।

দুই হাজার সিপাই পাঠানো হয় প্রতিশোধ নিতে (দ্বীপের জনসংখ্যা তখন হাজার পনেরো)। ওলন্দাজের ভাড়া করে আনা জাপানি সামুরাই সিপাইরা তাদের লম্বা তলোয়ার দিয়ে চৌচল্লিশ কোপে চৌচল্লিশ ওরাং কায়া নেতার মুণ্ডু নামিয়ে দেয়। রাস্তাঘাটে যত বান্দাবাসী পাওয়া গিয়েছিল ওলন্দাজ জাপানিজ মিলে তাদের রক্তে দ্বীপ ভাসিয়ে দেয়। সঠিক জানা যায়না কত লোক হত্যা করা হয় এই ম্যাসাকারে কিন্তু হাজার পনেরো থেকে জনসংখ্যা কয়েকশোতে নেমে আসে।

কিজন্যে জানেন?

জায়ফলের জন্যে। যাতে জায়ফল অল্পমূল্যে কিনা যায়। জায়ফল। অতএব যা বলি শোনেন। মশলা বলিয়া জায়ফলরে করিয়েন না হেলা।

আর পাঠক আপনার মনে কী প্রশ্ন ফাল দিয়ে আছে সে আমি জানি। ওলন্দাজ ওরাং কায়ার মধ্যে সামুরাই আসল কোন চিপা দিয়া? চৌচল্লিশ নেতার কল্লায় কেন জাপানি তলোয়ারের কোপ? কেনু কেনু হোয়াই?

সে আরেক গল্প। পুরা পড়ে পরে বলতেছি, ইতোমধ্যে ষষ্ঠ পাণ্ডবরে জিগান। আমি গেলাম। খুদাপেজ।

তথ্যসূত্রঃ
দ্য টেস্ট অফ কঙ্কোয়েস্টঃ দ্য রাইজ অ্যান্ড ফল অফ থ্রি গ্রেট সিটিজ। মাইকেল ক্রোন্ডল।
কেম্ব্রিজ ইকোনোমিক হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়াঃ ভল্যুম ওয়ান। তপন রায়চৌধুরী, ইরফান হাবীব।
দ্য বুক অফ কফি অ্যান্ড টী। জোয়েল শাপিরা, কার্ল শাপিরা, ডেভিড শাপিরা।
হ্যান্ডবুক অফ স্পাইসেজ, সীজনিংস, অ্যান্ড ফ্লেভরিংস, সেকেন্ড এডিশন। সুশীলা রাঘবন।
http://www.smithsonianmag.com/travel/spice-trade-pepper-venice-180956856/
অ্যা ফ্র্যাজাইল নেশনঃ দ্য ইন্দোনেশিয়ান ক্রাইসিস। খুন চয় লী।


মন্তব্য

সোহেল ইমাম এর ছবি

শুনেছিলাম পর্তুগিজরা ভারতের কাছাকাছি এসে আগেই গোটা দশেক কামানের গোলা দেগে তারপর তীরে তরী ভেড়াতো। গামা পালোয়ানও নাকি তাই করেছিলেন। গামা পালোয়ানকে অভ্যর্থনা জানাতে গিয়ে চিনেবাদামের সাথে গোটা দুই কামানের গোলা খাওয়ারও বিপুল সম্ভাবনা।

কেবল তো জায়ফল, আরো তো মশলা আছে। আর আর মশলা গুলো ধরে আর কয়টা লেখা যদি পাওয়া যেতো। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

সত্যপীর এর ছবি

আঁৎকা গোলাগুলির কথা সত্য। হারানো দিনে কালিকট বন্দরে ঝিরঝিরে বাতাসে চিনাবাদাম খাওয়া বেশ বিপদজনক।

..................................................................
#Banshibir.

নাসিম এর ছবি

সত্যেন বোসের মশলার যুদ্ধ বইতে মসলা সংক্রান্ত বানিজ্য ও বিস্ত্র খুনোখুনির বিশাল বর্ণনা আছে। পড়ে দেখতে পারেন।
-- নাসিম

সত্যপীর এর ছবি

চমৎকার বই।

..................................................................
#Banshibir.

নাসিম এর ছবি

কারেকশান : সত্যেন সেন।

-- নাসিম--

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দিলো গুড়টা লাগায়া! এইখানে আমি আসলাম কৈত্থিকা?

সেনগুকো আমলে কী কারণে জাপানীরা পশ্চিমদিকে হিজরত করেছিল, কীভাবে ষোড়শ-সপ্তদশ শতকে আজকের আসিয়ান অঞ্চলে নিহনমাচি'র রমরমা দশা হয়, লাল তকমা জাহাজের ব্যাপারটা কী, তোকুগাওয়া শোগানতন্ত্রের সময় কী ঘটেছিল - এই প্যান্ডোরার বাক্স খুলে আমি মরি আর কি!!

একটা প্রচলিত গল্প বলি, প্রমাণ চাইলে দিতে পারবো না। জাপানীদের মধ্যে নাকি কালচারটা এমন যে, মহাজন যতক্ষণ কাজ করতে থাকবে কর্মচারীরা ততক্ষণ কাজ বন্ধ করতে পারবে না। বরং তারা আরও কিছুক্ষণ বেশি সময় কাজ করবে। ১৬২১ সালের বান্দা দ্বীপের গণহত্যাকাণ্ডের সময় ওলন্দাজরা ভাড়াটে জাপানী সামুরাইদের নাকি এমন বলেছিল, "হেই যাবুযা মোমোচি! হেই হাকু!! আয় কিছু নোংরা দেশী খতম করে দ্বীপটা সাফ করি"। তো ওলন্দাজ মহাজন একজন বান্দানীজকে কাটে তো জাপানীরা দশ জনকে কাটে। মহাজন হাত থামায় না, তাই কর্মচারীও হাত থামায় না। ফলাফল হাজার চৌদ্দ বান্দানীজ নিহত।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

সেনগুকো আমলে কী কারণে জাপানীরা পশ্চিমদিকে হিজরত করেছিল, কীভাবে ষোড়শ-সপ্তদশ শতকে আজকের আসিয়ান অঞ্চলে নিহনমাচি'র রমরমা দশা হয়, লাল তকমা জাহাজের ব্যাপারটা কী, তোকুগাওয়া শোগানতন্ত্রের সময় কী ঘটেছিল - এই প্যান্ডোরার বাক্স খুলে আমি মরি আর কি!!

লাল তকমা জাহাজে চড়ে তেঞ্জিকু তোকুবেই নামে এক জাপানি চাচা ভারত পর্যন্ত আসছিলেন ১৬২৭ এ, আবার বইও লিখছেন দেশে ফিরত গিয়ে। সেই বই নাকি একবারে নিউ ইয়র্ক বেস্ট সেলার ছিল তখন। তর্জমা খুঁজে দেখতে হবে পাওয়া যায় কিনা।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

গল্প-০১
স্বর্গঅপ্সরা কাগুয়াহিমে তার প্রণয়াকাঙ্খীদের ঠেকানোর জন্য একেক জনকে একেকটা অসম্ভব কাজ দিয়েছিল। আকিতা'র রাজকুমারকে বলা হয়েছিল 'ইন্দো' (ভারত) থেকে 'শাকা'র (বুদ্ধের) ব্যবহৃত কাঠের পানপাত্র (লোটা/ঘট) নিয়ে আসার জন্য।
ঝঞ্ঝাবিক্ষুদ্ধ পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগর, মালাক্কা প্রণালী আর বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেবার হিম্মত আকিতা'র রাজকুমারের ছিলনা। তাই সে কাঠমিস্ত্রীদের দিয়ে পাত্র বানিয়ে সেটাকে ঘষে, রঙ করে কাগুয়াহিমের কাছে নিয়ে যায়। কাগুয়াহিমে সেটাকে 'দান্‌রো'র (ফায়ারপ্লেস) আগুনে ধরলে রঙ গলে জারিজুরি বের হয়ে যায়।

বোঝা যাচ্ছে জাপানীদের কাছে প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে ভারত একটা অগম্য বা ভ্রমণদুঃসাধ্য একটা দেশ। তাই পুরাকালে চীন থেকে ফা শিয়েন বা সুয়াঙ চ্যুয়ান ভারতে পৌঁছাতে পারলেও জাপান থেকে কেউ এসে পৌঁছাতে পারেনি।

গল্প-০২
যে আমলে ভারতের লোকজন মুম্বাই বন্দর থেকে জাহাজে চড়ে মক্কায় হজ্জ্ব করতে যেতো, সে আমলে কিছু লোক অর্থাভাবে হোক বা সমুদ্রযাত্রায় ভীতির জন্য হোক মুম্বাইয়ে গিয়ে আর জাহাজে চড়তেন না। পরে হজ্জ্ব শেষে যখন হাজী সাহেবরা দেশে ফিরতেন তখন তাদের সাথে হাজীবেশে দেশের বাড়ী ফিরতেন। এই ছলনাটা বেশিদিন চাপা থাকতো না। তখন লোকে তাদেরকে বলতো 'বোম্বাই হাজী'।

বোঝা যাচ্ছে চেনা বামুনের পৈতার দরকার হয় না। যাদের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ আছে তারা নানা প্রকার ভেক, উপাধী দিয়ে খামতিটা ঢাকার চেষ্টা করে।

গল্প-০৩
১৬২৭ সালে তোকুবেই নাকি জাহাজ নিয়ে ভারতে এসেছিল এবং গঙ্গার উৎস পর্যন্ত জাহাজ চালিয়ে গিয়েছিল। এই কথা সত্য ধরলে তোকুবেই মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর অথবা শাহ্‌ জাহানের আমলে বাংলায় যখন মুকার্‌রম খান অথবা ফিদাই খান সুবাদার তখন বঙ্গোপসাগরে মেঘনার মোহনা থেকে জাহাজ চালিয়ে গঙ্গার উৎস মুখ পর্যন্ত গিয়েছিল। এই আশ্চর্য কাহিনী তৎকালীন ইতিহাস গ্রন্থ যেমন, মীর্জা নাথানের বাহারিস্তান-ই-গায়েবী, জাহাঙ্গীরের তুয্ক‌-ই-জাহাঙ্গীরি বা ইনায়ৎ খানের শাহ্‌জাহাননামাতে পাওয়া যায় না। তা পাওয়া যাবে কী করে, বাস্তবে অমন কিছু ঘটলে তো! এদিকে তোকুবেই দেশে ফিরে এক মহা গল্প ফেঁদে বসে। সে 'তেন্‌জিকু তোকাই মনোগাতারি' (সমুদ্র পথে ভারত যাত্রা বিষয়ে) নামে এক পুস্তিকা লিখে ফেলে। এটা ভেরিফাই করার মতো লোক তো আর জাপানে ছিলো না। তাছাড়া ১৬৩৩ সালে জাপান তার দরজা-জানালা আটকে দিলে এটা নিয়ে বাইরের দুনিয়ায় আর আলাপ-আলোচনা হবার উপায় থাকে না। এদিকে তোকুবেই নিজের নামের সাথে 'তেনজিকু' (ভারত) লাগিয়ে বসে। ১৯০৫ সালে রিচার্ড হার্ডিং ডেভিস নামের এক মার্কিনী সাহেব রুশ-জাপানী যুদ্ধের ওপর লেখা বইয়ে তোকুবেইয়ের ভারত যাত্রা নিয়ে লিখেছেন। সেখানেও গঙ্গার উৎস পর্যন্ত জাহাজ চালিয়ে যাবার কিস্‌সা আছে। রিচার্ড সাহেবের তথ্যের উৎস সম্ভবত খোদ তোকুবেইয়ের পুস্তিকাটা। তাই দুইটার বর্ণনা এক।

ব্যাখ্যা নিষ্প্রয়োজন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

সে তো আরও মজার গপ তৈলে। আসল ভারত ভ্রমণ থিকা ভুয়া ভারতভ্রমণের গপ্পে উত্তেজনা, কল্পনা, জল্পনা, রটনা ও ঘটনার ঘনঘোর ঘনঘটা থাকবে বলেই ধারণা করি। সাব্বাস। দেখি পাই কিনা।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

তেঞ্জিকু (天竺) মানে কিন্তু ভারত (আর চীনা ভাষায় তিয়ানঝু)। আর তোকুবেই হইল গিয়া ওই ভদ্রলোকের নাম। তিয়ান (天) মানে হইল গিয়া স্বর্গ আর ঝু (竺) মানে ভূমি/ধাম। ভারত কে চীনা/জাপানীরা কইত "স্বর্গধাম", কারণ বৌদ্ধ ধর্ম ভারত থিকা আসছে দেইখা। কিন্তু উইকিতে দেখলাম তিয়ানঝু নাকি "সিন্ধু" শব্দের চৈনিক বর্ণান্তর, কিন্তু আমার কাছে তা মনে লয় না। কারণ 天竺 দেখলে যে কেউই কইবো এর স্পষ্ট একটা মানে আছে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চীনা ভাষায় ভারত হচ্ছে 印度 (ইন্‌দু) বড় জোর ইন্‌দুগোওউ। জাপানী ভাষায়ও ভারতকে সাধারণত インド (ইন্‌দো) বলা হয়। তেন্‌জিকু পোশাকী বা আলঙ্কারিক ব্যবহারের জন্য।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল কথা কইছেন, 印度 বা 印度国 (ইন্দুগুও) হইল বর্ণান্তর, "ইন্দু" শব্দের উচ্চারণ চীনা ভাষায় লেখলে হয় 印度। একই কারণে কাতাকানায় জাপানীরা লেখে インド (খেয়াল করেন, インド কিন্তু কানজিতে না)। এইগুলা হইল চলিত ভাষা, উইকীর তথ্য তাইলে ঠিক নাই। যেমন চীনারা বাংলাদেশ কে বলে 孟加拉国। এইসব বর্ণান্তর/উচ্চারণজাত/বিদেশী শব্দ অনেক পরে চীনা, জাপানী ভাষায় ঢুকানো হইছে। কিন্তু অরিজিনাল চীনা ভাষায় ভারত হইল গিয়া 天竺।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ঠিক! কিন্তু আপনি 竺 কে 'ঝু' লিখছেন কেন? এটা মোটামুটি 'চোওউ' হবার কথা না! পূর্ব বা দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অনেক ভাষায় বিদেশী শব্দগুলোকে তাদের জিহ্বা-কানের উপযুক্ত করে একটু এদিক-ওদিক করে নেয়া হয়। তাতে সে শব্দ তাদের ভাষায় নতুন শব্দ হিসেবে জায়গা পায় বটে কিন্তু বিদেশীদের কাছে আর অনায়াসে বোধগম্য থাকে না। একটু আয়াস লাগে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই (বা বোন) ষষ্ঠ পাণ্ডব, আমি দক্ষিণ চীনের আদমি, আমরা 竺 রে কই "ঝু" (বা "ঝাউ" বা "ঝোউ"), 竺 রে "চোওউ" কই না, ছুডো বেলাকার অভ্যাস বুঝেনই তো।

মন মাঝি এর ছবি

"পাণ্ডব" যেহেতু, সেহেতু "ভাই" হওয়ারই তো কথা, তাই না? পাণ্ডব হঠাৎ আপা হয়ে গেলে, ভাবী / বৌদি বিপদে পড়ে যাবেন। আপনাদের চীনা ভাষায় মহাভারতের অনুবাদ নাই? তাড়াতাড়ি একটা কিনে ফেলেন!!

****************************************

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

এইটা তো একটা ঝামেলা হয়ে গেল দেখা যায়। পাণ্ডূ রাজার পুত্র, সেই হিসাবে পাণ্ডব, পাঁচজন পুত্র পঞ্চপাণ্ডব। যে যুক্তিতে পঞ্চপাণ্ডব পাণ্ডূর পুত্র, সেই একই যুক্তিতে কর্ণও পাণ্ডব, ষষ্ঠ পাণ্ডব। যাক গে সেসব।

আচ্ছা! পাণ্ডূর যদি কন্যাও থাকত, সে বা তারা কি হত? পাণ্ডব নাকি পাণ্ডবী? হিমু ভাই কি বলেন?

বিঃদ্রঃ পাণ্ডূর তলদেশে অনিচ্ছাকৃত দীর্ঘ উকার স্থাপন করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

সত্যপীর এর ছবি

ভাই (বা বোন) ষষ্ঠ পাণ্ডব, আমি দক্ষিণ চীনের আদমি, আমরা 竺 রে কই "ঝু" (বা "ঝাউ" বা "ঝোউ"), 竺 রে "চোওউ" কই না,

ঝাউ কন আর চাউ কন, সেসব বাহুল্য। মূল কথায় আসেন। দক্ষিণ চীনের জীবন নিয়া পোস্ট দেন। কুন দুকানে ডিম সাম খান সকাল সাতটায় আর কুন বাজারে মাছ কিনেন। সেই মাছ কি তরিকায় ভাজেন। মন খারাপ হইলে কুন লেকের পাড়ে বইসা বাতাস খান। সেই বাতাসে কুন ফুলের ঘ্রাণ। বই পড়তে মঞ্চাইলে কুন লাইবিরিতে যান। সেইখানে বইয়ের কিরাম ব্যবস্থা। হাতে ছুটি ও পকেটে পয়সা থাকলে বাস ধইরা কুন গেরামে ঘুরতে যান। সেই গেরামের রেস্টুরেন্টে কি দিয়া রান্ধে। বিস্তারিত লেখেন দক্ষিণ চীন নিয়া। মডু না ছাপাইলে হরতাল ডাকুম।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

নারে ভাই, কিযে কন, আমার লেখার হাত খুবই খারাপ, বাংলাতো দূরে থাউক, মাতৃভাষাতেই (আই মীন চীনাভাষাতে) আমার লেখা D গ্রেডের। লেখাযোখায় ওস্তাদ হইলে চীনা ব্লগেই এদ্দিনে সব তামাতামা কইরা দিতাম।

সত্যপীর এর ছবি

এইখানেই তামাতামা করেন। সিরিজ চালু করেন "দক্ষিণ চীনের গল্প ও অন্যান্য তামাতামা"। দশ পনেরো পর্বের সিরিজ লেখেন। বন্ধুবান্ধবের গল্প। প্রেমের গল্প। খানাদানার গল্প। উৎসবের গল্প। শহরের গল্প। পথের গল্প। যা মনে চায়। শুরু করে দেখেন ভালো না লাগলে ছেড়ে দিয়েন সমস্যা কি।

(আফিম ইত্যাদি নিয়া গপ ফাঁদার তালে আছি, আপনের দক্ষিণ চীনের কথা সেইখানে আসবে। পড়ে আগাম মন্তব্য করার আমন্ত্রণ জানিয়ে গেলাম।)

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

"দক্ষিণ চীনের গল্প ও অন্যান্য তামাতামা" নামটা পছন্দ হয়েছে, দেখি চেষ্টা করে দেখবনে, দোয়া রাইখেন। আর আফিমের কথা কইয়েন না ভাই, এর লাইগা আমাগো দেশ ৫০০ বৎসর পিছায়ে গেছে গা। পোড়া কপাল।

সত্যপীর এর ছবি

হালার্পো বিটিশের আফিম চোরাচালানের গল্প সবই জানি। নিভভয়ে থাকেন।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ক্যান্টনিজ নাকি ভাই? আমার দৌড়, কর্ম, পীরিতি সব ফুজিয়ান থেকে দরিয়ার পাড় ঘেঁষে জিয়াঙসু পর্যন্ত। কখনো সখনো আপনাদের গুয়াঙদঙ থেকে গুইঝো (আপনার মতো বললাম), হুবেই, চঙচিঙ হয়ে সিচুয়ান পর্যন্ত। সুতরাং আপনার সাথে আমার কথাবার্তায় ব্যাপক ফারাক থাকার কথা।

দক্ষিণ চীন নিয়ে দুটো কথা।

এক, ছোটবেলায় আমাদের শহরে 'সাউথ চায়না' নামের এক রেস্টুরেন্ট ছিল। চালাতেন এক দক্ষিণ চীনা পরিবার - মা, বাবা, দুই ভাই, দুই বোন। পরে বোন দুজন একটা বিউটি পারলারও দিয়েছিলেন - লিলি চাইনিজ বিউটি পারলার। আমার চীনা খাবারের 'অন্নপ্রাশন' ঐ সাউথ চায়নাতে।

দুই, জীবনে প্রথম বার চীনে ঢুকি হঙকঙের লোউ বর্ডার দিয়ে গুয়াঙদঙের লুউহুতে। মানে আমার পা প্রথম চীনের মাটি স্পর্শ করে দক্ষিণ চীনে।

বাংলা যখন টাইপ করতে পারেন তখন শুরু করে দেন 'দক্ষিণ চীনের চিঠি' বা 'দক্ষিণ চীনের দিনরাত্রি' ধরনের সিরিজ। গুলুরোউ-শাওরোউঝু'র জীভে জল আনা সুবাসে সচল ভরে উঠুক।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাহ বেশ বেশ, আপনি আছেন আমার দেশে আর আমি আপনাদের দেশে। ক্যান্টনিজ বললে ভুল হবে না, আরো সঠিক ভাবে বললে আমার মাতৃভাষা মূলত তাইশান (台山話), তাই আমার কথায় প্রচুর তাইশানী টান। আপনাদের কাছে উৎসাহ পেয়ে বাংলা লেখার দুঃসাহস পাচ্ছি একটু আধটু। দেখা যাক চেষ্টা করে দেখব, দোয়া রাইখেন, আবার গাছে উঠায় দিয়ে মই টেনে নিয়েন না, হে হে। আমার আসলে প্রচুর পড়া দরকার, কিন্তু সময় কই? চাইনিজ মহাভারত অবশ্যই থাকার কথা, কিন্তু তা সংগ্রহ বা পড়া হয়ে উঠেনি।

বাংলাদেশ পুরাটা দেখা হয়নি, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গটা কেন জানি বাদ পড়ে গেছে। সিলেট, চট্টগ্রাম, খুলনার বেশ কিছু এলাকা দেখা হয়েছে, আর ঢাকা তো আছেই। যাই বলেন ভাই, ইলিশ মাছের উপর মাছ হয় না, মাছের রাজা 魚之王। কিন্তু এই খাদ্য চীনে জনপ্রিয় করানো এক কথায় অসম্ভব, চপস্টিক দিয়ে আর যাইই হোক ইলিশ মাছ খাওয়া সম্ভব না, হাত দিয়ে খাওয়ার ব্যাপারে আমার একটু এলার্জি ছিলো কিন্তু এই ইলিশ মাছের জন্যই হাত দিয়ে খাওয়া শিখতে হয়েছে। সিঙ্গাপুরিয়ানরা নাকি ইলিশ মাছ খায়, যেটা আমি জানতে পারি অনেক পরে, ইলিশ মাছ দিয়ে কিভাবে তারা কি রান্না করে পরের বার গেলে সারেজমিনে তদন্ত করে দেখব, সবার আগে আমাকে জানতে হবে চপস্টিক দিয়ে সিঙ্গাপুরিয়ানরা কিভাবে ইলিশ মাছ খায়।

ভাল থাকবেন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

না না, আমি চীনে থাকি না। কখনো সখনো যাই আর কি! আপনার সাবলীল বাংলা দেখে আমি মুগ্ধ!! বাংলায় লিখে যান ভাই। আর একটু কষ্ট করে আপনার নাম বা নিকটা সচলে রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন।

ব্যক্তিগত প্রশ্ন করি, ইচ্ছে হলে উত্তর দেবেন, ইচ্ছে না হলে নাই। আপনি কি 'ইউ' জাতির মানুষ, নাকি 'হান'? আপনার নিবাস কি জিয়াঙমেন এলাকায়, নাকি তাইশানে?

আমি কিন্তু পূর্ব চীনের অনেক জায়গায় বহু বার ইলিশ মাছ খেয়েছি। প্রতিবার রাঁধুনীর সাথে এর রান্নার পদ্ধতি নিয়ে আমাকে তর্ক করতে হয়েছে। আমি বলতাম, এই মাছ ভেজে দাও; রাঁধুনী উত্তর দিতো, এই মাছ ভেজে খায় না, সেদ্ধ খেতে হয়। আমি সেই ভাজা ইলিশ চপস্টিকের সাথে হাত লাগিয়ে খেয়েছি। আমার চীনা সহকর্মীদের মধ্যে দুয়েকজন চপস্টিক দিয়ে অল্প একটু খেয়ে ক্ষান্ত হয়েছে, বাকিরা ছুঁয়েও দেখেনি। 'স্মোকড হিলশা' বলে ইলিশের একটা সংস্করণ আছে যেটা রান্না করতে বেশ দক্ষতা লাগে। সেই কায়দায় ইলিশ রান্না করা হলে চীনের যে কেউ চপস্টিক দিয়ে ইলিশ মাছ খেতে পারবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আদি নিবাস (দাদাবাড়ী, পরদাদাবাড়ী ইত্যাদি) তাইশান এলাকা, পূর্বচীনের কোন এলাকা ভাই? এত নতুন জিনিস জানলাম। আমি নিজে অবশ্য চাইনিজ তরিকায় ইলিশ মাছের একটা রেসিপি বানিয়েছি, ভাবছি সেটা দিয়েই সচলায়তনে বিসমিল্লাহ করব, দোয়া রাইখেন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনার বাড়ীঘর দেখি ম্যাকাও-এর খুব কাছে। সত্যপীরের আফিমের গল্পে আপনি ভালো মালমশলার যোগান দিতে পারার কথা।

এক গ্রীষ্মে তাইশান যাবার সুযোগ হয়েছিল। হাতে সময় কম থাকায় বিশেষ ঘুরে ফিরে দেখতে পারিনি। সেখানে রাস্তার পাশের আম গাছগুলো দেখেছিলাম আমভর্তি। সেখানকার এক কাঁচা বাজারে বাংলাদেশী কাঁঠালের তুলনায় সরু আর লম্বা কাঁঠাল দেখেছিলাম।

আমি পূর্ব চীনের Hangzhou, Ningbo, Taizhou, Wenzhou আর Fuzhou অঞ্চলের শহরগুলোতে ইলিশ মাছ খেয়েছি। সেগুলো সম্ভবত পূর্ব চীন সাগর থেকে ধরা।

চাইনিজ তরিকার ইলিশ মাছের রেসিপি আজই পোস্ট করুন যেন আমরা নিজেরা নিজেরা আগামী উইকএন্ডে সেটা ট্রাই করতে পারি।

আর একটা কথা। লেখা বা পোস্ট দেবার সময় নিচে নিজের নাম বা নিক দিতে ভুলবেন না। নয়তো আমরা কী করে বুঝবো এটা আপনি! এবং তারও আগে সচলে নিজের নাম বা নিক রেজিস্ট্রেশন করে ফেলুন।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

আপনাদের কাছে উৎসাহ পেয়ে বাংলা লেখার দুঃসাহস পাচ্ছি একটু আধটু। দেখা যাক চেষ্টা করে দেখব, দোয়া রাইখেন, আবার গাছে উঠায় দিয়ে মই টেনে নিয়েন না, হে হে।

দুঃসাহস!!! স্বাদেগন্ধে এমন পাক্কা বাংলাদেশি স্টাইলে নির্ভুল, সাবলীল, সুস্বাদু, ইডিওম্যাটিক এবং সমকালীণ বাংলা যে লিখতে পারে - যার বাংলা পড়ে বুঝার উপায়ই নাই যে অবাঙালি - তার যদি "দুঃসাহস" লাগে, তাহলে আমার মত অনেক স্বঘোষিত তথাকথিত "নেটিভ" বাঙালিরই লজ্জায় তল্লাট ছেড়ে ভেগে যাওয়া উচিৎ!! হে হে!

উপরে পীরবাবা যেমন বলছেন - আপনি চীন নিয়ে হোক, চীনা সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে হোক, বাংলাদেশ বা বাংলা শেখা নিয়ে হোক, বা আপনার যে-কোন আকর্ষনীয় অভিজ্ঞতা নিয়ে হোক - দু'হাত খুলে লিখে যান। "মই" কেড়ে নেয়া নিয়ে ভয় কইরেন না, সচলের ইন-হাউজ পীরবাবার আশীর্বাদ তো আপনার উপর আছেই, তাছাড়া আপনার বাংলা পড়ে আমার মতো মই-হারা যারা নিজেদের মইই খোঁজ করতেসে এখন - তারা আপনার মই কাড়বে কিভাবে? সুতরাং নিভ্‌ভয়ে লেখেন!

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

চেষ্টা করব, একটা লেখার প্ল্যানে আছি, ইনশাল্লাহ, দোয়া রাইখেন, উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনার মতলব ভালো ঠেকতেছে না। জায়ফলের ভেতর ইতিহাসের বিচি ঢুকিয়ে আমাদের গেলানোর চেষ্টা করতেছেন। আমরা বিচি ফেলে জায়ফল খাবো নাকি জায়ফল রেখে ইতিহাসের বীজ খাবো বুঝতেছি না।

ওলন্দাজদের ব্যাপার স্যাপার একটু আশ্চর্য লাগে। আমাদের এই অঞ্চলে বদনাম বেশী পর্তুগীজদের অথচ নীরবে ওলন্দাজরা মালয় উপদ্বীপগুলোতো কচুকাটা কর্মসূচী দিয়ে বাটাভিয়াতে উপনিবেশ স্থাপন করে কয়েকশো বছর রাজত্ব করে গেছে। মজার ব্যাপার হলো পর্তুগীজরা ওই অঞ্চলে সবার আগে পৌঁছালেও বিলম্বে এসে ওলন্দাজরাই জায়গা দখল করে নেয়। ১৫১৭ সালের দিকে Fernao Peres d'Andrade এর নেতৃত্বে যে বাণিজ্য বহরকে এশিয়ায় পাঠিয়েছিল পর্তুগালের রাজা, সেই বহর চীন এবং বাংলার সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপন করার কাজ করতে গিয়ে মাঝপথে চীন থেকে বাংলায় আসার পথে জাহাজে আগুন ধরে বিপর্যয় না ঘটে গেলে কাহিনী হয়তো অন্যরকম হতো। পর্তুগীজরা ভারতে থিতু হয়ে গেলে ওলন্দাজদের জন্য মালাক্কা প্রণালীর পথ পরিষ্কার হয়ে যায়। ধর্মপ্রচারে ওলন্দাজদের মতি ছিল মনে হয় না। তারা সরাসরি কতলে বিশ্বাসী ছিল। গণহত্যার আদি ইতিহাসে বান্দার ঘটনাটি অন্যতম মাইলফলক। ওলন্দাজদের সাথে জাপানীদের আদি যোগসুত্রটা আরো খোলাসা করে শোনার অপেক্ষায় থাকলাম।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সত্যপীর এর ছবি

আমরা বিচি ফেলে জায়ফল খাবো নাকি জায়ফল রেখে ইতিহাসের বীজ খাবো বুঝতেছি না।

ঠাণ্ডা শরবৎ খান। যা গরম পড়ছে।

ধর্মপ্রচারে ওলন্দাজদের মতি ছিল মনে হয় না। তারা সরাসরি কতলে বিশ্বাসী ছিল।

ধোঁয়ার পিছে থাকে আগুণ। কতল হইল ধোঁয়া, ফলাফল। দেখা যায়। কিন্তু কতল করতে তাদের উৎসাহ দিল কে? কিম্বা, কতলে ইংরেজ পর্তুগীজ বিশ্বাসী কেন ছিলনা? আগুণটা কই।

ওলন্দাজের কিছু নিজস্ব কৌশল ছিল পয়লা থেকেই, যা ইংরেজ বা পর্তুগীজের শুরুতে ছিলনা। ইংরেজ মাঝপথে কিছু শিখছে ওলন্দাজের কাছে। ধরেন আপনি ওলন্দাজ সওদাগর। আমস্টার্ডাম আপনারে কইব শুন নীড় শ্যান্ডানি। একচেটিয়া ব্যবসা কায়েম কর। মশলা কফি জামা ছাতা যা ই ব্যবসা কর না কেন, আর কেউরে ঢুকতে দিবা না। কামান লাগে নিয়া যাও। জাহাজ লাগে নিয়া যাও। কম্পিটিশন গুঁড়ায়া গুঁড়া দুধ বানায় ফেল। আর শুন, জাহাজে যা ফিরত আনবা তার আয়ের এত শতাংশ তোমার

শেষ পয়েন্টটা গুরুত্বপূর্ণ। মোট আয়ের (Gross Revenue) এক টুকরা পাবেন মানে আপনাকে মুনাফা নিয়া চিন্তা করতে হবে না। অন্যান্য কোম্পানির কাপ্তানেরা যেরকম অবশিষ্ট আয় (net income) বা লভ্যাংশের অংশ পেত, ওলন্দাজ পেত মোট আয়ের অংশ। তাই তার উৎসাহ (incentive) ছিল যত পারে যেভাবে পারে বেশি মাল এনে বিক্রি করা। ইংরেজ কোম্পানি এগিলি কৌশল শিখতে শিখতে একশ বছর লাগায় দিছে।

তাই আমার মনে হয় ওলন্দাজ কতলে বিশ্বাসী ছিল তার কারণ তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল দ্রুত আয়। সিস্টেমটাই সেইভাবে সাজানো, একচেটিয়া ব্যবসা সাজাও আর আয়ের (লভ্যাংশের নয়) একটা অংশ নেও। মুনাফাজনিত ঝুঁকির বড় অংশ নিত আমস্টার্ডাম হেগ ইত্যাদি এলাকার শেয়ারহোল্ডাররা। তারা আবার বিভিন্ন জাহাজের এক ছটাক করে কিনে রাখত, ঝুঁকি কমিয়ে আনার জন্য। আপনি সঠিক, ধর্মপ্রচারে ওলন্দাজের কোন মতি ছিলনা। সেইটা পর্তুগীজ ডিপার্টমেন্ট। আর ইংরেজ তাকায় তাকায় প্যান্ট পরা শিখতেছিল ওলন্দাজের কাছে যে কিভাবে কলোনি শুষে বড়লোক হওয়া যায়।

ভিওসির ভেঞ্চার ক্যাপিটালজম নিয়া লালু-লাও বাঙ সিরিজে কোন এক সময় লিখার চেষ্টা করব। আরেকটু বুইঝা নেই।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ওলন্দাজরা অগ্রসর পুঁজিবাদী চিন্তার মানুষ। ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট, ইনভেস্টমেন্ট হেজিং, ইনস্যুরেন্স, পিপিপি, কর্পোরেট ফাইন্যান্স ইত্যাদি নানা জিনিসপত্রে তারা সমৃদ্ধ ছিল। ধর্ম প্রচারের মহান কর্মে তাদের মতি ছিল না। নিজেদের মোট ক্ষমতা অন্য প্রতিবেশীদের চেয়ে কম ছিল বলে প্রতিযোগিতার জায়গায় প্রতিপক্ষকে সমূলে বিনাশের নীতিতে বিশ্বাসী ছিল। যাকগে, ওসব ভিন্ন গল্প।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

চলুক

তবে যাই বলেন, মাংসে মাপ মতো জায়ফল আর জয়ত্রী দিয়ে রান্না করলে দারুন সুস্বাদ আর সুঘ্রাণ হয়। উম্‌ম্‌!!!
'সবডেগ' খেয়েছেন কখনো (সিদ্দিকা কবিরের রেসিপিতে না, আসল নিয়মে)? এটা সম্ভবত মূলত একটা কাশ্মিরী খাসীর মাংসের বা ল্যাম্ব ডিশ, যা পরে অযোধ্যার সেই বিখ্যাত নবাবের পাকঘরে আরও রিফাইনমেন্ট পায়। এটারই একটা স্কেল্‌ড-ডাউন (বা ডাউনস্যাম্পল্‌ড), কিন্তু দুর্দান্ত এডাপ্টেশন বা কিছুটা ফিউশন ভার্শান আমাদের বাসায় প্রচলিত ছিল। এতে অন্যান্য মশল্লার পাশাপাশি জায়ফল আর / বা জয়ত্রী দিতে হতো। আম্মা মারা যাবার পর আমি এই ডিশটা কয়েকবার ট্রাই করেছি বানাতে, কিন্তু উনার সিক্রেট রেসিপিটা না জানাতে আসল জিনিসের মতো হয়নি একদমই। তবে "সিক্রেট রেসিপি"টা সম্পর্কে জ্ঞানের অভাবটা পূরণ (কম্পেনসেট) করেছি দু' হাত খুলে মশলা ঢেলে জায়ফল আর জয়ত্রীসহ। না বুঝে বা অতিরিক্ত মশল্লা দিলে পরিণতি কি হবে তা জানা সত্ত্বেও। ফলে ডিশটা শেষমেষ খেতে যাই হোক - জায়ফল, জয়ত্রী, এলাচ ইত্যাদির ভুরভুরে সৌরভের ঠ্যালায় আশেপাশের বাড়ি থেকে প্রতিবেশীরা দৌঁড়ে আসতো আর আমাকে জিজ্ঞেস না করেই অটো-দাওয়াত নিয়ে নিত। শেষ পর্যন্ত তাদের অটো-দাওয়াতের ঠ্যালায় হোক আর আমার ফাইনাল রান্না খেয়ে তাদের নানারকম সুপ্তগুপ্ত অম্লমধুর রসদীপ্ত মন্তব্যসহ পিঠটান দেয়ার ঠ্যালাতেই হোক আমার রন্ধনপেরিমেন্টের পালা চুকেছে। তবে নাক থেকে এখনো জায়ফল / জয়ত্রীর গন্ধ ছুটেনি! আপনার লেখায় সেই সুগন্ধটা আবার ফিরে আসলো। ওলকচুন্দাজদের সাধ্য কি এই সুবাসটা ছুটায়!!! হাসি

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এমিল ভাই না কার পোস্টে যেন আপনি আপনার সাবডেগ রান্নার বর্ণনা দিয়েছিলেন। সেই বর্ণনা পড়ে আর সিদ্দিকা কবিরের বই পড়ে আমার বহু দিনের খায়েশ একদিন সাবডেগ রান্না করবো। আশা করি এই শীতেই রান্না করে ফেলবো।

জায়ফল-জয়ত্রী বা দারুচিনি-এলাচ-লবঙ্গ-তেজপাতা ঠেসে দিলে খুশবু ভুরভুর করে বটে তবে স্বাদ মরে যায়, খাবার সামর্থ্য কমিয়ে দেয়। আমি নিজে মাংস রান্না করার সময় এগুলোর একটাও ব্যবহার করি না।

'গান্ধর্ব' শব্দটার সাথে তুলনীয় একটা শব্দ 'রান্ধর্ব' যদি বানাই, তাহলে বলতে হয় আমাদের মায়েরা মানুষ নন্‌ - রান্ধর্ব। আমরা যারা তাঁদের পুত্রকন্যা, তারা নিতান্তই সীমাবদ্ধ মানব-মানবী। তাই আমাদের রান্না অমন সুরলোকের বা রান্ধর্বলোকের রান্নার মতো হয় না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

সবডেগ খাই নাই, আসল নিয়ম বা সিদ্দিকা কবীরের নকল নিয়ম কোন নিয়মেই না। সিদ্দিকা কবীরের বই থিকা আমি অবশ্য কিছুই রান্ধি না, উনার বর্ণনা আমার বিশেষ অপছন্দ। সে যাক, সবডেগ খাইও নাই সচলের আগে এর নামও শুনিনাই। আপনেই শুনাইছেন আগে এইখানে, মশলার ভুরভুর গন্ধে মাখা গোশতের তরকারি। অদূর বা দূর ভবিষ্যতে এই জিনিস চাখার সম্ভাবনা নাই। সুতরাং এইমর্মে জানানো যাইতেছে যে, আবার আপনে সবডেগ বর্ণনা দিলে আপনারে দশ টাকা জরিমানা করা হইবে। আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ।

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

এই মর্মে অগ্রিম একশত টাকা পরিশোধ করা গেল।
বিণীত,
আপনার একান্ত বাধ্যগত
অধম মন মাঝি

****************************************

সত্যপীর এর ছবি

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

ইয়েস বাঘ মামা, ইয়েস!!!

****************************************

নজমুল আলবাব এর ছবি

হালারপুতেরা সারা দুনিয়ায় খুন খারাবি করে সুন্দরমতো হাত ধুইয়া মানবাধিকারবারী হয়ে বসে আছে।

সত্যপীর এর ছবি

অতীত ভুলে এগিয়ে যান সামনে। আমীন।

..................................................................
#Banshibir.

আয়নামতি এর ছবি

মশলালোচনা ঝাঁঝালো হয়েছে। পাঠক পোস্টের সাথে মন্তব্য পাঠ না করিলে পোস্টপাঠের আনন্দ হইতে কিঞ্চিৎ বঞ্চিত হইতে পারেন।

সত্যপীর এর ছবি

খামোকা মন্তব্য না পড়ে পাঠক যাবেগা কেনু হোয়াই? মন্তব্য লিচ্চয় পড়া চাই।

..................................................................
#Banshibir.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মশলা খাইলে গ্যাস্টিক হয় এই থিউরি কি তখন আবিষ্কার হয় নাই?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তখনো রেফ্রিজারেশন সিস্টেম, পাস্তুরাইজেশন ইত্যাদি আবিষ্কার হয়নি যে তাই ইউরোপীয়রা মশলা খেতো নিরুপায় হয়ে। গ্যাস্ট্রিকের দোহাই দিয়ে সেটা ঠেকানো যেতো না - জান বাঁচানো ফরজ্‌।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পচন ঠেকাতে মশলার ব্যাবহার হতো কীরকম বলেন তো? কোন বই আছে এই বিষয়ে? বিশেষ আগ্রহী হলাম পড়তে।

আপনি যদিও বলছেন "খেতো" কিন্তু মশলা খাওয়া তো আর পাস্তুরাইজেশনের বিকল্প নয়। নাকি তারা আধপচা খাবারের গন্ধ ঢাকার জন্য মশলা খেতো? যাকে বলে ফারমেন্টেড খাবার?

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বই! বই পাবো কোথায়! কোন এক কালে ইউরোপে হয়তো এমন বই ছিল। শ'খানেক বছরেরও বেশি সময় ধরে অদরকারী এই বিষয়ের আর আলাদা বই কি আর পাওয়া যাবে! আমি ঐতিহাসিক নানা মারামারির বইয়ের কোথাও কোথাও টুকটাক এমন তথ্য পেয়েছি। সাধারণ হিসাব বলে নুনে জারানো মাংস, শুকানো মাংস বা ঝলসানো মাংসে কোন কোন মশলার ব্যবহার এর দীর্ঘস্থায়িত্ব একটু বাড়ায়। তারচেয়েও বড় কথা পচা গন্ধ ঠেকায়। মশলা দিয়ে তো আর রেফ্রিজারেশন বা পাস্তুরাইজেশন হবে না, ঐ একটু সময় বাড়ানো, একটু গন্ধ ঠেকানো তা-ই সই। না খেয়ে থাকার চেয়ে বা খাবার ফেলে দেবার চেয়ে সেটা কি অধিক কাম্য না! তবে এটা ভেবো না যে, এইটুকুর জন্য ইউরোপীয়রা এতো রক্তারক্তি করেছে। লুটপাট, দখল, জুলুম, খুনখারাবির জন্য অন্য আরও দশটা বড় বড় কারণ আছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সত্যপীর এর ছবি

পচন ঠেকাতে মশলার ব্যাবহার হতো কীরকম বলেন তো? কোন বই আছে এই বিষয়ে? বিশেষ আগ্রহী হলাম পড়তে।

টেস্ট অফ কনকোয়েস্ট বইয়ের কয়েক ছত্র ইন্টারেস্টিং। পাতা ৫ - ৭ দ্রষ্টব্য। লেখক মাইকেল ক্রোন্ডল মোটামুটি নিচ্চিত মধ্যযুগে ইয়োরোপে কেবল স্বাদের জন্য মশলা ব্যবহৃত হত পচানো ঠেকানোর জন্য নাঃ

"Throughout human history, until the advent of refrigeration, food has been successfully preserved by one of three ways: drying, salting, and preserving in acid. Think prunes, prosciutto, and pickles.

"Old cookbooks make it clear that spices weren’t used as a preservative. They typically suggest adding spices toward the end of the cooking process, where they could have no preservative effect whatsoever. The Ménagier, for one, instructs his spouse to “put in the spices as late as may be, for the sooner they be put in, the more they lose their savor".

"But what if the meat were rancid? Would not a shower of pepper and cloves make rotten meat palatable? Well, perhaps to a starved peasant who could leave no scrap unused, but not to society’s elite. If you could afford fancy, exotic seasonings, you could certainly afford
fresh meat,

"Not that bad meat did not exist. From the specific punishments that were prescribed for unscrupulous traders, it is clear that rotten meat did make it into the kitchens of the rich and famous, but then it also does today. The advice given by cookbook author Bartolomeo Sacchi
in 1480 was the same as you would give now: throw it out. The rich could afford to eat fresh meat and spices. The poor could afford neither.

(বিস্তর ইঞ্জিরি কপিপেস্টের জন্য দুঃখিত, লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ব্যথিত। নিজের লেখার ভিতরে হলে তর্জমা করে দিতাম, মন্তব্যে ইচ্ছে করল না)

ক্রোন্ডল সাবেই সঠিক তা বলতেছিনা, তবে বইয়ের কথা জিগাইলেন তাই মনে হইল এই বইয়ে মশলা ও পচনজনিত ভ্যানভ্যান দেখছি।

..................................................................
#Banshibir.

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ক্রোন্ডল সায়েবের কথায় বিশেষ ভরসা করতে পারছি না। বিশেষত এই কথাটা পড়ে - “put in the spices as late as may be, for the sooner they be put in, the more they lose their savor"। কোন মশলা একদম শুরুতে তেলে আর্লি ফোড়নে দিতে হয়, কোন মশলা তেলে কষাতে হয়, কোন মশলা রান্নার মাঝামাঝি দিতে হয়, আর কোন মশলা একেবারে শেষ প্রান্তে এমনিতে বা ফাইনাল ফোড়নে দিতে হয়। এই তরিকা মানুষ যেদিন থেকে তেল-জল-মশলা দিয়ে রাঁধতে শিখেছে সেদিন থেকে সত্য।

পচা মাংস মানে কি সেটা স্থান-কাল-পাত্রভেদে বিভিন্ন রকম। যার কাছে যেটা ভালো লাগে। শুঁটকির নাম শুনলে কারো জীভে জল আসে, আর কারো বমি পায়।

যাদেরকে রেফ্রিজারেটর ছাড়া মাংস সংরক্ষণ করতে হয় (হতো) তারা কোন লেভেল পর্যন্ত পচাটা গ্রহন করে (করতো) সেটা তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব বিবেচনা। আজও বাংলাদেশে নিম্নবিত্ত মানুষদের মধ্যে যাদের রেফ্রিজারেটর নেই, বা যাদের বিদ্যুৎ মাঝে মাঝে আসে, বা যাদের বিদ্যুৎ একেবারে নেই তারা কোরবানীর মাংস লবন-হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে অথবা লবন-হলুদ মাখিয়ে রোদে/চুলার উপরে শুকিয়ে সংরক্ষণ করেন।

যেসব দেশে বছরের নয়মাস তাপমাত্রা দশ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে ঘোরাঘুরি করে সেসব দেশের লোকজন আরেকটু দীর্ঘ সময় মাংস সংরক্ষণ করতে পারেন। সেখানে মশলার ব্যবহার বোধগম্য কারণে কম। এখানে তিব্বতীদের বাতাসে শুকানো মাংসের কথা বলা হয়েছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

মশলা দিয়ে মাছ মাংস সংরক্ষণে কিছু বেসিক সমস্যা থাকার কথা। মাছ মাংস পচে মূলত জীবাণুর জন্যে। কম হলেও, কিছুটা প্রাণির নিজস্ব এনজাইমের জন্য। এখন মাছ মাংস যদি শুকনা না হয় তাহলে তাতে যতই মসলা দেন, সে কোনো না কোনো জীবাণুর কারণে পচবে। পচার কথা।

যদি মাছ মাংসে পানি থাকে তাহলে তাকে এমনভাবে রাখতে হবে যাবে জীবাণু বাড়তে না পারে। অনেক লবন, অনেক চিনি, অনেক অ্যাসিড (যেমন সিরকা) ইত্যাদিতে মাংস চুবিয়ে রাখা। অথবা মাছ, মাংস, সবজির পানি বের করে তেলে ভিজিয়ে রাখা (আঁচার) ইত্যদি।

সেইজন্য মশলা বোধহয় কেবল মাংসের স্বাদ-গন্ধ বাড়াতে/ভোলাতে ব্যবহার হতো।

কিছু রকমের 'পচানো' কিন্তু সংরক্ষণের অন্য উপায়। সেজন্য মাছ মাংসে বিশেষ রকমের জীবাণু বাড়তে দিয়ে তাকে পচিয়ে খাওয়াও অবাস্তব কিছু না। মদ, বিয়ার, মেলা রকমের পনির, রুটি, পচা পোকা, মাংস, মাছ সবই ওই পচা খাবারের তালিকায় পড়ে। এরকম পচা খাবারে মশলা দিলে তা খাওয়া সহজ হয় বলে আমার ধারনা।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সত্যপীর এর ছবি

সব মশলা কি আর সবার জন্যি? সব মশলা সবার জন্য না। স্ট্যাটাস মিলায় মশলা খাইতে হবে। রাজার শাশুড়ির জন্য তৈয়ার ধামাকাদার মদ (spiced wine) খাইলে চাষীমামু পেট ফাইটা মইরা তো যাইতেই পারে, তার লাগব বিয়ারটাইপ ale। সেনাপতির জন্য বানানো মশলায় জিরানো peppered venison খায়া মনে করেন আমজনতার হইতারে গ্যাস্টিক। খাবার হইতে সাবধান।

আর নিতান্তই যদি পেট কামড়ায়, পুদিনামুদিনা খাইবেন। আল্লা ভরসা।

..................................................................
#Banshibir.

সুমন চৌধুরী এর ছবি

মসলা লইয়া এতো কাহিনি!

সত্যপীর এর ছবি

কুথাকার জায়ফলের লাইগা এক বিকালে চৌদ্দ হাজার মানুষ মইরা নাশ। কি কাহিনী!

..................................................................
#Banshibir.

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ছোটবেলায় আম্মা দোকানে এটা কিনতে পাঠালে বাসায় এসে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতাম একটা জিনিস দেখার জন্য:

এই মসলার বাইরেরটা খায় নাকি ভেতরের টা?

বাইরেরটা ফেলে দেয়া হইতো (সম্ভবত), এবং এইটা নিয়া বড় আক্ষেপ ছিলো আমার,
আরে! অর্ধেকই তো ফেলে দিল!'

আর ভালো জায়ফল কেনার ট্রিক ছিল কানের কাছে নিয়ে একটু ঝাঁকানি দেয়া। নড়াচড়া না করলে, ঐটাতে সমস্যা আছে।

বান্দাবাসীরা মাইর খাইলো, বেচারারা মন খারাপ

শুভেচ্ছা হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো রকম মাল-মসলা ঢেলেই মসলার কাহিনী ফেঁদেছেন ভাই। জটিল রকম সুস্বাদু। মসলা বানিজ্য নিয়ে দূর অতীতে মারামারি কাটাকাটি সম্পর্কে হালকা-পাতলা ধারনা ছিল, কিন্তু এত মর্মান্তিক রাজনীতি কাহিনী জানা ছিল না। সামুরাইদের অংশগ্রহনের ব্যাপারটা একটা ব্যাপক টুইস্ট, অন্তত আমার জন্য। পাকাতে থাকুন মসলাদার ইতিহাস, আমরাও এই সুযোগে স্বাদ নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলি।

-ইকরাম ফরিদ চৌধুরী

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

সব কথা বলা হল বাকি রয়ে গেল কিছু বলিতে! কি সেই কথা? সেটা হল- কেন জায়ফল? এত কিছু থাকতে জায়ফল কেন?

প্রাচীনকালে দারুচিনি দ্বীপ থেকে নানা রকম মসলার সাথে জায়ফল এবং তার ভাই জয়িত্রীও ভারতে এসে পৌঁছেছিল। তখন থেকে ভারতে জায়ফলের নানা রকম ব্যবহার প্রচলিত হয়েছে। রান্নার নানা রকম ডিসে তো আছেই, তার সাথে আচার এবং স্যুপের বিভিন্ন রকম পদেও এর ব্যবহার আছে এখনও। দক্ষিন ভারতে এক বিশেষ রকমের ধূমপায়ী আছে, যারা তামাক নয়, জায়ফল দিয়ে বিশেষ ধরনের ধূমপানের মসলা বানিয়ে ধূমপান করে। পরবর্তিতে আরবরাও জায়ফলের এইসব কার্যকারিতা তাদের দেশে নিয়ে যায়।

আরবদের হাত ঘুরে জায়ফল যখন ইউরোপে পৌঁছে, তখন রান্নার যাদুকরি গুণের সাথে সাথে আরও কিছু অতি গুরুত্বপুর্ন গুণ এর উপর আরোপিত হয়। বিভিন্ন রকম দামী মদ প্রস্তুতিতে জায়ফল ব্যবহার হতে থাকে, নানা রকম ওষুধ বিসুদ তৈরি হতে থাকে, এমনকি যাদু টোনা আর আধ্যাত্মিক প্রয়োজনেও জায়ফল অপরিহার্য হয়ে ওঠে। সর্বোপরি সত্যিকারের গরম মসল্লা হিসেবে(মানে বুঝলেন তো?) এটা অত্যন্ত কার্যকরি উপাদান বলে বিবেচিত হতে থাকে। সে জন্যই জায়ফল। আর ডাচদের ব্যাপার তো জানেনই, "মারি তো গণ্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার"। সুতরাং জায়ফলের দখল নিতে যে তারা মরীয়া হয়ে উঠবে, সে আর আশ্চর্য্য কি?

সত্যপীর এর ছবি

সর্বোপরি সত্যিকারের গরম মসল্লা হিসেবে(মানে বুঝলেন তো?) এটা অত্যন্ত কার্যকরি উপাদান বলে বিবেচিত হতে থাকে।

বোকাসুধায় দুনিয়া ভরা। ইদানিংকার সুপারফুড আসাই বেরি খাইলেও নাকি কুতুবমিনার খাড়াইতে সমিস্যা হয়না। ইস্কিন ভালু থাকে, বাতের ব্যথা বুকের কফ পরিষ্কার হয়, বুড়া বিয়েসে থাকা যায় সতেজ ও ভরপুর। কত কাহিনী বালছাল। একটি যুগে যুগে অমর ষাণ্ডার তেল ও বোকাসুধা ইস্টোরি।

..................................................................
#Banshibir.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।